চলারপথে রিপোর্ট :
সড়কে টোলঘরের পাশে বিভিন্ন গাড়ির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করছে ট্রাফিক পুলিশের দুইটি টিম। মোটরসাইকেলের হেলমেট, অন্যান্য গাড়ির কাগজপত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ এ সংক্রান্ত বিভিন্ন কাগজপত্র না পেলেই দেওয়া হচ্ছে মামলা। এসময় সড়কে ট্রাফিক পুলিশ দেখে টোলঘরের উল্টো পথে যাওয়ার সময় পালাতে গিয়ে বিপরীত দিক থেকে আসা আরেকটি মোটরসাইকেলের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে।
আজ ১৫ মে সোমবার সন্ধ্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতুর টোল প্লাজায় এ ঘটনা ঘটে। এতে বিপরীত দিক থেকে আসা মোটরসাইকেলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে মোটর সাইকেলের চালকের হাতে জখম হলেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
পরে পালানোর চেষ্টা করা মোটর সাইকেল আরোহী চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার রানিহাটি এলাকার জহরুল ইসলামের ছেলে মো. নাজমুল হককে আটক করে পুলিশ ও স্থানীয়রা। এসময় তার দেহ তল্লাশি করে ট্রাফিক পুলিশ। পরে আইন লঙ্ঘন করার দায়ে কয়েকটি ধারায় মামলা দেয় ট্রাফিক পুলিশ। এসময় তার মোটরসাইকেল জব্দ করে পুলিশ।
বিপরীত দিক থেকে আসা মোটর সাইকেলের চালক আব্দুর রহিম পলাশ বলেন, স্বাভাবিক গতিতে টোল ঘর পার হচ্ছিলাম। হঠাৎ করে উল্টোপথে তীব্র গতিতে বিপরীত দিক থেকে একটি মোটর সাইকেল এসে সরাসরি ধাক্কা দেয়। এসময় গাড়ি নিয়ে পড়ে যাই। হাতে ও গাড়ির সামনের দিকে আঘাত লেগেছে। পরে পুলিশ ও স্থানীয়রা এসে আমাদের উদ্ধার ও নাজমুলকে আটক করে।
প্রত্যক্ষদর্শী জাহিদ হাসান জানান, ঘটনাটি দেখে প্রথমে আমাদের ধারণা হয়েছিল, তার কাছে অবৈধ কিছু থাকার কারণে পালানোর চেষ্টা করতে গিয়ে আরেকটি গাড়িতে ধাক্কা দেয়। কিন্তু পরে পুলিশ গাড়ি ও তার দেহ তল্লাশি করে কিছুই পায়নি।
নাজমুল হক বলেন, আমার গাড়ির কাগজপত্র সবই আছে। কিন্তু তা বাসায় রয়েছে। এমনকি সাথে হেলেমেটও ছিল না। তাই মামলার ভয়ে উল্টোপথে পালাতে গিয়ে বিপরীত দিক থেকে আসা মোটর সাইকেলের সাথে ধাক্কা লাগে।
ট্রাফিক সার্জেন্ট গাজিউল ইসলাম বলেন, বিকেল থেকে সেতু চত্বরে বিশেষ অভিযান চলছে। জনগণের জানমাল নিরাপত্তার জন্য আমরা কাজ করছি। সে (নাজমুল) বলতে পারতো সমস্যা রয়েছে। আমরা মানবিক দিক বিবেচনা করে দেখতাম। কিন্তু তা না করে উল্টোপথে পালিয়ে যাওয়ার সময় একটি গাড়িকে ধাক্কা দেয়। পরে স্থানীয়রা ও পুলিশের সদস্যরা তাকে আটক করে। এসময় তার কাছে হেলমেটসহ কোনো কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। তাই তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
অতিরিক্ত মূল্যে চার্জার ফ্যান বিক্রির অপরাধে রাজধানীর নবাবপুরে অভিযান চালিয়ে দুই আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর।
আজ ৮ জুন বৃহস্পতিবার নওয়াবপুরে ন্যাশনাল ফ্যান হাউজ ও মিডিয়া হোম অ্যাপ্লায়েন্স নামে দুই আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ টাকা করে জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিদপ্তর।
তবে, অভিযান শুরুর খবরে অধিকাংশ চার্জার ফ্যান বিক্রেতারা দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যান। অনেকে দোকানে থাকা ফ্যান সরিয়ে ফেলে। অনেকে ব্যবসায়ী দোকান ছেড়ে পালিয়ে যান।
অভিযান পরিচালনা করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবদুল জব্বার। তিনি বলেন ১১ ফেব্রুয়ারিতে আমদানিকারক যে ফ্যান ২৪০০ টাকায় বিক্রি করেছেন, সে চার্জার ফ্যান ৪ জুন সাড়ে ৬ হাজারে বিক্রি করেছেন।
এসময় দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যাওয়া ব্যবসায়ীদের বিষয়ে তিনি বলেন, এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। আকস্মিকভাবে বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হবে। ভোক্তাদের কাছে এমন গলাকাটা দাম নিয়ে প্রতারণা করতে দেওয়া হবে না।
