চলারপথে রিপোর্ট :
এক সময় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে অর্ধশতাধিক পণ্য ভারতে রপ্তানি হলেও এখন রপ্তানি হচ্ছে হাতে গোনা কয়েকটি পণ্য। মূলত এখন হিমায়িত মাছের ওপরই অনেকাংশে নির্ভর করে বন্দরের রপ্তানি বাণিজ্য। তবে মাছ রপ্তানি কমার কারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি কমেছে ৩৭৬ কোটি ২৩ লাখ টাকার পণ্য। যা এর আগের অর্থবছরের তুলনায় ৩০৪ কোটি টাকা কম। এছাড়া তলানিতে ঠেকে আছে বন্দরের আমদানি বাণিজ্যও। ফলে আশানুরূপ রাজস্ব পাচ্ছে না বন্দর এবং শুল্ক স্টেশন কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে সর্বপ্রথম আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পণ্য রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমে স্থল শুল্ক স্টেশন দিয়ে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য চললেও ২০০৮ সালে পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায় আখাউড়া স্থলবন্দর। মূলত এ বন্দর দিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে পণ্য রপ্তানি হয়।
পাঁচ বছর আগেও আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি হওয়া পণ্যের তালিকায় ছিল- হিমায়িত মাছ, পাথর, রড, সিমেন্ট, তুলা, ভোজ্য তেল, এলপি গ্যাস, প্লাস্টিক, শুঁটকি ও বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রীসহ অর্ধশতাধিক পণ্য। তবে সময়ের পরিক্রমায় ছোট হয়ে এসেছে সেই তালিকা। বর্তমানে হিমায়িত মাছ, রড, সিমেন্ট ও প্লাস্টিকসহ হাতে গোনা কয়েকটি পণ্য যাচ্ছে ভারতে।
রপ্তানিকৃত পণ্যের অর্ধেকই হিমায়িত মাছ। আর মাছের মধ্যে রয়েছে রুই, পুঁটি, পাঙ্গাস, তেলাপিয়া ও পাবদাসহ সব ধরনের চাষের মাছ। প্রতি কেজি মাছের রপ্তানি মূল্য আড়াই মার্কিন ডলার। প্রতিদিন (ছুটির দিন ব্যতিত) গড়ে এক থেকে দেড় লাখ মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয় ভারতে।
তবে, গেল কয়েক মাস ধরে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মাছ রপ্তানি কমেছে আশঙ্কাজনক হারে। আগে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ টন মাছ রপ্তানি হলেও এখন তা কমে অর্ধেকে নেমেছে। ফলে সামগ্রিকভাবে বন্দরের রপ্তানি আয় কমেছে। মূলত সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে তাজা মাছ পাচারের কারণে রপ্তানি ক্রমেই কমছে বলে অভিযোগ মাছ রপ্তানিকারকদের।
আখাউড়া স্থলবন্দরের মাছ রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক মিয়া বলেন, আখাউড়া উপজেলার সীমান্তের কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে প্রতিনিয়ত তাজা মাছ পাচার হচ্ছে। এর ফলে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা হিমায়িত মাছের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। বিষয়টি বিজিবি, বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। এটি বন্ধ না করতে পারলে যে কোনো মুহূর্তে হিমায়িত মাছের রপ্তানি বন্ধ হয়ে পড়বে।
এদিকে, ভারত থেকে পণ্য আমদানিও এখন অনিয়মিত। সদ্য বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে গম, ভুট্টা পাথর ও পেঁয়াজ। নিজেদের চাহিদা মতো পণ্য আমদানির সুযোগ পাওয়ায় আমদানি বাণিজ্যে খুব একটা আগ্রহ নেই ব্যবসায়ীদের। এতে করে বন্দরের রাজস্ব আদায়ও তলানিতে ঠেকেছে।
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভারতে রপ্তানি হয়েছে ৩৭৬ কোটি ২৩ লাখ ২০ হাজার ৯১১ টাকার পণ্য। আর ভারত থেকে আমদানি হয়েছে মাত্র ৬৫ কোটি ৯৩ লাখ ৬১ হাজার ৫২৮ টাকার পণ্য। আমদানি পণ্য থেকে শুল্ক কর্তৃপক্ষ রাজস্ব পেয়েছে ৫৫ লাখ ৭৮ হাজার ৬৯৮ টাকা। তবে বিগত ২০২১-২২ অর্থবছরে ভারতে রপ্তানি হয়েছিল ৬৮০ কোটি ১১ লাখ ৯৯ হাজার ১৭৪ টাকার পণ্য। ওই অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ২৮৮ কোটি ৪১ লাখ ১৩ হাজার ৪৬৮ টাকার পণ্য।
স্থলবন্দরের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে সড়ক ও রেল যোগযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় অনেক পণ্য এখন নিজ দেশ থেকেই সংগ্রহ করেন সেখানকার ব্যবসায়ীরা। ফলে রপ্তানি বাণিজ্য বাড়ার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে আমদানি বাণিজ্যের মাধ্যমে এখনও বন্দরটির ঘুড়ে দাঁড়ানোর সুযোগ আছে। সেজন্য যখন যে পণ্যের চাহিদা, সেটি আমদানির সুযোগ দিতে হবে ব্যবসায়ীদের।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফোরকান আহমেদ খলিফা বলেন, কখন কোন পণ্যের চাহিদা তৈরি হবে- সেটি আগে থেকে বলা যায় না। সেজন্যই আমরা সব পণ্য আমদানির জন্য বন্দর খুলে দেওয়ার দাবি করে আসছি। কিন্তু আমাদের সেই দাবি পূরণ হচ্ছে না। সম্প্রতি এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে কিছু পণ্যের তালিকা দিয়ে আমদানির অনুমতি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু সেটির এখনও সুরাহা হয়নি।
একমাত্র আমদানি বাণিজ্যের মাধ্যমেই বন্দরে আবার কর্মচাঞ্চল্যতা ফিরে আসতে পারে। যার মাধ্যমে সরকারও বিপুল অংকের রাজস্ব পাবে’- উল্লেখ করেন ফোরকান আহমেদ খলিফা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, বন্দরগুলো থেকে সরকারের রাজস্ব আহরণের বিষয়টি অনেকাংশেই আমদানি বাণিজ্যের ওপর নির্ভর করে। এক্ষেত্রে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি অনিয়মিত হওয়ায় রাজস্ব আদায় হচ্ছে কম। আমদানি বাড়াতে ব্যবসায়ীরা যেসব পণ্য আমদানির জন্য তালিকা দিয়েছেন- সেটি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা ও চিঠি চালাচালি হচ্ছে। অচিরেই এ বিষয়টি সমাধান হবে বলে আশা করছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সামাজিক বন্ধনকে সুসংহত রাখার লক্ষ্যে সামাজিক সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আজ ১০ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন পুলিশ সুপার মো. সাখাওয়াত হোসন। সমাবেশে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনের কর্মকর্তা, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা, ইমাম-পুরোহিত সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার কয়েক’ শ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমার সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পৌরভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাকজিল খলিফা কাজল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ জামশেদ শাহ, উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জালাল উদ্দিন, মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম.এ. মতিন, মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম চৌধুরী, ধরখার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাফিকুল ইসলাম, যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল মমিন বাবুল, উপজেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি চন্দন কুমার ঘোষ, উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক দীপক ঘোষ, সদস্য সচিব সাংবাদিক বিশ্বজিত পাল বাবু, মাওলানা কেফায়েতুল্লাহ মাহমুদী, মাওলানা কাজী মাইনুদ্দিন, ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাব উদ্দিন বেগ শাপলু প্রমুখ।
আত্মশুদ্ধি, নিজ নিজ গুনা মাফ, সকল বালা-মছিবত থেকে হেফাজত ও রহমত প্রার্থনার মধ্য দিয়ে আজ ১৫ জানুয়ারি রবিবার আমিন, আমিন ধ্বনিতে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। মোনাজাতে মুসলিম বিশ্বের কল্যাণ ও শান্তি চেয়ে লাখো মুসল্লি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন।
সকাল ১০টা থেকে ১০টা ২০ মিনিট পর্যন্ত ২০ মিনিট স্থায়ী এই আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইল মারকাজের তাবলিগ জামায়াতের সুরা সদস্য ও শীর্ষস্থানীয় নেতা মাওলানা ক্কারী মো. জোবায়ের হাসান।
আখেরি মোনাজাতে দেশের কল্যাণ, মুসলিম উম্মার সুদৃঢ় ঐক্য, আখেরাত ও দুনিয়ার শান্তি কামনা করা হয়। এসময় দুহাত তুলে মহান আল্লাহ’র দরবারে ফরিয়াদ জানায় লাখ লাখ মুসুল্লী। এরআগে হেদায়তী বয়ান করা হয়। ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমানের হেদায়তী বয়ানের পর পরই শুরু করা হয় আখেরি মোনাজাত।
বিশ^ ইজতেমার আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী মো. মাহফুজ জানান, আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে শনিবার রাত থেকেই ইজতেমাস্থল টঙ্গীর তুরাগ নদের তীর অভিমুখে মানুষের ঢল নামে। রবিবার সকাল ৯টার দিকে ইজতেমা ময়দানের আশপাশের এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। শীত-ধুলো-বালি উপেক্ষা করে ৫-৬ কিলোমিটার দূরে বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, কার, ট্যাক্সি ও অন্যান্য যানবাহন রেখে হেঁটেই মুসুল্লিরা ছুটে যান ময়দানের দিকে।
মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে বিমান বন্দর থেকে বোর্ডবাজার-গাজীপুরা-টঙ্গী-আশুলিয়াসহ বিভিন্ন সড়ক মুসুল্লিতে একাকার হয়ে যায়। যে দিকেই চোখ যায় শুধু পাঞ্জাবী-টুপি পড়া মানুষ আর মানুষ। ইজতেমা মাঠ বিস্তৃত হয়ে পড়ে গোটা মহাসড়ক, অলিগলি থেকে শুরু করে বাড়ি-ঘরের ছাদ সর্বত্রই ছিল মুসল্লি।
মোনাজাতে অংশ নিতে অনেকে ইজতেমার মূল ময়দানে ঢুকতে না পেরে পত্রিকা, পাটি, চট, জায়নামাজ, পলিথিন বিছিয়ে রাস্তায় বসে পড়েন মুসুল্লিরা। অনেকেই আবার মোবাইল ফোনে র্দূদূরান্ত থেকে মোনাজাতে শরিক হন।
আখেরি মোনাজাতে নারীদের অংশ গ্রহণ: আখেরি মোনাজাতে কয়েক হাজার নারী অংশ নিয়েছেন। মূল ইজতেমা ময়দানে তাদের বসার কোন ব্যবস্থা না থাকায় তারা ময়দানের বাইরে খালি জায়গায়, কলকারখানা ও বসত বাড়ির ছাদসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে দেখা গেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে অবস্থান নিয়েছেন শতাধিক মহিলা। নরসিংদী থাকা আসা সানোয়ারা বেগম বলেন, আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে শনিবার রাতে টঙ্গীতে এসেছি। কোথাও স্থান না পেয়ে হাসপাতালের চত্বরে অবস্থান নিয়েছি।
বিদেশী মেহমান: বিশ্বইজতেমার আয়োজক কমিটির সদস্য জানান, ভারত, চীন, সৌদি, পাকিস্তান, ফিলিফিন, আমেরিকা, ইংল্যান্ড, কাতার, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য মুসুল্লী এবারের ইজতেমায় অংশ নেন।সংগৃহীত
চলারপথে রিপোর্ট :
রাজধানীর কদমতলীর রায়েরবাগ এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আবু সাইদ (২৫) নামে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
আজ ১৩ অক্টোবর শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রায়েরবাগ রইচনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মুমূর্ষু অবস্থায় সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সাইদ জামালপুরের মেলান্দহ থানার দুই নম্বর চড় গ্রামের ফকির আলীর ছেলে। বর্তমানে রায়েরবাগ রইচনগর এলাকাতেই থাকতেন।
সাইদের ভাই ওয়াসিম জানান, তারা একসঙ্গেই পাইলিংয়ের কাজ করতেন। গত এক সপ্তাহ ধরে রইচনগরে ব্যক্তি মালিকানা ভবনের পাইলিংয়ের কাজ করছিলেন। বিকেলে কাজ করার সময় হাতে থাকা লোহার রড বাইরের বৈদ্যুতিক তারের সঙ্গে স্পর্শ লাগলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন সাইদ। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় ইসলামিয়া হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করা শিক্ষার্থীদের ফলের ভিত্তিতে অনলাইনে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু হবে আগামী ১০ আগস্ট। আগামী ২০ আগস্ট পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ের আবেদন করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। এবারও তিন দফায় আবেদন গ্রহণ করা হবে।
আজ ৬ আগস্ট রবিবার একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির বিস্তারিত তথ্য সংক্রান্ত নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
প্রথম পর্যায়ের নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর। এরপর ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় এবং ২৩ সেপ্টেম্বর তৃতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল প্রকাশ করা হবে।
তিন ধাপের ফল প্রকাশের পর ২৬ থেকে ৫ অক্টোবর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে। ক্লাস শুরু হবে ৮ অক্টোবর থেকে।
ভর্তির জন্য কোনো পরীক্ষা বা হাতে হাতে কোনো আবেদন গ্রহণ করা হবে না। কেবল অনলাইনে আবেদন করা যাবে।
অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া: অনলাইনে এই ওয়েবসাইটের (www.xiclassadmission.gov.bd) মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একাদশে ভর্তির আবেদন করতে পারবে। ১৫০ টাকা আবেদন ফি জমা দিয়ে সর্বনিম্ন পাঁচটি এবং সর্বোচ্চ দশটি কলেজে ভর্তির পছন্দক্রম দেওয়া যাবে আবেদনে।
একজন শিক্ষার্থী যতগুলো কলেজে আবেদন করবে, তার মধ্য থেকে তার মেধা, কোটা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি কলেজে তার অবস্থান নির্ধারণ করা হবে প্রকাশিত ফলাফলে।
চলাপথে রিপোর্ট :
‘হঠাৎ কী যে হইলো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। মনে হলো মাথায় আসমান ভেঙে পরতাছে। ছেলেকে বুকে জড়িয়ে রেখে আল্লাহকে ডাকছিলাম। মুহূর্তের মধ্যেই সব ঘটে গেল। কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে এভাবেই দুর্ঘটনার বর্ণনা দিলেন দ্বিতীয় জীবন পাওয়া আনোয়ারা বেগম (২৫)।
পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনাকবলিত ঢাকাগামী ইমাদ পরিবহনের যাত্রী ছিলেন তিনি। আজ ১৯ মার্চ রবিবার ভোরে বাসটি খাদে পড়ে ১৬ জন প্রাণ হারান।
আনোয়ারা বেগম এবং তার শিশু সাজ্জাদকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছে উদ্ধারকর্মীরা।
উদ্ধারের পর অনেকটা ঘোরের মধ্যে ছিলেন আনোয়ারা। কিছুক্ষণ পর ঘটনার ভয়াবহতা দেখে আঁতকে উঠলেন এবং সন্তানকে জড়িয়ে ধরলেন তিনি।
বার বার আল্লাহকে ডাকছেন এবং আল্লাহর নিকট শুকরিয়া জানাচ্ছেন তিনি।
ঘোর কাটলে নিজের পরিচয় দেন আনোয়ারা। জানান, বাগেরহাটের মোল্লারহাটের গারফা গ্রামের তাহিম মোল্লার স্ত্রী তিনি। মোল্লারহাট থেকে বাসে উঠেন।
আলাপচারিতায় আনোয়ারা বলেন, ‘এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়িটি বেশ দ্রুত গতিতে চলছিল। কিছুক্ষণ পরেই পদ্মা সেতু। এমন আলোচনা করছিল যাত্রীরা। হঠাৎ করেই গাড়িটি রাস্তা থেকে লাফিয়ে নিচে পড়ে যাচ্ছিল। ওই সময়ে শুধু সন্তানকে জড়িয়ে রেখেছিলাম। ’
আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘বাগেরহাটের মোল্লারহাট থেকে ভোর ৬ টায় গাড়িতে উঠি। ঢাকার ধানমণ্ডি বড় বোনের বাসায় যাচ্ছিলাম। দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার মুহূর্তে মনে হয় জ্ঞান ছিল না। গাড়ির মধ্যে থেকে কে বা কারা বের করে আনছে তা মনে নাই। স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে এখনও। ’
এদিকে, খবর পেয়ে আনোয়ারার পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দিয়েছেন। এখন আর ঢাকায় বোনের বাসায় যাবেন না, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বাড়ি ফিরে যাবেন বলে জানান তিনি।
আনোয়ারা বেগমের ছেলে সাজ্জাদকে প্রশ্ন করা হলে সে বলে, আমি কিছুই বুঝতে পারি নাই। মায়ের কোলে ছিলাম।
প্রসঙ্গত, রবিবার সকাল ৮ টার দিকে শিবচরের এক্সপ্রেসওয়ের কুতুবপুর এলাকার ঢাকাগামী লেনে ইমাদ পরিবহনের বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রেলিং ভেঙে উল্টে নিচে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই ১৪ জনের প্রাণহানি ঘটে। হাসপাতালে মারা যান আরও ২ জন। হতাহতের সংখ্যা ৩০ ছাড়িয়ে। দুর্ঘটনার পর হাইওয়ে পুলিশ, শিবচর থানা পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের টিম উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন।