অনলাইন ডেস্ক :
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা একটি বদ্ধমূল সমস্যা এবং এর প্রভাব অনেক বেশি বিস্তৃত। লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ছাড়াও পরিবার, সম্প্রদায় ও সামগ্রিকভাবে জাতিকে প্রভাবিত করে। এই সহিংসতা কেবল শারীরিক ক্ষতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি গভীর মনস্তাত্ত্বিক ক্ষত সৃষ্টি করে, পারিবারিক কাঠামোকে ব্যাহত করে এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্তরে ক্ষতিগ্রস্তদের অগ্রগতিতে বাধা দেয়।
আজ ২২ জুলাই শনিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘জেন্ডার-বেইজড ভায়োলেন্স বেঞ্চ বুক লঞ্চ’’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশে ইউএসএআইডি’র প্রোমোটিং পিস অ্যান্ড জাস্টিস অ্যাকটিভিটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে ‘জুডিসিয়াল বেঞ্চ বুক অন অ্যাড্রেসিং জেন্ডার-বেইজড ভায়োলেন্স ইন বাংলাদেশ’ এবং ‘বাংলাদেশ জুডিসিয়াল বেঞ্চ বুক অন দ্য প্রিভেনশন অব অপ্রেশন অ্যাগেইনস্ট উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেন অ্যাক্ট, ২০০০’ নামে দুটি বেঞ্চ বুক লঞ্চ করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী বলেন, বিচার বিভাগ ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা মোকাবিলা ও প্রশমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আদালত এই ধরনের সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে, যাতে তারা প্রতিকার পায় এবং অপরাধীদের জবাবদিহি করতে পারে। এমন প্রেক্ষাপটে, নারী ও শিশু নির্যাতন এবং লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা বিষয়ক মামলার জটিল বিষয়গুলোর সহজ সমাধানে বিচার বিভাগীয় বেঞ্চ বুক দুটি বিচারকদের সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।
তিনি বলেন, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সকল স্তরের মানুষের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সমাজের দুর্বল ও অসহায় মানুষদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে ব্যাপক পরিসরে আইনি, প্রশাসনিক এবং নীতিগত সংস্কার করেছে।
আনিসুল হক বলেন, নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করার বিষয়ে সু-দৃষ্টি দিয়েই শেখ হাসিনার সরকার ২০০০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং ২০১০ সালে পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইনের মতো গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রণয়ন করেছে। ২০১২ সালে পর্নোগ্রাফি (নিয়ন্ত্রণ) আইন এবং মানব পাচার প্রতিরোধ আইন করেছে। এই আইনগুলো সহিংসতা ও লিঙ্গ-ভিত্তিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শক্তিশালী স্তম্ভ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, নারী ও শিশুরা মানব পাচারের প্রধান লক্ষ্যবস্তু। এই ঘৃণ্য অপরাধ দমনে কৌশলগতভাবে সাতটি বিভাগীয় সদরে সাতটি মানবপাচার বিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধের লক্ষ্যে সরকার দেশব্যাপী ১০১টি বিশেষায়িত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি উল্লেখযোগ্য নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করেছে। এই দূরদর্শী পদক্ষেপগুলো নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করেছে।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি. হাস, ইউএসএআইডি’র ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি মিশন ডিরেক্টর সোনজাই রেনোল্ডস-কুপার, প্রোমোটিং পিস অ্যান্ড জাস্টিস অ্যাকটিভিট‘র চিফ অব পার্টি হেদার গোল্ডস্মিথ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
রাঙামাটিতে বাস চাপায় দুই সিএনজি যাত্রী নিহত হয়েছেন। তারা হলেন পরি চাকমা (৪৫) ও গুরিমালা চাকমা (৫৫)। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরো চার জন। আহতরা হলেন রিপন চাকমা, পিন্টু চাকমা, রিগেন চাকমা । অপর এক জনের নাম জানা যায়নি।
আজ ৪ নভেম্বর শনিবার বিকাল ৩টায় শহরের ভেদভেদী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে যাত্রী নিয়ে রাঙামাটি আসে খাজা গরীবে নেওয়াজ নামে একটি বাস। বাসটি শহরের ভেদভেদী এলাকায় পৌঁছালে যাত্রীসহ একটি সিএনজিকে (অটোরিক্সা) চাপা দেয়। এসময় ঘটনা স্থলে মারা যান পরি চাকমা ও গুরিমালা চাকমা। আহত হন সিএনজি চালকসহ চারজন। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। দুর্ঘটনা কবলিতদের উদ্ধার করে প্রথমে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। নিহতদের হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়। খবর দেওয়া হয় তাদের স্বজনদের।
নিহত পরি চাকমা ও গুরিমালা চাকমার স্বজনরা বলেন, শনিবার হাট থাকায় জুমের উৎপাদিত ফসল নিয়ে রাঙামাটি শহরে এসেছিল তারা। কিন্তু হাট শেষে সবাই লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলো। এসময় তাদের স্বজনদের আর্তচিৎকারে ভারী হয়ে ওঠে হাসপাতালের চারপাশ।
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আর এমও ডা. মো. সওকত বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশংকাজনক। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে দুর্ঘটনার পর দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় বাস চালক। তাকে আটক করতে অভিযানে নেমেছে পুলিশ।
রাঙামাটি জেলা পুলিশ সুপার মো. মীর আবু তৌহিদ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের লাশ ময়না তদন্তের পর তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। চালকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
কুমিল্লায় তরুণী দিয়ে ফাঁদ পাতা হতো। প্রেমের অভিনয় করে নিয়ে যেতো কোনো বাসায়। শারীরিক সম্পর্কের ছবি তুলে রাখা হতো। সেই ছবি দেখিয়ে খালি স্ট্যাম্পে সই রাখা হতো। ভুয়া পুলিশ ও সাংবাদিক সেজে ভয় দেখানো হতো। এভাবে কুমিল্লা শহরতলীর এক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা আদায় করেছে একটি চক্র।
আজ ৪ মে শনিবার জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, ভুয়া পুলিশ ও সাংবাদিক সেজে এক নারী সদস্যকে দিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে প্রবাসীর বাবার নিকট থেকে ২৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। এই অভিযোগে ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করে।
তারা হচ্ছেন-কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার সুবর্ণপুর গ্রামের ভুয়া ডিবি পুলিশ সৈয়দ আয়াতুল্লাহ (৩৭), বালুতোপা গ্রামের কবির হোসেন (২৮), একই গ্রামের ভুয়া ডিবি সদস্য ইমরান হোসেন (৪০), বরুড়া উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের ভুয়া সাংবাদিক মোজাম্মেল হক (৩৬), গালিমপুর গ্রামের আবদুর রহিম (৪২), লাকসামের বিজরা গ্রামের শাখাওয়াত হোসেন (২৮) ও চান্দিনার কেশরা গ্রামের তাসনুবা আক্তার (২৩)।
পুলিশ সুপার জানান, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। পরে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অভিযানে শুক্রবার রাতে প্রতারণার সঙ্গে জড়িত সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর স্বাক্ষরিত সাতটি অলিখিত স্ট্যাম্প, তার স্বাক্ষরিত সাতটি খালি ব্যাংক চেক উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মংনে থোয়াই মারমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) নাজমুল হাসান রাফি, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ রাজেশ বড়ুয়া।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ৬ এপ্রিল শনিবার পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদর। যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে আজ শনিবার সন্ধ্যা থেকে সারাদেশে পবিত্র শবে কদর পালিত হবে।
ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মহান রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য ও রহমত লাভের আশায় ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে পবিত্র লাইলাতুল কদরের রজনী পালন করবেন।
লাইলাতুল কদর একটি সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আমি কুরআন নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে।’ ‘লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।’ ‘এ রাতে ফেরেশতারা ও জিবরাইল তাদের প্রভুর অনুমতিক্রমে সব সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করে। শান্তিময় এ রাত ফজরের সূচনা পর্যন্ত’। (সূরা কদর)।
আভিধানিকভাবে লাইলাতুল কদর অর্থ সম্মানের রাত। তাফসিরের কিতাবগুলোতে উল্লেখ রয়েছে, একদিন নবী করিম (সা.) এ ভেবে অস্থির হচ্ছিলেন যে, আগের নবীর উম্মতেরা দীর্ঘ হায়াত পেত। ফলে তারা অনেক বেশি ইবাদত-বন্দেগির সুযোগ পেত। কিন্তু শেষ নবির উম্মতের হায়াত খুবই সীমিত। অতএব তাদের পক্ষে উচ্চমর্যাদা লাভের সুযোগ কম। তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে এ সূরা নিয়ে উপস্থিত হন হজরত জিবরাইল (আ.)। ফলে শান্ত হন মহানবি (সা.) ও তাঁর সাহাবিরা।
আল্লাহতায়ালা এ রাতেই কুরআন মাজিদ নাজিল করেছেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। তেমনি এ রাতটির মর্যাদা হাজার মাসের চেয়ে বেশি বলেও ঘোষণা করেছেন; কিন্তু রাত কোনটি তা বলে দেননি। হাদিস শরিফেও নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি কোনটি কদরের রাত। নিঃসন্দেহে এতে অনেক রহস্য ও তাৎপর্য নিহিত রয়েছে। তবে রাসূলুল্লাহ (সা.) রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে কদরের রাত অনুসন্ধানের তাগিদ দিয়েছেন। ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে রাতটি কাটাতে পারলে এ রাতের প্রকৃত সুফল পাওয়া যায়।
হয়তো আল্লাহতায়ালা ও তাঁর রাসূল (সা.) চাননি মুসলমানরা একটি রাতের ভরসায় বসে থেকে সারা বছর বা সারা মাস অবহেলায় কাটিয়ে দিক। এজন্য এটিকে রহস্যময় করে রাখা হয়েছে। তা ছাড়া পরিশ্রম ও সাধনার মাধ্যমেই মূল্যবান কিছু অর্জন করতে হয়। যে রাতের মূল্য হাজার মাসের চেয়ে বেশি, তা যদি সহজে পাওয়া যেত, তা হলে মানুষ হয়তো এটিকে বেশি গুরুত্ব দিত না। তাই তা অনির্দিষ্ট করে রেখে মানুষকে অনুসন্ধান করতে বলা হয়েছে।
বেশিরভাগ বর্ণনা অনুসারে রমজানের শেষ দশকেই তা লুক্কায়িত রয়েছে। আবার কারও কারও মতে, এ রাতের তারিখ পরিবর্তনশীল। কোনো বছর একুশ, কোনো বছর তেইশ, কোনো বছর পঁচিশ, কোনো বছর সাতাইশ, আবার কোনো বছর ঊনত্রিশ তারিখের রাত লাইলাতুল কদর হয়।
কিন্তু সাহাবায়ে কেরাম থেকে শুরু করে পরবর্তী সময়ে অনেক মনীষী রমজানের ২৭ তারিখের রাতকে লাইলাতুল কদর হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। সাহাবী হজরত উবাই ইবনে কাব (রা) জোর দিয়ে বলতেন, রমজানের সাতাশতম রাতই কদরের রাত। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল আপনি কীভাবে নিশ্চিত হলেন ২৭ রমজানের রাতটিই কদরের রাত? জবাবে তিনি বলেন, এ রাতের যেসব আলামত মহানবী (সা.) আমাদের বলেছেন, আমরা সেগুলো সাতাশ তারিখে পেয়েছি।
তবে মনে রাখা প্রয়োজন, কদরের রাতের যে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য, তার মূল উপাদান কুরআন মজিদ। শেষ নবীর (সা.) উম্মতের জন্য জীবনব্যবস্থার চূড়ান্ত নির্দেশনা হিসাবে কুরআন মাজিদ নাজিলের সঙ্গে রাতটি সম্পর্কিত হওয়ায় এ মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য সাব্যস্ত হয়েছে। অতএব এ রাতের সুফল পুরো মাত্রায় পাওয়ার জন্য কুরআন মাজিদের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করাই আসল উপায়। কুরআন পাঠ ও অধ্যয়ন এবং কুরআনি বিধান ও নির্দেশনা অনুসরণেই নিহিত রয়েছে মানুষের প্রকৃত সাফল্য। লাইলাতুল কদরে সালাত, তেলাওয়াত ও জিকির তাসবিহের সঙ্গে যেমন অতীত জীবনের পাপরাশি মোচনের জন্য মহান প্রভুর কাছে আকুল আবেদন জানাতে হবে, তেমনি তার তাওফিক প্রার্থনা করতে হবে কুরআনকে জীবনের দিশারি হিসাবে মেনে চলার।
মহান আল্লাহতায়ালা লাইলাতুল কদরের রাতকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও এ রাতের ইবাদত উত্তম। এ রাতে আল্লাহর অশেষ রহমত ও নিয়ামত বর্ষিত হয়। পবিত্র এ রাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় এবাদত-বন্দেগি করে থাকেন।
পবিত্র রমজান মাসের লাইলাতুল কদরে পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছিল। তাই মহান আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মসজিদসহ বাসা-বাড়িতে এবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন। মুসলমানরা নফল নামাজ আদায়, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আসকার, দোয়া, মিলাদ মাহফিলের মধ্যদিয়ে শবে কদরের রজনী কাটাবেন।