দেশজুড়ে চলমান তীব্র দাবদাহে লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবন। ভাপসা গরমে নাকাল রাজধানীবাসী। এ অবস্থায় একটু স্বস্তির আশায় তারা ছুটছেন চার্জার ফ্যানের দোকানগুলোয়। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ক্রেতাদের পকেট কাটার মহোৎসবে মেতে উঠেছেন ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার এ নৈরাজ্য ঠেকাতে মাঠে নামে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ঢাকায় অধিদপ্তরের তিনটি টিম বাজার তদারকির কার্যক্রম পরিচালনা করে। বায়তুল মোকাররম এলাকায়, স্টেডিয়াম মার্কেট এলাকায় এবং নবাবপুর মার্কেট এলাকায় অভিযানে চালানো হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
সব দেশের সঙ্গেই বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হলো- সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। আমরা সেই নীতিই মেনে চলি। আমাদের উন্নয়নে বা আমাদের অগ্রযাত্রায় কেউ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করুক- সেটা আমরা চাই না, সেটা আমরা বরদাশত করব না।
আজ ২ জুলাই রবিবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ জনগণের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী রূপ তো এ দেশের মানুষ দেখেছে। এদের কাছে রাজনীতি বলে কিছু নেই, ক্ষমতা হচ্ছে তাদের অর্থ বানানোর মেশিন; ক্ষমতা হচ্ছে জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসী দল। ওরা যদি ক্ষমতায় আসে, আবার এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে; এ দেশের সর্বনাশ করে দেবে। কাজেই সেটা যেন তারা করতে না পারে, সেজন্য সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘কানাডার ফেডারেল কোর্ট এই কথাই বলেছিল যে বিএনপি একটা সন্ত্রাসী সংগঠন। ওই সন্ত্রাসী সংগঠনের কোনো অধিকার নেই বাংলাদেশের মানুষ নিয়ে কথা বলার।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু লোক আছে, কথায় কথায় নালিশ করে, তো নালিশ করে কি হয়! ওই যে কথায় আছে না, ‘নালিশ করে বালিশ পাবে’। ওরা কিন্তু ওটাই পাওয়ার যোগ্য।
বিএনপির হাতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নির্যাতিত হওয়ার বর্ণনা দিতে গিয়ে আওয়ামী সভাপতি বলেন, ‘২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান- কেউই বাদ যায়নি তাদের অত্যাচার-নির্যাতন থেকে, মানুষকে গুলি করে মারা, হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে মারা, চোখ তুলে নেওয়া, হাত কেটে নেওয়া- এমন কোনো সন্ত্রাসী কাজ নাই বিএনপি না করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর কারও প্রতি প্রতিশোধ নিতে চায়নি। প্রতিশোধ যদি নিতে যেতাম, তাহলে ওই বিএনপি বা জামায়াতের অস্তিত্ব থাকত না।’
এ সময় তিনি বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলসহ বিভিন্ন সময়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের প্রাণহানি ও নির্যাতনের যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেসব বিষয়ে বিচার নিশ্চিতে আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীদের কাজ করার নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, ‘অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষ পুড়িয়ে মারা, পুলিশ মারা, বিভিন্ন সময় আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করা, বহু আসামি এখনও ঘুরে বেড়ায়। এরা যেন ঘুরে বেড়াতে না পারে। এদের যেন যথাযথ শাস্তি হয়। এদের যেন বিচার হয়।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ফিউজিটিভ (পলাতক) হয়ে ওই লন্ডনে বসে এখন সোশাল মিডিয়ায় বড় বড় কথা বলে। চোরের বড় গলা- কথায় আছে, সেই চোরের বড় গলাই আমরা শুনি। এত সাহস থাকলে বাংলাদেশে আসে না কেন?’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘১০ ট্রাক অস্ত্র, একুশে অগাস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাদের হত্যার চেষ্টা, আইভী রহমানসহ আমাদের ২২ জন নেতাকর্মী হত্যা করেছে- মানি লন্ডারিং, দুর্নীতি এমন কোনো অপকর্ম নাই যে না করে গেছে। আজকে সাজাপ্রাপ্ত, পলাতক।’
দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে। ‘মাই হাউস, মাই ফার্ম’, কমিউনিটি ক্লিনিক, ডিজিটাল বাংলাদেশ, ‘মাই ভিলেজ, মাই টাউন’ ইত্যদি কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং নানা সামাজিক নিরাপত্তামূলক কাজের মাধ্যমে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। গ্রামগুলো এখন আর গ্রাম নাই। আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছি। রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করেছি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। আমার লক্ষ্যই হলো দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা।
তিনি বলেন, ‘৬ বছর নির্বাসনে থেকে ফেরার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরেছি। দেশের এমন কোনো অঞ্চল নেই যেখানে যাইনি। নৌকা, সাম্পান, লঞ্চ, রিকশা-ভ্যানে চড়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়েছি। সে অভিজ্ঞতা থেকেই গ্রামাঞ্চলের উন্নয়ন করছি।’
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। তিনি দেশবাসীর মুখে হাসি ফোঁটাতে চেয়েছিলেন। যার জন্য দ্বিতীয় বিপ্লব কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ হত্যা করা হয়। একই বছরের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। দেশের অগ্রগতি থামিয়ে দেওয়ার জন্যই এই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। বঙ্গবন্ধুকে এমন সময়ে হত্যা করা হয়েছিল যখন দেশ অর্থনৈতিক মুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল।’
টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া আসনের সংসদ সদস্য শেখ হাসিনা তার নির্বাচনী এলাকার মানুষকে কৃতিত্ব দিয়ে বলেন, ‘দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে আমাকে অনেক বেশি সময় দিতে হয়। সাধারণত অন্য সংসদ সদস্যরা শুধুমাত্র তাদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার দেখাশোনা করেন। আমাকে ৩০০টি নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হয়। কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়ার বাসিন্দারা আমার এলাকার দায়িত্ব নিয়েছেন বলেই আমি সারা দেশে বেশি নজর দিতে পারছি।’
মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ার উন্নয়ন নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের অভিজ্ঞতার কথা শুনতে চান। এ সময় নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। এজন্য তারা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বার্ধক্যজনিত কারণে অবসরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে উপস্থিত নেতাকর্মীরা তাকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে রাজনীতিতে থাকার অনুরোধ জানান। তারা শেখ হাসিনাকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেন।
মতবিনিময় সভায় সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলী খান ও সাধারণ সম্পাদক জিএম সাহাবুদ্দিন আজম উপস্থিত ছিলেন।
মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল খায়ের। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ। দুপুরে মধ্যাহ্নভোজ শেষে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন।
চলারপথে ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ পরিণত করার মূল হাতিয়ার হবে ডিজিটাল সংযোগ। স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট সমাজের জন্যে ডিজিটাল সংযোগ মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।’
প্রধানমন্ত্রী আজ ২৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা-২০২৩ এর উদ্বোধন উপলক্ষে এক ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন।
ভিডিও বার্তায় তিনি ডিজিটাল পণ্য বিনিয়োগ ও রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় তিন দিনের এই ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলার আয়োজন করে। দেশের আইটি ও আইটিইএস পণ্য ও সেবাসমূহ প্রদর্শনই এ মেলার লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন একটি বাস্তবতা। স্মার্ট বাংলাদেশ ও স্মার্ট জাতি গঠনই আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য পূরণে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কোন বিকল্প নেই।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, সরকারি বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট, ভার্চুয়াল বাস্তবতা, উদ্দীপিত বাস্তবতা, রোবোটিকস এন্ড বিগ-ডাটা সমন্বিত ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতের মাধ্যমে সরকার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘শিল্পাঞ্চলে ফাইভ-জি সেবা নিশ্চিত করা হবে।’
