চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার তরুণেরা দিন দিন ইউটিউব ও ফেসবুক ভিডিও ব্লগিংয়ে আগ্রহী হয়ে উঠছে। আখাউড়ার বেশ কয়েকজন ছাত্র, যুবক ইউটিউব ও ফেসবুক পেইজ খুলে কৃষি, মৎস্য, গরুর খামার, ফুল-ফল সবজি, দর্শনীয় স্থান, সাফল্য-সম্ভাবনা, দূর্ভোগ, বিনোদনসহ বিভিন্ন বিষয়ে ব্লগিং করছে।
সাবলিল উপস্থাপনা, ব্যতিক্রম কনটেন্টের কারণে ভিডিওগুলো প্রশংসা পাচ্ছে সবার। এদের মধ্যে কয়েকজন হলো আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামের মোঃ ইব্রাহীম ভূঁইয়া লিটন, আব্দুল্লাহপুর গ্রামের পারভেজ, হীরাপুর গ্রামের শরীফুল ইসলাম আবির, পৌরশহরের নারায়ণপুরের মোঃ কাইয়ুম, খড়মপুরের মেহেদী রহমান মোল্লা ও দূর্গাপুরের মোঃ ফরহাদ আহমেদ। তাদের প্রত্যেকের শুরুটা শখের বশে। কয়েকজন ইউটিউব ও ফেসবুক থেকে অর্থ উপার্জন করছে। স্বপ্ন দেখছে আরো ভালো কিছু করার।
‘কৃষকের কথা’র নামক ইউটিউব চ্যানেল থেকে ব্লগিং করেন মোঃ ইব্রাহীম ভূঁইয়া লিটন। তিনি বলেন, গ্যাস সিলিন্ডার ও গরুর খাদ্যের ব্যবসা করতাম। নিজেদের মাছের চাষ থাকায় দোকানে রাখতাম মাছের খাদ্যও। শখের ফেসবুকে বশে পুকুরের মাছ চাষ, হাঁস-মুরগি পালন, জমির চাষাবাদের ছোট ছোট ভিডিও করে ফেসবুকে পোষ্ট করতাম। বন্ধু-বান্ধবের উৎসাহে ২০১৯ সালে কৃষকের কথা ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুক পেইজ খুলে ভিডিও দেওয়া শুরু করি। প্রায় ৩ বছর পর মনিটাইজেশন পেয়ে ইনকাম পাচ্ছি। এখন ভালো ইনকাম পাচ্ছি। বর্তমানে ইউটিউবে ‘কৃষকের কথা’র ফলোয়ার প্রায় ৯ হাজার। ফেসবুক পেইজের ফলোয়ারের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে জানালেন মোঃ ইব্রাহীম ভূঁইয়া লিটন।
লিটনের সরল স্বীকারোক্তি শুধু টাকা ইনকামের উদ্দেশ্য নয়। আমাদের দেশ কৃষি নির্ভর দেশ। কৃষি ও কৃষককে উৎসাহিত করে আনন্দ পাই। চেষ্টা করি বিষয় ভিত্তিক তথ্য এবং পরামর্শ তুলে ধরার জন্য।এ পর্যন্ত প্রায় ৩০০ ভিডিও প্রতিবেদন করেছি। একটি ভিডিও সর্বোচ্চ ৪ লাখ ভিউ হয়েছে বলে জানান তিনি।
শুরুতে তাকে কেউ কেউ নিরুৎসাহিত করেছে। তবে সাব্বির ভূঁইয়া নামে এক প্রবাসী বড় ভাই এবং এক আন্টি (খালাম্মা) তাকে উৎসাহ জুগিয়েছেন বলে জানান লিটন।
প্রাণের আখাউড়া টিভি নামে ফেসবুক পেইজে শিক্ষামূলক তথ্যসহ বিভিন্ন সরজমিনে প্রতিবেদন করেন কলেজ ছাত্র মেহেদী রহমান মোল্লা। তার পেইজের ভিডিও ভালো ভিউ হয় বলে জানান তিনি। শিক্ষামূলক ও দুর্ভোগ-সমস্যা তুলে ধরেন মোঃ ফরহাদ আহমেদ। তিনি বলেন, দুই বছর ধরে ফেসবুক পেইজ খুলে ভিডিও দিচ্ছি। ভালো সাড়া পাচ্ছি। তিনিও মোটামুটি ইনকাম পাচ্ছেন বলে জানান।
পারভেজ ব্লগে ঢুকে দেখা যায়, কৃষির বিভিন্ন রকম ভিডিও। এছাড়াও রয়েছে দর্শনীয় স্থান ও হাট বাজারে ভিডিও। তার ফেসবুক পেইজের ফলোয়ার প্রায় ২০ হাজার।
ইউটিউবার মোঃ কাইয়ুম নামে বলেন, ব্যবসার পাশাপাশি ব্লগিং করি। আমার ফেসবুক পেইজে ফলোয়ার ৭ হাজার। ব্লগ দেখে সবাই যখন ভালো বলে তখন খুব আনন্দ লাগে।
ধারাভাষ্যকার সিকান্দার নামে একটি ফেসবুক পেইজ থেকে স্থানীয় ক্রিকেট খেলার সরাসরি প্রচার এবং ধারাভাষ্য দেন আল আনিম সেকান্দার।
