অনলাইন ডেস্ক :
সরকারি কোষাগার থেকে অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগে বগুড়ায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলার রায়ে উপজেলা হিসাব রক্ষক ও ব্যাংক কর্মকর্তাসহ ৪ জনকে ১৫ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ ১০ জুলাই সোমবার বগুড়ার স্পেশাল জজ অম্লান কুমার জিষ্ণু তাদের বিরুদ্ধে এ রায় দেন। রায়ে একই সাথে আত্মসাৎ করা ১১ কোটি ৭৪ লাখ ৬১ হাজার ৮৬৩ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার সাবেক হিসাব রক্ষক খলিলুর রহমান, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড দুপচাঁচিয়া শাখার সাবেক ক্যাশ অফিসার আব্দুল বারী, আব্দুস সালাম ও ইউনুস আলী।
বগুড়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, ভুয়া পেনশন হোল্ডার (পিপিও) তৈরি করে মাসিক ভাতা হিসেবে ওই টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৫ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এরপর মামলার তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট চার্জশিট জমা দেওয়া হয় আদালতে। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন এবং রায়ের পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার রায়ে অর্থ আত্মসাৎ করায় প্রত্যেকের ১০ বছর করে জেল, প্রতারণার অভিযোগে তিনবছর জেল ও এক লাখ টাকা জরিমানা, আলামতের তথ্য গোপন করার অপরাধে দুই বছর করে জেল ও ৪০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। বিভিন্ন অপরাধে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় মোট ১৫ বছর করে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। একই সঙ্গে আসামিদের আত্মসাৎকৃত ১১ কোটি ৭৪ লাখ ৬১ হাজার ৮৬৩ টাকা আগামী ৩ মাসের মধ্যে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
দুদকের সরকারি কৌশলী (পিপি) এস এম আবুল কালাম আজাদ আরো জানান, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে পৃথক ধারায় মোট ১৫ বছর করে কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। মামলার বাদী ছিলেন বগুড়া দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক সহকারি পরিচালক আমিনুল ইসলাম।
চলারপথে রিপোট
নেত্রকোনা শহরে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ৪২০০ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করে মালিককে দুই মাসের জেল দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। একইসঙ্গে নগদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
আজ ৪ সেপ্টেম্বর সোমবার সন্ধ্যার সময় শহরের অজহর রোডের রূপালি ট্রান্সপোর্ট কার্যালয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়। সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি হলেন-অজহর রোডের রূপালি ট্রান্সপোর্টের মালিক অনিক রহমান।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসান (এন ডিসি) পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবু সাঈদকে সঙ্গে নিয়ে এ অভিযান পরিচালনা করেছেন।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের খবরে আজ সন্ধ্যার আগে ওই প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ৪২০০ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করা হয়। আইন অনুযায়ী দুই মাসের বিনাশ্রম জেল ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জানান, হিসেব অনুযায়ী প্রতি কেজি পলিথিন ১০ হাজার টাকা। জব্দকৃত পলিথিন চার হাজার দুইশত কেজি।
অনলাইন ডেস্ক :
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, সরকার দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে গণিত ও বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগ নেবে। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে ও শিক্ষক সংকট মেটাতে এ উদ্যোগ নেওয়া হবে।
আজ ২ মার্চ শনিবার সকালে ঢাকায় ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠানটির জেলা ও সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন প্রতিনিধি সম্মেলন ও বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষক সংকট নিরসনে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের কাজে লাগাতে এবং বর্তমান কারিকুলামে যে শিক্ষা দর্শন, ‘অ্যাক্টিভিটি বেইসড লার্নিং’-এর উদ্যোগ নিয়েছে, সেখানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। যেহেতু আমাদের চাহিদা আছে, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা শিক্ষক হিসেবে গণিত ও বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে আসতে পারেন। আমাদের নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণিত ও বিজ্ঞানের অনেক শিক্ষক প্রয়োজন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা মনে করছি ৬০ হাজারের মতো গণিত ও বিজ্ঞানের শিক্ষকের অভাব রয়েছে। সেখানে আমাদের ডিপ্লোমা পাস করা ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োজিত করতে পারলে শিক্ষক সংকট সমাধান করা সম্ভব হবে। সেটা আমাদের বিবেচনায় আছে।’
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের স্নাতক সমমানের মর্যাদা দেওয়া প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘একজন এসএসসি পাস শিক্ষার্থীর বিএসসি (পাস কোর্স) পাস করতে সময় লাগে পাঁচ বছর। অন্যদিকে ডিপ্লোমা পাস করতে সময় লাগে চার বছর। সে ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা পাস করা একজন শিক্ষার্থী এক বছর কোনো সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করলে তাকে বিএসসি (পাস) সমমানের মর্যাদা দেওয়া যেতে পারে। সে বিষয়ে অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
আইডিইবির প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী এ কে এম এ হামিদের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক। স্বাগত বক্তব্য দেন আইডিইবির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. শামসুর রহমান।
অনলাইন ডেস্ক :
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ছয় দফা দাবি উপস্থাপন করেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। আজ ৩১ আগস্ট শনিবার বিকালে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব দাবি উপস্থাপন করে দলটি। সভা শেষে সাংবাদিকদের এমনটা জানান বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক। তিনি বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে নিহতসহ সম্প্রতি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সৃষ্ট সহিংসতার ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছি। ৫ মে ও পরবর্তী সময়ে হেফাজতে ইসলামীসহ সমমনা দলগুলোর নেতাদের বিরুদ্ধে দেওয়া মামলাগুলো এক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার দাবি জানিয়েছি।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা তার সরকারকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন উল্লেখ করে মামুনুল বলেন, আমরা সহযোগিতা করার প্রত্যয় জানিয়েছি। নির্বাচন ও প্রশাসনসহ প্রতিটি খাতের প্রয়োজনীয় সংস্কার করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন করার দাবি জানিয়েছি।
সভায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে লিখিত আকারে যে দাবিগুলো প্রস্তাব করা হয়েছে, তা হলো :
১. প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করাক. নির্বাচন সংক্রান্ত সংস্কার: জাতীয় নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগকারীদের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা। সে জন্য আসনভিত্তিক বিজয়ী সংসদ সদস্যদের বাইরে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে সংসদে প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা করা।
খ. নির্বাচনবিধি সংক্রান্ত সংস্কার: প্রার্থীদের নিজস্ব প্রচারণার পরিবর্তে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রচার ও প্রকাশনার ব্যবস্থা করা। যোগ্য, সৎ ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা।
২. সাংবিধানিক সংস্কার
ক. বর্তমান সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া একচ্ছত্র ক্ষমতা স্বৈরতন্ত্রের জন্ম দেয়। তাই এ ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে ভারসাম্য সৃষ্টি করা।
খ. দুই মেয়াদের বেশি একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের ব্যবস্থা বন্ধ করা।
গ. প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর দলীয় পদ থেকে পদত্যাগের বিধান করা।
ঘ. সংসদ সদস্যদের দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে ভোট দেওয়ার সুযোগ রাখা।
৩. বিচারব্যবস্থা
ক. বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীন করা। বিচার বিভাগে সরকারের হস্তক্ষেপমুক্ত রাখার স্বার্থে বিচারপতি নিয়োগ ও বিয়োগের জন্য জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা।
৪. শিক্ষাব্যবস্থা
শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিতর্কিত বিষয়গুলো বাদ দিয়ে ধর্মীয় ও নৈতিকতা শিক্ষা সংযোজন করা।
৫. পুলিশ ও প্রশাসন
পুলিশ ও প্রশাসনকে সরকারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত রাখা। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাদের ব্যবহারের পথ বন্ধ করা।
৬. ধর্মীয় আইন
কোরআন ও সুন্নাহবিরোধী আইন ও নীতি প্রণয়ন না করা।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলা ভাষার প্রতি ভালোবাসা ও দূষণমুক্ত পরিবেশের জন্য বাইসাইকেল চালিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশ ভ্রমণে এসেছেন পশ্চিমবঙ্গের ৮ জন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস স্মরণে বাংলাদেশে ভ্রমণে এসেছেন তারা।
চলতি মাসের ১৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলী প্রদেশের চন্দননগর থেকে তারা বাংলাদেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। ১৫ ফেব্রুয়ারি রানাঘাট দর্শনা হয়ে আলমডাঙ্গা দিয়ে কুষ্টিয়া প্রবেশ করেন তারা। বৃহস্পতিবার বিকেলে রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি দর্শন করে কুষ্টিয়ার শিলাইদহ ঘাট হয়ে নদীপথে প্রবেশ করেন জেলা শহর পাবনাতে।
আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকাল থেকে পাবনার উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করে কাজিরহাট হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিবেন। ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ফিরবেন নিজ দেশে। ইন্দবাংলা বাইসাইকেল র্যালি নামে এই সংগঠন বাংলাদেশে চতুর্থ বারের মতো ভ্রমণ করছে।
১০ দিনের এই বাইসাইকেল ভ্রমণকালে বিভিন্ন জেলা শহরের দর্শনীয় স্থানগুলো পরিদর্শনসহ সাধারণ মানুষের সাথে তারা সংযোগ স্থাপন করবেন। ভ্রমণের দল প্রধান হিসাবে রয়েছেন দলের একমাত্র নারী সদস্য মহুয়া ব্যানার্জি। তাকে সার্বিক সহযোগিতা করছেন তার স্বামী শিক্ষক শৈবাল ব্যানার্জি। এছাড়া যারা এসেছেন তাদের মধ্যে দুইজন ব্যবসায়ী ও ৬ জন শিক্ষক রয়েছেন। যে সকল সদস্য এবারের এসছেন তারা হলেন, শিক্ষক শ্রীকান্ত মন্ডল, শিক্ষক প্রণব মাইতি, শিক্ষক প্রসনজিৎ সরকার, শিক্ষক রমজান আলী, ব্যবসায়ি অঞ্জন দাস ও সত্যব্রত ভান্ডারী।
চলারপথে ডেস্ক :
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটি সন্ত্রাসী সংগঠন। আর জামায়াত হলো যুদ্ধাপরাধীদের দল। বাংলাদেশের চলমান উন্নয়নকে সচল রাখার জন্য বিএনপি-জামায়াত উভয়ের হাত থেকেই দেশকে মুক্ত রাখতে হবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণার অংশ হিসেবে দেশের ছয় জেলায় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
আজ ২৩ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে তেজগাঁওয়ে অবস্থিত আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলা কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব জনসভায় যুক্ত হন শেখ হাসিনা।
কুষ্টিয়ার পাবলিক লাইব্রেরি, ঝিনাইদহের উজির আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠ, সাতক্ষীরার সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, নেত্রকোণার জেলা স্টেডিয়াম, রাঙ্গামাটি জেলার শেখ রাসেল স্টেডিয়াম এবং বরগুনা জেলার বামনা ও পাথরঘাটা উপজেলায় এসব জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
নিজের বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। জামায়াত যুদ্ধাপরাধীদের দল। এই সন্ত্রাসী এবং যুদ্ধাপরাধীদের থেকে দেশকে মুক্ত রাখতে হবে। তাহলেই দেশে উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত থাকবে। দেশের উন্নয়নের ধারাটা তখনই অব্যাহত থাকবে, যখন নির্বাচনটা সুষ্ঠু হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তার মন মতো প্রার্থী বেছে নেবে। তাই আমার আবেদন থাকবে সকলের কাছে, এই গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত রাখতে হবে। উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত রাখতে হবে এবং ধরে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে আমরা যেন আরও উন্নত সমৃদ্ধ করতে পারি, সেই প্রচেষ্টাটা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার ঘোষণা আমরা দিয়েছি। কাজেই আমাদের বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষকে আমরা আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় সুশিক্ষিত করে তুলব। জনগোষ্ঠী হবে স্মার্ট, আমাদের সরকার হবে স্মার্ট, অর্থনীতি হবে স্মার্ট এবং আমাদের সমাজ ব্যবস্থাও স্মার্ট হবে। আমরা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলব, মাথা উঁচু করে চলব। এটাই আমাদের লক্ষ্য।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য নিয়ে আর কাউকে আমরা ছিনিমিনি খেলতে দেব না, এই কথাটা মনে রাখতে হবে। ওই সন্ত্রাসী বিএনপি এবং যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের হাতে এদেশ কোনোদিনই নিরাপদ নয়। কারণ এরা এদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না। কাজেই এদের হাত থেকে জাতিকে রক্ষা করে দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সরকারে আসার পর ২০০৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত এই বাংলাদেশটা হচ্ছে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। মানুষের খাদ্যের কোনো অভাব নেই। আজকে চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পেরেছি। স্বাক্ষরতার হার বেড়ে, আজ ৭৬ দশমিক ৮ ভাগে উন্নীত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই এবং বৃত্তি ও উপবৃত্তি দিয়ে যাচ্ছি। রাস্তা-ঘাট-পুল ব্রিজ, অবকাঠামো তৈরি করে বাংলাদেশের যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটিয়েছি, তা আপনারা নিজেরাই দেখছেন।
তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি চুক্তি করেছিলাম। এরপর পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন সাধন করি। একইদিনে সারাদেশে একসঙ্গে ‘শতসেতু’ উদ্বোধনের দিনে আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামে ৪৫টি ব্রিজ উদ্বোধন করি। রাস্তা-ঘাট করে দিয়েছি এবং এখন সেখানকার এলাকা শান্তিপূর্ণ আছে, নানারকম উন্নয়ন হচ্ছে। সেই সঙ্গে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, নেত্রকোণা, এমনকি বরগুনা- যেটা সব থেকে অবহেলিত একটা জায়গা ছিল, সেখানে আজকে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। বরগুনা ও পটুয়াখালী সবমিলিয়ে পুরো বরিশাল বিভাগের চিত্র পাল্টে গেছে। এই উন্নয়নের ধারাটিকে আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসেনি। তারা নির্বাচন ঠেকানোর নামে ২০১৩ ও ১৪ সালে ঠিক যেমন অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল, আবারও সেই ভয়ংকর রূপ নিয়ে তারা নেমেছে। তাদের নেতা কে সেটাই প্রশ্ন। দু’জনেই তো সাজাপ্রাপ্ত। এতিমের অর্থ আত্মসাৎ এবং বিভিন্ন দুর্নীতির কারণে আজকে খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তার শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে, তার বোন ও ভাই এবং পরিজনেরা আমাদের অনুরোধ করায়, তার সাজা স্থগিত করে বাসায় থাকার সুযোগ দিয়েছি।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়া, যারা আমাকে গ্রেনেড হামলা করে মারতে চেয়েছিল। বোমা পুঁতে রেখেছে, গুলি করেছে, ট্রেনে হামলা করেছে। তারপরেও তার (খালেদা জিয়া) জন্য আমরা এটুকু মানবিকতা দেখিয়েছি। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে তারেক জিয়া হাওয়া ভবন খুলে, সেটিকে একটি দুর্নীতির আখড়া বানিয়েছিল। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, ৫০০ জায়গায় বোমা হামলা- আমাদের বহু নেতা-কর্মীকে তারা হত্যা করেছে। এরপর ২০০৭ সালে ‘ইমার্জেন্সি’ এলে আর কোনোদিন ‘রাজনীতি’ ও ‘নির্বাচন’ করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে, দেশে থেকে পালিয়েছে। আর, এখন বিদেশ থেকে হুকুম জারি করছে- পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ মারার।
২০১৩-১৪ এবং পরবর্তী সময়ে বিএনপি জামাতের সন্ত্রাসের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে সময় বিএনপি রাস্তাঘাট কেটেছে, গাছ কেটেছে ৫৮২টি স্কুল, ৭০টি সরকারি অফিস, ছয়টি ভূমি অফিস এবং ৩২৫২টি গাড়ি, ২৯টি রেল, ৯টি লঞ্চ তারা আগুন দিয়ে পুড়িয়েছিল। সেগুলো মেরামত করে আমরা আবার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। এখন আবার তাদের সেই ভয়ংকর রূপ! কাজেই এখন আমি সবাইকে বলব, যারা এই আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ায়- তাদের প্রতিহত করতে হবে।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন, মাত্র কয়েকদিন আগে রেলে আগুন দিল, ফিশপ্লেট খুলে ফেলল। রেলের বগি পুড়ে সেখানে একজন মানুষ মারা গেল। বাচ্চাকে বুকে আঁকড়ে ধরে থাকা মা ও শিশু আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে গেল। বাসে আগুন দিচ্ছে, সেখানে ঘুমন্ত হেলপার আগুনে পুড়ে মারা গেল। কোনো মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ থাকলে, এগুলো তারা ঘটাতে পারে না। এ দেশের সাধারণ মানুষকে এই যে হত্যা করা, এর প্রতিশোধ তারা নেবেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামনে ইলেকশন। এই ইলেকশনটা আমরা এবার উন্মুক্ত করে দিয়েছি। কারণ আমরা চাই, জনগণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। শান্তিমতো ভোট দিক। সকলে জনগণের কাছে যাবেন। জনগণ যাকে ভোট দেবে, তিনিই নির্বাচিত হবেন। আমি চাই নির্বাচনটা শান্তিপূর্ণ হোক। জনগণের যে ভোটের অধিকার, সেটা তারা সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারুক। গণতন্ত্রটাকে আমরা সুরক্ষিত করতে চাই। কারণ একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকলে, বিধি ব্যবস্থা থাকলে, দেশের যে উন্নতি হয়- বর্তমান দৃশ্যমান উন্নতি সেটারই প্রমাণ।