চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার নারী ভাইস চেয়ারম্যান মোসাম্মাৎ শিউলি আক্তার ও তার স্বামী কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের স্টোর কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। ২৫ মে বৃহস্পতিবার কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাফি মো. নাজমুস্ সাদাৎ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মো. হাবিবুর রহমান উপজেলার চরলাপাংয়ের চিত্রী গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ফজলুল হক জানান, মো. হাবিবুর রহমান ও তার স্ত্রী শিউলি আক্তার একে অপরের সহযোগিতায় এক কোটি ৪ লাখ ১৪ হাজার ৭৬৪ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ ভোগদখলে রেখেছেন।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, হাবিবুর রহমান ১৯৮৮ সালে স্বাস্থ্য সহকারী পদে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন। তিনি ১৯৯৩ সালে স্টোরকিপার পদে ও ২০১৫ সালে স্টোর অফিসার পদে পদোন্নতি লাভ করে বর্তমানে কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে ঢাকায় কর্মরত রয়েছেন। হাবিবুর রহমানের নামে ৫৫ লাখ ৯১ হাজার ৬৬৬ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৩২ লাখ ৮০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জন করার তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়া তার আয়কর নথিতে প্রদর্শিত পারিবারিক ব্যয় ১৫ লাখ ৬ হাজার ৫০৮ টাকা। পারিবারিক ব্যয়সহ তার মোট সম্পদের পরিমাণ এক কোটি ৩ লাখ ৭৮ হাজার ১৭৪ টাকা। উক্ত সম্পদ অর্জনের বিপরীতে ২০১৭-১৮ কর বর্ষে আয়কর নথি খোলার সময় পূর্বের বছরগুলোতে চাকরির বেতন-ভাতা হতে সঞ্চয় এবং আয়কর নথি খোলার পরের বেতন-ভাতাসহ আয় পাওয়া যায় ৭৮ লাখ ৮৮ হাজার ৫০৮ টাকা। অনুসন্ধানকালে তার নামে অর্জিত সম্পদের চেয়ে আয়ের উৎস ২৪ লাখ ৮৯ হাজার ৬৬৬ টাকা কম পাওয়া যায়।
অপরদিকে তার স্ত্রী নারী ভাইস চেয়ারম্যান শিউলি আক্তারের আয়-ব্যয় পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৯ সাল থেকে নবীনগর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি ২০১৪-১৫ কর বর্ষ হতে ২০২১-২২ কর বর্ষ পর্যন্ত খাত ভিত্তিক আয়-ব্যয়ের হিসাব বিবরণী দাখিল করে আসছেন। তিনি তার দুই ছেলের নিকট থেকে হেবা ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে প্রাপ্ত স্থাবর সম্পদ ব্যতীত তার নামে এক কোটি ১৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৪৯ লাখ ৩২হাজার ৫১৪ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি নিজের নামে এক কোটি ৬৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫১৪ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন। তার পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় পাওয়া যায় ২৬ লাখ ৫৮ হাজার ৯৩৩ টাকা। পারিবারিক ব্যয়সহ তার সম্পদের পরিমাণ এক কোটি ৯১ লাখ ৩৬ হাজার ৪৪৭ টাকা। এ সম্পদ অর্জনের বিপরীতে ২০১৪-১৫ কর বর্ষে আয়কর নথি খোলার পূর্বের বছরগুলোতে বিভিন্ন আয় এবং আয়কর নথি খোলার পরের ব্যবসা, বাড়িভাড়া ও ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে প্রাপ্ত ভাতাসহ তার এক কোটি ১২ লাখ ১১ হাজার ৩৪৯ টাকার আয়ের উৎস পাওয়া যায়। তার নামে অর্জিত সম্পদের চেয়ে ৭৯ লাখ ২৫ হাজার ৯৮ টাকার আয়ের উৎস কম পাওয়া যায়। অনুসন্ধানকালে মো. হাবিবুর রহমান ও তার স্ত্রীর এক কোটি ৪ লাখ ১৪ হাজার ৭৬৪ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়।
সফিকুল ইসলাম বাদল, নবীনগর :
