চলারপথে রিপোর্ট :
আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নিপুণ বাসা তৈরিতে দক্ষ কারিগর বাবুই পাখি ও এর বাসা এখন আর আগের মত চোখে পড়ে না। পরিবেশ বিপর্যয়, জলবায়ু পরিবর্তন, বন উজার, নতুন বনায়নে বাসযোগ্য পরিবেশ ও খাদ্যের অভাব, নির্বিচারে তালগাছ কর্তন, অসাধু শিকারীর ফাঁদসহ বহুবিধ কারণে কালের আবর্তে প্রকৃতির স্থপতি, বয়ন শিল্পী এবং সামাজিক বন্ধনের প্রতিচ্ছবি বাবুই পাখি ও এর দৃষ্টিনন্দন বাসা ক্রমান্বয়ে হারিয়ে যাচ্ছে।
আজ থেকে ১৫-২০ বছর আগেও গ্রাম-গঞ্জে ব্যাপক ভাবে বাবুই পাখির বাসা চোখে পড়ত। নিরীহ, শান্ত প্রকৃতির এই বাবুই পাখি উচু এবং নিরিবিলি পরিবেশে বাসা তৈরি করে। এরা গ্রাম-গঞ্জের তাল, সুপারি, নারিকেল, খেজুর গাছে বাসা তৈরি করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। এ সব গাছের সংকটে মাঝে মাঝে হিজল গাছেও বাসা বাধতে দেখা যায়। কিন্তু কালের বিবর্তনে বড় বড় গাছ নিধন ও পাখি শিকারের কারণে পরিবেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখি। উঁচু তাল, নারিকেল ও খেজুর গাছে বাসা বাঁধলেও এ সব গাছ বিলুপ্ত হওয়ায় বাবুই পাখিও হারিয়ে যেতে বসেছে প্রকৃতি থেকে। এই পাখি বাসা তৈরির কাজে ব্যবহার করে খড়ের ফালি, ধানের পাতা, তালের কঁচি পাতা, ঝাউ ও কাঁশবনের লতা। চমৎকার আকৃতির এই বাসা বিশেষ করে তাল গাছের ডালে এমন ভাবে সাটানো থাকে যাতে কোনো ঝড়-তুফানে সহসাই ছিড়ে না পড়ে। এদের বাসা শুধু শৈল্পিক নিদর্শনই নয়, মানুষের মনে চিন্তার খোরাক জোগায় এবং স্বাবলম্বী হতে উৎসাহিত করে। ঠোট দিয়ে বাবুই পাখি আন্তর ছড়ায়। পেট দিয়ে ঘঁষে তা আবার মসৃণ করে। বাসা বানাতে শুরুতই দুটি নিম্নমুখী গর্ত করে থাকে। পরে তা একদিকে বন্ধ করে ডিম পাড়ার জায়গা করে। অন্যদিকে লম্বা করে প্রবেশ ও প্রস্থান পথ তৈরি করে। ব্যালেন্স করার জন্য বাসার ভিতরে কাদার প্রলেপ দেয়। আধুনিক যুগে যা বড়ই যুক্তি সংগত। বাসার ভিতরে ঠিক মাঝখানে একটি আড়া তৈরি করে বাবুই পাখি। কি অপূর্ব বিজ্ঞান সম্মত চেতোনাবোধ। ছোট হলেও বুদ্ধিতে সব পাখিকে হার মানায়।
বাবুই ডিমে তা দেয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে বাচ্চা ফোটে। কৃষকের ধান ঘরে ওঠার মৌসুম হল বাবুই পাখির প্রজনন মৌসুম। বাবুই পাখির বাসা শুধু শৈল্পিক নিদর্শনই না, মানুষকে আত্মনির্ভশীল হতে উৎসাহ দেয়। কৃষ্ণনগর গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি অলেক মিয়া বলেন- “গত কয়েক বছর ধরে তাদের গ্রামের কয়েকটি তালগাছে বাবুই পাখিন বাসা দেখছেন। পাখি ও পাখির বাসা দেখতে এবং কিচির মিচির শব্দ শুনতে খুবই ভাল লাগে। গৃহিনী আসমা বেগম বলেন- তাদের বাড়ির সামনের তাল গাছে বাবুই পাখি বাসা বানিয়েছে। সাংস্কৃতিককর্মী মাহমুদ জানান- দিন দিন তাল গাছ নিধনের ফলে বাবুই পাখি আজ বিলুপ্তির পথে। তাই বড় বড় তাল গাছ রক্ষা ও নতুন করে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে পাখি সংরক্ষণের দাবি জানান তিনি। সুর সম্রাট আলাউদ্দীন খাঁ ডিগ্রি কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, “সারাবিশ্বে বাবুই পাখির প্রজাতির সংখ্যা ১১৭টি। তবে বাংলাদেশে তিন প্রজাতির বাবুই পাখির বাস।
তিনি আরও বলেন- বাবুই পাখির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো রাতের বেলায় ঘর আলোকিত করার জন্য এরা জোনাকি পোকা ধরে নিয়ে বাসায় রাখে এবং সকাল হলে আবার তাদের ছেড়ে দেয়। ধান, চাল, গম ও পোকা-মাকড় প্রভৃতি তাদের প্রধান খাবার। বাবুই পাখির জন্মগত ভাবেই শৈল্পিক দক্ষতা থাকে। কি ভাবে বাসা বাঁধবে এটা তারা তাদের মায়ের কাছ থেকেই শিখে নেয়। এই গুণ অন্য পাখির মধ্যে নেই। এরা সমাজবদ্ধ ভাবে বসবাস করে বলে তাদের সামাজিক পাখিও বলা হয়। এরা শস্য দানা, ধান, গম ইত্যাদি খেয়ে জীবনধারণ করে। তিনি বলেন, এ পাখির মধ্যে একটি বৈজ্ঞানিক গুণও আছে। পুরুষ পাখিরা বিশ্রামের জন্য বাসা বাঁধে আর নারী পাখিরা বাসা বাঁধে ডিম ফুটানো ও বাচ্চা সংরক্ষণের জন্য। যখন বাচ্চা ফোটার সময় হয় তখন মা পাখিরা এক টুকরা গোবর নিয়ে বাসায় রাখে। যাতে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে বাচ্চাদের ক্ষতি করতে না পারে”।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তদের গুলিতে ৫ জন বালু মহলের ইজারাদার ও শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ১ সেপ্টেম্বর রবিবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের সোনাবালুয়া ঘাটে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রায় শতাধিক গুলির আওয়াজে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আহত চারজনকে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে।
অন্য ১জনকে উপজেলার সলিমগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন কবির মিয়া (৪৫), সফিদ মিয়া (৪০), খলিল মিয়া (৪২), ফারুক মিয়া ও আলকাছ মিয়া (৩৬)। তারা সবাই উপজেলার ধরাভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা।
এলাকাবাসী ও বালুমহল ইজারাদার সূত্রে জানা যায়, নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের জাফরাবাদ মৌজায় অবস্থিত মেঘনা নদী থেকে সম্প্রতি প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বালু উত্তোলনের ইজারা পায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুন্সি এন্টারপ্রাইজ।
ইজারা পাওয়ার পর থেকে মেঘনা নদীর জাফরাবাদ ও নতুন চর বালু মহালের বালু উত্তোলন শুরু করে। তবে মেঘনা নদীর ওপর প্রান্ত অবস্থিত নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার কিছু লোক এই এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করতে মোটা অংকের টাকা চাঁদা দিতে হবে বলে বারবার দাবি করে আসছিলেন। ইজারাদার থেকে চাঁদার টাকা না পেয়ে গত দুদিন থেকে অবৈধভাবে ৬টি ড্রেজার দিয়ে চুরি করে বালু উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছিল দুর্বৃত্তরা। তখন স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে শরণাপন্ন হন ইজারাদার কর্তৃপক্ষ।
তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে দুর্বৃত্ত সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা রবিবার সন্ধ্যায় ২/৩টি স্পিডবোটযোগে এসে বালু মহালের ক্যাশ কাউন্টারে হামলা চালায়। এ সময় শ্রমিকদের ওপর অতর্কিতভাবে এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়ে ৫ জনকে গুরুতর আহত করে।
নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আফজাল হোসাইন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা শুনেছি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলার জিনোদপুর ইউনিয়নের হুরুয়া গ্রামের মৃত আব্দুল খালেক মিয়ার ছেলে জজ মিয়া (৫৫) ও কাঠালিয়া গ্রামের শুক্কু চন্দ্র পালের ছেলে কৃষ্ণ চন্দ্র পাল(৪৫) কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার এস আই কালাম ও বিল্লাল হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ ২৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে জিনতপুর বাজারে ব্যবসায়ী কৃষ্ণচন্দ্র সাহার দোকানে অভিযান চালিয়ে ৫০০ গ্রাম গাঁজাসহ এই দুজনকে গ্রেফতার করে।
জানা যায়, প্রতিদিন জজ মিয়া কৃষ্ণ চন্দ্র সাহার প্লাস্টিক মালামালের দোকানে বসতেন এবং ব্যবসার আড়ালে মাদকের ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন, প্রতিদিন কৃষ্ণচন্দ্রের পালের সহযোগিতায় দোকানে বসে গাঁজা বিক্রি করতেন।
নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ূন কবির জানান, আাসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে ছেলের হাতে লিল মিয়া (৭৫) নামের এক বৃদ্ধ খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ ১৪ আগস্ট সোমবার দুপুরে উপজেলার জিনোদপুর ইউনিয়নের কাঠালিয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় পুলিশ বৃদ্ধের ছেলে জসিমকে (৪০) আটক করেছে। নবীনগর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, লিল মিয়ার ছেলে জসিম প্রায় ১৫ বছর যাবত মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত। সোমবার দুপুরে লিল মিয়া জমিতে পাট কাটতে যান। এ সময় জসিমকে পাট কাটায় সহযোগিতা করতে বলেন লিল মিয়া। এ নিয়ে ছেলের সঙ্গে লিল মিয়ার বাকবিতণ্ডা হয়। এরই জেরে ধান ভাঙার ছিয়া দিয়ে জসিম তার বাবার মাথায় আঘাত করেন। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে লিল মিয়া মারা যান।
তিনি আরো জানান, এই ঘটনায় ঘাতক ছেলে জসিমকে আটক করেছে পুলিশ। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে এক কাজীর বিরুদ্ধে আরেক কাজীর সংববাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ২০ মে শনিবার সকালে শ্যামগ্রাম বাজারে কাজী মোঃ জয়নাল আবেদিনের অফিসে এ সংবাদ সম্মেল অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে জয়নাল আবেদিন লিখিত বক্তব্য বলেন দুজনের মধ্যে দীর্ঘদিনের চলমান মামলা অবশেষে সুপ্রিম কোর্ট আমার পক্ষে রায় দিয়েছে। আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে শ্যামগ্রাম ইউনিয়নে বিবাহ নিবন্ধনের জন্য আমিই একক কাজী।
এদিকে মোসাদ্দেক কাজী জানায় এই সংবাদ সম্মেলন মিথ্যা ভিত্তিহীন, আমার বাবা দীর্ঘদিন এই ইউনিয়নের কাজীর দায়িত্বে ছিলেন, তারিই ধারাবাহিকতায় শ্যামগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের রেজুলেশন সাপেক্ষে আমি এই ইউনিয়নের কাজীর দায়িত্ব পালন করে আসছি। জয়নাল কাজী নিজেকে নিয়োগপ্রাপ্ত কাজী দাবি করছেন কিন্তু মামলা চলমান অবস্থায় কাউকে নিয়োগ দেওয়ার এখতিয়ার নাই। তাহলে তিনি কি করে নিজেকে নিয়োগপ্রাপ্ত কাজী দাবি করেন।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আমি রিকল পিটিশন দায়ের করেছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলায় মোবাইল চুরির অপবাদ সহ্য করতে না পেরে আবুল কালাম (৩৫) নামে এক যুবকের গলায় ফাঁস দিয়ে ‘আত্মহত্যার’ অভিযোগ উঠেছে।
আজ ২২ ডিসেম্বর রবিবার উপজেলার বিটঘর মধ্যপাড়া নয়ন সরকারের পুকুর পাড়ে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আবুল কালাম উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের মিরপুর গ্রামের আব্দুর রহিম মিয়ার ছেলে।
জানা যায়, আবুল কালাম দীর্ঘদিন ধরে বিটঘর মধ্য পাড়ার মৃত রূপ মোল্লার বাড়িতে বাসা ভাড়া থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করতেন। তিনি স্থানীয় অলি মিয়ার বাড়িতে কাজ করতে গেলে সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে মোবাইল চুরির অভিযোগ উঠে। এই অপবাদে জালাল মিয়ার বাড়িতে তাকে হাত-পা বেঁধে মারধর করে প্রায় ২৪ ঘণ্টা বেঁধে রাখা হয়। এই অপমান সহ্য করতে না পারে তিনি সকালে গলায় ফাঁস দিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার খোকন মিয়া বলেন, আবুল কালাম আমার বাড়ির পাশের একটি বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া থাকতেন। শুনেছি মোবাইল চুরির অপবাদ দেয়া হয় তার বিরুদ্ধে। অপবাদ সহ্য করতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।