চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলায় পরিবারের লোকজনের হাতে মার খেয়ে আহত বাকপ্রতিবন্ধী এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আজ ২৩ জুন শুক্রবার রাতে প্রতিবন্ধী হেদায়েত উল্লার বাবা মজিদ মোল্লাকে আটক করেছে পুলিশ। এর আগে বৃহস্পতিবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বাকপ্রতিবন্ধী হেদায়েত উল্লাহ।
জানা যায়, কয়েক মাস আগে হেদায়েত উল্লাহর বাবা-ভাই মিলে তার স্ত্রী রাকিবা আক্তারকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। স্ত্রী রাকিবা আক্তারকে বাড়িতে আনার জন্য পরিবারের লোকজনের কাছে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করলেও তারা তার স্ত্রীকে আনতে রাজি হয়নি। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৬ জুন পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তর্কবিতর্ক করে হেদায়েত উল্লাহ। তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে হেদায়েত উল্লাকে মারধর করে বাবা-ভাইসহ পরিবারের লোকজন। পরে আহত অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে নবীনগর হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থা অবনতি হলে পরবর্তীতে তাকে ঢাকা নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু হয়।
তার স্ত্রী রাকিবা আক্তার বলেন, আমার স্বামীকে পরিবারের লোকজন নির্মমভাবে মারধর করে হত্যা করেছে। আমার একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। এখন আমি কি করব? আমি এর সঠিক বিচার চাই।
নবীনগর থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোহাম্মদ সোহেল বলেন, রাতেই আমরা অভিযুক্ত মজিদ মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে পরদিন প্রেরণ করেছি। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রাকিবা আক্তার বাদী হয়ে মজিদ মোল্লা, তার স্ত্রী ও ছেলের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে নিলুফা আক্তার (২১) নামে এক নারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
১৯ জানুয়ারি শুক্রবার দুপুরে নবীনগর উপজেলার কাইতলা উত্তর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণহাতা গ্রামের স্বামীর বাড়ি থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। তিনি একই গ্রামের মজিবুর রহমানের মেয়ে।
নবীনগর থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) সজল কান্তি দাশ জানান, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অনেক দিন ধরে কলহ চলে আসছিল। এরই জেরে স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে ওই নারী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। আমরা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠিয়েছি। হত্যা নাকি আত্মহত্যা ময়নাতদন্ত শেষে জানা যাবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলায় কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গত দুই বছর ধরে আবাদ হচ্ছে জাপানি মিষ্টি আলু “ওয়াকিনাওয়া”। রপ্তানি উপযোগী এই জাতের আলু ২০২১-২২ অর্থবছরে উৎপাদন করতে কৃষি বিভাগ থেকে ০৫ জন কৃষকের মাঝে কাটিং সরবরাহ করা হয়। গত বছরের উৎপাদিত মিষ্টি আলু দিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে আরো কয়েক জন কৃষকের মাঝে প্রদর্শনী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে উপজেলা কৃষি অফিস। নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামের নুরুল আমীন, চর লাপাংয়ে অহিদ মিয়া প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে সম্প্রসারিত হয়েছে। স্থানীয় আলুর তুলনায় এই আলুর আকার বেশ বড় এবং ভিতরের অংশ কমলা রঙের। স্থানীয় কৃষক এবং ভোক্তা পর্যায়ে এই মিষ্টি আলু “গাজর আলু” হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। নবীনগর উপজেলায় প্রতি বছর ১৭৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলু আবাদ হয়ে থাকে। অধিকাংশ জাত স্থানীয়, যার উৎপাদন কম হয়। পাশাপাশি রোগবালাই ও বিভিন্ন কীট-পতঙ্গ আক্রমণ করে বেশী, যা এ জাতের ক্ষেত্রে হয় না। জাপানি মিষ্টি আলু “ওয়াকিনাওয়া” বিঘা প্রতি গড় ফলন- ৭৫ মন। যা স্থানীয় বাজারে পাইকারি মূল্য কেজি প্রতি -২৫ টাকা।ওয়াকিনাওয়া আলু নিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন জানান, রপ্তানি উপযোগী এই মিষ্ট আলু সম্প্রসারিত হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা যাবে। আগে সাধারণ মানের স্থানীয় জাতের মিষ্টি আলুর আবাদ করা হতো। সে গুলো তেমন পুষ্টি গুণসম্পন্ন ছিল না। ওয়াকিনাওয়া জাতের আলুতে প্রচুর পরিমাণ এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এটি ক্যান্সার প্রতিরোধ এবং উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা হ্রাস করে। এ নতুন জাতের মিষ্টিআলুর চাষ করে কৃষকরা আর্থিক ভাবে লাভের স্বপ্ন দেখছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে সুশান্ত সরকার (৩০) নামের এক যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে খুনের খবর পাওয়া গেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শ্যামগ্রাম ইউনিয়নের নাসিরাবাদ গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নিতাই চন্দ্র সরকারের ছেলে সুশান্ত। তার দুই মাস বয়সী একটি পুত্র সন্তান আছে। পরিবারের অভিযোগ, গ্রামের আশিক নামের এক যুবক ১৮ আগস্ট রবিবার রাতে সুশান্তকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যান।
পরে আজ ১৯ আগস্ট সোমবার সকালে গ্রামের পাশে থাকা মেঘনা নদীর পাড়ে সুশান্তের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সুশান্ত সরকারের সঙ্গে একই গ্রামের তাহের মিয়ার ছেলে আশিক মিয়ার বন্ধুত্ব ছিল। ঘটনার দিন গত রবিবার রাতে আশিক সুশান্তের বাড়িতে আসেন। এরপর আশিক সুশান্তকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে চলে যান।
সুশান্তের মা রূপালী সরকার পুত্রশোকে বাড়ির উঠোনে বিলাপরত অবস্থায় বলেন, ‘আমার ছেলে একটি পুরনো মোটর সাইকেল আশিকের কাছে বিক্রি করেছিল। কিন্তু আশিক সেই টাকা পরিশোধ না করায়, এ নিয়ে সম্প্রতি আশিকের সাথে সুশান্তের একাধিকবার ঝগড়া হয়। এরই জের ধরে আশিক গতকাল রবিবার রাতে সুশান্তকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করে। পরে মেঘনার পাড়ে আমার ছেলের লাশ ফেলে রেখে যায়।
নবীনগর থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, ‘ঘটনার সংবাদ পেয়েই পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। এ বিষয়ে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১১ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে মায়ের সাথে চিকিৎসা করাতে গিয়ে সিয়াম নামে (৬ বছরের) শিশু সন্তান নিখোঁজ হয়ে গেছে। সন্তানকে খুঁজতে গিয়ে দিনভর নিখোঁজ রয়েছে ওই সন্তানের মা রিনা বেগম। নিখোঁজ সিয়াম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর পৌর এলাকার আলিয়াবাদ গ্রামের মালদ্বীপ প্রবাসী রায়হান মিয়ার ছেলে, রিনা বেগম তার স্ত্রী ।
সরেজমিনে নিখোঁজ সিয়ামের বাড়িতে গেলে তার চাচা ওবায়দুল হক বলেন, বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকাল দশটায় রিনা তার ছেলে সিয়ামকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যায়,চিকিৎসা শেষে ডাক্তারের পরামর্শ ও ওষুধ আনতে গেলে সেই সময় হারিয়ে যায় সিয়াম। হাসপাতালে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি, ওই সময় হাসপাতালের সামনে থাকা এক পথচারী রিনাকে বলেন, একটি ছেলে রসুল্লাবাদ গ্রামের অটোরিকশায় উঠতে দেখছি। এই কথা শুনে রিনা ছেলের খোঁজে বেড়িয়ে যায়। আমাকে দুপুর ১ টার দিকে ফোন করে সিয়াম নিখোঁজ হওয়াসহ এসব কথা জানান রিনা। তখন রিনা নবীনগর ফল বাজারে আছে এবং তার মোবাইলে চার্জ নেই একথাও আমাকে বলেছে। এটাই ছিলো তার সাথে শেষ কথা। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন নাম্বার বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।সংবাদ পেয়ে আমরাও সিয়ামকে খোঁজতে বেড়িয়ে যায়।
এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের ছবি দিয়ে নিখোঁজ হবার সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। দিন শেষে রাত হয়ে গেলো এখনো তাদের কোনো খোঁজখবর পাইনি।একদিকে ছেলে নিখোঁজ অন্য দিকে ছেলেকে খোঁজতে গিয়ে মা নিখোঁজ। এই ঘটনার পর থেকে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে গোটা নবীনগরে এলাকাবাসী ভীড় করছে সিয়ামদের বাড়িতে। পরিবারে চলছে শোকের মাতম। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত মা ও ছেলের কোন খবর পাওয়া যায়নি। বাজারের সিসি ক্যামেরা ফুটেজেও দেখা যাচ্ছে না তাদেরকে।
এ বিষয়ে নবীনগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ মাহবুব আলম বলেন, সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে,পুলিশ এ বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর পৌরসভার বিজয়পাড়ার বাসিন্দা সোহাগ মিয়া, তার স্ত্রী জান্নাতুল আক্তারকে দুই মেয়ে ফারিয়া ও ফাহিমাসহ পাশাপাশি দাফন করা হয়েছে।
২৮ জুলাই রোববার মাগরিব নামাজের পর জানাযা শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর পৌরসভার ইমামবাড়ি কবরস্থানে তাদেরকে দাফন করা হয়েছে। রোববার সকালে সোহাগের ঘর থেকে তাদের চারজনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
ময়নাতদন্ত শেষে চারজনের লাশ বাড়িতে এলে শত শত লোক লাশ দেখতে নিহতদের বাড়িতে ভিড় জমায়। গোসল শেষে তাদেরকে জানাযার জন্য নেয়া হয় নিমতলা মাঠে। সারিবদ্ধ করে রাখা হয় লাশগুলো। মাগরিব নামাজের পর তাদের চারজনের আলাদাভাবে জানাযা শেষে নবীনগর পৌরসভার ইমামবাড়ি কবরস্থানে পাশাপাশি কবরস্থ করা হয়।
জানাযায় শত শত মুসল্লি অংশ গ্রহণ করেন। মুসল্লিদের মুখে মুখে আলোচনায় ছিলো, সোহাগ খুব ভালো ছেলে, ছেলেটা নামাজী ছিলো, কী কারণে এমন একটা কাজ করলো? এমন প্রশ্ন ছিলো উপস্থিত সবার। নিহতের বাবা আমির হোসেন জানান, সোহাগ আমার বড় ছেলে। তাদের মধ্যে পারিবারিক কোনো সমস্যা ছিল না। রাতেও তারা হাসিখুশি ছিল। কী কারণে তার স্ত্রী, দুই শিশু সন্তানসহ গলায় ফাঁস লাগালো, কিছুই বুঝতে পারছি না। সোহাগের শাশুড়ি জানান, আমার ঘরের সঙ্গে আমার মেয়ের ঘর, সকাল হয়ে গেল। কিন্তু আমার মেয়ে ঘুম থেকে উঠছে না। অনেকবার ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে চিৎকার শুরু করি। আমার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এসে ঘরের দরজা ভাঙে। তখনই দেখতে পেলাম আমার মেয়ে, দুই নাতনি ও জামাই ফাঁসিতে ঝুলে আছে।
নবীনগর থানার ওসি মাহবুব আলম বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের লাশ দাফনের জন্য তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মুত্যুর কারণ জানতে আমাদের তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও তদন্ত শেষ হওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে।