অনলাইন ডেস্ক :
নিজ ঘরের মানুষের বিদ্রোহে সব উলট-পালট করে দেয়। যেমনটি ঘটেছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের ক্ষেত্রে। তার দীর্ঘদিনের সঙ্গী ওয়াগনার প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন হঠাৎ বিদ্রোহ করে বসে। আর এতে সব হিসাব পাল্টে যেতে থাকে। দ্রুত ঘুরে যেতে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধে মোড়। রাশিয়া যুদ্ধের ময়দান ছেড়ে নিজ ঘর রক্ষায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তবে ২৪ ঘন্টা পার না হতে সেই ভয়ঙ্কর পরিস্তিতি থেকে বেরিয়ে আসছে পেরেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। বলা চলে বেঁচে গেলে তিনি।
দুই দশকের বেশি সময় ধরে রাশিয়ার একচ্ছত্র ক্ষমতায় রয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। দিন দিন বেড়েছে সেই ক্ষমতা। রাজনৈতিক জীবনে বহু বাধা আর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি পড়তে হয়েছে তাকে। সেসব উৎরেই এই পর্যন্ত এসেছেন তিনি। ইউক্রেনে আক্রমণ শুরুর পর থেকে নানা সংকট তাকে নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। তবে সেই পরিস্থিতি হঠাৎ করে কালবৈশাখীতে রুপ নেয় বেসরকারি আধা-সামরিক বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের বিদ্রোহ।
ভয়ংকর এক দিন পার করেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। বলা হচ্ছে, ক্ষমতাসীন পুতিনকে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ করে এত বড় হুমকিতে এর আগে ফেলতে পারেনি কেউ। তবে এই যাত্রায় ‘বেঁচে’ গেলেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
জানা গেছে, রাশিয়ার ভাড়াটে ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন ‘রক্তপাত এড়াতে’ তার অনুগতদের মস্কোমুখী যাত্রা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং তিনি নিজে বেলারুশে নির্বাসিত জীবনযাপন করতে রাজি হয়েছেন। এর মাধ্যমে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের রাজনৈতিক জীবনে নেমে আসা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্চের অবসান হলো বলে ধারণা করা হয়েছে।
নতুন কয়েকটি ভিডিওতে দেখা যায় যে প্রিগোঝিন ও তার বাহিনী দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় রোস্তভ-অন-ডন ত্যাগ করছে।
এদিকে বেলারুশের প্রেসিডেন্টের সাথে করা চুক্তির ব্যাপারে ক্রেমলিন খুব বেশি কিছু বলছে না। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ বলেছেন, প্রিগোঝিনকে প্রেসিডেন্ট পুতিন ‘কথা দিয়েছেন’ যে তিনি বেলারুশে যেতে এবং সেখানে বসবাস করতে পারবেন। আর তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো প্রত্যাহার করা হবে।
এর আগে রাশিয়ার রাজধানী দখলের উদ্দেশে লিপেৎস্ক থেকে ২০০ কিলোমিটার এগিয়ে গিয়েও আচমকা থমকে যায় প্রিগোঝিনের ভাড়াটে সেনাবাহিনী। কারণ হিসাবে জানানো হলো, রক্তপাত এড়াতেই আপাতত মস্কো অভিযান স্থগিত। ভাড়াটে সেনাবাহিনীর প্রধান প্রিগোঝিন নিজের টেলিগ্রামে জানিয়েছেন, রক্তপাত এড়াতেই মস্কো দখলের পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি, বিবিসি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, বেলারুসের নেতা আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সাথে এ বিষয় নিয়ে কথা হয় ভাড়াটে সেনাবাহিনীর প্রধান প্রিগোঝিনের। তার পরেই প্রিগোঝিন মস্কোর দিকে ধাবমান সেনাসদস্যদেরকে ফিরে আসার নির্দেশ দেন।
চলতি সপ্তাহেই ইউক্রেনের সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডে বড় অভিযান শুরু করে বিদ্রোহী ওয়াগনার বাহিনী। প্রিগোজিনের মালিকানাধীন ভাড়াটে যোদ্ধারা শনিবার সকালে ইউক্রেন সীমান্তের অদূরে পশ্চিম রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ শহর ভোরোনেজ দখল করে বলে কয়েকটি পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দাবি করা হয়েছে। এর আগে ওয়াগনার বাহিনী শুক্রবার ইউক্রেন সীমান্ত লাগোয়া রোস্তভ-অন-ডন শহরের দখল নিয়েছিল। প্রিগোজিন দাবি করেছেন, একটি গুলি খরচ না-করেও রোস্তভ-অন-ডন শহরে সেনার সদর দফতর দখল করে তার বাহিনী। আর এতে সহায়তা করেছেন স্থানীয়েরা। তিনি একটি অডিও-বার্তা দিয়ে জানিয়েছিলেন, গোটা দেশের তার বাহিনীকে সমর্থন করা উচিত। কারণ তার বাহিনী ‘ন্যায়ের পদযাত্রায় নেমেছে। রোস্তভ-অন-ডন থেকে মস্কোর দূরত্ব প্রায় হাজার কিলোমিটার। এর পর মস্কোর দিকে আরো ২০০ কিলোমিটার এগিয়ে যায় তারা। কিন্তু তার পরেই আচমকা বন্ধ অভিযান।
কিন্তু আচমকা কেন মন বদল হলো একদা পুতিনের সহচর প্রিগোঝিনের? তার একাধিক ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে। বিবিসির নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাংবাদিক ফ্রাঙ্ক গার্ডনারের দাবি, মস্কো অভিযান অসমাপ্ত রাখার চাপের উৎস রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনই। লুকাশেঙ্কোকে কাজে লাগিয়ে তিনি ভাড়াটে বাহিনীকে ঘোল খাইয়ে দিলেন। পাশাপাশি, গার্ডনারের বক্তব্য, প্রিগোঝিন মস্কো দখলের অভিযানে যোগ দিতে যে প্রকাশ্য বার্তা দিয়েছিলেন জনসাধারণের কাছে, তা-ও কাজে আসেনি। রাশিয়ার সেনাবাহিনীর মধ্যে বিদ্রোহ তো দূরঅস্ত , সাধারণ মানুষকেও খুব বেশি সংখ্যায় ভাড়াটে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে দেখা যায়নি। তাই সম্ভবত দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থা থেকেই মস্কো অভিযান বাতিল করার ভাবনা প্রিগেঝিনের। মস্কো অভিযান বাতিল হলো বটে, কিন্তু এর পর কী হবে প্রিগোঝিনের? তার রাজনৈতিক বা সামরিক ভবিষ্যৎ কিন্তু এখন পুতিনের মুঠোবন্দি, এমনটাই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের একটি অংশ।
একদা পুতিন-ঘনিষ্ঠ হোটেল ব্যবসায়ী প্রিগোঝিনের ওই ভাড়াটে বাহিনী রুশ সেনাবাহিনীর অংশ নয়। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে তারা রুশ বাহিনীর সহযোগী হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। অতীতে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে গৃহযুদ্ধেও লড়েছে এই পেশাদার ভাড়াটে বাহিনী। ইউক্রেন যুদ্ধের কৌশল নির্ধারণ নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং সেনাপ্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভের সাথে মতবিরোধ চলছিল প্রিগোঝিনের। রুশ সেনাবাহিনী পরিকল্পিতভাবে ওয়াগনার যোদ্ধাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছিল বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি। এ বার সরাসরি মস্কোর বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে ধরেছে প্রিগোজিনের ভাড়াটে যোদ্ধারা।
ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে প্রায় ২০ হাজার ওয়াগনার যোদ্ধা মস্কো দখলের অভিযানে নেমেছিল বলে একাধিক সংবাদ মাধ্যম দাবি করেছিল। তাদের রুখতে রুশ ‘চপার’ (যুদ্ধ হেলিকপ্টার) ধারাবাহিক আক্রমণ চালাচ্ছিল। এমনকি, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় সাধারণ নাগরিকদের প্রাণহানির ঝুঁকি সত্ত্বেও আকাশপথে হামলা চালানো হয়। প্রেসিডেন্ট পুতিন শনিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেন, ‘বিশ্বাসঘাতকেরা সমুচিত জবাব পাবে।’ প্রিগোঝিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেন তিনি।
শনিবার সন্ধ্যায় যখন রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর দিকে এগিয়ে আসছিল প্রিগোঝিনের ভাড়াটে বাহিনী, এই পরিস্থিতিতে বাসিন্দাদের শহরে ঘুরে বেড়ানোর বিষয়ে সতর্ক করছিলেন মস্কোর মেয়র সেরগেই সোবিয়ানিন। তিনি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন, ‘পরিস্থিতি কঠিন। আমি বলব, যতটা সম্ভব শহরে ঘুরে বেড়ানো বন্ধ করুন।’ তিনি এ-ও জানিয়েছিলেন, শহরের বেশ কিছু রাস্তা বন্ধ থাকবে। রাশিয়ার রোস্টভ শহর দখল করেছে ওয়াগনার যোদ্ধারা। ইউক্রেন-সংলগ্ন দক্ষিণ রাশিয়ার রোস্টভ অঞ্চলের গভর্নরও বাসিন্দাদের ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু ভারতীয় সময় মধ্যরাতেই নাটকীয় পালাবদল!
একদা পুতিন-ঘনিষ্ঠ
প্রিগোজিন একদা পুতিন-ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন। পেশায় হোটেল ব্যবসায়ী। তার ওই ভাড়াটে বাহিনী রুশ সেনার অংশ নয়। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে তারা রুশ বাহিনীর সহযোগী হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। অতীতে লিবিয়া, সিরিয়া, মোজাম্বিক, সুদানের মতো দেশে গৃহযুদ্ধেও লড়েছে প্রায় ৪০ হাজার যোদ্ধার এই পেশাদার ভাড়াটে বাহিনী। ইউক্রেন যুদ্ধের কৌশল নির্ধারণ নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং সেনাপ্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভের সাথে মতবিরোধ চলছিল প্রিগোজিনের। রুশ সেনাবাহিনী পরিকল্পিতভাবে ওয়াগনার যোদ্ধাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছিল বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি। এবার সরাসরি মস্কোর বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে ধরেছে প্রিগোঝিনের ভাড়াটে যোদ্ধারা।
‘ন্যায়ের পদযাত্রা’
চলতি সপ্তাহেই ইউক্রেনের সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডে বড় অভিযান শুরু করেছিল বিদ্রোহী ওয়াগনার বাহিনী। প্রিগোঝিনের মালিকানাধীন ভাড়াটে যোদ্ধারা শনিবার সকালে ইউক্রেন সীমান্তের অদূরে পশ্চিম রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ শহর ভোরোনেজ দখল করে বলে কয়েকটি পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দাবি করা হয়েছিল। এর আগে ওয়াগনার বাহিনী শুক্রবার ইউক্রেন সীমান্ত লাগোয়া রোস্তভ-অন-ডন শহরের দখল নিয়েছিল। প্রিগোজিন দাবি করেছেন, একটি গুলি খরচ না-করেও রোস্তভ-অন-ডন শহরে সেনার সদর দফতর দখল করেছে তার বাহিনী। আর এতে সহায়তা করেছেন স্থানীয়েরা। তিনি একটি অডিও-বার্তা দিয়ে জানিয়েছেন, গোটা দেশেরই তার বাহিনীকে সমর্থন করা উচিত। কারণ তার বাহিনী ‘ন্যায়ের পদযাত্রা’য় নেমেছে। রোস্তভ-অন-ডন থেকে মস্কোর দূরত্ব প্রায় হাজার কিলোমিটার। এর পর মস্কোর দিকে আরো কয়েক শ’ কিলোমিটার এগোয় তারা। তার পরেই অভিযান বাতিল ঘোষিত হয়। সূত্র : আল জাজিরা, সিএনএন, বিবিসি ও অন্যান্য।
অনলাইন ডেস্ক :
সৌদি আরবে বাস দুর্ঘটনায় নিহত বাংলাদেশি ওমরাহ যাত্রীর সংখ্যা বেড়ে ১৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আরও ১৬ বাংলাদেশিকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
২৯ মার্চ বুধবার রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
নিহত ১৮ বাংলাদেশি হলেন-
১। রুকু মিয়া, পিতা: কালা মিয়া, থানা/উপজেলা: কসবা, জেলা: ব্রাহ্মণবাড়িয়া;
২। মো. ইমাম হোসাইন রনি, পিতা: মো. আব্দুল লতিফ, থানা/উপজেলা: টঙ্গী, জেলা: গাজীপুর;
৩। খাইরুল ইসলাম;
৪। মো. রাসেল মোল্লা;
৫। মো. নজরুল ইসলাম, পিতা: কাউসার মিয়া, থানা: কোতয়ালী, জেলা: যশোর;
৬। রুহুল আমিন;
৭। সবুজ হোসাইন, পিতা:মো. হারুন, উপজেলা: রায়পুর, জেলা: লক্ষ্মীপুর;
৮। মো. হেলাল উদ্দিন, নোয়াখালী;
৯। মোহাম্মদ আসিফ, উপজেলা: মহেশখালী, জেলা: কক্সবাজার;
১০। শাফাতুল ইসলাম, উপজেলা: মহেশখালী, জেলা: কক্সবাজার;
১১। শাহিদুল ইসলাম, পিতা: মো. শরিয়ত উল্লাহ, উপজেলা: সেনবাগ, জেলা: নোয়াখালী;
১২। তুষার মজুমদার;
১৩। মামুন মিয়া, পিতা: আব্দুল আউয়াল, উপজেলা: মুরাদনগর, জেলা: কুমিল্লা;
১৪। মিরাজ হোসাইন;
১৫। গিয়াস, পিতা: হামিদ, উপজেলা: দেবিদ্বার, জেলা: কুমিল্লা;
১৬। মো. হোসাইন, পিতা: কাদের হোসাইন, উপজেলা: রামু, জেলা: কক্সবাজার;
১৭। সাকিব, পিতা: আব্দুল আউয়াল;
১৮। রানা মিয়া।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বুধবার রাতে জানিয়েছেন, সৌদি আরবে যেই বাসটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে, তাতে ৪৭ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন ৩৪ জন। বাস দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আরও ১৬ বাংলাদেশি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সূত্র জানায়, সৌদি আরবের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় আসির প্রদেশে ওমরাহ যাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত হয়েছেন। গত ২৭ মার্চ ওমরাহ যাত্রী বহনকারী বাসটি একটি সেতুর ওপরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। একপর্যায়ে বাসটি উল্টে আগুন ধরে যায়।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আসির প্রদেশ ও আভা শহরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী ওই সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারানোয় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। নিহতরা ওমরাহ পালন করতে মক্কা যাচ্ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক-বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ১৭৫টি রকেট ছুড়েছে লেবাননের ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। ৭ অক্টোবর রোববার মধ্যরাত থেকে সোমবার মধ্যরাত পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এসব রকেট ছোড়া হয় বলে জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি। এ হামলায় এখন পর্যন্ত কোনো ইসরায়েলে হতাহতের কোনো ঘটনাও ঘটেনি।
এদিকে, ইসরায়েলের সম্প্রচার সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ১২ জানায়, উত্তর ইসরায়েলের নাহারিয়া, হাইফা, এক্রে এবং ক্রায়ট শহরকে লক্ষ্য করে শতাধিক রকেট ছুড়েছে হিজবুল্লাহ। তবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগেই অধিকাংশ রকেট ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান অভিযানের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এদিনই হামাস জানায়, সোমবার তেল আবিবকে লক্ষ্য করে বেশকিছু রকেট ছুড়েছে গোষ্ঠীটি।
ইরানের সমর্থনপুষ্ট হিজবুল্লাহকে ধ্বংস করতে চলতি বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে দক্ষিণ লেবাননে অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। হিজবুল্লাহর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি ও সামরিক স্থাপনাগুলো রয়েছে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে।
লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনীর গত প্রায় ২ সপ্তাহের অভিযানে ১ হাজার ২৫১ জন নিহত, ৩ হাজার ৬১৮ জন আহত এবং ১২ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ ও গোষ্ঠীটির কয়েকজন শীর্ষ কমান্ডারও রয়েছেন।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র নিউজিল্যান্ডে শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছে। আজ ২৪ এপ্রিল সোমবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টা ৪১ মিনিট নাগাদ এ ভূমিকম্প আঘাত হানে। মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ১।
ইউএসজিএস প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিল, ভূমিকম্পের মাত্রা ৭ দশমিক ৩ কিন্তু পরে তা ৭ দশমিক ১-এ নামিয়ে আনে।
দেশটির কেরমাডেক দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হানা ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার। শক্তিশালী ওই ভূমিকেম্পর কয়েক মিনিটের ব্যবধানে ৫ দশমিক ৪ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে।
শক্তিশালী ওই ভূমিকম্পের পর উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে দ্রুত নিরাপদে সরে যাওয়ার আহ্বান জানায় কর্তৃপক্ষ। পরে বেশ কিছু সময় পর্যবেক্ষণ শেষে নিউজিল্যান্ডের জাতীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা (এনএএমএ) কোনো সুনামির শঙ্কা নেই বলে আশ্বস্ত করে।
প্রাথমিকভাবে ভূমিকম্পে কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানির তথ্য জানায়নি কর্তৃপক্ষ।
গত ১৬ মার্চ একই দ্বীপপুঞ্জে ৭ দশমিক ১ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। ওই সময় সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়। যা কিছু সময় পর তুলে নেওয়া হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
পঞ্চমবারের মতো বিয়ে করেছেন মিডিয়া মোগল ও ধনকুবের রুপার্ট মারডক। এই বিয়ের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় মারডকের আঙুরবাগানে।
৯৩ বছর বয়সী মারডক গত শনিবার ৬৭ বছর বয়সী এলেনা জুকোভার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন। এলেনা একজন অবসরপ্রাপ্ত রুশ জীববিজ্ঞানী। চলতি বছরের মার্চে মারডকের সঙ্গে এলেনার বাগ্দান হয়। তখনই নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল, জুনে দু’জনের বিয়ে।
গত বছরের মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা চ্যাপলেইন (পুলিশের বিশেষ পরামর্শক) অ্যান লেসলি স্মিথের সঙ্গে মারডকের বাগ্দান হয়েছিল। তারা বিয়ের পরিকল্পপনাও করেছিলেন। কিন্তু বাগ্দানের পরের মাসে (গত বছরের এপ্রিল) হঠাৎ বিয়ে ভেঙে যাওয়ার খবর আসে। তখন থেকেই এলেনার সঙ্গে মারডকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠার খবর ছড়িয়ে পড়ে।
অ্যানের সঙ্গে মারডকের প্রথম দেখা হয়েছিল ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে, ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি অনুষ্ঠানে। পরিচয় পরে গড়ায় প্রণয়ে। অ্যানের সঙ্গে প্রেম ও বাগ্দানের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে মারডক বলেছিলেন, ‘প্রেমে পড়ার পর আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমি জানতাম যে এটাই আমার শেষ প্রেম। এটা ভালো, আমি ভীষণ খুশি।’ শেষ পর্যন্ত অ্যানের সঙ্গে মারডকের আর ঘর বাঁধা হয়নি।অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নেওয়া মারডকের ছয় সন্তান আছে। তিনি নিউজ করপোরেশনের ইমেরিটাস চেয়ারম্যান। নিউজ করপোরেশনের মালিকানায় রয়েছে ফক্স নিউজ, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, সান ও টাইমসের মতো গণমাধ্যম।
গত বছর ফক্স ও নিউজ করপোরেশনের চেয়ারম্যান পদ ছাড়েন মারডক। তিনি তাঁর ছেলে লাচলান মারডককে উভয় সংস্থার প্রধানের দায়িত্ব দেন।
জানা যায়, মারডক ও এলেনার দেখা হয়েছিল একটি পার্টিতে। এই পার্টির আয়োজক ছিলেন চীনা বংশোদ্ভূত উদ্যোক্তা ওয়েন্ডি ডেং। তিনি মারডকের সাবেক স্ত্রী। ১৯৯৯ সালে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। বিচ্ছেদ ২০১৩ সালে।
মারডকের অন্য সাবেক স্ত্রীরা হলেন অস্ট্রেলিয়ান ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট প্যাট্রিসিয়া বুকার, স্কটিশ বংশোদ্ভূত সাংবাদিক আন্না মান ও মার্কিন মডেল-অভিনেত্রী জেরি হল।
মারডক প্রথম বিয়ে করেছিলেন ১৯৫৬ সালে, প্যাট্রিসিয়াকে। ১৯৬৭ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। একই বছর আন্নাকে বিয়ে করেন মারডক। ১৯৯৯ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। ২০১৬ সালে জেরিকে বিয়ে করেন মারডক। ২০২২ সালে বিচ্ছেদ হয়।
পঞ্চম স্ত্রী এলেনার আগে বিয়ে হয়েছিল। তাঁর সাবেক স্বামী রুশ তেল ব্যবসায়ী আলেকজান্ডার জুকোভা।
গত শতকের পঞ্চাশের দশকে অস্ট্রেলিয়ায় কর্মজীবন শুরু করেন মারডক। ১৯৬৯ সালে তিনি যুক্তরাজ্যে নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড ও সান সংবাদপত্র কিনে নেন। পরে তিনি নিউইয়র্ক পোস্ট, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালসহ বেশ কয়েকটি মার্কিন সংবাদপত্র কেনেন।
১৯৯৬ সালে ফক্স নিউজ চালু করেন মারডক। এটি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে দর্শকপ্রিয় টিভি নিউজ চ্যানেল। নানা কারণে মারডক আলোচিত-সমালোচিত।
সূত্র : বিবিসি
অনলাইন ডেস্ক :
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। এই পরোয়ানার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে কানাডা। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, আমরা আন্তর্জাতিক আইনের পক্ষে দাঁড়াই এবং আন্তর্জাতিক আদালতের সব নিয়ম ও রায় মেনে চলব। এটি আমাদের পরিচয়ের অংশ।
আইসিসি গত বৃহস্পতিবার এই পরোয়ানা জারি করে। এতে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ এর অভিযোগ আনা হয়। এই অপরাধগুলো ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে সংঘটিত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। একইসঙ্গে হামাসের সামরিক প্রধান মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধেও পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
২২ নভেম্বর শুক্রবার যুক্তরাজ্যের সরকার ইঙ্গিত দেয়, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাজ্যে গেলে তাকে আইসিসি পরোয়ানার ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হতে পারে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের মুখপাত্র জানান, যুক্তরাজ্য সব সময় তার আইনগত বাধ্যবাধকতা মেনে চলে, যা দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক আইনে নির্ধারিত। তবে নেতানিয়াহুকে গ্রেফতার করা হবে কি না, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
যুক্তরাজ্য ও কানাডার পাশাপাশি বেলজিয়াম, ফ্রান্স, নরওয়ে, সুইডেন, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং তুরস্কসহ আরো কয়েকটি দেশ আইসিসির এই পদক্ষেপকে সমর্থন করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এই পরোয়ানাকে ‘অযৌক্তিক’ বলে আখ্যা দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, আইসিসির এই সিদ্ধান্তে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে কোনো সমতুল্যতা নেই। আমরা সবসময় ইসরায়েলের পাশে থাকব।
অন্যদিকে, মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স এই পরোয়ানাকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, যে কোনো পক্ষের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নির্বিচার হামলা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন এবং মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনে।”
উল্লেখ্য, জি-সেভেন জোটের দেশগুলো—যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্র—আইসিসির এই পদক্ষেপে বিভক্ত। কানাডা এবং যুক্তরাজ্য আইসিসির রায় মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিলেও যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপকে নিন্দা জানিয়েছে। তবে আর্জেন্টিনা, অস্ট্রিয়া এবং হাঙ্গেরির মতো কিছু দেশ আইসিসির সিদ্ধান্তের সাথে দ্বিমত পোষণ করেছে।
আইসিসির এই পরোয়ানা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভিন্নমত তৈরি করেছে। একদিকে কিছু দেশ আইনের প্রতি আনুগত্য দেখাচ্ছে, অন্যদিকে কয়েকটি দেশ এই সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।