শিক্ষার্থীর স্বপ্নপূরণে পাশে দাঁড়ালেন নবীনগরের ইউএনও

নবীনগর, 12 July 2023, 1289 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থী আরাফাতুল ইসলামের স্বপ্ন পূরণে পাশে দাঁড়িয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা প্রশাসন। আজ ১২ জুলাই বুধবার দুপুরে মেধাবী ওই শিক্ষার্থীকে নিজ কার্যালয়ে ডেকে এনে আর্থিক সহযোগিতা করেন নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একরামুল ছিদ্দিক।

banner

শিক্ষার্থী আরাফাতুল ইসলাম উপজেলার রসুল্লাবাদ ইউনিয়নের আলমগীর হোসেনের ছেলে। মেধাবী ওই শিক্ষার্থীর বাবা ছোটখাটো একটি টং দোকান দিয়ে সংসার চালান। এর মধ্যে ছেলেকে বুয়েটে পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে আরাফাতুল ইসলামের অসহায়ত্বের বিষয়টি নজর কাড়ে ইউএনও একরামুল ছিদ্দিকের। পরে তার পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন ইউএনও। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বুধবার নিজ কার্যালয়ের ডেকে এনে তাকে আর্থিক সহযোগিতা করেন তিনি।

বুয়েট ছাত্র আরাফাতুল ইসলাম বলেন, ইউএনও স্যার আমার অসহায়ত্বের খবর পেয়ে আমার স্বপ্ন পূরণে পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমি খুব আনন্দিত ও গর্বিত। আমি আমার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারলে মানুষের পাশে দাঁড়াব।

ইউএনও একরামুল ছিদ্দিক বলেন, উপজেলা প্রশাসন সব সময় মেধাবী, হতদরিদ্র মানুষের পাশে ছিল, আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। কৃতী ছাত্র আরাফাতুলকে প্রাথমিকভাবে সহযোগিতা করা হয়েছে। প্রয়োজনবোধে ভবিষ্যতে আরও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

Leave a Reply

জীবিত নবজাতক দাফনের চেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক : চাঁদপুর শহরের পৌর কবরস্থানে অবিশ্বাস্য ও হৃদয়বিদারক Read more

নবীনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে প্রাইভেটকার ও ট্রাক্টরের সঙ্গে Read more

প্রতিপক্ষের হামলায় নারী নিহত, দুইজন আটক

চলারপথে রিপোর্ট : তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় খাইরুন Read more

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

নবীনগরে জাল নোট খেয়ে ফেলার চেষ্টা

নবীনগর, 26 March 2023, 1666 Views,

মোবাইল কোর্ট দেখে

চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে জাল টাকা ছড়ানোর অভিযোগে জুরু মিয়া (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

banner

আজ ২৬ মার্চ রবিবার বিকেলে উপজেলা সদরের চালের আড়ত থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে তাকে এ সাজা দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

জুরু মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নের বেল্লা গ্রামের নুরু মিয়ার ছেলে।

নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট একরামুল ছিদ্দিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, জুরু মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তিনি জাল নোট বহন ও বিনিময়ে করে প্রতারণা করে আসছেন। বিকেলে চারটি এক হাজার টাকার জাল নোট নিয়ে তিনি আড়তে চাল কিনতে যান। এসময় দোকানদাররা তাকে আটক করে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ তাকে আটকের পর আমি ঘটনাস্থলে যাই। আমাদের দেখে মুখে ঢুকিয়ে তিনি জাল টাকা খেয়ে ফেলার চেষ্টা করেন কিন্তু পারেননি। এ ঘটনায় জুরু মিয়াকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

