অনলাইন ডেস্ক :
ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধা জোরদার এবং অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার পাশাপাশি এ অঞ্চলের স্থিতিশীল ভবিষ্যতের জন্য সামুদ্রিক কূটনীতি জোরদার করার আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ ১২ মে শুক্রবার ঢাকায় ২ দিনব্যাপী ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্স (আইওসি) উদ্বোধনকালে তিনি এই আহবান জানান। এ সময় তিনি টেকসই পদ্ধতিতে রোহিঙ্গাদের নিজ বাসভূমে প্রত্যাবাসনে সক্রিয় বৈশ্বিক সহায়তা কামনা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ভারত মহাসাগর ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এ অঞ্চলের সব দেশের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ। আমি ষষ্ঠ সম্মেলনে ছয়টি অগ্রাধিকারের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করতে চাই। আমরা সম্প্রতি ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক প্রণয়ন করেছি।
বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন এই সম্মেলনের আয়োজন করছে। মরিশাসের প্রেসিডেন্ট ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ২৫টি দেশের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি দল সম্মেলনে যোগ দিচ্ছে। এছাড়া ডি-৮, সার্ক ও বিমসটেকের প্রতিনিধিসহ প্রায় ১৫০ জন বিদেশি অতিথি অংশ নিচ্ছেন। সম্মেলনে মিয়ানমারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
উদ্বোধনী অধিবেশনে মরিশাসের প্রেসিডেন্ট পৃথ্বীরাজসিং রূপন, মালদ্বীপের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফয়সাল নাসেম, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এবং সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র বিষয়ক সেকেন্ড মন্ত্রী ড. মালিকী ওসমান সম্মেলনে বক্তব্য দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, উন্নয়নের জন্য ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোকে সামুদ্রিক কূটনীতি গড়ে তুলতে হবে। এর মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা সম্ভব। এছাড়া এ অঞ্চলের অনেক দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব কমাতে সহযোগিতা বাড়ানো প্রয়োজন।
সম্মেলনে তিনি সমুদ্রে জরুরি পরিস্থিতিতে সাড়াদান, অনুসন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রমসহ ভারত মহাসাগরে সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং নিরাপত্তার বিষয়ে বিদ্যমান ব্যবস্থা জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে নৌ চলাচল ও ওভারফ্লাইটের স্বাধীনতার অনুশীলনকে সমুন্নত রাখার আহবান জানান।
শেখ হাসিনা শান্তি সংস্কৃতি এবং জনগণকেন্দ্রিক উন্নয়ন জোরদারের আহবান জানিয়ে বলেন, এ অঞ্চলে শান্তিপূর্ণ, ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের জন্য বিশ্ব জনসংখ্যার অর্ধেক নারীদের বিষয়ে যথাযথ মনোযোগ দেওয়া উচিত। এ লক্ষ্যে উন্মুক্ত, স্বচ্ছ, নিয়মভিত্তিক বহুপাক্ষিক ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, অনেক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের ১১ লাখের বেশি নাগরিককে সাময়িক আশ্রয় দিয়েছে। এই দৃষ্টিভঙ্গি এ অঞ্চলে একটি বড় মানবিক বিপর্যয় ঠেকিয়েছে। এখন আমরা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিরাপদ ও টেকসই উপায়ে তাদের মাতৃভূমিতে প্রত্যাবাসনের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের সক্রিয় সমর্থন চাই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি উপকূলীয় রাষ্ট্র হিসাবে বহু শতাব্দী ধরে সামুদ্রিক কার্যকলাপের কেন্দ্রস্থল এবং এই দেশ অনেক আঞ্চলিক প্ল্যাটফরমে সক্রিয়। বাংলাদেশ ভারতীয় মহাসাগর রিম অ্যাসোসিয়েশনের বর্তমান সভাপতি এবং আন্তর্জাতিক সমুদ্রতল কর্তৃপক্ষের কাউন্সিলেরও সভাপতি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দীর্ঘদিনের পুরোনো ও অপ্রচলিত চ্যালেঞ্জে বিশ্বাস করে। আমরা এই অঞ্চলে শান্তির জন্য আমাদের ভূমিকা পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং একটি সহনশীল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে অন্য সব দেশও একই কাজ করবে বলে আশা করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এশিয়া-প্যাসিফিক ও আফ্রিকান অঞ্চলে ভারত মহাসাগর অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং কৌশলগত প্রভাব রয়েছে। এ অঞ্চলে বৈশ্বিক জনসংখ্যার ৬৪% এবং বৈশ্বিক জিডিপির ৬০% রয়েছে। অনেক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এ অঞ্চলটি অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। তাই ভারত মহাসাগর অঞ্চলের দেশগুলোকে সবার জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, একজন দূরদর্শী নেতা হিসাবে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের ‘মেরিটাইম জোন’র সীমানা নির্ধারণ করতে, সীমানার মধ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার সক্ষমতা গড়ে তুলতে এবং সমুদ্র সম্পদ অনুসন্ধানের সুবিধার্থে টেরিটোরিয়াল ওয়াটারস অ্যান্ড মেরিটাইম জোনস অ্যাক্ট, ১৯৭৪ প্রণয়ন করেছিলেন। এই আইনটি সমুদ্রের আইন সম্পর্কিত জাতিসংঘ কনভেনশন, ১৯৮২ গৃহীত হওয়ার ৮ বছর আগে কার্যকর হয়েছিল, যখন বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে উপলব্ধি সীমিত ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্মেলনের থিম ‘শান্তি, অংশীদারিত্ব ও সমৃদ্ধি : একটি সহনশীল স্থিতিস্থাপক ভবিষ্যতের দিকে’ খুবই উপযুক্ত ও সময়োপযোগী। কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতি এবং চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের ফলে নিষেধাজ্ঞা ও পালটা নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে এ থিমটি আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবজাতির টিকে থাকার জন্য শান্তি অপরিহার্য। এটি সারা বিশ্বে নারী ও পুরুষের গভীরতম আকাংক্ষার প্রতিফলন। সেই ভাষণে তিনি ভারত মহাসাগরকে একটি শান্তিপূর্ণ এলাকা হিসাবে বজায় রাখার ওপর বিশেষভাবে জোর দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, বিশ্ব শান্তি ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ২৩ মে, ১৯৭৩ সালে জুলিও-কুরি শান্তি পদক দেওয়া হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর দর্শন অনুসরণ করে বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তির প্রবল প্রবক্তা হয়ে উঠেছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী মহানগর এক্সপ্রেসের একটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার প্রায় নয় ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে। এতে অন্যান্য ট্রেনে কিছুটা শিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ৮ মার্চ শনিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পর ডাউন পথের এক নম্বর লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিলো। ঘটনার প্রায় নয় ঘণ্টা পর দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনটি নির্ধারিত গন্তব্যের দিকে ছেড়ে গেছে। দুর্ঘটনা কবলিত বগিটি রেখে সকাল পৌনে নয়টার দিকে ট্রেনটি নির্ধারিত গন্তব্যে ছেড়ে যায়।
এদিকে, দুর্ঘটনার কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ের স্টেশনের এক নং লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় অন্যান্য ট্রেনে কিছুটা শিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের প্রধান বুকিং সহকারী মো. কবির হোসেন, সহকারী স্টেশন মাস্টার সাকির, ট্রেন যাত্রী এমরান উদ্দিন ও মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনের আনঅফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে জানা যায়, রাত ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে প্রবেশ করে। ট্রেনটি থামার আগ মুহূর্তে মাঝামাঝি থাকা ‘ঝ’ বগি লাইন থেকে সরে যায়। এতে ট্রেন বেশ ঝাঁকুনি খায়। ট্রেনের কয়েকটি বগিতে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। এতে করে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
পরে আখাউড়া থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন গিয়ে দুর্ঘটনা কবলিত বগি সরিয়ে নেয়। মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীদেরকে একই গন্তব্যের তুর্ণা নিশিথা এক্সপ্রেস ট্রেনে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
চার দিন আগে হালকা বৃষ্টিপাতে জলাবদ্ধতায় সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে চট্টগ্রাম নগরবাসীকে। জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেতে নগরবাসী বারবার আকুতি জানিয়ে আসছে। কিন্তু বুধবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়রের ঘোষিত নতুন অর্থবছরের বাজেটে বিশেষ গুরুত্ব পায়নি এই সমস্যা।
এই খাতে এক দশক ধরে যেভাবে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে, ঘোষিত বাজেটেও এর ধারাবাহিকতা রক্ষা হয়েছে। খাল, ছড়া, নালা, নর্দমা রক্ষণাবেক্ষণসহ জলাবদ্ধতা দূরীকরণে বরাদ্দ রাখা হয়েছে বাজেটের মাত্র দেড় শতাংশ। যদিও নগর পরিকল্পনাবিদরা নিয়মিত খাল-নালা পরিষ্কারের পাশাপাশি নানা উদ্যোগের কথা বলে আসছেন। অপ্রতুল বরাদ্দে তা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন তাঁরা।
নগরের আন্দরকিল্লার পুরোনো নগর ভবন মিলনায়তনে সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ১ হাজার ৮৮৭ কোটি ২৮ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করেন। এর মধ্যে খাল, ছড়া, নালা, নর্দমার রক্ষণাবেক্ষণের সঙ্গে জলাবদ্ধতা দূরীকরণে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে (২০২২-২৩) এই খাতে ২৪ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হলেও খরচ হয়েছে মাত্র ৭ কোটি টাকা।
নগরে খাল রয়েছে ৫৭টি ও নালা ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার। জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। প্রকল্পটির আওতায় ৩৬টি খাল ও ৩০০ কিলোমিটার নালা খনন ও সংস্কার করা হবে। নগরের বাকি ২১টি খাল ও ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটার নালা নিয়মিত পরিষ্কার এবং রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। এই অপ্রতুল বরাদ্দ দিয়ে তা রক্ষণাবেক্ষণ সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অথচ ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নগরবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তির প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী। এটি তাঁর তৃতীয় বাজেট। তিন অর্থবছরের বাজেটে নগরবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে বিশেষ কোনো বরাদ্দ রাখতে দেখা যায়নি তাঁকে। তবে তিনি বলছেন, খাল-নালাগুলো সংস্কারে নতুন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
কমছে বাজেটের আকার
২০২২-২৩ অর্থবছরে ২ হাজার ১৬১ কোটি ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছিল। এবার বরাদ্দ ২৭৩ কোটি ৯৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা কমেছে। এর আগের অর্থবছরেও ৩২০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা কমিয়ে বাজেট ঘোষণা করা হয়েছিল।
সরকারের অনুদান কমছে
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বাজেটে সরকারের অনুদান ক্রমান্বয়ে কমে আসছে। নতুন অর্থবছরের বাজেটে সরকারের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের বিপরীতে উন্নয়ন অনুদান প্রত্যাশা ৮৯৪ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরে প্রত্যাশা ছিল ১ হাজার ২১২ কোটি টাকা। বিপরীতে মিলেছে ৬৪১ কোটি ২৭ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। নিজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৫০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। আগের অর্থবছরে আয় ধরা হয়েছিল ৯০৪ কোটি ৫৭ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেট অনুসারে সিটি করপোরেশনের আয় হয়েছে ৫০৬ কোটি ৬০ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশনে বাজেট বিবরণী উপস্থাপন করেন অর্থ ও সংস্থাপন বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মো. ইসমাইল। উপস্থিত ছিলেন সিটি করপোরেশনের সচিব খালেদ মাহমুদ, ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির ও ওয়ার্ড কাউন্সিলররা।
অনলাইন ডেস্ক :
ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো.নাহিদ ইসলাম বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারিভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করার কোনো ঘটনা ঘটেনি। এরকম কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। অল্প একটু যা সমস্যা হয়েছে তা ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। সেখানে নেটসেবা নির্বিঘ্ন আছে।
আজ ২১ সেপ্টেম্বর শনিবার ফেনীর ছাগলনাইয়ার রাধানগরের দক্ষিণ আন্ধারমানিক এলাকায় বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শনে এসে তিনি এ কথা বলেন।
মো. নাহিদ ইসলাম বলেন, পাহাড়ে বহুমুখী ষড়যন্ত্র থেমে নেই। সেই সাথে দেশকে অশান্ত করার বহুমুখী ষড়যন্ত্র থেমে নেই। রাষ্ট্র সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখছে।
ফেনীর বন্যা পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, ত্রাণ কার্যক্রম সন্তোষজনক ভাবে হয়েছে। পুনর্বাসন কার্যক্রমও চলমান আছে। আশা করছি সবাই ঘর পাবে, কেউ গৃহহীন থাকবে না।
তিনি বলেন, ভারতের উজানের পানিতে এ বন্যা হয়েছে। আমরা আগেও বলেছি ভারত যা করেছে তা ঠিক হয়নি।
জেলার ফুলগাজীর জগতপুরেও বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি। এসময় ফেনী জেলা প্রশাসক মুসাম্মৎ শাহীনা আক্তার ও পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
চলারপথে ডেস্ক :
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলেই উন্নয়ন হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ মানুষকে উপহার দেয় উন্নয়ন। আমরা আজ শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি প্রত্যেকের ঘরে ঘরে। আমরা নতুন নতুন স্কুল করেছি। ২৬ হাজার নতুন প্রাইমারি স্কুল সরকারীকরণ করেছি। আজ আমাদের সাক্ষরতার হার ৭৫ দশমিক ২ শতাংশ।
আজ ১১ মার্চ শনিবার বিকেলে ময়মনসিংহের সার্কিট হাউজ মাঠে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে ময়মনসিংহে চারটি সিনেমা হলে বোমা হামলা হয়। তখন অনেক মানুষ মারা যায় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওদের ক্ষমতায় থাকা মানেই দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে উন্নয়ন হয়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরই ময়মনসিংহকে বিভাগ করে দিয়েছি। প্রতিটি বিভাগের মতো এ বিভাগে ময়মনসিংহে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হবে, একটি পৃথক ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় করে দেবো। আমরা অনেক কিছু করতে পারতাম। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে অনেক কিছু সম্ভব হয়নি।’
দেশে খাদ্য উদ্বৃত্ত আছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘২০০১ সালে আমরা যখন ক্ষমতা হস্তান্তর করি, তখনো ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুত রেখে গেছি। ২০০১ সালে আসলো লুটেরা, সন্ত্রাসীর দল বিএনপি। তারা আবার বাংলাদেশকে খাদ্যে ঘাটতির দেশে পরিণত করে। ২০০৯ সালে আবার যখন সরকার গঠন করি, তখন দেখি সেই ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি। আল্লাহর রহমতে দেশে এখন আর খাদ্য ঘাটতি নেই। ২১ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য এখন মজুত আছে।’
আমিষের উৎপাদন বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আবাদি জমির পাশাপাশি আমাদের জলাভূমিকেও ব্যবহার করতে হবে। মাছ চাষের মাধ্যমে জলাভূমির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’
যুবসমাজকে উদ্যোক্তা হিসেবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘দেশের যুবসমাজকে উন্নয়নের অংশীদার হতে হবে। আমরা যুবকদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ ও ঋণের ব্যবস্থা করেছি। যুবকরা এসব সুযোগ নেওয়ার মাধ্যমে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আরও মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে পারবেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার একটাই লক্ষ্য—আমার বাবা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য তা বাস্তবায়ন করা।’
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার মাসে ময়মনসিংহে আমি আপনাদের জন্য কিছু উপহার নিয়ে এসেছি। এসময় উদ্বোধন করা ৭৩টি উন্নয়ন প্রকল্প পড়ে শুনিয়ে তিনি বলেন, স্বাধীনতার মাসে ৭৩টি প্রকল্প উদ্বোধন করে দিয়ে গেলাম, সেগুলো স্বযত্নে রাখবেন। এরপর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা ৩০টি প্রকল্প পড়ে শুনিয়ে বলেন, এগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।
এর আগে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে জনসভাস্থল সার্কিট হাউজ মাঠ থেকে একযোগে ৭৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৩০টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরমধ্যে প্রায় ৫৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা ৭৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং প্রায় দুই হাজার ৭৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সরকারপ্রধান। দুপুর ২টা ৫৮ মিনিটে জনসভা মঞ্চে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী। বিকেল ৩টায় প্রধান অতিথির আসন গ্রহণ করেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহেতাশেমুল আলমের সভাপতিত্বে জনসভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, মির্জা আজম এমপি, শফিউল আজম চৌধুরী নাদেল প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগ দিতে সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারণ মানুষ দলে দলে আসতে থাকেন। দুপুর ১২টার দিকে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠ। প্রধানমন্ত্রী আসার আগেই জনসমুদ্রে পরিণত হয় জনসভাস্থল। সকাল থেকে সড়কজুড়ে নাচ-গান আর বাদ্য-বাজনা বাজিয়ে জনসভায় যোগ দেন নেতাকর্মীরা।
অনলাইন ডেস্ক :
জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, পাসপোর্ট করতে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না। পাসপোর্ট তো আমার নাগরিক অধিকারের একটা অধিকার। এ ধরনের সিদ্ধান্তগুলো জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমি চোর না ডাকাত সেটা পুলিশ আলাদাভাবে বিচার করবে। আমাকে যে জন্ম সনদ দিয়েছেন সেটা তো কোনো পুলিশ ভেরিফিকেশন নিয়ে করেননি। আমাকে এনআইডি দিয়েছেন সেটাও কোনো পুলিশ ভেরিফিকেশন নিয়ে করেননি, নাগরিক হিসেবে পেয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা আইন করে দিয়েছি, কিন্তু গ্রামে-গঞ্জে পৌঁছেনি, অথচ আমরা এখানে সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে আছি। এই যে দূরত্ব এটা যেন না থাকে। এগুলোর কোনো কারণ নেই, বিনা কারণে মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে। হয়রানি করাটাই যেন আমাদের ধর্ম। সরকার মানেই মানুষকে হয়রানি করা, এটাকে উল্টে দিতে হবে। সরকার ভিন্ন জিনিস। আপনার অধিকার পৌঁছে দেওয়াই আমাদের কাজ।
আজ ১৬ ফেব্রুয়ারি রবিবার শুরু হলো জেলা প্রশাসক সম্মেলন। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তিন দিনের এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।