ডিজিটালাইজেশনে বাংলাদেশে বিপ্লব ঘটে গেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তরুণ প্রজন্ম এখন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্বপ্ন দেখছে।
সরকার প্রধান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন রাঙামাটি জেলার বেতবুনিয়ায় দেশের প্রথম স্যাটেলাইট আর্থ স্টেশন স্থাপন করেন। যার মাধ্যমে বাংলাদেশে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচনী অঙ্গীকারে রূপকল্প-২০২১ ঘোষণা করেছিল, যার মূল লক্ষ্য ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশী জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
তিনি বলেন, তার সরকার ২০১৮ সালে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ কক্ষপথে উৎক্ষেপণ করেছে, যা সম্প্রচার ও টেলিযোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছর সিত্রাং ঘুর্ণিঝড়ের সময়ে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলায় বিচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরায় চালু করতে সক্ষম হয়েছেন।
এছাড়া তিনি বলেন, স্যাটেলাইটের অব্যবহৃত ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে বাংলাদেশ প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের স্যাটেলাইট পরিবারের ৫৭তম গর্বিত সদস্য।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্যে বহুমুখী কার্যক্ষমতা সম্পন্ন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -২ স্থাপনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তার সরকার ২০২৪ সালের মধ্যে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করতে যাচ্ছে। কারণ, ইতোমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ৩৪০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ক্ষমতা অর্জন করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বছরের মাঝামাঝি সময়ে ব্যান্ডউইথের সক্ষমতা ৭২০০ জিবিপিএসে উন্নীত করা হবে। তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের পর এটি ১৩,২০০ জিবিপিএসে উন্নীত হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, সৌদি আরব, ফ্রান্স, মালয়েশিয়া ও ভারতকে ব্যান্ডউইথ লিজ দেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতি বছর ৪.৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে আর বিদেশি স্যাটেলাইটের ওপর নির্ভর করতে হবে না।
সরকার প্রধান উল্লেখ করেন যে, সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত প্রায় ৯৫৬২৯৮ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল স্থাপন করা হয়েছে। এদিকে প্রতিটি ইউনিয়নে ১০ গিগাবাইট ক্ষমতা নিশ্চিত করা হয়েছে যা জনগণ ও সরকারি অফিসগুলোতে উচ্চ গতির ইন্টারনেট সরবরাহ করতে সহায়তা করে।
তিনি বলেন, সারাদেশে মোট ৮৬০০টি পোস্ট অফিসকে ডিজিটালে পরিণত করা হয়েছে। বর্তমানে ১৮ কোটি মোবাইল সিম ব্যবহার করা হচ্ছে, যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলের মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ডিজিটাল বৈষম্য এবং দামের পার্থক্য দূর করা হয়েছে।
প্রত্যন্ত এবং দুর্গম এলাকায় টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে তার সরকারের সাফল্য তুলে ধরে তিনি বলেন, সারাদেশে ‘এক দেশ এক দরের’ একটি সাধারণ শুল্ক চালু করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে বৈষম্যহীন ‘এক দেশ এক দর’ শুল্ক ব্যবস্থা চালু করার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ অ্যাসোসিও (এএসওসিআইও)-২০২২ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে টেলিকম খাতে প্রশংসনীয় কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ২২টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পর্যায়ে ১৪টি ক্যাটাগরিতে প্রথম প্রবর্তিত পোস্ট অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন অ্যাওয়ার্ড বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ মন্ত্রী মুস্তাফা জব্বার, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি একেএম রহমতুল্লাহ এবং ডাক টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোর্শেদ জামান বক্তব্য রাখেন। সূত্র : বাসস
চলারপথে রিপোর্ট :
হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার মিরপুর বাজারে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। আজ ২৪ মে বুধবার দুপুরে ভোক্তা অধিদপ্তর হবিগঞ্জের সহকারী পরিচালক দেবানন্দ সিনহার নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় ফ্রিজে কাঁচা এবং রান্না করা খাবার একসাথে রাখাসহ নানা অভিযোগে ৫ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ১৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সহকারী পরিচালক দেবানন্দ সিনহা জানান, মিরপুর বাজারে অভিযানকালে ফ্রিজে রান্না করা এবং কাঁচা খাবার একসাথে রাখা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সরবরাহের অভিযোগে যমুনা হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টকে ৫ হাজার, খাবারে রং মিশ্রণের অপরাধে লোকনাথ সুইটমিটকে ৫ হাজার, বিশ্বজিৎ চা ক্যান্টিনকে ৪ হাজার, মূল্য তালিকা না থাকায় মেসার্স সততা বাণিজ্যালয়কে ৩ হাজার ও আলমগীর পোল্ট্রিকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জনস্বার্থে এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতকে সহযোগিতা করেন বাহুবল মডেল থানার একদল পুলিশ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সংসদ সদস্য ও খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান সুখন আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন।
আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর উত্তরা বোট ক্লাবে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সঙ্গে নাসিরনগর উপজেলার জনপ্রতিনিধিদের মতবিনিময় সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিকেলে রাজধানীর উত্তরা বোট ক্লাবে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার সকল জনপ্রতিনিধিদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
একরামুজ্জামান নিজেই নাসিরনগরের সকল জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন। এতে উপজেলা পরিষদ, সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মিলিয়ে প্রায় ৩০০ জনপ্রতিনিধি অংশ নেন।
সভায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে আওয়ামী লীগে যোগ দেন একরামুজ্জামান। এসময় গণপূর্ত মন্ত্রীও তাকে আওয়ামী লীগে বরণ করে নেন।
একরামুজ্জামানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে তার ব্যক্তিগত রাজনৈতিক সহকারী মোহাম্মদ এনামুল হুদা সুমন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, স্যার আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগের যোগদান করেছেন। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী তাকে সাদরে গ্রহণ করে নেন।
ওই সভায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল- আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মঈন উদ্দিন মঈন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি হাজী হেলাল উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী, জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌসুলী (পিপি) ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল আলম ও সাবেক দপ্তর সম্পাদক তানজিল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
একরামুজ্জামান বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ছিলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে তাকে বহিষ্কার করে বিএনপি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসন থেকে কলার ছড়ি প্রতীকে ৮৯ হাজার ৪২৪ ভোট পেয়ে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন একরামুজ্জামান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি নৌকার প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য বি এম ফরহাদ হোসেন পান ৪৬ হাজার ১৮৯ ভোট।
মতবিনিময় সভায় একরামুজ্জামান বলেন, মাননীয় মন্ত্রী আমাকে আপনাদের সামনে রেখে আওয়ামী লীগে গ্রহণ করে নিয়েছেন। এটি আমার জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এই গ্রহণ করাকে আমি সশ্রদ্ধচিত্তে ও কৃতজ্ঞচিত্তে মেনে নিচ্ছি। নাসিরনগরের ৯৯ শতাংশ জনপ্রতিনিধি এখানে আছেন। কে আমার নির্বাচন করেছেন, কে করেননি তা মাথায় রাখিনি। আমি এখন সবার প্রতিনিধি। কোনো ভেদাবেদ না করে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই।