চলারপথে ডেস্ক :
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় করা হত্যা, নাশকতা ও রাষ্ট্রদ্রোহসহ ১১ মামলার অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি ফের পিছিয়েছে। আগামী ১৫ জুন শুনানির নতুন তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।
খালেদা জিয়ার পক্ষে করা আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম আছাদুজ্জামান আজ ১৫ মে সোমবার এ আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আজ মামলার চার্জ গঠনের ওপর শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু খালেদা জিয়ার পক্ষে অধিকাংশ মামলার কার্যক্রম উচ্চ আদালতে স্থগিত থাকায় ফের সময় চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। আদালত তা মঞ্জুর করে শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করেন। খালেদা জিয়া এসব মামলায় বর্তমানে জামিনে আছেন।
মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে রাজধানীর দারুস সালাম থানায় করা নাশকতার ৮টি, যাত্রাবাড়ী থানার দু’টি ও রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলা। খালেদা জিয়ার পক্ষে হাইকোর্ট এসব মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
রাঙামাটিতে বাস চাপায় দুই সিএনজি যাত্রী নিহত হয়েছেন। তারা হলেন পরি চাকমা (৪৫) ও গুরিমালা চাকমা (৫৫)। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরো চার জন। আহতরা হলেন রিপন চাকমা, পিন্টু চাকমা, রিগেন চাকমা । অপর এক জনের নাম জানা যায়নি।
আজ ৪ নভেম্বর শনিবার বিকাল ৩টায় শহরের ভেদভেদী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে যাত্রী নিয়ে রাঙামাটি আসে খাজা গরীবে নেওয়াজ নামে একটি বাস। বাসটি শহরের ভেদভেদী এলাকায় পৌঁছালে যাত্রীসহ একটি সিএনজিকে (অটোরিক্সা) চাপা দেয়। এসময় ঘটনা স্থলে মারা যান পরি চাকমা ও গুরিমালা চাকমা। আহত হন সিএনজি চালকসহ চারজন। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। দুর্ঘটনা কবলিতদের উদ্ধার করে প্রথমে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। নিহতদের হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়। খবর দেওয়া হয় তাদের স্বজনদের।
নিহত পরি চাকমা ও গুরিমালা চাকমার স্বজনরা বলেন, শনিবার হাট থাকায় জুমের উৎপাদিত ফসল নিয়ে রাঙামাটি শহরে এসেছিল তারা। কিন্তু হাট শেষে সবাই লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলো। এসময় তাদের স্বজনদের আর্তচিৎকারে ভারী হয়ে ওঠে হাসপাতালের চারপাশ।
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আর এমও ডা. মো. সওকত বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশংকাজনক। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে দুর্ঘটনার পর দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় বাস চালক। তাকে আটক করতে অভিযানে নেমেছে পুলিশ।
রাঙামাটি জেলা পুলিশ সুপার মো. মীর আবু তৌহিদ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের লাশ ময়না তদন্তের পর তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। চালকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গতকাল ২৪ অক্টোবর বুধবার রাতে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।
গত মঙ্গলবার ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছিল শেখ হাসিনার পতনের অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এর পরদিনই নির্বাহী আদেশে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। এ সিদ্ধান্তে রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনন্দ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেও অন্য ছাত্র সংগঠনগুলো সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। অজ্ঞাত স্থান থেকে গতকাল রাতেই বিবৃতিতে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান নিষিদ্ধকে ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়েছেন।
১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ কয়েকজন ছাত্রনেতা ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধে সংগঠনটির গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে।
নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম শক্তি ছিল ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠন। তবে স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে এবং ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগের অনেকের বিরুদ্ধে অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পর এই ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দখলদারিত্ব, মারামারি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, অপহরণ, মাদক বাণিজ্য, বিরোধী দলগুলোর কর্মসূচিতে হামলা, দমনপীড়ন, অস্ত্রবাজির মতো অপরাধের শত শত অভিযোগ ওঠে।
এই সময়ে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে অন্তত অর্ধশত প্রাণহানি ঘটেছে। ২০১২ সালে বিশ্বজিৎ দাস এবং ২০১৯ সালে আবরার হত্যায় সংগঠনটি ধিকৃত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ‘গেস্ট রুম’ নামে নিপীড়নের কুখ্যাতিও রয়েছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।
২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগ ছিল দমনকারীর ভূমিকায়। গত জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান শুরুর পর শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মারমুখী ছিল। গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের নজিরবিহীন মারধর করে, যা থেকে সারাদেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগের দিনেও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর অভ্যুত্থান দমনে অস্ত্র হাতে রাজপথে দেখা যায়। অভ্যুত্থানের সময় এবং শেখ হাসিনার পতনের পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ থেকে বিপুল সংখ্যক অস্ত্র পাওয়া যায়। মধ্য জুলাই থেকেই অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রলীগকে বের করে দিয়েছে অভ্যুত্থানকারীরা। ৫ আগস্টের পর ছাত্রলীগের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।
প্রজ্ঞাপনেও ছাত্রলীগকে গত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে হত্যা, নির্যাতন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ, যৌন নিপীড়নের জন্য দায়ী করা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী নানা কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল ছাত্রলীগ। এসবের প্রমাণ দেশের সব গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতাকর্মীর অপরাধ আদালতেও প্রমাণ হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরো উল্লেখ করা হয়, গত ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাধারণ ছাত্রছাত্রী ও জনগণের ওপর আক্রমণ করে শত শত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিকে হত্যা করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী; অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক, উস্কানিমূলক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। সরকারের কাছে এসব কর্মকাণ্ডের যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন নামাঙ্কিত রাজনৈতিক শাখা-২-এর জারি করা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯-এর ধারা ১৮-এর উপধারা (১)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হলো।
আইনের ১৯ ধারা অনুযায়ী, নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদনে ৩০ দিন সময় পাবে ছাত্রলীগ। আবেদন করলে সরকার তা ৯০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করবে। নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বহাল থাকলে ৩০ দিনের মধ্যে হাইকোর্টে আপিলের সুযোগ পাবে।
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ২০ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত সত্তার কার্যালয় বন্ধ করবে সরকার। ব্যাংক হিসাব বা অন্য সম্পদ জব্দ হবে। নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্যরা দেশ ত্যাগ করতে পারবে না। সংগঠনের পক্ষে বা সমর্থনে বিবৃতি, বিজ্ঞপ্তি, প্রকাশনা, প্রচারণা, সংবাদ সম্মেলন বা জনসমক্ষে বক্তৃতা নিষিদ্ধ হবে।
গত ১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার একই আইনে জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করেছিল। তাদের আবেদনে অন্তর্বর্তী সরকার গত ২৮ আগস্ট নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।
ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধে বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনন্দ মিছিলের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নুসরাত তাবাসসুম বলেন, জীবনের অন্যতম আনন্দের দিন আজ। ছাত্রলীগ দীর্ঘ ১৬ বছর ধরেই সন্ত্রাসী কার্যক্রম করেছে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ ছিল না। এই ছাত্রলীগ ১৫ জুলাই আমাদের ওপর হামলা করেছে। সারাদেশে তারা অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে শহীদ করেছে। সরকারকে ধন্যবাদ জানাই ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করায়। আর কোনো ছাত্র সংগঠন যেন এমন সন্ত্রাসী না হয়।
সমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম বলেন, যারা কথায় কথায় আন্দোলনে জঙ্গিবাদ খুঁজত, তাদেরকেই জঙ্গি ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের গর্ত থেকে বের করে ধোলাই দিতে হবে।
আশরিফা খাতুন বলেন, আবু সাঈদের মৃত্যুর পর ছাত্রলীগ রাজাকার দমন হয়েছে বলে উল্লাস করেছিল। যখনই কোনো ন্যায্য দাবিতে রাজু ভাস্কর্যে দাঁড়িয়েছি, ছাত্রলীগ মেরেছে। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য গেলে, সেখানেও মারত। কোনোভাবেই ছাত্রলীগ যেন ফিরতে না পারে।
অন্য ছাত্র সংগঠনগুলো ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে না বললেও উচ্ছ্বাস দেখায়নি। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, ছাত্রলীগ খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, ভোট ডাকাতি, গণহত্যাসহ সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। সব জঙ্গি সংগঠন মিলে যত মানুষ খুন করেছে; ছাত্রলীগ এককভাবে বেশি করেছে। ছাত্রদলের শতাধিক নেতাকর্মী গুমের শিকার হয়েছে এবং শহীদ হয়েছে। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধে ছাত্র রাজনীতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। সুস্থ রাজনীতিচর্চার পথ উন্মুক্ত হয়েছে। তবে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধই সমাধান নয়। সংগঠনটির যারা সন্ত্রাস করেছে, তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক ডা. সাদেক আবদুল্লাহ বলেন, ছাত্র রাজনীতিকে কলুষিত করেছে ছাত্রলীগ। সন্ত্রাস, নিপীড়ন, নির্যাতনের কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগকে চায় না। ছাত্রলীগের অপরাধীদের বিচার চায়।
ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড বলেন, ছাত্রলীগের নিষিদ্ধকে সাধুবাদ জানাই। নিষিদ্ধ হলেই অপতৎপরতা বন্ধ হবে না। অপরাপর সংগঠনের সঙ্গে আলাপে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন ছিল। ছাত্রলীগের তৎপরতা বন্ধে জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন।
ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বোস বলেন, নির্বাহী আদেশে কয়েক দিন আগে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ক্ষমতার পরিবর্তনে তা বদলেও গেছে। একটি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা কতখানি ফলপ্রসূ হবে, জানি না। নির্বাহী আদেশে ছাত্রলীগকে কতটুকু নিঃশেষ করা যাবে, জানি না। ছাত্রলীগকে মোকাবিলা করতে হবে আদর্শের জায়গায় এবং মাঠের রাজনীতিতে। রাজনৈতিকভাবে সতর্ক থাকতে হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
জীবনের জন্য বিজ্ঞান ‘শেখ হাসিনার দর্শন, সব মানুষের উন্নয়ন’ এই প্রতিপ্রাদ্যকে সামনে রেখে রাজশাহীর দূর্গাপুরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের আয়োজনে স্থানীয়ভাবে উদ্ভাবিত লাগসই প্রযুক্তি প্রয়োগ এবং সম্প্রসারণ শীর্ষক সেমিনার ও প্রদর্শনী অনু্ষ্ঠিত হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসনের বাস্তবায়নে আজ ১২ জুন সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা পরিষদ হলরুমে এই সেমিনার প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে উপজেলা পরিষদ চত্বরে একটি র্যালি বের করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল রানার সভাপতিত্বে ও যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা রুহুল আমিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের উপসচিব (অধিশাখা-৬) রোকনুজ্জামান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান বানেছা বেগম, সহকারি কমিশনার (ভূমি) কৃষ্ণ চন্দ্র, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও গবেষণা পরিষদের সিনিয়র সাইন্টিফিক (বিসিএসআইআর) অফিসার রাজীব বনিক, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও গবেষণা পরিষদের সাইন্টিফিক (বিসিএসআইআর) অফিসার রিফাত হোসেন, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও গবেষণা পরিষদের সাইন্টিফিক (বিসিএসআইআর) অফিসার নাজিম আহম্মেদ, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জাহীদুল হক, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কুন্তলা ঘোষ, উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ, দুর্গাপুর ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজ, উপজেলা প্রকৌশলী মাসুক-ই-মোহাম্মাদ, উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাহাবুবা খাতুন, উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন, উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা হামিদা খাতুন।
এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
জাতীয় সমবায় দিবস আজ। প্রতি বছর নভেম্বরের প্রথম শনিবার দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে।
বরাবরের মতো এবারও নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ৫২তম সমবায় দিবস পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘সমবায়ে গড়ছি দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ।’
এদিকে জাতীয় সমবায় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বাণীতে বলেছেন, ‘সমবায় শেখায় একতা, সমবায় আনে সমৃদ্ধি। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে মাধ্যমে সম্মিলিত ও ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার দ্বারা স্বনির্ভরতা অর্জন তথা আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সমবায় পদ্ধতি একটি ফলপ্রসূ পদক্ষেপ। কৃষি, মৎস্য, দুগ্ধ, পরিবহণ, গৃহায়ণ, শিল্প, বিমা, বাজারজাতকরণসহ অর্থনীতির সব ক্ষেত্রে সমবায় পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকর।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রাম-সমবায়ের মাধ্যমে একটি স্বনির্ভর অর্থনীতি গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সমবায়কে উন্নয়নের অন্যতম প্রায়োগিক পদ্ধতি বিবেচনা করে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের সংবিধানে সমবায়কে মালিকানার অন্যতম খাত হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছিলেন।’
বাণীতে রাষ্ট্রপতি জাতির পিতার অর্থনৈতিক দর্শন ‘সমবায়’ শক্তিকে একটি গণমুখী সমবায় আন্দোলনে পরিণত করতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহবান জানান।
এ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী সমবায় খাত দেশের দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সমবায়ীরা দেশের কৃষি, মৎস্য চাষ, পশু পালন, দুগ্ধ উৎপাদন, পুষ্টি চাহিদা পূরণ, পরিবহণ, ক্ষুদ্র ব্যবসা, আবাসন, নারীর ক্ষমতায়ন, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমাদের সরকার স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ী নিবিড় পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ, সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা, প্রযুক্তিগত ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে সমবায়ীদের দক্ষতা ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে। স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা চারটি ভিত্তি নির্ধারণ করেছি-স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সমাজ, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সরকার। সমবায়ের মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন করে স্মার্ট নাগরিক এবং স্মার্ট সমাজ তথা অর্থনীতিকে স্মার্ট করে গড়ে তোলা সম্ভব বলে আমি বিশ্বাস করি। এবারের জাতীয় সমবায় দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সমবায়ে গড়ছি দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে।’