অনলাইন ডেস্ক :
আফগানিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে একমাত্র টেস্টে ব্যাটে-বলের নৈপুণ্যে রেকর্ড জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
টাইগারদের ছুড়ে দেওয়া ৬৬২ রানের বিশাল টার্গেট তাড়ায় আফগানিস্তান অলআউট মাত্র ১১৫ রানে। ৫৪৬ রানের রেকর্ড জয় পায় বাংলাদেশ। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে রানের দিক থেকে তৃতীয় সর্বোচ্চ জয়।
এর আগে সর্বশেষ ১৯৩৪ সালের নভেম্বরে লন্ডনের ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৬২ রানের জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। ৮৯ বছরের ইতিহাসে বিশাল ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ।
টেস্টে এটি বাংলাদেশের ১৮তম জয়। ২০০৫ সালের জানুয়ারিতে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম জয় পায় বাংলাদেশ। ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে এ নিয়ে অষ্টম দলের বিপক্ষে জয় পেলেন টাইগাররা।
গত দেড় বছরে তিনটি দলের বিপক্ষে টেস্টে প্রথমবারের মতো জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। গত বছর নিউজিল্যান্ড, আর এ বছর আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ।
অনলাইন ডেস্ক :
ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট সিরিজ দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখেছিল শান্ত বাহিনী। কিন্তু সিরিজের প্রথম এবং মিরপুর টেস্টেও নিজেদের সেরাটা দিতে পারেনি স্বাগতিকরা। যার ফলে প্রথম ম্যাচে প্রোটিয়াদের কাছে ৭ উইকেটে হেরেছে টাইগাররা।লক্ষ্য ছিল চতুর্থ দিন যতক্ষণ ও যত ওভার ব্যাটিং করা যায়। এই ক্ষণটা ভেঙে বললে একটা সেশন। কিন্তু সকালে ক্ষণের হিসেবে ২৫ মিনিটি এবং ৪.৫ ওভার স্থায়ী হলো বাংলাদেশের ইনিংস। দুর্দান্ত দৃঢ়তা দেখানো এবং আশা দেওয়া মেহেদী মিরাজ মিস করেন সেঞ্চুরি। জয়ের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা পায় ১০৫ রানের লক্ষ্য। জিততে ৩ উইকেট হারালেও খুব একটা বেগ পেতে হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার।
বৃষ্টির পরে চতুর্থ দিনের উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকা একটু ধীরে এগোবে এমনটা মনে হয়েছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় দানার কথা মাথায় রেখে রান তোলার দিকেও বেশ মনোযোগ ছিল তাদের। যে কারণে ২২ ওভার ব্যাটিং করেই তারা তুলে ফেলেছে রান। এতে কেটেছে তাদের একটি ফাঁড়াও। এর আগে ২০১৫ সালে জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে এসে বৃষ্টির কারণে মিরপুর ও চট্টগ্রামে দুই টেস্টেই ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল তাদের।
মিরপুর টেস্টে টস জেতে বাংলাদেশ। অনুমিতভাবে ব্যাটিং করতে নামলেও প্রথম ইনিংসে মাত্র ১০৬ রানে অলআউট হয়। জবাবে প্রথম ইনিংসে ৩০৮ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ১০৮ রানে ৬ উইকেট হারায় তারা। সেখান থেকে উইকেটরক্ষক ব্যাটার কাইল ভেরায়েনে ও পেস অলরাউন্ডার ওয়ান মুলদার ১১৯ রানের জুটি গড়ে ম্যাচ বাংলাদেশের নাগালের বাহিরে নিয়ে যান। মুলদার ৫৪ রান করে ফিরলেও ভারায়েনে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ১১৪ রানে থামেন।
প্রথম ইনিংসে ২০২ রানের লিড নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে বেশ ভালো ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ দল। ৫৯ রানে ৩ উইকেট হারালেও মেহেদী মিরাজ ও জাকের আলীর ব্যাটে ভর করে ৩০৭ রান তোলে স্বাগতিকরা। মিরাজ খেলেন ৯৭ রানের ইনিংস। শেষ ব্যাটার হিসেবে সাজঘরে ফেরেন। অভিষেক টেস্ট খেলা জাকের ৫৮ রান যোগ করেন। এছাড়া ওপেনার জয় ৪০ ও মিডলে মুশফিক ৩৩ রানের ইনিংস খেলেন।
বাংলাদেশের দেওয়া লক্ষ্য তাড়ায় প্রোটিয়া ওপেনার টনি ডি জর্জি ৪১ রান করেন। অধিনায়কি এইডেন মার্করাম ২০ রানের ইনিংস খেলেন। ত্রিস্তান স্টাবস ৩০ রান যোগ করেন।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ দলের হয়ে দারুণ বোলিং করেছেন তাইজুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ। প্রথম দিন প্রোটিয়াদের ৬ উইকেটের ৫টিই নেন তাইজুল। ক্যারিয়ারের ২০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে দলের পক্ষে ৩ উইকেটই নেন তিনি। পেসার হাসান প্রথম ইনিংসে নেন ৩ উইকেট। প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার কাগিসু রাবাদা ও মুলদার ৩টি করে উইকেট নেন। স্পিনার কেশব মহারাজ নেন ৩ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে রাবাদা নিয়েছেন ৬ উইকেট। ৩ উইকেট নিয়েছেন মহারাজ।
অনলাইন ডেস্ক :
দিনের শুরুটা ভালো না হলেও পরবর্তীতে বোলার ও ব্যাটারদের দুর্দান্ত নৈপুন্যে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ৯ উইকেট হাতে নিয়ে ৩৭০ রানের বড় ব্যবধানে এগিয়ে থেকে চালকের আসনে বসে গেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ।
আজ ১৫ জুন বৃহস্পিতবার সকালে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩৮২ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। এরপর আফগানিস্তানকে প্রথম ইনিংসে ১৪৬ রানে গুটিয়ে দেয় বাংলাদেশের বোলাররা। এতে প্রথম ইনিংস থেকে টাইগাররা ২৩৬ রানের লিড পেলে ফলো-অনে পড়ে আফগানিস্তান। কিন্তু আফগানিস্তানকে ফলো-অন না করিয়ে ম্যাচের তৃতীয় ইনিংসে দ্বিতীয়বারের মত ব্যাট হাতে নেমে দ্বিতীয় দিন শেষে ১ উইকেটে ১৩৪ রান করে বড় লিড দাঁড় করিয়েছে বাংলাদেশ।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম দিন শেষে ৭৯ ওভারে ৫ উইকেটে ৩৬২ রান করেছিলো বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্ত ১৪৬, মাহমুদুল হাসান জয় ৭৬ রানে আউট হন। দিন শেষে মুশফিকুর রহিম ৪১ ও মেহেদি হাসান মিরাজ ৪৩ রানে অপরাজিত ছিলেন।
আজ, দ্বিতীয় দিন ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশের পরের দিকের ব্যাটাররা। বাকী ৫ উইকেটে মাত্র ২০ রান যোগ করতে পারে বাংলাদেশ। ৯ রানে শেষ ৫ উইকেট হারায় টাইগাররা। এরমধ্যে ৩টিই নেন আফগানিস্তানের হয়ে অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা নিজাত মাসুদ।
মুশফিক ৭৬ বলে ৪টি চারে ৪৭ ও মিরাজ ৮টি চারে ৮০ বলে ৪৮ রানে আউট হন। লোয়ার অর্ডারে তাসকিন আহমেদ ২, তাইজুল শূন্য, শরিফুল ইসলাম ৬ রানে আউট হন। বল হাতে আফগানদের পক্ষে সেরা বোলার ছিলেন প্রথম দিন ২ উইকেট নেয়া মাসুদ। ১৬ ওভারে ৭৯ রানে ৫ উইকেট নেন তিনি।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে খেলতে নেমে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আফগানিস্তানের দুই ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান ও আব্দুল মালিক। ৫ ওভারে ১৭ রান তুলে ফেলেন তারা। অবশ্য দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে বিচ্ছিন্ন হতে পারতেন জাদরান ও মালিক। শরিফুলের বলে লিটনের হাতে জীবন পান জাদরান।
জীবন পেয়ে সুবিধা করতে পারেননি জাদরান। ষষ্ঠ ওভারে শরিফুলের শিকার হন তিনি। ৬ রান করেন জাদরান। এরপর আফগানিস্তানের উপর চাপ বাড়ান আরেক পেসার এবাদত। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে আফগানদের ২ উইকেট তুলে নেন এবাদত। মালিককে ১৭ ও রহমত শাহকে ৯ রানে শিকার করেন এবাদত। এতে ৩ উইকেটে ৩৫ রান নিয়ে বিরতিতে যায় আফগানিস্তান।
বিরতি থেকে ফিরে আফগানিস্তান শিবিরে দ্বিতীয়বারের মত আঘাত হানেন শরিফুল। অধিনায়ক হাসমতুল্লাহ শাহিদিকে ৯ রানে থামান তিনি। এতে ৫১ রানে ৪ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। এ অবস্থায় দলের হাল ধরে বাংলাদেশের বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন আফসার জাজাই ও নাসির জামাল। জুটিতে ৭৩ বলে ৬৫ রান তুলে উইকেটে সেট হয়ে যান তারা। এ অবস্থায় জুটি ভাঙ্গতে মরিয়া ছিলো বাংলাদেশ।
অবশেষে দলীয় ১১৬ রানে জামালকে লেগ বিফোর আউট করে বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন মিরাজ। ৬টি চারে ৩৫ রান করেন জামাল।
মিরাজের ব্রেক-থ্রুর পর আফগানিস্তানকে চেপে ধরেন এবাদত ও তাইজুল। এতে ৩৯ ওভারে ১৪৬ রানে শেষ হয় আফগানদের প্রথম ইনিংস। আফগানদের পক্ষে জাজাই সর্বোচ্চ ৩৬ ও জানাত ২৩ রান করেন।
এবাদত ৪৭ রানে ৪টি, শরিফুল ২৮ রানে, তাইজুল ৭ রানে এবং মিরাজ ১৫ রানে ২টি করে উইকেট নেন। ইনিংসে ২ উইকেট নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৫০ ও মিরপুরের ভেন্যুতে ৫০ শিকার পূর্ণ করেন মিরাজ।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৩৮২ রানের জবাবে ১৪৬ রানে অলআউট হয়ে ফলো-অনে পড়ে আফগানিস্তান। কিন্তু আফগানদের ফলো-অন না করিয়ে ম্যাচের ২৩৬ রানে এগিয়ে থেকে তৃতীয় ইনিংসে আবারও ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ।
জাকির হাসানকে নিয়ে ইনিংস শুরু করে প্রথম ওভারের শেষ বলে ক্যাচ দিয়ে জীবন পান মাহমুদুল হাসান জয়। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে আফগানিস্তানের বাঁ-হাতি স্পিনার আমির হামজার বলে আউট হন ৪টি চারে ১৩ বলে ১৭ রান করা জয়।
দলীয় ১৮ রানে জয়ের বিদায়ের পর জাকিরকে নিয়ে ওয়ানডে স্টাইলে খেলেছেন প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হোসেন শান্ত। ব্যক্তিগত ৯ রানে জীবন পেয়ে আহমাদজাইর করা ১৮তম ওভারে শেষ চার বলে চারটি বাউন্ডারি মারেন শান্ত।
ইনিংসের ২১তম ওভারে বাউন্ডারি মেরে টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান জাকির। পরের ওভারের প্রথম বলে চারের সহায়তায় টেস্টে চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরি করেন শান্ত। হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে অবিচ্ছিন্ন থেকে দিন শেষ করেন জাকির ও শান্ত। দু’জনই ৬৪ বল করে খেলে সমান ৫৪ রানেই অপরাজিত আছেন। জাকির ৬টি ও শান্ত ৮টি চার মারেন।
