অনলাইন ডেস্ক :
ভূমি নিয়ে বিরোধ মীমাংসায় ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনালের বিচারক হবেন জেলা জজরা। পাশাপাশি প্রয়োজন মনে করলে সিনিয়র সহকারী জজ বা সহকারী জজদেরও সরকার ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে নিস্পত্তির জন্য বিচারক হিসেবে নিয়োগ করতে পারবে। এমন বিধান যুক্ত করে ১৯৫০ সালের স্টেট অ্যাকুইজেশন অ্যান্ড ট্যানেন্সি অ্যাক্ট (রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ত্ব আইন) সংশোধনরে প্রস্তাব উঠেছে সংসদে। বুধবার সংসদের বৈঠকে এ সংক্রান্ত ‘স্টেট অ্যাকুইজেশন অ্যান্ড ট্যানেন্সি (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০২৩’ বিলটি উত্থাপন করেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। পরে বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
নতুন এই সংশোধনী পাস হলে ভূমি জরিপ সংক্রান্ত মামলা নিস্পত্তির দীর্ঘসূত্রিতা কাটবে বলে মন্ত্রী আশা প্রকাশ করছেন।
বিদ্যমান আইনে বলা আছে, ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনালের বিচারক হবেন যুগ্ম জেলা জজেরা। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে আলোচনা করে সরকার এই বিচারক নিয়োগ দেবে। এই বিধানের সঙ্গে নতুন ধারা যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, এভাবে বিচারক নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত সরকার যুগ্ম জেলা জজদের ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনালের বিচার কাজের ক্ষমতা দিতে পারবে। এছাড়া ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনাল থেকে স্থানান্তর করা মামলা নিস্পত্তির জন্য এক বা একাধিক সিনিয়র সহকারী জজ বা সহকারী জজকে ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে সরকার নিয়োগ দিতে পারবে।
বিদ্যমান আইনে বলা আছে, ভূমি জরিপ আপিল ট্রাইব্যুনালের বিচারক হবেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক অথবা সাবেক বিচারক। কিন্তু দীর্ঘদিনেও এই আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়নি।
আইনের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘২০০৪ সালে আইন সংশোধন করে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল ও ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠনের বিধান করা হয়। ওই বিধানে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শক্রমে জেলার যুগ্ম জেলা জজদের মধ্য থেকে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবং সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক অথবা সাবেক বিচারকদের মধ্য থেকে ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনালে বিচারক নিয়োগের বিধান করা হয়। পরবর্তীতে মামলার সংখ্যার তুলনায় ট্রাইব্যুনাল কম হওয়ায় মামলা নিস্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রিতা এবং হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক নিয়োগে সমস্যার কারণে ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠন না হওয়ায় জনগণের বিচার প্রাপ্তি বিঘ্নিত হয়। মামলা নিস্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রিতা দূরীকরণ এবং যথাসময়ে জনগণের বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতমাত নিয়ে আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
পারিবারিক আদালত বিল
পারিবারিক আদালত আইনের অধীনে বিচারিক আদালতে হওয়া মামলার রায়ের বিরুদ্ধে জেলা জজ মর্যাদার অন্যান্য আদালতেও আপিল করা যাবে। এছাড়া পারিবারিক আদালতের মামলার কোর্ট ফি ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০০ টাকার প্রস্তাব করে সংসদে একটি বিল উঠেছে। ‘পারিবারিক আদালত বিল, ২০২৩’ শিরোনামে বিলটি উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। পরে বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।
গত বছরের ৩ জুলাই বিলটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পায়। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল হওয়ায় ফ্যামিলি কোর্টস অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৫ বাতিল করে বাংলায় নতুন আইন করতে বিলটি আনা হয়েছে।
আগের আইনে বিচারিক আদালতে হওয়া এ সংক্রান্ত মামলার আপিল শুধু জেলা জজের আদালতে করার সুযোগ ছিল। এতে জেলা জজের ওপর মামলা শুনানির চাপ বাড়ছিল। মামলার চাপ কমাতেই আইনে এই সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, জেলা পর্যায়ে আরও জজ আছেন, নারী-শিশু বা শ্রম আদালত। সরকার গেজেট জারি করে কোনো জেলাতে আপিলের জন্য অতিরিক্ত মামলা আছে, সেক্ষেত্রে জেলা জজ পর্যায়ের অন্যান্য যে জজরা রয়েছেন, তাদেরও আপিল আদালত হিসেবে বিবেচনা করা যাবে।
উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছে, এই আদালতে মামলার কোর্ট ফি বর্তমানে ৫০ টাকা রয়েছে। সেটা বাড়িয়ে ২০০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে দাম্পত্য কলহ, তালাক, বিয়ে এবং শিশুদের ভরণপোষণের বিষয়গুলো রয়েছে।
এটুআই নামে নতুন সংস্থা করতে সংসদে বিল
পাবলিক সার্ভিসের ডিজিটাল রূপান্তর নিশ্চিত করা এবং নাগরিকের জীবনমানে সৃষ্ট সেবা অধিকতর কার্যকর ও টেকসই করার জন্য এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই) নামে একটি নতুন সংস্থা করা হচ্ছে। এজন্য এজেন্সি টু ইনোভেট বিল ২০২৩ জাতীয় সংসদে তোলা হয়েছে। মূলত বর্তমান ‘এসপায়ার টু ইনোভেট’এর প্রতিস্থাপক হিসেবে স্থায়ী কাঠামো হবে ‘এজেন্সি টু ইনোভেট’। বুধবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বিলটি সংসদে তোলেন।
বিলে বলা হয়েছে, এই আইন কার্যকর হওয়ার পর সরকার গেজেট প্রজ্ঞাপন দিয়ে এটুআই নামে একটি এজেন্সি প্রতিষ্ঠা করবে। এজেন্সি হবে একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা। এই সংস্থার ১৫ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী/উপমন্ত্রী হবেন এর সভাপতি।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “ডিজিটাল প্রযুক্তিভিত্তিক সেবার উদ্ভাবন ও উন্নয়ন, উদ্ভাবনী সংস্কৃতির বিকাশ, পাবলিক সার্ভিসের ইনক্লুসিভ ডিজিটাইজেশন ত্বরান্বিতকরণ, জ্ঞানভিত্তিক সুখী ও সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠা, জনগণের দোরগোড়ায় বিভিন্ন ডিজিটাল পরিষেবা প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালযে়র অধীন ‘একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ প্রকল্প এবং বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন ‘এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই)’ প্রকল্প নামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও দপ্তর/সংস্থাকে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সেবা প্রদানসহ ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন, ই-নথি, ডি-নথি, শিক্ষক বাতায়ন ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, জাতীয় তথ্য বাতায়ন, জাতীয় কলসেন্টার- ৩৩৩ ইত্যাদির মাধ্যমে স্বল্প সমযে় ও স্বল্প ব্যযে় উন্নত সেবা প্রদানে ‘এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই)’ মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে। পাবলিক সার্ভিসের ডিজিটাল রূপান্তর নিশ্চিতকরণ এবং নাগরিকের জীবনমানে সৃষ্ট সেবা অধিকতর কার্যকর ও টেকসই করার জন্য ‘এসপায়ার টু ইনোভেট’র প্রতিস্থাপকরূপে স্থায়ী কাঠামো হিসেবে ‘এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই)’ নামে একটি এজেন্সি প্রতিষ্ঠা করা এই আইনের অন্যতম উদ্দেশ্য।”
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নকে প্রকারান্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লালিত স্বপ্ন ‘সোনার বাংলা’র পুনর্জাগরণ বলা যেতে পারে। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই) আইন-২০২৩ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”
চলারপথে রিপোর্ট :
খাবারে ক্ষতিকর রঙ ব্যবহার, পোকায় ধরা বেগুন দিয়ে বেগুনি তৈরি এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্না করায় বন্দর নগরী চট্টগ্রামের চকবাজারের অভিজাত চেইন হোটেল কাচ্চি ডাইনকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ সময় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্না করায় একই এলাকায় হোটেল জামানকেও জরিমানা করা হয়।
আজ ১০ এপ্রিল সোমবার দুপুরের দিকে অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাসরিন আক্তার ও মো. আনিছুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে অভিজাত এই দুই হোটেলকে জরিমানা করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্না করার পাশাপাশি খাবার তৈরির সময় ক্ষতিকর রঙ ব্যবহার করছিল কাচ্চি ডাইন। এমনকি পোকাধরা বেগুন দিয়ে বেগুনি তৈরি করা হচ্ছিল হোটেলটিতে। তাই কাচ্চি ডাইনকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্না করায় জামান হোটেলকেও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।’
ভোক্তা অধিকার নিশ্চিতে যে অভিযান চালানো হচ্ছে তা অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে তিনি জানান, ভবিষ্যতে যাতে পরিচ্ছন্ন পরিবেশে রান্না ও খাবার পরিবেশন করা হয় সেই বিষয়ে প্রতিষ্ঠান দুটিকে সতর্ক করা হয়েছে। ভোক্তাদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয় এমন যে কোনো অপরাধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল দেশি মুরগির সঙ্গে সোনালি মুরগি মিশিয়ে বিক্রি ও সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে চিনির মূল্য বেশি রাখায় নগরের খুলশীতে অভিজাত সুপার শপ স্বপ্ন’কে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছিল ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
চলারপথে রিপোর্ট :
লক্ষ্মীপুরে বিয়ের দাওয়াতে দই টক হওয়াকে কেন্দ্র করে কনে পক্ষের আমন্ত্রিত অতিথিদের হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। আজ ১৭ মে বুধবার দুপুরে সদর উপজেলার পৌর শহরের বাঞ্চানগর এলাকায় কুটুমবাড়ি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ও পার্টি সেন্টারে এমন ঘটনা ঘটে।
বাধা দিতে এসে হামলার শিকার হন কুটুমবাড়ি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ও পার্টি সেন্টারের সত্তাধিকারী রাকিবুজ্জামান রাকিব, সোহেল, পরান, মাজেদ, শাহাদাত, ইউনুস ও রাসেলসহ ২০ জন। পরে অন্যরা এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর করার অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ ও বিয়েতে আমন্ত্রিত অতিথিরা জানান, সদর উপজেলার শাহ্পুর এলাকার খোকন মিয়ার মেয়ে বৃষ্টির সঙ্গে একই উপজেলার মহাদেবপুর গ্রামের জাফর চৌধুরীর ছেলে আল আমিনের বিয়ে উপলক্ষে দুপুরে কুটুমবাড়ি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ও পার্টি সেন্টারে দু’পক্ষের মধ্যাহ্নভোজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। বিয়ে শেষ হলে খাওয়ার পর্বে দই টক হয়েছে বলে কনে পক্ষের অতিথিরা অভিযোগ তোলেন। এ সময় উত্তেজিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রতিষ্ঠানটির সত্তাধিকারী রাকিবুজ্জামান রাকিব এগিয়ে এলে কনে পক্ষের লোকজনও উত্তেজিত হয়ে ওঠে। পরে প্রতিষ্ঠানের চেয়ার টেবিলসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। এ সময় অতর্কিত হামলা ও হুড়োহুড়িতে নারী-পুরুষসহ ২০ জন আহত হয়। পরে তাদের বিভিন্ন ক্লিনিক ও সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হামলার পরপরই দ্রুত রেস্টুরেন্ট ছেড়ে যায় কনে ও বর পক্ষের অতিথিরা।
আহত রাকিবুজ্জামান রাকিব জানান, বিয়ের প্রথম পর্ব শেষে খাওয়ার সময় দই টক হয়েছে এমন অভিযোগে উত্তেজিত হয়ে পড়েন লোকজন। এসময় তিনি পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলে কনে পক্ষের লোকজন অতর্কিত হামলা শুরু করে। তাদের হামলায় তিনিসহ প্রতিষ্ঠানের ১৫ থেকে ২০ জন আহত হন। রাকিব জানান, হামলায় তার মাথা ফেটে যায়। হামলাকারিরা সেখানে থাকা কাচের প্লেট ও প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে এ হামলা চালায়। এসময় তার প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র ভাংচুর করা হয়। এ ঘটনায় তিনি থানায় মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে কনের বাবা খোকন ও বর আল আমিন এ ঘটনায় সংবাদ প্রকাশে অনাগ্রহ জানিয়ে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ্ উদ্দিন জানান, লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের কুটুমবাড়ি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ও পার্টি সেন্টারে হামলার ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এমপি বলেছেন, বিএনপির দুঃশাসনের কেয়ারটেকার গভঃমেন্ট ব্যবস্থার প্রর্বতন হয়েছিল।
সুপ্রীম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে জাতীয় সংসদে আইন সংশোধন করে কেয়ারটেকার ব্যবস্থার বিলুপ্ত করা হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী কেয়ারটেয়ার সরকার ফিরে আসার আর কোন সুযোগ নাই। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ীই হবে। বিএনপির সাহেবরা সংবিধান পড়েন না ।
তিনি আজ ১২ ফেব্রুয়ারি রবিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের আধুনিকায়ন কাজের উদ্বোধন শেষে আয়োজিত সূধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এমপি আরো বলেন, বাংলাদেশ কারোর দয়ায় স্বাধীন হয়নি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ সরকারের শামনামলের সবক্ষেত্রেই যে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবই এর উদাহরণ।
অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতের অচলাবস্থার প্রসঙ্গে টেনে বলেন, সকালে বিষয়টির সমাধান হয়েছে। আগামীকাল অথবা মঙ্গলবার থেকে আইনজীবীরা আদালতের কার্যক্রমের ফিরে যাবেন আশা করছি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সদর আসনের সংসদ সদস্য এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের নব-নির্বাচিত সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভূঞা, সংরক্ষিত নারী সাংসদ উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলি আজাদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র মিসেস নায়ার কবির।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন।
এর আগে সকালে প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত সভাপতি রিয়াজউদ্দিন জামি ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লার নেতৃত্বে কার্যকরী কমিটির নব-নির্বাচিত নেতৃবৃন্দ সার্কিট হাউজে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হককে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
অনলাইন ডেস্ক :
বহুল আলোচিত বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করেছেন আপিল বিভাগ।
ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করেছেন আদালত। বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে আর থাকছে না। বিচারপতিদের অপসারণ করা যাবে সুপ্রিম কোর্ট জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে। আজ রোববার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
ফলে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। এখন থেকে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে থাকবে। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
আজ ২০ অক্টোবর রোববার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন। এ রায়ের ফলে দীর্ঘ আট বছর পর নিষ্পত্তি হলো গুরুত্বপূর্ণ এ রিভিউ আপিলের।
বহুল আলোচিত বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন শুনানির দিন গত ১৫ আগস্ট আজকের দিন ধার্য করা হয়। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।
আদালতে রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
এর আগে বেশ কয়েকবার সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন কার্যতালিকায় এলেও শুনানি হয়নি।
গত বছরের ২৩ নভেম্বর বহুল আলোচিত বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ ৬ জন বিচারপতি শুনতে পারবেন বলে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন আপিল বিভাগ।
২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন দাখিল করা হয়।
আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় রাষ্ট্রপক্ষ ৯০৮ পৃষ্ঠার এ রিভিউ আবেদনে ষোড়শ সংশোধনীর পক্ষে ৯৪টি যুক্তি দেখিয়ে আপিল বিভাগের রায় বাতিল চাওয়া হয়েছে।
২০১৭ সালের ৩ জুলাই তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেন। ৮ মে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শুরু হয়। ধারাবাহিকভাবে ১১ দিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
আপিল শুনানিতে আদালতে মতামত উপস্থাপনকারী ১০ অ্যামিকাস কিউরির (আদালতের বন্ধু) মধ্যে শুধু ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর পক্ষে মত দেন।
