ভুল চিকিৎসায় গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ

জাতীয়, 8 June 2023, 1125 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় এক গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

banner

৭ জুন বুধবার বিকেল ৫টার দিকে জেলা শহরের কুমারশীল মোড়ে নবজাতক শিশু ও জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া পারুল বেগম (৫০) কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের বিষ্ণাউড়ি গ্রামের কাইয়ূম মোল্লার স্ত্রী।

পারুলের জামাতা আমির হোসেন জীবন অভিযোগ করে বলেন, গত ৫ জুন সড়ক দুর্ঘটনায় আমার শাশুড়ির হাত ভেঙে যায়। প্রথমে তাকে কসবায় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে একজনের মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রব্বানী নামের একজনের কাছে আসি। রব্বানী আমাদের নবজাতক শিশু ও জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে আসেন। সেখানে আমি রব্বানীকে জিজ্ঞাসা করলাম, এখানে কেন আনলেন? এটা তো শিশু হাসপাতাল লেখা। উত্তরে রব্বানী জানান, এই হাসপাতালে রফিকুল ইসলাম নামে একজন ভালো অর্থোপেডিক চিকিৎসক আছেন। পরে সেখানে শাশুড়িকে ভর্তি করাই। তারপর বিভিন্ন পরীক্ষা করানো হয়।

তিনি বলেন, বুধবার দুপুরের পর আমার শাশুড়িকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। সেখানে অর্থোপেডিক সার্জন রফিকুল ইসলাম ও অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক পীযূষ সাহা তার অপারেশন শুরু করেন। এর কিছুক্ষণ পর ভেতর থেকে এসে জানানো হয়, আমার শাশুড়ির জ্ঞান ফিরছে না। পাশের আরেক হাসপাতালের আইসিইউতে নিয়ে যেতে হবে বলে জানায়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরপরই পরীক্ষা করে চিকিৎসক জানান, আমার শাশুড়ি আগেই মারা গেছেন।

আমির হোসেন আরো বলেন, অপারেশন থিয়েটারে ঢুকানোর আগে আমার শাশুড়ির হার্টসহ সব পরীক্ষার রিপোর্ট ভালো এসেছিল। তাহলে কেন তিনি মারা গেছেন? এর জন্য চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়ী। তাদের ভুল চিকিৎসার তিনি মারা গেছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত অভিযুক্ত চিকিৎসক রফিকুল ইসলামের ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি। অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক পীযূষ সাহার মোবাইলফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইমন হক বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার পর রোগীর আর জ্ঞান ফেরেনি।

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ১ নম্বর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক শেহাবুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ওই হাসপাতাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে আনা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নেবে। আর নবজাতক হাসপাতালের সবাই পালিয়ে গেছে।

Leave a Reply

জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াতের আমির…

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান Read more

বাঞ্ছারামপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি

চলারপথে রিপোর্ট : ৬ দফা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য Read more

সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেফতার

অনলাইন ডেস্ক : সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল Read more

রাইস কুকারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-মেয়ের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক : মাগুরার সদর উপজেলার টিলা গ্রামে রাইস কুকারে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

চলারপথে রিপোর্ট : সরকারি মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় Read more

নাসিরনগরে মৎস্য আড়তে অভিযান, নিষিদ্ধ পিরানহা…

চলারপথে রিপোর্ট : বিক্রির জন্য রাখা নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ জব্দ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন চাঁদাবাজ গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাটিহাতা (বিশ্বরোড) গোলচত্বর নামক এলাকায় চাঁদাবাজির Read more

সড়ক মেরামতের সপ্তাহ না পেরোতেই উঠে…

চলারপথে রিপোর্ট : সড়ক মেরামতের এক সপ্তাহ না পেরোতেই ইতিমধ্যে Read more

কসবায় গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : আজ ২৪ জুন মঙ্গলবার সকালে এস আই Read more

