অনলাইন ডেস্ক :
এশিয়ার দেশ চীনে আবারও দেখা যাচ্ছে করোনা সংক্রমণের ঢেউ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী জুনে দেশটিতে প্রতি সপ্তাহে নতুন ধরন এক্সবিবিতে ৬ কোটি ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন।
গত বছরের ডিসেম্বরে সাধারণ মানুষের আন্দোলনের মুখে হঠাৎ করে জিরো কোভিড নীতি প্রত্যাহারে বাধ্য হয় চীন সরকার। এছাড়া তুলে নেওয়া হয় সব বিধিনিষেধ। এসব কঠোর বিধিনিষেধ তুলে দেওয়ার পর অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হন এবং তাদের মধ্যে ইমিউনিটি সৃষ্টি হয়। তবে নতুন ধরন এক্সবিবি এই ইমিউনিটি ধ্বংস করে দেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চীনের করোনা বিশেষজ্ঞ ঝং নানসেন গত সোমবার এক তথ্যে জানিয়েছেন, তাদের আশঙ্কা জুন থেকে প্রতি সপ্তাহে করোনা সংক্রমণ ৪ কোটি থেকে বেড়ে ৬ কোটি ৫০ লাখে পৌঁছাতে পারে।
সাসসেপটিবল-এক্সপোসড ইনফেকসাস-রিকভার্ড মডেলের ওপর ভিত্তি করে হিসাব-নিকাষ করে জং বলেছেন, ‘কয়েকদিন পর সংক্রমণের যে ঢেউ দেখা যাবে সেটি এড়ানো খুবই কঠিন হবে।’
ওমিক্রনের নতুন উপধরন (এক্সবিবি ১.৯.১, এক্সবিবি ১.৫ এবং এক্সবিবি ১.১৬) মোকাবিলায় চীনে ইতোমধ্যে দুটি নতুন ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েন জং। এছাড়া আরও চারটি ভ্যাকসিন অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
গত ডিসেম্বরে বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর চীনের প্রায় ৮৫ ভাগ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে ওই সময়ের পর জুনে আবারও তীব্র সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ঠেকাতে এখন থেকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। ভ্যাকসিন দেওয়ার পাশাপাশি হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ এন্টি ভাইরাল ওষুধ রাখতে হবে।
২০২০ সালের ১১ মার্চ ডব্লিউএইচও করোনাকে মহামারি ঘোষণা করার পর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে চীনসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশ দীর্ঘ লকডাউন, সপ্তাহের পর সপ্তাহব্যাপী বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন, সামাজিক দূরত্ববিধি, বাধ্যতামূলক করোনা টেস্টসহ কঠোর সব বিধি জারি করেছিল। তবে ২০২১ সালের প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ প্রায় সব বিধি উঠিয়ে নিলেও চীন সে পথে হাঁটেনি।
বরং মহামারির প্রায় তিন বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও দেশজুড়ে যাবতীয় কঠোর করোনাবিধি জারি রেখেছিল চীন। সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল এই দেশটির এ অবস্থান পরিচিতি পেয়েছিল জিরো কোভিড নীতি হিসেবে।
তার সুফলও অবশ্য পাওয়া যাচ্ছিল। মহামারির দুই বছরে যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেখানে লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত ও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে— সেখানে চীনের সরকারি তথ্য অনুযায়ী এই সময়সীমার মধ্যে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন মাত্র ৩৩ হাজারের কিছু বেশি মানুষ এবং মৃত্যু ছিল এক হাজারের কিছু ওপরে।
কিন্তু প্রায় তিন বছর কঠোর করোনা বিধির মধ্যে থাকার জেরে অতিষ্ঠ চীনের সাধারণ জনগণ ২০২২ সালের নভেম্বরের শেষদিকে করোনা বিধির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে। জনগণের এই বিক্ষোভের পর ডিসেম্বরের প্রথম দিকে ‘জিরো কোভিড’ নীতি থেকে সরে এসে সব করোনাবিধি শিথিল করে দেয় দেশটির সরকার।
তারপর থেকেই দেশটিতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যায় উল্লম্ফন দেখা যায়। ওই সময় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছিলেন, হাসপাতালগুলো করোনা রোগীদের উপচে পড়া ভীড় দেখা গিয়েছিল।
গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যেভিত্তিক স্বাস্থ্যতথ্য গবেষণা সংস্থা এয়ারফিনিটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, চীনে কোভিডজনিত অসুস্থতায় প্রতিদিন ৯ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছিলেন। যদিও চীন এসব দাবি অস্বীকার করেছিল।
অনলাইন ডেস্ক :
‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত সৌদির আরাফাত ময়দান। পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতায় আজ ১৫ জুন শনিবার সৌদি আরবের মক্কা নগরী থেকে ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা লাখ লাখ হাজি।
আরবি বর্ষপঞ্জি অনুসারে ৯ জিলহজ। এটি পবিত্র ‘আরাফাত দিবস’ হিসেবেও পরিচিত। ঐতিহাসিক এই ময়দানে ইবাদত বন্দেগি আর দোয়া মোনাজাতে মশগুল হাজিরা। এদিন সকাল থেকে কণ্ঠে তাদের সমস্বরে উচ্চারিত হচ্ছে- ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা, ওয়ান্নি মাতা লাকা ওয়াল্মুল্ক্, লা শারিকা লাকা’। এর বাংলা অর্থ ‘আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার’।
সাদা দুই টুকরা কাপড়ে শরীর ঢেকে হজযাত্রীরা আজ শনিবার মিনায় ফজরের নামাজ আদায়ের পর থেকেই পবিত্র আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে রওনা করেন। এই আরাফাতের ময়দানেই মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তাঁর বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। সেই স্মৃতি বুকে ধারণ করে মুসলিমরা সমবেত হচ্ছেন এই পবিত্র প্রান্তরে।
গত ৮ জিলহজ শুক্রবার মক্কা থেকে পাঁচ থেকে আট কিলোমিটার পূর্বে মিনায় তাঁবুতে অবস্থান করেছেন হজযাত্রীরা। সেখানে ইবাদত বন্দেগিতে দিন ও রাত পার করেছেন তারা। সেখান থেকে আজ ভোরে তারা আল্লাহকে কাছে পাওয়ার এক তীব্র আকাক্সক্ষায় ছুটে এসেছেন আরাফাতের ময়দানে। মুহুর্মুহু উচ্চারণ করছেন- ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা, ওয়ান্নি মাতা লাকা ওয়াল্মুল্ক্, লা শারিকা লাকা’। এ এক অভূতপূর্ব দৃশ্য।
আরব নিউজ অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, সারা বিশ্ব থেকে ২০ লাখের বেশি হজযাত্রী গত শুক্রবার মিনায় তারবিয়া দিবস কাটিয়েছেন। এদিন তারা হজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আরাফাত দিবসের প্রস্তুতি নেন। হজযাত্রীরা হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর দেখানো পথ অনুসরণ করে শনিবারের আরাফাত দিবসের জন্য তাদের চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দক্ষ ট্রাফিক ও নিরাপত্তা পরিকল্পনা হজযাত্রীরা মসৃণভাবে হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে পারছেন। হজযাত্রীদের সুস্থতা নিশ্চিত করতে ৩৪ হাজারের বেশি চিকিৎসক, নার্স, ফার্মাসিস্ট এবং প্রশাসনিক কর্মীরা কাজ করেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
১৮৯টি নিবেদিত হাসপাতাল, চিকিৎসা কেন্দ্র এবং মোবাইল ক্লিনিকের অসুস্থ হাজিদের পরিবহণে ৭৩০টি অ্যাম্বুলেন্স এবং সাতটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ৭ জুন থেকে এসব চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে ১৮০ জন হজযাত্রীর হার্টে অস্ত্রোপচার এবং ৪৭০ জনেরও বেশি হাজির ডায়ালাইসিস করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ৭০ হাজারের বেশি হজযাত্রী মন্ত্রণালয় প্রদত্ত বিভিন্ন চিকিৎসা পরিষেবা গ্রহণ করেছেন। তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায় মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের সূর্যের তাপ থেকে রক্ষা পেতে ছাতা ব্যবহার এবং প্রচুর পানি পান করার আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী তৌফিক আল-রাবিয়া বলেছেন, ‘পবিত্র স্থানগুলো সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আমরা হজ করতে আসা সবাইকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই।’
