চলারপথে রিপোর্ট :
চাঁদপুরে ব্যস্ত সময় পার করছেন ১৫০০ কামার শিল্পের প্রায় তিন হাজার কারিগর। কোরবানি উপলক্ষে রাত-দিন খেটে তৈরি করছেন, দা-বটি, ছুরিসহ লোহার বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। যদিও দাম কিছুটা বেশি নেওয়ার অভিযোগ ক্রেতাদের। কাঁচামাল ও প্রয়োজনীয় মালামালের দাম বাড়ার ফলে এখন আগের মতো লাভ হচ্ছে না। এই শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা সরকারের বিশেষ সহায়তার প্রত্যাশা করছেন।
হাতুড়ি তৈরির শব্দ জানান দিচ্ছে কামারশালায় কর্মতৎপরতা বেড়েছে। বছরের অন্যান্য সময় লোহার সামগ্রীর কদর কম থাকলেও ঈদুল আজহার আগে তাদের দম ফেলার সময় থাকে না। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, বাড়ছে তত ব্যস্ততা। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জিনিস সরবরাহের চাপও রয়েছে।
কামার দীপক চন্দ্র কর্মকার বলছেন, আমরাসহ কারিগররা দিনরাত খাটছি। বর্তমানে শ্রমিকদের পারিশ্রমিক, কয়লা ও লোহার দাম বেড়েছে। এসব লোহার জিনিসপত্র বানাতেও খরচ পড়ে অনেক। দরদাম তাই একটু বেশি নিয়েও পুষিয়ে উঠতে পারছি না। ব্যবসা টিকিয়ে রাখা এখন কঠিন। পূর্ব-পুরুষদের থেকে করা পেশা ছাড়তেও পারছি না।
আ. কুদ্দুস মুন্সি ও মজিবুর রহমান বলেন, প্রতিটি বটি দা বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকায়, হাত দা অর্থাৎ চাপাতি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, আকার ভেদে ছুরি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ৪০০ টাকা। বিগত বছরের তুলানায় এবার দাম অনেকটা বেশি। তাই অনেকেই পুরানো দা ছুরিগুলো শান দিয়ে নিচ্ছেন।
চাঁদপুর বিসিক জেলা কার্যালয়ের সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক মো. রবিউল আলম বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে কামার শিল্পকে সার্বিক সহযোগিতা করা হয়ে থাকে। আমরা বিসিক’র পক্ষ থেকে তাদের সকল ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত। তারা আমাদের কাছে প্রশিক্ষণ বা আর্থিক সহায়তার জন্য আসলে, তখন তাদের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা থাকবে। আগে অনেকেই ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প থেকে ঋণ নিয়েছেন। এখনও যদি কেউ ঋণ নিতে চায়, তবে আমাদের সহায়তা অব্যাহত থাকবে। জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১৫০০ কামারশালা রয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ আগামীকাল শুক্রবার সকাল পর্যন্ত দিক পরিবর্তন করে ক্রমান্বয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।
আজ ১১ মে বৃহস্পতিবার দুপুরে আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ আরো উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১১.৬ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৭.৯ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ঘূর্ণিঝড়টি আরো ঘণীভূত হয়ে আগামীকাল শুক্রবার সকাল পর্যন্ত উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে এবং পরবর্তী সময়ে দিক পরিবর্তন করে ক্রমান্বয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসাথে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক ৬২টি আসনে বিজয়ী স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের সংসদে ভূমিকা কী হবে, এখনো এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। তবে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ নেতারা দলীয় পদ-পদবি হারাতে চান না। এ কারণে তাঁরা সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন। তিনি নির্দেশনা দিলে বেশির ভাগ স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগে যোগ দেবেন।
অন্যথায় স্বতন্ত্র সদস্য হিসেবে সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকা রাখবেন।
