অনলাইন ডেস্ক :
পবিত্র কুরআন মাত্র সাত মাসেই মুখস্থ করেছেন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাইতুন নূর তাহফিজুল কোরআন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী জুবায়ের আল জামি।
জুবায়ের আল জামি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ওভারামপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। ব্যবসায়ের সুবাদে তিনি হাজীগঞ্জ মডেল কলেজসংলগ্ন নিজস্ব ভবন তালুকদার নিকেতনে বসবাস করেন।
জাহাঙ্গীর আলমের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে ছেলেকে পড়ান হাজীগঞ্জ সরকারি মডেল পাইলট হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে। এরই মাঝে সন্তানকে আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি ইসলামের শিক্ষায় শিক্ষিত করতে বাইতুন নূর তাহফিজুল কুরআন মাদ্রাসায় হেফজ বিভাগে ভর্তি করান।
যার সুফল মিলে মাত্র সাত মাসের মাথায়। হাজীগঞ্জ সরকারি মডেল পাইলট হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া এই শিক্ষার্থী মাত্র সাত মাসেই কুরআনে হাফেজ হন।
মাদ্রাসার মোহতামিম হাফেজ কারি মাওলানা মোহাম্মদ নাজির আহমদ যুগান্তরকে জানান, শিক্ষক, অভিভাবক ও নিজেদের মেহনতে শিক্ষার্থীরা হেফজ্ শেষ করে। শিক্ষির্থীর মেধা ভালো হলে আর অভিভাবকরা মেহনত করলে আশা করি এভাবেই আগামী দিনগুলোও শেষ করতে পারব।
অনলাইন ডেস্ক :
আজ পহেলা বৈশাখ। পাহাড় থেকে সমতল। মেঠোপথ থেকে রাজপথ। নববর্ষের আনন্দে ভাসছে সারা দেশ। আজকের দিনটি শুধুই বাঙালির। এই দিনে সে তার অস্তিত্বের জানান দেয় প্রাণে প্রাণে, উৎসবে। বিশ্বকে বলে দেয়-আমি বাংলাদেশি, আমি বাঙালি; আমার আছে গর্বের ইতিহাস। সংকল্প জানায় এক নতুন আগামীর; অতীত বেদনাকে ভুলে প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাওয়ার। এ জাতির সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব পহেলা বৈশাখ। বিগত বছরের জরাকে দূরে ঠেলে আজ বাংলাভাষীদের স্বপ্ন দেখার দিন, নতুন আলোয় অবগাহনের দিন, আনন্দে মেতে উঠারও দিন। হাজার বছরের ঐতিহ্যের বহমানতায় বাংলাদেশের ঘরে ঘরে আজ উৎসবের আমেজ। এ দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদের জাঁতাকলে পিষ্ট হয়েছে প্রায় ১৬ বছর। এ সময়ে আনন্দ, উচ্ছ্বাস আর ভাবের প্রকাশ করতে হয়েছে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত এক পরিবেশে। ফ্যাসিবাদী সরকারের মর্জিমতো। বাঁধভাঙা উল্লাসে সবাই তখন ভাসতে পারেনি। সেই ফ্যাসিবাদের নাগপাশ কাটিয়ে এ বছর এক মুক্ত আবহে, মুক্ত বাতাসে বাঙালির জীবনে এসেছে পহেলা বৈশাখ।
আর তাই বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন করতে আজ লাখো মানুষ ঘরের বাইরে ছুটবে। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে মানুষ পহেলা বৈশাখ উদযাপন করবে। বঙ্গাব্দ ১৪৩১-এর আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্নার হিসাব চুকিয়ে নতুন পথচলা শুরু হবে। জাতিধর্ম নির্বিশেষে সর্বজনীন উৎসবে নববর্ষ উদযাপনে একসঙ্গে গাইবে ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো।’ বাংলার গ্রাম, শহর-বন্দর, পথঘাট সব জায়গায় দোলা দেবে পহেলা বৈশাখ।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
সম্প্রতি সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানিয়েছিলেন, এবার পহেলা বৈশাখের আয়োজন হবে সর্বজনীন। আর তাই এবার পহেলা বৈশাখের আয়োজনও দুই দিন, যার শুরুটা হয় গতকাল চৈত্রসংক্রান্তিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কনসার্টসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে। বারোটি জেলায় চৈত্রসংক্রান্তি ও বৈশাখী সাধুমেলার আয়োজন শুরু হয়েছে শনিবার থেকে।
এবারের পহেলা বৈশাখের অন্যতম আকর্ষণ ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। শোভাযাত্রাটির আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা। এবার শোভাযাত্রা হবে অনেক অন্তর্ভুক্তিমূলক। ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’য় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় প্রথমবারের মতো ২৮টি জাতিগোষ্ঠীর ৪৯৪ জন শিল্পী বর্ণিল সাজে সজ্জিত হয়ে অংশগ্রহণ করবেন। অংশগ্রহণকারী জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে-বাঙালি, চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, লুসাই, পাংখোয়া, বম, ম্রো, রাখাইন, খিয়াং, বানাই, সাঁওতাল, ওঁরাও, তুরী, মাহালি, মালপাহাড়িয়া, কোল, মাহাতো, মণিপুরী, খাসিয়া, চা-জনগোষ্ঠী, গারো, হাজং, কোচ ও মালো।
এছাড়াও শোভাযাত্রায় দুই শতাধিক ব্যান্ড শিল্পী অংশগ্রহণ করবেন এবং পৃথিবীর শান্তি কামনায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে সম্মিলিতভাবে গাইবেন গান ‘ফ্রম দ্য রিভার টু সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’ গানটি।
রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক ঐক্যের বার্তা দেওয়া হবে শোভাযাত্রা থেকে।
আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজনে থাকবে বড় মোটিফ, মাঝারি মোটিফ, ছোট মোটিফ। এর মধ্যে বড় মোটিফ থাকবে ৬টি। সবার সামনে থাকবে ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’। শোভাযাত্রায় বড় মোটিফের মধ্যে থাকবে কাঠের বাঘ, ইলিশ, ৩৬ জুলাই (টাইপোগ্রাফি), পালকি, জুলাই আন্দোলনে নিহত মুগ্ধের পানির বোতল।
এছাড়া অন্যান্য মোটিফের মধ্যে থাকবে ১০টি সুলতানি ও মোগল আমলের মুখোশ, ৮০টি ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি, ২০টি রঙিন চরকি, ২০০টি বাঘের মাথা, ৮টি তালপাতার সেপাই, পলো ১০টি, ৫টি তুহিন পাখি, ৬টি মাছের চাঁই, ৪টি পাখা, ২০টি মাথাল, ২০টি ঘোড়া, ৫টি লাঙল, ৫টি মাছের ডোলা এবং ১০০ ফুট লোকজ চিত্রাবলীর ক্যানভাস ১০০ ফুট থাকবে।
চারুকলা অনুষদ থেকে সকাল ৯টায় বের হবে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। এ সময় শাহবাগ এবং টিএসসির মেট্রোরেল স্টেশনে ট্রেন থামবে না, তবে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদ থেকে শাহবাগ হয়ে টিএসসি, শহিদ মিনার, দোয়েল চত্বর হয়ে চারুকলা অনুষদ পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করবে। এবারের শোভাযাত্রায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সামনে না থেকে দুই পাশে হাঁটবেন। নিরাপত্তা নিয়ে কোনো রকম শঙ্কাও নেই বলে জানানো হয়েছে ইতোমধ্যে। তবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিকাল ৫টার পর প্রবেশ করা যাবে না। নগরীর অন্যান্য স্থানে বর্ষবরণের আয়োজন সন্ধ্যার পরও থাকবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিকাল ৫টার মধ্যেই আয়োজন শেষ করা হবে।
বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে রাজধানীতে আয়োজন করা হয়েছে ব্যতিক্রমধর্মী ড্রোন শো ও কনসার্ট। সোমবার বিকাল ৫টায় ড্রোন শো দেখানো হবে। এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। শুক্রবার সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ড্রোন শো উপভোগের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ঢাকাবাসীকে। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে এই আমন্ত্রণ জানান তিনি। ফারুকী লিখেছেন, ড্রোন শোয়ের আগে দর্শকদের জন্য থাকছে মনোমুগ্ধকর এক কনসার্ট। রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ১৪ এপ্রিল, বাংলা নববর্ষের দিন বেলা ৩টায় পুরো আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হবে। সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা লিখেছেন, এ আয়োজনটি ঢাকায় অবস্থিত চীনা দূতাবাসের সহযোগিতায় বাস্তবায়ন হচ্ছে। এ সহযোগিতার জন্য চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
সবশেষে তিনি লিখেছেন, বন্ধু-পরিবারসহ সবাইকে আমন্ত্রণ, চলে আসুন, একসঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিই।
বরাবরের মতো বর্ষবরণ আয়োজন করবে ছায়ানট। এবারের আয়োজনটি ২ ঘণ্টার। এই ২ ঘণ্টায় মূলত মুক্তির গান গাইবে তারা। ভোরবেলা বৈরভীতে রাগালাপ দিয়ে হবে ছায়ানটের ১৪৩২ বঙ্গাব্দ বরণের সূচনা। এবারের অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে নতুন আলো, প্রকৃতি এবং মানুষকে ভালোবাসবার গান, দেশপ্রেম-মানবপ্রেম আর আত্মবোধন-জাগরণের সুরবাণী দিয়ে। ছায়ানট এবার ৫৮তমবার বর্ষবরণের এ আয়োজন করছে।
