চলারপথে রিপোর্ট :
কক্সবাজার থেকে টেকনাফে পাত্রী দেখতে গিয়ে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের হাতে অপহরণের শিকার হন তিন বন্ধু। অভিযোগ উঠে, স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সহযোগিতায় পাহাড়ি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা তাদের অপহরণ করেছে। এরপর অপহরণকারীরা ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে তিন বন্ধুকে হত্যা করা হয়। আজ ২৪ মে বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় তিন বন্ধুর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে র্যাব ও পুলিশ।
নিহতরা হলেন- কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ সওদাগর পাড়ার মোহাম্মদ ইউছুপ, চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের রুবেল ও কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া এলাকার ইমরান।
আজ বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত পুলিশ ও র্যাব বিভিন্ন পাহাড়ে যৌথ অভিযান চালায়। এক পর্যায়ে বাহারছড়ায় পাহাড় থেকে সন্ধ্যায় তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল সাইফুল ইসলাম সুমন বলেন, টেকনাফ থেকে তিন বন্ধু নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে আমরা তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করি। এক পর্যায়ে প্রযুক্তির মাধ্যমে এক অপহরণকারীকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বুধবার বিকেলে টেকনাফ দমদমিয়াসংলগ্ন গহীন পাহাড় থেকে তিন বন্ধুর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আমাদের অভিযান চলমান।
নিহতদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ এপ্রিল তিন বন্ধু কক্সবাজার থেকে টেকনাফে পাত্রী দেখার উদ্দেশ্যে রওয়া দেন। তাদের টেকনাফে সদর ইউনিয়নের লেঙ্গুর বিল এলাকার রোহিঙ্গা যুবক মোহাম্মদ শফির ছেলে হেলালের বাড়িতে যাওয়ার দেখার কথা ছিল। টেকনাফে পৌঁছানোর সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি থামিয়ে একদল পাহাড়ি সন্ত্রাসী তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পাহাড়ে নিয়ে যায়। এর দুদিন পর তাদের হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করার একটি ভিডিও পরিবারের কাছে পাঠিয়ে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে তাদের হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।
নিহত ইমরানের বাবা ইব্রাহিম বলেন, গত ২৫ দিন আগে আমার ছেলেসহ তিন বন্ধু টেকনাফে বেড়াতে এসে অপহরণের শিকার হয়। ঘটনাটি শুনে টেকনাফ থানায় জানাই। কিন্তু পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
তিনি আরো বলেন, আজ পাহাড় থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু এখনও ছেলের মুখ দেখিনি।
এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম বলেন, আমি এখনও পাহাড়ে অবস্থান করছি। র্যাবসহ আমরা বাহারছড়া গহীন পাহাড় থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। কিন্তু উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলো কঙ্কাল হয়ে গেছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিফিনে আগামী মাস থেকে রুটি, দুধ, কলা ও ডিম দেওয়া হবে। বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলার বিদ্যালয় দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। এরপর ধাপে ধাপে সব বিদ্যালয়েই চালু হবে মিড–ডে মিল।
শিক্ষা গবেষকরা বলছেন, এই প্রকল্প চালু হলে শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসার আগ্রহ বাড়বে।
দেশের অনেক শিশুই খালি পেটে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যায়। অনেক পরিবারেরই টিফিন দেওয়ার সামর্থ্য নেই। ২০১০ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের টিফিন হিসেবে বিস্কুট দেওয়া হতো। কিন্তু গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে এই কর্মসূচি বন্ধ। শিক্ষকরা বলছেন, অনেক শিক্ষার্থীই পেটে ক্ষুধা নিয়ে ক্লাসে মনযোগ দিতে পারছে না।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান শাহীন বলেন, ‘দারিদ্র–পীড়িত শিক্ষার্থীদের অনেক অসুবিধা হচ্ছে। তাই অতিসত্ত্বর কর্তৃপক্ষের নিকট স্কুল ফিডিংয়ের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা জোর অনুরোধ করছি।’
এ অবস্থায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, ১৫০টি উপজেলার ৩৭ লাখ শিক্ষার্থীকে দুপুরে খাবার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে স্কুল ফিডিংয়ের কর্মসূচি আগামী মাসেই চালু হচ্ছে কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার ১ হাজার ৯৫টি স্কুলে। এরপর ধাপে ধাপে সব উপজেলায় দেওয়া হবে এই খাবার। প্রকল্পটির জন্য এরই মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ১৫১ কোটি টাকা।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, ‘বনরুটি, ডিম, কলা এবং স্থানীয় যে মৌসুমী ফল আছে সেগুলো পাবে এবং একটা মডালিটিতে এটা পরিচালিত হবে। ধাপে ধাপে সকল উপজেলায় আমরা এই কর্মসূচি সম্প্রসারণের চেষ্টা করব।’