মিউনিসিপ্যাল, রুরাল ও আবাসন বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানায়, পবিত্র স্থানগুলোতে হাজিদের সহায়তায় তাদের ২২ হাজার কর্মী কাজ করছেন। এ ছাড়া ৮৮ হাজার ডাস্টবিন সরবরাহ করা হয়েছে।
আজ সারা দিন হাজিরা পবিত্র আরাফাতের ময়দানে আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও রহমত চেয়ে প্রার্থনা করবেন। এ ময়দানে অবস্থানকালে হজযাত্রীরা নামিরাহ মসজিদে জোহরের নামাজ আদায় করবেন। বিশ্বের লাখ লাখ হজযাত্রী সম্মিলিতভাবে আল্লাহর উপাসনায় নিজেদের নিমগ্ন রাখবেন। আজ সন্ধ্যায় হজযাত্রীরা মুজদালিফায় যাত্রা শুরু করবেন। এটি আরাফাত ও মিনার মধ্যে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। হজযাত্রীরা মুজদালিফায় রাত কাটাবেন এবং ছোট পাথর সংগ্রহ করবেন। মিনায় জামারাত স্তম্ভে শয়তানকে লক্ষ্য করে এসব পাথর নিক্ষেপ করবেন তারা।
(১০ জিলহজ) সৌদি আরবের স্থানীয় সময় রবিবার ভোরে ফজরের নামাজ শেষ করে আবার মিনায় ফিরে আসবেন হজযাত্রীরা। সেখানে জামারাত আল-আকাবায় পাথর নিক্ষেপ করার পর পশু কোরবানি করবেন তারা। এরপর তাওয়াফ আল-ইফাদাহ বা ফরজ তাওয়াফ করার জন্য মসজিদুল হারামে যাবেন। এই তাওয়াফ অবশ্য ১০ থেকে ১২ জিলহজের মধ্যে যেকোনো সময় করতে পারবেন তারা। এ সময় তারা কাবা শরিফ তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়া সাঈ করবেন এবং মাথা মুণ্ডন করবেন। একবার এই পবিত্র কাজটি সম্পন্ন করার পর হজযাত্রীদের আর ইহরামের নিয়মের মধ্যে আবদ্ধ থাকতে হবে না। তারা সব হালাল (অনুমতিযোগ্য) কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত হতে পারবেন।
হজের অবশিষ্ট আচারগুলো সম্পন্ন করতে হজযাত্রীদের অবশ্যই আবার মিনায় ফিরে যেতে হবে। তাশরিকের দিনগুলোতে ১১, ১২ ও ১৩ জিলহজ হজযাত্রীদের মিনায় আরও দুটি কাজ করতে হবে। ১১ জিলহজ বিকেলে হজযাত্রীরা ২১টি ছোট পাথর সংগ্রহ করে তিন জামারাতে নিক্ষেপ করবেন। পাথর নিক্ষেপ শুরু হয় জামারাত আল-উলা দিয়ে, তারপর জামারাত আল-উস্তা এবং পরে জামারাত আল-আকাবা দিয়ে শেষ হয়।
মক্কা থেকে যাত্রা করার আগে হজযাত্রীদের তাওয়াফ আল-বিদা করতে হবে, যা বিদায়ী তাওয়াফ নামেও পরিচিত। এটি হজ সম্পন্ন করায় অত্যন্ত তাৎপর্য বহন করে এবং সব হজযাত্রীদের জন্য বাধ্যতামূলক।
সৌদি কর্মকর্তারা বলেছেন, ২০২৩ সালে ১৮ লাখের বেশি লোক হজ করতে দেশটিতে জড়ো হয়েছিলেন। করোনা মহামারির আগে ২০১৯ সালে ২৪ লাখের বেশি মুসলমান হজে অংশ নেন। এ বছর প্রায় ২০ লাখ মানুষ হজ পালন করছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো।
অনলাইন ডেস্ক :
জার্মানিতে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে উভয় নেতা দ্বিপক্ষীয় ও বৈশ্বিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন বলে জানা গেছে।
আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকালে হোটেল বায়েরিসচার হোফের সম্মেলনস্থলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে দুই নেতা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ ও বৈঠকের আগে জার্মানির অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন বিষয়ক ফেডারেল মন্ত্রী একই স্থানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এর আগে সকালে সম্মেলনস্থলে নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বৈঠক করেছেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন ২০২৪-এ যোগ দিতে তিন দিনের সরকারি সফরে ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় মিউনিখে পৌঁছেন।
সফর শেষে শেখ হাসিনা আগামীকাল রাতে মিউনিখ ত্যাগ করবেন। ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা পৌঁছার কথা রয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
মিয়ানমারের জান্তানিয়ন্ত্রিত তেল-গ্যাস কোম্পানি মিয়ানমার অয়েল অ্যান্ড গ্যাস এন্টারপ্রাইজের (মগে) ওপর বিশেষ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন অর্থবিষয়ক ট্রেজারি বিভাগ।
এর আগে দেশটির সামরিক শাসক ও শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞার খড়গ আরোপ করলেও এবারই প্রথম দেশটির রাষ্ট্রীয় সংস্থার ওপর সরাসরি আঘাত হানল ওয়াশিংটন।
সেনাশাসিত দেশটির বৈদেশিক রাজস্ব আয়ের প্রধান উৎস হচ্ছে জ্বালানিবিষয়ক এই রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ট্রেজারি বিভাগ থেকে এক বিবৃতিতে এ নিষেধাজ্ঞার কথা জানানো হয়। আগামী ১৫ ডিসেম্বর থেকে এটি কার্যকর হবে। খবর রয়টার্সের।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় তেল ও গ্যাস এন্টারপ্রাইজের বেশ কিছু আর্থিক পরিষেবা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ট্রেজারি বিভাগ। এসব পরিষেবার মধ্যে আছে— ঋণ, অ্যাকাউন্ট, বিমা, বিনিয়োগ ও অন্যান্য পরিষেবা।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির জান্তা সরকারের বৈদেশিক আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস হলো তেল ও গ্যাস রপ্তানি।
জান্তা সরকারের পরিসংখ্যান অনুসারে, শুধু এই খাত থেকে ২০২২ সালের ৩১ মার্চ থেকে ছয় মাসে ১৭২ কোটি ডলার আয় করেছে সেনা সরকার। দেশটির তেল ও গ্যাস শিল্পের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে মগে।
বিশেষ এই নিষেধাজ্ঞার ফলে মিয়ানমারের এই এন্টারপ্রাইজকে মনোনীত প্রতিষ্ঠানের তালিকা থেকে বাদ দেবে ওয়াশিংটন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকেও বের করে দেওয়া হবে মগেকে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এর বাণিজ্য সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হবে। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে এর সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করা হবে।
মানবাধিকার সংগঠন জাস্টিস ফর মিয়ানমারের মুখপাত্র ইয়াদানার মাউং যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, মগের বিরুদ্ধে মার্কিন আর্থিক পরিষেবা বন্ধের ঘোষণা তেল ও গ্যাস খাত থেকে জান্তার তহবিলে বিশাল অর্থের প্রবাহকে ব্যাহত করবে।
জান্তা সরকারের বৈদেশিক অর্থ ও অস্ত্রের প্রধান উৎস মগের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ অব্যাহত রাখা উচিত। এ সময় তিনি মগের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানান।
অনলাইন ডেস্ক :
ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে স্পেন, নরওয়ে ও আয়ারল্যান্ড । ২৮ মে এ স্বীকৃতি দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে দেশ তিনটি।
স্পেন ও আয়ারল্যান্ড বলেছে, তাদের এ সিদ্ধান্ত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কিংবা হামাসের পক্ষে নয়। শান্তির সমর্থনে তাদের এ সিদ্ধান্ত।
ইসরায়েল অবশ্য ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং সতর্ক করে বলেছে, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পদক্ষেপের অর্থ এ অঞ্চলে আরও অস্থিরতা।
ইসরায়েল তিন দেশে থাকা রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে আনছে। অন্যদিকে, দেশ তিনটির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে হামাস ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।
আজ ২২ মে বুধবার নরওয়ে প্রথম এ সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেয়।
নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী ইউনাস গার স্তুরে এ নিয়ে বলেন, দুই রাষ্ট্র সমাধানের মাধ্যমে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র পাশাপাশি শান্তিতে থাকতে পারবে।
এরপরই আয়ারল্যান্ড ও স্পেন ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিশেল মার্টিন বলেন, আমরা ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলি জনগণের নিরাপত্তা, মর্যাদা এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের সমান অধিকারের ক্ষেত্রে আমাদের দ্ব্যর্থহীন সমর্থন স্পষ্টভাবে প্রকাশ করছি।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস অবশ্য জোর দিয়ে বলেছেন, হামাস ফিলিস্তিনি নয়। তিনি বলেন, ফিলিস্তিকে স্বীকৃতি দেওয়ার আজকের সিদ্ধান্ত শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যৎ তৈরিতে সহায়তার জন্য নেওয়া হয়েছে।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের কণ্ঠেও হ্যারিসের মন্তব্য প্রতিধ্বনিত হয়েছে। স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ সিদ্ধান্ত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নয়, ইহুদিদের বিরুদ্ধে নয়। এটি হামাসের পক্ষেও নয়। এ স্বীকৃতি কারো বিরুদ্ধে নয়, এটি শান্তি ও সহাবস্থানের পক্ষে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইয়েল কাৎজ বলেন, তিনি পরামর্শের জন্য ওই তিন দেশে থাকা ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতদের ফেরার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েল নীরব থাকবে না।
কাৎজ আরো বলেন, ইসরায়েলে নিযুক্ত ওই তিন দেশের দূতকেও তলব করা হবে।
সূত্র : বিবিসি
অনলাইন ডেস্ক :
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম-এ সরকারের সমালোচনা করায় মোহাম্মদ আল-গামদি নামে একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে সৌদি আরব। একই অভিযোগে এর আগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। পরে সেই সাজা বাতিল করেন আদালত। এরপর দুই মাসের কম সময়ের ব্যবধানে সৌদি আদালত নতুন সাজা ঘোষণা করেছেন বলে জানিয়েছেন অভিযুক্তের ভাই সাঈদ আল-গামদি।
সৌদি আরবের বর্তমান ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের শাসনামলে দেশটিতে বাকস্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। মোহাম্মদ আল-গামদির সাজাও ভিন্নমত দমনের অংশ বলে মনে করছেন সমালোচকরা। মানবাধিকার সংস্থাগুলোও এর প্রতিবাদ করে আসছে।
এর আগে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে এক সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ বিন সালমান এই মামলাটি নিয়ে মন্তব্য করেন। সরকার এতে ‘লজ্জিত’ উল্লেখ করে রায় পরিবর্তনের আশা ব্যক্ত করেন সালমান।
সাঈদ আল-গামদি বার্তা সংস্থা এএফপি’কে বলেন, গত আগস্ট মাসে মোহাম্মদ আল-গামদির মৃত্যুদণ্ড বাতিল করা হয়। তবে আপিল আদালত তাকে একই অভিযোগে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যে অবস্থানকারী ইসলামিক স্কলার সাঈদ আল-গামদি বলেন, সৌদি আরবে সরকারের সমালোচকদের ওপর কঠোর পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এই সাজা দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, ৫০ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোহাম্মদ আল-গামদিকে ২০২২ সালের জুন মাসে গ্রেফতার করা হয়।