চলারপথে রিপোর্ট :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ চট্টগ্রাম বিভাগীয় শান্তি সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের প্রস্তুতিমূলক সভা আজ ১০ জুন শনিবার বিকালে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
স্থানীয় ডাকবাংলো মিলনায়তনে উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মোঃ রায়হান আলী ভূইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য বি.এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম।
উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ভানু চন্দ্র দেবের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান রাফিউদ্দিন আহমেদ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জিতু মিয়া, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ লিয়াকত আব্বাস টিপু, কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগের সদস্য মোঃ নাজিম উদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম জহির, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ আলী আজম, নাসিরনগর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুবিনা আক্তার, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক অরুণ জ্যোতি ভট্রার্চায, উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি নির্মল চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন প্রমুখ।
সভায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় শান্তি সমাবেশ সফল করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
শিক্ষকদের দাবির মুখে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০২৪ সালের ছুটি ১৬ দিন বাড়িয়ে ৭৬ দিন করা হয়েছে। সংশোধিত এ ছুটির তালিকা প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
গত কয়েক দিন আগে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০২৪ সালের ছুটির তালিকা প্রকাশ করা হয়, তাতে ৭৬ দিন ছুটি রাখা হয়েছিল। এর কয়েকদিন পর ৬০ দিন ছুটি রেখে প্রাথমিকের ছুটির তালিকা প্রকাশ করা হয়।
মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছুটির বৈষম্য থাকায় তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে সংশোধিত ছুটির তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়ে আসছিলেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা।
সংশোধিত তালিকায় দেখা যায়, পবিত্র রমজানসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস, দোলযাত্রা, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, ইস্টার সানডে, জুমাতুল বিদা, হরিচাঁদ ঠাকুরের আবির্ভাব, শবে কদর, ঈদুল ফিতর, বৈষবি, চৈত্র সংক্রান্তি বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ১১ মার্চ থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত ২৯ দিন বন্ধ থাকবে। আগে যা ছিল ২১ দিন।
গ্রীষ্মকালীন অবকাশ ও ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১৩ থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত ১৪ দিন, আগে যা ছিল ৭ দিন।
দুর্গাপূজা, ফাতেহা ইয়াজদাহম, লক্ষ্মীপূজা ও প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে ৯ থেকে ১৭ অক্টোবর ৭ দিন, আগে যা ছিল ৫ দিন।
শীতকালীন অবকাশ ও যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন (বড় দিন) উপলক্ষে ১২ থেকে ২৬ ডিসেম্বর ১১ দিন, আগে যা ছিল ১০ দিন।
নতুন তালিকা অনুযায়ী, শুক্রবার ও শনিবার ছাড়া মোট ৭৬ দিন বন্ধ থাকবে প্রাথমিক বিদ্যালয়।
চাঁদ দেখার ওপর ধর্মীয় উৎসবের ছুটি নির্ভর করবে। জাতীয় দিবসগুলো যথাযথ মর্যাদায় বিদ্যালয় পর্যায়ে পালন করতে হবে। প্রধান শিক্ষকের সংরক্ষিত ছুটি থানা/উপজেলা শিক্ষা অফিসারের অনুমোদনক্রমে ভোগ করতে হবে।
বিদ্যালয়ের কার্যক্রমের সূচি অনুযায়ী, এক সিফটের বিদ্যালয় সকাল ৯টা থেকে বিকেল সোয়া ৪টা; দুই শিফটের বিদ্যালয়ে সকাল ৯টা থেকে বিকেল সোয়া ৪টা (প্রথম শিফট সকাল ৯টা থেকে সোয়া ১২টা এবং দ্বিতীয় শিফট ১২টা থেকে সোয়া ৪টা)।
মূল্যায়নের সময়সূচি- প্রথম প্রান্তিক মূল্যায়ন ৫ থেকে ১৪ মে; দ্বিতীয় প্রান্তিকের মূল্যায়ন ১৮ থেকে ২৮ আগস্ট এবং তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন ২ থেকে ১১ ডিসেম্বর।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া সীমান্তের ওপারে ভারতের ত্রিপুরার রাজ্যের আগরতলায় সে দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের সাথে ১ অক্টোবর মঙ্গলবার হওয়া বৈঠকে সীমান্ত হত্যার জোরালো প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজিবি। একইসঙ্গে ওই বৈঠকে ভারত থেকে মাদক আসা বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিএসএফের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা সোয়া তিনটা নাগাদ আগরতলা আইসিপির ল্যান্ড কাস্টমস কনফারেন্স হলে বিজিবি-বিএসএফ কমান্ডার পর্যায়ের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিজিবি সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল এ এম জাবের বিন জব্বারের নেতৃত্বে ২৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল বৈঠকে অংশ নেয়।
এতে ২৫ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্ণেল ফারাহ মো. ইমতিয়াজসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিএসএফের পক্ষে ৪২ ব্যাটালিয়ন, ১৫০ ব্যাটালিয়ন, ১০৪ ব্যাটালিয়ন ও ৮১ ব্যাটালিয়নের কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন।
বিজিবির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে সীমান্তে গুলিবর্ষণ, হত্যা বন্ধ করা, অনুপ্রবেশ রোধ, মাদক ও মানব পাচার প্রতিরোধ এবং চোরাচালানসহ বিভিন্ন আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমন বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করা হয়। সীমান্ত হত্যার বিষয়ে জোরালো প্রতিবাদ জানায় বিজিবি
সীমান্তবর্তী জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও সীমান্তে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিজিবি-বিএসএফ একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সূত্র : কালেরকণ্ঠ
অনলাইন ডেস্ক :
আজ ৪ ডিসেম্বর সোমবার ঝিনাইগাতী মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে মিত্র বাহিনীর সহযোগীতায় মুক্তিযোদ্ধারা ঝিনাইগাতী অঞ্চলকে শত্রু মুক্ত করে।
দিনটি উপলক্ষে আজ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমিটি ও ঝিনাইগাতী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড শ্রদ্ধাভারে শস্মরণ করবে বলে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি সাইফুল ইসলাম জানায়।
পাক-হানাদার বাহিনী ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ কালো রাতে যখন ঢাকার বুকে হত্যাযজ্ঞে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেই রাতেই ৩-৪৫ মিনিটে প্রেরীত স্বাধীনতার ঘোষনার টেলিগ্রাম ম্যাসেজ ঝিনাইগাতী ভি এইচ এফ ওয়্যারলেস অফিসে এসে পৌঁছে।
ম্যাসেজ পেয়েই ওয়্যারলেস মাস্টার জামান সাহেব তার অফিসের পিয়ন পাঠিয়ে শেষ রাতের দিকে আওয়ামী লীগ নেতা ফকির আ: মান্নানের বাসায় সংবাদ দেন।স্বাধীনতার ঘোষনার সংবাদ পেয়ে পরদিন ভোরেই অর্থাৎ ২৬ শে মার্চ সকালে ছাত্র নেতা ফকির আ: মান্নান, হারুনুর রশিদ মাষ্টার, বাবু অনন্ত কুমার রায়, সেকান্দর আলী ফকির সহ অনেকেই ওয়্যারলেস অফিসে এসে পৌছান।
ইংরেজীতে লেখা টেলিগ্রাম ম্যাসেজটি পেয়েই নেতৃবৃন্দ তৎক্ষনাৎ তা শেরপুর সংগ্রাম পরিষদ নেতৃবৃন্দের কাছে প্রেরন করেন। ২৬ মার্চ সকাল থেকেই বাঁধভাঙ্গা জোয়ারের মতো ঢাকার সর্বশেষ সংবাদ কি তা জানার জন্যে শেরপুর শহরে মানুষ সমবেত হতে থাকে।
ঝিনাইগাতী ওয়্যারলেসে পাঠানো স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রটি শেরপুর সংগ্রাম পরিষদ নেতৃবৃন্দ হাতে পেয়েই তা বাংলায় অনুবাদ করে শেরপুর নিউ মার্কেট মোড়ে জনতার স্বতঃস্ফুর্ত সমাবেশে পাঠ করে শুনানো হয়।
বঙ্গবন্ধুর পাঠানো স্বাধীনতার ঘোষনার শ্রবণ করে সমবেত জনতা মুর্হুমুর্হু শ্লোগানে মুখরিত করে তোলে শেরপুরের আকাশ বাতাস। ২৭ মার্চ সকালে শেরপুর সংগ্রাম পরিষদ নেতৃবৃন্দ সর্বজনাব এডভোকেট আব্দুল হালিম সাবেক এমপি, মুহসিন আলী মাস্টার ও ছাত্র নেতা আমজাদ আলী ঝিনাইগাতী এসে পৌছেন।
ঝিনাইগাতীর নেতৃবৃন্দ তাদের অভ্যর্থনা জানান। ছাত্রনেতা ফকির আব্দুল মান্নানকে সঙ্গে নিয়ে তারা নকশি ইপিআর ক্যাম্পে যান। নকশি ক্যাম্পের সুবেদার হাকিম নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে বসেই বিদ্রোহ ঘোষণা করেন।
দেশকে শত্রু মুক্ত করা সহ পাক হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করে শুরু হলো প্রতিরোধ সংগ্রাম। যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসাবে রাংটিয়া পাতার ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ শিবির খোলা হয়। ট্রেনিং শেষে এসব স্বেচ্ছাসেবক সহ মুজিব বাহিনী ও ইপিআর সৈনিকদের নিয়ে সুবেদার হাকিম মধুপুরে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
পরে তা পিছু হটে পুরাতন ব্র্হ্মপুত্র নদের চরে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ২৬ এপ্রিল সুবেদার হাকিম এর খোলা জীপ এসে দাঁড়ায় ঝিনাইগাতী আমতলায়। সুবেদার হাকিম জনতাকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে অনুরোধ জানিয়ে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত ঝিনাইগাতী শত্রু মুক্ত ছিল। ২৭ এপ্রিল পাক বাহিনীরা বহর নিয়ে গোলা বর্ষন করতে করতে পৌছায় ঝিনাইগাতী বাজারে।
ঝিনাইগাতী প্রবেশ করেই আওয়ামী লীগ অফিস আগুন ধরিয়ে দেয়। গাড়ী বহর নিয়ে রাংটিয়া পাহাড় পর্যন্ত গিয়ে আবার পিছনে ফিরে এসে ঐদিন বিকালেই কোয়ারীরোডে পাক বাহিনী ক্যাম্প স্থাপন করে। পরে ঝিনাইগাতীর এক মাইল দক্ষিণে আহম্মদ নগর হাই স্কুলে তাদের সেক্টর হেড কোর্য়াটার স্থাপন করে। যা মুক্তিযোদ্ধাদের ১১নং সেক্টরের বিপরীতে পাক বাহিনীর ব্রহ্মপুত্র নদের উত্তরে একমাত্র সেক্টর হেড কোর্য়াটার যার দায়িত্বে ছিলেন মেজর রিয়াজ।
এছাড়া পাক বাহিনী শালচূড়া, নকশি, হলদীগ্রাম, তাওয়াকোচা, মোল্লাপাড়ায় ক্যাম্প স্থাপন করে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৬ বৈশাখ জগৎপুর গ্রামে হানা দিয়ে গ্রামটি পুড়িয়ে দেয় এবং পাক বাহিনী ৪১ জন গ্রাম বাসীকে গুলি করে হত্যা করে। ৫ জুলাই কাটাখালি ব্রীজ ধ্বংস করে মুক্তিযোদ্ধারা রাংঙ্গামাটি গ্রামে আশ্রয় নেয়। দালালদের খবরে পাক বাহিনী রাংঙ্গামাটি গ্রামে তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে। শুধু রাংঙ্গামাটি বিলের দিক খোলা ছিল।
সম্মুখ যুদ্ধে কমান্ডার নাজমুল আহসান শহীদ হন। তাঁর লাশ আনতে গিয়ে আলী হুসেন ও মোফাজ্জল শহীদ হন। পরদিন রাঙ্গামাটি গ্রামে হানা দিয়ে পাক বাহিনী ৯জন গ্রাম বাসীকে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। ২৩ আগষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাওয়াকুচা ক্যাম্প দখল করে এবং মুক্ত তাওয়াকুচায় বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলণ করে। তাওয়াকুচা যুদ্ধে ৪ জন পাক সৈন্য ও ৭ জন রাজাকার নিহত হলে পাক বাহিনী ক্যাম্প ছেড়ে দিয়ে পিছু হটে আসে। ৩ আগষ্ট নকশি ক্যাম্প আক্রমন করে মুক্তিযোদ্ধারা।
আগের দিন ২ আগষ্ট বিকেলে মেজর জিয়া নকশি ক্যাম্প আক্রমনের জন্যে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতিয়ারের অবস্থান গুলো পরিদর্শন করেন। ওই দিনের যুদ্ধে ২৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও নিখোজ হন। যুদ্ধে পাক বাহিনীর ৩৫ জন সৈন্য নিহত হয়।
২৭ নভেম্বর কমান্ডার জাফর ইকবালের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ঝিনাইগাতী বাজারের রাজাকার ক্যাম্প দখল করে ৮টি রাইফেল সহ ৮ জন রাজাকারকে ধরে নিয়ে যায়।
২৮ নভেম্বর পাক বাহিনী ঝিনাইগাতী হানা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা এবিএম সিদ্দিকের ছোট ভাই ওমর (১১) ও মুক্তিযোদ্ধা মকবুলের পুত্র খালেক (১০), পাক বাহিনীর দালালদের খবরে ৮ জনকে আহম্মদ নগর ক্যাম্পের বধ্যভূমিতে ধরে নিয়ে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। পরে তাদের এক গর্তে মাটি চাপা দিয়ে পুতে রাখে।
৩ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক দেড়টায় শালচূড়া ক্যাম্পের পাক বাহিনী কামালপুর দুর্গের পতনের আগাম সংবাদ পেয়ে পিছু হটে এবং আহম্মদ নগর হেড কোর্য়ারটারের সৈনিকদের সাথে নিয়ে রাতেই মোল্লাপাড়া ক্যাম্প গুটিয়ে শেরপুরে আশ্রয় নেয়।
এভাবে রাতের আঁধারে বিনা যুদ্ধে ঝিনাইগাতী শত্রু মুক্ত হয়। ৪ ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধারা ঝিনাইগাতীতে স্বাধীন বাংলার অহংকারের পতাকা উড়ায় এবং মুক্তদিবস ঘোষণা করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী বছর থেকে ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে একটি জাতীয় মেধাতালিকা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
আজ ১৫ মার্চ বুধবার দুপুরে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর কলেজে অনুষ্ঠিত বিজ্ঞান মেলায় তিনি এ কথা জানান।
তরুণদের মধ্যে বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ তৈরির লক্ষ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো বিজ্ঞান মেলা-২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বে যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা হয়, একই আদলে গুচ্ছ পদ্ধতিতে আগামী বছর মাত্র একটি পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে একটি ভর্তি পরীক্ষা হবে। শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে একটি জাতীয় মেধাতালিকা করে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। এর ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হয়রানি কমবে, ব্যয়ও কমবে।
নতুন কারিকুলাম সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীরা মুখস্ত নির্ভরতা কমিয়ে হাতে কলমে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে। ফলে শিক্ষার্থীরা অর্জিত জ্ঞান বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে পারবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং প্রসঙ্গে ডা. দীপু মনি বলেন, র্যাগিং অন্যান্য সামাজিক সমস্যার মতই একটি সমস্যা। আইন করে এটি বন্ধ করা যাবে না। র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিজ্ঞান মেলা উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহ্।
বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহণকারী কলেজগুলোর অধ্যক্ষ ও বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষকদের অংশগ্রহণে ‘বিজ্ঞান শিক্ষার মানোন্নয়নে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনী বক্তব্য দেন দৌলতপুর আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহ্।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. শরীফ এনামুল কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির ফেলো প্রফেসর ড. হাসিনা খান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহবুবুল আলম জোয়ার্দার ও দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষ সাদিকুজ্জামান সুমনসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী ও গবেষক বিজ্ঞান বিষয়ক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠান শেষে বিজ্ঞান প্রকল্প প্রদর্শনী ও কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান। উপস্থিত ছিলেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. ফকির রফিকুল আলম, কলেজ মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন দপ্তরের পরিচালক রফিকুল আকবর, আয়োজক কমিটির সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষবৃন্দ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত খুলনা বিভাগের বৃহত্তর কুষ্টিয়া অঞ্চলের ১৪টি কলেজ এই বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহণ করে। কলেজগুলোর মধ্যে রয়েছে- কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ, কুমারখালী সরকারি কলেজ, ভেড়ামারা সরকারি কলেজ, ড. ফজলুল হক গার্লস কলেজ, এস এম জোহা কলেজ, গাংনী কলেজ, শোমসপুর আবু তালেব ডিগ্রি কলেজ, মেহেরপুর সরকারি কলেজ, কুষ্টিয়া সরকারি মহিলা কলেজ, পিপলস কলেজ, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ, মুজিবনগর সরকারি কলেজ, দৌলতপুর কলেজ, আলমডাঙ্গা সরকারি কলেজ।
বিজ্ঞান মেলায় শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান বিষয়ক সাধারণ জ্ঞান মূল্যায়নের উদ্দেশ্যে কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। মেলায় কলেজের শিক্ষার্থীদের বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং উদ্ভাবনী বিভিন্ন বিজ্ঞান-প্রকল্প নিজ নিজ স্টলে প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া মেলায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রদর্শনের জন্য একটি স্টল ছিল।