চাঁদপুরে জাতীয় বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড উদ্বোধন

জাতীয়, 2 June 2023, 1106 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, সরকার যে টেকসই উন্নয়নের কথা বলছেন, সেটি কেমন হতে পারে। যে কোন উদ্ভাবন হবে বর্তমান চাহিদা মিটিয়ে ভবিষ্যৎ ব্যবহারের যোগ্য করে তোলা। এ ধরণের পরিকল্পনা করেই আমাদের কাজ করতে হবে।

banner

আজ ২ জুন শুক্রবার দুপুরে চাঁদপুর মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪৪তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ, বিজ্ঞান মেলা এবং সপ্তম জাতীয় বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড ২০২৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মেলায় বিভিন্ন ইভেন্টে অনেক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) বশির আহমেদ এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ, চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. অশিত বরণ দাস, পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার ও বাবুরহাট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন, জেলা শিক্ষা অফিসার প্রাণ কৃষ্ণ দেবনাথ।

সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম বাবুর উপস্থাপনায় ‘সৌর বিদ্যুতের সম্ভাবনা’ বিষয়ে মূখ্য আলোচকের বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট বিজ্ঞান ক্লাব সংগঠক ডা. পীযূষ কান্তি বড়ুয়া এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চাঁদপুর সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. শেখ সাদী।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ অতিথিরা শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী স্টল পরিদর্শন করেন। অনুষ্ঠানে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সুধীজন উপস্থিত ছিলেন। মেলার আয়োজনে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন, তত্ত্বাবধানে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যাদুঘর এবং পৃষ্ঠপোষকতায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।

Leave a Reply

আখাউড়ায় স্ত্রীর অভিযোগে মাদকাসক্ত স্বামীর কারাদণ্ড

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় স্ত্রীর দেওয়া অভিযোগে মাদকাসক্ত Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অতিরিক্ত দামে ওষুধ বিক্রির দায়ে…

চলারপথে রিপোর্ট : মাত্র সাড়ে ৭ টাকার ইনজেকশন প্রায় ৫০ Read more

এশিয়ান কাপের মূলপর্বে বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক : মিয়ানমারকে হারিয়ে চমক দেখানোর পর বাংলাদেশ নারী Read more

কোটি টাকার ভারতীয় মালামাল জব্দ

চলারপথে রিপোর্ট : ফেনীর পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলার সীমান্ত এলাকা Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বীজ, সার ও গাছের চারা…

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে সরাইল Read more

ইখলাস মানুষের হৃদয়ে সৃষ্টি হয়

আল্লামা মাহ্‌মূদুল হাসান : ইখলাস মানুষের দিলে সৃষ্টি হয়। আর Read more

প্রাথমিক তদন্তেই ভুয়া মামলার আসামিরা রেহাই…

অনলাইন ডেস্ক : উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ফৌজদারি কার্যবিধির একটি সংশোধন Read more

গাজীপুরে শফিক, তারিক, পাপনের ১০ তলা…

জায়েদুল কবির ভাঙ্গি, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর : গাজীপুর সদরের চান্দনা Read more

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা পরিষদ…

অনলাইন ডেস্ক : বরগুনার পাথরঘাটায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা Read more

ইসরাইলি হামলায় একদিনে আরো ৮১ ফিলিস্তিনি…

অনলাইন ডেস্ক : গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৮১জন ফিলিস্তিনি Read more

কৃষি বীজ সংরক্ষণাগার ভেঙে দোকান নির্মাণের…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নের দেলি Read more

মিথ্যা মামলা করলে কী কী শাস্তি?

অনলাইন ডেস্ক : দেশের অন্যতম আলোচিত বিষয় হলো মিথ্যা মামলা। Read more

ঢালাও আসামির নেপথ্যে বাণিজ্য, বিদ্বেষ, দ্বন্দ্ব

জাতীয়, 27 April 2025, 160 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
কিশোরগঞ্জের দুলাল রবিদাসের মৃত্যু হয়েছে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের (স্ট্রোক) কারণে। গত বছরের ২৭ জুলাই তাঁর মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করে সনদ দিয়েছে স্থানীয় একটি হাসপাতাল। অথচ জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে তিনি নিহত হয়েছেন—এমন অভিযোগ এনে ২৯ নভেম্বর কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। আসামি করা হয় অজ্ঞাতনামা ৬০০ জনসহ ৭৬৮ জনকে।

banner

এ মামলা নিয়ে প্রথম আলোর অনুসন্ধানে চাঁদাবাজি ও পূর্বশত্রুতার জেরে হয়রানির অভিযোগসহ নানা অনিয়ম সামনে এসেছে। যে অভিযোগে মামলাটি হয়েছে, তা সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন দুলাল রবিদাসের স্বজনেরাই। ঘটনার সময়, হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা, আসামির তালিকা—সবই ভুয়া।

গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন থানায় জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আহত হওয়ার ঘটনায়ও অনেক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় প্রকৃত আসামি, সন্দিগ্ধ ব্যক্তির পাশাপাশি হয়রানিমূলকভাবেও অনেককে আসামি করা হয়েছে। যাঁদের মধ্যে ব্যবসায়ী, পেশাজীবী, অন্যত্র থাকা মানুষ ও অরাজনৈতিক ব্যক্তিও রয়েছেন। দুলাল রবিদাসের মতো সাজানো ঘটনার পাশাপাশি কোথাও সত্য ঘটনার মামলায় এ রকম অনেককে আসামি করে ‘মামলা–বাণিজ্য’ হচ্ছে। মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার আশ্বাস, ভুলবশত আসামি করা হয়েছে মর্মে হলফনামা দিয়ে ও পুলিশ প্রতিবেদনে নির্দোষ দেখানোর প্রতিশ্রুতিসহ নানাভাবে এই বাণিজ্য করার অভিযোগ যেমন আছে, আবার প্রতিপক্ষের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়েও কাউকে কাউকে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগও রয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই অভ্যুত্থানে হতাহতসহ বিভিন্ন ঘটনায় অন্তত ১ হাজার ৪৯৯টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে হত্যা মামলা ৫৯৯টি। অন্যান্য ৯০০টি। এসব মামলায় ১০ হাজারের বেশি ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যা মামলার মধ্যে অনেকগুলোর তদন্তে অগ্রগতি আছে বলেও পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।

তবে দুলাল রবিদাসের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ৪০টি মামলা পর্যালোচনা করে ঢালাওভাবে আসামি করাসহ নানা অসংগতি দেখা গেছে। ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ব্যক্তিদের চেয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

মাঠপর্যায়ে খোঁজখবর করে জানা গেছে, হয়রানিমূলক আসামি করার ক্ষেত্রে অধিকাংশ স্থানে ভূমিকা রেখেছেন বিএনপির কোনো না কোনো নেতা–কর্মী। কিছু ক্ষেত্রে কতিপয় অসাধু আইনজীবী, পুলিশ সদস্য ও দালাল চক্র জড়িত। কোথাও প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য, কোথাও চাঁদাবাজির জন্য, কোথাও ব্যক্তিগত বা পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আসামি করার ঘটনা ঘটেছে। এমনকি জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন অথবা বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত—এমন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে।

 

বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ব্যক্তিগত বিরোধ ও বিদ্বেষ থেকে মামলায় বিভিন্নজনের নাম দেওয়া হচ্ছে। নিরপরাধ ব্যক্তিদের প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ থাকতে হবে।

মামলা কারা করছেন
যে ৪০টি মামলার খোঁজখবর নিয়েছে প্রথম আলো, সেগুলোর মধ্যে ২৩টি ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় ও ৯টি চট্টগ্রামে করা মামলা। বাকি ৮টি মামলার মধ্যে ৬টি নারায়ণগঞ্জের, কিশোরগঞ্জ ও ফেনীর ২টি মামলা। এসব মামলার বাদীদের মধ্যে ১৪ জন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দুজন শহীদের বাবা। একটি মামলার বাদী নিজেকে গণ অধিকার পরিষদের সদস্য হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। একটি মামলার বাদী যুবলীগ কর্মী, যিনি অন্য মামলার আসামি। বাকি ২২টি মামলার বাদীদের মধ্যে ৯ জন তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় জানাতে চাননি। ১৩ মামলার বাদীর রাজনৈতিক বা পেশাগত পরিচয় জানা যায়নি।

মামলাগুলোর তথ্য অনুসন্ধান করতে গিয়ে বাদী, আসামি ও তাঁদের স্বজন, সংশ্লিষ্ট থানা–পুলিশসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শতাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। ২১টি মামলা হওয়ার আগে-পরে কোনো কোনো আসামির কাছ থেকে অর্থ দাবি ও অর্থ লেনদেনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাকি ১৯ মামলায় রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক, পেশাগত ও পারিবারিক দ্বন্দ্ব থেকে অনেককে আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ব্যক্তি ও তাঁদের স্বজনেরা। অনেক আসামিকে বাদী চেনেনও না।

পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ৫ আগস্ট–পরবর্তী সময়ে পুলিশ সদস্যদের মনোবল দুর্বল ছিল। তখন যাচাই-বাছাই করে মামলা নেওয়ার মতো পরিস্থিতি থানাগুলোর ছিল না। অনেক ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশেও মামলা হয়েছে।

ঢালাও আসামি করার বিষয়টি এমন পর্যায়ে গেল যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি পর্যন্ত জারি করতে হয়েছে। গত ১৪ অক্টোবর জারি করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চাঁদাবাজি, ব্ল‍্যাকমেল করাসহ নানা রকম হয়রানি করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যাসহ বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। এ ধরনের উদ্দেশ্যমূলক মামলা দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ফৌজদারি অপরাধ। এ ধরনের মামলা করার মাধ্যমে যাঁরা অপতৎপরতা চালাচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া হয়রানিমূলকভাবে যাঁদের আসামি করা হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলে সরকারের উচ্চপর্যায় ও পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে।

