অনলাইন ডেস্ক :
এ বছর ঢাকায় কোরবানির পশুর লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, যা গত বছর ছিলো ৪৭ থেকে ৫২ টাকায়। আর ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম হবে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা। গত বছর এ দাম ছিলো ৪০ থেকে ৪৪ টাকা।
অর্থাৎ গত বছরের চেয়ে গরুর চামড়ার দাম এ বছর ৬ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। ট্যানারি ব্যবসায়ীদের এ দরেই গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়া কিনতে হবে।
তবে ছাগল ও বকরির চামড়ার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এবারও সারা দেশে লবণযুক্ত খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১৮ থেকে ২০ টাকা, আর বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আজ ২৫ জুন রবিবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চামড়ার মূল্য নির্ধারণ ও সুষ্ঠু ব্যাবস্থাপনা সংক্রান্ত সভায় এ মূল্য নির্ধারণ করা হয়। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে চামড়ার এই দাম ঘোষণা করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
এ সময় তিনি বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা কারসাজির মাধ্যমে এবার কাঁচা চামড়ার দর কমানোর চেষ্টা করলে কাঁচা চামড়া রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
চট্টগ্রামে ভারী বর্ষণে নগরের টাইগারপাস এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। এসময় সড়কে চলাচল করা একটি মাইক্রোবাসের ওপর পাহাড়ের একাংশ ধসে পড়ে। এতে গাছগাছালি ভেঙে সড়কটিতে যানচলাচল বন্ধ ছিল ঘণ্টা কয়েক।
ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা গিয়ে সড়ক পরিষ্কার করলে যান চলাচল শুরু হয়। আজ ৪ আগস্ট শুক্রবার সকালে নগরের টাইগারপাস-লালখানবাজার সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, টাইগারপাসে রেলওয়ের মালিকানাধীন একটি পাহাড়ের একাংশ ধসে পাশে সিডিএ এভিনিউ সড়কে ছিটকে পড়ে। এতে সড়কের একাংশ যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। ছুটির দিন হওয়ায় সড়কে তেমন যান চলাচলও ছিল না। তাই কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। খবর পেয়ে সকাল সাড়ে আটটার দিকে এসে সড়কের মাটি সরানো শুরু করে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা। প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টার পর পাহাড় থেকে ধসে পড়া মাটি সরানো সম্ভব হয়। এরপর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ১ জুলাই টাইগারপাস এলাকার বাটালি হিলের ঢালে পাহাড় ও প্রতিরক্ষা দেয়াল ধসে মারা যায় একই পরিবারের পাঁচজনসহ ১৭ জন। এর আগে ২০০৭ সালের ১১ জুন চট্টগ্রাম নগরের কুসুমবাগ, কাইচ্যাঘোনা, সেনানিবাসের লেডিস ক্লাব সংলগ্ন লেবুবাগান, বায়েজিদ বোস্তামী, লালখান বাজারের মতিঝর্ণা পাহাড়সহ সাতটি স্থানে পাহাড় ধসে মাটিচাপা পড়ে মারা যায় শিশু-নারী ও বৃদ্ধসহ নানা বয়সের ১২৭ জন।
অনলাইন ডেস্ক :
‘স্মার্ট বাংলাদেশ টাস্ক ফোর্স’কে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রযুক্তি ছড়িয়ে দিতে কাজ করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ডিজিটাল ডিভাইস নতুন সুযোগের দ্বার উন্মোচন করছে। এর সুফল পেতে দেশে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে হবে।
আজ ৩ আগস্ট বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ টাস্ক ফোর্স’-এর প্রথম বৈঠকে তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল ডিভাইস আমাদের সামনে নতুন দ্বার উন্মোচন করছে এবং সেজন্য আমাদের উপযুক্ত দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে।’
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, তারা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলছেন তার জন্য দেশের নাগরিকদের প্রস্তুত থাকতে হবে, যেখানে সকল মানুষ ডিজিটাল ডিভাইস এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করতে জানবে। খবর বাসসের
প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে দেশের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি যথাযথ পরিকল্পনার ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘আমাদের উচিত মানুষের সৃজনশীলতা, তাদের চিন্তাভাবনা এবং এগিয়ে যাওয়ার ধারণার বিকাশের সুযোগ তৈরি করা। আমাদের উচিত শিক্ষাসহ সব খাতে এগুলো ব্যবহার করা।’
নতুন প্রজন্মকে স্মার্ট বাংলাদেশের উপযোগী করে গড়ে তোলার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য নতুন প্রজন্মকে শিক্ষা ও প্রযুক্তি দিয়ে গড়ে তুলতে হবে।
দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা স্মার্ট বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল ডিভাইস, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন। স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের জন্য আমাদের এখন থেকেই প্রস্তুত হতে হবে এবং ধাপে ধাপে কী করতে হবে সে বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের জনশক্তি আমাদের বড় শক্তি, এবং সেই অনুযায়ী আমাদের জনশক্তি প্রস্তুত করতে হবে।’
তিনি বিভিন্ন দেশের ভাষা শেখা, শিক্ষার মান বৃদ্ধি এবং বিষয়ভিত্তিক অধ্যয়নের পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়নের ওপরও জোর দেন। তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশে কোনো দারিদ্র্য থাকবে না, যেখানে মানুষ উন্নত ও সমৃদ্ধ জীবনযাপন করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশে উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশ ঘটিয়ে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করাই আমাদের লক্ষ্য।’
দেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা ১৯৯৬ সালে যখন ক্ষমতা গ্রহণ করি, তখন সারা বিশ্বে ইন্টারনেট এবং কম্পিউটার ব্যবহার করা হচ্ছিল, কিন্তু আমরা তাদের পেছনে ছিলাম। এতেই বোঝা যায় যে আমরা কতটা পিছিয়ে ছিলাম তখন।’
এরপর তিনি বলেন, ‘সেই জায়গা থেকে, আমরা আজ এত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছি এবং এখন অনেক উন্নত দেশও আমাদের চেয়ে পিছিয়ে আছে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
‘জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন করি, নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করি’ এই প্রতিপাদ্যে বগুড়ায় জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে আজ ৬ অক্টোবর শুক্রবার সকালে বগুড়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শহরে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়।
র্যালি শেষে বেলা ১০টায় জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে আলোচনা করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক মাসুম আলী বেগ। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, জম্ম নিবন্ধন ও মৃত্যু নিবন্ধন নাগরিকের মৌলিক অধিকার। বর্তমানে সরকারি সুযোগ সুবিধা নিতে হলে প্রথমে প্রয়োজন জম্ম নিবন্ধন। একটি শিশু জম্ম নেওয়ার পর ৪৫ দিনের মধ্যে জম্ম নিবন্ধন বিনা খরচে করা যায়।
কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আল মারুফ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আকতার, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. শাহনাজ পারভীন, বগুড়া পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহজাহান আলম, প্যানেল মেয়র-২ আলহাজ শেখ, সারিয়াকান্দি পৌরসভার মেয়র মতিউর রহমান মতি, বগুড়া সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ডালিয়া নাসরিন রিক্তা।
এ সময় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সচিববৃন্দ, গ্রাম পুলিশের সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে শ্রেষ্ঠ হওয়ায় সারিয়াকান্দি পৌরসভার মেয়র মতিউর রহমান মতিসহ দুইজন ইউনিয়ন পরিষদ সচিব ও একজন গ্রাম পুলিশকে-কে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আরও এক দফা বাড়ানো হলো। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হজের নিবন্ধন করা যাবে। হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আরো পাঁচ দিন বাড়িয়ে আজ ২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এটিই শেষবারের মতো সময় বৃদ্ধি বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
সাড়া না মেলায় এরই মধ্যে হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় তিন দফা বাড়ানো হয়। সর্বশেষ আট দিন বাড়ানোর মেয়াদ শেষ হয় বৃহস্পতিবার। কিন্তু এখনো ৪৭ হাজারের বেশি কোটা খালি আছে।
সময় শেষ হওয়ায় ওইদিন হজের নিবন্ধনের সময় বাড়ানোর দাবি জানায় হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। এই প্রেক্ষাপটে সময় ফের বাড়ানো হলো।
হজের নিবন্ধনের সময় বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২০২৪ সালে হজে গমনেচ্ছু ব্যক্তি, হজ এজেন্সি, হজ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় বিশেষ বিবেচনায় শেষবারের মতো আগামী ৬ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হলো। এ সময়ের মধ্যে ২ লাখ ৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন বা প্যাকেজের সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করে চ‚ড়ান্ত নিবন্ধন করা যাবে।
প্রাথমিক নিবন্ধন করা হলে প্যাকেজের অবশিষ্ট মূল্য আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আবশ্যিকভাবে একই ব্যাংকে জমা দিয়ে চ‚ড়ান্ত নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। অন্যথায় এ বছর হজে যাওয়া যাবে না এবং প্রদত্ত অর্থ ফেরত দেওয়া হবে না বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন (১৪৪৫ হিজরি সনের ৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। গত বছরের মতো এবারও বাংলাদেশের হজযাত্রীর কোটা এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এজেন্সির মাধ্যমে এক লাখ ১৭ হাজার জন হজ পালন করতে পারবেন।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মোট ৭৯ হাজার ৮৬২ জন হজযাত্রী নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ১৬৫ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭৫ হাজার ৬৯৭ জন। সেই অনুযায়ী, এখনো ৪৭ হাজার ৩৩৬ জন নিবন্ধন করেননি।
গত বছরের ১৫ নভেম্বর থেকে হজযাত্রী নিবন্ধন শুরু হয়। প্রথম নিবন্ধনের সময় ছিল ১০ ডিসেম্বর। পরে নিবন্ধনের সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। হজযাত্রীদের সাড়া না পাওয়ায় সর্বশেষ নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ে ১৮ জানুয়ারি করা হয়।
সৌদি আরবকে এবারের হজযাত্রীর সংখ্যা জানানোর তাগিদ থাকায় নিবন্ধনের সময় আর বাড়ানো হবে না বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়। কিন্তু হজ এজেন্সিগুলোর চাপে শেষ পর্যন্ত হজের নিবন্ধনের সময় ২৫ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সেই সময় বৃহস্পতিবার শেষ হয়। এরপর আবার বাড়ানো হলো নিবন্ধনের সময়।
অনলাইন ডেস্ক :
পদত্যাগের পর দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ প্রধান ও উৎখাত হওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের এক মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আজ ১৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। অপর দুই সদস্য হলেন, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
মামলার পরবর্তী তারিখ ১৮ নভেম্বর রেখে এই সময়ের মধ্যে আসামিকে আদালতে হাজির করতে বলা হয়েছে।
গত ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর প্রথমবারে মতো বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার কাজ শুরু হয়। এদিন বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে কোর্টের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর চিফ প্রসিকিউটর মামলার আবেদন পড়ে শোনান।
এ সময় সংবিধানের বিভিন্ন সংশোধনী, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে গুম, খুন, তথ্য প্রযুক্তি আইনে হওয়া মামলার পরিসংখ্যান, অর্থ পাচারের পরিসংখ্যান এবং সর্বশেষ ছাত্র আন্দোলনে বল প্রয়োগের তথ্য তুলে ধরেন।
চিফ প্রসিকউটর আদালতে বলেন, আসামির বিরুদ্ধে তদন্তে গণহত্যার প্রাথমিক অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। আসামি প্রভাবশালী। এখনো দেশের বিভিন্নস্থানে আসামির লোকজন বিভিন্ন পজিশনে আছে। তাই আলামত নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া মামলার তদন্ত কাজ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করছি।
এক পর্যায়ে আদালত জানতে চান, রাষ্ট্রীয়ভাবে আসামির অবস্থান জানেন কিনা। জবাবে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, না।
তারপর আদালত চিফ প্রসিকিউটরের আবেদন মঞ্জুর করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। আর ১৮ নভেম্বর মামলার পরবর্তী তারিখ রেখে এই সময়ের মধ্যে আসামিকে আদালতে হাজির করেত বলেন।
পরে তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছিলাম। আদালত আমাদের আবেদন মঞ্জুর করেছেন। আদালত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছেন। ১৮ নভেম্বরের মধ্যে তাকে গ্রেফতার করে এই আদালতে উপস্থিত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে জুলাই আন্দোলনে নিহতদের পক্ষ থেকে আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঘটনার তারিখ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া এ সময়ে আহত হয়ে পরবর্তীতে বিভিন্ন তারিখে নিহতরা এর আওতায় থাকবে। ঘটনার স্থান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সমগ্র বাংলাদেশকে।
অপরাধের ধরণে উল্লেখ করা হয়েছে, এক থেকে নয় নম্বর আসামির নির্দেশ ও পরিকল্পনায় অন্যান্য আসামিরা দেশিয় ও আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাদের হত্যা করে তাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দেশে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অপরাধ।
গণহত্যার অভিযোগে এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, ১৪ দলীয় জোটের শরীক দলের নেতৃবৃন্দ, পুলিশের তৎকালীন আইজিসহ বেশ কয়েকজন সদস্য, র্যাবের তৎকালীন ডিজি, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে।
স্বাধীনতার ৩৯ বছর পর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০১০ সালের ২৫ মার্চ। পরে ২০১২ সালের ২২ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-২ নামে আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দুটিকে একীভূত করে আবার একটি ট্রাইব্যুনাল করা হয়। এখন একটি ট্রাইব্যুনালে (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১) চলছে বিচারকাজ।
গত ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের কিছুদিন পরেই ট্রাইব্যুনালের তৎকালীন চেয়ারম্যান অবসরে যান। আর এক সদস্যকে হাইকোর্টে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। অপর সদস্য অব্যাহতি নেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ আমলে নিয়োগ পাওয়া প্রসিকিউটররা পদত্যাগ করেন।
পরবর্তীতে গত ৫ সেপ্টেম্বর চিফ প্রসিকিউটরসহ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অনুবিভাগ।
এদিকে গত ১৪ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এরপর ১৫ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে যোগ দেন তিন সদস্যের বিচারক প্যানেল। ১৬ অক্টোবর তাদেরকে এজলাসে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। আর প্রথমবারের মতো বৃহস্পতিবার বিচার কার্যক্রম শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল।