চলারপথে রিপোর্ট :
কুমিল্লার দাউদকান্দিতে পরীক্ষা চলাকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পাঁচ স্কুলের ২২ শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে ১৭ জন শিক্ষার্থীকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। চিকিৎসক জানিয়েছেন, তীব্র গরমে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। অনেকে আবার ভয় পেয়ে অসুস্থ হয়ে যায়।
আজ ৭ জুন বুধবার সকালে উপজেলার গৌরীপুর সুবল আলতাফ, বিলকিস-মোশাররফ, চিনামুড়া, চশই ও তিতাসের নারান্দিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
গৌরীপুর সুবল আফতাব উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য মিন্টু সরকার বলেন, সারাদেশের ন্যায় একযোগে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা শুরু হলে সকাল সাড়ে ১০টায় প্রথমে দুইজন শিক্ষার্থী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে আরও চার স্কুলের ১৪ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে তাদেরও হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এদিকে খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আলম, জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাসিমা আকতার, দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজর অব. মোহাম্মদ আলী সুমন, উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মহিনুল হাসান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জিয়াউর রহমান, মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলমগীর ভূঞা। তারা অসুস্থ শিক্ষার্থীদের খোঁজ-খবর নেন।
ডিসি শামীম আলম বলেন, অসুস্থ শিক্ষার্থীদের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারা দেখেছেন। অসুস্থদের মধ্যে অনেকেই সুস্থ হয়ে উঠেছে। বাকিরাও দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাসিমা আকতার বলেন, গৌরীপুর স্কুলসহ আরও পাঁচটি স্কুলের ১৭ জন শিক্ষার্থী তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের দেখে অন্য শিক্ষার্থীরা ভয় পেয়ে অসুস্থ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, ২২ শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৭ জন। বাকি পাঁচজন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাদের চিকিৎসা চলছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার গৌরীপুর সুবল আলতাফ উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে উম্মে হাবিবা (১২) নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তীব্র দাবদাহে হিটস্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে তার।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় তালাক দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে সাবেক স্ত্রী সুমা আক্তারকে (২৫) কুপিয়ে হত্যা মামলায় ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী রাসেল মিয়া (৩২)কে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
গত মঙ্গলবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এবং র্যাব-৯-এর সদস্যরা রাত ঢাকার পল্লবী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী রাসেল মিয়াকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত রাসেল মিয়া কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে।
গতকাল বুধবার বিকেলে র্যাব-৯-এর কার্যালয়ে থেকে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তি এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়। নিহত সুমা আক্তার কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের কুদ্দুস মিয়া মেয়ে।
র্যাবের পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ সালে মোঃ রাসেল মিয়ার সাথে সুমা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় সুমা আক্তারের পরিবারের পক্ষ থেকে ১ টি অটোরিক্সাসহ প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকার মালামাল ও ১ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার দেয়া হয়।
বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় সুমা আক্তারকে তার বাবার বাড়ি থেকে টাকা-পয়সা এনে দেয়ার জন্য চাপ দিতো রাসেল মিয়া। এনিয়ে মাঝে মধ্যে সুমা আক্তারকে বেদম মারধোর করতো রাসেল মিয়া। ঘটনার ৭/৮ মাস আগে রাসেল মিয়া ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের জন্য সুমা আক্তারকে মারধোর করলে সুমা তার বাবার বাড়িতে চলে যায়।
গত ২০১৫ সালের ৩১ মে সুমা আক্তার তার স্বামী রাসেল মিয়াকে ডিভোর্স দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাসেল মিয়া সুযোগ খুজতে থাকে।
২০১৫ সালের ৪ অক্টোবর সন্ধ্যার পর সুমা আক্তার তার বাবার বাড়ির একঘর থেকে অন্যঘরে যাওয়ার সময় পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা রাসেল মিয়া এলোপাথারী সুমাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়।
পরে তার পরিবারের লোকজন সুমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুমাকে মৃত ঘোষনা করেন। তবে মারা যাওয়ার আগে সুমা আক্তার হামলাকারী রাসেলের নাম বলে যায়।
এ ঘটনায় পরদিন নিহতের বাবা কুদ্দুস মিয়া বাদী হয়ে কসবা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বেলাল হোসেন তদন্ত শেষে ডিসেম্বর মাসে রাসেলকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, সুমা তালাক দেয়া ক্ষুব্দ রাসেল মিয়া তাকে হত্যা করেন।
এদিকে সকল সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে রাসেলের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় গত ৬ আগষ্ট দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার আসামী রাসেলকে ২০ হাজার টাকা জরিমানাসহ মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রদান করেন। আসামী পলাতক থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে জেল ওয়ারেন্ট ইস্যুর আদেশ দেন ।
