চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের পৌর এলাকায় এক যুবক ৭ জনকে দাঁ দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন। এ ঘটনায় আরজুদা বেগম (৫০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
আজ ১৯ জুলাই বুধবার বেলা ১১টায় পৌর ভাদুঘর এলাকার সাবর বাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আরজুদা বেগম ভাদুঘর এলাকার সবুজ আলীর স্ত্রী। এ ঘটনায় ঘাতক সিহাব মিয়াকে (২৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আহতরা হলেন- সাজু মিয়া (৫০) নয়ন মণি (১৪) মুখলেস মিয়া (৪৫) ওমর আলী (৮০) খালেদা বেগম (৪৪) ও রাবেয়া বেগম (৫০)। আহত ৪ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
আহত নয়ন মণি বলেন, আমরা বাড়ি থেকে বের হয়ে পুকুর পাড়ে যাওয়ার সময় সিহাব আমাকে দাঁ দিয়ে মাথায় আঘাত করে। আঘাতে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। এ সময় আমার সঙ্গে থাকা কয়েকজনকেও এলোপাতাড়ি আঘাত করে দাঁ দিয়ে। পরে এলাকাবাসী আমাকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে যায়।
নয়ন মণীর ভাই জুনায়েদ বলেন, সিহাব গত ১ মাস আগে জেল থেকে বের হয়েছেন। সে মানসিকভাবে সুস্থ নয়। প্রায়ই মানুষদের রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম জানান, ঘাতক সিহাব নারী বিদ্বেষী ছিলেন। তিনি প্রতিনিয়ত নারীদের রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো বলে এলাকাবাসী জানান। ঘাতক সিহাবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে
চলারপথে রিপোর্ট :
বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা ও জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্থানীয় এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার প্রায় দুই শতাধিক কবি সাহিত্যিকদের আনন্দঘন অংশহগ্রহনের মাধ্যমে ২৯ জুন শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দিনব্যাপী বর্ষামঙ্গল কবিতা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। অদ্বৈতমল্লবর্মণ স্মৃতি গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই মহাযজ্ঞের আয়োজন করেন। কয়েকটি পর্বে বিভক্ত এই কবিতা উৎসবে ছিলো উদ্বোধনী আলোচনা। কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ, আবৃত্তি গান ও সম্মাননা প্রদান।
সকাল ১০টায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র মিসেস নায়ার কবির। এসময় তিনি এই ধরণের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাহিত্যের সুনাম সারাদেশে ছড়িয়ে দেবার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কবি ও গীতিকার মো. আ. কুদদূস এর ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং তাঁর সকল ভালো কাজে পাশে থাকার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সূচনা পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক সচিব কবি আসাদ মান্নান। এ পর্বে সভাপতিত্ব করেন অনুষ্ঠানের আহবায়ক সাবেক যুগ্ম সচিব কবি শাহ মোহাম্মদ সানাউল হক। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন কবি জয়দুল হোসেন ও কবি মো. আ. কুদদূস। মো. মনির হোসেন এর সঞ্চালনায় এ পর্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন, অনুষ্ঠানের আহবায়ক কমিটির সমস্য সচিব কবি আব্দুর রহিম, উপাধ্যক্ষ একেএম শিবলী।
এর আগে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন তিতাস আবৃত্তি সংগঠণ ও আনন্দলোক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এসময় অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রকাশিত স্যুভেনির মোড়ক উন্মোচন ও বিতরণ করা হয়। তাছাড়াও কবি ও গীতিকার মো. আ. কুদদূস এর সদ্য প্রকাশিত ছিন্নপক্ষ এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এরপর আবৃত্তি পরিবেশন করেন তিতান আবৃত্তি সংগঠণের নাওমী।
কয়েকটি পর্বে বিভক্ত অনুষ্ঠানমালায় কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ, আলোচনা, আবৃত্তি আর গানের মাধ্যমে পুরো অনুষ্ঠান উপভোগ করেন আমন্ত্রিতরা। দ্বিতীয় পর্বে সভাপতিত্ব করেন কবি জয়দুল হোসেন। এই সময় সভাকবির বক্তব্য প্রদান করেন ফরিদ আহমেদ দুলাল, আলোচনা করেন কামরুল হাসান, মজিদ মাহমুদ, মামুন মোস্তফা প্রমুখ। উপস্থাপনা করেন কবি হেলাল উদ্দিন হৃদয়। এসময় আবৃত্তি পরিবেশনা করেন- ভাষা সাহিত্য ও অনুশীলন কেন্দ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া। এসময় সঙ্গীত পরিবেশন করেন কবি আসাদ মান্নানের সহধর্মিনী নাজমা মান্নান।
তৃতীয় পর্বে সভাপতিত্ব করেন কবি জয়দুল হোসেন। এই সময় সভাকবির বক্তব্য প্রদান করেন সম্পাদক-অধ্যাপক ও কবি মাহমুদ কামাল, আলোচনা করেন রানা কুমার সিংহ, কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয়ের ডিন ডক্টর জিএম মনিরুজ্জামান। এ পর্বে উপস্থাপনা করেন কবি মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ। এসময় আবৃত্তি পরিবেশনা করেন- তিতাস সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের সভাপতি বরেণ্য আবৃত্তিশিল্পী রোকেয়া দস্তগীর।
অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত প্রায় দুই শতাধিক কবি স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন।
বর্ষামঙ্গল কবিতা উৎসবে বক্তারা বলেন, বর্ষা ঋতু বাংলার অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে। কাজেই বর্ষা ও পানিকে সুরক্ষ করতে হবে। তারা বলেন, এদেশের কৃষিনির্ভর অর্থনীতি বর্ষার পানির উপর নির্ভরশীল। এজন্য আমাদের জলবায়ূ নিয়ে কথা বলতে হবে। প্রকৃতির সব ঋতুর যেনো সুরক্ষা হয়-তা নিয়ে ভাবতে হবে। তারা আরও বলেন, সাহিত্যে বর্ষা নিজস্ব মহিমায় বিস্তৃত। সাহিত্যের প্রাচূর্য বৃদ্ধি পাক। তরুণ প্রজন্মকে সাহিত্যের দিকে টেনে আনার প্রতি গুরুত্বারোপ করে তারা বলেন, তরুণরা এখন কবিতা লিখছেনা, এটা ভাববার বিষয়। তরুণদের কবিতা পড়ায় উৎসাহ দিতে হবে।
বর্ষামঙ্গল কবিতা উৎসব শিরোনামের প্রশংসা করে তারা বলেন, কবিতার জন্য অবশ্যই বিষয় থাকতে হবে। একটা সময় বর্ষা ছিলো আমাদের জন্য আশির্বাদ। বাংলা সাহিত্যে এমন কোনো কবি নেই যিনি বর্ষা নিয়ে কবিতা লিখেন নাই। অথচ আজ প্রকৃতি যেমন বদলে যাচ্ছে তেমনি আমাদের কবিরাও বর্ষা নিয়ে তেমন কবিতা লিখছে না।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে আগত কবিদের মাঝে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
সারাদিনব্যাপী অনুষ্ঠানে ওয়েলকাম ড্রিংকস, চা, মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন ছিলো। পুরো অনুষ্ঠানটির সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কবি ও গীতিকার এবং কবিতাবিষয়ক গবেষক মো. আ. কুদদূস ও সাবেক যুগ্ম সচিব কবি সানাউল হক।
দিনব্যাপী এই বর্ষামঙ্গল কবিতা উৎসবে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেটের ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর কয়েকজন কবি অংশগ্রহন করেন এবং তাদের মাতৃভাষায় রচিত কবিতা পাঠ করেন। অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কবিদের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম, সিলেট, পাবনা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, কুমিল্লা, নোয়াখালি ও ঢাকার কবিরা অংশগ্রহন করেন।
অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. শফিকুল্লাহ, অধ্যাপক মানবর্দ্ধন পাল, অধ্যাপক এসআরএম ওসমান গণি সজিব উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রেনে নাশকতামূলক অগ্নিকান্ড মোকাবেলায় গতকাল শনিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ ও মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিকেলে রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ ও মহড়া অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক নিউটন দাস, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মোশারফ হোসাইন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত মাষ্টার জসিম উদ্দিনসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক নিউটন দাস বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রেনে নাশকতামূলক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। সেজন্য সাধারণ মানুষ যেন প্রাথমিকভাবে যে কোনো অগ্নিকান্ড মোকাবেলা করতে পারে, সেজন্য আজকের এই মহড়া দেয়া হয়েছে।
মহড়া থেকে শিক্ষা নেয়ার জন্য সাধারণ মানুষের প্রতি তিনি আহবান জানান। পরে রেলওয়ে স্টেশনে উপস্থিত সাধারণ মানুষের সামনে অগ্নিকান্ড মোকাবেলার বিভিন্ন কৌশল প্রদর্শন করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর সদস্যরা।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত মাষ্টার জসিম উদ্দিন বলেন, রেলপথকে নিরাপদ রাখার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, যেকোনো সভ্য জাতির প্রাণ হলো তার সংস্কৃতি। একটি জাতির বড় শক্তি হলো তার সংস্কৃতি। আমাদের খুবই শক্ত একটা সংস্কৃতি রয়েছে, যা নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি।
আজ ২৭ এপ্রিল শনিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ এর এলটি রুমে ভাষা সাহিত্য অনুশীলন কেন্দ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া আয়োজিত বৃত্তিপ্রদান, পুরষ্কার বিতরণী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সম্মাননা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, দেশে নববর্ষ এখন প্রাতিষ্ঠানিকভাবে উদযাপিত হচ্ছে। আর এটা বর্তমান সরকারের আমলেই হয়েছে। তিনি বলেন, নববর্ষের যে অনুষ্ঠান তা বাঙালি সংস্কৃতির অনেক বড় একটা পরিচয়। ভাষা সাহিত্য ও অনুশীলন কেন্দ্রের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সকল সংস্কৃতি সংগঠরের ভালো কাজের সাথে আমি পাশে আছি থাকবো। এসময় তিনি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সংস্কৃতির বিকাশে সহযোগিতা করতে বলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু জাফর মোহাম্মদ আরিফ হোসেন এর সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক এসআরএম ওসমান গণি সজিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর একেএম শফিকুল্লাহ প্রমুখ।
প্রধান অতিথি গৃহায়ন গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি আরও বলেন, সংস্কৃতি চর্চায় কোনো মানুষ বিপদগামী হয় না। আর তাই আমাদেরকে বেশি করে সংস্কৃতি চর্চা করতে হবে। তিনি বলেন, ভাষা ও সাহিত্য একটি দেশের তথা ওই জাতির প্রাণ। আমাদেরকে সেই ভাষা ও সংস্কৃতির জন্য কাজ করতে হবে। সভ্যতাকে এগিয়ে নিতে তার গতিচাঞ্চল্য বাড়াতে কাজ করতে হবে। তিনি গর্বভরে বলেন, আমাদের সংস্কৃতি এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জায়গা করে নিয়েছে।
অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন মেধাবি শিক্ষার্থীদের মাঝে উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ও প্রফেসর ফাহিমা খাতুন এর নামে প্রবর্তিত বৃত্তি হিসেবে ১০ হাজার টাকা মুল্যমানের চেক ও ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়। এছাড়াও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সংস্কৃতি অঙ্গনে দীর্ঘ সময় ধরে ভুমিকা রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ প্রবীন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কবি আব্দুল মান্নান সরকারকে ভাষা সাহিত্য অনুশীলন কেন্দ্র পুরস্কার প্রদান করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে নগদ অর্থের ১০ হাজার টাকা মুল্যের একটি চেক এবং ক্রেষ্ট।
সংগঠনের সদস্যদের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ফের দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলি এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। ১০ জুন শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে পৌর শহরের কান্দিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৮ জুন ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে শুক্রবার বিক্ষোভ এবং কৃষকদলের আহ্বায়ক ভিপি শামীম ও ছাত্রদলের নতুন কমিটির আহ্বায়ক শাহীনসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর বাড়িতে হামলায় চালায় ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। এ সময় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। পরবর্তীতে শনিবার রাতে ফের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা তাদের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরানুল ইসলাম জানান, ছাত্রদলের নতুন কমিটি নিয়ে দুই দিন ধরে শহরে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা হামলা করছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। ফের সংঘর্ষ এড়াতে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৮ জুন বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জেলা ছাত্রদলের ৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে শাহীনুর রহমানকে আহ্বায়ক ও সমীর চক্রবর্তীকে সদস্য সচিব করা হয়। পরবর্তীতে শুক্রবার সকালে শাহীন, সমীর, যুগ্ম আহ্বায়ক এলভীন লস্কর ও আব্দুল গাফফার রিমন জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক আবু শামীম মো. ভিপি শামিমের কান্দিপাড়ার বাসায় গেলে সেখানে হামলা করে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকরাম মিয়া (৩০) হত্যার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে।
আজ ২৫ মে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় নিহত ইকরামের বাবা মাসুদ মিয়া বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।
এ হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত রায়হানকে (২২) মামলায় একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তিনি ঢাকার বংশালের সিদ্দিক বাজার এলাকার জিয়াউল করিম জিয়ার ছেলে।
এর আগে মোটর সাইকেলের চাবি নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে রায়হান ইকরাম মিয়াকে ছুরিকাঘাত করেন। বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মুন্সেফপাড়ায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য রেদোয়ান আনসারী রিমোর বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহরাব আল হোসাইন বলেন, এ ঘটনায় ইকরামের বাবা গ্রেফতার রায়হানকে একমাত্র আসামি করে মামলা করেছেন। হত্যাকাণ্ডের পর পরই রায়হানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। থানায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ছুরিকাঘাতে ইকরামকে হত্যার কথা স্বীকার করে সে। এরপর তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
তিনি বলেন, শহরের মুন্সেফপাড়ায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য রেদোয়ান আনসারী রিমোর বাসায় ইকরাম মিয়ার আসা-যাওয়া ছিল। সেখানে রিমোর মামাতো ভাই রায়হান থাকতো। রায়হান ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রিমোর দোকানে সেলসম্যানের কাজ করে। সে মাদকাসক্ত। রিমোর এক মামার মোটরসাইকেল রায়হান ও ইকরাম মাঝেমাঝে চালাতো।
পুলিশের এ কর্মকর্তা আরো বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় ইকরাম সেখানে গেলে মোটর সাইকেলের চাবি নিয়ে রায়হানের সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা হয়। এরই জেরে রায়হান ইকরামকে ছুরিকাঘাত করে। তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।