এ ব্যাপারে আখাউড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহাদাত হোসেন লিটন বলেন, তথ্য প্রযুক্তিকে সঠিক ব্যবহার করে ছাত্র-যুবারা ভালো কিছু করার চেষ্টা করছে এটা খুবই ইতিবাচক। তাদের প্রতিবেদনে মানুষ অনেক কিছু দেখতে ও জানতে পারছে। সঠিকভাবে ডিজিটাল প্লাট ফরম ব্যবহার করে অর্থ উপার্জনের সুযোগ রয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বহুল প্রতিক্ষিত আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মান কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। আগামী ২২ আগস্ট থেকেই আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে পরীক্ষামূলকভাবে পরিচালনা করা হবে ট্রেন। তবে চূড়ান্তভাবে ট্রেন চলাচলে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। প্রকল্প-সংশিষ্টদের কাছ থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন চলছে শেষ মুহুর্তের রেললাইনে খুটিনাটি চিহ্নিত করার কাজ। তবে চূড়ান্তভাবে ট্রেন চলাচলে আরো কিছুদিন সময় লাগবে।
এ অবস্থায় এই রেলপথকে ঘিরে বন্ধুত্বপূর্ণ দুই দেশের বাসিন্দাদের মধ্যে আগ্রহের শেষ নেই। সংশ্লিষ্টরা জানান, এই রেলপথটি চালু হলে ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্যের পাশাপাশি সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে নব-দিগন্তের সূচনা হবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, বহুল প্রতিক্ষিত আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মান কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে রেললাইনের স্লিপারের উপর ফেলা হচ্ছে পাথর। প্রাথমিকভাবে মিটারগেজ ইঞ্জিনবগি দিয়ে ৬ কিলোমিটার রেলপথ ট্রায়াল দেয়া হবে। এই লক্ষ্যেই রাত-দিন কাজ করছেন এই রেলপথ নির্মাণ কাজের সাথে যুক্ত প্রকৌশলীরা।
আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের টেক্সমেকো রেল এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ঊর্ধ্বতন সহকারী প্রকৌশলী মোঃ রিপন শেখ বলেন, আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি চলছে। আগামী ২২ আগষ্ট আমরা মিটার গেজ রেলপথ ট্রায়াল দিব। আশা করি এর মধ্যে আমাদের সব কাজ হয়ে যাবে। প্রাথমিকভাবে মিটারগেজ ইঞ্জিনবগি দিয়ে ৬ কিলোমিটার রেলপথ ট্রায়াল দেয়া হবে। সেটি হবে গঙ্গাসাগার রেলস্টেশন থেকে শিবনগর পর্যন্ত। সেখানে আমাদের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
এ ব্যাপারে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের টেক্সমেকো রেল এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এম্বাকমেন্ট (বাঁধ) প্রকৌশলী মোঃ বেনজির আহমেদ বলেন, আমাদের সকল কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এখন আমাদের ট্যাক ট্রেকিংয়ের কাজ চলছে। ট্রায়ালকে কেন্দ্র করে যাবতীয় কার্যক্রম এখন চলমান রয়েছে।
বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বরত “উর্ধ্বতন সহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলেন, এখন আমাদের প্রায় ১০ কিলোমিটার ট্রেন চালানোর ব্যবস্থা হয়ে গেছে। আগামী ২২ আগষ্ট মঙ্গলবার থেকে পরীক্ষামূলকভাবে পাথরবাহী একটি লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) বগিসহ এই রেলপথের উপর দিয়ে চলানো হবে। সেটি চলে যাবে ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের সীমান্তের শূণ্যরেখায়। এই লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
আখাউড়ার গঙ্গাসাগর থেকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের শিবনগর পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বাংলাদেশ অংশে এই রেলপথ নির্মানে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪০ কোটি টাকা।
এদিকে দুই দেশের স্বপ্নের এই রেলপথ নির্মানকে কেন্দ্র করে ভারত-বাংলাদেশের বাসিন্দাদের মধ্যে যেন আগ্রহের শেষ নেই।
আখাউড়া উপজেলার গঙ্গাসাগর এলাকার বাসিন্দা ফখরুল ইসলাম বলেন, এই রেললাইনটি নির্মিত হওয়ায় আমাদের ব্যবসায়ীদের অনেক উন্নয়ন হবে। আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। বাংলাদেশের সরকারের সাথে ভারতের ভাল সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের ব্যবসায়ীদের উন্নয়নের পাশাপাশি দুই দেশের মানুষের অনেক উন্নয়ন হবে।
এ ব্যাপারে ভারতীয় নাগরিক সুইটি দেব বলেন, এই রেল লাইন চালু হলে দু’দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি সম্পর্কটা আরো বেশি বাড়বে। আমাদের যাত্রী আসা যাওয়া ও ব্যবসা বানিজ্যের ক্ষেত্রেও অনেক ভাল হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার খবরে আখাউড়ায় আনন্দ মিছিল করেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
২৩ অক্টোবর বুধবার রাত ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া পৌরশহরের সড়ক বাজারে বিএনপির অফিসের সামনে থেকে মিছিলটি বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ কওে সংক্ষিপ্ত পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় উপজেলা ছাত্রদলসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা।
এ সময় জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি জিয়াউল হাসান খান (সানী), আখাউড়া উপজেলার ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব মোবারক হোসেন জীবন, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক পলাশ ও আবির হোসেন টিপ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে সই করেন জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক শাখা-২-এর সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
পূর্বাঞ্চল রেলপথের অন্যতম বড় রেলওয়ে জংশন আখাউড়া। এ ষ্টেশনে প্রায় প্রতিটি আন্ত:নগর এক্সপ্রেসহ সকল ট্রেনের যাত্রা বিরতি রয়েছে।
প্রতিদিন কয়েক হাজার যাত্রী এ ষ্টেশন হয়ে ট্রেন ভ্রমন করে থাকে। বর্তমানে আখাউড়া ষ্টেশনে আধুনিকায়নের কাজ চলছে। এ ষ্টেশনে যাত্রী পারাপারের জন্য নব বিশাল একটি ফুট ওভার ব্রীজ নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু ওভার ব্রীজে ওঠা-নামার জন্য র্যাম্প বা সমতল সিঁড়ি রাখা হয়নি। এজন্য দুর্ভোগে পড়েছে ট্রেন যাত্রীরা।
প্রতিবন্ধি, বয়োবৃদ্ধ এবং নারী-শিশুদের চলাচলে খুব অসুবিধা হচ্ছে। তাছাড়া অতিরিক্ত ব্যাগেজ বহন করে এক ফ্ল্যাট ফরম থেকে অন্য ফ্ল্যাট ফরমে যেতে হিমশিম খাচ্ছেন যাত্রীরা। যাত্রীদের সুবিধার্থে ওভার ব্রীজে ওঠা-নামার জন্য র্যাম্প বা সমতল সিঁড়ি নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর। এদিকে এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের হস্তপেক্ষ কামনা করে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আখাউড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র এনাম খাদেম একটি দরখাস্ত দিয়েছেন।
রেলওয়ের একটি সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে আখাউড়া-লাকসাম ডাবল ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ কাজ চলছে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। প্রতিটি রেলওয়ে ষ্টেশন আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশন আধুনিকায়ন, নতুন ফ্ল্যাট ফরম নির্মাণ, রেল ট্র্যাক স্থাপনের কাজ প্রায় সমাপ্তির দিকে। নতুন জংশনে ১৭টি রেল ট্র্যাক/লাইন বসবে।
এ স্টেশন যাত্রী পারাপারের জন্য বিশাল একটি ফুট ওভার ব্রীজ নির্মাণ করা হচ্ছে। এর দৈঘ্য প্রায় ১৯০ ফুট এবং উচ্চতা ৩০ ফুট। প্রায় ৫০ ফুট লম্বা সিঁড়ি হেঁটে যাত্রীদেরকে ওভার ব্রীজে উঠতে হবে। ওই ব্রীজে উঠা-নামার জন্য উভয় পাশে ৩টি করে ৬টি সিঁড়ি রাখা হয়েছে। কিন্তু কোন র্যাম্প বা সমতল সিঁড়ি রাখা হয়নি। এজুন্য প্রতিবন্ধি, অসুস্থ, বয়োবৃদ্ধ যাত্রীদের পারাপারে অসুবিধা হচ্ছে।
তাছাড়া অতিরিক্ত ওজনের ব্যাগেজ বহন করে সিঁড়ি ভেঙ্গে চলাচল করতেও সমস্যায় পড়ছেন যাত্রীরা। অথচ এ পথের ছোট ছোট ষ্টেশনগুলোর ওভার ব্রীজেও র্যাম্প সিঁড়ি রাখা হয়েছে।
এদিকে প্রতিবন্ধি ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন-২১৩ এর ১৩ ধারায় ভৌত অবকাঠামো, যানবাহন, যোগাযোগ, তথ্য ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ জনসাধারণের জন্য প্রাপ্য্য সকল সুবিধা ও সেবাসমূহে অন্যান্যদের মত প্রত্যেক প্রতিবন্ধি ব্যক্তির সমসুযোগ ও সম আচরণ প্রাপ্তির অধিকারের কথা বলা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, দু’জন নারী ছোট বাচ্চা কোলে নিয়ে রেল লাইনের উপর দিয়ে এক ফ্ল্যাট ফরম থেকে অন্য ফ্ল্যাট ফরমে যেতে দেখা গেছে। একজন শারীরিক প্রতিবন্ধি ব্যক্তি ক্রাচে ভর করে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করেছে। মালামাল বহনেও যাত্রীদেরকে বেগ পেতে হয়েছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ব্রীজের উভয় পাশে সিঁড়ির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। এখন আর র্যাম্প করার সুযোগ নাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী যাত্রী বলেন, আমার ছোট বাচ্চা নিয়ে এতগুলো সিঁড়ি ভেঙ্গে ওভার ব্রীজ দিয়ে যাওয়া কষ্টকর। তাই হেঁটে পার হয়েছি। সমতল সিঁড়ি থাকলে খুব সুবিধা হতো।
শারীরিক প্রতিবন্ধি মোঃ নায়েব আলী নামে এক যাত্রী বলেন, সমতল সিঁড়ি হলে প্রতিবন্ধিদের খুব সুবিধা হতো। এখন যে সিঁড়ি করা হয়েছে তা দিয়ে প্রতিবন্ধিদের চলাচল করা সম্ভব না। আখাউড়া পৌরশহরের চন্দনসারের বাসিন্দা লেখক আলী মাহমেদ বলেন, হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে রেলওয়ের আধুনিকায়ন কাজ করা হচ্ছে। অথচ আখাউড়ায় ওভার ব্রীজে কেন র্যাম্প রাখা হলো না তা বুঝতে পারছি না। অসুস্থ, প্রতিবন্ধি যাত্রীরা কিভাবে পারাপার হবে।
বিষয়টি খুবই অমানবিক। তিনি র্যাম্প নির্মাণের দাবি জানান। এ ব্যপারে আখাউড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র এনাম খাদেম বলেন, আখাউড়া ষ্টেশনে ওভার ব্রীজে ওঠার জন্য র্যাম্প সিঁড়ি রাখা হয়নি। বয়োবৃদ্ধ এবং প্রতিবন্ধিদের জন্য র্যাম্প সিঁড়ি খুবই দরকার। এ ব্যাপারে মাননীয় আইনমন্ত্রীর নিকট একটি আবেদন করেছি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশনে মন্ত্রী মহোদয়ের হাতে দরখাস্তটি হস্তান্তর করি।
এ ব্যাপারে আখাউড়া-লাকসাম ডাবল রেলপথ নির্মাণ কাজ প্রকল্প পরিচালক মোঃ সুভক্ত গীন বলেন, আখাউড়া ষ্টেশনের ওভার ব্রীজের প্ল্যানে র্যাম্প রাখা নাই। তারা র্যাম্প নির্মাণ করা হয়নি। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে প্রপার ওয়েতে (সঠিক ভাবে) আমাদের কাছে আবেদন করলে আমরা পরামর্শক ও প্রকৌশলীদের সাথে পর্যালোচনা করে দেখব এটা করা যায় কিনা।
তিনি বলেন, প্রকল্পটির ব্যয় ধরা আছে ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আমার মনে হয় ১ হাজার কোটি টাকা কম লাগবে।
উল্লেখ্য, আখাউড়া-লাকসাম পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন কাজ শুরু হয়েছে ২০১৬ সালে। কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে চলতি বছর জুলাইয়ে কাজটি শেষ হবার কথা ছিল। কিন্তু ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময় লাগবে বলে জানান এক কর্মকর্তা।
চলারপথে রিপোর্ট :
১৭ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসটি বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে গাঁথা থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা স্বপ্ন দেখেন, স্বপ্ন দেখান, স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন।
আজ ১৭ মে শুক্রবার সকালে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া রেলওয়ে জংশনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। তিনি সকালে মহানগর প্রভাতী ট্রেনে করে ঢাকা থেকে নিজ সংসদীয় এলাকায় আসেন।
এদিকে দুপুরে আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামে বনগজ-কৃষ্ণনগর সড়কের তিতাস নদীর উপর নির্মাণাধীন ব্রীজের কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ‘বিএনপি তাদের শাসনামলে যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকার আলবদরদের সাথে নিয়ে পাকিস্তানের দালাল হয়ে বাংলাদেশের জনগণকে শোষণ ও অত্যাচার করত। এখন যে সময়ে জনগণের উন্নয়ন হচ্ছে তা মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির সহ্য হচ্ছে না। সেজন্য এখন তাদের মাথা খারাপ হয়েছে।’ বিএনপির আমলে ঋণ খেলাপির তালিকা সবচেয়ে বেশি ছিলো বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে আখাউড়া পৌরসভার মেয়র মো. তাকজিল খলিফা কাজল, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ বোরহান উদ্দিন, উপজেলার আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন বাবুল, সেলিম ভূইয়া, গোলাম সামদানি ফেরদৌস, আব্দুল মমিন বাবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।