চলারপথে ডেস্ক :
সিলেটের ঐতিহ্যবাহী কওমি মাদ্রাসা জামেয়া ক্বাসিমুল উলুম দরগাহের মুহতামিম, বাংলাদেশ ওলামা পরিষদের সভাপতি, আযাদ দ্বীনী এদারায়ে তালীম বাংলাদেশ শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, বরেণ্য আলেম শায়খুল হাদিস আল্লামা মুহিব্বুল হক (গাছবাড়ি) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
আজ ১৭ মে বুধবার মাগরিবের নামাজের পর তিনি দরগাহ মাদ্রাসায় তার নিজ বিশ্রামকক্ষে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে মুফতি মুহিব্বুল হকের বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সিলেট মহানগর শাখার সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান।
তিনি বলেন, বুধবার কোম্পানীগঞ্জে কয়েকটি মাহফিলে হুজুর অংশগ্রহণ করেন। আসরের নামাজ এসে আদায় করেন দরগাহ মাদ্রাসায়। আসরের পরে হুজুর তার বিশ্রামকক্ষে ছিলেন। মাগরিবের সময় হুজুরের শারীরিক অবস্থা হঠাৎ খারাপ হয়। মাগরিবের নামাজ শেষে হুজুরকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকরা বলেছেন, হুজুর স্ট্রোক করেছেন। বর্তমানে হুজুরের লাশ দরগাহ মাদ্রাসায় রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার সময় সিলেট সরকারী আলিয়া মাদরাসা মাঠে মরহুমের জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ এই আলেম সম্মিলিত কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড আল হাইয়াতুল উলয়ার সদস্য ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কমিটির সদস্য, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সিলেট জেলার সভাপতি, সিলেটের প্রাচীন শিক্ষাবোর্ড আযাদ দ্বীনী এদারার সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, খাদিমুল কুরআন পরিষদের সভাপতি, সিলেট জেলা উলামা কমিটির চেয়ারম্যান, সিলেট জেলা ফতোয়া বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৩ ছেলে ও ৪ মেয়েসহ ছাত্র-শিক্ষক, ভক্ত ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মাওলানা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ি ১৯৬৯ সালে সুনামগঞ্জ দরগাহপুর মাদ্রাসায় শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবনের সূচনা করেন।
এরপর ১৯৭৩ সালে জামেয়া কাসিমুল উলুম দরগার শিক্ষক হিসেবে মনোনীত হন। তখন থেকে আমৃত্যু প্রায় ৫১ বছর ধরে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন।
তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, আল হাইয়াতুল উলয়ার চেয়ারম্যান আল্লামা মাহমুদুল হাসান, আযাদ দ্বীনি এদারার সভাপতি মাওলানা জিয়া উদ্দিন, চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিম, খেলাফত মজলিস বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত আমির মাওলানা আব্দুল বাসিত আজাদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা ইসমাঈল নূরপুরী, জামেয়া তাওয়াক্কুলিয়া রেঙ্গার মুহতামিম মাওলানা মুহিউল ইসলাম বুরহানসহ বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের (বেফাক) নেতারা।
এদিকে শায়খুল হাদিস মাওলানা মুফতি মুহিব্বুল হকের ইন্তেকালের খবরে সিলেটের আলেম সমাজসহ ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাকে একনজর দেখার জন্য দরগাহ মাদ্রাসায় ছুটে যাচ্ছেন মানুষ। মুহিব্বুল হক (গাছবাড়ি) সিলেটের সর্বস্তরের মানুষের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
‘জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন করি, নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করি’ এই প্রতিপাদ্যে বগুড়ায় জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে আজ ৬ অক্টোবর শুক্রবার সকালে বগুড়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শহরে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়।
