ভেজাল খাদ্য উৎপাদন, দুই লাখ টাকা জরিমানা

জাতীয়, 3 July 2023, 691 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বাগেরহাটে সুনামধন্য কিছু কোম্পানির নামের মোড়ক ব্যবহার করে খাবার স্যালাইন, শিশুদের খাবার, জুস, বিড়ি, গুলসহ বিভিন্ন ধরনের বিপুল পরিমাণ খাদ্যপণ্য জব্দ করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

আজ ৩ জুলাই সোমবার দুপুরে সদর উপজেলার চিতলী-বৈটপুর বাজারে ব্যবসায়ী আলামিন শেখ বাবুর গোডাউনে অভিযান চালিয়ে এসব ভেজাল পণ্য জব্দ করা হয়। পরে স্থানীয়দের সামনে এসব পণ্য ধ্বংস করা হয়। এ সময় ব্যবসায়ী আলামিন শেখ বাবুকে দুই লাখ টাকা জরিমানা এবং তার দোকানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। ব্যবসায়ী আলামিন শেখ বাবুকে একই অপরাধে এর আগেও একবার জরিমানা করা হয়েছিল।

অভিযানে র‌্যাব-৬ খুলনার কোম্পানি কমান্ডার মো. বদরুদ্দোজা, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাগেরহাটের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরান, বাগেরহাট জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা আব্দুস সালাম তরফদারসহ পুলিশ ও র‌্যাবের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাগেরহাটের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরান বলেন, দেশের নামিদামি কোম্পানির মোড়কে বিভিন্ন নকল পণ্য উৎপাদন ও বিক্রির সংবাদ পেয়ে আলামিন শেখ বাবুর দোকানে অভিযান চালানো হয়। অভিযানের খবর পেয়ে দোকান ও গোডাউন মালিক বাবু পালিয়ে যায়। পরে দোকানে থাকা দুই কর্মচারীর তথ্য অনুযায়ী গোডাউন থেকে বিপুল পরিমাণ ভেজাল ও নকল পণ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে ওরস্যালাইন, শিশুদের খাবার, জুস, মশলা, চানাচুর, বিড়ি, গুলসহ অন্তত ৫০ প্রকারের খাবার ছিল। আমরা খাবারগুলোকে ধ্বংস করেছি। পলাতক মালিক আলামিন শেখ বাবুকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

র‌্যাব-৬ খুলনার কোম্পানি কমান্ডার মো. বদরুদ্দোজা বলেন, ভেজাল ও নকল খাদ্যের বিরুদ্ধে র‌্যাবের এই ধরনের অভিযান একটি চলমান প্রক্রিয়া। ভবিষ্যতেও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Leave a Reply

আন্দোলনে আহতদের দেখতে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে প্রধান…

অনলাইন ডেস্ক : ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের খোঁজখবর নিতে রাজধানীর Read more

বাঞ্ছারামপুরে শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচারের…

চলারপথে রিপোর্ট : বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির সহনশীলতায় বিশ্বাস করে, শান্তিপ্রিয় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাক্তন স্কাউটদের বিশেষ সাধারণ সভা

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাক্তন স্কাউটস সংগঠনের গঠনতন্ত্র প্রণয়ন ও Read more

আখাউড়ায় মাকে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যুর কোলে…

চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত মাকে দেখামাত্র অসুস্থ Read more

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ইকুয়েডরকে হারাল ব্রাজিল

অনলাইন ডেস্ক : ইকুয়েডরের বিপক্ষে রদ্রিগোর একমাত্র গোলে জয়ের দেখা Read more

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ও হতাহতদের…

চলারপথে রিপোর্ট : বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, জেলা ছাত্রদল, যুবদলের Read more

মালয়েশিয়ায় একদিনে অভিযানে ২২২ বাংলাদেশি আটক

অনলাইন ডেস্ক : মালয়েশিয়ার কেদাহ রাজ্যে অভিযান চালিয়ে ২২২ জন Read more

নবীনগরে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ’র ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকী…

চলারপথে রিপোর্ট : উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় সঙ্গীত জগতের কিংবদন্তি ‘সুরসম্রাট’ খ্যাত Read more

ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর মৃত্যুবার্ষিকী আজ

চলারপথে রিপোর্ট : আজ ৬ সেপ্টেম্বর ‘সুরসম্রাট’ ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর Read more

জাতীয় সঙ্গীতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে উদীচীর…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় সঙ্গীতের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে Read more

সালমান শাহকে হারানোর আজ ২৮ বছর

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের বাঁক ঘোরানো তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা Read more

দু’দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে আহত প্রায়…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুটিসহ দেশে ৫০ মডেল মসজিদের উদ্বোধন

কসবা, জাতীয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 17 January 2023, 2510 Views,
স্টাফ রিপোর্টার :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ২টিসহ দেশে আরও ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সারাদেশে মডেল মসজিদগুলো খুলে দেন।
গতকাল সোমবার দুপুরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি সারা দেশের মডেল মসজিদ উদ্বোধনকালে জেলা সদরের ছয়বাড়িয়ায় একটি ও কসবা উপজেলা সদরে একটি মডেল মসজিদের উদ্বোধন করেন। এ উপলক্ষে শহরের ছয়বাড়িয়া মডেল মসজিদের হলরুমে ইসলামী ফাউন্ডেশন ও গণপূর্ত বিভাগের আয়োজনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেন, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাকিউল আলম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম শেখ, ইসলামী ফাউন্ডেশন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপপরিচালক আশিকুর রহমান, জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজুর রহমান ওলিও, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এডঃ মোঃ লোকমান হোসেনসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, সাংবাদিক, আলেম-ওলামাগণসহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। গণপূর্ত অধিদপ্তর ২৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে মডেল মসজিদ দুটি নির্মাণ করেছে।

এদিকে দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫০টি মসজিদ খোলার মাধ্যমে, প্রধানমন্ত্রী এখন পর্যন্ত ৯৪৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৫৬৪টির মধ্যে ১০০টি মসজিদ উদ্বোধন করলেন। তিনি এর আগে ২০২১ সালের ১০ জুন প্রথম ধাপে ৫০টি মসজিদ উদ্বোধন করেছিলেন। আশা করা হচ্ছে, আগামী ফেব্রুয়ারির শেষে তৃতীয় ধাপে আরও ৫০টি মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র চালু করা হবে।

মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মসজিদগুলোতে ওজু ও নামাজের জন্য আলাদা জায়গা রয়েছে। এছাড়া হাজীদের জন্য রেজিস্ট্রেশন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, গবেষণা কেন্দ্র ও ইসলামিক লাইব্রেরি, অটিজম কর্নার, লাশ দাফনের আগের প্রস্তুতি, গাড়ি পার্কিং সুবিধা, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ও কুরআন শিক্ষার ব্যবস্থা, ইসলামী সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের জন্য সম্মেলন কক্ষ ও থাকবে। ইসলামিক দাওয়াত, ইসলামী বই বিক্রয় কেন্দ্র এবং দেশী-বিদেশী অতিথিদের জন্য বোর্ডিং সুবিধা থাকবে। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান বক্তব্য দেন। বিভিন্ন জেলা থেকেও কর্মসূচিতে ভাচুয়ালি যুক্ত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দল, সরকারি কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষ। অনুষ্ঠানে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ওপর একটি ভিডিও-ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
ইসলামের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে শেখ হাসিনা সারাদেশে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল ইসলামী ভ্রাতৃত্ব এবং এর মূল্যবোধের প্রচার এবং সেইসাথে চরমপন্থা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ইসলামের সারমর্ম প্রচার করা কারণ ধর্ম কখনই এগুলোকে সমর্থন করে না।

এটি সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- প্রচারের পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টিতেও মনোনিবেশ করবে। এ ক্যাটাগরির অধীনে, ৬৪টি জেলা ও সিটি কর্পোরেশন এলাকায় লিফট সুবিধা এবং ফ্লোর স্পেস ২,৩৬০.০৯ বর্গমিটার বিশিষ্ট প্রায় ৬৯টি চারতলা মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। বি ক্যাটাগরির অধীনে, প্রতিটি ১৬৮০.১৪ বর্গ মিটার ফ্লোর স্পেসসহ ৪৭৫টি মসজিদ তৈরি করা হচ্ছে এবং উপকূলীয় অঞ্চলে সি ক্যাটাগরির অধীনে ১৬টি মসজিদের প্রতিটি ২,০৫২.১২ বর্গ মিটার মেঝে থাকবে।
জাতির পিতা ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন আইন, ১৯৭৫ প্রণয়ন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর চিন্তাধারার সাথে সঙ্গতি রেখে প্রকল্পটি সারা দেশে এই মসজিদ এবং ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী ইসলামী সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে তোলার দিকেও দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।

উদ্বোধন হওয়া ৫০টি মসজিদ হলো: ভাঙ্গা উপজেলা ও ফরিদপুরের নগরকান্দা, গাজীপুরের কাপাসিয়া, গোপালগঞ্জের সদর উপজেলা, সদর উপজেলা ও কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী, ঘিওর উপজেলা ও মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া, সদর উপজেলা ও নরসিংদীর মনোহরদী, গোয়ালন্দ উপজেলা মডেল মসজিদ রাজবাড়ি, জেলা সদর শরীয়তপুর ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা, ধুনট উপজেলা ও বগুড়ার নন্দীগ্রাম, নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলা, নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলা, ভাঙ্গুড়া ও সুজানগর উপজেলা পাবনা, সিরাজগঞ্জের কাজীপুর, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন, রংপুরের কাউনিয়া ও গঙ্গাচরা ঠাকুরগাঁওয়ের সদর উপজেলা, শেরপুরের সদর উপজেলা, পিরোজপুরের সদর উপজেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলা ও কশবা, খাগড়াছড়ির সদর উপজেলা ও মানিকছড়ি, কুমিল্লার চান্দিনা ও চৌদ্দগ্রাম, খুলনার রূপসা, খোকসা ও ভেড়ামারা কুষ্টিয়া। জেলা সদর ও গাংনী মেহেরপুর, সাতক্ষীরার দেবহাটা, সিলেটের গোয়াইনঘাট, জেলা সদর ও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর, হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট।

বিএনপি না এলেই ভোট একতরফা নয় : ওবায়দুল কাদের

জাতীয়, 22 November 2023, 415 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি না এলেই নির্বাচন একতরফা নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ ২২ নভেম্বর বুধবার ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে কমনওয়েলথ প্রি-ইলেকশন অ্যাসেসমেন্ট মিশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

বিএনপিকে নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আসবে না বলেই নির্বাচন একতরফা হবে এটা ঠিক নয়, অনেকেই নির্বাচনে অংশ নেবে। একটি দলকে ঘিরে নির্বাচনে সিদ্ধান্ত হতে পারে না।

বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের মতামত প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত কারও নেতিবাচক কোনো মতামত দেখিনি। তবে বিদেশিদের মতামতে আমাদের মাথাব্যথাও নেই।

এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাইরের কে নিষেধাজ্ঞা দিলো, সেটা নিয়ে আমরা ভাবি না। আমাদের দেশের নির্বাচন, আমরা একটা স্বাধীন দেশ, আমাদের সংবিধান আছে, আমাদের সংবিধানের আলোকে আমাদের ইচ্ছায় নির্বাচন হবে। অন্য কারো নির্দেশ বা নিষেধাজ্ঞায় হবে না। তিনি বলেন, যারা নির্বাচনে বাধা দেবে, নিষেধাজ্ঞা তাদের দেবে। আমাদের কেনো? আমরা তো শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পক্ষে।

এসময় মনোনয়ন নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের মনোনয়ন প্রক্রিয়াটা গণতান্ত্রিক। সেটা হলো- আমাদের জনমত জরিপ, সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব সেল আছে, এতে কার অবস্থান কী উঠে আসে। সব মিলিয়ে যার নম্বর বেশি, মনোনয়নে তাকেই বিবেচনা করা হয়। গ্রহণযোগ্য প্রার্থীকে আমরা মনোনয়ন দেবো।

কমনওয়েলথ পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আলোচনা ইতিবাচক। তাদের নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া আছে বলে মনে হয়েছে।

