চলারপথে রিপোর্ট :
দীর্ঘদিন কিডনি সমস্যায় ভুগছিলেন স্বপন কুমার সরকার। একপর্যায়ে দুটি কিডনিই বিকল হয়ে যায়। এর পর থেকেই কিডনি প্রতিস্থাপনের চেষ্টা চালাতে থাকেন রোগীর আত্মীয়-স্বজন। হন্যে হয়ে খুঁজে খুঁজে মিলানো যাচ্ছিল না কিডনি। তখনই এগিয়ে আসেন রোগীর স্ত্রী মায়া রানী সরকার। নিজের কিডনি দিয়ে স্বামীর জীবন বাচাঁলেন মায়া। এমন মানবিক ঘটনায় প্রশংসায় ভাসছেন স্ত্রী মায়া।
এ মানবিক ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে।
স্বপন-মায়া দম্পতি বর্তমানে ঢাকা কিডনি ফাউন্ডেশনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। স্বামীর জন্য স্ত্রীর এমন ত্যাগ এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
পরিবার সূত্র জানায়, প্রায় ২২ বছর আগে বিয়ে হয় স্বপন-মায়া দম্পতির। বর্তমানে তাদের রয়েছে দুই সন্তান। বড় ছেলে দীপ্ত সরকার (১৮) এ বছর এইচএসসি পাশ করেছে, আর ছোট ছেলে শান্ত সরকার তৃতীয় শ্রেণীতে অধ্যয়নরত।
জানা গেছে, স্বপন কুমার সরকার একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করাকালীন কিডনি সমস্যা ধরা পরে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানা যায়, তার দুটি কিডনি বিকল হয়ে পড়েছে। শুরু হয় ডায়ালায়সিস।
দেশের বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসাসহ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের চেন্নাইয়েও চিকিৎসা নেন। পরে চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, বেঁচে থাকতে হলে স্বপন সরকারের কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। অনেক খোঁজাখোঁজি করেও কিডনি পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে স্বামীর জীবন বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দিয়ে দেন মায়া রানী সরকার। গত ২১ জুন তাদের কিডনি প্রতিস্থাপন হয়।
স্বপন সরকারের ভাই মৃণাল কান্তি সরকার বলেন, ভাইকে জীবন বাঁচাতে আমার বৌদি নিজের একটি কিডনি দিয়েছে। এখন তারা হাসপাতালে সুস্থ আছে। বৌদি স্বেচ্ছায় তার স্বামীর জীবন বাঁচাতে কিডনি দিয়েছে। স্ত্রীর কিডনি দিয়ে স্বামীর প্রাণ বাঁচানোর ঘটনায় এলাকায় অনেকে ওই গৃহবধূর প্রশংসা করছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের গুরুত্ব, ডেঙ্গু, মানব পাচার, অপপ্রচার, গুজব, মাদক, সন্ত্রাস, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ, নৈতিকতা ও মূল্যবোধ, জম্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) কর্মসূচির আওতায় নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রবিবার সকালে জেলা তথ্য অফিস ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্যোগে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে ওই নারী সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো: ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইমরানুল হক ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: আমির আলী ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দাস। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, হ্যাপী চৌধুরী, আফরোজা আক্তার, খাদিজা বেগম প্রমুখ।
সমাবেশে প্রায় শতাধিক নারী উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইমরানুল হক ভূঁইয়া বলেন, আজকে দেশের প্রতিটি সেক্টরে নারী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি নারীদের গুজব থেকে বিরত থাকতে নানা বাস্তবমূখী উদাহরণ দেন। পাশাপাশি নানা সামাজিক কুপ্রথা প্রতিরোধ ও যৌতুক-বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে উপজেলা প্রশাসনের সহায়তা নেয়ার জন্য উপস্থিতিকে আহবান জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগর উপজেলায় আগস্টে সর্বাধিক দিন লাইব্রেরিতে উপস্থিত থেকে বই পড়ায় ২৩ শিক্ষার্থীকে পুরস্কার দেওয়া হয়।
১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়া শিক্ষার্থীদের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন।
পুরস্কার পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন বালিকা বিভাগে ২৭ দিন উপস্থিত থেকে ১ম হওয়া সাদিয়া বুশরা, হাফছা বেগম, নুসরাত সাকুরা, সুমাইয়া আফরিন, মহিমা রায়, সৃষ্টি রায়, লামিয়া আক্তার, আদ্রিতা, নুসরাত জাহান সোহা ও শাহ সামিয়া। ২০ দিন উপস্থিত থেকে ২য় হওয়া ইস্পা আক্তার। ১১ দিন উপস্থিত থেকে ৩য় হওয়া ইসরাত সানিয়া আক্তার। বালক বিভাগে ২৭ দিন উপস্থিত থেকে ১ম হওয়া স্নেহাল গোপ পান্না, তন্ময় সরকার, সৌমিক রায়, গগনদীপ কুন্ডু, পৃথিবী দাস সূর্য্য, আব্দুল গফফার মাহুদী, সৌভিক রায়, আরিয়ান ইসলাম সোহান ও ওমর ফারুক। ২৫ দিন উপস্থিত থেকে ২য় হওয়া সপ্তদীপ কুন্ডু। ২২ দিন উপস্থিত থেকে ৩য় হওয়া ক্বারি মো. আব্দুল্লাহ।
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়া জানান, বাংলাদেশের অনেক উপজেলায় কোন পাবলিক লাইব্রেরি নেই। নাসিরনগরবাসীর সৌভাগ্য যে উপজেলায় একটি পাবলিক লাইব্রেরি রয়েছে। সেটিতে পাঠক একেবারে ছিলো না। পাঠক বাড়ানোর লক্ষ্যে ফেব্রুয়ারি থেকে পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
কুয়েতে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় শেখ আবু বাক্কার (৩৪) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। আজ ১৮ নভেম্বর সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত ৩টার দিকে কুয়েতে প্রইভেটকার দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান।
নিহত আবু বাক্কার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা চাতলপাড় ইউনিয়নের কচুয়া সরিষাপুর গ্রামের আনসার বাড়ির মো. শেখ কবির আনসারীর ছেলে। আবু বাক্কার তিন সন্তানের বাবা।
আবু বাক্কারের স্বজনরা জানান, দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ কুয়েতে প্রবাসে জীবনযাপন করছেন শেখ আবু বাক্কার আনসারী। কুয়েতে তিনি প্রাইভেটকারে রাইড শেয়ারিং করতেন। ঘটনার দিন রাইড শেয়ারিং করতে গিয়ে তার প্রাইভেটকারটি দুর্ঘটনার শিকার হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
নিহতের প্রতিবেশী নিয়ামুল ভূইয়া জানান, শেখ আবু বাক্কার আনসারী দীর্ঘদিন যাবৎ কুয়েত প্রবাসে থাকেন। আজ রাতে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান। ব্যক্তি হিসেবে তিনি অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন। তার পরিবার লাশ আনার জন্য যোগাযোগ করছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে বিভিন্ন ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে নাসিরনগর থানা পুলিশ।
আজ ২৯ মে সোমবার দিনব্যাপী চলা এই অভিযান শেষে ৬৩ টি পল, ৩৭ টি চল, ১৪৭ টি চোখা শলা, ১৩১ টি বাঁশের লাঠি, ৭ টি আচরা, ১ টি রামদাসহ সর্বমোট ৩৮৬ টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
এসময়, ধরমন্ডল ইউনিয়নে নাসিরনগর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাবিবুল্লাহ সরকারের নেতৃত্বে এসআই মোঃ নুরে আলম, এএস আই শফিকুল ইসলাম, এএসআই শফিকুর রহমান, পূর্বভাগ ইউনিয়নে সঞ্জয় কুমার সরকার এর নেতৃত্বে এসআই আবু ইসহাক, এএসআই মহোসিন আলী এবং কুন্ডা ইউনিয়নে এসআই সৈয়দ আশরাফ উদ্দিন, এএসআই মোঃ আনোয়ারুল হক সঙ্গীয় ফোর্সসহ অভিযান পরিচালনা করেন।
শান্তি শৃংখলা রক্ষার্থে উপজেলা ব্যাপী এই অভিযান চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন নাসিরনগর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাবিবুল্লাহ সরকার।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির এক ডিলারের বিরুদ্ধে চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কর্মসূচির আওতায় সুবিধাভোগীদের ১৫ টাকা দরে ৩০ কেজি চাল দেওয়ার কথা। তবে দেওয়া হচ্ছে ২৭-২৮ কেজি। বিতরণের সময় সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে ট্যাগ অফিসার থাকার কথা থাকলেও সে নিয়ম মানা হচ্ছে না। এতে ঠকছেন হতদরিদ্ররা। বিষয়টি ডিলার স্বীকার করলেও একে অন্যকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন সঠিক ওজনে চাল দিচ্ছেন না ডিলার। উপজেলার ফান্দাউক গ্রামে এ অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত ডিলারের নাম মো. বদর আলম। তিনি ওই গ্রামের বাসিন্দা। এমন অভিযোগ পাওয়ার পর সরেজমিন গিয়ে সুবিধাভোগীদের চাল মেপে পাওয়া গেছে ২৮ কেজি।
উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, হতদরিদ্রদের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১৩টি ইউনিয়নে ২৬ ডিলার ও ৮ হাজার ৭০৫ উপকারভোগীর নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ফান্দাউক ইউনিয়নের ডিলার বদর আলমের মাধ্যমে ৩০৪ জন চাল পাচ্ছেন। গত ২২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়েছে চাল বিতরণের কাজ। শেষ হওয়ার কথা ৭ মার্চ।
গত সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে সরেজমিন দেখা গেছে, ডিলার বদরের দোকানের সামনে কয়েকশ লোক জড়ো হয়েছেন। তাঁরা কার্ড দেখিয়ে সারিবদ্ধভাবে চাল নিচ্ছেন। কয়েকজন ওজনে কম দেওয়ায় চাল না নিয়ে বাড়িতে চলে যান। প্রতিবাদ করলে নাম কেটে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁদের।
সেখানে কথা হয় শিউলি বেগম ও মুর্শিদা বেগমের সঙ্গে। তাঁরা জানান, অশিক্ষিত হওয়ায় মিটারের মাপ বোঝেন না। বাড়িতে চাল নিয়ে দেখেন তিন কেজি কম। বেশি কথা বললে নাম কেটে দেবে। এ জন্য কিছু বলার সাহস পান না।
আলাল মিয়া, নজরুল মিয়া ও পৈলন খাঁ অভিযোগ করেন, চাল নিতে এলে ডিলার বলেছে, দুই কেজি কম নিতে হবে। এ জন্য তাঁরা চাল নেবেন না। দুই বছর ধরেই কম দেওয়া হচ্ছে। চাল দেওয়ার সময় সরকারি লোক থাকার কথা। কিন্তু তারা ৫-১০ মিনিট থেকে চলে যায়। এ দিন সরকারি লোক আসেনি বলে জানান তাঁরা।
এসব অভিযোগের বিষয়ে ডিলার মো. বদর আলম বলেন, ‘আমার কী করার আছে। সরকারি গুদাম থেকে বস্তায় দু-তিন কেজি চাল কম থাকে। এরপরও আমি বলেছি ৩০ কেজি করে চাল দেওয়ার জন্য। হয়তো শ্রমিকরা ভুল করেছে।’ ট্যাগ অফিসার ছাড়া চাল দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আজকে ট্যাগ অফিসার আসেনি।’
সরকারি ট্যাগ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করার কথা উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারী মো. মোজাম্মেল হকের। তিনি সেখানে ছিলেন না। তিনি বলেন, ‘আমি সরকারি চাকরি করি। আমার দায়িত্ব হাসপাতালে। চাল বিতরণে অনিয়ম হলে সেটা আমার দেখার কথা না। সেটি দেখবেন খাদ্য কর্মকর্তা।’
ডিলার ও ট্যাগ অফিসারের এমন দাবির বিরোধিতা করে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার আচার্য বলেন, ‘চাল বিতরণের সময় ট্যাগ অফিসার উপস্থিত থাকবেন। গুদাম থেকে চাল কম দেওয়ার সুযোগ নেই।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফকরুল ইসলাম বলেন, হতদরিদ্রদের চাল বিতরণে ওজনে কম দেওয়ার সুযোগ নেই। অভিযোগ সত্য হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।