চলারপথে রিপোর্ট :
এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে আগামী ২৮ জুলাই, শুক্রবার।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল তুলে দেবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি। পরে প্রধানমন্ত্রী অনলাইনে এ ফলাফল প্রকাশের ঘোষণা দেবেন।
বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর তপন কুমার সরকার বলেন, শুক্রবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশের জন্য সম্মতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শিক্ষার্থীরা সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে অনলাইনে পরীক্ষার ফলাফল পেয়ে যাবে। ঘরে বসেই রেজাল্ট ওয়েবসাইট ও এসএমএস’র মাধ্যমে পেয়ে যাবে তারা।
ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, এইদিন মাতৃভাষা ইনিস্টিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করবেন শিক্ষামন্ত্রী ড.দীপু মনি।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা ৩০ এপ্রিল শুরু হয়। এ বছর ১১টি শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন। এরমধ্যে ছাত্র সংখ্যা ১০ লাখ ২১ হাজার ১৯৭ এবং ১০ লাখ ৫০ হাজার ৯৬৬ জন ছাত্রী। এ বছর মোট ১১টি শিক্ষা বোর্ডে মোট কেন্দ্র ৩ হাজার ৮১০টি এবং মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২৯ হাজার ৭৯৮টি। এরমধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে কেন্দ্র ২ হাজার ২৪৪ টি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৭ হাজার ৭৮৬টি। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে মোট কেন্দ্র ৭১৬টি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৯ হাজার ৮৫টি। কারিগরি শিক্ষাবোর্ডে মোট কেন্দ্র ৮৫০টি এবং মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২ হাজার ৯২৭টি। এবার মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ২০৭টি এবং কেন্দ্র বেড়েছে ২০টি।
এবছর পূর্নবিন্যাসকৃত সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সূত্র : বাসস
চলারপথে ডেস্ক :
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, যুদ্ধাপরাধী রাজনৈতিক দল হিসাবে জামায়াতের বিচারের জন্য আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া চলমান। আজ ৬ মে শনিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বিচার বিভাগের কাছে একটি চাওয়া, বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষ যেন দ্রুত ন্যায়বিচার পায়। তারা যেন মামলার দীর্ঘসূত্রতার অবস্থান থেকে পরিত্রাণ পায়।
ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সিনিয়র সহকারী জজ এবং সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য আয়োজিত ১৪৮তম রিফ্রেসার কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বক্তব্য দেন।
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, জুডিশিয়াল ডিসিশন (সর্বোচ্চ আদালতের রায়, সিদ্ধান্ত) মেনে মামলাজট নিরসনে ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রশিক্ষণার্থী বিচারকদের জুডিশিয়াল ডিসিপ্লিন মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, সুপ্রতিষ্ঠিত জুডিশিয়াল ডিসিশনগুলো মেনে না চললে জুডিশিয়াল অ্যানার্কি (বিশৃঙ্খলা) তৈরি হতে পারে। নিশ্চয়ই আমরা কেউই এটা চাই না।
বিচারকদের দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এখন বিচারকদের দায়িত্ব মানুষ যেন দ্রুত বিচার পায়, সেটা নিশ্চিত করা। দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত মামলাজট কমানোর দায়িত্ব আমাদের কাঁধে নিতে হবে এবং জনগণ যাতে ত্বরিত সুষ্ঠু বিচার পায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, বিচার বিভাগের জন্য অন্য যে কোনো সরকারের চেয়ে এখন বাজেট বাড়ানো হয়েছে।
প্রশিক্ষণার্থী বিচারকদের উদ্দেশে আইনমন্ত্রী বলেন, অন্য সব সরকারের আমলে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের কী অবস্থা ছিল, তার ইতিহাস অনেকেরই জানা। এক কথায় বলা যায়, বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য পৃথক কোনো প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটই ছিল না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে প্রথমবার সরকার গঠন করার পর বিচারকদের জন্য প্রথম প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন। তার সরকারের সদিচ্ছার কারণেই দেশে আরেকটি বিশ্বমানের ন্যাশনাল জুডিশিয়াল একাডেমি প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলছে। যেখানে বিচারকরা বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারবেন।
বিচারকদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, তাদের প্রশিক্ষণের এ ধারা অব্যাহত থাকবে। শুধু তাই নয়, দেশিও প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি বিদেশি প্রশিক্ষণ প্রদান কার্যক্রমও চলমান থাকবে। বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) শেখ আশফাকুর রহমান বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠান শেষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। জামায়াতের বিচারে সরকারের আন্তরিকতার ঘাটতি আছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারই মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কার্যকর করেছে। তাই জামায়াতের বিচারে সরকারের আন্তরিকতা নেই, এমন প্রশ্ন করা আমাদের জন্য দুঃখের। জামায়াতের বিচারের জন্য আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া চলমান। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল নিয়ে মামলা আপিল বিভাগে বিচারাধীন। তাই এ বিষয়ে কোনো কথা বলব না।
চলারপথে রিপোর্ট :
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাইয়ের কুর্নফুলী গ্যাস লাইনের পাইপ লাইনের কর্মরত ৩ শ্রমিক লরি চাপায় নিহত হয়েছেন। এতে আরেকজন শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছে।
আজ ২৫ নভেম্বর শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার মিরসরাই সদর ইউনিয়নের বিসিক শিল্প নগরী এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, পাবনা জেলার সুজানগর থানার সৌখেতু পাড়ার আবুল কালামের ছেলে মো. আলম (৫০), একই থানার রায়পুর এলাকার মালেক বেপারির ছেলে মো. শফিক (৪৫), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ থানার আন্দিদিল এলাকার হুমায়ন কবিরের ছেলে মাসুদ মিয়া ( ৩৫)। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন মো. মাজেদ (৩৫)।
প্রত্যক্ষদর্শীর পাইপ লাইনে কর্মরত শ্রমিক মো. সোহেল রানা জানান, তারা সবাই নাস্তা করে কাজে জাইতেছিলো। নিহতরা মহাসড়কে তাদের থেকে কিছুদূরে ছিলো। পেছন থেকে একটি লরি গাড়ি এসে ধাক্কা দিলে সড়কে তাদের ৩ জনের মৃত্যু হয়। আরেকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গাড়ির চালক গুমে ছিলো। না হলে এমন দূর্ঘটনা হতো না বলে তিনি জানান।
জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ সোহেল সরকার বলেন, আমরা লরি গাড়িটি আটক করেছে। নিহতদের লাশ থানা আছে। আইনানুগ ব্যবস্থা শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে বলে ওসি জানান।
অনলাইন ডেস্ক :
দেশের ৬৪ জেলায় বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৩৭ লাখ ২৯ হাজার ২৩৫টি বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এ কে আবদুল মোমেনের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো জানান, এসব মামলার মধ্যে ১৫ লাখ ৯৬ হাজার ৪৪টি দেওয়ানি এবং ২১ লাখ ৩২ হাজার ৭৯৪টি ফৌজদারি।
আজ ৬ মে সোমবার স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়। প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারদলীয় আরেক সংসদ সদস্য মাহবুব উর রহমানের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, ২০২১ সালের ১০ জুন থেকে ২০২২ সালের ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত ১৭টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে এক লাখ ১০ হাজার ৫৪৮টি দলিল ই-রেজিস্ট্রেশন সিস্টেমে নিবন্ধিত হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘৪০, ৪১ ও ৪৩তম বিসিএসের মাধ্যমে নন-ক্যাডার (নবম-১২তম গ্রেড) পদে সাত হাজার ৪৪৭ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। সরকারের নীতিনির্ধারণ পর্যায়ে সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক কলেবর বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে দপ্তর বা সংস্থার সংখ্যা বাড়লে পদ সংখ্যা বাড়ে এবং বাড়তি লোকবলের চাহিদা সৃষ্টি হয়। এর প্রেক্ষিতে বিভিন্ন বিসিএসে উত্তীর্ণদের চাকরি প্রাপ্তির সুযোগ বাড়তে পারে।’
