অনলাইন ডেস্ক :
পবিত্র কুরআন মাত্র সাত মাসেই মুখস্থ করেছেন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাইতুন নূর তাহফিজুল কোরআন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী জুবায়ের আল জামি।
জুবায়ের আল জামি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ওভারামপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। ব্যবসায়ের সুবাদে তিনি হাজীগঞ্জ মডেল কলেজসংলগ্ন নিজস্ব ভবন তালুকদার নিকেতনে বসবাস করেন।
জাহাঙ্গীর আলমের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে ছেলেকে পড়ান হাজীগঞ্জ সরকারি মডেল পাইলট হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে। এরই মাঝে সন্তানকে আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি ইসলামের শিক্ষায় শিক্ষিত করতে বাইতুন নূর তাহফিজুল কুরআন মাদ্রাসায় হেফজ বিভাগে ভর্তি করান।
যার সুফল মিলে মাত্র সাত মাসের মাথায়। হাজীগঞ্জ সরকারি মডেল পাইলট হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া এই শিক্ষার্থী মাত্র সাত মাসেই কুরআনে হাফেজ হন।
মাদ্রাসার মোহতামিম হাফেজ কারি মাওলানা মোহাম্মদ নাজির আহমদ যুগান্তরকে জানান, শিক্ষক, অভিভাবক ও নিজেদের মেহনতে শিক্ষার্থীরা হেফজ্ শেষ করে। শিক্ষির্থীর মেধা ভালো হলে আর অভিভাবকরা মেহনত করলে আশা করি এভাবেই আগামী দিনগুলোও শেষ করতে পারব।
অনলাইন ডেস্ক :
হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আরও এক দফা বাড়ানো হলো। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হজের নিবন্ধন করা যাবে। হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আরো পাঁচ দিন বাড়িয়ে আজ ২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এটিই শেষবারের মতো সময় বৃদ্ধি বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
সাড়া না মেলায় এরই মধ্যে হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় তিন দফা বাড়ানো হয়। সর্বশেষ আট দিন বাড়ানোর মেয়াদ শেষ হয় বৃহস্পতিবার। কিন্তু এখনো ৪৭ হাজারের বেশি কোটা খালি আছে।
সময় শেষ হওয়ায় ওইদিন হজের নিবন্ধনের সময় বাড়ানোর দাবি জানায় হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। এই প্রেক্ষাপটে সময় ফের বাড়ানো হলো।
হজের নিবন্ধনের সময় বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২০২৪ সালে হজে গমনেচ্ছু ব্যক্তি, হজ এজেন্সি, হজ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় বিশেষ বিবেচনায় শেষবারের মতো আগামী ৬ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হলো। এ সময়ের মধ্যে ২ লাখ ৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন বা প্যাকেজের সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করে চ‚ড়ান্ত নিবন্ধন করা যাবে।
প্রাথমিক নিবন্ধন করা হলে প্যাকেজের অবশিষ্ট মূল্য আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আবশ্যিকভাবে একই ব্যাংকে জমা দিয়ে চ‚ড়ান্ত নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। অন্যথায় এ বছর হজে যাওয়া যাবে না এবং প্রদত্ত অর্থ ফেরত দেওয়া হবে না বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন (১৪৪৫ হিজরি সনের ৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। গত বছরের মতো এবারও বাংলাদেশের হজযাত্রীর কোটা এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এজেন্সির মাধ্যমে এক লাখ ১৭ হাজার জন হজ পালন করতে পারবেন।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মোট ৭৯ হাজার ৮৬২ জন হজযাত্রী নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ১৬৫ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭৫ হাজার ৬৯৭ জন। সেই অনুযায়ী, এখনো ৪৭ হাজার ৩৩৬ জন নিবন্ধন করেননি।
গত বছরের ১৫ নভেম্বর থেকে হজযাত্রী নিবন্ধন শুরু হয়। প্রথম নিবন্ধনের সময় ছিল ১০ ডিসেম্বর। পরে নিবন্ধনের সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। হজযাত্রীদের সাড়া না পাওয়ায় সর্বশেষ নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ে ১৮ জানুয়ারি করা হয়।
সৌদি আরবকে এবারের হজযাত্রীর সংখ্যা জানানোর তাগিদ থাকায় নিবন্ধনের সময় আর বাড়ানো হবে না বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়। কিন্তু হজ এজেন্সিগুলোর চাপে শেষ পর্যন্ত হজের নিবন্ধনের সময় ২৫ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সেই সময় বৃহস্পতিবার শেষ হয়। এরপর আবার বাড়ানো হলো নিবন্ধনের সময়।
অনলাইন ডেস্ক :
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমানে উন্নয়নশীল দেশ হয়ে ওঠার পথে বাংলাদেশের মসৃণ উত্তরণ এবং পরবর্তীতে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উত্তরণ লাভ করা, ও এর ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নের জন্য বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। আমাদের আস্থা আছে বিশ্বব্যাংকের ওপর। আশা করছি বিশ্বব্যাংকও বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশিদার হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আরও বলেছেন, “২০২৬ সালে জাতিসংঘের এলডিসি মর্যাদা থেকে মসৃণ ও টেকসই উত্তরণ লাভের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংককে আমি আমাদের মানব পুঁজি ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নয়ন কর্মসূচিগুলিকে একটি মসৃণ উত্তরণের জন্য সহায়তা দেয়ার জন্য অনুরোধ করছি। সে লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ আইডিএ উইন্ডোটি সংরক্ষণ ও অব্যাহত রাখা প্রয়োজন।”
যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বব্যাংক সদর দপ্তরের প্রিস্টন অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত “বিশ্বব্যাংক-বাংলাদেশ অংশীদারিত্বের ৫০ বছরের প্রতিফলন” শীর্ষক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে সোমবার ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের সামনে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট পরামর্শ রেখেছেন যা বিশ্বব্যাংক ঋণদাতাদের বিবেচনায় নেয়া উচিত।
এ সময় পাঁচটি প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন (আড়াই বিলিয়ন) ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের কাছে পদ্মা বহুমুখী সেতুর একটি ছবি তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য অবকাঠামো ও লজিস্টিকসে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমি আশা করব বিশ্বব্যাংক অতীতের মতো আগামী বছরগুলোতে আমাদের ভৌত ও সামাজিক উভয় খাতে মেগা-প্রকল্পগুলোতে সম্পৃক্ত হবে।”
ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার জাতীয় আকাঙ্খার সঙ্গে জাতিসংঘের এসডিজির সমন্বয় করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, “এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের বর্ধিত, ছাড় দেয়া এবং উদ্ভাবনী অর্থায়নের জরুরি প্রত্যাশা রয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন যে, মহামারী, সশস্ত্র সংঘাত এবং জলবায়ু জরুরি অবস্থার কারণে চলমান বৈশ্বিক একাধিক সংকট বেশিরভাগ উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলোকে গুরুতর চাপের মধ্যে ফেলেছে।
তিনি বলেন, মহামারী ও সশস্ত্র সংঘাত থেকে উদ্ভূত একাধিক সংকট সত্ত্বেও, কিছু উন্নয়ন অংশীদার তাদের ঋণের খরচ এবং সুদের হার বাড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদারদেরকে কার্যকর বিকল্প খুঁজে বের করার আহ্বান জানাচ্ছি যাতে আমাদের অর্থনীতিগুলো উদ্ভুত চ্যালেঞ্জগুলি আরও ভালভাবে মোকাবেলা করতে পারে।”
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আশা করে যে, জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকা-ে বিশ্বব্যাংকের বর্ধিত সম্পৃক্ততা প্যারিস চুক্তির অধীনে অর্থায়নের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আমরা জলবায়ু প্রশমন ও অভিযোজনের মধ্যে অর্থায়নের সমান বণ্টনের ওপর জোর দেব।”
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও প্রস্তুতিতে বিশ্বব্যাপী রোল-মডেল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এবং আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা, দুর্যোগ-সহিষ্ণু অবকাঠামো এবং সম্প্রদায় ভিত্তিক পদক্ষেপের ক্ষেত্রে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে।
তিনি বাংলাদেশকে জলবায়ু অভিযোজনের একটি জীবন্ত গবেষণাগার হিসেবে বর্ণনা করেন যেখানে বেশ কিছু প্রকৃতি-ভিত্তিক ও কৌশলগত সমাধান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ এর অধীনে প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নে আমাদের সাথে যোগ দেয়ার জন্য বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের আমন্ত্রণ জানান।”
রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে তারা জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাও ফিরে যায়নি।
তিনি বলেন, “বিস্তৃত অঞ্চলের জন্য ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তার প্রভাবের পাশাপাশি পরিস্থিতি আমাদের জন্য ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে। আমি বিশ্বব্যাংককে আমাদের মানবিক প্রচেষ্টায় যোগদানের জন্য এবং রোহিঙ্গা ও তাদের সম্প্রদায়ের জন্য ৫৯০ মিলিয়ন ডলার অনুদানের জন্য ধন্যবাদ জানাই।”
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ গত চার দশকে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে এবং ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে ব্যাপক নৃশংসতার পর থেকে তাদের সংখ্যা ১.২ মিলিয়নে পৌঁছেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছিলো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজের ভাগ্য গড়তে নয়, দুঃস্থ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাবা-মা এবং তিন ভাইসহ সবকিছু হারিয়ে দেশবাসীকে পাশে পেয়ে তিনি দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, তাঁকে তাঁর জীবনের অনেক ঝুঁকির মুখোমুখি হতে হয়েছে, তবে তিনি কখনই মাথা নত করেননি।
তিনি বলেন, ‘আমি কখনো মাথা নিচু করে দেশবাসীকে অসম্মান করতে চাই না।’
প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, বাঙালি একটি বিজয়ী জাতি, আমরা বিজয়ী জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে এগিয়ে যেতে চাই। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অব্যাহত ও অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে, কারণ তার আশেপাশে থাকা লোকদের কঠোর পরিশ্রম, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করার কারণে এবং সে সাথে রয়েছে দেশের জনগণের অটুট সমর্থন।
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস এবং এর প্রাক্তন প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌসিক বসু অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন এবং বৈশ্বিক ঋণদাতা ভিপি মার্টিন সমাপনী বক্তব্য রাখেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের অংশীদারিত্বের ৫০ বছর উপলক্ষ্যে সবার সাথে যোগ দিতে পেরে আনন্দিত।
তিনি বলেন, “আমি প্রেসিডেন্ট মালপাসকে তার আমন্ত্রণ ও আতিথেয়তার জন্য ধন্যবাদ জানাই। বিশ্বব্যাংকে অনেক বাংলাদেশীকে নিয়োজিত দেখে আমি আনন্দিত।” তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ নির্বিঘেœ এগিয়ে যেতে থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক একটি নেতৃস্থানীয় উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশকে ধারাবাহিকভাবে সহায়তা করে আসছে। বিশ্বব্যাংক চলমান আইডিএ কর্মসূচির অধীনে বাংলাদেশের জন্য বর্তমান বৈদেশিক সহায়তার প্রায় ৩২ শতাংশ অবদান রাখে।
তিনি আরো বলেন, “এছাড়া, আইএফসি এবং এমআইজিএ আমাদের বেসরকারী খাতকেও সহায়তা করছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “এখানে (বিশ্বব্যাংক) আমার উপস্থিতি ইঙ্গিত দেয় যে, আমরা বিশ্বব্যাংকের প্রতি আমাদের আস্থা বজায় রেখেছি। আগামী দুই দশকে আমাদের সাফল্য নির্ভর করবে আমাদের সম্মিলিত সক্ষমতা এবং ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই উপায়ে উদীয়মান চ্যালেঞ্জগুলি অতিক্রম করার প্রচেষ্টার উপর”।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার পিতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শী নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতাকে আমাদের সংবিধানে মৌলিক রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। তার নৃশংস হত্যাকা-ের পর, জাতিকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে আমাদের দীর্ঘ ২১ বছরের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম করতে হয়েছে। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহন তার সরকার ২০২১ সালের মধ্যে একটি ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার অঙ্গীকার করে।
তিনি বলেন, “টানা তিন মেয়াদে জনগণ ও দেশের সেবা করার সুযোগ লাভের জন্য আমি আমাদের জনগণের কাছে কৃতজ্ঞ। গত দেড় দশকে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সুষ্ঠু সামষ্টিক অর্থনৈতিক মৌলিক বিষয়গুলির জন্য বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটেছে। ”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালে, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করেছে এবং ২০২১ সালে, জাতিসংঘ এটিকে দ্বিতীয়বারের মতো এলডিসি মর্যাদা থেকে উত্তরণ লাভের যোগ্য ঘোষণা করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ২৬.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের অর্থনৈতিক উদ্দীপনা প্যাকেজ এবং বিনামূল্যের গণ টিকাদানের মাধ্যমে সফলভাবে কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলা করেছে।
তিনি বলেন, “আমাদের নিজস্ব সম্পদে পদ্মা বহুমুখী সেতুর সমাপ্তি এবং গত বছর এর উদ্বোধন সম্ভবত আমাদের সহনশীলতা ও সাফল্য অর্জনের সেরা উদাহরণ।”
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ আজ বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে, যার জিডিপি ৪৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
তিনি বলেন, “আমাদের অর্থনীতি গত এক দশকে গড়ে ৬ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মহামারীর ঠিক আগে এটি ৮.১৫ শতাংশে পৌঁছেছে। এর ফলে ২০২২ সালে মাথাপিছু আয় ২,৮২৪ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালে সার্বিক দারিদ্র্যের হার ১৮.৭ শতাংশে নেমে এসেছে যা ২০০৬ সালে ছিল ৪১.৫ শতাংশ।
তিনি বলেন, তার সরকার সামাজিক সুরক্ষার জন্য জাতীয় বাজেট বরাদ্দ ৪০ গুণ বাড়িয়েছে, যা জিডিপির ২.৫ শতাংশ।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার এক বছর আগে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বিনা খরচে সকল গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষকে আবাসন প্রকল্পের আওতায় আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে, আমরা প্রায় ৫০ লাখ মানুষকে বিনা খরচে বাড়ি দিয়েছি এবং আয়সংস্থানমূলক দক্ষতা ও সহায়তা দিয়েছি।” প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তার সরকার প্রতিটি বাড়ির দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা এবং বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শ্রমশক্তিতে নারীদের অংশগ্রহণের হার আমাদের আঞ্চলিক দেশগুলোর তুলনায় বেশি।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের সরকার সম্প্রতি আমাদের জাতীয় জিডিপিতে নারীদের গৃহস্থালির কাজ প্রতিফলিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বাংলাদেশকে একটি আঞ্চলিক সংযোগ, বিমান ও লজিস্টিক হাব হিসেবে গয়ে তোলার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়।
তিনি বলেন, “আমরা ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি, যা ২০৩০ সালের মধ্যে আনুমানিক দশ মিলিয়ন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বিশ্বের শতাধিক সেরা সবুজ কারখানার অর্ধেকেরও বেশি এখন বাংলাদেশে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে একটি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার জন্য তার পরবর্তী রূপকল্প চালু করেছে যার লক্ষ্য ডিজিটালভাবে নাগরিকদের ক্ষমতায়িত করা; চেহারাহীন সরকারি সেবা প্রদান; একটি জ্ঞান-ভিত্তিক নগদ অর্থ লেনদেনহীন অর্থনীতি; এবং একটি অধিকার-ভিত্তিক ন্যায়সঙ্গত এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের (ব্রি) অধীনে পরিচালিত ’যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ধান চাষাবাদের লক্ষ্যে খামার যন্ত্রপাতি গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধিকরণ (SFMRA) প্রকল্পের অর্থায়নে উন্নয়নকৃত ব্রি হেড-ফিড কম্বাইন হারভেস্টারের প্রথম প্রটোটাইপের মাঠ পরীক্ষণ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
সিলেটের খাদিমনগরে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) কৃষি খামারে সোমবার এই মাঠ পরীক্ষণ সম্পন্ন হয়। মাঠ পরীক্ষণ অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া এবং অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) মো: মাহবুবুল হক পাটোয়োরী এবং বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর।
ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় কৃষিযন্ত্র প্রস্তুতকারকদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহার করে আলীম ইন্ডাস্ট্রিজের কারিগরী সহযোগিতায় দেশে এই প্রথম আন্তর্জাতিকমানের দেশীয় উপযোগী ব্রি হেড ফিড কম্বাইন হারভেস্টারটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এই যন্ত্রটি উন্নয়ন/উদ্ভাবন গ্রুপের প্রধান গবেষক ছিলেন এ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও ব্রি’র খামার যন্ত্রপাতি ও ফলনোত্তর প্রযুক্তি বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ কে এম সাইফুল ইসলাম, সহযোগী গবেষক ছিলেন একই বিভাগের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো: কামরুজ্জামান পিন্টু ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আরাফাত উল্লাহ খান।
এই কৃষিযন্ত্রটি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের কৃষকরা একই সাথে ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়াই ও বস্তাবন্দী করতে সক্ষম হবেন। প্রচলিত পদ্ধতির পরিবর্তে ধান সংগ্রহের ক্ষেত্রে এই যন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের কৃষক ও কৃষি উদ্যোক্তারা তাদের সময়, শ্রম ও অর্থ সাশ্রয় করতে পারবেন। হেড ফিড হারভেস্টার দিয়ে ধান কাটলে খড়ের কোন ক্ষতি হবে না, খড় আস্ত থাকবে। আমাদের দেশের কৃষকরা যারা পশুপালন করেন তাদের কাছে পশুর খাদ্য হিসেবে খড়ের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। যেসব অঞ্চলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পশুপালন করা হয় সেখানে শুকনো খড়ের রয়েছে বিশেষ চাহিদা। তাছাড়া কৃষকরা জ্বালানী, কাঁচা ঘরের ছই দেয়া, বীজ জাগ দেয়াসহ নানা কাজে খড় ব্যবহার করেন। তাই ধানের খড় সংরক্ষণ করাও অত্যন্ত জরুরি যা এই যন্ত্রের একটি বাড়তি সুবিধা বলে বিবেচিত হবে।
মাঠ পরীক্ষণ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রকল্প পরিচালক ও এই যন্ত্রের মূখ্য গবেষক ড. এ কে এম সাইফুল ইসলাম, আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলীমুল এহছান চৌধুরী, প্রোডাকশন ম্যানেজার মাহবুব হাছান, ব্রি’র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আরাফাত উল্লাহ খান, আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের গবেষণা কর্মকর্তা শ্যামল দেবনাথ ও অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাইয়ের কুর্নফুলী গ্যাস লাইনের পাইপ লাইনের কর্মরত ৩ শ্রমিক লরি চাপায় নিহত হয়েছেন। এতে আরেকজন শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছে।
আজ ২৫ নভেম্বর শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার মিরসরাই সদর ইউনিয়নের বিসিক শিল্প নগরী এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, পাবনা জেলার সুজানগর থানার সৌখেতু পাড়ার আবুল কালামের ছেলে মো. আলম (৫০), একই থানার রায়পুর এলাকার মালেক বেপারির ছেলে মো. শফিক (৪৫), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ থানার আন্দিদিল এলাকার হুমায়ন কবিরের ছেলে মাসুদ মিয়া ( ৩৫)। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন মো. মাজেদ (৩৫)।
প্রত্যক্ষদর্শীর পাইপ লাইনে কর্মরত শ্রমিক মো. সোহেল রানা জানান, তারা সবাই নাস্তা করে কাজে জাইতেছিলো। নিহতরা মহাসড়কে তাদের থেকে কিছুদূরে ছিলো। পেছন থেকে একটি লরি গাড়ি এসে ধাক্কা দিলে সড়কে তাদের ৩ জনের মৃত্যু হয়। আরেকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গাড়ির চালক গুমে ছিলো। না হলে এমন দূর্ঘটনা হতো না বলে তিনি জানান।
জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ সোহেল সরকার বলেন, আমরা লরি গাড়িটি আটক করেছে। নিহতদের লাশ থানা আছে। আইনানুগ ব্যবস্থা শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে বলে ওসি জানান।