এবারও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চ্যানেল আই-সুরের ধারা হাজারও কণ্ঠে বর্ষবরণ। তবে বিগত বছরগুলোর মতো নয়, এবার একটু ভিন্ন আঙ্গিকে। বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-কে বরণ করে নিতে ১৪ এপ্রিল সকাল ৬টা থেকে ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে অনুষ্ঠিত হবে এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করবেন সুরের ধারার শিল্পীদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিল্পীরা। অনুষ্ঠানস্থলে থাকবে বিভিন্ন লোকজ মেলার স্টল। মেলায় বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজনসহ থাকবে দেশীয় নানা ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্পের দোকান।
পহেলা বৈশাখ সরকারি ছুটির দিন। বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। দেশের সব জেলা ও উপজেলায় বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলো বাংলা নববর্ষের ওপর বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। দেশের সব সরকারি-বেসরকারি টিভি, বাংলাদেশ বেতার, এফএম ও কমিউনিটি রেডিও বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।
অনলাইন ডেস্ক :
অনুমতি ছাড়া দাড়ি রাখার ‘অপরাধে’ হবিগঞ্জ জেলার তিন পুলিশ সদস্যকে লঘু শাস্তি দেওয়া হয়েছে। গত ২১ আগস্ট জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে এক আদেশে তাদের লঘুদণ্ড হিসেবে দুই দিন দুই ঘণ্টা করে ‘পিডি’ প্রদান করা হয়। জেলা পুলিশ সুপার এ এন এম সাজেদুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই আদেশে উল্লেখ করা হয়, হবিগঞ্জ জেলায় কর্মরত নিম্নবর্ণিত পুলিশ সদস্যগণ ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক দাড়ি রাখতে ইচ্ছুক মর্মে আবেদন দাখিল করেছেন। তাদের দাখিলকৃত আবেদনের প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপারের নিকট উপস্থাপনে ২১ আগস্ট ধার্য পূর্বক অবহিত করা হয়।
ধার্যকৃত দিনে তারা মুখে দাড়ি নিয়ে হাজির হন। কনস্টেবলগণ কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে দাড়ি রাখায় প্রত্যেককে লঘুদণ্ড হিসেবে প্রত্যেহ ২ ঘণ্টা করে ২ দিনের ‘পিডি’ প্রদান করা হলো। অনুমতি ছাড়া দাড়ি রাখায় শাস্তি দেওয়ার ওই আদেশ কপিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অবশ্য পরদিন ২২ আগস্ট হবিগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার স্বাক্ষরিত একটি আদেশে ওই তিন পুলিশ সদস্যের আবেদনের প্রেক্ষিতে দাড়ি রাখার অনুমতি প্রদান করা হয়।
আদেশে উল্লেখ করা হয়, হবিগঞ্জ জেলায় কর্মরত নিম্নবর্ণিত পুলিশ সদস্যরা ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক দাড়ি রাখার জন্য আবেদন দাখিল করেছেন। তাদের দাখিলকৃত আবেদনের প্রেক্ষিতে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক দাড়ি রাখার অনুমতি প্রদান করা হলো।
তারা হলেন- সদর কোর্টে কর্মরত কনস্টেবল দুলাল মিয়া, অপরাধ শাখার কনস্টেবল হৃদয় আহমেদ ও মোটরযান শাখার কনস্টেবল ইফতেখার হোসেন সুমন।
অনলাইন ডেস্ক :
এপ্রিলের শেষ দিকে উপজেলা নির্বাচন করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান (অব.)।
আজ ৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার দুপুরে খুলনার ফুলতলা রি-ইউনিয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজে উপজেলার স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
ইসি আহসান হাবিব খান বলেন, এবার চার ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে শুরু হবে প্রথম ধাপের নির্বাচন। সকলের অংশগ্রহণে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে।
তিনি আরো বলেন, দেশের সকল রাজনৈতিক দল দলীয় প্রতীক ছাড়া নির্বাচন করতে চাইলে বিদ্যমান আইনের পরিবর্তন করতে হবে। অন্যথায় রাজনৈতিক দল বা স্বতন্ত্র প্রতিনিধি নিয়ে নির্বাচনে কোনো বাধা নেই।
ইসি আহসান হাবিব খান বলেন, নাগরিকসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। স্মার্টকার্ডে দেশের নাগরিকদের ডিজিটাল তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। এর মাধ্যমে নাগরিক সম্পর্কে জানা যাবে। মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সকল সেবার ক্ষেত্রে এর প্রয়োজন রয়েছে। ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এই স্মার্ট কার্ড উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। এর ডাটাবেজ সুরক্ষিত, ব্যক্তির চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবি এবং দশ আঙুলের ছাপ দিয়ে তৈরি।
তিনি আরও বলেন, এই স্মার্ট কার্ড ইতালি, সৌদি আরব, আমেরিকা ও আবুধাবি এই চারটি দেশের প্রবাসীদের বিতরণ করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে আরও ১১টি দেশে বিতরণ করা হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নতুন করে আলাদা স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র করা হবে।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, খুলনা জেলায় বিভিন্ন পর্যায়ে প্রায় ২০ লাখ ভোটারের মধ্যে প্রায় ১০ লাখ ২০ হাজার ভোটার স্মার্ট কার্ড পেয়েছেন। এবার প্রায় ৯ লাখ ব্যক্তির মধ্যে স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে। পর্যায়ক্রমে ফুলতলা উপজেলার ২ হাজার ৯২০ জনের মাঝে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ করা হবে।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন আইডিইএ এর প্রকল্প পরিচালক (২য় পর্যায়) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সায়েম। খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন খুলনা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফারাজী বেনজীর আহম্মেদ।
চলারপথে রিপোর্ট :
আড়াই বছরেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল) পরিচালিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ১৪ নম্বর কূপ থেকে পুনরায় জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে।
আজ ২৫ মে শনিবার বিকেল পৌনে ৬টায় জ্বালানি সচিব মো. নূরুল আলম গ্যাস সরবরাহ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ কূপটি থেকে দৈনিক ১২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। আগামী ১০ বছরে এ কূপ থেকে প্রায় ২৬শ’ কোটি টাকার গ্যাস উত্তোলন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দৈনিক ২৯ দশমিক ৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ১৪ নম্বর কূপটি ২০০০ সালে খনন করা হয়। তবে গ্যাসের সঙ্গে অতিমাত্রায় পানি উঠায় ২০২১ সালের পহেলা নভেম্বর গ্যাস কূপটি বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। তিতাসসহ দেশের পাঁচটি গ্যাস ফিল্ড পরিচালনা করে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল) কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি ৫২৩ কোটি টাকা ব্যায়ে তিতাসের ১৪ নম্বর কূপসহ ৭টি কূপ ওয়ার্কওভারের প্রকল্প হাতে নেয় বিজিএফসিএল। এ প্রকল্পের আওতায় গত ১৯ মার্চ তিতাসের ১৪ নম্বর কূপের ওয়ার্কওভার কাজ শুরু করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)। ৭৫ কোটি টাকা ব্যায়ে ওয়ার্কওভার কাজ শেষে গত ২১ মে কূপটি থেকে পরীক্ষামূলকভাবে গ্যাস উৎপাদন শুরু হয়।
৭টি কূপ ওয়ার্কওভার প্রকল্পের পরিচালক মো. ইসমাইল মোল্লা জানান, ১৪ নম্বর কূপটি থেকে আগামী ১০ বছর পর্যন্ত ৪০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে- যার বাজারমূল্য প্রায় ২৬শ’ কোটি টাকা। আপাতত দিনে ১২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে। পরবর্তীতে উৎপাদনের ওপর নির্ভর করে গ্যাস সরবরাহের পরিমাণ বাড়ানো হবে। বাকি ৬টি কূপের ওয়ার্কওভার কাজ আগামী বছরের ডিসেম্বরে শেষ হবে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক।
জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে জ্বালানি সচিব মো. নূরুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত করার লক্ষ্য রয়েছে। এর ফলে শিল্প-কারখানাসহ যে কোনো খাতে গ্যাস সরকরাহ করা যাবে। সরবরাহ পর্যাপ্ত হলে গ্যাসের সংকটও কমে যাবে। সবমিলিয়ে ১০০টি কূপের ওয়ার্কওভার ও খননের পরিকল্পনা রয়েছে। এ কাজটি আগামী বছর থেকেই শুরু হবে বলে জানান তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল বিশ্বরোড মোড়ে অবস্থিত তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ১৪ নম্বর কূপে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার ও বিজিএফসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুল হক চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।