শাস্তি পেলেন ঋষভ পন্ত

অনলাইন ডেস্ক : আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট Read more

বাংলাদেশে গুগল পে এর উদ্বোধনী

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড. আহসান এইচ মনসুর Read more

যে কাজে নেক আমল নষ্ট হয়

ইসলাম ডেস্ক : মানুষের জীবনের সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতিকারক দিক হলো Read more

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

জাতীয়, 27 August 2024, 485 Views,

সেই প্রেম-মানবতা ও বিদ্রোহের কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৭৬ সালের আজকের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (তৎকালীন পিজি হাসপাতাল) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

banner

‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর! তোরা সব জয়ধ্বনি কর!! ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কাল্- বোশেখীর ঝড়।’ প্রলয়োল্লাস কবিতায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এভাবেই পরাধীন দেশের স্বাধীনতা অর্জন ও শোষিত মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে বিপ্লবকে স্বাগত জানিয়েছিলেন।

নজরুলের কাব্যে দ্রোহের সঙ্গে ছিল প্রেমের বার্তা। তিনি লিখেছিলেন, ‘মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণতূর্য’। সংগীতেও সৃষ্টি করেছিলেন অনন্য একক ধারা। বাংলা গানে প্রয়োগ করেছেন নিত্যনতুন রাগ। তিনি গজল ও শ্যামা সংগীত, উভয়ের সফল রচয়িতা। তাঁর পাণ্ডিত্য ছিল আরবি-ফারসি ভাষায়ও। তিনি ওমর খৈয়াম ও হাফিজের কবিতার দারুণ অনুবাদ রেখে গেছেন।
কবির জীবনকাল ৭৭ বছরের। ১৯৪২ সালে অসুস্থ হয়ে বাক্শক্তি হারানোর আগ পর্যন্ত কাজী নজরুল ইসলাম শিল্প-সাহিত্যকে যা দিয়েছেন, তা বাংলা তথা বিশ্বসাহিত্যের অমূল্য সম্পদ হয়ে আছে। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, প্রাবন্ধিক, গল্পকার, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, রাজনীতিক ও সৈনিক। তাঁর ‘অগ্নিবীণা’, ‘বিষের বাঁশী’, ‘চক্রবাক’, ‘সঞ্চিতা’, ‘প্রলয়-শিখা’, ‘মরু-ভাস্কর’, ‘দোলন-চাঁপা’, ‘ভাঙার গান’, ‘সাম্যবাদী, ‘পুবের হাওয়া’, ‘ব্যথার দান’, ‘রিক্তের বেদন’, ‘বাঁধন-হারা’, ‘মৃত্যুক্ষুধা’, ‘কুহেলিকা’ অমর কীর্তি।

১৯৭২ সালের ২৪ মে স্বাধীন বাংলাদেশে নজরুলকে সপরিবারে ঢাকায় আনা হয়। দেওয়া হয় জাতীয় কবির মর্যাদা। ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক ডি-লিট উপাধিতে ভূষিত করে তাঁকে। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ সরকার কবিকে নাগরিকত্ব দেয়। একই বছর ২১ ফেব্রুয়ারি একুশে পদকে ভূষিত করা হয় তাঁকে।

কবির জন্ম ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জৈষ্ঠ (১৮৯৯ সালের ২৪ মে) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে। ১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্র (১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট) ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (তৎকালীন পিজি হাসপাতাল) তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

ডিজিটাল ডিভাইস আমাদের সামনে নতুন দ্বার উন্মোচন করছে: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 3 August 2023, 995 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
‘স্মার্ট বাংলাদেশ টাস্ক ফোর্স’কে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রযুক্তি ছড়িয়ে দিতে কাজ করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ডিজিটাল ডিভাইস নতুন সুযোগের দ্বার উন্মোচন করছে। এর সুফল পেতে দেশে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে হবে।

banner

আজ ৩ আগস্ট বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ টাস্ক ফোর্স’-এর প্রথম বৈঠকে তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল ডিভাইস আমাদের সামনে নতুন দ্বার উন্মোচন করছে এবং সেজন্য আমাদের উপযুক্ত দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে।’

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, তারা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলছেন তার জন্য দেশের নাগরিকদের প্রস্তুত থাকতে হবে, যেখানে সকল মানুষ ডিজিটাল ডিভাইস এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করতে জানবে। খবর বাসসের

প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে দেশের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি যথাযথ পরিকল্পনার ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘আমাদের উচিত মানুষের সৃজনশীলতা, তাদের চিন্তাভাবনা এবং এগিয়ে যাওয়ার ধারণার বিকাশের সুযোগ তৈরি করা। আমাদের উচিত শিক্ষাসহ সব খাতে এগুলো ব্যবহার করা।’

নতুন প্রজন্মকে স্মার্ট বাংলাদেশের উপযোগী করে গড়ে তোলার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য নতুন প্রজন্মকে শিক্ষা ও প্রযুক্তি দিয়ে গড়ে তুলতে হবে।

দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা স্মার্ট বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল ডিভাইস, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন। স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের জন্য আমাদের এখন থেকেই প্রস্তুত হতে হবে এবং ধাপে ধাপে কী করতে হবে সে বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের জনশক্তি আমাদের বড় শক্তি, এবং সেই অনুযায়ী আমাদের জনশক্তি প্রস্তুত করতে হবে।’

তিনি বিভিন্ন দেশের ভাষা শেখা, শিক্ষার মান বৃদ্ধি এবং বিষয়ভিত্তিক অধ্যয়নের পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়নের ওপরও জোর দেন। তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশে কোনো দারিদ্র্য থাকবে না, যেখানে মানুষ উন্নত ও সমৃদ্ধ জীবনযাপন করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশে উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশ ঘটিয়ে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করাই আমাদের লক্ষ্য।’

দেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা ১৯৯৬ সালে যখন ক্ষমতা গ্রহণ করি, তখন সারা বিশ্বে ইন্টারনেট এবং কম্পিউটার ব্যবহার করা হচ্ছিল, কিন্তু আমরা তাদের পেছনে ছিলাম। এতেই বোঝা যায় যে আমরা কতটা পিছিয়ে ছিলাম তখন।’

এরপর তিনি বলেন, ‘সেই জায়গা থেকে, আমরা আজ এত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছি এবং এখন অনেক উন্নত দেশও আমাদের চেয়ে পিছিয়ে আছে।’

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা এক মাস পেছাচ্ছে

জাতীয়, 12 April 2023, 1406 Views,
ফাইল ছবি

চলারপথে ডেস্ক :
দেশের শিক্ষাবোর্ডগুলোর পরিকল্পনা ছিল আগামী জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে ২০২৩ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু করার। তবে বেশিরভাগ কলেজ ও মাদ্রাসায় সিলেবাস শেষ না হওয়ায় এ পরীক্ষা এক মাস পিছিয়ে যাচ্ছে। এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা আগামী আগস্টে নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটি। শীগ্রই শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানা গেছে।

banner

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটি সূত্রে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের মার্চ থেকে টানা প্রায় দেড় বছর দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় সশরীরে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া বন্ধ ছিল। সে কারণে এলোমেলো হয়ে যায় শিক্ষাপঞ্জি, যা এখনো স্বাভাবিক হয়নি। স্বাভাবিক সময়ে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হতো ফেব্রুয়ারিতে। আর এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হতো এপ্রিলে। গত বছর ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু হয় গত বছরের মার্চ থেকে। তারাই এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় বসবেন।

এবার পুনর্বিন্যাস করা পাঠ্যসূচিতে পরীক্ষা হলেও প্রশ্নপত্রের ধরন হবে আগের মতোই। করোনার সময় যেমন বেশি প্রশ্নপত্র থেকে কম প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছিল, এবার সেই সুবিধা নেই। মূলত এসব কারণেই জুলাইয়ে এ বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা থেকে সরে এল শিক্ষা বোর্ডগুলো।

বিভীষিকার সেই কালরাত আজ

জাতীয়, 24 March 2023, 1468 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
সময় থমকে গিয়েছিল এ বাংলার বুকে। তার পাতায় পড়েছিল কালিমার ছাপ। আর পৃথিবী নীরব চোখে দেখেছিল এক নারকীয় হত্যাযজ্ঞ।

banner

মেশিনগানের গুলিতে মারা হয়েছিল নিরস্ত্র বাঙালিদের। বাদ যায়নি বৃদ্ধ-বয়স্ক-জোয়ান-কিশোর-শিশু কেউ। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল ঘরবাড়ি। আজ সেই বিভীষকার ২৫ মার্চের কালরাত।

পাকিস্তানি সামরিক জান্তার আগ্রাসনে বাংলার বুকে নেমে এসেছিল মৃত্যুর কালো আঁধার। স্বাধীনতাকামী বাঙালির ওপর বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী হিংস্র হায়েনার মতো হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল।

পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী পূর্ণ সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে ১৯৭১ সালের এদিন রাত ১০টা অতিক্রম করার সঙ্গে সঙ্গে শুরু করে দেশব্যাপী পৃথিবীর ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংসলীলা। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে পরিচিত ছিল এ হত্যা-অভিযান। শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ এড়িয়ে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া বাঙালি হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়নের পথেই এগিয়েছিলেন। অত্যাচার, উৎপীড়ন, পাশবিকতা, নৃশংসতা আর হিংস্রতার কালো থাবায় মৃত্যুর নগরীতে পরিণত করেছিলেন ঢাকা শহরকে।

বর্বর হত্যাযজ্ঞের এ দিনটি ‘গণহত্যা দিবস’ হিসাবে বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে। দিনটিকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসাবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের কাজ চলছে।

১৯৭১ সালের এ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদাররা রাজারবাগ পুলিশলাইন, পিলখানা ইপিআর সদর দপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা ঢাকা শহরে চালায় হত্যাযজ্ঞ এবং অগ্নিসংযোগ। এ রাতেই গ্রেফতার করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি দেশকে শুত্রুমুক্ত করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান। এ রাতের বেদনাদায়ক ঘটনা সমগ্র জাতিকে শিহরিত করে। হত্যা করে সেদিন মুক্তিকামী মানুষের কণ্ঠ স্তব্ধ করা যায়নি। ভয়াবহ সেই হত্যাযজ্ঞ বাঙালিকে মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে প্রণোদনা জোগায়।

প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১৯৭১ সালের এদিন সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে সরাসরি এয়ারপোর্ট চলে যান। নিরপরাধ বাঙালিদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়ে রাত পৌনে ৮টায় তিনি গোপনে বিমানে ঢাকা ত্যাগ করেন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এ রাতে শহরে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে।

রাত ১টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে পরিকল্পনা অনুযায়ী ২২তম বেলুচ রেজিমেন্টের সৈন্যরা পিলখানা ইপিআর হেডকোয়ার্টারে আক্রমণ চালায়। কেন্দ্রীয় কোয়ার্টারে ১৮ জন বাঙালি গার্ড থাকলেও তারা পালটা আক্রমণের সুযোগ পাননি। পিলখানা আক্রমণের পাশাপাশি রাজারবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাঁখারি বাজারসহ সমগ্র ঢাকাতেই শুরু হয় প্রচণ্ড আক্রমণ। বিভিন্ন এলাকাতে যথেচ্ছ হত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ করে বর্বর হানাদার বাহিনী।

মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকে ট্যাংক ও সেনা বোঝাই লরি। ইকবাল হল (বর্তমানে জহুরুল হক হল), জগন্নাথ হলে মধ্যযুগীয় কায়দায় চলে পাকিস্তানি হানাদারদের বর্বরতা। শহিদ হন কয়েকশ ছাত্রছাত্রী। ড. গোবিন্দচন্দ্র দেব, ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, ড. মনিরুজ্জামানসহ বিভিন্ন বিভাগের নয়জন শিক্ষককে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। হানাদারর চলার পথে রাস্তার দুপাশে গুলি ছুড়ে মারে অসংখ্য নিরীহ, গরিব মানুষকে। মেডিকেল কলেজ ও ছাত্রাবাসে গোলার পর গোলা ছুড়ে হত্যা করা হয় অজস্র মানুষকে। রাজারবাগে পুলিশের বাঙালি সদস্যরা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তাদের সামান্য অস্ত্রশস্ত্র দিয়েই।

ট্যাংক আর ভারী মেশিনগানের মুখে এ প্রতিরোধ বেশিক্ষণ টেকেনি। গ্যাসোলিন ছিটিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় পুরো সদর দপ্তর।

২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে মুক্তিসংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। গোপন ওয়্যারলেস বার্তায় তিনি বলেন, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আমাদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। ছাত্র-জনতা-পুলিশ-ইপিআর শত্রুর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রাম শুরু হয়েছে। আমি ঘোষণা করছি, আজ থেকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। সর্বস্তরের নাগরিকদের আমি আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা যে যেখানে যে অবস্থাতেই থাকুন, যার যা আছে তাই নিয়ে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ না করা পর্যন্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। সম্মিলিতভাবে শত্রুর মোকাবিলা করুন। এ হয়তো আপনাদের প্রতি আমার শেষ বাণী হতে পারে। আপনারা শেষ শত্রুটি দেশ থেকে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে যান।

এর আগে সকালে প্রেসিডেন্ট ভবনে ভুট্টো-ইয়াহিয়া এবং ইয়াহিয়া ও পিপলস পার্টির উপদেষ্টাদের মধ্যে আলোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুর কাছে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার ঢাকা ত্যাগের খবর সঙ্গে সঙ্গেই পৌঁছেছিল। রাত ৯টার পর বঙ্গবন্ধু তার বাসভবনে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমরা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছি। কিন্তু জেনারেল ইয়াহিয়া খান সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণের মধ্য দিয়ে সমস্যার সমাধান করতে চাইছেন। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট অখন্ড পাকিস্তানের সমাপ্তি টানতে চলেছেন।

বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার লিখিত বাণী পিলখানায় ইপিআর ব্যারাক ও অন্যান্য স্থান থেকে ওয়্যারলেসের মাধ্যমে সারা দেশে মেসেজ আকারে পাঠানো হয়। এ বার্তা চট্টগ্রাম ইপিআর সদর দপ্তরে পৌঁছায়। চট্টগ্রাম উপকূলে নোঙর করা একটি বিদেশি জাহাজও এ বার্তা গ্রহণ করে। চট্টগ্রামে অবস্থানকারী আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক জহুর আহমেদ চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার বাণী সাইক্লোস্টাইল করে রাতেই শহরবাসীর মধ্যে বিলির ব্যবস্থা করেন।

রাত ১টায় পাকিস্তানি বাহিনীর একটি দল বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের অদূরে শুক্রাবাদে ব্যারিকেডের মুখোমুখি হয়। এখানে প্রতিরোধ ব্যূহ ভেঙে হানাদাররা রাত দেড়টায় বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের সামনে আসে। তারা বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে এলাপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। বঙ্গবন্ধুকে রাত দেড়টায় বন্দি করে শেরেবাংলা নগরের সামরিক বাহিনীর সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে স্থানান্তর করা হয় সেনানিবাসে। সকাল পর্যন্ত আদমজী কলেজের একটি কক্ষে তাকে আটক রাখা হয়।

২৫ মার্চের পরদিন সকালে লুকিয়ে জগন্নাথ হলের হত্যাযজ্ঞের কিছু আলোকচিত্র ও ভিডিও ধারণ করেছিলেন বুয়েটের অধ্যাপক ড. নূরুল উলা। ১৯৭২ সালে বাংলার বাণী পত্রিকার এক বিশেষ সংখ্যায় ‘জগন্নাথ হলের মাঠে’ শীর্ষক লেখায় তিনি লিখেন, ‘২৬ মার্চ সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যবর্তী সময়ে ক্যামেরা চালু করি। জানালা দিয়ে লক্ষ্য করলাম, জগন্নাথ হলের সামনেই মাঠে কিছু ছেলেকে ধরে বাইরে আনা হচ্ছে এবং তাদের লাইনে দাঁড় করানো হচ্ছে। তখনই আমার সন্দেহ হয় এবং আমি ক্যামেরা অন করি। দেখলাম একজন বুড়ো দাড়িওয়ালা লোক রয়েছে। সে বসে পড়ে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইছে। তার দাড়ি দেখিয়ে বোঝাতে চেয়েছিল যে সে মুসলমান। কিন্তু বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী তার কোনো কথাই শুনতে চায়নি। তাকে গুলি করে মারা হলো। মাঠের পূর্ব পাশে পাকিস্তানি বাহিনী একটা তাঁবু বানিয়ে ছাউনি করেছিল। সেখানে দেখছিলাম, ওরা চেয়ারে বসে বেশ কয়েকজন চা খাচ্ছে আর হাসি-তামাশা ও আনন্দ-উল্লাসে ফেটে পড়ছে। যাদের আমার চোখের সামনে মারা হয়েছে ও যাদের মারার ছবি আমার ক্যামেরায় রয়েছে, তাদের দিয়ে প্রথমে হলের ভেতর থেকে মৃতদেহ বের করে আনা হচ্ছিল। মৃতদেহগুলো এনে সব এক জায়গায় জমা করা হচ্ছিল এবং ওদের দিয়ে লেবারের কাজ করানোর পর আবার ওদেরই লাইনে দাঁড় করিয়ে এক সারিতে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমার মনে হয়, প্রায় ৭০-৮০ জনের মৃতদেহ এক জায়গায় জমা করা হয়েছিল।

শহিদ জননী জাহানার ইমামের ‘একাত্তরের দিনগুলি’ গ্রন্থে কালরাত নিয়ে ২৬ মার্চের লেখার এক জায়গায় লিখেছেন, রাজারবাগ পুলিশ লাইনে প্রচন্ড যুদ্ধের পর বাঙালি পুলিশরা বেশিরভাগ প্রাণ দিয়েছে। অল্প কয়েকজন পালাতে পেরেছে। রাজারবাগ পুলিশ লাইন পাকসেনার গুলিতে ঝাঁজরা। পাক আর্মি ‘দ্য পিপল’ অফিস পুড়িয়েছে, পুড়িয়েছে ইত্তেফাক অফিস। ঢাকায় যত বাজার আছে, বস্তি আছে, সব জায়গা আগুনে পুড়ে ছাই-ছাই হয়েছে রায়েরবাজার, ঠাটারি বাজার, নয়াবাজার, শাঁখারি পট্টি।’

৩৪৪ উপজেলায় নির্বাচনের সময় জানালো ইসি

জাতীয়, 14 February 2024, 698 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
সারাদেশের ছয়টি অঞ্চলের ৩৪৪টি উপজেলার নির্বাচন কখন হবে তা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

banner

এক্ষেত্রে চারটি ধাপে ভোটের তালিকা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।

আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি বুধবার নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।

সম্প্রতি ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ হবে ৪ মে, দ্বিতীয় ধাপে ১১ মে, তৃতীয় ধাপে ১৮ মে এবং চতুর্থ ধাপের ভোট হবে ২৫ মে। ইসি ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী, রাজশাহী; রংপুর; খুলনা; বরিশাল; ঢাকা ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে প্রথম ধাপে ১০৮টি, দ্বিতীয় ধাপে ১২১টি, তৃতীয় ধাপে ৭৭টি, ও চতুর্থ ধাপে ৩৮টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপজেলাগুলোর তালিকা পরবর্তীতে করা হবে।

দেশে ৪৯৫টি উপজেলার মধ্য নির্বাচন উপযোগী উপজেলা রয়েছে ৪৫২টি।