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুর্যসেন হলের জিএস ও নবীনগর মহিলা কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি সায়েদুল হক সাঈদ উদ্যোগ নিয়ে নবীনগর বাসীর সেবায় নিয়োজিত থাকছেন। নিজস্ব অর্থায়নে এই মানুষটি নবীনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অসহায় মানুষের চিকিৎসা সেবায় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও ওষুধ বিতরণের পাশাপাশি এবার তিনি প্রায় তিন শতাধিক অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কম্বল বিতরণ করছেন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মদিন উপলক্ষে নবীনগর উপজেলার পূর্ব এলাকার শিবপুর বাজার সংলগ্ন নুরনগর সাংবাদিক ফোরাম কার্যালয়ের সামনে এসব কম্বল তুলে দেয়া হয় সুবিধা বঞ্চিত সাধারণ মানুষের হাতে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এইসব কম্বল বিএনপি নেতা সাঈদ এর অর্থায়নে বিতরণ করেন স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। কম্বল বিতরণ সম্পর্কে মুঠোফোনে সায়েদুল হক সাঈদ বলেন, আমি শহিদ জিয়ার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বিগত দিনে রাজনীতি করেছে, ভবিষ্যতেও করবো। নবীনগরের মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে মনে আনন্দ পাই,তাই চেষ্টা করি তাদের পাশে থাকার। ভবিষ্যতে ধারাবাহিকতা ধরে রেখে মানুষের জন্য যেন কাজ করতে পারি সেজন্য আমি আমার প্রাণের স্পন্দন নবীনগর বাসীর দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করছি।
এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যাকুট ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, নাটঘর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু হানিফ মোল্লা, বড়াইল উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক, উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক হুমায়ুন কবির, উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক মনির হোসেন সরকার, নাটঘর ইউনিয়ন বিএনপির সহ সভাপতি আমিনুল মহাজন, বিদ্যাকুট ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আমান উল্লা বাচ্ছু, বিটঘর ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফোরকান ভূঁইয়া, শেখ ফরিদ আহমেদ, কাজী আল রাজিব, মো. বসির মিয়া, রিয়াদ ইসলাম ফুরকান, আব্দুল আলিম প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে বিস্তির্ণ হাওরাঞ্চলের কচুরিপানা দিয়ে তৈরি হচ্ছে জৈবসার। ‘জলকমল’ খ্যাত এ জৈবসার দামে কম ও মান ভালো হওয়ায় এতে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।
নবীনগর উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, পাইলট প্রকল্প হিসাবে এ প্লান্টটি চালু করা হলেও ল্যাব টেষ্টে গুণগত মানের স্বীকৃতি মিলায় এখন বাণিজ্যিক ভাবে ১০টি প্লান্ট স্থাপন করা হবে যা থেকে প্রতিমাসে ৫০ টন জৈব সার উৎপাদিত হবে যার বাজার মূল্য প্রায় ৬ লাখ টাকা। জেলা সদর ছাড়াও নদী ও হাওরবেষ্টিত নবীনগর উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের সাথে নৌপথে যোগাযেগের ক্ষেত্রে অন্যতম বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় কচুরিপানা।
এতে নৌপথ ক্রমশ সংকুচিত হবার পাশাপাশি ঝুঁকিতে পড়ে বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদ। নৌপথ স্বাভাবিক রাখতে কচুরিপানা পরিষ্কার করে তা উৎপাদনশীল কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেয় উপজেলা প্রশাসন। এ ক্ষেত্রে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা উপজেলায় আখের ছোবড়া থেকে বাণিজ্যিকভাবে জৈব সার উৎপাদনের বিষয়টি নজরে আসার পর কচুরিপানা থেকে জৈবসার উৎপাদনের পকিল্পনা নেয় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
সংগৃহীত কচুরিপানরা নিচের কালো অংশটুকু কেটে ফেলে পাতাসহ বাকি অংশটুকুর দেড় টন পরিমাণ স্তূপ করে ১৫ সেন্টিমিটার পর পর ২০০ গ্রাম ইউরিয়া, ট্রাইকোডার্মা নামক এক ধরণের ছত্রাক এবং ২০০ গ্রাম চুন ছিটিয়ে এ সার তৈরী হচ্ছে। এই সার তৈরি করতে দুই মাস সময় লাগে। পরীক্ষামূলক ব্যবহার করে সুফল পাওয়ায় নবীনগর উপজেলায় বাজারজাত করা হয়েছে। উপজেলার বিসিইসির ২৬টি ডিলার জৈবসার কর্নার স্থাপন করে তা বিক্রি করছেন। এখন পর্যন্ত ৫ টন সারা বিক্রি হয়েছে। ১০ জন কৃষকের সমন্বয়ে তৈরি এই প্লান্টটি থেকে প্রতিমাসে ৫ টন সার উৎপাদনের কথা জানালেন, নবীনগর উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু নোমান।
এতে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি উপজেলায় রাসায়নিক সারের ব্যবহার ২৫ ভাগ কমায় বৈদেশি মুদ্রার সাশ্রয়ের কথা জানালেন, নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম। এ প্রকল্পটি উদ্ভাবনী মেলায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে।
স্টাফ রিপোর্টার:
দেশে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধী টিকার বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ৬ কোটি ৪২ লাখ ৬১ হাজার ৯১৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৬৫৮ জন। রোববার (১১ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন শাখার (এমআইএস) পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. শাহাদাত হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়। এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ১৫ হাজার ৮৪৮ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ২১ হাজার ৭৮১ জন। তাদেরকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোফার্ম, ফাইজার, মডার্না এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন ১৪ কোটি ৮৮ লাখ ৫৬ হাজার ৪৯২ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১২ কোটি ৬৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮৪৮ জন। এ সময়ে টিকার বুস্টার (তৃতীয়) ডোজ পেয়েছেন ছয় কোটি ৪২ লাখ ৬১ হাজার ৯১৪ জন।
২০২১ সালের ১ নভেম্বর ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। এখন পর্যন্ত এক কোটি ৭৩ লাখ ৯৭ হাজার ৫৩৯ শিক্ষার্থী টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছে ১ কোটি ৬১ লাখ ৯৮ হাজার ৩২৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ২৪২ শিক্ষার্থী। দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়েছেন ৬৮৯ শিক্ষার্থী। তবে এখন পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থীকে বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়নি।
এদিকে, এখন পর্যন্ত ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৭৫ লাখ ৩৫ হাজার ৮০০টি। এছাড়া দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ১০ লাখ ৩৩ হাজার ৪২১ শিশুকে। অন্যদিকে, এখন পর্যন্ত ভাসমান জনগোষ্ঠীর ৫ লাখ ৭৭ হাজার ১৮০ জনকে জনসন অ্যান্ড জনসনের সিঙ্গেল ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ১৪ হাজার ৭৭০ জন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে ছামিয়া আক্তার (১৫) নামে এক কিশোরী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
২৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে নবীনগর উপজেলার লাউরফতেপুর ইউনিয়নের বাশারুক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে কিশোরীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
