অনলাইন ডেস্ক :
ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালের দুই চিকিৎসকের জামিন হওয়ায় সারাদেশে ব্যক্তিগত চেম্বার ও অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখার কর্মসূচি স্থগিত করেছেন চিকিৎসকরা। আজ ১৯ জুলাই মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেলে সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেশন অব অল সোসাইটি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও সোসাইটি অব সার্জনসের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম।
এ সময় লিখিত বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ও সোসাইটি অব মেডিসিনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির। তিনি বলেন, ‘রাজধানীর গ্রিন রোডের সেন্ট্রাল হসপিটালে দুই চিকিৎসক ডা. মুনা সাহা ও ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা জামিনে মুক্তি পাওয়ায় চিকিৎসকদের আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে। তাই আজ থেকে সারাদেশে চিকিৎসকের চেম্বার ও অস্ত্রোপচার শুরু হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ও স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও সোসাইটি অব মেডিসিনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. মো. টিটু মিঞা।
এর আগে শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের কার্যালয়ে সেন্ট্রাল হসপিটালের ঘটনায় দুই চিকিৎসক গ্রেপ্তারের বিষয়ে বৈঠক হয়। সেখানে তিন দিনের কর্মসূচি গৃহীত হয়। রবিবার সারাদেশে মানবন্ধন এবং সোমবার ও মঙ্গলবার সারাদেশে বেসরকারি চেম্বার বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন চিকিৎসকরা।
অনলাইন ডেস্ক :
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের তাদের নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে দ্বারে দ্বারে গিয়ে জনগণকে নৌকায় ভোট চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
কারণ, একমাত্র আওয়ামী লীগই দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে এবং দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “আমরা গতকাল বুধবার আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছি। ইশতেহারটি পড়ুন এবং ইশতেহার নিয়ে জনগণের কাছে যান এবং নৌকায় ভোট চান।”
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ অপরাহ্নে দলের তেজগাঁও কার্যালয় থেকে জামালপুর, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, চাঁদপুর ও বান্দরবানে আওয়ামী লীগের ছয়টি নির্বাচনী জনসভায় ভার্চুয়ালি দেওয়া ভাষণে একথা বলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর করতে সক্ষম হয়েছে এবং একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এর যাত্রা ২০২৬ সালে শুরু হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা গত ১৫ বছরে দেশের যে উন্নয়ন করেছি সেই উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে এবং একমাত্র আওয়ামী লীগই পারবে ক্ষমতায় আসলে সেই অগ্রযাত্রাটা ধরে রাখতে। সেকারণে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য আপনারা জনগণের দ্বারে দ্বারে যাবেন। আপনারা ভোট চাইবেন। জনগণ ভোট দিয়ে যেন আমাদের সেবা করার সুযোগ দেন। আর একটি কথা এবার যেহেতু নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে নানারকম চক্রান্ত হচ্ছে তাই নির্বাচনের পরিবেশটা যাতে সুন্দর হয়, উৎসবমুখর হয়, প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
তিনি এ সময় বিএনপিকে রাজনৈতিক দল নয়, বরং সন্ত্রাসি সংগঠন বলে আখ্যায়িত করেন।
তিনি বলেন, বিএনপি হচ্ছে একটি সন্ত্রাসি দল আর একটি দল (জামায়াত) হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের দল। আর এরা নির্বাচনে না আসলে নির্বাচন অংগ্রহণমূলক হবে না, এটা আমরা বিশ^াস করি না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের অংশগ্রহণ হবে জনগণের সমাবেশ হলে। ভোটারদের আগমনে তাদের অংশগ্রহণে এখানে নির্বাচন হবে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। আমরা সেটাই চাই। আর সন্ত্রাসি দল তারা নির্বাচনে বিশ^াসও করে না মানুষ খুন ছাড়া আর দুনীতি করা ছাড়া ওদের দিয়ে দেশের কোন কল্যাণও আসবে না। ওরা মানুষকে কিছুই দিতে পারবে না।
তিনি বলেন, সেই করণেই আমরা নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিয়েছি। হ্যাঁ, নৌকা মার্কা দিয়েছি পাশাপাশি আরও যারা দাঁড়াতে চায় তারাও দাঁড়াবে। এখানে একটি অনুরোধ থাকবে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ আপনারা বজায় রাখবেন। যার যার ভোট সে সে চাইবেন। জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দেবে। এটাতো আমাদেরই শ্লোগান। ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’-এই শ্লোগান দিয়েই তো আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি। এই শ্লোগান দিয়েই তো আমরা সংগ্রাম করেছি। সে কথাটা মনে রেখে যার যার ভোট সে সে চাইবেন। জনগণ যাকে ভোট দেবে সেটাই মেনে নেবেন। সেভাবেই এই নির্বাচন পরিচালিত হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ভোট চাওয়ার অধিকার যেমন প্রার্থীর আছে তেমনি ভোট দেওয়ার অধিকার জনগণের। এখানে কেউ কারো ওপর কোন বল প্রয়োগ করার চেষ্টা করবেন না। কোন সংঘাত সৃষ্টি করবেন না।
তিনি বলেন, এখন ডিজিটাল যুগ। সকলের হাতেই মোবাইল ফোন রয়েছে, সিসি ক্যামেরা রয়েছে, কাজেই যারাই গোলমাল করবেন, ছবি কিন্তু উঠে আসবে। আর নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হলে কেউ কিন্তু রেহাই পাবে না। এটা মাথায় রাখতে হবে। আর জনগণ ভোট দেবে তাদের সেই ভোট দেওয়ার সুন্দর পরিবেশ তেরি করে দিতে হবে। ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আসতে দিতে হবে এবং যাতে নির্বাচন সুষ্ঠু হয় সেই ব্যবস্থাটা সবাইকে নিতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, “ইনশাআল্লাহ আওয়ামী লীগ জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আবার জনগণের সেবা করার সুযোগ পাবে, জনগণের কাছে সেটাই আমাদের দাবি। সেটাই আমাদের আকাঙ্খা। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ তথা জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ ইনশাআল্লাহ আমরা গড়ে তুলবো।”
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টরে উন্নয়ন অগ্রগতি হয়েছে। বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে বিএনপির-জামায়াতের ২০ দলীয় জোট মিলে মাত্র ৩০টি সিট পেয়েছিল। এরপর থেকেই বিএনপি নির্বাচন বিরোধী কার্যকলাপ শুরু করে। ২০১৪ সালে নির্বাচন বানচাল করার জন্য ২০১৩ সাল থেকে আগুন সন্ত্রাস শুরু করে। তাদের দেওয়া আগুনে কত মানুষ অগ্নিদগন্ধ হয়েছে তার হিসেব নেই।
‘জিয়াউর রহমান যেমন ক্ষমতায় এসে হত্যা, গুম, খুন শুরু করে খালেদা জিয়াও একইভাবে ক্ষমতায় এসে একই কর্মকা- করেছে’ বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে বিএনপির ক্ষমতায় আসার পর আরও এক ধাপ অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। দুর্নীতি, হত্যা, গুম, খুন ধর্ষণ, হামলা, নির্যাতন-এমন কোনো বিষয় নেই যে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন করেনি। এই কারণেই বিএনপিকে ২০০৮ সালে দেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করে। আবারো ২০১৩-১৪ সালের মতো বিএনপি অগ্নি সন্ত্রাস শুরু করেছে নির্বাচন বানচালের নামে। তিনি বলেন, একটি দেশে ক্ষমতার পরিবর্তন হয় নির্বাচনের মাধ্যমে। এদেশের অতীত ইতিহাস বলে আওয়ামী লীগের হাতে এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়, এছাড়া অন্য কোনো দলের হাতে হয় না। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ যে ইশতেহার দিয়েছিল তা বাস্তবায়ন করেছে। সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা দিন বদলের সনদ ঘোষণা করেছিলাম। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে সরকার কাজ করেছে। আজ বাংলাদেশের দৃশ্যপট উন্নয়ন অগ্রগতিতে পরিবর্তন হয়েছে, ২০২১ সালেই উন্নয়নশীল বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জন্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা আমরা পেয়েছি। সেটাকে ধরে রেখে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, উন্নত সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলতে। আমরা পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। প্রতিটা মানুষ যেন উন্নত জীবন পায় সেটিই আমাদের লক্ষ্য, সেই লক্ষ্যেই আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
গত ২০ ডিসেম্বর সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহ পরান (রহ.) মাজার জিয়ারত এবং সমাবেশের মাধ্যমে দলের নির্বাচনী প্রচারণার আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। আগামীকাল তিনি বরিশাল যাবেন এবং ওইদিন বিকেল ৩টায় জেলা শহরে এক নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এরপর ৩০ ডিসেম্বর গোপালগঞ্জ সফর করবেন এবং গোপালগঞ্জ-৩ (টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া) আসনের জনসভায় ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা। একই দিন মাদারীপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ও দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া তেজগাঁও দলীয় কার্যালয় প্রান্তে এবং শেরপুর প্রান্তে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।বাসস
রংপুর প্রতিনিধি :
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী মোঃ আবু সাঈদকে মৃত্যুদন্ডসহ অর্থদন্ড দিয়েছেন আদালত। আজ ১৯ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর নারী ও শিশু নিযার্তন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মোঃ আলী আহমেদ এ রায় দেন। আসামি সাঈদ জামিনে মুক্ত থাকার পর বর্তমানে পলাতক রয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, রংপুর পীরগঞ্জ উপজেলার আজিমুদ্দিনের ছেলে আবু সাঈদের সাথে বিয়ে হয় একই উপজেলার অনন্তরামপুর গ্রামের তাজিম উদ্দিনের মেয়ে তানজিনা খাতুনের। তানজিনা ছিল আবু সাঈদের ১৭ নম্বর স্ত্রী। বিয়ের পর থেকে তানজিনার কাছে সাঈদ যৌতুকের টাকা দাবী করে আসছিল। এরই মধ্যে সাঈদ ১৮তম স্ত্রী হিসেবে তাছকিরা বেগমকে বিয়ে করে। ২০০৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ১৫ হাজার টাকা যৌতুকের দাবিতে সাঈদ তার নব-বিবাহিত স্ত্রী তাছকিরা বেগমের সহযোগিতা তানজিনাকে পিটিয়ে হত্যা করে এবং লাশ পার্শ্ববর্তী ধান ক্ষেতে ফেলে রাখে।
এ ঘটনার পরদিন ৯ তানজিনার বাবা তাজিম বাদী হয় পীরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করে। তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ১৩ জুলাই আদালতে চার্জশীট দাখিল করে পুলিশ। এরই মধ্যে আবু সাঈদ জামিন পেলে ২০১১ সালের ২৩ অক্টোবর থেকে পলাতক রয়েছে। সাঈদের ১৮তম স্ত্রী তাছকিরাও জামিনে মুক্ত হওয়ার পর ২০১৪ সালের ১৮ মে থেকে পলাতক রয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে বিচার কার্যক্রম শেষে আদালতের বিচারক বৃহস্পতিবার আবু সাঈদকে মৃত্যুদন্ড ও ৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড দেন। অর্থদন্ড পরিশোধে ব্যর্থ হলে আরও এক মাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয়। এ হত্যার সাথে সম্পৃক্ততা না থাকায় মামলার অপর আসামী তাছকিরা বেগমকে খালাস দেয়া হয়েছে।
আদালতের পিপি তাজিবুর রহমান লাইজু বলেন, আদালতে রায়ে বাদীপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছে। তারা ন্যায়বিচার পেয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আলুর দাম বৃদ্ধির কারসাজি রোধে ফরিদপুরে আলুর হিমাগার ও আড়তে অভিযান চালিয়েছে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর।
আজ ১৩ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকালে শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে হিমাগারে ও হাজী শরিয়াতুল্লাহ বাজারে এই অভিযানে পরিচালনা করা হয়।
হিমাগারটিতে আলু মজুদের পরিমানসহ ক্রয়-বিক্রয় প্রক্রিয়া ও রশিদ যাচাই বাছাই করা হয়। এসময় আলু বোঝাই একটি পিকআপ চালকের কাছে কোন ধরনের রশিদ না পাওয়ায় সেটি জব্দ করা হয়।
পরে চালক কে অনুসরণ শহরের হাজী শরিয়াতুল্লাহ বাজারে সেই ব্যবসায়ীকে চিহ্নিত করে রশিদ বিহীন আলু ক্রয়ের অপরাধে দয়াল ভান্ডারের মালিক কে ৫ হাজার টাকা জরিমান করা হয়।
অভিযানের নেতৃত্ব দেন জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মো: সোহেল শেখ। তিনি বলেন, আলুর হিমাগার ও বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। কোন ধরনের ক্রয় বিক্রয় রশিদ না পাওয়ায় হিমাগার থেকে একটি আলু বোঝাই পিকআপ জব্দ করা হয়। সেসময় ভোক্তা অধিকারের টিম তাকে সাথে করে ওই ব্যবসায়ীর আড়তে গেলে সেখানেও তার কোন আলু ক্রয়ের রশিদ না থাকায় তাকে জরিমানা করা হয়। আলুর বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এসময় জেলা কৃষি বিপনন অধিপ্তরের সিনিয়র কর্মকর্তা মো: সাহাদাত হোসেন, জেলা পুলিশের একটি টিম ও বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ফরিদপুরের হিমাগারটিতে বর্তমানে ৪শ ৬২ মে.টন আলু মজুদ রয়েছে। ব্যবসায়ী ও মজুদকারীরা হিমাগারটি থেকে সপ্তাতে ৩ দিন আলু বের করে বিভিন্ন আড়তে বিক্রি করে থাকেন।
আজ ফরিদপুরের বাজারে আলু পাইকারি প্রতি কেজি ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন বাজার ভেদে খুচরা পর্যায়ে সেই আলু প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
চলারপথে ডেস্ক :
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলেই উন্নয়ন হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ মানুষকে উপহার দেয় উন্নয়ন। আমরা আজ শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি প্রত্যেকের ঘরে ঘরে। আমরা নতুন নতুন স্কুল করেছি। ২৬ হাজার নতুন প্রাইমারি স্কুল সরকারীকরণ করেছি। আজ আমাদের সাক্ষরতার হার ৭৫ দশমিক ২ শতাংশ।
আজ ১১ মার্চ শনিবার বিকেলে ময়মনসিংহের সার্কিট হাউজ মাঠে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে ময়মনসিংহে চারটি সিনেমা হলে বোমা হামলা হয়। তখন অনেক মানুষ মারা যায় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওদের ক্ষমতায় থাকা মানেই দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে উন্নয়ন হয়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরই ময়মনসিংহকে বিভাগ করে দিয়েছি। প্রতিটি বিভাগের মতো এ বিভাগে ময়মনসিংহে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হবে, একটি পৃথক ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় করে দেবো। আমরা অনেক কিছু করতে পারতাম। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে অনেক কিছু সম্ভব হয়নি।’
দেশে খাদ্য উদ্বৃত্ত আছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘২০০১ সালে আমরা যখন ক্ষমতা হস্তান্তর করি, তখনো ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুত রেখে গেছি। ২০০১ সালে আসলো লুটেরা, সন্ত্রাসীর দল বিএনপি। তারা আবার বাংলাদেশকে খাদ্যে ঘাটতির দেশে পরিণত করে। ২০০৯ সালে আবার যখন সরকার গঠন করি, তখন দেখি সেই ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি। আল্লাহর রহমতে দেশে এখন আর খাদ্য ঘাটতি নেই। ২১ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য এখন মজুত আছে।’
আমিষের উৎপাদন বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আবাদি জমির পাশাপাশি আমাদের জলাভূমিকেও ব্যবহার করতে হবে। মাছ চাষের মাধ্যমে জলাভূমির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’
যুবসমাজকে উদ্যোক্তা হিসেবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘দেশের যুবসমাজকে উন্নয়নের অংশীদার হতে হবে। আমরা যুবকদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ ও ঋণের ব্যবস্থা করেছি। যুবকরা এসব সুযোগ নেওয়ার মাধ্যমে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আরও মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে পারবেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার একটাই লক্ষ্য—আমার বাবা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য তা বাস্তবায়ন করা।’
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার মাসে ময়মনসিংহে আমি আপনাদের জন্য কিছু উপহার নিয়ে এসেছি। এসময় উদ্বোধন করা ৭৩টি উন্নয়ন প্রকল্প পড়ে শুনিয়ে তিনি বলেন, স্বাধীনতার মাসে ৭৩টি প্রকল্প উদ্বোধন করে দিয়ে গেলাম, সেগুলো স্বযত্নে রাখবেন। এরপর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা ৩০টি প্রকল্প পড়ে শুনিয়ে বলেন, এগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।
এর আগে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে জনসভাস্থল সার্কিট হাউজ মাঠ থেকে একযোগে ৭৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৩০টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরমধ্যে প্রায় ৫৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা ৭৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং প্রায় দুই হাজার ৭৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সরকারপ্রধান। দুপুর ২টা ৫৮ মিনিটে জনসভা মঞ্চে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী। বিকেল ৩টায় প্রধান অতিথির আসন গ্রহণ করেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহেতাশেমুল আলমের সভাপতিত্বে জনসভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, মির্জা আজম এমপি, শফিউল আজম চৌধুরী নাদেল প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগ দিতে সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারণ মানুষ দলে দলে আসতে থাকেন। দুপুর ১২টার দিকে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠ। প্রধানমন্ত্রী আসার আগেই জনসমুদ্রে পরিণত হয় জনসভাস্থল। সকাল থেকে সড়কজুড়ে নাচ-গান আর বাদ্য-বাজনা বাজিয়ে জনসভায় যোগ দেন নেতাকর্মীরা।
চলারপথে রিপোর্ট :
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে পাগলা কুকুরের কামড়ে নারী ও শিশুসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। আজ ১৯ জুন সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রায়গ্রাম ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার বিভিন্ন জায়গায় এসব মানুষকে কামড়ে জখম করে কুকুরটি। এর মধ্যে ১৭ জন কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। অন্যদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, সকালে রায়গ্রামে সাদা রঙের একটি পাগলা কুকুর একের পর এক পথচারী, দোকানি, স্কুলছাত্রী, শিশুদের কামড়াতে শুরু করে। স্থানীয়রা কুকুরটিকে ধাওয়া করলে সেখান থেকে দৌড়ে হেলা, বলিদাপাড়া ও পৌরসভার নতুন বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষকে কামড়ে আহত করে। এক পর্যায়ে কুকুরটি ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যায়।
আহতদের উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আজগর আলী বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বেশ কয়েকজন রোগী এসেছে। আমরা তাদের ভ্যাকসিনসহ চিকিৎসা দিয়েছি। কামড়ে দু’জনের আঘাত বেশি গুরুতর হওয়ায় তাদের ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহতদের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।