চলারপথে রিপোর্ট :
গোপালগঞ্জে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১৪ জুলাই বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন আয়োজিত এ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মুন্নী খাতুন সেমিনারে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. গোলাম কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলী খান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামার বাড়ির অতিরিক্ত উপ পরিচালক সঞ্জয় কুন্ডু, গোপালগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. সাদ মাহমুদ খান জয়, গণমাধ্যম কর্মী সৈয়দ মিরাজুল ইসলাম, এস এম হুমায়ুন কবির, প্রসূন মন্ডল, এস এম নজরুল ইসলাম, আজিজুর রহমান রনি সহ আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা মুন্নী খাতুন বলেন, সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে সামাজিক আন্দোলন সৃষ্টি করে আমাদের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
শহরের একটি বাসা থেকে আমিনুল ইসলাম (৩০) নামে এক পুলিশ সদস্যের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ ৮ এপ্রিল মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে কিশোরগঞ্জ শহরের নিউটাউন এলাকায় ভাড়াবাসা থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার গঙ্গানগর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হামিদের ছেলে আমিনুল। তিনি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে কর্মরত ছিলেন।
নিহতের শ্যালক ইয়াসিন মিয়া জানান, ৭ এপ্রিল সোমবার দুপুরে সর্বশেষ মা ও স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন আমিনুল। এরপর থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে পরিবারের সদস্যরা কিশোরগঞ্জের পুলিশকে জানালে তারা গিয়ে বাসার দরজা বন্ধ পান। ডাকাডাকি করেও তার সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে ভেতর প্রবেশ করে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরো জানান, ঈদের ছুটিতে স্ত্রী ও তার ৪ বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে গিয়েছিলেন। ৭ দিন থেকে স্ত্রী ও মেয়েকে বাড়িতে রেখে আবারও কর্মস্থলে ফিরে আসেন আমিনুল।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ গিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জ উপজেলায় ওয়ান শ্যুটারগানসহ মোঃ রাসেল মিয়া (৪২) নামে এক যুবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া পৃথক অভিযানে ৭টি ককটেল, দেশীয় অস্ত্র ও ৩টি চুরি করা গরুসহ ও একটি ট্রাক আটক করা হয়েছে।
সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ টোলপ্লাজা এলাকায় থেকে পৃথক অভিযানে এসব আটক করা হয়।
আটক রাসেল নরসিংদী জেলার সদর উপজেলার চিনিসপুর গ্রামের মৃত মোঃ ফিরোজ মিয়ার ছেলে।
আশুগঞ্জ থানা পুলিশ জানায়, আজ ২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টায় ভাড়া করা মোটরসাইকেল যোগে ভৈরবের দিকে যাওয়ার সময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর আশুগঞ্জ টোলপ্লাজা থেকে ১ টি ওয়ান শ্যুটারগান ও ১টি রাবার কার্তুজসহ রাসেলকে আটক করা হয়। এর আগে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে টোল প্লাজা এলাকায় দায়িত্ব পালনের সময় ১টি গরুর ট্রাককে পুলিশের সন্ধেহ হলে এর গতিরোধ করা হয়।
এসময় ট্রাকটি দ্রুত উল্টো দিকে ঘুরিয়ে রেলগেইট এলাকায় থামিয়ে ট্রাকে থাকা লোকজন পালিয়ে যায়। পরে ট্রাকে তল্লাশী চালিয়ে ৩টি চোরাই গরু, ৭টি অবিস্ফোরিত ককটেল, ২টি রামদা ও ০৬টি লোহার পাইপ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় চুরি করা গরু বহনকারী ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে।
আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইকবাল হোসাইন বলেন, আটক অস্ত্রধারী ও মালামালের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বলেন, অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও অন্যান্য অপরাধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আশুগঞ্জ থানা পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান চলছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র্যাব এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের নৃশংস ও ঘৃণ্যতম অপরাধ বিশেষ করে ধর্ষণ, অপহরণ, মাদক উদ্ধার, মানব পাচার, হত্যা মামলা, সন্ত্রাসী, চাদাঁবাজ, জঙ্গি দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। নরহত্যাসহ যে কোন ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে র্যাবের প্রতিটি সদস্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে জনসাধারণের জন্য নিরাপদ বাসযোগ্য সমাজ তথা দেশ বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ভিকটিম মোছাঃ সাদিয়া আক্তার কালিকচ্ছ কলেজ পাড়া মহিলা মাদ্রাসার নবম শ্রেণীর ছাত্রী। সে তার নানার বাড়ী নোয়াগাঁও (রাজু খার বাড়ী) হতে প্রতিদিন মাদ্র্রাসায় আসা যাওয়া করত। আসামী কৃষ্ণ কর্মকার নোয়াগাঁও গ্রামের জনৈক শাহিন এর ফার্মেসিতে কাজ করত। ভিকটিম মোছাঃ সাদিয়া আক্তার মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার পথে আসামী কৃষ্ণ কর্মকার তাকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল কথাবার্তা বলে উত্যক্ত করতঃ প্রেমের প্রস্তাব দিত। ভিকটিম আসামী কৃষ্ণ কর্মকারের প্রস্তাবে রাজি না হয়ে বাড়িতে তার পিতাকে ঘটনা জানালে তার পিতা আসামী কৃষ্ণ কর্মকারকে সাবধান করে। তারপরেও আসামী কৃষ্ণ কর্মকার ভিকটিমের সাথে কথা বলে নানাভাবে প্রলোভন দেয় এবং আসামীর কথা না শুনলে সে ভিকটিমকে সমাজে কলঙ্কিত করার হুমকি দেয়। আসামী কৃষ্ণ কর্মকারের ভয়ে ভিকটিম ঘটনার আগের দিন নোয়াগাঁও হতে তার নিজ বাড়িতে চলে আসে। ভিকটিম মোছাঃ সাদিয়া আক্তারকে গত ১৬ মার্চ ভোর অনুমান ৫টায় কৃষ্ণ কর্মকার বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ও প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ভিকটিমের পিতা মোঃ ফারুক মিয়া (৪০) বাদী হয়ে গত ৩০ মার্চ সরাইল থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৭/৫৮, তারিখ-৩০/০৩/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা-৭, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০২০)। আলোচিত এ ঘটনাটি মিডিয়ার মাধ্যমে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভিকটিম মোছাঃ সাদিয়া আক্তারকে উদ্ধার ও অপহরণকারী কৃষ্ণ কর্মকারকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র্যাব তার গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে।
এরই ধারাবাহিকতায় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের একটি আভিযানিক দল গত ৩১ মার্চ ৮টা ৫৫ মিনিটে চট্টগ্রাম মহানগরীর বহদ্দারহাট থানাধীন বহদ্দারহাট কাঁচা বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিম মোছাঃ সাদিয়া আক্তারকে উদ্ধার ও অপহরণকারী কৃষ্ণ কর্মকার (২৬), পিতা- চিত্ত কর্মকার, সাং- ধিতকুরা (কর্মকার পাড়া), থানা- মাধবপুর, জেলা- হবিগঞ্জ’কে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে, গ্রেফতারকৃত আসামী ও ভিকটিমকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানার মামলা নং-১৭/৫৮ তারিখ-৩০/০৩/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা-৭, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০২০) মূলে হস্তান্তর করা হয়েছে।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি
চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের (ব্রি) অধীনে পরিচালিত ’যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ধান চাষাবাদের লক্ষ্যে খামার যন্ত্রপাতি গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধিকরণ (SFMRA) প্রকল্পের অর্থায়নে উন্নয়নকৃত ব্রি হেড-ফিড কম্বাইন হারভেস্টারের প্রথম প্রটোটাইপের মাঠ পরীক্ষণ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
সিলেটের খাদিমনগরে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) কৃষি খামারে সোমবার এই মাঠ পরীক্ষণ সম্পন্ন হয়। মাঠ পরীক্ষণ অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া এবং অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) মো: মাহবুবুল হক পাটোয়োরী এবং বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর।
ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় কৃষিযন্ত্র প্রস্তুতকারকদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহার করে আলীম ইন্ডাস্ট্রিজের কারিগরী সহযোগিতায় দেশে এই প্রথম আন্তর্জাতিকমানের দেশীয় উপযোগী ব্রি হেড ফিড কম্বাইন হারভেস্টারটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এই যন্ত্রটি উন্নয়ন/উদ্ভাবন গ্রুপের প্রধান গবেষক ছিলেন এ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও ব্রি’র খামার যন্ত্রপাতি ও ফলনোত্তর প্রযুক্তি বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ কে এম সাইফুল ইসলাম, সহযোগী গবেষক ছিলেন একই বিভাগের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো: কামরুজ্জামান পিন্টু ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আরাফাত উল্লাহ খান।
এই কৃষিযন্ত্রটি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের কৃষকরা একই সাথে ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়াই ও বস্তাবন্দী করতে সক্ষম হবেন। প্রচলিত পদ্ধতির পরিবর্তে ধান সংগ্রহের ক্ষেত্রে এই যন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের কৃষক ও কৃষি উদ্যোক্তারা তাদের সময়, শ্রম ও অর্থ সাশ্রয় করতে পারবেন। হেড ফিড হারভেস্টার দিয়ে ধান কাটলে খড়ের কোন ক্ষতি হবে না, খড় আস্ত থাকবে। আমাদের দেশের কৃষকরা যারা পশুপালন করেন তাদের কাছে পশুর খাদ্য হিসেবে খড়ের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। যেসব অঞ্চলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পশুপালন করা হয় সেখানে শুকনো খড়ের রয়েছে বিশেষ চাহিদা। তাছাড়া কৃষকরা জ্বালানী, কাঁচা ঘরের ছই দেয়া, বীজ জাগ দেয়াসহ নানা কাজে খড় ব্যবহার করেন। তাই ধানের খড় সংরক্ষণ করাও অত্যন্ত জরুরি যা এই যন্ত্রের একটি বাড়তি সুবিধা বলে বিবেচিত হবে।
মাঠ পরীক্ষণ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রকল্প পরিচালক ও এই যন্ত্রের মূখ্য গবেষক ড. এ কে এম সাইফুল ইসলাম, আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলীমুল এহছান চৌধুরী, প্রোডাকশন ম্যানেজার মাহবুব হাছান, ব্রি’র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আরাফাত উল্লাহ খান, আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের গবেষণা কর্মকর্তা শ্যামল দেবনাথ ও অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
অনলাইন ডেস্ক :
ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নেতাকে থানায় মারধরের ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হকের স্ত্রী পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) সানজিদা আফরিন। আজ ১২ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার আলাপকালে তিনি বলেন, ‘সোস্যাল মিডিয়ায় আমি বুলিংয়ের শিকার। অনেকে নোংরা মানসিকতার পরিচয় দিচ্ছে। একটি ছবি ছড়িয়ে দিয়ে হারুন স্যারের সঙ্গে আমার বিয়ের কল্পকাহিনী প্রচার করছে। যে কেউ ভালোভাবে খেয়াল করলেই বুঝবে- ওই ছবির নারী আমি নই। এর আগে অনেক ইস্যুতে অনেকেই বুলিংয়ের শিকার হয়েছেন। এবার আমি এর শিকার।’
সানজিদা আরও বলেন, ‘হাসপাতালে কী ঘটেছে সে ব্যাপারে তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে পুরো বিষয় বেরিয়ে আসবে। ঘটনার দিন হাসপাতালে আমার স্বামী পৌঁছার পর আমাকে কোনো কিছু নিয়ে প্রশ্ন করেননি। আমার স্বামী প্রথম এডিসি হারুন স্যারের ওপর চড়াও হন।’
এডিসি হারুনের সঙ্গে ব্যক্তিগত কোনো সম্পর্ক আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হারুন স্যারের সঙ্গে আমার কোনো ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই। তিনি শুধুমাত্র আমার কলিগ। তবে হারুন স্যারের সহযোগিতা নিয়েছিলাম। তিনি আমাকে ডাক্তারের সিরিয়ালের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। এ ছাড়া আর কিছুই জানি না।’
সানজিদা আরো বলেন, ‘ইনটেনশন (উদ্দেশ্য) দেখে মনে হয়েছে, তারা আমাদের দু’জনকে পাশাপাশি দাঁড় করিয়ে একটা ভিডিও করতে চাচ্ছে। পরবর্তীতে তারা সেটি ইউজ (ব্যবহার) করবেন, একটি অসৎ উদ্দেশ্যের জন্য হতে পারে।’
পরিকল্পিতভাবে আপনার স্বামী এই ঘটনা ঘটিয়েছেন কি-না জানতে চাইলে সানজিদা বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে কি-না বলতে পারব না। তবে তিনি খুব মারমুখী ছিলেন।’
সানজিদা ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) হিসেবে কর্মরত এবং ৩১তম বিসিএস কর্মকর্তা।
সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সানজিদা বলেন, ‘বেশ কিছুদিন আমার কার্ডিয়াক সমস্যা হচ্ছিল। ২০১৯ সাল থেকে আমি হাইপার টেনশনের মেডিসিন খাচ্ছি। চার-পাঁচ মাস ধরে সমস্যাটা বেড়ে যায়। শনিবার ব্যথা বেড়ে যায়। সেদিন ফ্রি সময় থাকায় ডাক্তার দেখাতে চাই। আমি যে ডাক্তারকে দেখাই, তিনি দেশের বাইরে থাকায় ইব্রাহীম কার্ডিয়াক হাসপাতালে এডিসি হারুন স্যারকে একটি সিরিয়াল করে দিতে বলি। তিনি ওসির মাধ্যমে সিরিয়াল ম্যানেজ করে দেন।’
ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সন্ধ্যায় ৬টায় আমি সেখানে যাওয়ার পরে দেখি, যেই ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া হয়েছে তিনি একটি কনফারেন্সে আছেন। বিষয়টি হারুন স্যারকে জানালে, তিনি আশপাশে থাকায় হাসপাতালে আসেন। তিনি এসে একজন ডাক্তারকে ম্যানেজ করেন। তাকে দেখানোর পর বেশ কিছু টেস্ট দেন।’
ঘটনার সময় ইটিটি রুমে ছিলেন দাবি করে সানজিদা বলেন, “এ ঘটনার সময় আমি যে রুমে ইটিটি করানো হয় সেই রুমে ছিলাম। ইটিটি করানোর ১৫-২০ মিনিট পর আমি বাইরে একটা হট্টগোলের শব্দ শুনি। প্রথম যে সাউন্ডটা (শব্দটা) কানে আসে যে স্যারই (এডিসি হারুন) চিৎকার করে বলছেন, ‘ভাই, আপনি আমার গায়ে হাত তুললেন কেন? আপনি তো আমার গায়ে হাত তুলতে পারেন না’।”
তিনি আরো বলেন, ‘আমার প্রথমে ধারণা হয়েছিল যে, হয়তো অন্য কারো সঙ্গে ঝামেলা। কিছুক্ষণ পর আমি দেখতে পাই আমার হাজব্যান্ড (আজিজুল হক মামুন), উনি আসলে ওখানে কী করছিলেন, কেন গিয়েছিলেন আমি জানি না। ওনাকে টোটালি আউট অব মাইন্ড লাগছিল (মানসিকভাবে স্থির ছিলেন না) এবং খুবই উত্তেজিত ছিলেন। ওনার সঙ্গে আরো কয়েকজন ছেলে ছিল, আমি আসলে তাদের চিনি না। তারা স্যারকে (এডিসি হারুন) মারতে মারতে ইটিটি রুমে নিয়ে এলেন।’
‘তারা মূলত স্যারকে (এডিসি হারুন) মারতে মারতে, টেনে-হিঁচড়ে এই রুমে নিয়ে আসে। স্যার তাদের হাত থেকে বাঁচতে ইটিটি রুমের এক কোনায় গিয়ে দাঁড়ান’, যোগ করেন সানজিদা।
সানজিদা বলেন, “এরপর আমার হাজব্যান্ড তার সঙ্গে থাকা লোকজনকে বললেন, ‘এই ভিডিও কর।’ পরে সবাই ফোন বের করে ভিডিও করা শুরু করে। যখন তারা ভিডিও শুরু করে তখন আমি আমার হাজব্যান্ড এবং তার সঙ্গে থাকা লোকজনের সঙ্গে চিল্লাচিল্লি শুরু করি। এরপর আমি যারা ভিডিও করছে তাদের মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের হাতের সঙ্গে লেগে আমিও হাতে সামান্য ব্যথা পাই। তার কারণ আমি চাচ্ছিলাম না সেই অবস্থায় কেউ আমার ভিডিও করুক। আর তাছাড়া আমার হাজব্যান্ডের সঙ্গে যেসব ছেলে ছিল আমি তাদের কাউকে চিনতামও না।”
তিনি আরও বলেন, ‘ওই অবস্থায় আমার হাজবেন্ড আমার গায়ে হাত তোলে এবং স্যারকে বের করার চেষ্টা করে। তখন স্যারের কাছে বিষয়টি সেফ মনে হয়নি। এরপর স্যার কিছুক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন। তখন হাসপাতালের সিকিউরিটির লোকজনও আসেন। এর ১০/১৫ মিনিট পর থানা ফোর্স এলে তারা সেখান থেকে বের হয়ে যায়।’
প্রসঙ্গত, শনিবার রাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগের ২ কেন্দ্রীয় নেতাকে পুলিশ নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করে বলে অভিযোগ ওঠে। আহত ব্যক্তিরা হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল শাখার সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ।
ভুক্তভোগী ও তাদের সহপাঠীদের অভিযোগ, পুলিশের রমনা বিভাগের এডিসি হারুন অর রশিদ তাদের থানার ভেতিরে নিয়ে বেড়ধক পেটান। এমনকি ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দেওয়ার পরও হারুনের সঙ্গে ১০-১৫ পুলিশ সদস্য মিলে তাদের পিটিয়েছেন।
সংগৃহীত