র্যালি শেষে বেলা ১০টায় জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে আলোচনা করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক মাসুম আলী বেগ। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, জম্ম নিবন্ধন ও মৃত্যু নিবন্ধন নাগরিকের মৌলিক অধিকার। বর্তমানে সরকারি সুযোগ সুবিধা নিতে হলে প্রথমে প্রয়োজন জম্ম নিবন্ধন। একটি শিশু জম্ম নেওয়ার পর ৪৫ দিনের মধ্যে জম্ম নিবন্ধন বিনা খরচে করা যায়।
কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আল মারুফ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আকতার, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. শাহনাজ পারভীন, বগুড়া পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহজাহান আলম, প্যানেল মেয়র-২ আলহাজ শেখ, সারিয়াকান্দি পৌরসভার মেয়র মতিউর রহমান মতি, বগুড়া সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ডালিয়া নাসরিন রিক্তা।
এ সময় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সচিববৃন্দ, গ্রাম পুলিশের সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে শ্রেষ্ঠ হওয়ায় সারিয়াকান্দি পৌরসভার মেয়র মতিউর রহমান মতিসহ দুইজন ইউনিয়ন পরিষদ সচিব ও একজন গ্রাম পুলিশকে-কে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
আসন্ন হজ প্যাকেজের মূল্য কমিয়ে যৌক্তিক পর্যায়ে আনতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
আজ ২৯ আগস্ট বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমাদের হজ একটা বড় ব্যাপার মুসলমানদের জন্য। কিন্তু হজের মতো পবিত্র কাজেও একটি সিন্ডিকেট দেখতে পাই। তারা কারসাজি করে হজের প্যাকেজ মূল্য বাড়িয়ে তোলে। হজের যে খরচ, সেটি যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনা যায়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে। কত হতে পারে, কত কমানো যেতে পারে সেই আলোচনা হয়। বর্তমান প্যাকেজ যে অনেক বেশি, সেটি কমিয়ে আনা সম্ভব, সে বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে।
এর আগে, গত বছর সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। সরকারি প্যাকেজে সর্বনিম্ন ৫ লাখ ৭৯ হাজার টাকা এবং বেসরকারি প্যাকেজে সর্বনিম্ন প্রায় ৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এ বছর এখনো হজের প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়নি। এখন প্রাক নিবন্ধন চলছে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে চূড়ান্ত নিবন্ধন শুরু হয়ে চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রাথমিক নিবন্ধনের সময়ের পর আর সময় বাড়ানো হবে না।
গত ২৬ আগস্ট ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এ বছর ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন বাংলাদেশি পবিত্র হজ পালন করতে পারবেন। সৌদি সরকার আরো আগেই বাংলাদেশের জন্য এই কোটা ঘোষণা করেছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নৈশকোচে ডাকাতির সাথে জড়িত ৫ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পীরগঞ্জ থানা পুলিশ। সোমবার রাতে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের জেল হাজতে পাঠানো হয়।
আজ ১৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে পীরগঞ্জ থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে রংপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজিয়া সুলতানা এ তথ্য জানান।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা ইউনিয়নের আগাচতরা গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে ফিরোজ মিয়া (২৮), কাবিলপুর ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের মৃত আব্দুর রহমান ওরফে খোকা মিয়ার ছেলে মেহেদি হাসান (২৫), বড়আলমপুর ইউনিয়নের বড়আলমপুর গ্রামের মিয়ামত আলীর ছেলে মোহাম্মদ আলী (৩৮), টুকুরিয়া ইউনিয়নের গোপিনাথপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে শাহজাহান আলী (৩০), লুন্ঠিত স্বর্ণ ক্রয়কারী রুহুল আমিনের ছেলে মনোয়ার হোসেন ওরফে মজিদ (৩৮)।
পুলিশ জানায়, ঢাকা গাবতলী থেকে ছেড়ে আসা কুড়িগ্রাম ভুরুঙ্গামারিগামী পরিবহনের নৈশকোচে ১৩ জানুয়ারি ভোর রাতে ডাকাতি হয়। ওই ঘটনায় বড়দরগাহ হাইওয়ে থানা পুলিশ গাড়িটি আটক করে ড্রাইভার, হেলপার ও গাড়ির মালিককে পলাশবাড়ি থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করেন। প্রাথমিক তদন্তের পর সীমানা নির্ধারণ বিষয়ক জটিলতার কারণে ১৫ জানুয়ারি পীরগঞ্জ থানায় মামলা রুজু হয়। এ সময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ৫টি চাকু ও মালামালের মধ্যে স্বর্ণ সাদৃশ্য কানের দুল, স্বর্ণের নাকফুলসহ ৮টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। যাত্রীদের নিকট থেকেঅর্থ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। উল্লেখ্য, গ্রেফতারকৃত ফিরোজের বিরুদ্ধে আরও ৩টি ডাকাতির মামলা, গ্রেফতারকৃত মেহেদির বিরুদ্ধে ২টি ডাকাতির মামলাসহ ৩টি ওয়ারেন্ট, ব্যবসায়ী গ্রেফতারকৃত মনোয়ারের বিরুদ্ধে ১টি ডাকাতির মামলা রয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
মোংলায় বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মামলায় আদম পাচারকারী চক্রের অন্যতম হোতা আবদুল গফুর ওরফে পানি গফুরকে গ্রেফতার করেছে মোংলা থানা পুলিশ।
আজ ২১ জুলাই শুক্রবার দুপুরে মোংলা পোর্ট পৌরসভার সামছুর রহমান রোডে তার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আটককৃত আদম পাচারকারী গফুরকে শুক্রবার বিকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুউদ্দীন আদম পাচারকারী গফুরকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আদম পাচারকারী গফুর গত ২৬ জুন বাগেরহাটের বারাকপুর গ্রামের তহমিনা বেগমের ছেলে তওহিদ হাসানকে মাসিক দেড় লাখ টাকা বেতনে বিদেশি জাহাজে চাকরি দেয়ার কথা বলে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে সাড়ে ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। টাকা নেওয়ার ২০ দিনের মধ্যে হাসানকে জাহাজে চাকরি দেবেন বলেও আশ্বাস দেন গফুর। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হয়ে যাওয়ার পর ভুক্তভোগী তহমিনা তার ছেলে হাসানকে নিয়ে গত ১৬ জুলাই গফুরের কাছে যান। ওই সময় তিনি চাকরি ও টাকা ফেরত দিবেন না বলে উলটো ভয়ভীতি দেখান।
এ ঘটনার প্রতিকারে তহমিনা বেগম বাদী হয়ে আদম পাচারকারী প্রতারক গফুরের বিরুদ্ধে গত ১৯ জুলাই বাগেরহাট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানায় শুক্রবার দুপুরে আসামিকে মোংলা পোর্ট পৌরসভার সামছুর রহমান রোডে তার নিজবাড়ি থেকে আটক করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, তার সরকার একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডকে (বিসিজি) অতি-আধুনিক স্মার্ট প্রযুক্তি, জাহাজ ও হেলিকপ্টার দিয়ে সাজিয়ে একটি আধুনিক ও ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে রূপান্তরিত করছে।
তিনি বলেন, ‘কেউ পিছিয়ে থাকবে না। কোস্ট গার্ড বাহিনীতে আধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক জাহাজ, হেলিকপ্টার এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার সক্ষমতা অর্জন করবে। ’
আজ ১০ মার্চ রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওস্থ কোস্ট গার্ড সদরদপ্তরে ‘২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং কোস্ট গার্ড দিবস ২০২৪’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কোস্টগার্ডের অপারেশনাল সক্ষমতা বাড়াতে ভি-স্যাটনেট কমিউনিকেশন সিস্টেম এবং ছয়টি স্টেশন ও আউটপোস্ট এবং তাদের অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পেরও উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডকে আধুনিক ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে খুব শিগগিরই এ বাহিনীতে যুক্ত হতে যাচ্ছে উন্নত প্রযুক্তির জাহাজ, মেরিটাইম সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম, হোভারক্রাফট ও দ্রতুগতিসম্পন্ন বোট।
পাশাপাশি সমুদ্র নির্ভর পেশায় নিয়োজিত জনসাধারণের ও নৌপথের নিরাপত্তায় কোস্টগার্ডের গভীর সমুদ্রে টহল উপযোগী আরও ৪টি ওপিভি, ২টি মেরিটাইম ভার্সন হেলিকপ্টার সংগ্রহের অনুমোদন প্রদান করা হয়েছে, বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ভি-স্যাটনেট কমিউনিকেশন সিস্টেমের অন্তর্ভুক্তি যা কোস্ট গার্ডকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর সঙ্গে সংযুক্ত করবে। এর যোগাযোগ এবং অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমি দুটি হেলিকপ্টার উইংসহ এভিয়েশন উইং গঠনের নীতিগত অনুমোদন প্রদান করেছি, যা সংযোজনের মাধ্যমে কোস্ট গার্ডকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডে ৪টি অফশোর প্যাট্রল ভেসেলসহ বিভিন্ন আকারের ১৬টি জাহাজ ও ১৩৮টি বোট কোস্ট গার্ড বহরে সংযোজিত হয়েছে। গভীর সমুদ্রে কোস্ট গার্ড-এর যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- ১’ এর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য আজ কোস্ট গার্ডের নবসংযোজিত ভিস্যাটনেট সিস্টেম ও ঢাকা জোন, পূর্ব জোন এবং দক্ষিণ জোনের বিভিন্ন ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করা হয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের জন্য ৯টি প্রতিস্থাপক জাহাজ নির্মাণের লক্ষ্যে একটি নতুন প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ১৯৯৫ সালে স্বল্প পরিসরে যাত্রা শুরু করে দীর্ঘ ২৯ বছরে আজ একটি আধুনিক ও যুগোপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, ১৯৯৪ সালে জাতীয় সংসদের তৎকালীন বিরোধীদল আওয়ামী লীগের আনীত বিলের কারণেই ‘বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড’ একটি আধা-সামরিক বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এরপর ১৯৯৬ সালে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকার কোস্ট গার্ডের বিভিন্ন জোনের জন্য ভূমি বরাদ্দ, অবকাঠামো নির্মাণ এবং নতুন নতুন জলযান সংযোজনের মাধ্যমে কোস্ট গার্ডের অগ্রযাত্রায় বিশেষ অবদান রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ব্যাপক উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের উপকূলীয় এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোস্ট গার্ড-এর স্টেশন ও আউটপোস্টসমূহে কোস্টাল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টারসহ বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে।
এছাড়া বিভিন্ন আকারের জলযান নির্মাণ করা হয়েছে। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কোস্ট গার্ড-এর জোনসমূহে কর্মরত সদস্যগণের বাসস্থান, ব্যারাক ও প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পটুয়াখালী অঞ্চলে নিজস্ব প্রশিক্ষণ বেইস তৈরির মাধ্যমে কোস্ট গার্ড-এর জনবলের প্রশিক্ষণ সক্ষমতাও বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা পরবর্তীতে তিনি নিজেই ‘বিসিজি বেইস অগ্রযাত্রা’ নামে কমিশন করেছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড-এর জন্য ইনশোর প্যাট্রল ভেসেল, ফ্লোটিং ক্রেন, ট্যাগ বোট এবং বিভিন্ন ধরনের হাইস্পিড বোট তৈরি করা হয়েছে। এ বাহিনীর মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়ায় একটি ডকইয়ার্ড নির্মাণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে আশাবাদী যে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন জাহাজ ও সরঞ্জামের অন্তর্ভুক্তি এ বাহিনীর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এ বাহিনীর অধিকতর সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।