চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে পারিবারিক কলহের জেরে মাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বৃদ্ধা মারা যান।
নিহত মালেকা বেগম (৫৫) আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের মাজন খাঁর স্ত্রী।
নিহত মালেকা বেগমের নাতনি সানজিদা অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে তার মামা শাহিন মিয়া ও তার স্ত্রী জান্নাত এবং বড় মামি সেফালি ও মামাতো ভাই ইয়াসিন মালেকা বেগমকে মারধর করেন। তারা মালেকাকে মারধর করে প্রায়ই ৪ ঘণ্টা ঘরে ফেলে রাখে। এ সময় তার মেজো মামা তার নানিকে অজ্ঞান অবস্থায় দুপুর ১টার দিকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে ভর্তি করলে সন্ধ্যার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ বিষয়ে আশুগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহমেদ বলেন, ছেলে ও পুত্রবধূর সঙ্গে মালেকা বেগমের প্রায়ই ঝগড়া হত। দুপুরে মালেকা বেগমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে তিনি মারা যান। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
স্টাফ রিপোর্টার :
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচন। আজ ১৬ জানুয়ারি সোমবার প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বিকেলে উপ-নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করেছেন।
বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া পেয়েছেন “ডাব” প্রতীক, এই আসনের অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী, সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কৃত নেতা অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা পেয়েছেন “ সিংহ” প্রতীক, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু আসিফ আহমেদ পেয়েছেন “মটর গাড়ি (কার)” প্রতীক, এছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল হামিদ ভাসানী পেয়েছেন “লাঙ্গল” প্রতীক ও জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম জুয়েল পেয়েছেন “গোলাপ” ফুল প্রতীক।
উপ-নির্বাচনের সহকারি রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ জিল্লুর রহমান বিকেলে পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এখন থেকে প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন।
উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া এই আসন থেকে ৫ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। সর্বশেষ তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়েছিলেন। তিনি বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ছিলেন। গত ১১ ডিসেম্বর তিনি জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করায় আসনটি শুন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। পরে উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিএনপির চেয়ারপার্সনের পদ থেকে পদত্যাগ করে উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
উপ-নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থী দেয়নি। কিন্তু আওয়ামীলীগের তিনজন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। পরে দলীয় সিদ্ধান্তে তারা তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল- মামুন সরকার বলেন, ‘এখানে যেহেতু দল কোনো প্রার্থী দেয়নি সেক্ষেত্রে দলের কথা বলে কেউ প্রার্থী হতে পারেন না। তারা স্বেচ্ছায় মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। মূলত নির্বাচনটা হতে যাচ্ছে অনেকটা অসময়ে। দলের প্রার্থীরা সময় নিয়ে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে পারবেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মহাসড়কের যানবাহনে তল্লাসী করে বিপুল পরিমান মাদক আটক করেছে শিক্ষার্থীরা। এ সময় ৬জন মাদক পাচারকারী ও বিদেশী অস্ত্রসহ ১জনকে আটক করা হয়।
৯ আগস্ট শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজা এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা চলে।
আটককৃত মাদকের মধ্যে রয়েছে গাজাঁ ও ফেনসিডিল। এরমধ্যে সাড়ে ১০ কেজি গাঁজা ও ২২ বোতল ফেনসিডিলসহ একটি বিদেশী পিস্তল আটক করে শিক্ষার্থীরা। আটককৃতরা হলেন রাজধানী ঢাকার শনি আখড়ার আকবর আলীর ছেলে মালেক, নারায়নগঞ্জের রফিক উদ্দিনের ছেলে পলাশ, নেত্রকোনার শামছু মিয়া ছেলে জুয়েল, গোপালগঞ্জের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে রাসেল মিয়া, নরসিংদীর শাহানাজ মিয়ার ছেলে খলিল মিয়া, সিলেটের মদিনা মার্কেটের মতিলাল তালুকদারের ছেলে সৈকত তালুকদার। পরে আটককৃতদের সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেন শিক্ষার্থীরা।
কোটা আন্দোলনের সমন্বয়ক সুফিয়ান আজাদ জানান, মহাকসড়কের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী না থাকায় সেই সুযোগে মাদক কারবারীরা বিপুল পরিমান মাদক বিভিন্ন পরিবহনে করে মাদক পাচার করছে। তাই মাদক পাচার রোধে শিক্ষার্থীদের এই কার্যক্রম চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আগ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
আটককৃত মাদক ব্যবসায়ীরা জানান, সিলেট ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা এ সব মাদক ক্রয় করে ঢাকা, নেত্রকোনা, নারায়নগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে দিতে তারা মাদক বহন করে পাচার করছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয় জেলার আশুগঞ্জে ব্যাংক ডাকাতি করতে গিয়ে নৈশপ্রহরী রাজেশ বিশ্বাস হত্যা মামলার দুই আসামিকে যাবজ্জীবন ও তিন জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ ২৫ জুন মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক আব্দুল হান্নান এ রায় প্রদান করেন। রায়ে আশুগঞ্জ উপজেলার বগইর গ্রামের জামাল হোসেন ও আড়াইসিধা গ্রামের জমির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও দুইবছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়াও একই উপজেলার চরচারতলা গ্রামের মো. মোস্তফা, শাহাদাৎ হোসেন ও মাসুম কবিরকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতে উপস্থিত থাকলেও অন্য তিন আসামি পলাতক রয়েছেন। এ ছাড়া স্বাক্ষ্য প্রমাণ না থাকায় সাদ্দাম নামে একজনকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি (পিপি) দ্বীন ইসলাম বলেন, খুনসহ ডাকাতির ঘটনায় আদালত যে রায় দিয়েছেন তা সন্তোষজসক। দেশে এভাবে ন্যায় বিচার হলে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া কোর্ট পরিদর্শক কাজী দিদারুল আলম বলেন, আলোচিত মামলাটির আসামিদের যথাযথ সাজা হওয়ায় অন্যান্য অপরাধীররা এ ধরনের অপরাধ থেকে নিভৃত থাকবে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মবাড়িয়ার আশুগঞ্জে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের (বিডিবিএল) শাখায় ডাকাতি করতে গিয়ে নৈশপ্রহরী রাজেশ বিশ্বাসকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পরে ২৬ সেপ্টেম্বর তার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় বাদী হয়ে ওই শাখার ব্যবস্থাপক মোবাশ্বের হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেন। পুলিশ দীর্ঘ তদন্তশেষে ৬ জনকে অভিযুক্ত করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।