স্কোর কার্ড (টস-আফগানিস্তান)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস (প্রথম দিন শেষে ৩৬২/৫, ৭৯ ওভার, মুশফিক ৪১*, মিরাজ ৪৩*) :
মাহমুদুল হাসান ক ইব্রাহিম ব রহমত ৭৬
জাকির হাসান ক আফসার ব নিজাত ১
নাজমুল হোসেন শান্ত ক নাসির ব হামজা ১৪৬
মোমিনুল হক ক আফসার ব নিজাত ১৫
মুশফিকুর রহিম ক জামাল ব মাসুদ ৪৭
লিটন দাস ক ইব্রাহিম ব জহির ৯
মিরাজ ক হামজা ব আমাদজাই ৪৮
তাসকিন এলবিডব্লু ব আজাদজাই ২
তাইজুল ক মালিক ব নিজাত ০
করিফুল বোল্ড মাসুদ ৬
এবাদত অপরাজিত ০
অতিরিক্ত (বা-৮, লে বা-১, নো-১৬, ও-৭) ৩২
মোট (অলআউট, ৮৬ ওভার) ৩৮২
উইকেট পতন : ১/৬ (জাকির), ২/২১৮ (মাহমুদুল), ৩/২৫৬ (মোমিনুল), ৪/২৭১ (শান্ত), ৫/২৯০ (লিটন), ৬/৩৭৩ (মিরাজ), ৭/৩৭৫ (মুশফিক), ৮/৩৭৫ (তাইজুল), ৯/৩৭৭ (তাসকিন), ১০/৩৮২ (শরিফুল)।
আফগানিস্তান বোলিং :
আহমদজাই : ১০-১-৩৯-২ (নো-১),
মাসুদ : ১৬-২-৭৯-৫ (ও-১, নো-৪),
জানাত : ১১-৩-৩৩-০ (ও-১),
জহির : ১৬-০-৯৮-১ (ও-১, নো-৮),
হামজা : ২৪-১-৮৫-১ (নো-৩),
শাহিদি : ৩-০-৯-০
রহমত : ৬-১-৩০-১।
আফগানিস্তান প্রথম ইনিংস :
জাদরান ক লিটন ব শরিফুল ৬
মালিক ক জাকির ব এবাদত ১৭
রহমত ক তাসকিন ব এবাদত ৯
শাহিদি ক মিরাজ ব শরিফুল ৯
জামাল এলবিডব্লু ব মিরাজ ৩৫
জাজাই ক শরিফুল ব এবাদত ৩৬
জানাত স্টাম্প লিটন ব মিরাজ ২৩
হামজা ক মোমিনুল ব এবাদত ৬
আহমাদজাই ক লিটন ব তাইজুল ০
মাসুদ ক জাকির ব তাইজুল ০
জহির অপরাজিত ০
অতিরিক্ত (লে বা-১, নো-৪) ৫
মোট (অলআউট, ৩৯ ওভার) ১৪৬
উইকেট পতন : ১/১৮ (জাদরান), ২/২৪ (মালিক), ৩/৩৫ (রহমত), ৪/৫১ (শাহিদি), ৫/১১৬ (জামাল), ৬/১১৬ (জাজাই), ৭/১২৮ (হামজা), ৮/১৪০ (আহমাদজাই), ৯/১৪৬ (মাসুদ), ১০/১৪৬ (জানাত)।
বাংলাদেশ বোলিং :
তাসকিন : ৭-০-৪৮-০ (নো-৪),
শরিফুল : ৮-২-২৮-২,
এবাদত : ১০-১-৪৭-৪,
তাইজুল : ৫-০-৭-২,
মিরাজ : ৯-১-১৫-২।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস :
মাহমুদুল হাসান ক জাদরান ব হামজা ১৭
জাকির হাসান অপরাজিত ৫৪
নাজমুল হোসেন শান্ত অপরাজিত ৫৪
অতিরিক্ত (নো-৩, ও-৬) ৯
মোট (১ উইকেট, ২৩ ওভার) ১৩৪
উইকেট পতন : ১/১৮ (জয়)।
আফগানিস্তান বোলিং :
আহমদজাই : ৫-০-৩৪-০,
মাসুদ : ৩.৫-০-৩০-০ (নো-৩),
হামজা : ৬.১-০-২৭-১,
জানাত : ৪-০-২৪-০ (ও-২),
জহির : ৪-০-১৯-০।
চলারপথে রিপোর্ট :
ক্রীড়া পরিদপ্তর, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্তৃক বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসূচি ২০২৩-২০২৪ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় জেলা ক্রীড়া অফিস আয়োজিত ১২ জুন বুধবার সকাল ১১টায় অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় হলরুমে অনুর্ধ্ব-১৪ বালক ও বালিকাদের মাস ব্যাপী সাঁতার প্রশিক্ষণ এর সমাপনী ও সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সাইফুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিসার জুলফিকার হোসেন, অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদা নাজমীন।
জেলা ক্রীড়া অফিসার মাহমুদা আক্তারের সভাপতিত্বে ও অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক আব্দুর সাকির ছোটনের সঞ্চালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন মেড্ডা আলী মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আতাউর রহমান পলাশসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ।
এসময় বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র/ছাত্রীরা প্রশিক্ষণের সমাপনী সনদ গ্রহণ করেন।
স্পোর্টস ডেস্ক :
‘১৪ সংখ্যাটা খারাপ নয়’ -ম্যাচশেষে বলছিলেন ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশম। ১৪ তার চোখে খারাপ না লাগারই কথা।
কেননা ১৪-০ ব্যবধানেই যে জিব্রাল্টারকে গতকাল উড়িয়ে দিয়েছে তার দল। তুলে নিয়েছেন নিজেদের ইতিহাস ও ইউরো বাছাইয়ে সবচেয়ে বড় জয়।
গোলবন্যার ম্যাচে ফ্রান্সের হয়ে গোলের খাতায় নাম লেখান ৯ জন ফুটবলার। এর মধ্যে হ্যাটট্রিকের দেখা পান কিলিয়ান এমবাপ্পে। জোড়া গোল করেন অলিভিয়ে জিরু ও কিংসলি কোমান। একটি গোল করে ফ্রান্সের হয়ে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার মালিক হন ওয়ারেন জের-এমেরি। ১৭ বছর বয়সী এই ফুটবলারের অভিষেক হয়েছে আজ। তিনি ছাড়াও একটি করে গোল করেছেন মার্কাস থুরাম, জনাথন ক্লস, ইউসুফ ফোফানা, আদ্রিয়ান রাবিওঁ, ওসমান দেম্বেলে।
গতকালের আগে ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় জয় এসেছিল ১৯৯৫ সালে। আজারবাইজানকে সেবার ১০-০ গোলে হারিয়েছিল তারা। এছাড়া ইউরো বাছাইয়ে সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ডটি ছিল জার্মানির। ২০০৬ সালে সান মারিনোকে ১৩-০ গোলে হারায় তারা।
ফ্রান্সের কাছে রেকর্ড হারানো রাতটা ভালোভাবে কাটেনি জার্মানদের। ঘরের মাঠে প্রীতি ম্যাচে ৩-২ গোলে হেরেছে তুরস্কের কাছে। পঞ্চম মিনিটে কাই হাভার্ৎজের গোলে এগিয়ে গেলেও প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগেই পিছিয়ে পড়ে ২-১ ব্যবধানে। বিরতির পর ৪৮ মিনিটে সমতা ফেরান নিকলাস ফুলক্রুগ। তবে ৭০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে তুরস্ককে জয়সূচক গোলটি এনে দেন ইউসুফ সারি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ঈদুল আজহা উপলক্ষে অনেক মানুষ রাজধানী ছেড়েছেন। রয়ে যাওয়া রাজধানীবাসীর অনেকেই আষাঢ়ের প্রথম দিন মেতে উঠেছিলেন বর্ষা বন্দনায়। প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষার শপথে আজ ১৫ জুন শনিবার ভোরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় অনুষ্ঠিত হয় বর্ষা উৎসব। আয়োজনে ছিল বর্ষা উৎসব উদযাপন পরিষদ। বাংলার পঞ্চকবির গান, কবিতার পাশাপাশি সম্মিলিত নৃত্যে সাজানো হয় এ উৎসব। সকাল সাড়ে ৭টায় বকুলতলার মঞ্চে মো. হাসান আলীর বাঁশির লোকজ সুরে শুরু হয় উৎসব।
উৎসবে শিল্পী সাজেদ আকবর পরিবেশন করেন রবীন্দ্রসংগীত ‘বহু যুগের ওপার হতে আষাঢ় এলো’; সালমা আকবর পরিবেশন করেন রবীন্দ্রনাথের ‘ছায়া ঘনাইছে বনে বনে’। বিজন চন্দ্র মিস্ত্রি শোনান নজরুলগীতি ‘বরষা ওই এল বরষা’। অনিমা রায় শোনান রবীন্দ্রসংগীত ‘নীল অম্বর ঘন কুঞ্জ ছায়ায়’। নবনীতা জাইদ চৌধুরী শোনান আধুনিক গান ‘এক বরষার বৃষ্টিতে ভিজে’। এদিন একক কণ্ঠে সংগীত পরিবেশন করেন আবিদা রহমান সেতু, শ্রাবণী গুহ রায়, স্নিগ্ধা অধিকারী, রত্না সরকার, ফেরদৌসী কাকলী।
দলীয় সংগীত পর্বে বৃষ্টি নামার গানের সঙ্গে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী পরিবেশন করে লোকসংগীত ‘গাঙ্গে যাইতাছে দেখো ভাই’। বহ্নিশিখা পরিবেশন করে নজরুল সংগীত ‘রুমুঝুম রুমুঝুম কে বাজায়’। সুরবিহার পরিবেশন করে লোকসংগীত ‘এসো শ্যামল সুন্দর’। এদিন পঞ্চভাস্বর, সীমান্ত খেলাঘর আসর, সুরনন্দনের শিল্পীরা সমবেত কণ্ঠে বর্ষার গান শোনান।
আবৃত্তি পর্বে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী আহকাম উল্লাহ পরিবেশন করেন রবীন্দ্রনাথের ‘এমন দিনে তারে বলা যায়’। ত্রপা মজুমদার পাঠ করেন ইন্দ্রানী সমাদ্দারের কবিতা ‘বৃষ্টি’। তিনি শোনান প্রদীপ বালার কবিতা ‘যে বৃষ্টির অপেক্ষায় বসে’। নায়লা তারান্নুম চৌধুরী কাকলি শোনান জয় গোস্বামীর কবিতা ‘মেঘ বালিকা’। সম্মিলিত নৃত্য পরিবেশন করে ধৃতি নর্তনালয়, স্পন্দন, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি অব ফাইন আর্টস, কথক নৃত্য সম্প্রদায়।
কথন পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বরেণ্য চিত্রশিল্পী আবুল বারক আলভী। তিনি বলেন, আমাদের দেশে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় নগরে বসন্ত উৎসব, শরৎ উৎসব, নবান্ন উৎসব আর বর্ষা উৎসব পালন করি আমরা। আমাদের শস্য, গাছপালা আর ফলন যেটির কথা বলি না কেন, তার সবটাই বর্ষার ওপর নির্ভরশীল।
বর্ষা উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক নিগার চৌধুরী নগরে বৃক্ষায়নে গুরুত্বারোপ করে বলেন, যারা বাড়িঘর বানাতে গিয়ে গাছ কেটে ফেলেছেন তারা আরও বেশি করে গাছ লাগান। আমরা প্রকৃতির বন্ধু হতে চাই।
পরে এ উৎসবের রীতি অনুযায়ী শিশুদের মাঝে বনজ, ফলদ ও ঔষধি বৃক্ষের চারা বিতরণ করেন অতিথিরা।
প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করা যাবে না-উদীচী : প্রাণপ্রকৃতি ধ্বংস করে প্রকল্প বা স্থাপনা গড়ে তোলা চলবে না। অপরিকল্পিত নগরায়ণ বন্ধ করতে হবে। শহরে-বন্দরে সৌন্দর্য বর্ধনের নামে গাছ কাটা, পশু-পাখির আবাসস্থল ধ্বংস করা চলবে না। অবিলম্বে দেশের বিলুপ্তপ্রায় পশুপাখি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হোক। বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর বর্ষা উৎসব উদযাপন অনুষ্ঠানে এসব দাবি জানান বক্তারা। বর্ষা ঋতুকে স্বাগত জানাতে উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদ ‘প্রাণপ্রকৃতি ধ্বংসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও বিশ্ব বিবেক’ এ স্লোগানে আয়োজন করে বর্ষা উৎসবের। সকাল ৭টায় বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে এ উৎসব আয়োজন করা হয়।
ঢাকা মহানগর উদীচীর সভাপতি নিবাস দের সভাপতিত্বে বর্ষা কথনপর্বে আলোচক ছিলেন কৃষি ও কৃষকবন্ধু রেজাউল করিম সিদ্দিক রানা।
আলোচক ছিলেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান, উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি ও বর্ষা উৎসব উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক হাবিবুল আলম এবং সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে। উপস্থাপনা করেন কেন্দ্রীয় সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য কবি রহমান মুফিজ।
সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর উদীচীর সাধারণ সম্পাদক আরিফ নূর।