ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’: তিন সমুদ্রবন্দরে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত

জাতীয়, 12 May 2023, 1553 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১৪.৫ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮.৫ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুদ্ধ রয়েছে।

banner

কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

আজ ১২ মে শুক্রবার রাতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে রোববার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে কক্সবাজার ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’র অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হতে পারে।

এতে উল্লেখ করা হয়েছে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

Leave a Reply

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী বাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১০জন…

অনলাইন ডেস্ক : মেক্সিকোর আটলাকোমুলকো শহরে একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও Read more

কানাডায় বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

মুমিনুল হক : কানাডার টরেন্টোতে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। Read more

বাংলাদেশ কিছুটা স্বস্তির জন্য আইএমএফের ঋণ নিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 30 April 2023, 1350 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ কিছুটা স্বস্তির জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ঋণ নিয়েছে।

banner

ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার বিকেলে দ্য রিজ-কার্লটন হোটেলের সভাকক্ষে আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিভার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন, ‘আমরা কিছুটা স্বস্তির জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ঋণ নিয়েছি।’

আইএমএফ সম্প্রতি বাংলাদেশের জন্যে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতির ব্যাপক প্রশংসা করেছেন আইএমএফের এমডি, যা কভিড-১৯ মহামারির পরে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করে তুলেছে।

ড. মোমেন আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে উদ্ধৃত করে বলেন, ‘বিশ্বে বাংলাদেশ একটি রোল মডেল (সামগ্রিক উন্নয়নের পরিপ্রেক্ষিতে) কারণ, দেশটি এমনকি করোনা মহামারির পরও অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে পেরেছে।’

আইএমএফ প্রধান বলেন, সকল প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মতো নেতৃত্ব প্রয়োজন।

তিনি বলেন, অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন ও দক্ষ যোগাযোগ এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার মাধ্যমে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।

এছাড়া, ক্রিস্টালিনা কভিড-১৯ মহামারিকালে সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখারও প্রশংসা করেন।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাঁর দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সরকারের নানা উদ্যোগ সম্পর্কে আইএমএফ প্রধানকে অবহিত করেন। তিনি বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন একদিনে হয়নি, বরং এটি দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার ফল।’

শেখ হাসিনা বলেন, পট পরিবর্তনের পর কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি যেভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন চেয়েছেন সেভাবে তাঁর পরিকল্পনা করেন এবং ২০০৯ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু করেন।

তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা এবং নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের পদক্ষেপ সম্পর্কে আইএমএফ প্রধানকে অবহিত করেন।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় আইএমএফের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতেও সমর্থন অব্যাহত রাখবে বলে আশা করেন।

ব্রিফিংকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ বলেন, গত ১৪ বছরে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আইএমএফ সবসময় বাংলাদেশের পাশে থেকেছে ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছে এবং দেশটি কখনই এর থেকে বিচ্যুত হয়নি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কর্মসূচি নিয়ে আইএমএফের সাথে কাজ করছে, যা বাংলাদেশ মাত্র দু’সপ্তাহের আলোচনার মাধ্যমে পেয়েছে, যদিও অনেক দেশ বছরে পর বছর ধরে আলোচনা চালিয়েও পায় না।

আইএমএফ প্রধানকে উদ্ধৃত করে রউফ বলেন, ‘আইএমএফ ভবিষ্যতে এই ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।’

ব্রিফিংকালে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র : বাসস

বসতঘরে অগ্নিকাণ্ডে দুই জনের মৃত্যু

জাতীয়, 30 July 2023, 1087 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে বসতঘরে আগুন লেগে নারী-পুরুষ দুই জনের মৃত্যু হয়েছে।

banner

আজ ৩০ জুলাই রবিবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার বৌলতলী ইউনিয়নের কাজিপাড়া গ্রামে ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- ইমরান হোসেন (২৬) ও নাছরিন আক্তার (২৩)। সম্পর্কে তারা ভাবি ও দেবর বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বৌলতলী এলাকার কাজিরপাড়া গ্রামে নূর ইসলামের বসতঘরে আগুনের লেলিহান শিখা দেখে তারা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

মুন্সিগঞ্জ লৌহজং উপজেলা ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার আব্দুল মতিন জানান, সংবাদ পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। তবে বিচ্ছিন্ন এলাকায় রাস্তা না থাকায় নৌকাযোগে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে বিলম্ব হয়েছে। প্রায় ৩০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ সময় দু’টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

আগুন নিয়ন্ত্রণ করে সেখান থেকে দুই জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন নারী অপরজন পুরুষ।

বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে বসতঘরে আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

ঘটনাস্থলটি স্বাভাবিক লোকালয় থেকে একটু দূরে এবং বর্ষার পানির কারণে বিচ্ছিন্ন বলে জানান স্থানীয়রা।

আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী

জাতীয়, 24 May 2025, 274 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
আজ ১১ জ্যৈষ্ঠ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী। জাতীয় পর্যায়ে কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি ছিলেন একাধারে প্রেমিক ও বিদ্রোহী। উপন্যাস, নাটক, সঙ্গীত আর দর্শনেও নজরুলের অনবদ্য উপস্থিতি বর্ণাঢ্য করেছে বাংলা সাহিত্যকে। অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী এই মানুষটি ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (ইংরেজি সাল অনুযায়ী ২৪ মে, ১৮৯৯ সাল) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোলের চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব-কৈশোর-তারুণ্যের জীবনের পরতে পরতে সংগ্রাম করতে হয়েছে তাকে। জড়িয়েছিলেন নানা পেশায়। ১৯১৭ সালে যোগ দেন সেনাবাহিনীতে। অংশ নেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধেও। এরই মাঝে তৎকালীন প্রভাবশালী কবি-সাহিত্যিকদের সংস্পর্শে আসেন তিনি। ১৯২২ সালে প্রকাশ করেন ধূমকেতু পত্রিকা।

banner

বাংলা ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মেছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। তার ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মা জাহেদা খাতুন।

কাজী নজরুল ইসলাম চিরপ্রেমের কবি। তিনি যৌবনের দূত। তিনি প্রেম নিয়েছিলেন, প্রেম চেয়েছিলেন। মূলত তিনি বিদ্রোহী, কিন্তু তার প্রেমিক রূপটিও প্রবাদপ্রতিম। তাই মানুষটি অনায়াসেই বলতে পারেন ‘আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন খুঁজি তারে আমি আপনায়।’ পৃথিবীতে এমন কয়জন আছেন যিনি প্রেমের টানে রক্তের সর্ম্পককে অস্বীকার করে পথে বেরিয়ে পড়তে পারেন?

১৯৭২ সালে কবি নজরুলকে সপরিবারে নিয়ে আসা হয় স্বাধীন বাংলাদেশে। এরপর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশেই ছিলেন। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট তৎকালীন পিজি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন এই মহাবিদ্রোহী ও প্রেমিক পুরুষ। কবির ইচ্ছানুসারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে তাকে সমাধিস্থ করা হয়।

ইমতিয়াজ আর হাসবেন না

জাতীয়, 8 February 2024, 986 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
নিজের পায়ে ভর করে হাঁটতে পারতেন না। কখনো মা-বাবা ও বন্ধুদের কোলে চড়ে, কখনো হুইলচেয়ার বা স্টিলের লাঠিতে ভর করে পড়াশোনা শেষ করেন মো. ইমতিয়াজ কবির (২৪)। এরপর একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু ইমতিয়াজ আর অফিসে যাবেন না। কখনো মায়ের কোলে চড়ে বসবেন না। প্রাণ খুলে হাসবেন না। আজ ৮ ফেব্রুয়ারি বেলা তিনটায় চট্টগ্রাম নগরের এভারকেয়ার হাসপাতালে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেছেন।

banner

মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন ইমতিয়াজ কবিরের ফুফাতো ভাই মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, ইমতিয়াজ নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন। সর্বশেষ ফুসফুসের রোগে ভুগছিলেন। নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। এসব রোগ নিয়ে তাঁকে ৫ ফেব্রুয়ারি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আর আজ মৃত্যু হয়েছে। মাহমুদুর রহমান জানান, ইমতিয়াজের মৃত্যুর পর তাঁর মা–বাবার আহাজারি থামছেই না। একমাত্র বোন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। ভাইকে হারিয়ে বোনটিও দিশাহারা। এখন ইমতিয়াজের ঘরজুড়ে কেবলই স্মৃতি। পড়ে আছে জামা, জুতা ও বইপত্র।

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেছিলেন ইমতিয়াজ। গত জুন মাসে প্রতিবন্ধকতা জয়ী ইমতিয়াজ তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক জাপানি তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি কোডল্যাব এফজেডসির ঢাকা অফিসে সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করছিলেন ইমতিয়াজ। গত বছরের ১ আগস্ট জাতীয় দৈনিকে ‘বাবা ও বন্ধুদের কোলে চড়ে পড়াশোনা করা ইমতিয়াজ এখন পেশাদার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার’ শিরোনামে ইমতিয়াজকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।

ইমতিয়াজদের বাড়ি নড়াইলে। তবে তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে বসবাস করে আসছেন। ইমতিয়াজের ঢাকায় চাকরি হওয়ার পর তাঁর সবকিছু গুছিয়ে দিতেই মা চট্টগ্রাম থেকে রাজধানীতে গিয়েছিলেন। তাঁর বাবার নাম ইনামুল কবীর। ইমতিয়াজের ফুফাতো ভাই মাহমুদুর রহমান জানান, দুই মাস ধরে ইমতিয়াজ চট্টগ্রামে থাকছিলেন। অসুস্থতার কারণে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম চলে এসেছিলেন তিনি। এখন ইমতিয়াজের মরদেহ নড়াইলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আগামীকাল শুক্রবার সকালে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

ইয়াসমিন নাহার ২০১৩ সাল থেকে চট্টগ্রামের কৃষ্ণকুমারী সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। তবে তাঁর চাকরি এখনো স্থায়ী হয়নি। তাঁর স্বামী ইনামুল একসময় পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ২০১৮ সালের পর তাঁর পক্ষে পূর্ণকালীন এই চাকরি আর চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। বর্তমানে তিনি খণ্ডকালীন একটি কাজ করছেন। ছেলে ইমতিয়াজ চাকরি পাওয়ায় পরিবারটি নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিল। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর বাস্তব হলো না।
জন্মগতভাবেই ইমতিয়াজের ডান পা বাঁকা ছিল। পরে দেশে-বিদেশে তাঁর চিকিৎসা করানো হয়। পায়ে দেওয়া হয় প্লাস্টার। প্লাস্টার খোলার সময় তাঁর পা ভেঙে যায়। পরে তাঁর দুই পায়ে সমস্যা দেখা দেয়। মেরুদণ্ডের হাড়েও সমস্যা দেখা দেয়। এইচএসসি পরীক্ষার আগে একবার তাঁর শরীরের পুরো বাঁ পাশ অবশ হয়ে গিয়েছিল। ইমতিয়াজ সোজা হয়ে বসতে পারেন না। হাতেও পুরোপুরি শক্তি পান না।

মা ইয়াসমিন বলেছিলেন, একপর্যায়ে ছেলের শারীরিক সীমাবদ্ধতার বিষয়টি মেনে নেন। মনস্থির করেন, প্রতিবন্ধকতার কারণে ছেলে যাতে কোথাও পিছিয়ে না পড়ে। ছেলেকে ভালো স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়েছেন। নিজের শারীরিক কষ্ট ভুলে পড়াশোনার জন্য ছেলেকে কোলে নিয়ে পাঁচতলা পর্যন্ত উঠেছেন। আর ছেলের মধ্যেও জীবনে ভালো কিছু করার প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি সব সময় কাজ করছিল।

নাসিরনগর হানাদার মুক্ত দিবস আজ

জাতীয়, নাসিরনগর, 6 December 2024, 782 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
৭ ডিসেম্বর নাসিরনগর হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। মুক্ত হয় নাসিরনগর উপজেলা। প্রতি বছরই এ দিনটিতে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে উপজেলা প্রশাসন। ১৯৭১ সালের ১৫ নভেম্বর পাক হানাদার বাহিনী নাসিরনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামবাসীর ওপর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। উপজেলার ফুলপুর, নুরপুর, কুলিকুন্ডা, সিংহগ্রাম ও তিলপাড়া গ্রামের নিরীহ সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার চালোনো হয়। বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়।
মুক্তিযোদ্ধা ও সংগ্রামী জনতা পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে আজকের দিনে নাসিরনগর থানা অভ্যন্তরে (পুলিশ স্টেশন) স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করে।

banner