তবে গ্রেপ্তার থেমে থাকেনি। ব্যবসায়িক বা সম্পত্তিগত বিরোধের জেরে আসামি হওয়া ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের জন্য প্রতিপক্ষ যেমন সক্রিয় থাকে, পাশাপাশি ‘বাণিজ্যের’ উদ্দেশ্যে করা আসামিদের ধরতে কিছু ক্ষেত্রে পুলিশের বেশি আগ্রহ দেখা গেছে। আবার কিছু ক্ষেত্রে আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর ‘শ্যোন অ্যারেস্ট’ বা নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর হুমকি দিয়েও অর্থ আদায়ের অভিযোগ আছে। শুরুতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মামলা না করে খসড়া এজাহারে দেখিয়ে অনেকের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগও আছে।

এদিকে আন্দোলনের সময় ছাত্র–জনতার ওপর সরাসরি হামলায় যাঁরা ছিলেন, তাঁদের বড় অংশ এখনো ধরা পড়েনি। শহীদদের স্বজনেরা প্রিয়জন হত্যার বিচারের দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রায় প্রতিটি মামলায় এত বেশিসংখ্যক মানুষকে আসামি করা হয়েছে, তাঁদের সবার বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করতেই তাঁরা হিমশিম খাচ্ছেন।

এ বিষয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সারা দেশে ১০টি মেন্টরিং অ্যান্ড মনিটরিং দলের মাধ্যমে মামলাগুলো তদারক করা হচ্ছে। এর মধ্যে আট বিভাগে ৮টি, রাজধানীতে ১টি ও গাজীপুরের জন্য ১টি দল করা হয়েছে। প্রতিটি দল নিয়ে আমি বসছি এবং মামলাগুলো বিশ্লেষণ করছি। এতে নিরপরাধ ব্যক্তিদের হয়রানি করার ঘটনা কমে এসেছে।’

আইজিপি বলেন, ‘আসামি যতই হোক, অপরাধের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।’
এক মামলায় যত অসংগতি

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীর বাসিন্দা বাবুল মিয়া (২৮) ও সাইফুল ইসলাম (৪০)। বাবুল কৃষিকাজ ও পশুপালন করেন। তাঁর বোনের স্বামী সাইফুল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। এ দুজনকে দুলাল হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার–আতঙ্কে তাঁরা বাড়িছাড়া।

বাবুল মিয়ার বাবা বকুল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে তাঁর ছেলে ও জামাতাকে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তাঁরা কোনো দিন রাজনীতি করেননি। প্রথম মামলার পর তাঁদের বলা হয়েছে, ৫০-৬০ হাজার টাকা দিলে আসামির তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া হবে। টাকা দিতে না পারায় আরও তিনটি মামলায় তাঁদের আসামি করা হয়েছে।

দুলাল হত্যা মামলাটি করেছেন রাফিউল আলম নামের এক ব্যক্তি। তিনি নিজেকে গণ অধিকার পরিষদের নেতা পরিচয় দিলেও কী পদে ছিলেন, তা বলতে পারেননি। মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত বছরের ১৮ জুলাই দুপুরে কিশোরগঞ্জের গৌরাঙ্গবাজার মোড় এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের গুলিতে গুরুতর আহত হন দুলাল। পরে ২২-২৩ জন তাঁকে রড দিয়ে বেদম পিটুনি দেন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

এ রকম একটা মামলার কথা জানার পর প্রয়াত দুলালের ছেলে বিকাশ দাশ কিশোরগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে লিখিতভাবে জানান যে তাঁর বাবার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা করে যাঁরা নিরপরাধ মানুষদের হয়রানি করছেন, তাঁদের শাস্তির দাবি করেন বিকাশ।

হত্যাকাণ্ডের যে স্থানের কথা বলা হচ্ছে, সেখানে ঘটনার দিন (১৮ জুলাই) দুলাল ছিলেন না বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন তাঁর ছোট ভাই কাঞ্চন রবিদাস। মৃত্যুনিবন্ধন সনদে দুলালের মৃত্যুর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে ‘স্ট্রোক’ এবং মৃত্যুর তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ২৭ জুলাই।

আসামিদের অভিযোগ যাচাই করতে এক ব্যক্তিকে বাবুল ও সাইফুলের স্বজন পরিচয় দিয়ে বাদী রাফিউলের সঙ্গে কথা বলিয়েছে প্রথম আলো। ওই ব্যক্তির কাছে রাফিউল মামলা থেকে নাম বাদ দিতে মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এ টাকার ভাগ স্থানীয় এক আইনজীবী ও পুলিশকে দেবেন বলেও দাবি করেন তিনি। এ মামলার আরও চার আসামি প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, নাম বাদ দিতে তাঁদের কাছ থেকেও ৫০-৬০ হাজার টাকা করে দাবি করা হয়েছে।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে রাফিউল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা রবিদাসকে হত্যা করতে দেখেছি। অনেকে মিলে মামলাটি করেছি। এ জন্য ভুলে অনেকের নাম ঢুকে গেছে।’

এ মামলার ভুক্তভোগীরা গত ৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে মানববন্ধন করেন। সেখানে তাঁরা অভিযাগ করেন, স্থানীয় ‘আওয়ামী আইনজীবী’ শওকত কবীর খোকন এ মামলা-বাণিজ্যে জড়িত। এলাকার বিএনপির নেতা-কর্মীদেরও মামলায় ফাঁসিয়েছেন তিনি।

শওকত কবীর প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, তিনি ‘বিএনপির সৈনিক’। সুনাম নষ্ট করতে প্রতিপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে মামলা-বাণিজ্যে জড়িত থাকার অপপ্রচার চালাচ্ছে।

আসামি চেনেন না বাদী
যে ৪০টি মামলা নিয়ে প্রথম আলো অনুসন্ধান করেছে, সেগুলোর এজাহারে উল্লেখ করা ১১ বাদীর মুঠোফোন নম্বরে কল করে সেগুলো বন্ধ পাওয়া গেছে। কেউ কেউ ঠিকানা পরিবর্তন করেছেন অথবা ভুয়া ঠিকানা দিয়েছেন। ফলে আসামি ও তাঁদের স্বজনেরা বাদীকে খুঁজে পাচ্ছে না। ১৪ জন বাদী জানিয়েছেন, অন্য কেউ তাঁদের দিয়ে মামলা করিয়েছেন। এর মধ্যে চারজন জানিয়েছেন, মামলার কাগজে তাঁদের কাছ থেকে কেবল সই নেওয়া হয়েছে। আসামির নাম দিয়েছেন অন্যরা।
লক্ষ্য অর্থ আদায়

অভ্যুত্থান ঘিরে হওয়া প্রথম দিকের মামলাগুলোর আসামিদের বেশির ভাগই ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ও আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তাঁদের পাশাপাশি অনেক মামলায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আরও অনেককে আসামি করা হয়।

গত বছর সেপ্টেম্বরের শুরুতে রাজধানীর একটি থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। সেখানে ১০ জনের বেশি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়। তাঁদের প্রায় সবাই ঘটনার সময় মামলায় উল্লেখিত স্থানে ছিলেন না বলে পুলিশের নথিতেই উল্লেখ রয়েছে।

 

এ বিষয়ে মামলার আসামি পুলিশের এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বাদী ১০ জনের নাম এজাহার থেকে বাদ দিতে ১ কোটি টাকা দাবি করেছিলেন। টাকা না দেওয়ায় তাঁদেরও আসামি করা হয়।

পরে ওই বাদীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের তিনি চেনেন না, তা সঠিক। তবে কোনো টাকা চাননি বলে দাবি করেন তিনি।

অবৈধ সুবিধা আদায়ে ব্যবসায়ীদের আসামি করার দুটি হত্যা মামলা হয়েছে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানায়। এসব মামলার সঙ্গে যুবদল ও বিএনপির নেতাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। মামলা দুটির এজাহারের বর্ণনা প্রায় একই রকম। সেখানে বৃহৎ রপ্তানিমুখী পোশাক প্রস্তুতকারী একটি প্রতিষ্ঠানের তিন মালিককে আসামি করা হয়েছে।

এজাহার থেকে নাম বাদ দেওয়ার আশ্বাস কিংবা আসামির তালিকা থেকে নাম প্রত্যাহারের আবেদনের জন্য টাকা নেওয়ার পাঁচটি ঘটনার কথা জানা গেছে। রাজধানীর এক ব্যবসায়ীর নাম বাদ দিতে বাদী আবেদন করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ব্যবসায়ী প্রথম আলোকে বলেন, ‘যে মামলায় আমাকে ফাঁসানো হয়েছে, আমি তার ধারেকাছেও ছিলাম না। পরে বাদীর সঙ্গে যোগাযোগ করে এক লাখ টাকা দিলে তিনি এজাহার থেকে নাম বাদ দিতে আবেদন করিয়েছেন।’

জুলাই আন্দোলনের সময় রাজধানীর একটি অঞ্চলে অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) ছিলেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। বর্তমানে ঢাকার বাইরে কর্মরত ওই কর্মকর্তার মুঠোফোনে বার্তা পাঠান রাজধানীর ওয়ার্ড পর্যায়ের বিএনপির একজন নেতা। তাতে বলা হয়, মামলা থেকে ‘বাঁচতে হলে’ পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে। পুলিশের ওই কর্মকর্তা ১ জানুয়ারি এই প্রতিবেদককে ওই বার্তা দেখান। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই ব্যক্তি বিএনপির একজন নেতা। দুই লাখ টাকা দেওয়ার পর তিনি ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম বাদ দিতে সম্মত হন।

‘সচেতন নাগরিক’ পরিচয়ে মামলা
অনেক ক্ষেত্রে পরিবারের পরিবর্তে ‘সচেতন নাগরিক’ পরিচয়ে অন্য ব্যক্তিরা মামলার বাদী হয়েছেন। এ রকম একটি ক্ষেত্রে দেখা গেছে, একই ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে এবং আরও একটির আবেদন করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ফখরুল ইসলামকে মিরপুর থানার তিনটি হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। বর্তমানে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ফখরুলকে এজাহারে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা উল্লেখ করা হয়েছে। এসব মামলায় তাঁর দুই ভাইকেও আসামি করা হয়। দুটি মামলায় ঘটনা শুক্রবার দেখানো হয়েছে।

এ মামলার দুই আসামি অভিযোগ করেন, সাপ্তাহিক ছুটির দিনকে (শুক্রবার) মামলার সময় হিসেবে দেখানোর পেছনের মূল উদ্দেশ্য তাঁদের মতো চাকরিজীবী ব্যক্তিদের হরয়ানি করা।

মামলা তিনটি (মো. সেলিম আলী সেক (৩৬), পারভেজ হোসেন (২১) ও মো. মনিরুল ইসলাম (৪১) হত্যা) স্বজনদের কেউ করেননি। ‘সচেতন নাগরিক’ পরিচয়ে মামলাগুলো করেছেন তিন ব্যক্তি। তিন মামলার এজাহারের বর্ণনা অনেকটা একই রকম।

এজাহারে থাকা বাদীদের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করে পারভেজ হত্যার বাদী নুরু ইসলামকে (৪০) ফোনে পাওয়া যায়। তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

৫ আগস্ট ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া কিশোর মাহমুদুল হাসানের বাবা রিকশাচালক মিজানুর রহমান মামলা করতে পারেননি। ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকার আদালতে মামলা করতে গিয়েছিলেন তিনি। পরে জানতে পারেন, এ ঘটনায় আগেই যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা থানায় দুটি মামলা হয়েছে। দুটি মামলায় মাহমুদুলের নিহত হওয়ার পৃথক স্থান উল্লেখ করা হয়েছে। ওই দুই বাদীকে চেনেন না মিজানুর রহমান। তিনি আক্ষেপ করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছেলেকে আন্দোলনে গুলি করে হত্যা করা হয়, কিন্তু আমি মামলা করতে পারলাম না!’
প্রতিষ্ঠানের দখল নিতে আসামি

রাজধানীর মিরপুরে রেস্তোরাঁ ব্যবসা রয়েছে আমিনা বেগমের। তাঁর ব্যবসায়িক অংশীদার ভাষানটেক থানা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক পরিচয় দেওয়া রবিউল ইসলাম (সুমন)। রেস্তোরাঁ পরিচালনা নিয়ে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। একটি মুঠোফোনে কথোপকথনে রবিউলকে বলতে শোনা যায়, ‘মহিলার (আমিনা) নামে দিয়ে দিছি মামলা। ও এখন বুঝুক। বেশি তালবেতাল করলে ওর স্বামীর নামেও দিমু, ওর চাকরিও খামু।’

আমিনাসহ ৩৪৬ জনের নামে ভাষানটেক থানায় মামলাটি করেছেন মো. মোস্তাকিম নামের এক ব্যক্তি। মামলার নথিতে মোস্তাকিম নিজেকে আন্দোলনে আহত এবং গুলিতে ডান পা হারানো ব্যক্তি উল্লেখ করেছেন। একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে তাঁর মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।

 

মামলায় ৩১ নম্বর আমিনার পরিচয় দেওয়া হয়েছে ঢাকা মহানগর উত্তর মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। তবে কমিটির তালিকায় তাঁর নাম নেই। আমিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি গত ১৯ জুলাই কাফরুলে দেশি অস্ত্র বা লোহার রড অথবা লাঠিসোঁটা দিয়ে বাদীর মাথায় আঘাত করেছেন।

স্বামীর সরকারি চাকরির সুবাধে আমিনা থাকেন কুমিল্লায়। সিসিটিভির একটি ফুটেজে দেখা গেছে, মামলায় যে দিনক্ষণ উল্লেখ করা হয়েছে, আমিনা সে সময় কুমিল্লায় ছিলেন। ভুক্তভোগী এই নারী প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রেস্তোরাঁ দখলে নিয়েছেন ওই যুবদল নেতা। তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছেন।

এ ঘটনায় আমিনার স্বামী মিরপুর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। ৫ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে এ বিষয়ে লিখিতভাবে জানিয়েছেন আমিনা।

যুবদল নেতা রবিউল প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি নয়, আমিনার নামে তিনটি মামলা হয়েছে। তিনি রাজনীতি করেন, রাজনৈতিক মামলা খাবেন, এটাই স্বাভাবিক। নির্দোষ হলে আদালতে প্রমাণ করুক।’

মামলার বাদী মোস্তাকিম যুবদল করেন বলে জানান রবিউল। তিনি মুঠোফোনে কথোপকথনের বিষয়ে বলেন, ‘তিনি (আমিনা) যখন ক্ষমতা দেখিয়েছেন, তখন বলেছি আমার দল ক্ষমতায় আসলে আপনার চাকরি থাকবে না।’
নেপথ্যে পারিবারিক বিরোধ

ঢাকায় ব্যবসা করেন নাটোরের সিংড়ার এনায়েত করিম। ছাত্রজীবনে জিয়া ছাত্র পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ছিলেন। পরে বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হন। জুলাই অভ্যুত্থানের ঘটনায় রাজধানীর সূত্রাপুর ও বনানী থানার দুটি হত্যা মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। পরিচয়ে লেখা হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা। গ্রামের বাড়িতে গেলে গত ২৮ ডিসেম্বর সিংড়া থানা–লিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ৩০ ডিসেম্বর নাটোরে সংবাদ সম্মেলন করেন এনায়েতের স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সদস্যরা। সেখানে দাবি করা হয়, এনায়েতের ভাতিজা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফয়সাল আহম্মেদ এ মামলা করিয়েছেন।

পরে এনায়েতের স্ত্রী উম্মে সালমা প্রথম আলোকে বলেন, জমিসংক্রান্ত বিরোধ থেকে ফয়সাল মামলায় এনায়েতের নাম দিয়েছেন। পরিবারের সদস্যদের কাছে তা তিনি স্বীকারও করেছেন।

অবশ্য ফয়সাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘পারিবারিক দ্বন্দ্ব আছে সেটা ঠিক, তবে আমি মামলার বিষয়ে কিছুই জানি না। আমার চাচা এত দিন আওয়ামী লীগের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে চলেছেন। সেখান থেকে অন্য কেউ হয়তো মামলা করে থাকতে পারেন।’
পেশাজীবী শ্রেণি ধরে মামলা

মামলার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, একেক মামলায় একেক শ্রেণির ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। কোথাও সাংস্কৃতিক কর্মী, কোথাও ব্যবসায়ী, কোথাও সাংবাদিক, কোথাও আবার পুলিশ, কোথাও আমলা। অর্থাৎ নির্দিষ্ট শ্রেণি–পেশার মানুষের নাম কেউ দিচ্ছে, সেগুলো ধরে মামলা হচ্ছে।

যেমন শাহবাগ থানার একটি মামলায় পুলিশের অন্তত ১০ জন কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় ঘটনার যে তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে, ওই দিন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা চাকরির সুবাদে খুলনায় ছিলেন। তাঁকেও আসামি করা হয়েছে।

গত ২৯ অক্টোবর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে করা একটি মামলায় ৫৩ জন সচিবকে আসামি করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নির্বিচার গুলি চালিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলাটি করা হয়। ছাত্রদলের সাবেক নেতা মোহাম্মদ জামান হোসেন খানের করা মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করছে। মামলার আসামি একজন সাবেক সচিব প্রথম আলোকে বলেন, মামলা নিয়ে বিভিন্নভাবে তাঁর কাছ থেকে অর্থ দাবি করা হয়েছিল।

ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় যতজনকে আসামি করা হয়েছে, তাঁদের নাম উল্লেখ করে পরে আদালতে আরেকটি মামলা করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুটি মামলার নেপথ্যে আছেন বিএনপির এক নেতা।

ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা মামলায় বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ কমিটির ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে, যাঁরা দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ী। মাহাদী হাসান হত্যার ঘটনায় করা এই মামলার বাদী নিজেকে নিহত ব্যক্তির চাচা দাবি করেছেন। অপর দিকে একই ঘটনায় মাহাদীর বাবা বাদী হয়ে কদমতলী থানায়ও একটি মামলা করেছেন। তাঁর দাবি, তাঁর ছেলে যাত্রাবাড়ী নয়, কদমতলী থানা এলাকায় শহীদ হয়েছেন।

শহীদ পরিবারের নামেও মামলা

অভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইকরামুল হক সাজিদ। এ ঘটনায় করা মামলায় আসামি করা হয়েছে আন্দোলনের সময় চট্টগ্রামে শহীদ তানভীর সিদ্দিকীর পরিবারের তিন সদস্যকে। তাঁরা যুবদল-ছাত্রদলের সাবেক ও বর্তমান পদধারী নেতা। তাঁদের বাড়ি কক্সবাজারে।

৭ সেপ্টেম্বর কাফরুল থানায় মামলাটি করেন ইকরামুলের বাবা মো. জিয়াউল হক। পরে ৯ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগী ওই তিনজন ডিএমপি কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। সেখানে বলা হয়, আওয়ামী লীগের আমলে দলটির নেতা-কর্মীদের হামলায় কক্সবাজারের মহেশখালীর এই পরিবারের পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হন বেশ কয়েকজন। মিথ্যা মামলার শিকার হয়ে অনেকে বাড়িছাড়া ছিলেন। আন্দোলনের পুরো সময় তাঁরা কক্সবাজারে থেকেও ঢাকার মামলায় আসামি হয়েছেন।

মহেশখালী উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি এবং তানভীর সিদ্দিকীর চাচাতো ভাই (৫৪ নম্বর আসামি) মিজানুর রহমান মাতাব্বর প্রথম আলোকে বলেন, ‘মামলার বাদী কখনো আমাদের দেখেনওনি, চেনেনও না, নামও শোনেননি। আমাদের নামগুলো লিখে তাঁর থেকে শুধু স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। মামলার যে তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে, তখন আমরা মহেশখালী, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছিলাম।’ মিজানুরের অভিযোগ, রাজনৈতিক বিরোধ থেকে তাঁদের ঢাকার এই মামলায় আসামি করিয়েছেন মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা।

মামলার বাদী জিয়াউল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি তো আর ঘটনাস্থলে ছিলাম না। ভার্সিটির ছাত্র-শিক্ষক এবং যাঁরা এই ঘটনা দেখেছেন, তাঁরা যে নামগুলো দিয়েছেন, সেগুলোই মামলায় আসামি হিসেবে এসেছে।’
নিরপরাধ ব্যক্তিদের কী হবে

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘটনায় করা বেশ কিছু মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে বলে জানা গেছে। হয়রানিমূলকভাবে আসামি হওয়া অনেক ব্যক্তিও গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। অথচ ছাত্র-জনতার ওপর সরাসরি গুলি করা ব্যক্তি এবং গুলির নির্দেশদাতাদের বড় অংশ ধরা পড়েননি। এ অবস্থায় প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার জোরালো দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীসহ বিশেষজ্ঞরা। যথাযথভাবে যাচাই–বাছাই না করে কাউকে গ্রেপ্তার করা হবে না, সরকারের এমন কথার বাস্তবায়ন দেখতে চান তাঁরা।

সাবেক আইজিপি মুহাম্মদ নুরুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনা সত্য, কিন্তু আসামি ভুলভাবে বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দেওয়া হয়েছে—এমন মামলা হয়েছে। এ জন্য মামলা গ্রহণের ক্ষেত্রে পুলিশকে সতর্ক হওয়া দরকার ছিল। তবে আদালতের নির্দেশেও থানাকে অনেক মামলা নিতে হয়েছে।

নুরুল হুদা বলেন, যাচাই–বাছাই করে আসামি গ্রেপ্তার করতে হবে। নিরপরাধ ব্যক্তিদের হয়রানি করা যাবে না। পাশাপাশি ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী মিথ্যা মামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও সুযোগ রয়েছে।
সূত্র : প্রথম আলো, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

মানবাধিকার লঙ্ঘন তদন্তে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল ঢাকায়

আন্তর্জাতিক, জাতীয়, 22 August 2024, 928 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ঢাকা পৌঁছেছে জাতিসংঘের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে গত জুলাই ও আগস্টের শুরুতে দেশজুড়ে সংঘটিত হয় নৃশংসতা। সেই সময়ের ঘটনাগুলো তদন্তের জন্যই ২১ আগস্ট বুধবার মধ্যরাতে ঢাকায় এসে পোঁছায় দলটি। প্রাথমিক ভাবে এই দলটি বাংলাদেশে প্রায় এক সপ্তাহের সফরে এসেছে বলে জানা গেছে।

banner

জাতিসংঘের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলের আজ ২২ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকালেই যাওয়ার কথা রয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহর সাথে বৈঠক করার কথা। তিনি বর্তমানে মন্ত্রণালয়ে সহকারী পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে কাজ করছেন। প্রাথমিক তথ্যানুসন্ধানের বিষয়ে আলোচনার জন্য জাতিসংঘের হাইকমিশনার দপ্তরের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান রোরি মুঙ্গোভেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের দল।

এ সময় ঢাকায় এসে অংশীজনদের সাথে আলোচনা করে কাজের ধারা, প্রক্রিয়া, শর্তসহ সব বিষয় চূড়ান্ত করবে।

ফলে ঢাকায় যে দলটি এসেছে, সেটিই যে জাতিসংঘের মূল তথ্যানুসন্ধানী দল, এটা এখনো বলার সময় আসেনি। এনিয়ে গতকাল পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, জাতিসংঘের দলটি উপদেষ্টাদের সাথেও দেখা করবে। এ ছাড়া বিভিন্ন সরকারি কর্তৃপক্ষ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও দেখা করবে।

অন্যদিকে প্রথমে জাতিসংঘের কারিগরি, নাকি তদন্ত দল আসবে, জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘বিষয়টি এখনো জাতিসংঘ থেকে আমাদের জানানো হয়নি। আশা করছি, প্রাথমিক দল হিসেবে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দলটি আলোচনা করবে। মূলত বাংলাদেশের কোন কোন ক্ষেত্রে সহযোগিতা লাগবে এবং একই সঙ্গে জাতিসংঘের দলটি বাংলাদেশে এলে তাদের কী ধরনের সহযোগিতা লাগবে, তা নিয়ে আলোচনা হবে।’

নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক কর্মশালা

জাতীয়, 23 September 2023, 894 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় জেলা পর্যায়ে বগুড়ায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক জনসচেতনামূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ২৩ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল ১০টায় বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমীর হলরুমে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

banner

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও প্রকল্প পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ আহমেদের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (আরডিএ) বগুড়ার মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোঃ খুরশীদ ইকবাল রেজভী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে জনসচেতনতামূলক প্রচারণা দরকার। এ জন্য খাদ্য উৎপাদনকারী ছোট বড় সকল প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তাদেরকে অবহিত করতে হবে। নিরাপদ খাদ্য সকলের ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরী। এ খাদ্যকে স্বাভাবিক এবং ভেজাল ও অন্যান্য দূষণ থেকে নিরাপদ অবস্থায় বিতরণ এখন সময়ের ব্যাপার। কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি ছাড়াও নানা কারণে খাদ্য দূষিত হতে পারে। খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, পরিবহণ, খাদ্যগ্রহণ প্রক্রিয়ার যে কোন পর্যায়ে শিল্পায়িত খাদ্য খাদ্যের অনুপযোগী হয়ে যেতে পারে। খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তার দ্বার পর্যন্ত খাদ্যের গুণগত মান নিশ্চিত রাখা সরকারি ও বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর, ভোক্তা অধিদপ্তর, সিভিল সার্জন ও খাদ্য অধিদপ্তরসহ সবাইকে এ বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রয়োজনে আরো জনসচেতনতা বাড়াতে হবে এবং অভিযান চলমান রাখতে হবে।

জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মো. রাসেল এর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন এনএসআই বগুড়ার উপপরিচালক ফয়সাল আহম্মেদ, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের সিনিয়র কনসালটেন্ট মো. আইয়ুব হোসেন, কনসালটেন্ট (প্রকিউরমেন্ট ও বাস্তবায়ন) শেখ নূরুল আলম। কর্মশালায় সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, এনজিও প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, গণমাধ্যম কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, সংরক্ষণ, বিপণনের বিভিন্ন পদ্ধতি ও নিরাপদ খাদ্য আইন নিয়ে আলোচনা করা হয়।

রাজনীতির কারণে আইনশৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটলে কাউকে ছাড় নয়

জাতীয়, 12 January 2025, 296 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
রাজনীতির কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিঘ্ন ঘটলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (অব.) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ ১২ জানুয়ারি রবিবার বিকাল ৩ টার দিকে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের কুসুমপুর জাগরণী সংসদ মাঠে ঢাকা ব্যাংকের কৃষিজ যন্ত্রপাতি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এসময় স্থানীয় ৩০ জন কৃষকের মাঝে শ্যালো মেশিন ও ট্রাক্টর বিতরণ করেন উপদেষ্টা।

banner

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের এখানে অনেক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আছেন। আমি আপনাদের অনুরোধ করবো, আপনারা আপনাদের রাজনীতি করেন আমাদের কোন আপত্তি নাই। কিন্তু আপনারা যদি কোন আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করেন, কোন অবস্থায় আপনাদের ছাড় দেয়া হবে না। আপনারা যে যে দলের হন না কেন, আমি এসপি সাহেবকে অনুরোধ করবো, যদি আমার ভাইও হয় কাউকে ছাড় দেবেন না। তারে চার সিকের ভেতরে ঢুকান। এরা এমপি হোক, যাই হোক সেই সময় হবে। এখন আইনশৃঙ্খলার ভিতর তাদের কোন হাত নাই।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি ওই সরকারি কর্মকর্তাদের বলবো-আপনারাও তেল মারা বন্ধ করেন। ভবিষ্যতে যে আসবে পড়ে দেখা যাবে। আপনারা এখন কঠোর হবেন। এই হইলো আপনাদের সবচেয়ে বড় সুযোগ। আপনারা কোন অবস্থায় ছাড় দেবেন না।’

সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে কাউকে ছাড় না দিয়ে কাজ করার নির্দেশ দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

পরে বিক্রমপুর কুঞ্জবিহারী সরকারি কলেজে তারুণ্য মেলায় অংশ নেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

অনুষ্ঠানে মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শামসুল আলম সরকার, জেলা কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার মোহন্ত, ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মারুফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

১৫ ঘণ্টা পর সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের ট্রেন চলাচল শুরু

জাতীয়, 20 May 2023, 1413 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
প্রায় ১৫ ঘণ্টা পর সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। আজ ২০ মে শনিবার রাত ৭টা ৪০ মিনিটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।

banner

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভানুগাছ রেল স্টেশন মাস্টার কবির আহমদ। তিনি জানান, সিলেটগামী আন্তঃনগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন শায়েস্তাগঞ্জ থেকে ছেড়ে এসেছে।

এর আগে, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এলাকায় শনিবার ভোরে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা উদয়ন এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনসহ তিন বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ঘটনার পর ঢাকা-সিলেট-গামী কালনী ও জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসসহ ৪টি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়।

দুর্ঘটনার কারণে তদন্তে রেল বিভাগের পক্ষ থেকে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। রেলওয়ে বিভাগের পরিবহন কর্মকর্তা খায়রুল কবিরকে কমিটির আহবায়ক করা হয়।