অনলাইন ডেস্ক :
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় হালিমা বেগম (৮১) নামে এক জীবিত বৃদ্ধাকে মৃত দেখিয়ে তার বয়স্ক ভাতা হস্তান্তরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। শরীয়তপুর ভেদরগঞ্জ উপজেলার রামভদ্রপুর ইউনিয়নের কোড়ালতলী গ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, পারুল বেগম (৫৫) নামে এক মহিলার থেকে টাকা খেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর দালাল এ কাজ করেছেন। ফলে বিগত ৫ মাস যাবত তিনি ভাতা বঞ্চিত রয়েছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী হালিমা বেগম।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হালিমা বেগম রামভদ্রপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড কোরালতলী গ্রাম এলাকার মৃত আব্দুল শুকুর বেপারির স্ত্রী। তিনি অত্যন্ত গরিব হওয়ায় সাবেক চেয়ারম্যান শাজাহান ঢালী ওই বৃদ্ধার নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেন।
ভুক্তভোগী হালিমা বেগম বলেন, আমি ভাতার কার্ড পাওয়ার পর থেকে তিন মাস পরপর ১ হাজার ৫শ টাকা করে পেয়েছিলাম। কিন্তু এখন আমার টাকার কোনো মেসেজ না আসায় আমি উপজেলা সমাজসেবা অফিসে গিয়ে জানতে পারি আমাকে মৃত দেখিয়ে পারুল বেগমের নামে ভাতার কার্ড করে দিয়েছেন মেম্বার জাহাঙ্গীর দালাল। সে টাকা খেয়ে এ কাজ করেছে। আমি গরিব মানুষ এক ছেলে প্রতিবন্ধী কোনোরকম খেয়ে না খেয়ে দিন কাটে, এই টাকা দিয়ে ওষুধ খেয়ে বেঁচে আছি। আমি মানবতার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এর বিচার চাই।
তবে বিষয়ে মেম্বার জাহাঙ্গীর দালাল বলেন, ভুলবশত এটা হয়েছে, আমি নতুন করে হালিমার নামে বিধবা ভাতার ব্যবস্থা করে দিব।
রামভদ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিপ্লব সিকদার বলেন, জীবিত মানুষ মৃত দেখিয়ে ভাতার কার্ড পরিবর্তনের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পারি। তবে মেম্বার যদি করে থাকেন তাহলে খুবই খারাপ করেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মিজান বলেন, কেউ যদি নাম পরিবর্তন করে তাহলে চেয়ারম্যানের রেজুলেশন লাগে। তবে আমি বিষয়টা সম্পর্কে অবগত নই।
এ বিষয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার নামাপাড়া এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শাহরিয়ার শ্রাবণ (২০) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন ফারুক হোসেন (৪০) নামের আরো একজন। আজ ১২ আগস্ট শনিবার বিকেলে ঘটনা ঘটে। শ্রাবণ মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে।
মৃতের বড় ভাই আদিত্য ইসলাম দিপু জানান, তারা পুরাতন এসি কেনা-বেচা ও মেরামতের কাজ করেন। ধোলাইখাল এলাকায় তাদের দোকান রয়েছে। পূর্ব নামাপাড়া এলাকার একটি প্রতিষ্ঠানের পুরাতন এসি খুলে নামানোর সময় পাশে থাকা বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের তারের সঙ্গে এসির পাইপ স্পর্শ লেগে বিদুৎস্পৃষ্ট হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন তারা।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া।
তিনি বলেন, মরদেহটি হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। অপরজন চিকিৎসাধীন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবিহিত করা হয়েছে।
চলারপথে ডেস্ক :
আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রির নতুন পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেখিয়ে যে কোনো যাত্রী সপ্তাহে যতবার খুশি আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট কিনতে পারবেন। আগের নিয়ম ছিল, কেউ সপ্তাহে দুইবারের বেশি টিকিট কিনতে পারবে না।
সপ্তাহে দুইবারের বেশি টিকিট কেনার বাধানিষেধ উঠে গেলেও, কোনো যাত্রী একই স্টেশন থেকে দিনে একবারের বেশি টিকিট কিনতে পারবেন না। রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী জানিয়েছেন, শুক্রবার থেকে এ নিয়ম কার্যকর হয়েছে।
নতুন পদ্ধতির ব্যাখ্যায় রেল জানিয়েছে, কোনো যাত্রী ঢাকার কমলাপুর থেকে চট্টগ্রামের ট্রেনের টিকিট দিনে একবারই এক সঙ্গে সর্বোচ্চ চারটি কিনতে পারবেন। তিনি ওই দিন কমলাপুর থেকে আর কোনো ট্রেনের টিকিট কিনতে পারবেন না। তবে চট্টগ্রাম থেকে একই দিনের ট্রেনের ফিরতি যাত্রার টিকিট কিনতে পারবে।
গত ১ মার্চ থেকে নতুন পদ্ধতিতে টিকিট বিক্রি করছে রেলওয়ে। ‘টিকিট যার ভ্রমণ তার’ নিয়ম বাস্তবায়নে এনআইডি দিয়ে আগাম নিবন্ধন করা যাত্রীদের কাছে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে নিবন্ধন শুরু হয়েছে, তা এখনো চলমান রয়েছে। টিকিট পেতে হলে আগে অনলাইনে এনআইডি ও জন্মতারিখ দিয়ে পরিচয়ের সত্যতা যাচাই (ভেরিফাই) করতে হয়। দ্বিতীয় পদ্ধতি হচ্ছে মোবাইল থেকে ২৬৯৬৯ নম্বরে এনআইডি ও জন্মতারিখ দিয়ে নিবন্ধন করতে হচ্ছে। সপ্তাহের দুইবারের বেশি টিকিট কিনতে না পারার নিয়মের কারণে, যারা নিয়মিত ট্রেনে চড়েন তারা ভোগান্তিতে পড়েছিলেন। তাদের জন্য নিয়মে পরিবর্তন এনেছে রেল।
নতুন নিয়মে আরেকজনের নামে কেনা টিকিটে ট্রেনে চড়া যাবে না। যার এনআইডি ব্যবহার করে টিকিট কেনা হচ্ছে, তিনি আরও তিনজনকে নিয়ে ভ্রমণ করতে পারবেন। কিন্তু তাকে অবশ্যই ট্রেনে থাকতে হবে। নয়ত চারজনকেই বিনা টিকিটের যাত্রী গণ্য করে জরিমানা করা হবে। টিকিটে থাকা নাম থাকা যাত্রীর পরিচয় নিশ্চিতে ভ্রমণের এনআইডি বা ছবিযুক্ত পরিচয়পত্রের ফটোকপি সঙ্গে রাখতে হবে। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীরা বাবা অথবা মায়ের এনআইডি দিয়ে টিকিট কিনতে পারবে। জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি সঙ্গে রাখতে হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বঙ্গোপসাগরে এক জেলের জালে ধরা পড়েছে ১৭০ মণ ইলিশ। এসব মাছ পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুরের মিথুন এন্টারপ্রাইজ নামের একটি মৎস্য আড়তে নিয়ে আসা হয়। পরে ৫৪ লাখ ৫৪ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হয় মাছগুলো।
জেলে আবুল খায়ের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগতি এলাকায়। এ মৌসুমে জেলেদের জালে ধরা পড়া এটাই হলো সবচেয়ে বেশি পরিমাণের ইলিশ মাছ, এমটাই জানিয়েছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
জেলে আবুল খায়ের বলেন, ধার দেনা করে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে প্রায় এক সপ্তাহ আগে লক্ষীপুর থেকে ‘এফবি রিভার মেড’ নামের একটি ট্রলারে ১৭ জন জেলেসহ সাগরে যান। গভীর সাগরে দিনে দু’বার করে জাল ফেলার পর তার জালে ১৭০ মণ ইলিশ ধরা পরে। জালে প্রচুরসংখ্যক ইলিশ পাওয়ায় আবুল খায়ের এখন দারুণ খুশি।
মিথুন এন্টার প্রাইজের সত্ত্বাধিকারী মিথুন মিয়া জানান, শনিবার বিকালে তিনি ইলিশ বোঝই ট্রলার নিয়ে ঘাটে আসেন। এসব মাছ আকারভেদে প্রতি মণ ৪৮ হাজার, ৪২ হাজার, ৩৩ হাজার, ২৭ হাজার ও ১৫ হাজার টাকা করে নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। গত দুই বছরের মধ্যে আমার আড়তে এই জেলেই গতকাল সবচেয়ে বেশি ইলিশ নিয়ে এসেছেন।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, এবছর জেলে আবুল খায়ের সবেচেয় বেশি পরিমাণ ইলিশ পেয়েছেন। আমরা আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে অন্যান্য জেলের জালেও বড় সাইজের বেশি পরিমান ইলিশ ধরা পড়বে।
স্টাফ রিপোর্টার :
ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বুয়েটে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত সাবেকুন নাহার সনির বাবা হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া।
আজ ১১ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকালে রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
হাবিবুর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার রামরাইল ইউনিয়নের বিজেশ্বর গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ভুইয়ার ছেলে। তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
নিহত সনির ফুপাতো ভাই জাহিদুল ইসলাম ইমন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মামা তিনমাস ধরে ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। একমাস ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছিলেন ছয়টি কেমোথেরাপি দিতে। একটি থেরাপি দেওয়া হয়েছিল। এরই মধ্যে নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। সকালে ঘুমের মধ্যে তিনি মারা যান।’
তিনি আরো বলেন, মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে বাদ এশা স্থানীয় বাজারের বড় মসজিদে জানাযা শেষে দাফন করা হবে।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মামা মেয়েকে হারানোর পর ‘সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষাঙ্গনের’ দাবি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছিলেন। সনি মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন থেকে ৮ জুন ‘সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষাঙ্গন’ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সেই কর্মসূচিতে তিনি প্রতিবছর উপস্থিত হয়ে তার মেয়ে হত্যার বিচার দাবি করে আসছিলেন। মামা মারা গেছেন কিন্তু আফসোস, দীর্ঘ ২১ বছরেও উনি তার সন্তান সনি হত্যার বিচার কার্যকর হতে দেখে যেতে পারেননি।’
২০০২ সালের ৮ জুন টেন্ডারবাজিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বুয়েট ছাত্রদল সভাপতি মোকাম্মেল হায়াত খান মুকিত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হলের টগর গ্রুপ। দুই গ্রুপের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে বুয়েটের আহসান উল্লাহ হলের সামনে সাবেকুন নাহার সনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
সাবেকুন নাহার সনি কেমিকৌশল বিভাগের (৯৯ ব্যাচ) লেভেল ২, টার্ম ২ এর ছাত্রী ছিলেন। তার মৃত্যুতে দেশজুড়ে প্রতিবাদ জানানো হয়। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। নিম্ন আদালতে মুকিত, টগর ও সাগরের মৃত্যুদন্ডের রায় হয়।
২০০৬ সালের ১০ মার্চ হাইকোর্ট মুকিত, টগর ও সাগরের মৃত্যুদন্ডাদেশ বাতিল করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেন। যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত এসএম মাসুম বিল্লাহ ও মাসুমকে খালাস দেন হাইকোর্ট। পরবর্তী সময়ে মোকাম্মেল হায়াত খান মুকিত পালিয়ে যান অস্ট্রেলিয়ায়। পলাতক রয়েছেন নুরুল ইসলাম সাগর ওরফে শুটার নুরু। শুধু জেলে রয়েছেন টগর।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন সিগন্যাল কেবিনে এয়ারকন্ডিশন (এসি) বিস্ফোরণে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। আজ ৮ সেপ্টেম্বর সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ করেই নিচতলায় স্থাপিত একটি এসি যন্ত্র বিস্ফোরিত হলে মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে সিগন্যাল যন্ত্রের ক্ষতি হয় এবং অফিস কক্ষের জানালার কাঁচ ভেঙে যায়। পরে রেল কর্মকর্তা ও স্থানীয়রা পানি সংগ্রহ করে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মো. মাহবুবুল আলম বলেন, ঠিক কি কারণে অগ্নিকান্ড ঘটেছে তা এখনও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনের কেবিন মাস্টার আরিফুল ইসলাম আরিফ জানান, অগ্নিকান্ডের ঘটনায় সিগন্যাল ব্যবস্থার ক্ষতি হয়েছে। তবে দ্রুত ব্যবস্থায় তিনটার পর পুনরায় লাইন সচল হয়।
আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনের সুপার নূর নবী জানান, সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সিগন্যাল লাইন সচল ছিল না। সাড়ে চার ঘণ্টা পর লাইন সচল করা হয়। এসময় বেশ কয়েকটি ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।