জিটুজি প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন তরান্বিত করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

জাতীয়, 6 June 2023, 696 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে সরকারের (জিটুজি) উদ্যোগের অধীনে বিভিন্ন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।

আজ ৬ জুন মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতিত্বকালে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন।

বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভারত ও চীনের মতো বিভিন্ন দেশের সঙ্গে জিটুজি প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার ওপর জোর দিয়েছেন। কারণ, ওইসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি (লাইন্স অব ক্রেডিট) রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, এ বিষয়ে কালবিলম্ব বা অবহেলা যাবে না। কারণ, এসব উদ্যোগ বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বাড়াবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী আরো বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী পরিকল্পনা কমিশনকে বৈদেশিক অর্থায়নের প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে বলেছেন।

তিনি বলেন, আজকের একনেক সভায় মোট ১১,৩৮৭.৯১ কোটি টাকা ব্যয়ের মোট ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

মান্নান আরো বলেন, ‘মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে, বাংলাদেশ সরকারের অংশ থেকে ৭,৪৪৫.৩৪ কোটি টাকা, ৮০.৭৮ কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ও বাকি ৩,৮৬১.৭৯ কোটি টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসাবে আসবে।’

১৮টি অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে নয়টি নতুন ও নয়টি সংশোধিত প্রকল্প। এছাড়া বৈঠকে একটি প্রকল্পের ব্যয় না বাড়িয়ে সময়সীমা বাড়ানোর অনুমোদন দেয়া হয়।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সব ক্ষেত্রে কঠোরতা বজায় রাখতে ও এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রেখে দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে সংশ্লিষ্ট সকলকে পুনরায় নির্দেশ দিয়েছেন।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে শেখ হাসিনা বিভিন্ন বাজার ও কাঁচা বাজারের পণ্যের দামের পার্থক্য থাকায় গবেষণা পরিচালনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

প্রধানমন্ত্রী পেঁয়াজ ও আদার মতো পচনশীল আইটেমগুলোর জন্য আঞ্চলিক স্টোরেজ ব্যবস্থা স্থাপনের ওপরও জোর দেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বর্তমান ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির প্রবণতা এবং দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ঘাটতির কারণে লোডশেডিংয়ের কথা স্বীকার করেছেন।

তিনি বলেন, সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এখন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা।

মূল্যস্ফীতি কমবে বলে তার পূর্বের ভবিষ্যদ্বাণী উল্লেখ করে মান্নান বলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তা কমেনি, বরং বেড়েছে- যার জন্য সরকার তার উপলব্ধ উপকরণ ব্যবহার করার মতো যা যা প্রয়োজন তা করবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী আরো বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রথম কৌশল হবে এটিকে আরও বাড়তে না দেয়া এবং তারপরে তা আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা।

এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, শুধু মার্কিন ডলারের উচ্চ বিনিময় হারের কারণেই দেশে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে এটা ঠিক নয়। এর পেছনে আরও কিছু কারণ রয়েছে।

মার্কিন ডলার ছাড়া অন্যান্য মুদ্রার সাথে বাণিজ্য পরিচালনার প্রচেষ্টা চলছে- উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভ এখনও ৩০ বিলিয়ন ডলারের উপরে রয়েছে। তবে এটি আবারও ৫০ বিলিয়ন ডলারে যেতে পারে।’ আগামী অর্থবছরে (অর্থবছর-২৪) মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে রাখার বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার কথা উল্লেখ করে মান্নান বলেন, এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে কিছু উদ্বেগ থাকতে পারে, তবে সামনে এমন লক্ষ্য রাখা ভুল নয়।

স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পেঁয়াজ আমদানির সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এভাবে আমাদের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে ও সঠিক সময়ে বাজারে প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ করতে হবে।’ ইইউতে মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে কমছে উল্লেখ করে মান্নান বলেন, আগামী দিনে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের কাছাকাছি নামিয়ে আনা কঠিন হলেও মূল্যস্ফীতি কমাতে আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যহত থাকবে।