অপর ৯ অ্যামিকাস কিউরি ড. কামাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আই ফারুকী, আব্দুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ এম হাসান আরিফ ব্যারিস্টার এম. আমিরুল ইসলাম, বিচারপতি টিএইচ খান, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ফিদা এম কামাল, এ জে মোহাম্মদ আলী সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বিপক্ষে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
২০১৬ সালের ১১ আগস্ট সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
২০১৬ সালের ৫ মে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ বলে রায় ঘোষণা করেন।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধানটি তুলে দিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস হয়। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ৯৬ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন এনে বিচারকের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। যেটি ১৯৭২ সালের সংবিধানেও ছিল।
দেশের প্রথম সংবিধানে সংসদের হাতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা রাখা হয়। তবে ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীতে রাষ্ট্রপতিকে এ ক্ষমতা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আবারও পঞ্চম সংশোধনীতে বিচারক অপসারণে নিষ্পত্তির ভার দিতে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হয়। এরপর পঞ্চম থেকে পঞ্চদশ সংশোধনী পর্যন্ত বিচারপতি অপসারণ নিয়ে আর নতুন কোনো সংশোধনী আসেনি। তবে ২০১৪ সালে ষোড়শ সংশোধনীতে বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয় জাতীয় সংসদ। তৎকালীন প্রধান বিচারপতির এস কে সিনহার তৎপরতায় হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করা হয়। পরে আওয়ামী লীগ সরকার এর রিভিউতে যায়।
চলারপথে ডেস্ক :
পদত্যাগ করা বিএনপির সংরক্ষিত নারী এমপি রুমিন ফারহানার আসনের উপনির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনুর স্ত্রী ও দলের সহ-সভাপতি আফরোজা হক। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের মনোনীত প্রার্থী তিনি। এই পদে অন্য কোনো প্রার্থী না থাকায় বাছাইয়ের পর তাঁকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ইসির যুগ্ম সচিব আবদুল বাতেনের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন আফরোজা হক। এ সময় জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতারের নেতৃত্বে দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ইসি ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী, আজই ছিল সংরক্ষি আসনের এ উপনির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। মনোনয়নপত্র বাছাই আগামী ২ মার্চ। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৬ মার্চ।
এর আগে বিএনপির সাত সংসদ সদস্যের পদত্যাগের পর শূন্য আসনের মধ্যে ছয়টির উপনির্বাচন গত ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ তিনটি, মতাসীন জোটের শরিক জাসদ একটি, জাতীয় পার্টি একটি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী একটি আসনে জয় লাভ করে।
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে প্রতি ছয়টি সাধারণ আসনের বিপরীতে একটি সংরক্ষিত আসন পাওয়ার কথা রয়েছে। তবে একাদশ সংসদে জাসদের তিনজন সংসদ সদস্য থাকলেও জাসদ একটি সংরতি আসন পেয়েছে।
বর্তমানে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত একটি আসনই ফাঁকা আছে। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, শূন্য হওয়া সংরতি আসনটিতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জাসদের প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ার সমঝোতা হয়েছে।
এদিকে আফরোজা হক নির্বাচিত হলে জাতীয় সংসদে দম্পতি সংসদ সদস্যের সংখ্যা হবে তিন। অন্য দুই দম্পতি হলেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও তাঁর স্ত্রী লুৎফুন্নেসা খান এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের ও তাঁর স্ত্রী শরিফা কাদের।
একাদশ সংসদে আরেক দম্পতি ছিলেন কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল এবং তাঁর স্ত্রী সেলিনা ইসলাম। তবে কুয়েতের আদালতে দণ্ডিত হয়ে সংসদ সদস্য পদ হারান পাপুল। তবে তাঁর স্ত্রী সেলিনা ইসলাম এখনো সংসদ সদস্য রয়েছেন।