ছামিয়া আক্তার উপজেলার লাউরফতেপুর ইউনিয়নের বাশারুক গ্রামের বিল্লাল মাস্টার বাড়ির আবুল হোসেনের মেয়ে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাশারুক গ্রামের পাশ্ববর্তী গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে ছামিয়ার প্রেম ছিল। তারপর তারা পারিবারিক ভাবে বিয়ে করে। বিয়ের পর জানতে পারে ছামিয়ার স্বামী একজন মাদকসেবি। পরে ছামিয়া স্বামীর সঙ্গে রাগ করে বাপের বাড়িতে চলে আসে। স্বামী মাদকাসক্ত ও বাবা-মায়ের কটাক্ষ কথা সহ্য না করতে পেরে ছামিয়া সবার অগোচরে সকালে শোয়ার ঘরের তীরের সঙ্গে ওড়না পেছিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুব আলম জানান, সকালে এক কিশোরী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার থেকে লিজা নামের এক প্রসূতির এক নবজাতক গায়েব করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
২১ এপ্রিল শুক্রবার দুপুরে জেলা শহরের মুন্সেফপাড়া খ্রিষ্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
লিজা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার আলেয়াবাদ গ্রামের ফরহাদ আহমেদের স্ত্রী।
স্বজনদের দাবি, বেশ কয়েকটি পরীক্ষায় লিজার গর্ভে দুটি সন্তান আছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেলেও সিজারিয়ান অপারেশনের পর তাকে একটি নবজাতক দেখানো হয়েছে।
লিজার স্বামী ফরহাদ আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, আমার স্ত্রী প্রথমবারের মতো গর্ভবতী হলে উপজেলার স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক মেহেরুন্নেছার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেসময় আলট্রাসনোগ্রাফিতে আমার স্ত্রীর গর্ভে দুটি সন্তান দেখা গেছে বলে জানান চিকিৎসকরা। সবশেষ ১৮ এপ্রিল করা আলট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্টে গর্ভে দুটি সন্তান আসে। আজ আমার স্ত্রীর প্রসব ব্যথা ওঠে। যমজ শিশু গর্ভে থাকায় স্থানীয় চিকিৎসকরা ঝুঁকি না নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে হাসপাতালে এনে সিজার করাতে পরামর্শ দেন।
‘দুপুরে সাড়ে ১২টার দিকে তাকে শহরের খ্রিষ্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তাকে ডা. নওরিন পারভেজ আলট্রাসনোগ্রাফি করেন। ওই রিপোর্টেও দুটি সন্তান দেখা যায়। পরে তিনি নিজেই লিজাকে সিজারিয়ান অপারেশন করেন। এর কিছুক্ষণ পর হাসপাতালের লোকজন এসে জানান, আমার স্ত্রী একটি কন্যাসন্তান জন্ম দিয়েছেন। আর কোনো সন্তানের কথা তারা জানাতে পারেননি।’
ফরহাদ আহমেদ বলেন, ‘আমার প্রশ্ন, নবীনগরে আলট্রাসনোগ্রাফিতে দুটি সন্তানের কথা জানিয়েছে। এখানে তাদের চিকিৎসকও দুটি সন্তানের কথা জানান। তাহলে আমার আরেক সন্তান গেলো কোথায়?’
এ বিষয়ে খ্রিষ্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসক নওরিন পারভেজ বলেন, ‘আমি দুই জায়গায় হার্টবিট পেয়েছি। অনেক সময় আমাদের দেখা এবং অনুমানে ভুল হতে পারে। সে অনুযায়ী আমি রিপোর্ট দিয়েছি। তবে সিজারিয়ানে গর্ভে একটি সন্তান পাওয়া গেছে।’
হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মার্শাল চৌধুরী বলেন, ‘আমরা রোগীর অভিভাবকদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি এটা মেডিকেলের বিষয়। কিন্তু তারা চেঁচামেচি করে গরম করে দিয়েছে। বাধ্য হয়ে প্রশাসনকে ডেকেছি।’
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১ নম্বর শহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শেহাবুর রহমান বলেন, শিশুর বাবার অভিযোগ, আলট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্টে দুই শিশু ছিল। হাসপাতালের চিকিৎসকও আলট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্টে দুই শিশু দেখেছেন। কিন্তু সিজারে এক শিশু পাওয়া গেছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।