পবিত্র লাইলাতুল কদর উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
পবিত্র শবে কদর উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল এবং বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি রেডিও বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। শবে কদর উপলক্ষে আগামীকাল ৫ এপ্রিল রবিবার সরকারি ছুটি থাকবে।
অনলাইন ডেস্ক :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় আল আমিন হোসেনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেফতার দেখিয়েছেন আদালত। এ মামলায় আনিসুল হক এজাহারনামীয় ৪ নাম্বার আসামি।
আজ ৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার কারাগার থেকে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার সাব ইন্সপেক্টর মো. আহসান হাবীব তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলাম তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলে ৫ আগস্ট রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় আনন্দ মিছিল বের করেন ছাত্র-জনতা। এসময় বাড্ডা থানার পাশে ফুলকলি মিষ্টির দোকানের সামনে আওয়ামী লীগের এলোপাতাড়ি হামলা ও গুলির মুখে পড়ে তাৎক্ষণিক মৃত্যুবরণ করেন আল আমিন হোসেন। এ ঘটনায় বাড্ডা থানায় মামলা করেন আল আমিনের মা।
উল্লেখ্য, গত ১৩ আগস্ট গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নৌপথে পলায়নরত অবস্থায় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেফতার করা হয়। নিউমার্কেট এলাকায় দোকান কর্মচারী শাহজাহান আলীকে (২৪) হত্যার অভিযোগে করা মামলায় পরদিন ১৪ আগস্ট তার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ।
অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের ১৪ নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। তাদের বিরুদ্ধে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনেছে দলটি।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বিভিন্ন সময়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এসব বহিষ্কারের কথা জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তারা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। সে কারণে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ে থেকে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত ১৪ নেতার মধ্যে আটজনই কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ছিলেন। তারা হলেন : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ একে একরামুজ্জামান, তাঁতীবিষয়ক সহ-সম্পাদক রাবেয়া ভুঁইয়া, নির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আবু জাফর, শাহ শহীদ সারোয়ার, মতিউর রহমান মন্টু, খন্দকার আহসান হাবিব ও একে এম ফখরুল ইসলাম।
জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের ৬ জন হলেন : শেরপুর জেলা বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক জায়েদুর রশিদ শ্যামল, সদস্য অ্যাডভোকেট মো. আবদুল্লাহ, পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্য আব্দুল আজিজ, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য মাহবুবুল হাসান, ঢাকার ধামরাই পৌর বিএনপির সভাপতি দেওয়ান নাজিম উদ্দিন মঞ্জু ও চাপাইনবাবগঞ্জের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আবদুল মতিন।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি ভোট বর্জন করে আন্দোলনে আছে। তবে সরকার তাদের দাবি পাত্তা দেয়নি, ফলে ২০১৪ সালের মতোই বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচনের ট্রেন এগিয়ে চলছে।
এর মধ্যে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের দিন বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের পর দিন থেকে চলছে টানা হরতাল ও অবরোধ। অক্টোবরের সেই দিন থেকে সমান্তরালে চলছে গ্রেফতার অভিযানও। ইতিমধ্যে কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।