বিরোধী দলের চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নুর এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘মামলার জট কমাতে উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এসংক্রান্ত আইন তৈরির কার্যক্রমও শেষ করে আনা হয়েছে। মামলার জট বেড়েছে সঠিক এবং তার সাথে সাথেও কিন্তু আমরা আদালত তৈরি করে বিচারকের সংখ্যা বাড়িয়েছি। এখনো যেটা আগে কখনো হয়নি, সেটা হচ্ছে―আগে কখনো বিচারকের পদ শূন্য হওয়ার আগে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস ক্যাডারে পরীক্ষা নিয়ে এটা রিজার্ভ বিচারকের ব্যবস্থা ছিল না। এখন কিন্তু আমরা সেটা করি যাতে কোনো বিচারক অবসরে গেলে সেই পদটা খালি না থাকে, দ্রুত যেন আমরা সেখানে বিচারক দিতে পারি।
দ্বিতীয় যেটা করা হচ্ছে, বিচারকের পদ সৃজন এবং আদালত সৃজন দুইটার জন্যই আমি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে লিখেছি এবং সেইখানে ১৭৮টি পদ সৃজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। সেটা আসলে আমরা মনে হয় মালার জট কমানোর চেষ্টা করবে। মামলার জট কমানোর জন্য অন্যান্য চেষ্টাও হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘হাইকোর্ট বিভাগে অন্ততপক্ষে বিচারপতি ছিলেন ১০০ জন, এখন সেটা কমে এসেছে, অবসরে গেছেন অনেকে, আপিল বিভাগে গেছেন অনেকে। সে ক্ষেত্রে এখন নেমে এসেছে ৮৪ জনে।
রাষ্ট্রপতি তাঁর সাংবিধানিক ক্ষমতা ব্যবহার করে খুব শিগগিরই হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি নিয়োগ দেবেন। বিচারপতি নিয়োগের জন্য আইন যেটা করার সেটাও কিন্তু আমরা শেষ করে এনেছি। হাইকোর্টেও বিচারপতি নিয়োগের ব্যাপারে যে আইনটা সেটার জন্য স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলাপ করার জন্য খুব শিগগিরই একটা সময় ও তারিখ দেওয়া হবে।’
অনলাইন ডেস্ক :
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে এবং দেশের কর্মক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে নিয়োগকর্তাদের অঙ্গীকার দৃঢ় করতে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে একদিনের প্রতিবন্ধী চাকরিমেলা।
আজ ১৯ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটে এ মেলার আয়োজন করে বাংলাদেশ বিজনেস অ্যান্ড ডিজঅ্যাবিলিটি নেটওয়ার্ক (বিবিডিএন)।
এতে অর্থায়ন করে দ্য ইউনাইটেড ন্যাশনস পার্টনারশিপ অন দ্য রাইটস অব পার্সনস উইথ ডিজঅ্যাবিলিটিস মাল্টিপার্টনার ট্রাস্ট ফান্ড।
জাতীয় পর্যায়ে আয়োজিত এ মেলায় ৪০ জন প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রার্থীর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেয় নিয়োগ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।
নিয়োগপত্র দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- টিম গ্রুপ, স্বপ্ন, সিআরপি, ই-শিখন, এক্সেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন, শেলটেক ও উর্মী গ্রুপ।
মেলায় এসব প্রতিষ্ঠানসহ আরএমজি সেক্টর, আইটি সেক্টর, পেইন্ট ইন্ডাস্ট্রি, এনজিওর জাতীয় ও বহুজাতিক ৩১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। বিভিন্ন শিক্ষাগত যোগ্যতার ১ হাজার ২০০ প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রার্থী মেলায় অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন করলেও অংশ নেয় মাত্র ২৫০ জন।
মেলায় অংশ নেওয়া প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রার্থী আবু বকর সিদ্দিক ১১ বছর বয়সে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই হাত হারান। তার বাম হাত বাহু থেকে আর ডান হাত কবজি থেকে কেটে ফেলতে হয়েছে।
আবু বকর সিদ্দিক বলেন, আমি এইচএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। আমার বাবা বিদেশে ছিলেন। করোনার সময় চাকরি হারিয়ে দেশে আসার পর এখন কৃষিকাজ করেন। তাই চাকরির চেষ্টা করছি। আমি ব্র্যাক থেকে কম্পিউটার গ্রাফিক্সের কোর্স করেছি। এ মেলায় অন্তত ১০টি প্রতিষ্ঠানে সিভি দিয়েছি। যদি চাকরি হয় তাহলে নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি পরিবারকেও সাপোর্ট দিতে পারবো।
চাকরিমেলায় মো. রকিবুল ইসলামকে কাস্টমার এক্সিকিউটিভের নিয়োগপত্র দিয়েছে ই-শিখন। তিনি বলেন, আমার শরীরের বাম পাশ জন্ম থেকে ঠিকভাবে কাজ করে না। আমি অ্যাকাউন্টিংয়ে স্নাতক করেছি। এ চাকরিমেলা থেকে চাকরি পাওয়ায় খুবই ভালো লাগছে। আরও অনেক কোম্পানিতে সিভি দিয়েছি। আশা করি, আরও ভালো কোম্পানিতেও ডাক পাবো। এ মেলা আমাদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম।
চাকরিমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরাও তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতা দিয়ে দেশের উন্নয়ন যজ্ঞে শামিল হতে পারে। আমাদের অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে তাদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। তাদের পেছনে ফেলে আমাদের অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর সুযোগ নেই।
এ সময় বিবিডিএনের উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন কাসেম খান, প্রধান নির্বাহী (সিইও) মুর্তজা রাফি খান, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার চিফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজর পিটার, সৈয়দ সাদ হোসেন গিলানী, টিম গ্রুপের এইচআর প্রধান খন্দকার ইমাম, এক্সেস বাংলাদেশের ইনক্লোশন লিড তাসলিম জাহানসহ মেলায় অংশ নেওয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা অসংখ্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে ডেস্ক :
করদাতার সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি আরো কর সংগ্রহের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে কর প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, শুধু রাজধানী বা শহরে নয়, সারা দেশে কর দিতে সক্ষম যারা, দয়া করে আপনার কর পরিশোধ করুন। সরকার আপনার পরিষেবা ও কল্যাণে আপনার অর্থ ব্যবহার করবে।
আজ ৫ ফেব্রুয়ারি রবিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) দুই দিনব্যাপী রাজস্ব সম্মেলন উদ্বোধন করেন তিনি। সেখানে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমগ্র বিশ্ব এখন অর্থনৈতিক মন্দা ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যার প্রভাব বাংলাদেশের ওপরও পড়েছে। কাজেই আমাদের সেগুলোর (অর্থনৈতিক মন্দা এবং উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির হার) মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হবে। আমরা যত বেশি ট্যাক্স সংগ্রহ করব, ততই এটি অতিক্রম করা সহজ এবং সম্ভব হবে।
প্রধানমন্ত্রী করের পরিমাণ বাড়ানোর পরিবর্তে করদাতার সংখ্যা সম্প্রসারণে আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করতে এবং জনগণকে কর দিতে উদ্বুদ্ধ করতে সারাদেশে ব্যাপক সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার যাতে রাষ্ট্র চালাতে পারে বা মানুষের জন্য কাজ করতে পারে সেদিকে সকলকে দৃষ্টি দিতে হবে। কারণ, ভর্তুকি আমরা আর কত দিতে পারব? তাছাড়া আমাদের উন্নয়নকাজগুলো যাতে ব্যহত না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আপনারা উপজেলা বা ইউনিয়ন পর্যায়ে যদি যান, যে পরিবর্তন হয়েছে গত ১৪ বছরের সেই পরিবর্তনটা আপনারা দেখতে পাবেন। এখন আর কেউ কুঁড়ে ঘরে বাস করে না, ভূমিহীন-গৃহহীন প্রত্যেককে তাঁর সরকার বিনা পয়সায় ঘর তৈরি করে দিচ্ছে। আর্থিক সহায়তা দিয়ে জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগও করে দেয়া হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার একশ’ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছে যেখানে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এবং আওয়ামী লীগ সরকারের তৃণমূল পর্যায়েরও উন্নয়ন নীতির কারণে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়েও অর্থনীতির গতিশীলতা তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি এটুকু বলতে পারি যে, গত ১৪ বছরে আমূল পরিবর্তন এসেছে। করদানের সক্ষমতা কিন্তু আমাদের উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়েও রয়েছে। সেখানে আমরা যদি একটু প্রচার-প্রচারণা ভালোভাবে চালাই তাহলে মানুষ কিন্তু স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আসবে। কারণ তারাতো সেবা পাচ্ছে। এই সেবাটা পাওয়ার জন্যই তারা করবে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনীম এবং সদস্য ড. আব্দুল মান্নান শিকদার। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য প্রদ্যুৎ কুমার সরকার।
অনুষ্ঠানে এনবিআরের কার্যক্রমের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী এর আগে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ৪১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নবনির্মিত ১২তলা রাজস্ব ভবন উদ্বোধন করেন। ভবন উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী এর বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনও করেন। সূত্র : বাসস