‘সেতুমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা এবং নির্বাচন কমিশনকে আইনগত কাঠামো দিয়ে যুক্ত করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। সংসদীয় আইনের মাধ্যমে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থায় আইনের সংস্কার করা হয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের নির্বাচন কমিশন ঢেলে সজানো, অবাধ সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য শেখ হাসিনার নানান পদক্ষেপ আমরা তাদের জানিয়েছি। আমরা তাদের কাছে জানতে চেয়েছি, পৃথিবীতে গণতন্ত্রে পারফেক্ট কোন দেশ? তারাও সেটি আছে, বলে বলতে পারেনি।

একতরফা নির্বাচনের অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, অনেকগুলো দলতো নির্বাচনে আসছে। একটা দলকে লক্ষ্য করে বা বিএনপি আসবে না বলে একতরফা হবে? আমার মনে হয়, এভাবে বলা সঠিক হবে না।

বুধবার বেলা ১১টায় তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে এ বৈঠক শুরু হয়। ১২টার পর শেষ হয় এ বৈঠক। পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৈঠকে অংশ নেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্নেল (অব) ফারুক খান, নির্বাচন পর্যবেক্ষক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান জিয়াউদ্দিন, সদস্য সচিব এবং অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক প্রমুখ।

যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সশস্ত্র বাহিনীকে সক্ষম করে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 2 March 2024, 272 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সরকার যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক, সময়োপযোগী ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। যাতে তারা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্ষম হয়। আমরা চাই, আমাদের এই সশস্ত্র বাহিনী দেশের যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপযুক্তভাবে গড়ে উঠবে।’

আজ ২ মার্চ শনিবার সকালে রাজশাহী সেনানিবাসে বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টাল সেন্টারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দ্বিতীয় বৃহত্তম রেজিমেন্ট, ‘বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্ট’ তথা ‘বীর’ এর তৃতীয় পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন সরকারপ্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর সেনাবাহিনীতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পদাতিক ডিভিশন, ব্রিগেড, ইউনিট ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে এবং আধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার পদক্ষেপ আমরা হাতে নিয়েছি। কাজেই আমরা চাই, আমাদের এই সশস্ত্র বাহিনী দেশের যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপযুক্তভাবে গড়ে উঠবে।’

সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে শুরু করে যেকোনো ক্ষেত্রেই আমাদের সশস্ত্র বাহিনী জনগণের পাশে দাঁড়ায়। শুধু তাই নয়, দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য ব্যাপকভাবে তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং আমাদের সশস্ত্র বাহিনীও সেভাবেই মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রেখে যাচ্ছে।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘কাজেই এভাবেই আমরা সবাই এক হয়ে আমাদের দেশকে গড়ে তুলে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব, এটাই আমাদের লক্ষ্য। ইতোমধ্যেই আমরা আমাদের দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি নিচ্ছি। তাছাড়া দারিদ্র বিমোচন করে দেশকে আরও উন্নত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়ায় আজকের বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের রোল মডেল বলে পরিচিতি পেয়েছে। আজকের বাংলাদেশকে এখন আর কেউ অবহেলা করতে পারে না। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। আমরা সেভাবেই সামনের দিকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একটি আধুনিক, পেশাদার ও চৌকস সশস্ত্রবাহিনী গঠনের লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালে প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়ন করেন। তার নির্দেশেই ১৯৭২ সালে কুমিল্লায় গড়ে তোলা হয় বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি। এ ছাড়া তিনি কম্বাইন্ড আর্মস স্কুল ও প্রতিটি কোরের জন্য ট্রেনিং সেন্টারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। জাতির পিতার সুদূরপ্রসারী প্রতিরক্ষা নীতির আলোকেই আমরা ‘প্রতিরক্ষা নীতি ২০১৮’ ও ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ প্রণয়ন করেছি এবং ধারাবাহিকভাবে সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়ন করা হচ্ছে।”

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দুর্জয়, দুরন্ত, নির্ভীক–এই মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের সঙ্গে রয়েছে আমার গভীর বন্ধন। কারণ, জাতির যে আকাঙ্ক্ষা ছিল বাংলাদেশের নামে একটি রেজিমেন্ট হবে। ২০০১ সালেই সেই রেজিমেন্ট আমরা প্রতিষ্ঠা করি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর এই রেজিমেন্টকে ‘রেজিমেন্টাল কালার’ প্রদান করি এবং ২০১১ সালে আমিই এই রেজিমেন্টকে মর্যাদাপূর্ণ ‘জাতীয় পতাকা’ প্রদান করি। বর্তমানে এই রেজিমেন্টে দুটি প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নসহ মোট ৪৬টি ইউনিট রয়েছে।” ‘এই ইউনিটের সদস্যরা দেশ ও দেশের বাইরে দক্ষতা, সুনাম ও দেশপ্রেমের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে’, উল্লেখ করে সরকারপ্রধান আশা প্রকাশ করেন, ‘তারা এই যে কাজের মধ্যদিয়ে সুনাম অর্জন করেছেন, তা অব্যাহত রেখে এগিয়ে যাবেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনী এখন শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও অবদান রেখে যাচ্ছেন এবং দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনছেন। আমাদের সশস্ত্র বাহিনী যেখানেই যাচ্ছে, সেখানেই তারা মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করছে। সূত্র : বাসস

ডেঙ্গুতে আরো চারজনের মৃত্যু

জাতীয়, 28 November 2023, 380 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার সকাল আটটা পর্যন্ত) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরো চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একজন ঢাকায় ও তিনজন ঢাকার বাইরে। এ নিয়ে নভেম্বরের চার সপ্তাহে মৃত্যু হয়েছে ২৬২ জনের। গত একদিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে ৯৫৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে ঢাকায় ২০১ জন ও ঢাকার বাইরে ৭৫৮ জন।

আজ ২৮ নভেম্বর মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে উল্লেখ করা হয়, এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এক হাজার ৬১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ৯৩১ জন ও ঢাকার বাইরে ৬৭৯ জন। চলতি বছরের ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন তিন লাখ ১০ হাজার ৪৬ জন। এর মধ্যে ঢাকায় এক লাখ সাত হাজার ৪৯৯ জন ও ঢাকার বাইরে দুই লাখ দুই হাজার ৫৪৭ জন।

বর্তমানে সারা দেশে তিন হাজার ৫৬৭ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক হাজার জন ও ঢাকার বাইরে দুই হাজার ৫৬৭ জন। চলতি মাসের ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩৮ হাজার ৮৭১ জন।

চলতি বছরের এ পর্যন্ত তিন লাখ চার হাজার ৮৬৯ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক লাখ পাঁচ হাজার ৫৬৮ জন ও ঢাকার বাইরে এক লাখ ৯৯ হাজার ৩০১ জন।

গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৬২ হাজার ৩৮২ জন ও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান ২৮১ জন।

দেশকে ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করার স্বপ্ন দেখেন প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 23 August 2023, 554 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ আফ্রিকার বিনিয়োগকারীদের বিশেষ করে আইসিটি, অবকাঠামো, টেক্সটাইল এবং পর্যটন খাতে ব্যাপক বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তাঁর স্বপ্ন বাংলাদেশকে একটি ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করা।

তিনি বলেন, ‘আমার একটি স্বপ্ন আছে যা বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষেরও স্বপ্ন, আর তা হলো, ২০৪১ সালের মধ্যে একটি ট্রিলিয়ন-ডলারের অর্থনীতি এবং একটি সম্পূর্ণ উন্নত স্মার্ট জাতিতে পরিণত করা।’ তিনি আরো বলেন,স্বপ্ন পূরনের লক্ষ্যে তারা সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির জন্য দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য নির্ধারণে একটি উচ্চাকাক্সক্ষী প্রচেষ্টা শুরু করেছেন।

শেখ হাসিনা আজ ২৩ আগস্ট রেডিসন হোটেল অ্যান্ড কনভেনশন সেন্টারে ‘দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস সামিট’ শীর্ষক একটি রোড শো’র অনুষ্ঠানে তাঁর বাসস্থান থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ভাষণে একথা বলেন।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করে।

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে ১৫ তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে শেখ হাসিনা এখানে এসে পৌঁছেন।

সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগের জন্য আরও বেশি বন্ধুত্বপূর্ণ লক্ষ্য নির্ধারণে বাংলাদেশ তাঁর বাণিজ্যিক পরিস্থিতিকে দৃঢ়তার সাথে শক্তিশালী করে চলেছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দৃঢ় বিশ^াস আমাদের প্রচেষ্টা শুধুমাত্র আমাদের জন্য সুবিধাই দেবে না বরং যারা আমাদের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে বিনিয়োগ করতে পছন্দ করে তাদের জন্যও লাভজনক প্রমাণিত হবে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিনিয়োগের অনেক সম্ভাবনা খুঁজে নিতে তারা বিশ্বব্যাপী বিশেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকার বিনিয়োগকারীদের স্বাগত জানিয়েছেন। কারণ, এটি বাংলাদেশের প্রস্তাবগুলোর সাথে নিজেকে পরিচিত করার উপযুক্ত সময়।

তিনি বলেন, ‘এটিই সময় বাংলাদেশকে আরও ভালোভাবে জানার এবং এর ভবিষ্যতে এখানে বিনিয়োগ করার আমরা আইসিটি, ইলেকট্রনিক্স, অবকাঠামো, টেক্সটাইল, পর্যটন, ভারী শিল্প এবং ছোট শিল্পের মতো খাতগুলোতে নানা সুযোগ সুবিধার প্রস্তাব করেছি। আমাদের সরকার সুন্দরভাবে ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ দেয়ার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ বাংলাদেশ সম্ভাব্য দক্ষিণ আফ্রিকার বিনিয়োগকারীদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত উেেল্লখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ যেমন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন সর্বোত্তম আয়ের জন্য বিদেশী বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই আপনারা আমাদের উন্নয়ন যাত্রায় অংশ নিন। বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন; আমরা আস্থাশীল যে আপনাদের বিনিয়োগ সাফল্যের জন্য প্রাধান্য পাবে এবং আমরা একটি টেকসই অংশীদারিত্বের জন্য সম্পূর্ণরূূপে প্রস্তুত।’

দক্ষিণ আফ্রিকায় উল্লেখযোগ্য বাংলাদেশি নাগরিক একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতিতে অবদান রাখার জন্য প্রবাসীদের ধন্যবাদ। আমরা আপনাকে আমাদের প্রবৃদ্ধিতে আরও বিনিয়োগ করার আহ্বান জানাই।’

বাংলাদেশে বিনিয়োগের যৌক্তিকতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আসলে, আমাদের দেশে আপনার বিনিয়োগ সুরক্ষিত রয়েছে অব্যাহত হাই রিটান্স ইনভেস্টমেন্টের(আরওআই) কারণে। এছাড়া, আমাদের সরকার ব্যবসা-বান্ধব এবং স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিত করে যা আপনার বিনিয়োগের সফলতার নিশ্চয়তা দেয়।’ এছাড়া তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা দেয় এবং বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের রয়েছে সবচেয়ে সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ নীতি। এর মধ্যে রয়েছে একটি উদারীকৃত শিল্প নীতি, ওয়ান-স্টপ সার্ভিস, ১০০% বিদেশী মালিকানার ভাতা, একটি সহজ প্রস্থান নীতি, ১৫-বছরের কর ছাড় নীতি, আমদানি করা যন্ত্রপাতির জন্য ভ্যাট ছাড়, সুবিন্যস্ত পরিষেবা এবং আরও অনেক কিছু।

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে, আমরা টেকসই দীর্ঘ-মেয়াদী অর্থায়নের জন্য প্রস্তুত আছি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, এআই ও ভেঞ্চার ক্যাপিটালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী ‘আর্থিক সংযোগ’ অনুসরণ করছে। বাংলাদেশ ট্রেডিশনাল কাস্টমার ব্যাংকিংয়ের চেয়ে বিনিয়োগ ব্যাংকিংকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।’

বাংলাদেশ কেন ‘লুক আফ্রিকা পলিসি’ গ্রহণ করেছে সে সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, আফ্রিকার জনসংখ্যা ১.৫ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে এবং বর্তমানে দ্রুত নগরায়ণ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্মুখীন হচ্ছে- যা বাংলাদেশের জন্য, বিশেষত টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক, ফার্মাসিউটিক্যালস ও কৃষি পণ্যের মতো খাতে রপ্তানি সম্প্রসারনের জন্য অনুকূল সুযোগ প্রদান করছে।’

তিনি আরো বলেন, গত এক দশকে বাংলাদেশ আফ্রিকার নতুন বাজারের দিকে মনোযোগ দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী নেতা উভয়েই আফ্রিকার অর্থনীতির সম্ভাবনা ও শক্তিশালী বাণিজ্যিক সম্পর্কের সুবিধার কথা স্বীকার করে। আফ্রিকায় ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণী, দ্রুত বর্ধিত জনসংখ্যা ও ভোক্তা চাহিদার কারণে অঞ্চলটি বাংলাদেশী পণ্য রপ্তানির একটি আকর্ষণীয় বাজারে পরিণত হয়েছে।’

তিনি বলেন, একই সাথে বাংলাদেশ সক্রিয়ভাবে আফ্রিকান দেশগুলো থেকে প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক সম্পদ ও কাঁচামাল সংগ্রহের উপায় খুঁজছে। এই অন্বেষণের মধ্যে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান শিল্প, খনিজ, পেট্রোলিয়াম পণ্য, তুলা, কৃষিপণ্য ও আরো অনেক কিছুর জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালও অর্šÍভূক্ত রয়েছে।

গত পাঁচ দশকে, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে পারস্পারিক শ্রদ্ধা, অভীন্ন মূল্যবোধ ও বিশ্বাস এবং সংস্কৃতিক বন্ধনের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে- উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এই বন্ধন ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যিক সংযোগের মাধ্যমে আরো সুদৃঢ় হয়েছে। উভয় দেশই উন্নয়নের একই পথে আছে- যা পারস্পারিক সহযোগিতার মাধ্যমে উন্নয়নকে সম্ভবপর করে তোলে।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও গত বছর বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল মাত্র ৩১৬.৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার- যা উভয় দেশের রপ্তানি ও আমদানির পূর্ণ সম্ভাবনার তুলনায় কম। উভয় দেশের জন্য আমদানি-রপ্তানির আরো সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী যে-উভয় দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় ও বাণিজ্য সংস্থার সাথে সংশ্লিষ্টদের জন্য পর্যাপ্ত সহযোগিতার সুযোগ বিদ্যমান রয়েছে। বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় প্রক্রিয়ার বাইরে আমরা ‘বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত একটি যৌথ কমিটি’ প্রতিষ্ঠা ও দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে দ্বৈত কর এড়ানোর চুক্তি নিয়ে আলোচনার ব্যাপারে আগ্রহী।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এফবিসিসিআই ও দক্ষিণ আফ্রিকার চেম্বারের মধ্যে একটি যৌথ ব্যবসায়িক ফোরামও গঠনেরও বাংলাদেশের পরিকল্পনায় রয়েছে।

তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যবসায়ীদের সাথে যৌথ উদ্যোগ গ্রহন এবং বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্প বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমানসহ অন্যান্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে দক্ষিণ আফ্রিকার গণপূর্ত ও অবকাঠামো মন্ত্রী সিহলে জিকালালা বক্তৃতা করেন।

বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) লোকমান হোসেন মিয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বিএসইসির চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল-ইসলাম বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ ত্বরান্বিত করার জন্য সরকারের প্রচেষ্টা ও বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেন। বাংলাদেশে দক্ষিণ আফ্রিকার বৃহত্তর বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে দেশটির সবচেয়ে বড় নগরী জোহানেসবার্গে এটি হচ্ছে ৭ম রোড শো।

বিডা ও বিএসইসি বাংলাদেশে বৈশ্বিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার পদক্ষেপের অংশ হিসাবে দুবাই, যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, কাতার ও জাপানে এই ধরণের রোড শো আয়োজন করে। জার্মানি, কানাডা, রাশিয়া, হংকং, মালয়েশিয়াসহ অন্যান্য দেশেও একই ধরনের রোড শো করার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ।

শেখ হাসিনা বলেন, এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয় যে, চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে এসেও বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিক ও জাতীয় অগ্রগতি উল্লেখযোগ্য সম্প্রসারণের মাধ্যমে স্বতন্ত্র একটি দেশে রূপান্তরিত হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের পাঁচ দশকের অবিচল দৃঢ় সংকল্প, নিরলস প্রচেষ্টা এবং আমাদের নাগরিকদের আপসহীন প্রতিশ্রুতির কারণে সম্ভব হয়েছে। সম্প্রতি, অনেকগুলো বৈশ্বিক গবেষণা, সমীক্ষা ও ব্যাপক বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে, বাংলাদেশের সাফল্যের যাত্রা বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য একটি স্বতন্ত্র উন্নয়নমূলক নজির হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির মধ্যে স্থান করে নিয়েছে। দারিদ্র্য ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠার পাশাপাশি এর জনগণের দুর্ভোগ লাঘব করার সক্ষমতা প্রদর্শন করছে।

তিনি আরো বলেন, সে কারণেই বাংলাদেশকে প্রায়শই উন্নয়নমূলক বিবরণে প্রবৃদ্ধি, উন্নয়ন ও কল্যাণের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয় এবং প্রায়শই অদম্য চেতনার মানুষের দেশ হিসাবেও দেখা হয়। তিনি বলেন, ‘গত এক দশকে, বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে ৬ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশ পর্যন্ত গড় প্রবৃদ্ধির হার বজায় রেখেছে। সাম্প্রতিক সময়ে মহামারী এবং অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখেও এই স্থিতিস্থাপকতা সুস্পষ্ট রয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতপক্ষে, ২০২১ সালে বাংলাদেশের একটি ‘স্বল্পোন্নত দেশ’ থেকে ‘উন্নয়নশীল’ দেশে উত্তরণের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি এই অসাধারণ পথচলাকে সুস্পষ্ট করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনের জন্য আমাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি, একটি অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথ তৈরিতে আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য ও শিল্পায়নের সুবিধার্থে বাংলাদেশ সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, ১০৯টি হাই-টেক অ্যান্ড সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক এবং আইটি প্রশিক্ষণ ও ইনকিউবেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি পদ্মা সেতু এবং মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের উদ্বোধন বহিঃসংযোগ ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য উভয় ক্ষেত্রকে আরও প্রসারিত করবে এবং তা প্রবৃদ্ধির অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের দৃঢ় ও শক্তিশালী বেসরকারি খাত ভবিষ্যতে যারা আমাদের অর্থনীতিতে বিনিয়োগ করবে তাদের জন্য প্রচুর সুযোগ প্রদান করবে। আমরা আত্মবিশ্বাসী যে, আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের পথে সম্পূর্ণ গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের শক্তির কেন্দ্রবিন্দু বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে নিহিত রয়েছে। প্রয়োজনীয় দক্ষতা সম্পন্ন আমাদের প্রায় ৫৫ মিলিয়ন তরুণ-তরুণী ভবিষ্যতে আমাদের প্রয়োজনীয় কাজগুলো সম্পন্ন করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি আরো বলেন, ‘আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে সংযোগের মাধ্যমে আমাদেরকে সৌভাগ্যের অবস্থানে উন্নীত করেছে। উপরন্তু, একটি ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ বাজার এবং একটি সম্প্রসারিত ভোক্তা শ্রেণী এই জনসংখ্যাগত সুবিধাকে আরও শক্তিশালী করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) প্রয়োজনীয় দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের জন্য তার পুঁজিবাজারকে উন্নত করছে।

তিনি বলেন, ২০২০ সালে, দেশের স্টক মার্কেট আঞ্চলিক মার্কেটগুলোকে ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে বাজার মূলধন প্রায় ৬১ বিলিয়ন ডলার যা জিডিপির ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ।

তিনি বলেন, ‘আর্থিক অগ্রগতির জন্য, আমরা আমাদের বন্ড মার্কেটকে প্রসারিত করেছি। বিনিয়োগের সুযোগ বৈচিত্রময় করতে আমরা সুকুক, গ্রিন বন্ড, ইটিএফ, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল, প্রাইভেট ইক্যুইটি এবং ইমপ্যাক্ট ফান্ড প্রবর্তন করেছি। শিগগিরই, আমরা আমাদের পুঁজিবাজারে ডেরিভেটিভ পণ্য অন্তর্ভুক্ত করতে যাচ্ছি, যা বেড়াজালের মাধ্যমে বিনিয়োগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে। সূত্র : বাসস