আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে এলো ১১ টন পেঁয়াজ

আখাউড়া, 9 July 2023, 1294 Views,
ফাইল ছবি

চলারপথে রিপোর্ট :
প্রায় এক মাস বন্ধ থাকার পর আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আবারও পণ্য আমদানি শুরু হয়েছে।

banner

গতকাল ৮ জুলাই শনিবার বিকেলে একটি ট্রাকে করে বন্দর দিয়ে ১১ টন পেঁয়াজ এসেছে ভারত থেকে।

এর মাধ্যমে আবারও সচল হলো বন্দরের আমদানি বাণিজ্য।

বিডিএস করপোরেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান পেঁয়াজগুলো আমদানি করেছে। ৯ জুলাই দুপুরে বন্দর থেকে পেঁয়াজগুলো খালাস করা হবে বলে জানা গেছে।

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল আমদানিকৃত পেঁয়াজের কাস্টমস ক্লিয়ারিংয়ের কাজ করবে।

আখাউড়া স্থলবন্দরের সুপারিন্টেনডেন্ট মো. সামাউল ইসলাম জানান, বিডিএস করপোরেশন আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ২০০ টন পেঁয়াজ আমদানির জন্য এলসি খুলেছে। প্রথম চালানে গত ১২ জুন ১০ টন পেঁয়াজ আসে। দ্বিতীয় চালানে প্রায় এক মাস পর আজ আরও ১১ টন পেঁয়াজ এসেছে। আমদানি পণ্য থেকে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত হারে শুল্ক এবং বন্দর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন মাশুল পাবে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াতের আমির…

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান Read more

বাঞ্ছারামপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি

চলারপথে রিপোর্ট : ৬ দফা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য Read more

সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেফতার

অনলাইন ডেস্ক : সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল Read more

রাইস কুকারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-মেয়ের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক : মাগুরার সদর উপজেলার টিলা গ্রামে রাইস কুকারে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

চলারপথে রিপোর্ট : সরকারি মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় Read more

নাসিরনগরে মৎস্য আড়তে অভিযান, নিষিদ্ধ পিরানহা…

চলারপথে রিপোর্ট : বিক্রির জন্য রাখা নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ জব্দ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন চাঁদাবাজ গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাটিহাতা (বিশ্বরোড) গোলচত্বর নামক এলাকায় চাঁদাবাজির Read more

সড়ক মেরামতের সপ্তাহ না পেরোতেই উঠে…

চলারপথে রিপোর্ট : সড়ক মেরামতের এক সপ্তাহ না পেরোতেই ইতিমধ্যে Read more

কসবায় গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : আজ ২৪ জুন মঙ্গলবার সকালে এস আই Read more

শাস্তি পেলেন ঋষভ পন্ত

অনলাইন ডেস্ক : আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট Read more

বাংলাদেশে গুগল পে এর উদ্বোধনী

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড. আহসান এইচ মনসুর Read more

যে কাজে নেক আমল নষ্ট হয়

ইসলাম ডেস্ক : মানুষের জীবনের সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতিকারক দিক হলো Read more

আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যাচ্ছে ৩ হাজার কেজি ইলিশ

আখাউড়া, আন্তর্জাতিক, 26 September 2024, 782 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় যাওয়ার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে ট্রাকভর্তি ৩ হাজার কেজি ইলিশ।

banner

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ইলিশ যাচ্ছে ভারতে। আজ ২৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে আখাউড়া স্থলবন্দরে ট্রাকভর্তি ইলিশ দেখা যায়। দু’দেশের মধ্যে প্রক্রিয়া শেষে মাছগুলো পাঠানো হবে। বাংলাদেশি ইলিশ রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান বিডিএস করপোরেশন এবং ভারতীয় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হিমপেক্স ইন্টারন্যাশনাল এ বাণিজ্য করছে। এছাড়া আখাউড়া স্থলবন্দর থেকে ইলিশ ছাড়করণে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের দায়িত্বে রয়েছে আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে সারাদেশের ৪৯টি মাছ রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ৫০ টন করে ইলিশ রফতানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। আগামী ১৩ অক্টোবরের আগেই ইলিশ রফতানি শেষ করতে হবে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। ভারতের বাজারে প্রতি কেজি ইলিশের মূল্য ধরা হয়েছে ১০ মার্কিন ডলার; যা বাংলাদেশি টাকায় এক হাজার ১৮০ টাকা।

জানা যায়, কলকাতার ভারতীয় মাছ আমদানিকারকদের সংগঠন ফিশ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (এফআইএ) থেকে গত ৯ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের কাছে দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রফতানির অনুমোদনের বিষয়টি বিবেচনার অনুরোধ জানানো হয়। পরে বিশেষ বিবেচনায় সরকার ভারতে ইলিশ রফতানির অনুমতি দেয়। এতে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে বৃহস্পতিবার রফতানির প্রথম চালানটি যাচ্ছে।

আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্র্যাফিক) মাহমুদুল হাসান সাংবাদিকদের জানান, বন্দরে ইলিশ ভর্তি একটি ট্রাক ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। ইলিশ রফতানিতে বন্দর মাশুল পাবে। কাগজপত্রের কাজ শেষে যেন দ্রুত ভারতে প্রবেশ করতে পারে; সেজন্য সহযোগিতা করা হবে।

আখাউড়ায় তিন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

আখাউড়া, 22 January 2025, 269 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত তিন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে আখাউড়া থানা পুলিশ। ২২ জানুয়ারি বুধবার পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় পুলিশ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে দু’জন মাদক মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ও একজন সাত বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী। পুলিশের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

banner

পুলিশ জানায়, গোপন সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া থানা পুলিশ বুধবার পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় আখাউড়া থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মাদক মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী মো: সেলিম মিয়া ও মো: টিটু মিয়াকে গ্রেফতার করেছে। একই সময়ে মাদক মামলায় ৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী মো: ফজলু মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত তিন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীকে দুপুরে পুলিশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে সোপর্দ করেছে।

আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ছমি উদ্দিন জানান, মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। মাদক ব্যবসায়ী কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের বিশেষ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

আখাউড়া স্থলবন্দর পরিদর্শন করলেন স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান

আখাউড়া, জাতীয়, 20 February 2024, 1327 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী আখাউড়া স্থলবন্দর পরিদর্শন করেছেন।

banner

আজ ২০ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে সাড়ে ১২টায় তিনি আখাউড়া স্থলবন্দরে এসে পৌঁছেন।

এসময় স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য জাহাঙ্গীর কবির ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ হাসান আলী সঙ্গে ছিলেন। তিনি স্থলবন্দর, শুল্ক ষ্টেশন, ইমিগ্রেশন এলাকা ঘুরে দেখেন। সীমান্তের শূণ্য রেখায় পর্যন্ত গিয়ে বন্দরের অবকাঠামোসহ বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ খবর নেন এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন। এসময় বন্দরের ব্যবসায়ীদের সাথেও কথা বলেন। ব্যবসায়ীরাও তাদের সুযোগ-সুবিধার কথা বন্দর চেয়ারম্যানকে অবকগত করেন।

পরিদর্শন শেষে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী বলেন, সরেজমিনে আখাউড়া স্থলবন্দর দেখতে এসেছি। এ বন্দরে ১৫ একর জায়গা রয়েছে। এরমধ্যে কিছু জায়গায় উন্নয়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ একটি প্রজেক্ট নিয়েছে। এ প্রজেক্টের আওতায় আখাউড়া স্থলবন্দর এবং তামাবিল স্থলবন্দরে ২১৭ কোটি টাকায় উন্নয়ন কাজ করা হবে। দ্রুত এর এ কাজ শুরু হবে। কাজ শেষ হলে আখাউড়া স্থল বন্দরে বিরাট পরিবর্তন আসবে। ফলে এখানে ব্যবসার আকার এবং সুযোগ অনেক বেশি হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে প্রজেক্টি শেষ হবে বলে তিনি জানান।

স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য ও প্রজেক্ট পরিচালক জাহাঙ্গীর কবির জানান, এখানে পাকা ইয়ার্ড, গুদাম, কাঁচামালের পার্কিং, ওয়েব্রীজ, ট্রান্সশিপমেন্ট শেড, বিভিন্ন সরকারি সংস্থার অফিস এবং আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। যাতে ব্যবসায়ীরা খুব সহজে সকল সেবা নিতে পারেন।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাবেয়া আক্তার, আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারি পরিচালক মাহমুদুর রহমান, সিএন্ডএফ এজেন্ট সভাপতি হাসিবুল হাসান, সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফোরকান খলিফা, ব্যবায়ী নেছার উদ্দিন ভূঁইয়া প্রমুখ।

আখাউড়ায় কাঁচা মরিচের দাম নিয়ন্ত্রণে অভিযান, পাচঁ ব্যবসায়ীকে জরিমানা

আখাউড়া, 5 July 2023, 1138 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় কাঁচা মরিচের মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সবজি বাজারে অভিযান চালিয়েছে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

banner

আজ ৫ জুলাই বুধবার বেলা সাড়ে ১২ টায় আখাউড়া পৌরসভার সড়ক বাজারের সবজি বাজারে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে কাঁচা মরিচ ছাড়াও অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামের বিষয়েও তদারকি করা হয়।

এ সময় চড়া দামে কাঁচা মরিচ বিক্রি করার অপরাধে তিন ব্যবসায়ীকে ও পণ্যের মূল্য কারচুপি, মূল্যতালিকা ও ভাউচার না থাকায় দুই মুদি দোকানিকে বিভিন্ন অংকে ৬ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মেহেদী হাসান জানান, কাঁচা মরিচসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য তদারকির লক্ষ্যে এ অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানের ফলে বাজারে কাঁচা মরিচের দাম কমতে শুরু করেছে বলে জানান তিনি। তিনি আরো জানান, সরবরাহের সংকটের কারণ দেখিয়ে ঈদের কয়েক দিন আগে থেকে এখানের বাজারে কাঁচা মরিচের দাম হু হু করে বাড়তে শুরু করে। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে পাইকারিতে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে ৫৫০ টাকায়ও বিক্রি হয়। আর খুচরা বাজারে মরিচের দাম বেড়ে কেজিতে ৭০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।

আখাউড়া থানা পুলিশের একটি বিশেষ দলের সহযোগিতায় ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এর বিভিন্ন ধারায় ৫ ব্যবসায়ীকে এ জরিমানা করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

আখাউড়া বন্দরে বাড়ছে রাজস্ব, কমছে না শুধু দুর্ভোগ

আখাউড়া, 22 September 2023, 1001 Views,
ফাইল ছবি

চলারপথে রিপোর্ট :
উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে স্থলপথে বাংলাদেশের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর। ভারতে পণ্য রপ্তানির পাশাপাশি যাত্রী পারাপারও হয়ে থাকে এ বন্দর দিয়ে। ধীরে ধীরে যাত্রীদের কাছে পছন্দের রুট হয়ে উঠছে আখাউড়া স্থলবন্দর। ফলে যাত্রীদের ভ্রমণ কর বাবদ সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়ছে। তবে যাত্রীর সঙ্গে রাজস্বের পরিমাণ বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত যাত্রীসেবা মিলছে না আখাউড়া স্থলবন্দরে। আন্তর্জাতিক এই স্থলপথের যাত্রীদের দুর্ভোগের শেষ নেই।

banner

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৪ সাল থেকে আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন দিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে পণ্য রপ্তানি বাণিজ্য চলছে। পরবর্তীতে বাণিজ্যিক গুরুত্ব বাড়ায় ২০০৮ সালে স্থল শুল্ক স্টেশন থেকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে যাত্রা শুরু করে আখাউড়া স্থলবন্দর। বর্তমানে প্রতিদিন এক থেকে দেড় কোটি টাকার বরফায়িত মাছ, রড, সিমেন্ট, পাথর, তুলা, প্লাস্টিক ও কাঠের ফার্নিচারসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি হয়ে থাকে। রপ্তানিকৃত পণ্য ত্রিপুরা থেকে সরবরাহ করা হয় উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্য রাজ্যগুলোতেও।
পণ্য রপ্তানি আয়ের পাশাপাশি সরকার যাত্রীদের ভ্রমণ কর বাবদও বিপুল রাজস্ব পায় আখাউড়া স্থলবন্দর থেকে। চিকিৎসা ও ভ্রমণের উদ্দেশ্যে প্রতিদিন আটশ থেকে এক হাজার যাত্রী আখাউড়া স্থলবন্দর ব্যবহার করে ভারত গমন করে থাকেন। বিভিন্ন উৎসবের সময় এই সংখ্যা প্রায় তিনগুণ হয়।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আখাউড়া স্থলবন্দর পার হলেই আগরতলা শহর। সেখান থেকে মাত্র মিনিট বিশেকের পথ পাড়ি দিলেই আগরতলা বিমানবন্দর। এছাড়া রেলস্টেশনও শহরের কাছাকাছি। এর ফলে আকাশ ও রেলপথ ব্যবহার করে বাংলাদেশি যাত্রীরা সহজে কলকাতা, গৌহাটি, দিল্লি, চেন্নাই, জয়পুর, গ্যাংটক ও শিলংসহ দেশটির পর্যটন শহরগুলোতে যাতায়াত করতে পারেন। এতে খরচও সাশ্রয় হয়। মূলত এসব কারণেই আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে যাত্রী পারাপার বাড়ছে। এছাড়া আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত নির্মাণাধীন চার লেনের জাতীয় মহাসড়কের কাজ শেষ হলে আখাউড়া স্থলবন্দর যাত্রী পাপারের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ততম রুট হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে পারাপার হয়েছেন দুই লাখ ৫৭ হাজারের কিছু বেশি যাত্রী। এ সময় যাত্রীদের ভ্রমণ কর বাবদ সরকার রাজস্ব পেয়েছে প্রায় আট কোটি টাকা। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বন্দর দিয়ে যাত্রী পারাপারের সংখ্যা ছিল প্রায় ৪৩ হাজার। সরকার রাজস্ব পেয়েছে দুই কোটি ৮০ লাখ টাকার কিছু বেশি। বিগত অর্থবছরে যাত্রীর ভ্রমণ কর পাঁচ শ টাকা থাকলেও চলতি অর্থবছর থেকে তা বাড়িয়ে এক হাজার টাকা করা হয়েছে। ভারতীয় যাত্রীরা বাংলাদেশ ভ্রমণের জন্যও এই কর দিতে হয়। তবে বন্দরে কাঙ্ক্ষিত যাত্রীসেবা না পাওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

জরাজীর্ণ কাস্টমস ভবনের ছোট্ট এক কক্ষে কাস্টমসের কাজ শেষ করে যাত্রীদের আরেক ভবনে যেতে হয় ব্যাগেজ স্ক্যানিংয়ের জন্য। এরপর সেখান থেকে বিজিবি চৌকি পার হয়ে যেতে হয় ইমিগ্রেশন ভবনে। রুগ্ণ ইমিগ্রেশন ভবনটিও পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে আরও কয়েক বছর আগেই। তবুও ঝুঁকি নিয়ে এই ভবনে যাত্রীদের ইমিগ্রেশনের কাজ করা হয়।

ছোট্ট ইমিগ্রেশন ভবনের বেশির ভাগ অংশের পলেস্তারা খসে পড়েছে। এছাড়া পর্যাপ্ত জায়গা না পেয়ে ভবনের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় যাত্রীদের। পাশাপাশি যাত্রীদের জন্য সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের ব্যবস্থাও নেই।

আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী যাত্রী আবুল কাশেম জানান, ঢাকা থেকে ভারতের সব শহরে ফ্লাইট সুবিধা নেই। এছাড়া ঢাকা থেকে ফ্লাইটে খরচও বেশি। এক্ষেত্রে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আগরতলা থেকে আকাশপথে ভারতের বিভিন্ন শহরে সহজেই যাতায়াত করা যায়। এতে সময় যেমন বাঁচে, তেমনি খরচও লাগে কম। ফলে আখাউড়া স্থলবন্দর ব্যবহার করেন তিনি। তবে আগরতলা স্থলবন্দরের তুলনায় আখাউড়া স্থলবন্দরে যাত্রীদের জন্য তেমন কোনো সেবা নেই।

ফজলে রাব্বি নামে আরেক যাত্রী জানান, ট্রলি সুবিধা না থাকায় যাত্রীদের লাগেজ বহনে সমস্যা হয়। এছাড়া ইমিগ্রেশন ভবনে যাত্রীদের জন্য সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট নেই। এতে করে নারী, শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। অথচ আগরতলা স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এবং ব্যাগেজ স্ক্যানিং সুবিধা মিলে একই ছাদের নিচে। সেখানে যাত্রীদের জন্য আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।

আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী মাহাবুবুর রহমান নামের এক যাত্রী জানান, ছোট্ট ইমিগ্রেশন ভবনে একসঙ্গে অনেক যাত্রী বসার সুবিধা নেই। ফলে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এতে গরমের সময় ভোগান্তি বাড়ে। এছাড়া বৃষ্টি হলে জমে হাঁটুপানি। এসব সমস্যা নিরসন করলে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে যাত্রী পারাপার আরও বাড়বে এবং সরকারও বেশি রাজস্ব পাবে বলে জানান তিনি।

যাত্রী দুর্ভোগ কমানোর পাশাপাশি যাত্রীদের কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে আখাউড়া স্থলবন্দরে আধুনিক ইমিগ্রেশন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সংশ্লিষ্টরা। ২০১৬ সালে পুরাতন ইমিগ্রেশন ভবনের পাশে শুরু হয় ছয়তলা বিশিষ্ট নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের নির্মাণকাজ। তবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন জটিলতায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) আপত্তিতে নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ভবনের নকশা পরিবর্তন এবং দুইতলা ভবন নির্মাণের শর্তে নির্মাণকাজ শুরুর অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু একতলা করার পর ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে আবারও বাধা আসে বিএসএফের তরফ থেকে। ফলে এখনো বন্ধ রয়েছে নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের নির্মাণকাজ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট পুলিশের পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) হাসান আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, আমরা নিজেরাও ঝুঁকি নিয়ে কাজ করি। যাত্রীদের দুর্ভোগ কমানোর জন্য ইমিগ্রেশন পুলিশ সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নতুন ইমিগ্রেশন ভবনটি হয়ে গেলে যাত্রীরা এক ছাদের নিচেই সব ধরনের সেবা পাবেন। তখন আর দুর্ভোগ থাকবে না। তবে সীমান্ত আইন জটিলতায় ইমিগ্রেশন ভবনের নির্মাণকাজটি বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা চলছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণকাজ ফের শুরু হবে।