মন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমাদের প্রক্রিয়াটি (সাপ্লাই চেইন) মসৃণ রাখতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে যে- কোনও ধ্বংসাত্মক উপাদান যেন প্রক্রিয়াটিকে বাধাগ্রস্ত করতে না পারে। অন্যথায়, সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করা সত্ত্বেও এটি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।’

সভার শুরুতেই একনেক বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যে আগামী অর্থবছরের জন্য এত চমৎকার বাজেট প্রণয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও অর্থ বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানায়।

এম এ মান্নান বলেন, প্রকল্প অনুমোদন প্রক্রিয়ায় সরকার আরও কঠোর হবে এবং অনুমোদন দেওয়ার আগে প্রকল্প প্রস্তাব গভীরভাবে পর্যালোচনা করা হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রবাসীদের দেশে রেমিটেন্স পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রণোদনার পরিমাণ বাড়ানোর বিষয়ে সরকার এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তিনি বলেন, ‘যদিও কিছু বেসরকারি ব্যাংক রেমিট্যান্স পাঠাতে সরকার নির্ধারিত আড়াই শতাংশের বাইরে কিছু বাড়তি প্রণোদনা দিচ্ছে, তবে এই হার বাড়ানোর বিষয়ে সরকার এখনও কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেয়নি।’

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সরকারের বিপুল আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে যে, ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের কারণে আগামী সাধারণ নির্বাচনে ভোট চাইতে সরকার দৃঢ় মনোবল নিয়ে ভোটারদের কাছে যেতে পারবে।

একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো, ফরিদপুর জেলাধীন মধুমতী নদীর বাম তীর ভাঙ্গন থেকে শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ স্মৃতি যাদুঘর সংযোগ রাস্তাসহ অন্যান্য এলাকা সংরক্ষণ ও ড্রেজিং প্রকল্প। বাগেরহাট জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প। নতুন ৬টি আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে স্থানভিত্তিক ধানের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং বিদ্যমান গবেষণার উন্নয়ন। নেত্রকোনা জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প (পঞ্চম সংশোধন)। ১০টি মেডিকেল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ১৯টি হোস্টেল ভবন নির্মাণ প্রকল্প। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন আর্টস ফ্যাকাল্টি বিল্ডিং স্থাপন প্রকল্প। হায়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন এন্ড ট্রান্সফরমেশন প্রকল্প। গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প। বাগেরহাট কালেক্টরেটের নতুন ভবন নির্মাণ প্রকল্প। বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেক্টিভটি প্রজেক্ট-১, শেওলা, রামগড় ও ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর উন্নয়ন এবং বেনাপোল স্থলবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন প্রকল্প। সাতক্ষীরা সড়ক সিটি ও সিটি বাইপাস সড়ককে সংযুক্ত করে সংযোগ সড়কসহ তিনটি লিংক রোড নির্মাণ প্রকল্প। সাভার সেনানিবাস এলাকায় মিট প্রসেসিং প্ল্যান্ট স্থাপন প্রকল্প। ডিজিএফআই-এর টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি অবকাঠামো, মানবসম্পদ এবং কারিগরি সক্ষমতা উন্নয়ন প্রকল্প। বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্প। নড়াইল জেলার জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প। লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প।

আজ একনেক সভার শুরুতে বৈশ্বিক টালমটাল পরিস্থিতির মধ্যেও ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য চমৎকার বাজেট পেশ করায় প্রধানমন্ত্রী,অর্থমন্ত্রী ও অর্থ বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানানো হয়।বাসস

Leave a Reply

আন্দোলনে আহতদের দেখতে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে প্রধান…

অনলাইন ডেস্ক : ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের খোঁজখবর নিতে রাজধানীর Read more

