চলারপথে রিপোর্ট :
ড্রাগন ফল চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন প্রবাস ফেরত এ. কে. এম মহসিন। তার এই সফলতা দেখে স্থানীয় অনেকেই ড্রাগন ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। ড্রাগন ফল চাষ করে তাঁর আর্থিক স্বচ্ছলতাও বেড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের বিদ্যানগর গ্রামের আবদুর রাজ্জাকের ছেলে এ. কে. এম মহসিন দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুরে চাকুরি করে ২০১৮ সালে দেশে ফিরে আসেন।
পরে তিনি ২০২১ সালে বাড়ির পাশে তার পরিত্যাক্ত ৫ কানি (১৫০ শতাংশ) জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান করেন। প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করে তিনি জমিতে ৬ হাজার ড্রাগন ফলের চারা রোপন করেন। প্রথম বছরেই তিনি প্রায় ১০ লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করেন।
এ. কে. এম মহসিন জানান, চলতি মৌসুমের শুরুতেই তার বাগানে ১ হাজার ২০০ কেজি ড্রাগন ফল উৎপাদন হয়। স্থানীয় বাজারে এই ফলগুলো আড়াই লাখ টাকা বিক্রি করেন। তিনি বলেন, এ বছর তিনি প্রায় ২০ লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে বাগান থেকেই ২শত টাকা কেজি দরে ড্রাগন ফল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, তিনি আশা করছেন এ বছরই বাগানে বিনিয়োগ করা টাকা তিনি তুলতে পারবেন। আগামী বছর থেকে তিনি ড্রাগন ফল বিক্রি করে লাভের মুখ দেখবেন। তিনি বলেন, তার সফলতা দেখে স্থানীয় অনেক তরুণই ড্রাগন চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
এ ব্যাপারে কসবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজেরা বেগম বলেন, আমরা ড্রাগন ফলের চাষী এ. কে. এম মহসিনকে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগীতা দিচ্ছি। ড্রাগন চাষ লাভজনক হওয়ায় ও মহসিনের সাফল্য দেখে এলাকার অনেক তরুনই বর্তমানে ড্রাগন ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
কসবায় গলিত ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিহীন অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আজ ৭ জুলাই রোববার সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। নিহত ওই নারীর নাম রাবেয়া ইসলাম রাবু (৩৩)। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার রসুল্লাবাদ গ্রামের মৃত আলী আজম সরকারের মেয়ে। মাদক ব্যবসার জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, জেলার কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের কাশিরামপুর গ্রামের মৃত সোনা মিয়ার ছেলে সামসুল ইসলাম প্রকাশ মিন্টু (৪৮), একই ইউনিয়নের রঘুরামপুর দক্ষিণপাড়ার মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে মো. আব্দুল আলীম (৪২) ও একই গ্রামের মৃত সামসু মিয়ার ছেলে মো. কুডু মিয়া (৩৮)।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) সোনাহর আলী জানান, গত ২ জুলাই কসবা উপজেলার বায়েক ইউপির কাশিরামপুরে পাহাড়ের ঢালে বাঁশঝাড়ের ভেতর থেকে মাথাবিহীন অর্ধগলিত একটি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মরদেহটির হাত ও পায়ের তালুতে চামড়া না থাকায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। দৈহিক গড়ন পর্যালোচনা করে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়, এটি একটি নারীর মরদেহ এবং ৫-৭ দিন আগে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে ঘটনাস্থল তল্লাশি করে কিছু আলামত পাওয়া যায় এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় নিহত নারীর নাম-পরিচয় পাওয়া যায়। তার পরিবারের লোকজনকে সংবাদ দিলে তারা এসে মরদেহ শনাক্ত করেন। এই ঘটনায় অজ্ঞাত আসামি করে নিহত রাবেয়া ইসলাম রাবুর ভাই বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
তিনি জানান, পুলিশ তদন্তে বায়েকের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী সামসুল ইসলাম প্রকাশ মিন্টুকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কসবা থেকে গ্রেফতার করা হয় আব্দুল আলীম ও মো. কুডু মিয়াকে। ৬ জুলাই শনিবার বিকেলে তারা সবাই আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোনাহর আলী আরও জানান, পুলিশের কাছে তিন আসামি জানিয়েছেন তারা তিনজনই মাদক ব্যবসায়ী।
নিহত রাবেয়া ইসলাম রাবু মাদক পরিবহন করে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেতেন। বেশ কিছুদিন আগে রাবু তাদের কাছ থেকে ১২ কেজি গাঁজা নিয়ে যান সরবরাহ করতে। কিন্তু সেই গাঁজার টাকা আর পোরিশোধ করেননি। এনিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলে আসছিল। এরই জেরে রাবুকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তারা। গত ২৫ জুলাই রাবু কসবায় আবারো মাদক নিতে এলে সামসুল ইসলাম প্রকাশ মিন্টু, আব্দুল আলীম ও মো. কুডু মিয়া তাকে ধরে বায়েকের সীমান্তবর্তী একটি পাহাড়ে নিয়ে যান। সেখানে রাবুকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে বাঁশের ঝোপে ফেলে চলে যান। নীরব এলাকা হওয়ায় মরদেহটি কারো নজরে পড়েনি। এক সপ্তাহ পর স্থানীয়রা মরদেহটি দেখতে পেয়ে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে সেটি উদ্ধার করে।
চলারপথে রিপোর্ট :
তিন বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা সীমান্ত হাট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আজ ১৫ জুন বৃহস্পতিবার দুপুরে সংস্কার কাজের জন্য ভারত-বাংলাদেশের যৌথ ইঞ্জিনিয়ারিং টিম হাটটি পরিদর্শন করেছে।
এসময় বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং টিমের নেতৃত্বে ছিলেন কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সীমান্ত হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য মো. আমিনুল এহসান খান। আর ভারতীয় তিন সদস্যের ইঞ্জিনিয়ারিং টিমের নেতৃত্ব দেন অনুরাগ সেন।
এরআগে ২০২০ সালের মার্চ থেকে করোনা মহামারির কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য কসবা সীমান্ত হাটের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় দুই দেশের হাট ব্যবস্থাপনা কমিটি। সম্প্রতি হাটটি খোলার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় হাটের ভেতরের কিছু অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলো সংস্কারের জন্য প্রাক্কলন করতে দুদেশের ইঞ্জিনিয়ারিং টিম হাট পরিদর্শন করে।
কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আমিমুল এহসান খান জানান, সপ্তাহের মধ্যে হাটের ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো সংস্কারে প্রাক্কলন করা হবে। এরপর সংস্কার কাজ শেষ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে হাটটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের চান্দাইসার গ্রামের সফিক মিয়ার ছেলে সবুজ মিয়ার সঙ্গে একই ইউনিয়নের মজলিশপুর গ্রামের মিন্টু মিয়ার ছেলে শরীফ মিয়ার একটি নারী সংক্রান্ত ঘটনায় বিরোধ হয়। ওই বিরোধ মেটাতে এলাকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নেতৃস্থানীয়রা দুই গ্রামবাসীর উদ্যোগে চান্দাইসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একটি সালিশ বৈঠকে বসেন। সাবেক ইউপি সদস্য মো. মতিন মিয়ার সভাপতিত্বে এবং বিল্লাল হোসেনের সঞ্চালনায় বৈঠকে ইউপি সদস্য রাশেদুল ইসলাম রাসেলসহ এলাকার অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক চলাকালীন দুই গ্রামের লোকজনদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে দুই গ্রামের মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তারা। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে এ সংঘর্ষ। খবর পেয়ে কসবা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টা চালিয়ে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ সময় উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে থেকে গুরুতর আহতরা কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।
অপরদিকে অন্যান্য আহতদের কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ আশপাশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালীন দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে।
এ ঘটনায় মজলিশপুর গ্রামের ফারুক হোসেন বাদী হয়ে চান্দাইসার গ্রামের ৯ জনের বিরুদ্ধে এবং চান্দাইসার গ্রামের সুজন মিয়া বাদী হয়ে ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ দায়ের করেন।
বিনাউটি ইউনিয়নের স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার রাশেদুল ইসলাম রাসেল বলেন, একটি নারীসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সবুজ ও শরীফ মিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। ওই বিরোধ মেটাতে সালিশ বৈঠক চলাকালীন দু’পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে আবারো সংঘর্ষ হয়। এ সময় দু’পক্ষই তাদের গ্রামের মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষ জড়ায়।
কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. জাকিয়া সুলতানা বলেন, নয়জনকে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল।
কসবা থানার ওসি মো. রাজু আহমেদ বলেন, দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। দু’পক্ষ দুটি অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগ দুটি প্রাথমিক তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে খাদে উল্টে গিয়ে নারী, শিশুসহ অন্তত ২৫ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। আজ ৬ এপ্রিল রবিবার ভোরে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের কসবা উপজেলার তিনলাখ পীর এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
আহতদের উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কারো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
সরাইল খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন রহমান জানান , সিলেট থেকে ছেড়ে আসা এস, আর পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস চট্টগ্রামে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে তিনলাখ পীর এলাকা অতিক্রম করার সময় তিনলাখ পীর ব্রিজের উওর পাশে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে উল্টে যায়। এ সময় স্থানীয়রা দ্রুত বাসের ভেতরে থাকা যাত্রীদের উদ্ধার করে এবং আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। তিনি আরো জানান, দুর্ঘটনা কবলিত বাসটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।