অনলাইন ডেস্ক :
‘জুলাই-আগস্ট গণহত্যায়’ ১৩ আগস্ট পর্যন্ত সমগ্র দেশে শহীদ হয়েছেন ৮৭৫ জন মানুষ। যার মধ্যে কমপক্ষে ৪২২ জন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এ দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ ১৫ সেপ্টেম্বর রোববার বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন। ‘গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের পথযাত্রায় বিএনপির ভূমিকা, অবদান ও প্রত্যাশা’ বিষয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ফখরুল বলেন, আজ আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের জনগণকে বারবার ত্যাগ শিকার করতে হয়েছে, রক্ত দিতে হয়েছে। এ দেশের স্বাধীনতাকে যখনই গ্রাস করেছে স্বৈরতন্ত্র, প্রতিবার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। বাকশালের পর বহুদলীয় গণতন্ত্র ও স্বৈরশাসনের পর সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, দেশের মানুষের অধিকার ও মর্যাদা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়া।
‘সেই ধারাবাহিকতায়, ১৬ বছরের স্বৈরাচারী দুঃশাসনকে চূর্ণ করে গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের জনগণ আবারও মুক্তির স্বাদ পায়, গণতন্ত্রের পথ সুগম করে। অসংখ্য ব্যক্তি ও পরিবার রয়েছে, যাদের বছরের পর বছর ধরে ত্যাগের মহিমায় আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি। ’
ফখরুল বলেন, বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুলাই গণহত্যায় ১৩ আগস্ট পর্যন্ত সমগ্র বাংলাদেশে শহীদ হন ৮৭৫ জন মানুষ, যার মধ্যে কমপক্ষে ৪২২ জন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দেশজুড়ে শহীদ সব শ্রেণি-পেশা-রাজনীতির মানুষগুলোর এ বিশাল অংশ যে বিএনপিরই নেতা-কর্মী, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; বরং আমাদের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের অনিবার্য ফল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, পোশাক শ্রমিক কিংবা রিকশাচালক, পাবলিক কিংবা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র; বাম কিংবা ডান আদর্শের অনুসারী; সব মত ও পথের রাজনৈতিক কিংবা অরাজনৈতিক ব্যক্তি হতাহতের পরিচয় যাই হোক না কেন, প্রতিটি প্রাণের মূল্য ও রক্তের মর্যাদা সমান। আর তাই সমান গুরুত্বের সঙ্গেই প্রণয়ন করতে হবে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের তালিকা। নিশ্চিত করতে হবে সুবিচার। শেখ হাসিনার পদত্যাগের জন্য যে জাতীয় ঐক্য আমরা দেখতে পাই, তা কিন্তু হঠাৎ করে গড়ে ওঠেনি। এটি মূলত অবৈধ সরকারের অত্যাচার-অবিচার, দুর্নীতি-দুঃশাসন, বঞ্চনা-অবজ্ঞা এবং শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানুষের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।
তিনি বলেন, দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে গণঅভ্যুত্থানে সর্বশক্তি দিয়ে রাজপথে নেমে আসে বিএনপি এবং এর সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন। যাতে গণআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে। আন্দোলনের কৃতিত্ব নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল নয়, বিএনপির উদ্দেশ্য ছিল সর্বস্তরের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের অংশগ্রহণে গণঅভ্যুত্থানে সাংগঠনিকভাবে সর্বোচ্চ ভূমিকা রেখে ফ্যাসিবাদের পতনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। আর তাই বিএনপির যে ৬০ লাখ সদস্যের নামে ফ্যাসিবাদের সময় মিথ্যা মামলা হয়েছে, তার সুবিশাল অংশ সাধারণ মানুষের পাশে থেকে, রাষ্ট্রযন্ত্রের যড়যন্ত্র ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে ঢাল হয়ে রুখে দাঁড়ায়। ফলে যার-যার অবস্থান থেকে জনগণের কাতারে নেমে আসে বিএনপি ও সমমনা সব রাজনৈতিক দল, তথা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তিসমূহ।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১৬ জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে নির্মমভাবে হত্যা করে পুলিশ। একই দিন চট্টগ্রামে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক ওয়াসিম আকরামকেও হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডগুলোতে সমগ্র বাংলাদেশ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে, বেগবান হয় আন্দোলন।
বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে ১৬ বছর ধরে আওযামী লীগের বিচারবহির্ভূত হত্যা, গায়েবি মামলা ও নৃশংস নিপীড়ন দেশের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এর ফলস্বরূপ জাতিসংঘসহ স্বীকৃত মানবাধিকার সংস্থা ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে একের পর এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হতে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা নীতির মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে চাপ বাড়ায়। তৃণমূলের স্পন্দন ও গণমানুষের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে, অবিরাম জুলুম-অবিচারের মাঝেও বিএনপির নেতা-কর্মীরা মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য অবিচল সংগ্রাম চালিয়ে যেতে থাকে। সেই অভীষ্ট লক্ষ্যে, রাজনৈতিক নেতৃত্বের অবদানে গড়ে ওঠা দীর্ঘদিনের ঐক্যকে ধারণ করে গণতন্ত্রের পক্ষের সব শক্তির বলিষ্ঠ ভূমিকায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটে।
‘বাংলাদেশের জনগণের এ বিজয় শুধুই দেশের মালিকানা ফিরে পাওয়ার বিষয় নয়। বরং এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার প্রতিশ্রুতি, যা অসীম ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত। ’
তিনি বলেন, বিজয়ের পেছনে রয়েছে অসংখ্য নির্যাতিত মানুষের বেদনার অপ্রকাশিত ইতিহাস, গুম হওয়া ছেলের ফেরার প্রতীক্ষায় ব্যথাতুর মায়ের ডাক, স্বামী হারানো বেদনাবিধূর স্ত্রীর অনন্ত আর্তনাদ, পঙ্গু বাবার জন্য সন্তানের হৃদয়বিদারক হাহাকার, আর কারাগারে বন্দী ভাইয়ের জন্য বোনের নীরব প্রার্থনা। তাদের সবার ১৬ বছরের রক্ত, শ্রম ও অশ্রু দিয়ে প্রতিটি পরিবারের ক্ষোভ, ক্রোধ ও অব্যক্ত বিস্ফোরণ বুকে ধারণ করে চলমান ছিল শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই। বস্তুত ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানে শহীদ ৪২২ জন, ২০২৩ সাল পর্যন্ত শহীদ এক হাজার ৫৫১ জন, গুম ৪২৩ জন (সব রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ মিলিয়ে প্রায় ৭০০ জন), আসামি ৬০ লাখ, এবং মামলা দেড় লাখ—এসব কেবল বিএনপির ত্যাগের পরিসংখ্যানই নয়, বরং বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনের পথে দলটির অবিচল সংগ্রাম ও অবদানের প্রতিফলন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে যুক্ত ছিল, গণতান্ত্রিক প্রতিটি ব্যক্তি, দল, সংগঠন ও গোষ্ঠী- তাদের সবার আত্মত্যাগের যথাযথ স্বীকৃতি না দিলে তা হবে ইতিহাসের প্রতি অবিচার। সব শ্রেণি-পেশা-মতের মানুষের অংশগ্রহণকে সম্মান জানিয়ে জনগণের লুণ্ঠিত ভোটাধিকার ফিরিয়ে এনে একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাই আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। সেই পথযাত্রায় ও রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়ন করে গড়ে তুলতে হবে একটি নিরাপদ ও মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ, যেখানে প্রতিফলন ঘটবে জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশার।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
কুমিল্লার লাকসামে ১৫শ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে। ৩০ মার্চ বৃহস্পতিবার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে আনুষ্ঠানিকভাবে সার ও বীজ বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. ইউনুছ ভুঁইয়া।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ শাহিনুর ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শওকত আলী, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুবেল মিয়া, সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন, উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আলী আহমদ প্রমুখ।
উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকার ১৫০০ কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে ৫ কেজি উচ্চ ফলনশীল আউশ ধান বীজ, ১০ কেজি ডিএপি সার ও ১০ কেজি এমওপি সার দেওয়া হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ শাহিনুর ইসলাম জানান, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে খরিপ-১/২০২৩-২৪ মৌসুমে উফশী আউশ ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক-কৃষাণীর মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়। ‘এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে’ প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের বীজ ও সার দেওয়ার পাশাপাশি মাঠপর্যায়ে তদারকি ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। উপজেলার ১৫শ কৃষককে ১০ জনের গ্রুপ করে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, উপকারভোগী ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক-কৃষাণীর মাঝে রয়েছে উপজেলার বাকই দক্ষিণ ইউনিয়নের ২৩০ জন, মুদাফরগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের ৮০ জন, কান্দিরপাড় ইউনিয়নের ৩০০ জন, গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ১০ জন, উত্তরদা ইউনিয়নের ৮০ জন, আজগরা ইউনিয়নের ২৮০ জন, লাকসাম পূর্ব ইউনিয়নের ২৯০ জন ও পৌরসভা এলাকার ২৩০ জন।
অনলাইন ডেস্ক :
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, দেশের বিভিন্ন জেলার চলমান আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার সম্মিলিতভাবে সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করছে। সবার সহায়তায় দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে দুর্গম এলাকাগুলো হতে মানুষকে উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে।
আজ ২৩ আগস্ট শুক্রবার হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘ভারতের উজান থেকে সতর্কতা ছাড়া পানি ছাড়া নিয়ে কথা বলা হবে।
উজান থেকে আসা পলির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। অবৈধভাবে ড্রেজিংকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বন্যা নিয়ন্ত্রণে সব বেড়িবাঁধ যথাসময়ে মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ সব কাজে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্ত করার জন্য তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করেন।
পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা বন্যা পরিস্থিতি, ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের অবস্থা এবং পুনর্বাসন কার্যক্রমের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত হন। এ সময় স্থানীয় প্রশাসন, জেলার কর্মকর্তাবৃন্দ, সাংবাদিক, সর্বস্তরের জনগণ উপস্থিত ছিল।
এর আগে হবিগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতি বিষয়ে হবিগঞ্জ সার্কিট হাউসে স্থানীয় প্রশাসন, গণমাধ্যম ও সুধীসমাজের সঙ্গে মতবিনিময় করেন উপদেষ্টা। এ সময় তিনি আশ্রয়কেন্দ্রে আগত মানুষের সেবায় সরকারের পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করায় আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
নদীভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনের পর পানিসম্পদ উপদেষ্টা চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে পরিবেশ অধিদপ্তর, বন অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।