বাঞ্ছারামপুরে শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচারের…

চলারপথে রিপোর্ট : বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির সহনশীলতায় বিশ্বাস করে, শান্তিপ্রিয় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাক্তন স্কাউটদের বিশেষ সাধারণ সভা

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাক্তন স্কাউটস সংগঠনের গঠনতন্ত্র প্রণয়ন ও Read more

আখাউড়ায় মাকে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যুর কোলে…

চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত মাকে দেখামাত্র অসুস্থ Read more

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ইকুয়েডরকে হারাল ব্রাজিল

অনলাইন ডেস্ক : ইকুয়েডরের বিপক্ষে রদ্রিগোর একমাত্র গোলে জয়ের দেখা Read more

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ও হতাহতদের…

চলারপথে রিপোর্ট : বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, জেলা ছাত্রদল, যুবদলের Read more

মালয়েশিয়ায় একদিনে অভিযানে ২২২ বাংলাদেশি আটক

অনলাইন ডেস্ক : মালয়েশিয়ার কেদাহ রাজ্যে অভিযান চালিয়ে ২২২ জন Read more

নবীনগরে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ’র ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকী…

চলারপথে রিপোর্ট : উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় সঙ্গীত জগতের কিংবদন্তি ‘সুরসম্রাট’ খ্যাত Read more

ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর মৃত্যুবার্ষিকী আজ

চলারপথে রিপোর্ট : আজ ৬ সেপ্টেম্বর ‘সুরসম্রাট’ ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর Read more

জাতীয় সঙ্গীতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে উদীচীর…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় সঙ্গীতের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে Read more

সালমান শাহকে হারানোর আজ ২৮ বছর

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের বাঁক ঘোরানো তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা Read more

দু’দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে আহত প্রায়…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের Read more

আজ ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস

জাতীয়, 16 May 2023, 984 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস আজ। ৪৭ বছর আগে ১৯৭৬ সালের এই দিনে (১৬ মে) মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে ভারত নির্মিত ফারাক্কা বাঁধের প্রতিবাদ এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পদ্মা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে ফারাক্কা অভিমুখে লাখো জনতার লংমার্চ অনুষ্ঠিত হয়। লংমার্চ শেষে কানসাট হাইস্কুল মাঠে বিশাল সমাবেশে বক্তব্য দেন মওলানা ভাসানী। সেই থেকে ১৬ মে ফারাক্কা দিবস নামে পরিচিতি লাভ করে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ১৮ কিলোমিটার উজানে ১৯৭৫ সালে ভারত ফারাক্কা বাঁধ উদ্বোধন করে। এর প্রতিবাদে মওলানা ভাসানীর লংমার্চ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলে। সে সময় চুক্তি অনুযায়ী, পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি পূরণ না হওয়ায় মরূকরণের দিকে যাচ্ছিল বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল। যদিও সে অবস্থার এখনও পরিবর্তন হয়নি।

১৯৯৬ সালে ভারত-বাংলাদেশের ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি অনুযায়ী খরা মৌসুমে জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে বাংলাদেশকে ৩৫ হাজার কিউসেক পানি দেওয়ার কথা। কিন্তু বাংলাদেশ সে পানি পায়নি।

পাউবোর কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, এ বছর উজানে মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় পদ্মা নদীতে পানি বেড়েছে। পরিবেশবিদ ও সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক শাহনেওয়াজ সালাম বলেন, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য এখনও হুমকির মুখে। এসব থেকে রক্ষা পেতে নতুন করে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি হওয়া দরকার।

এদিকে ফারাক্কা দিবস উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস যে কোনো অধিকার আদায়ে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আজ বিশ্ব বাবা দিবস