শিক্ষা গবেষকরা বলছেন, স্কুলে মিড–ডে মিল আবার চালু করা জরুরি। কারণ অনেক স্কুলেই শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম। এটি চালু হলে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার কমে যাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক শাহ শামীম আহমেদ বলেন, ‘বাচ্চারা এখানেই টিফিনটা করবে। সকালে যে বাচ্চাগুলো ছিল সেসব বাচ্চাদের সংখ্যা, আগে যে বাচ্চা ছিল, টিফিনের পর বাচ্চার সংখ্যা কমে গেছে। এর কারণ হচ্ছে, ওই যে সে টিফিনে গিয়েছে, গিয়ে আর আসেনি। এই জায়গাটা মিনিমাইজ করা যাবে।’
দেশে ৬৫ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেড় কোটির মতো শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বৈশাখী মেলা চলাকালে দুই গ্রামের দুই ব্যক্তির মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। আর সেখান থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত বলে জানালেন একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর ও হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘটিত এই সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। ১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক ও লাখাই উপজেলার মুড়াকরি গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পোঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষ থামাতে এসময় লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল ও ২২ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়েছে মর্মে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক এলাকায় বৈশাখী মেলা চলাকালে পার্শ্ববর্তী হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার মুড়াকরি গ্রামের এক ব্যক্তির সঙ্গে ফান্দাউক গ্রামের একজনের কথা কাটাকাটি হয়।
এ সময় বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে মীমাংসা করে দেওয়া হয়। তবে সন্ধ্যার দিকে দুইপক্ষের কয়েকশ’ লোক স্থানীয় একটি মাঠে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় ব্যাপক ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন।
এ বিষয়ে নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহাগ রানা সাংবাদিকদের বলেন, “তুচ্ছ ঘটনার জেরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।”
তিনি আরো বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল ও ২২ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
চলারপথে রিপোর্ট :
যশোর সদর উপজেলার যশোর-বেনাপোল রেলপথের ধোপাখোলায় ট্রেনে কেটে চাচা আমিরুল ইসলাম (৫৫) ও তার ভাতিজা দেড় বছর বয়সী মোহাম্মদ ইউসুফ নিহত হয়েছে।
নিহত আমিরুল ইসলাম ধোপাখোলা গ্রামের মৃত আনোয়ার বিশ্বাসের ছেলে। আর শিশু মোহাম্মদ ইউসুফ একই গ্রামের মনিরুল ইসলামের ছেলে।
আরবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মইনুর রহমান জানান, মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে আমিরুল ইসলাম তার দেড় বছর বয়সী ভাতিজা ইউসুফকে নিয়ে শামুক কুড়াতে যায়। শিশু ইউসুফকে ধোপাখোলা রেল ব্রিজের ওপর বসিয়ে পাশের জলাশয়ে নামেন তিনি। এ সময় বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী বেতনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি চলে আসে। আমিরুল ট্রেন আসতে দেখে ছুটে গিয়ে ইউসুফকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন। এ সময় ইউসুফ ব্রিজের ওপর থেকে ছিটকে নিচে পড়ে যায় এবং আমিরুল ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। সাথে সাথে আশপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে শিশু ইউসুফকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই ইউসুফের মৃত্যু হয়।
যশোর রেলওয়ে পুলিশের এসআই তরিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। শিশু ইউসুফের মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে এবং আমিরুলের মরদেহ ঘটনাস্থলে আছে বলে জানান তিনি।
অনলাইন ডেস্ক :
আগামী ১০ দিনের মধ্যে নিবন্ধনকারী হজযাত্রীদের বাকি টাকা জমা দিতে বলা হয়েছে। যারা ২ লাখ ৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে প্রাক-নিবন্ধন করেছে তাদের এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। আজ ১০ ফেব্রুয়ারি শনিবার ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সৌদি সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের হজযাত্রীদের জন্য মিনায় তাঁবু গ্রহণ, মোয়াল্লেম গ্রহণ, বাড়ি বা হোটেল ভাড়া, পরিবহন চুক্তি প্রভৃতি আবশ্যিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে।
তাই ২ লাখ ৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধনকারী হজযাত্রীদের আগামী ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিবন্ধনের অবশিষ্ট টাকা জমা দিতে হবে।
এ বছর চার দফায় সময় বাড়িয়েও হজের নির্ধারিত কোটা পূরণ করা যায়নি। গত ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারিভাবে হজের নিবন্ধন করেছেন ৮৩ হাজার ১৫৫ জন। ফলে ৪৪ হাজারের বেশি কোটা খালি রেখে হজের নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ হয়।