চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলায় জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ – ২০২৩ উপলক্ষে শিউলী পারভীন বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ নম্বর অর্জন করে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক (কলেজ) নির্বাচিত হয়েছেন।
তিনি নবীনগর মহিলা কলেজের বাংলা বিষয়ের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক হিসেবে কর্মরত।
উল্লেখ্য, তিনি এবারের ন্যায় ২০১৯ সালে ও উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক (কলেজ) নির্বাচিত হয়ে ছিলেন। তিনি সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা বিষয়ক ট্রেণিংয়ে অংশগ্রহণ করে কৃতিত্বের সাথে বিভিন্ন সার্টিফিকেট অর্জন করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে সাধারণ জীবন যাপন করা এই গুণী শিক্ষক সব সময় পেশাগত কারণে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে সু-সম্পর্ক গড়ে তোলেন। শিক্ষক হিসেবে তিনি সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। উল্লেখ্য তার একমাত্র পুত্র শাহরিয়ার শুদ্ধ ও এ বছর নবীনগর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উপজেলায় শ্রেষ্ঠ স্কাউট (মাধ্যমিক পর্যায়) নির্বাচিত হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
তোমাদের জন্য রাসূল (সা.) এর জীবনেই রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ। এই শ্লোগানে নবীনগরে ১২ রবিউল আউয়াল উপলক্ষে আজ ১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার নারায়ণপুর ডিএস কামিল মাদ্রাসার উদ্যোগে সিরাতুন্নবী (সা:) বর্ণাঢ্য র্যালি ও শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহ নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
সকাল ১০ টায় নারায়ণপুর ডিএস কামিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকগণ বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুন ও প্লে কার্ড ও জাতীয় পতাকা প্রদর্শন করে নবীনগর উপজেলা সদরে শান্তি পূর্ণভাবে সিরাতুন্নবী (সা:) বর্ণাঢ্য র্যালি করেছে।
র্যালিটি নারায়ণপুর ডিএস কামিল মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর পৌরসভার সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়েছে।
র্যালি শেষে শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপি প্রদান করেন নারায়নপুর ডিএস কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি রফিকুল ইসলাম। অপর দিকে র্যালীটি চলার সময় সড়কের যানজট মুক্ত রাখতে ও শান্তি পূর্ণ ভাবে শেষ করতে নবীনগর থানার পুলিশ ছিলো সড়কের প্রতিটি মোড়ে মোড়ে।
শিক্ষার্থীদের সাথে র্যালিতে অংশগ্রহণ করছেন ইসলামী ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার গোলাম সারোয়ার, গভর্ণিং বডির সদস্য ও নবীনগর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মো. জালাল উদ্দিন মনির, মাহবুব আলম লিটন, মাওলানা সামসুউদ্দিন, মাওলানা আবদুল হালিম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ৬ সেপ্টেম্বর ‘সুরসম্রাট’ ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকী। তিনিই প্রথম বাঙালি, যিনি সর্বপ্রথম পাশ্চাত্যে উপমহাদেশের রাগসঙ্গীতকে পরিচিত করান।
ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ ১৮৬২ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন খ্যাতনামা উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী ও সরোদবিশারদ। বাবা সঙ্গীতজ্ঞ সবদর হোসেন খাঁ ওরফে সদু খাঁ, মা সুন্দরী বেগম। ছোটবেলায় তার বড় ভাই ফকির (তাপস) আফতাব উদ্দিন খাঁর কাছে সঙ্গীতের হাতেখড়ি। সুরের সন্ধানে মাত্র ১০ বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়ে এক যাত্রাদলে যোগ দিয়ে ঘুরে বেড়ান গ্রামে গ্রামে। ওই সময় তিনি জারি-সারি, বাউল, ভাটিয়ালি, কীর্তন, পাঁচালি প্রভৃতি গানের সাথে পরিচিত হন। পরে কলকাতায় গিয়ে প্রখ্যাত সঙ্গীত সাধক গোপাল কৃষ্ণ ভট্টাচার্য ওরফে নুলো গোপালের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। বাঁশি, পিকলু, সেতার, ম্যান্ডোলিন, বেঞ্জো ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র বাজানো শেখেন সঙ্গীত পরিচালক অমৃত লাল দত্ত ওরফে হাবু দত্তের কাছে। সেই সাথে তিনি লবো সাহেব নামে এক গোয়ানিজ ব্যান্ডমাস্টারের কাছে পাশ্চাত্য রীতিতে এবং বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ অমর দাসের কাছে দেশীয় পদ্ধতিতে বেহালা শেখেন। এ ছাড়া হাজারী ওস্তাদের কাছে শেখেন মৃদঙ্গ ও তবলা। ১৯১৮ সালের পর তিনি ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
ব্রিটিশ সরকার তাকে ‘খাঁ সাহেব’ উপাধিতে ভূষিত করে। আলাউদ্দিন খাঁ ১৯৭২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের মাইহারে মদিনা ভবনে মারা যান। রাষ্ট্রীয়ভাবে ভারতে তার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়। বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর জন্ম কিংবা মৃত্যু কোনো দিবসই পালন করা হয় না। অপর দিকে তার স্মৃতিচিহ্নগুলো সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে নামে-বেনামে বেদখল হয়ে যাচ্ছে জমিজমা, বাড়িঘর, নিজ হাতে তৈরি করা মসজিদের জায়গা ও পুকুর। সবমিলিয়ে নিজ জন্মভূমিতেই অবহেলিত উপমহাদেশের সঙ্গীতজগতের কিংবদন্তি ‘সুরসম্রাট’ খ্যাত ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে সিএনজি অটোরিকসার ধাক্কায় জবা রাণী বিশ্বাস (০৭) নামে এক স্কুল ছাত্রী নিহত হয়েছে।