জাতীয়, 18 June 2023, 684 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
সকল সন্তানদের কাছে নির্ভরতার অন্যতম প্রতীক হচ্ছেন বাবা। সন্তানের কাছে শ্রদ্ধেয় এক গভীর অনুভূতির শব্দ এটি। নিখাদ ভালোবাসার সঙ্গে উচ্চারিত হয় ‘বাবা’ শব্দটি। বাবা শব্দের মাঝেই জড়িয়ে আছে ভালোবাসা, মায়া, নির্ভরতা। আর তাই প্রত্যেক বাবাকে শ্রদ্ধা জানাতে প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার বিশ্বব্যাপী পালন করা হয় ‘বিশ্ব বাবা দিবস’। বাবার সঙ্গে স‍ুন্দর সময় কাটানোসহ নানা উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হয় দিনটি।

কিন্তু কোথা থেকে বা কবে থেকে বাবা দিবস পালনের সূচনা, তা আমাদের অনেকেরই অজানা।

বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিক থেকে বাবা দিবস পালনের প্রচলন হয়। মায়েদের পাশাপাশি বাবারাও তাদের সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল- এটা বোঝানোর জন্যই এই দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। পৃথিবীর সব বাবাদের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশের ইচ্ছা থেকেই যার শুরু।

ভার্জিনিয়ার মোনোনগাহ্‌য় কয়লা খনিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণ হারান ৩৬২ জন পুরুষ। ঘটনাটি ১৯০৭ সালের ডিসেম্বর মাসে। নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন সন্তানের বাবা। এই ঘটনায় প্রায় এক হাজার শিশু পিতৃহারা হয়ে পড়ে। পরের বছর ১৯০৮ সালের ৫ জুলাই পশ্চিম ভার্জিনিয়ার এক গির্জায় একটি স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। নিহতদের সম্মান জানাতে সন্তানরা মিলে এই প্রার্থনাসভার আয়োজন করে। এটি ছিল বাবাকে সম্মান জানাতে ইতিহাসের প্রথম আয়োজন।

সনোরা স্মার্ট ডড নামে এক নারীর বড় ভূমিকা রয়েছে বাবা দিবসকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে। ১৯০৯ সালের আগে ওয়াশিংটনে বাবা দিবস বলে কোনও বিশেষ দিন ছিল না। সে সময় স্থানীয় গির্জায় ডড মা দিবস পালনের কথা শোনেন।

মা দিবস পালনের রীতি রয়েছে কিন্তু বাবা দিবস পালনের রীতি নেই জেনে ডড ভীষণ অবাক হন। তারপর তিনি বাবা দিবসের স্বীকৃতির জন্য সোচ্চার হয়ে ওঠেন। ডড তার বাবাকে অসম্ভব ভালোবাসতেন। মা ছিল না তার। মায়ের মৃত্যুর পর শত দুঃখ-কষ্টের মধ্যে থেকেও তাদের সাত ভাইবোনকে বড় করে তুলেছিলেন তাদের সিঙ্গেল বাবা। বাবার এই ত্যাগ দেখে ডডের মনে হলো, মা দিবসের এত আয়োজন হলে বাবা দিবস কেন বাদ থাকবে। বাবাকে সম্মান জানানোর জন্যও একটা দিন থাকা দরকার।

তারপর অনেক চেষ্টা করে দীর্ঘ এক বছরের সাধনায় স্থানীয় কমিউনিটিগুলোতে বাবা দিবস পালন করতে পারেন ডড। ১৯১০ সালের ১৯ জুন বিশ্বে প্রথমবারের মতো পালিত হয় বাবা দিবস।

ওয়াশিংটন থেকে শুরু হলেও পরবর্তী সময়ে এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে ছড়িয়ে পড়তে থাকে এ দিবস পালনের কথা। আস্তে আস্তে মা দিবসের পাশাপাশি বাবা দিবসের প্রতিও সচেতন হতে থাকেন সন্তানরা। এরপর ১৯২৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কুলি বাবা দিবসে সম্মতি দেন। তারপর ১৯৬৬ সালে প্রেসিডেন্ট লিন্ডন জনসন জুন মাসের তৃতীয় রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে বাবা দিবস উদযাপনের কথা ঘোষণা করেন। এবং সবশেষে ১৯৭২ সালে তখনকার আমেরিকান প্রেসিডেন্ট নিক্সন একটি আইনে স্বাক্ষর করে বাবা দিবসকে জাতীয় মর্যাদা দেন। তারপর থেকে জুন মাসের তৃতীয় রবিবার সারা বিশ্বে বাবা দিবস পালন হয়ে আসছে।

হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছর আজ পড়েছে বাবা দিবস। বিশ্বের কয়েকটি দেশ ভিন্ন মাসের কয়েকটি ভিন্ন তারিখে বাবা দিবস পালন করলেও, একটি বিশাল অংশ যেমন- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, চিলি, কলাম্বিয়া, কোস্টারিকা, কিউবা, সাইপ্রাস, চেক প্রজাতন্ত্র, ফ্রান্স, গ্রিস, হংকং, ভারত, আয়ারল্যান্ড, জ্যামাইকা, জাপান, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, নেদারল্যান্ড, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলংকা, সুইজারল্যান্ড, বাংলাদেশ, ভেনিজুয়েলা ও জিম্বাবুয়েসহ আরও কিছু দেশে জুনের তৃতীয় রোববার এ বিশেষ দিনটি পালিত হয়।

অন্যদিকে দক্ষিণ আমেরিকায় দিবসটি পালিত হয় ১৯ মার্চ। আর অস্ট্রেলিয়া ও ফিজিতে পালন করা হয় সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম রোববার।

বাবা দিবস পালনের ক্ষেত্রে দেশ ভেদে বৈচিত্র্য দেখা যায়। এ দিবসটি বিভিন্ন দেশে বিভিন্নভাবে পালিত হয়। এ দিন ছেলেমেয়েরা তাদের বাবাকে উপহার দিয়ে ভালোবাসা প্রকাশ করে। আর বাবারাও ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে গিফট পেয়ে বেশ অভিভূত হয়ে যান। এ গিফট দেয়ার ক্ষেত্রেও দেশ ভেদে দেখা যায় ভিন্নতা। কোনো কোনো দেশে ছেলেমেয়েরা বাবাকে কার্ড বা ফুলের তোড়া উপহার দিয়ে বাবা দিবসের শুভেচ্ছা জানায়। আবার কোথাও কোথাও বাবাকে ছেলেমেয়েরা নেকটাই ও উপহার দেয়। অনেকে আবার বাবা দিবস উপলক্ষে কেক কাটার আয়োজনও করে।

একটি পরিবারে মায়ের চেয়ে বাবার গুরুত্বও কোনো অংশে কম নয়। পরিবারের প্রধানের ভূমিকায় বাবার অবদান অনস্বীকার্য। বাবার কঠোর শাসন অনেকের জীবনের গতিকে পরিবর্তন করে আলোর পথে এনেছে। তিনি যেন সন্তানের জন্য এক বটবৃক্ষ। পৃথিবীর সব বাবার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানিয়ে তাই তো কবির ভাষায় বলতে হয়, ‘বাবা’ কখনো বলা হয়নি তোমায় ঠিক কতখানি ভালোবাসি।

নীতি-নির্ধারকরা চাইলে স্পষ্ট করা হবে: আইনমন্ত্রী

জাতীয়, 25 January 2024, 340 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
এখন দেশে ৬৪৮ জন সংসদ সদস্য (এমপি) রয়েছেন বলে যে আলোচনা চলছে নীতি-নির্ধারকরা চাইলে সংবিধানের সেই বিষয়ে স্পষ্ট করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

এখন যা হয়েছে সবকিছুই সাংবিধানিক হয়েছে বলেও জানান আইনমন্ত্রী।

আজ ২৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আল-দুহাইলানের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

বলা হচ্ছে সংসদে ৬৪৮ এমপি এখন। এটা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। মন্ত্রীরা যখন শপথ নেন তখন আগের মন্ত্রিসভা বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু সংসদ সদস্যরা শপথ নিলেও আগের সংসদ বাতিল হয় না। সেক্ষেত্রে আইনের অস্পষ্টতা আছে বলে আপনি মনে করেন কি না। সেটি স্পষ্ট করার উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ব্যাপারটা হচ্ছে সংবিধানে এখন যা আছে, সেভাবেই দেশ চলছে এবং এটা আজ সংবিধানে সন্নিবেশিত করা হয়নি। এটা চতুর্দশ সংশোধনীতে সংযোজন করা হয়েছিল। এখন যে বিষয়টা নিয়ে আলাপ করা হচ্ছে, এটার বোধহয় খুব একটা গুরুত্ব নেই। তারপরও আমি বলবো, নীতি-নির্ধারকরা যদি মনে করেন এখানে কিছু আরো স্পষ্ট করার প্রয়োজন আছে, সেটা দেখা যাবে।

আপনি আইনমন্ত্রী হিসেবে স্পষ্ট করা প্রয়োজন মনে করেন কি না, এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি তো বললাম, নীতি-নির্ধারকরা যদি মনে করেন স্পষ্ট করার প্রয়োজন আছে, তাহলে দেখা যাবে।

কোন জায়গাটা স্পষ্ট করার প্রয়োজন, এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, আমি এখনো জানি না। নীতি-নির্ধারকরা প্রয়োজন বোধ করলে কোন জায়গায় সেটা নীতি-নির্ধারকরা সিদ্ধান্ত নেবেন। তারপর সেটা হবে। আমার মনে হয় এখন যা হয়েছে সবকিছুই সাংবিধানিক হয়েছে।

সমুদ্রসৈকতে ভেসে এলো মৃত পরপইস

জাতীয়, 3 March 2024, 275 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্রসৈকতে জোয়ারের সঙ্গে ভেসে এসেছে একটি মৃত পরপইস। আজ ৩ মার্চ রবিবার সকালে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিনড্রাইভ সড়কের টেকনাফ সৈকতের চৌকিদার পাড়ায় এটি ভেসে আসে।

বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিআরওআই) জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, রবিবার সকালে জোয়ারের সঙ্গে পরপইসটি ভেসে আসে। এটির দৈর্ঘ্য ৪ ফুট ৯ ইঞ্চি। ওজন ৪৫ কেজি। বয়স আনুমানিক ৯ থেকে ১০ বছর।

পরপইসটির মাথায় রক্তাক্ত আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মৎস্য করপোরেশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) ও সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর। তিনি বলেন, এর মাথায় রক্তাক্ত আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। ধারনা করা হচ্ছে, কোনো নৌযানের প্রপেলারের সাথে ধাক্কা খেয়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে প্রাণীটির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার, অপরিকল্পিত পর্যটন, দখল, দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন, বাসস্থান নষ্ট ইত্যাদি কারণে বিশ্বব্যাপী বন্য প্রাণীর অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে।

এর আগে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি হিমছড়ি সৈকতে একই প্রজাতির একটি পরপইসের মৃতদেহ ভেসে এসেছিল। এই পরপইসটি উদ্ধারের পর বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিআরওআই) বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন দেশে এর আগে পরপইস ভেসে আসেনি। গত ১৪ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে এক নাগাড়ে সামুদ্রিক প্রাণীর মৃতদেহ ভেসে আসে। এর মধ্যে চারটি ডলফিন, অন্তত ৮০টি অলিভ রিডলি ও বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণী রয়েছে।

গণপূর্ত মন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানালো ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়ন

জাতীয়, 16 February 2024, 316 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গণমানুষের নেতা, অভাবনীয় উন্নয়নের রূপকার, সন্ত্রাস-মৌলবাদ সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী লড়াই সংগ্রামের আপোষহীন যোদ্ধা, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান হয়।

আজ ১৬ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

এসময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি দীপক চৌধুরী বাপ্পী, সহ-সভাপতি বিশ্বজিত পাল বাবু, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ফরহাদুল ইসলাম পারভেজ, কোষাধ্যক্ষ আজিজুল আলম সঞ্চয় ও কার্যকরী সদস্য মজিবুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন।