চলারপথে রিপোর্ট :
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে গত ১৪ জুন থেকে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা শুরু হয়েছে। স্বল্পমূল্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সেবা পেতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন সেবাগ্রহীতারা। কিন্তু চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে বৈকালিক এই সেবা দিতে যথাসময়ে উপস্থিত না থাকার অভিযোগ উঠেছে। ফলে দীর্ঘক্ষণ রোগীদের প্রতীক্ষা করতে দেখা গেছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী শুক্রবার বাদে সপ্তাহের ছয়দিন বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসকরা বৈকালিক সেবা দেবেন। রোগীদের সিনিয়র কনসালটেন্ট দেখাতে ৪০০ টাকা, জুনিয়র কনসালটেন্ট ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখাতে ৩০০ টাকা এবং মেডিকেল অফিসার দেখাতে ২০০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষাও করা হয় নির্ধারিত ওই সময়ে।
২৪ জুন শনিবার সরেজমিনে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে রোগীদের অভিযোগের সত্যতা মেলে। বহির্বিভাগের দু’তলায় চিকিৎসকদের চেম্বারের সামনে রোগীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। এরমধ্যে দায়িত্ব বণ্টন অনুযায়ী মেডিসিন বিভাগে ডা. জুয়েল চৌধুরী, অর্থোপেডিক বিভাগে ডা. হুমায়ূন কবির রেজা, গাইনি বিভাগে ডা. শরীফ মাসুমা ইসমত, তৃতীয় তলায় চক্ষু বিভাগে ডা. আমীর উল্লাহ, নিচতলায় চর্মরোগ বিভাগে ডা. জাকারিয়াকে বিকেল ৪টায়ও তাদের চেম্বারে পাওয়া যায়নি।
বিকেল ৪টার পর চেম্বারে আসেন মেডিসিন বিভাগের ডা. জুয়েল চৌধুরী, সোয়া ৪টায় আসেন অর্থোপেডিক বিভাগের ডা. হুমায়ূন কবির রেজা এবং চর্মরোগ বিভাগের ডা. জাকারিয়া। সাড়ে ৪টায় এসে আবার সোয়া ৫টায় চলে যান গাইনি ডা. শরীফ মাসুমা ইসমত।
মেডিসিন বিভাগের সামনে বসে থাকা সরাইলের শাহবাজপুরের সুমন ও ঘাটুরার টিপু জানান, তারা বিকেল ৩টা থেকে চিকিৎসকের চেম্বারের সামনে বসে আছেন। এখন বিকেল ৪টা বাজে কিন্তু চিকিৎসক চেম্বারে আসেননি।
অর্থোপেডিক বিভাগের সামনে বসে থাকা আলম মিয়া বলেন, কিছুদিন আগে আমার হাত ভেঙে গেছে। শুনেছি বিকেলে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক বসেন। এক ঘণ্টা ধরে অর্থোপেডিক চিকিৎসক হুমায়ূন কবির রেজার চেম্বারের সামনে বসে আছি।
অহিদ মিয়া নামে আরেকজন জানান, দীর্ঘ এক ঘণ্টা অর্থোপেডিক ডাক্তারের চেম্বারের সামনে বসে ছিলাম। তিনি আসলেন বিকেল সোয়া ৪টার দিকে।
এ বিষয়ে জানতে অর্থোপেডিক চিকিৎসক হুমায়ূন কবির রেজার মোবাইলফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
চর্মরোগ বিভাগের চিকিৎসক মো. জাকারিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি চেম্বারে ছিলাম না তা সত্য। কোনো রোগী আসলে আমাকে কল দেয়, তখন আসি।
এ বিষয়ে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তত্ত্বাবধায়ক ডা. ওয়াহীদুজ্জামান বলেন, বৈকালিক চিকিৎসকরা যেন নিয়মানুযায়ী চেম্বারে আসেন, সে বিষয়ে আমি তাদের বলবো। বিষয়টি নিয়ে অচিরেই মিটিং করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিখোঁজের চারদিন পর মো. তারু মিয়া (৬০) নামে এক বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ ২৭ এপ্রিল শনিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের বুধল উত্তর পাড়ায় বাড়ির পার্শ্ববর্তী ডোবা থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। সে বুধল উত্তর পাড়ার তিনু মিয়ার ছেলে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন জানান, বৃদ্ধ তারু মিয়া গত ২৪ এপ্রিল রাতে বুধল বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হন। তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়নি। পরে ২৬ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তার পরিবারের সদস্যরা। আজ দুপুরে বাড়ির পাশের ডোবায় একটি মরদেহ ভেসে থাকতে দেখে লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের পরিচয় শনাক্ত করে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠায়। ঘটনাটির তদন্ত চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালন করেছে। আজ ২৯ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল থেকে এ কর্মসূচি পালন করতে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস চত্বরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
একপর্যায়ে দুপুরের দিকে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানটির একাডেমিক ভবন ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। এ সময় প্রতিবাদ সমাবেশসহ নানান স্লোগানে ক্যাম্পাস চত্বর মাতিয়ে তোলেন তারা।
বিক্ষোভকালে বক্তব্য রাখেন, কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মো. জামিল আহম্মেদ সিয়াম, মোহাম্মদ সাগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী রুমি আক্তার, মোহাম্মদ রাকিব হোসেন প্রমুখ। এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, যে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে তা যৌক্তিক দাবি। এই দাবি বাস্তবায়িত হলে কারিগরি শিক্ষার ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে। অথচ একটি মহল নিজের স্বার্থে এই দাবিগুলোকে অযৌক্তিক বলে দাবি করছে। পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে এ যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলন করে আসলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোন ফলপ্রসূ উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাই এই দাবি আদায় হওয়া না পর্যন্ত কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। দ্রুতই দাবি মানা না হলে ভবিষ্যতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ডিগ্রি কলেজে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ও আহতদের স্মরণে সভা অনুষ্ঠিত হয়। কলেজের অধ্যক্ষ হরিলাল চন্দ্র দেবনাথের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কলেজের গভর্ণিং বডির সভাপতি জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আলহাজ্ব এ.বি.এম. মোমিনুল হক। প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন কলেজের বিদ্যোৎসাহী সদস্য এড. শামসুজ্জামান কানন। পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রধান মোশারফ হোসেন এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কলেজের উপাধ্যক্ষ আসমা বানু, সিনিয়র শিক্ষক মোঃ ফরিদ উদ্দিন, মাসুম মিয়া, সাইফুর রহমান মামুন। আলোচনা পর্বের মাঝে মাঝে হামদ্, নাত ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন ও বক্তব্য প্রদান করেন ছাত্র ছাত্রী প্রতিনিধিবৃন্দ। প্রধান অতিথি আলহাজ্ব এ.বি.এম. মোমিনুল হক ছাত্র শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে শহীদ মুগ্ধ’র নামে টি.এ.রোড ফ্লাইওভার, শহীদ ওমরের নামে সিমনা ব্রীজ এবং শহীদ তানভীনের নামে রাধিকা-নবীনগর ব্রীজ এর নামকরণ বাস্তবায়নের জন্য সকলকে সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্টার আহবান জানান। আলোচনা পর্ব শেষে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনার পাশাপাশি দেশ ও জাতির স্থিতিশীলতা, উন্নতি মঙ্গল কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন কলেজের প্রভাষক মোঃ আব্দুল কাইয়ুম।
চলারপথে রিপোর্ট :
সারা দেশের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ২৭ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত ৫৩ জন আক্রান্ত ব্যক্তি জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এখনও কারো মৃত্যু হয়নি।
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের স্বজন ও সাধারণ মানুষের অভিযোগ, পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো মশক নিধনের জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ না ছেটানোর কারণে বিভিন্ন বর্জ্য, নালা ও ড্রেনে ডেঙ্গু মশার উপদ্রব বাড়ছে। এর ফলে জেলায় অনেক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. একরাম উল্লাহ্ বলেন, জেলায় এখন পর্যন্ত ১৪০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৬৭ জন সুস্থ হয়েছে এবং ৭৩ জন রোগী জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হওয়ার সংখ্যা বেশি। এছাড়া আক্রান্ত রোগীদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়াতে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণের পাশাপাশি বিভিন্ন কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার বলেছেন, দেশের আপামর জনগোষ্টীর মধ্যে চিকিৎসা সেবাকে পৌঁছে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছেন। ইহারই ধারা বাহিকতায় সরকারি অর্থায়নে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরে প্রতিষ্ঠিত হার্ট ফাউন্ডেশন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কার্যক্রমকে তৃণমূল পর্যায়ে হৃদরোগীদের চিকিৎসা সেবায় পৌঁছে দিতে কমিউনিটি স্বাস্থ্য কর্মীদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি ২৪ ফেব্রুয়ারি হার্ট ফাউন্ডেশন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ‘‘সেবা কার্যক্রম সম্পর্কে স্বাস্থ্য কর্মীদের অবহিত করন শীর্ষক’’ এক কর্মশালায় সভাপতির বক্তৃতায় এই আহবান জানান।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সিভিল সার্জন ডা: মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে ডা: ডিউক চৌধুরী, সদর উপজেলা ও বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, ডা: মাহমুদুল হাসান এবং ডা: জহিরুল ইসলাম প্রমুখ আলোচ্য বিষয়ে কমিউনিটির স্বাস্থ্য কর্মীদের ভূমিকা সম্পর্কে আলোকপাত করেন।
সেমিনারের অন্যান্যের মধ্যে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মিন্টু ভৌমিক, ব্যবস্থাপনা কমিউনিটির সদস্য এডভোকেট মোঃ হাবিবুল্লাহ, ফরিদা নাজমিন, জেসমিন খানম, তাজুল ইসলাম বাবু ও মোঃ জাকারিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।