আজ ২৫ সেপ্টেম্বর বুধবার সকালে নবীনগর টু রাধিকা সড়কের শিবপুর কলেজ মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জবা রাণী বিশ্বাস শিবপুর গ্রামের সূূর্য বিশ্বাস এর মেয়ে। সে শিবপুর সুর সম্রাট আলাউদ্দিন খাঁ বিদ্যানিকেতনের প্রথম শ্রেনীর ছাত্রী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে জবা বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার জন্য বের হন। পথিমধ্যে দোকান থেকে খাবার কিনতে যাবার সময় একটি সিএনজি চালিত অটোরিকসা তাকে ধাক্কা দিলে সে গুরুতর আহত হয়।
এসময় স্থানীয় লোকজন তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা প্রেরণ করেন। পথিমধ্যে তার মৃত্যু বরণ করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, নিহতের মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে রয়েছে। নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর ঢেঁড়স চাষ করে বেকারত্ব ঘুঁচিয়েছেন শিবপুর ইউনিয়নের কাজুলিয়া গ্রামের খাইরুল বাসার ও ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের ইব্রাহিমপুর গ্রামের (দ. পাড়া) জয়নাল মিয়া। বেকারত্বের অভিশাপ থেকে তাঁরা এখন তাদের পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন। স্বল্প সময় ও অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় আরও অনেকেই এখন ঢেঁড়স চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, খাইরুল বাশার এ বছর ৪০ শতক এবং জয়নাল মিয়া ২০ শতক জমিতে ঢেঁড়স চাষ করেন। তাঁরা নিজেরাই জমি থেকে ঢেঁড়স উত্তোলন করছেন। আলাপ কালে জয়নাল মিয়া জানান- তার বাবা অসুস্থ্য হওয়ায় ২০২০ সালে চাকরি ছেড়ে চলে আসেন গ্রামের বাড়িতে। এরপর আর ভাল কোন চাকরি না পাওয়ায় বাড়ীর পাশের জমিতে শুরু করেন সবজি চাষ। তিনি এক বিঘা জমি নিয়ে শুরু করেন ঢেঁড়সের চাষ। স্বল্প সময়ে এই ঢেঁড়স চাষ করে বেশ লাভবানও হয়েছেন তিনি। তিনি বলেন- এখানকার মাটি বেশ উর্বর থাকায় তার উৎপাদন খরচও অনেক কম হয়েছে। তার এক বিঘা জমিতে ঢেঁড়স চাষ করতে ৬/৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৪০ হাজার টাকার বিক্রি করেছেন। একদিন পরপর জমি থেকে ঢেঁড়স উত্তোলন করতে হয়। এতে তেমন কোন শ্রমিকের (লেবার) প্রয়োজন হয় না। জমি থেকেই পাইকারি ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন- “ আমি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শক্রমে বারি উদ্ভাবিত ‘বারি ঢেঁড়স-১’ জাতের ঢেঁড়সের চাষ করেছি। বাজারে ঢেঁড়সের দাম ভাল থাকায় লাভবানও হচ্ছি। এ বছর ঢেঁড়সের পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় খরচও কম হয়েছে ”।
এ ব্যাপারে নবীনগর উপজেলা কৃষি অফিসার জগলুল হায়দার বলেন- “এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে ঢেঁড়সে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হয়েছে। আর ঢেঁড়সের বিভিন্ন জাতের মধ্যে ‘বারি ঢেঁড়স-১’ এর ফলন ভাল। এটা চাষ করা লাভ জনক। তবে তার মত শিক্ষিত অনেক যুবকরাই এগিয়ে আসছে। আমরা কৃষি অফিস তাদের বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগিতা করব”।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে এক আওয়ামী লীগের নেতাকে গ্রেফতারের দাবিতে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে গ্রামবাসী।
আজ ১১ সেপ্টেম্বর বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার উত্তর কাইতলা ইউনিয়নের ব্রাহ্মণহাতা গ্রামের হাজারো মানুষ ১নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি অলি মুন্সির বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তারা।
এ সময় ব্রাহ্মণহাতা গ্রামের সজিব নামের এক যুবক অভিযোগ করে বলেন, আমাদের এলাকার খুনী, হত্যাকারী, দাঙ্গা-ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারী, উচ্ছৃঙ্খল ও চিহ্নিত মাদক কারবারি অলি মুন্সি। আওয়ামী লীগের সভাপতি অলি মুন্সির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি হত্যা মামলা রয়েছে। অথচ তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। তাকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাই।
আবু হানিফ নামের একজন বলেন, সে আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার সুবাদে তার সহযোগীদের নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অন্যায়-অপকর্মসহ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তার বিরুদ্ধে কেউ কোনো কিছু বললে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে নাজেহাল করা হতো। এখন সময় এসেছে তার বিচারের।
তাজুল ইসলাম নামে আরেকজন অভিযোগ করে বলেন, অলি মুন্সি আশপাশের গ্রামে মাদকের স্বর্গরাজ্য কায়েম করেছে। এলাকায় প্রতিদিন নেশা জাতীয় দ্রব্যাদি বিক্রি করার কারণে যুব সমাজ দিন দিন ধ্বংসের পথে রয়েছে। এছাড়াও অলি মুন্সি ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কাইতলা উত্তর ইউনিয়নের বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও সামাজিক অশান্তি সৃষ্টি করার মূল হোতা। তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।