জাতীয় সংসদের চিঠির অপেক্ষায় রয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কিন্তু স্বতন্ত্রদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হওয়ায় ইসির পাঠানো চিঠির জবাব দিতে পারেনি সংসদ সচিবালয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ১১টি আসনে বিজয়ী হলেও দ্বাদশ সংসদেও বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকছে, এটা অনেকটা নিশ্চিত।
সরকারি দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তেমনটিই জানিয়েছেন। ফলে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা থাকছেন না। সে ক্ষেত্রে স্বতন্ত্রদের ভূমিকা কী হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে বেশির ভাগ সংসদ সদস্য সরকারি দলে যোগ দিতে আগ্রহী।
কারণ এবারের নির্বাচনে বিজয়ী ৬২ জন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের ৫৯ জন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। দুজন বাদে সবার দলীয় পদ-পদবি রয়েছে। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে দলীয় প্রধানের নির্দেশনা অনুযায়ী তাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। তাঁদের আশঙ্কা, সংসদে বিরোধী দলের সঙ্গে থাকলে স্থানীয় রাজনীতিতে নিয়ন্ত্রণ হাতছাড়া হতে পারে। সরকারি দলের সংসদ সদস্যের মতো সুযোগ-সুবিধা পাবেন না।
আবার আগামী দিনে দলীয় মনোনয়ন পেতে সমস্যা হতে পারে।
জানা গেছে, একই কারণে দলের পদ-পদবি না থাকলেও সরকারের সঙ্গে থাকতে চান গাইবান্ধা-১ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ নাহিদ নিগার। জাপার সঙ্গে সমঝোতার কারণে ওই আসনের নৌকার প্রার্থী আফরোজা বারী প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় তাঁর মেয়ে নাহিদ নিগার স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। আফরোজা বারী সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। আর পিরোজপুর-৩ আসনে জয়ী শামীম শাহনেওয়াজেরও আওয়ামী লীগে পদ নেই। তাঁর ভাই উপজেলার সাধারণ সম্পাদক আশরাফুর রহমান মনোনয়ন পেয়েছিলেন। জাপাকে আসন ছাড়ায় নৌকা হারান। শামীম শাহনেওয়াজ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য হয়েছেন।
আওয়ামী লীগের বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়ে এসেছেন নীলফামারী-৪ আসনে জেলা জাপার সহসভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার হওয়া সিদ্দিকুল আলম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে জয়ী হয়েছেন নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এ কে একরামুজ্জামান। এ ছাড়া সিলেট-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জয়ী হয়েছেন ফুলতলীর হুজুরের ছেলে ও অনিবন্ধিত দল আঞ্জুমানে আল ইসলাহর সভাপতি মোহাম্মদ হুছামউদ্দিন চৌধুরী। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি না করলেও সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। তিনি বলেন, স্বতন্ত্র এমপিদের স্বতন্ত্র থাকাই ভালো।
বরগুনা-১ আসন থেকে নির্বাচিত স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকু বলেন, স্বতন্ত্র হিসেবে জয়ী প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের। কিন্তু দল থেকে এখনো কোনো সিগন্যাল পাইনি।
যেকোনোভাবেই সরকার ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকতে চান হবিগঞ্জ-১ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী।
রাজশাহী-২ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শফিকুর রহমান বাদশা বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সৈনিক। শেখ হাসিনা আমার নেত্রী। তাই দলের সিদ্ধান্তের ওপর আমার সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে।’
সরকারে থাকতে আগ্রহী বরিশাল-৪ আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের উন্নয়নের সহযোগী হিসেবে সংসদে কাজ করব।
কুষ্টিয়া-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল আরেফিন বলেন, ‘স্বতন্ত্র এমপিদের নিয়ে জোট গঠনের বিষয়ে আলোচনা চলছে। তবে আমরা আওয়ামী লীগের বাইরে নই।’ সরকারে থাকতে চান ময়মনসিংহ-৮ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মাহমুদ হাসান সুমন।
রংপুর-৫ আসনে জয়ী স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য জাকির হোসেন সরকার বলেন, দীর্ঘ ৩৭ বছর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগে থাকতে চাই।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জয়ী ১৬ স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য দশম সংসদে আওয়ামী লীগ নেতা হাজি সেলিমের নেতৃত্বে জোট করেন। তাঁরা আওয়ামী লীগের পদে থাকলেও দলটির সংসদীয় দলে যোগ দিতে পারেননি। যদিও পরবর্তী নির্বাচনী দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এবারও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের জোট করে বিরোধী দল হিসেবে ভূমিকা রাখার সম্ভাবনা বেশি। সে ক্ষেত্রে জোটবদ্ধ হয়ে তাঁরা সংরক্ষিত নারী আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দেবেন।
সংরক্ষিত নারী নির্বাচনের বিষয়ে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের চিঠির অপেক্ষায় আছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির বৈঠকে সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা হলেও কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করতে হবে। সাধারণ আসনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা এই নির্বাচনের ভোটার। যদিও সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনে সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, কোন দল কতটি আসন পাবে, সে বিষয়ে জানানোর জন্য জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। চিঠির জবাব এলে সংসদের সংরক্ষিত আসনের নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হবে। এটার সময় আছে, আইন অনুযায়ী ৩০ দিনের মধ্যে এই নির্বাচন করতে হবে। আশা করছি, এই সপ্তাহে অথবা আগামী সপ্তাহে সংসদ সচিবালয়ের চিঠির জবাব পাব।
স্বতন্ত্র এমপিদের অবস্থান জানতে চেয়ে ইসির চিঠি
স্বতন্ত্র এমপিরা রাজনৈতিক দলে বা জোটে যোগদান করতে চাইলে তা আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে জানাতে হবে। এ বিষয়ে মতামত জানানোর জন্য সংসদ সদস্যদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল মঙ্গলবার ইসি সচিব জাহাংগীর আলম স্বাক্ষরিত চিঠিতে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে দল ও জোট গঠনের বিষয়টি ইসিকে জানাতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, কোনো নির্দলীয় সংসদ সদস্য আপনার দলে বা জোটে যোগদান করেছেন কি না, অথবা সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচনের উদ্দেশ্যে অন্য কোনো দলের সঙ্গে আপনার দলে জোট গঠিত হয়েছে কি না; তা ৩১ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা-৪ আসনের স্বতন্ত্র এমপি আওলাদ হোসেন বলেন, ‘আমি ১৯৭৬ সাল থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। একটা প্রেক্ষাপটের কারণে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করেছি। এখন সংসদে আওয়ামী লীগের এমপি হিসেবে যোগদান করব।’
অনলাইন ডেস্ক :
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিলের সরকারি আদেশ জারি করা হয়েছে। আজ ২০ জুলাই বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এই আদেশ প্রকাশ করা হয়। এর আগে বুধবার শিক্ষামন্ত্রী এ সংক্রান্ত ঘোষণা দেন।
এদিকে গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিলের এই আদেশ নিয়ে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সরকারি তরফে ছুটি বাতিলের এই সিদ্ধান্তের পক্ষে শিখনঘাটতি পূরণের যুক্তি দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু শিক্ষক-অভিভাবকরা বলছেন, ছুটি শুরুর আগের দিন এভাবে ঘোষণা দেওয়া হঠকারিতা এবং স্বেচ্ছাচারিতার শামিল। বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রকোপ চলছে। তাছাড়া দাবদাহের বিচারে শিক্ষার্থী তথা জনস্বাস্থ্যের দিক মাথায় রেখেই এই ছুটি দেওয়া হয়েছে। তাই এর মাধ্যমে মূল শিক্ষক-অভিভাবক নয়, শিক্ষার্থীদেরকেও ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
ছুটি বাতিল করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা আদেশে স্বাক্ষর করেন উপসচিব সাইদুর রহমান খান। এতে উল্লেখ করা হয়, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষা কার্যক্রম যথাসময়ে সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে ইতিপূর্বে ঘোষিত ২০ জুলাই থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত এ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মাধ্যমিক/দাখিল, উচ্চ মাধ্যমিক/আলিম এবং কারিগরি/সমমান পর্যায়ের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল করা হলো।
আরো উল্লেখ করা হয়, বৃহস্পতিবার হিজরি নববর্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ২৩ জুলাই রবিবার থেকে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যক্রম যথারীতি চালু থাকবে। বাতিলকৃত গ্রীষ্মকালীন ছুটি আগামী শীতকালীন ছুটির সাথে সমন্বয় করা হবে। এতে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে নতুন শিক্ষাক্রমে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাঠদান ও মূল্যায়নসহ অন্যান্য শ্রেণির পাঠদান ও পরীক্ষা কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়।
এদিকে বুধ ও বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশ না করে কয়েকজন অভিভাবক বলেন, শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তে তারা স্তম্ভিত।
তারা সংশ্লিষ্টদের কাণ্ডজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি অনেকটাই মহামারীর আকার ধারণ করেছে। এমন সময়ে যেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ ছুটি ঘোষণা করা প্রয়োজন সেখানে প্রাপ্য ছুটি থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে।
অবশ্য কেউ কেউ বলেছেন, শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এই ছুটি বাতিল করা যেতে পারে। কিন্তু সরকারকে এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান নিশ্চিত করতে হবে। কেননা, শিক্ষকদের একটি অংশ ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনে আছেন। বাকিদের মধ্যে অনেকেই ক্লাস ফাঁকি দেন।
এ প্রসঙ্গে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের নেতা শেখ মো. কাওছার বলেন, গ্রীষ্মের ছুটি বাতিল করায় কেবল শিক্ষকরা নন অভিভাবকরাও ক্ষুব্ধ। এই ছুটি বাতিল করা হয়েছে আসলে আন্দোলন থেকে শিক্ষকদের সরাতে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, গ্রীষ্মের ছুটি কিভাবে শীতকালে দিতে পারে। এটা একটা অপকৌশল।
চলারপথে রিপোর্ট :
চাঁদপুর নৌ পুলিশের অভিযানে ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা-মেঘনার অভয়াশ্রম এলাকায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জাটকা ধরায় ১৯ জেলেকে আটক এবং ৭ লাখ ২০ হাজার ৩০০ মিটার কারেন্টজাল জব্দ করা হয়েছে।
জেলেদের মধ্যে ১৭ জনের বিরুদ্ধে থানায় পৃথক মামলা এবং দুইজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। একই সময় নিয়ম লঙ্ঘন করে নদীতে বাল্কহেড চলাচল করায় ১৩টি বাল্কহেড জব্দ করে নৌ পুলিশ।
আজ ৪ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে চাঁদপুর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান এসব তথ্য জানান।
আটককৃত জেলেরা হলো-পারভেজ (১৯), শাকিল গাজী (১৯), কালাম মিজি (২৭), মামুন ছৈয়াল (১৯), মো. মহসীন (৩০), মো. লায়াজ মিয়াজ (৫০), নবী হোসেন (৩৫), রিয়াজুল (৪২), সজিব (২৮), ছোটন মিয়া (২২), বিল্লাল মিয়া, (২২) আবু বক্কর (৩২), জিয়াউর রহমান (৩৫), কামরুজ্জামান (৩৯), আলী হোসেন (২৯), কুদ্দুস আলী (৩৫) ও মো. হারুন (৩৯)। এসব জেলেদের বাড়ী লক্ষ্মীপুর, ভোলা, কিশোরগঞ্জ ও চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায়।
ওসি কামরুজ্জামান বলেন, সোমবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নৌ-পুলিশের একাধিক টিম অভিযান চালিয়ে অভয়াশ্রম এলাকায় জাটকা ধরা অবস্থায় তাদেরকে হাতে-নাতে আটক করে। তাদের বিরুদ্ধে থানায় নিয়মিত মামলা হয়েছে। দুইজন জেলে অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। জব্দকৃত কারেন্টজাল আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয় এবং জব্দকৃত ৫৫ কেজি জাটকা স্থানীয় গরীব ও দুস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
ওসি আরো বলেন, অভিযানের সময় চলাচলের জন্য সঠিক কাগজপত্র না থাকায় ১৩টি বালুবাহী বাল্কহেড জব্দ করা হয়। এর মধ্যে ১১টি সুকানির জিম্মায় প্রদান করা হয় এবং বাকি দুটি বাল্কহেড নৌ থানায় মামলার আলামত হিসেবে রাখা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী (বিএসএফের) বাঁধায় দীর্ঘ আড়াই বছর বন্ধ থাকার পর আখাউড়া-লাকসাম রেলওয়ে প্রকল্পের কাজ পুনরায় শুরু হয়েছে।
আজ ১২ মার্চ রবিবার বেলা ১১টায় বিজিবির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম কসবায় প্রকল্প কাজ পরিদর্শনের পর নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর আখাউড়া-লাকসাম রেলওয়ে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর প্রকল্পের কসবা ও সালদা নদী স্টেশন দুটির অবস্থান বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে হওয়ার কারণে বিএসএফ নির্মান কাজে আপত্তি তুলে। এক পর্যায়ে বিএসএফ’র বাঁধায় প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
পরে বিভিন্ন পর্যায়ের কুটনৈতিক তৎপরতা এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বিএসএফ’র সাথে কার্যকর যোগাযোগ শুরু করে।
অবশেষে আড়াই বছর পর বিএসএফের বাঁধায় দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা বহুল প্রতীক্ষিত আখাউড়া-লাকসাম রেলওয়ে প্রকল্পের কসবা ও সালদা নদী অংশের নির্মান কাজ পুনরায় হয়।
এ ব্যাপারে সরাইল রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম জানান, প্রকল্পটির অসম্পন্ন হওয়া কাজ পুনরায় শুরু করার জন্য বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলনে এবং রিজিয়ন, সেক্টর, ব্যাটালিয়ন, কোম্পানী ও বিওপি কমান্ডার পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট বিএসএফ কর্তৃপক্ষের সাথে বিজিবি সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ও কার্যকর বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করে। বিশেষ করে গত বছর ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলনে বন্ধ থাকা আখাউড়া-লাকসাম রেলওয়ে প্রকল্পের বিষয়টি জোরালো ভাবে উত্থাপন করা হয়।
একই বছর সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের নয়া দিল্লীতে বাংলাদেশ ও ভারত প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রকল্পটির বিষয়ে একটি ফলপ্রসু আলোচনা হয়। এছাড়াও অতি স¤প্রতি বাংলাদেশ ও ভারত উভয় রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মধ্যেও প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
তিনি জানান, গত ১ মার্চ বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ.কে.এম নাজমুল হাসান আখাউড়া আইসিপি, আখাউড়া-লাকসাম রেলওয়ে পকল্পের কসবা ও সালদা নদী স্টেশন এলাকা পরিদর্শন করেন এবং প্রকল্পটির বন্ধ থাকা কাজ খুব দ্রুত শুরু হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার দেশের অন্যতম জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু হয়।
এ ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক সুুবক্ত গীন জানান, প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শুরুর মধ্য দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ ডুয়েলগেজ প্রকল্পের সব ধরনের বাঁধা দূর হয়েছে। চলতি বছরই কাজটি শেষ হবে। এতে ট্রেনের সংখ্যা বাড়বে, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে সময়ও কমে আসবে।
এ সময় বিজিবি-৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক আশিক হাসান উল্লাহ, তমা গ্রুপের ট্রেগ ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মহিউদ্দিনসহ বিজিবি ও রেলওয়ের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।