নবীনগরে বর্ষাকালে ভাটি অঞ্চলে থৈথৈ জলে দাঁড়িয়ে থাকে হিজল গাছের সারি

নবীনগর, 26 May 2023, 1597 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
সুবিন্যস্থ বেণি জুড়ে গাছে দুলছে আশ্চর্য সুন্দর হিজল ফুল। দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না। প্রতি বছর বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরের হাওড় বেষ্টিত ভাটির অঞ্চলে এ ফুলের দেখা মিলে, এখন সেই সময়। রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতায় ঘুরে ফিরেই এসেছে হিজলের কথা। কবির ভাষায়- “চোখে তার হিজল কাঠের রক্তিম/চিতা জ্বলে”। একই ভাবে হিজল বনে ঘুঘু দেখে উচ্ছ্বসিত কবি লিখেছেন- “পৃথিবীর সব ঘুঘু ডাকিতেছে হিজলের বনে”। অবশ্য কবিতার বাইরে বাস্তবে হিজল গাছের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। গণসংগীত শিল্পী হেমাঙ্গ বিশ্বাস সুরে সুরে বলেছেন- “হাওড়ের পানি নাই রে হেথায়, নাই রে তাজা মাছ/বিলের বুকে ডালা মেলা, নাই রে হিজল গাছ”। অর্থাৎ দিন দিন হিজল গাছের সংখ্যা কমছে। বর্তমানে গাছটি প্রায় দুর্লভ। এ গাছটি সংস্কৃত নাম নিচুল, এ ছাড়াও জলন্ত ও নন্দীক্রান্ত নামেও পরিচিত। হিজল গাছের বৈজ্ঞানিক নাম- Barringtonia acutangula। এটি Lecythidaceae পরিবারের সদস্য। এটি বাংলাদেশের ভাটির অঞ্চলে বহুকাল ধরে টিকে থাকলেও এর আদি নিবাস অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া এবং ভারত। গাছ মাঝারি আকারের, উচ্চতা ৫-১০ মিটার পর্যন্ত, এর ডালপালা থাকে ছড়ানো, বাকল যথেষ্ট পুরো, ঘনছাই রঙের হয়ে থাকে, বীজ থেকে গাছ হয়। খাল, বিল, নদী, ডোবা, হাওর ইত্যাদি জায়গায় দেখতে পাওয়া যায়। এটি পানির নিচে কয়েক মাস জীবিত থাকতে পারে। এ গাছের মূল আকর্ষণ লাল ও গোলাপি রঙের ছোট ছোট ফুল, ফুলের আছে মিষ্টি ঘ্রাণ। উদ্ভিদবিদ দ্বিজেন শর্মার বর্ণনা মতে- “ফুলের মঞ্জুরী ৬-১৫ ইঞ্চি লম্বা। বহুপুষ্পিক ফুলের বৈশিষ্ট্যে হিজল অনন্য”।

banner

হিজল বীজের অনেক ঔষুধি গুনাগুন আছে- মাথা ও কপাল ব্যথা হলে হিজল বীজ শুকিয়ে গুড়া করে দুই চামচ পরিমাণ এক কাপ দুধসহ সকালে এবং বিকেলে খেলে মাথা ব্যাথা কমে যায়। পেটে গ্যাস হলে, ঢেকুর উঠলে, পেট ফাঁপা হলে হিজল বীজ চূর্ণ করে গরম মসলা সহ খেলে কিছুক্ষনের মধ্যে সেই সমস্যা চলে যায়। চোখ উঠলে, চোখ লাল হলে, চুলকায়, পানি পড়ে। সেই সময় বীজ নিয়ে পাথরে ঘসে চন্দনের মত চোখের চারি পাশে লাগিয়ে দিলে কিছুক্ষণ রাখার পর ছোট নেকড়া ভিজিয়ে মুছে দিলে যন্ত্রণা কমে যায়। হিজল ফুল গভীর রাতে ফুটে, সকাল হতে না হতেই ঝড়ে যায়। হিজল সাধারণত জলমগ্ন বা জলসংলগ্ন অঞ্চলে ভাল হয়। তাই নবীনগরের ভাটির অঞ্চলের গ্রামীণ ঐতিহ্যের অংশ হয়ে আছে টিকে আছে হিজল গাছ। নদী সংলগ্ন গ্রাম গুলোতে নৌকা দিয়ে গেলে চোখে পড়ে অপূর্ব হিজল গাছের সারি কারন- হিজলের আবাস নিচু এলাকা/ হাওড় অঞ্চল।

নবীনগরের মত দেশের হাওড় বেষ্টিত সাত জেলার ৪০টি উপজেলায় কম বেশি প্রায় প্রতি গ্রামেই দেখা যায় হিজল। নিচু জলাঅঞ্চলে মাছের অভয়রাণ্য তৈরিতে এই গাছের ডাল ব্যবহৃত হয়। ভরা বর্ষায় নবীনগরের ভাটি অঞ্চলে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার সময় নৌকা থেকে চারপাশে তাকালে থৈ থৈ জলের মধ্যে দেখা যায় হিজল গাছ। যেন ঘাটে নৌকা লাগতেই স্বাগত জানাচ্ছে হিজলের ফুল। স্থানীয়দের খুব চেনা এ গাছটি শুকনো মৌসুমেও দিব্যি থাকে। এমনকি রাজধানী শহরের একাধিক উদ্যানেও দেখা যায় হিজল গাছ। বর্তমানে কিছু সরকারি বেসরকারি প্র্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে এ গাছ লাগানো হচ্ছে। হিজলের প্রাণশক্তি অনেক বেশি, দীর্ঘজীবী গাছ, বিধ্বংসী বন্যা কিংবা তীব্র খরাও একে কুপোকাত করতে পারে না। জল এবং স্থল দুই জায়গাতেই এরা সাবলীল, এদের এই আলাদা বৈশিষ্ট্য ও অভিযোজনের কারনে হিজল সবার দৃষ্টি কাড়ে।

আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেফতারের দাবিতে নবীনগরে মানববন্ধন

নবীনগর, 11 September 2024, 520 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে এক আওয়ামী লীগের নেতাকে গ্রেফতারের দাবিতে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে গ্রামবাসী।

banner

আজ ১১ সেপ্টেম্বর বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার উত্তর কাইতলা ইউনিয়নের ব্রাহ্মণহাতা গ্রামের হাজারো মানুষ ১নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি অলি মুন্সির বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তারা।

এ সময় ব্রাহ্মণহাতা গ্রামের সজিব নামের এক যুবক অভিযোগ করে বলেন, আমাদের এলাকার খুনী, হত্যাকারী, দাঙ্গা-ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারী, উচ্ছৃঙ্খল ও চিহ্নিত মাদক কারবারি অলি মুন্সি। আওয়ামী লীগের সভাপতি অলি মুন্সির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি হত্যা মামলা রয়েছে। অথচ তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। তাকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাই।

আবু হানিফ নামের একজন বলেন, সে আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার সুবাদে তার সহযোগীদের নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অন্যায়-অপকর্মসহ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তার বিরুদ্ধে কেউ কোনো কিছু বললে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে নাজেহাল করা হতো। এখন সময় এসেছে তার বিচারের।

তাজুল ইসলাম নামে আরেকজন অভিযোগ করে বলেন, অলি মুন্সি আশপাশের গ্রামে মাদকের স্বর্গরাজ্য কায়েম করেছে। এলাকায় প্রতিদিন নেশা জাতীয় দ্রব্যাদি বিক্রি করার কারণে যুব সমাজ দিন দিন ধ্বংসের পথে রয়েছে। এছাড়াও অলি মুন্সি ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কাইতলা উত্তর ইউনিয়নের বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও সামাজিক অশান্তি সৃষ্টি করার মূল হোতা। তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৪ শহীদ পরিবারের মধ্যে আর্থিক সহায়তা

নবীনগর, 11 September 2024, 563 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত নবীনগর উপজেলার ৪ শহীদ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে প্রদান করা হয়।

banner

আজ ১১ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর মহিলা ডিগ্রি কলেজ মিলনায়তনে শহীদ পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময়সভা ও দোয়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

নবীনগর পৌর জামায়াতে ইসলামীর আমির মু. মোখলেছুর রহমানের সভাপতিত্ব প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও কুমিল্লা জেলা মহানগরীর আমির কাজী দ্বীন মোহাম্মদ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জামায়াতের আমির মোহাম্মদ গোলাম ফারুক, জেলা নায়েবে আমির কাজী ইয়াকুব আলী, জেলা সেক্রেটারি মোবারক হোসেন আকন্দ, উপজেলা সেক্রেটারি আবদুল হাফেজ, পৌর সভার সেক্রেটারি সাইফুর রহমান বাসার, জেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত প্রমুখ।

মাওলানা আমির হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, শহীদ পরিবারের সদস্য মো: শফিকুল ইসলাম, মো. নানু মিয়া, সুফিয়া বেগম।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে একটা স্বৈরাচার সরকার দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে গুম, খুন, জুলুম, নির্যাতন চালিয়েছে। মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। রক্ত পিপাসু দল আওয়ামীলীগ, দেশ ও দেশের মানুষকে ভারতের পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে রেখেছিল। ছাত্র-জনতা সহ্যৃ করতে না পেরে এ জালিম সরকারকে বিদায় দেয়ার জন্য রাজপথে নেমে ছিলো। এ আন্দোলন যারা জীবন দিয়ে বাস্তবায়ন করেছেন তাঁরা শহীদ।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নবীনগরের যারা শহীদ হলেন নবীনগর উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের বিটিবিশারা গ্রামের মো: সামুসুজ্জামানের ছেলে জাহেদুজ্জামান তানভীন (২৬) শহীদ হন রাজধানী ঢাকার উত্তরায়। বিটঘর গ্রামের মোঃ শফিকুল ইসলামের ছেলে তানজিল মাহমুদ সুজয় (১৯), শহীদ হওয়ার স্থান ঢাকার আশুলিয়ার বাইপাইল, গৌরনগরের মোঃ নানু মিয়ার ছেলে মো.কামরুল ইসলাম (২১) শহীদ হওয়ার স্থান মিরপুর ১০, থোল্লাকান্দি গ্রামের মৃত আব্দুল মোমিন মিয়ার ছেলে মো: রফিকুল ইসলাম(২৪), শহীদ হওয়ার স্থান চিটাগাং রোড, হিরাঝিল, ঢাকা। তাঁদের ৪ জনের লাশ নবীনগরে নিজ নিজ এলাকায় দাফন করা হয়েছে।

নবীনগরে ৪৩জন মুক্তিযোদ্ধাকে নির্মমভাবে হত্যার ৫৪তম দিবস পালিত

নবীনগর, 10 October 2024, 500 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরের বড়াইল ইউনিয়নের খারঘর গ্রামে ১৯৭১ সালে ১০ অক্টোবর পাক হানাদার বাহিনী মহান মুক্তিযোদ্ধে ৪৩ জনকে একসাথে নির্মমভাবে হত্যার ৫৪তম দিবস উপলক্ষ্যে এক স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

banner

আজ ১০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় উপজেলার ১নং বড়াইল ইউনিয়নের খারঘর গ্রামের আত্নদানকারী শহীদদের স্মরণে গণকবর সংরক্ষণ ও বাস্তায়ন কমিটি আয়োজনে পাগলা নদীর তীরে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধের ৭১ স্মৃতিসৌধ এবং খারঘর গণকবর জামে মসজিদ ও মাদরাসার সামনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহ্ফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে।

খারঘর গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্টানে খারঘর গণকবর সংরক্ষণ ও বাস্তায়ন কমিটি সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক মোঃ ইমরুল কায়েস সুমনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম।

গণকবর সংরক্ষণ ও বাস্তায়ন কমিটি সাধারণ সম্পাদক মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ জীবনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিশেষ অতিথি বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তকদির হোসেন মোহাম্মদ জসিম, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর ডা. আসাদুজ্জামান রিফাত, নবীনগর উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু মুছা, নবীনগর থানা কর্মকর্তা(ভারপ্রাপ্ত) সজল কান্তি দাস,নবীনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি এডভোকেট রেজাউল করিম সবুজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মোখলেছুর রহমান, খারঘর যুদ্ধে যুদ্ধাহত রিনা বেগম,সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, রজব আলী মোল্লা, বড়াইল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আবুল বাশার, বড়াইল কেন্দ্রীয় ঈদগাহ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. নাছির উদ্দীন মীর, বড়াইল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী কর্তৃক গণহত্যার শিকার বাংলাদেশে যতগুলো গণকবর রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম খারঘর গণকবর। এটি বড়াইল ইউনিয়নের খারঘর গ্রামের স্বাধীনতা যুদ্ধের ঐতিহ্যবাহী জায়গা। এই জায়গাটি স্বাধীনতা পরবর্তী অনেকেই ক্ষমতায় এসেছে কিন্তু উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে গঠিত সরকার কাছে এই এলাকা মুক্তিযোদ্ধা ও তরণ প্রজন্মের ও খারঘর গণকবর সংরক্ষণ কমিটির দাবি একটি গণকবর কমপ্লেক্স নির্মাণ ও অবহেলিত ৪৩ জন শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন করা।

বক্তারা আরো বলেন, খারঘর অনেক মুক্তিযোদ্ধা পরিবার রয়েছে যাদের পরিবারের সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করতে গিয়ে শহীদ ও আহত হয়েছেন। সেই শহীদ ও আহত পরিবার সদস্যদের প্রতি সরকারের মানবিক দৃষ্টি ও সহযোগিতা কামনা করেন।