চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে পুলিশের জব্দ করা গাড়ি ব্যক্তিমালিকানাধীন গ্যারেজে রেখে মূল্যবান যন্ত্রাংশ খুলে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া থানার আঙিনায় রাখা মাদকসহ বিভিন্ন মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করা গাড়ি থেকেও খুলে নেওয়া হচ্ছে মূল্যবান যন্ত্রাংশ।
জানা যায়, দেশের মাদক কারবারের অন্যতম ট্রানজিট পয়েন্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ। এই উপজেলার ওপর দিয়ে গেছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। আশুগঞ্জে প্রবেশের কিছুদূর আগেই এর সঙ্গে মিলিত হয়েছে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক। দুটি মহাসড়কের সংযোগস্থল ও মেঘনা পাড়ে অবস্থিত হওয়ায় এটি মাদকের অন্যতম বর্ডার। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা, আখাউড়া, বিজয়নগর, কুমিল্লা, হবিগঞ্জ ও সিলেটের সীমান্ত এলাকা থেকে প্রতিদিন মাদকের বিপুল পরিমাণ চালান আশুগঞ্জ হয়ে ঢাকায় পাচার হচ্ছে। ফলে পুলিশের অভিযানে প্রায় প্রতিদিনই আটক হচ্ছে মাদক পাচার কাজে ব্যবহৃত গাড়ি। এসব গাড়ির মধ্যে রয়েছে প্রাইভেটকার, পিকআপ ভ্যান, ট্রাক, সিএনজি, কনটেইনার, মোটরসাইকেল ইত্যাদি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত কয়েক দিনে আশুগঞ্জ থানা পুলিশ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোলপ্লাজাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মাদকসহ তিনটি বড় ট্রাক, একটি পিকআপ ভ্যান এবং ডায়না গাড়ি আটক করে। নিয়মানুসারে আটক করা এসব গাড়ি থানা হেফাজতে না রেখে মহাসড়কের পাশে কবির সরকার নামের একজনের ব্যক্তিমালিকানাধীন গ্যারেজে রাখা হয়েছে। গাড়ির মূল্যবান যন্ত্রাংশ চোরাইভাবে বিক্রির সুবিধার্থেই এসব গাড়ি থানায় না নিয়ে উক্ত গ্যারেজে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, ইতোমধ্যে এসব গাড়ির ব্যাটারি, টুলবক্সের যন্ত্রাংশ, জগসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ খুলে নেওয়া হয়েছে বা বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া এসব গাড়ি থেকে তেল বের করেও বিক্রি করে দেওয়া হয়।
ইয়াছির হাজারি নামের এক ট্রাক মালিক জানান, তার অসাধু ড্রাইভার হুমায়ূন কবির টাকার লোভে ট্রাকে এক মাদক কারবারির গাঁজা নিয়ে গাড়িসহ আটক হয়। অথচ সেসময় তার ট্রাক নিয়ে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে বালু আনতে যাওয়ার কথা ছিল। তিনি তার গাড়িটি ফেরত পেতে আদালতে আবেদন করছেন। এর মধ্যেই কবির সরকারের গ্যারেজ থেকে তার গাড়িতে পুরাতন (নষ্ট) চাকা লাগিয়ে রিংসহ নতুন চাকাগুলো নিয়ে গেছে বলে তিনি জানতে পারেন। হাড়ির টুলবক্সেও কোনো যন্ত্রপাতি নেই। এছাড়া প্রায় আড়াই শ লিটার ডিজেল খুলে নেওয়া হয়েছে। চুরি হওয়া মালামালের মূল্য প্রায় তিন লাখ টাকা বলে তিনি দাবি করেন।
তবে গ্যারেজ মালিক কবির সরকার বলেন, গাড়িগুলো পুলিশি পাহারায় রাখা হয়। গাড়ির যন্ত্রাংশ বিক্রি করা হয়নি। নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাটারি ও ত্রিপাল খুলে রাখা হয়েছে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আশুগঞ্জ থানা পুলিশের কয়েকজন কনস্টেবল জানান, থানায় আটক শত শত মামলার আলামতের গাড়ির কোনোটিরই যন্ত্রাংশ অক্ষত নেই। রাতের আধাঁরে কবির সরকারের লোকজনকে দিয়ে এসব যন্ত্রাংশ খুলে নেওয়া হয়েছে। সচল গাড়িগুলোকে আটক করা হলেও এর কোনটিই এখন চলার উপযোগী নয় বলে তারা জানান। তাদের ঊর্ধ্বতন অফিসাররা জড়িত থাকায় এ বিষয়ে তারা কিছু বলতে পারেন না।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ টোলপ্লাজায় কর্মরত পুলিশের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গ্যারেজ মালিক কবির সরকারের সঙ্গে টিআই অযুত কুমার দাস ও ট্র্যাফিক সার্জেন্ট জহিরুল ইসলামের রয়েছে অন্যরকম দহরম-মহরম। সার্জেন্ট জহিরুল আশুগঞ্জ থানার সঙ্গে যোগসাজশে যন্ত্রপাতি চুরির উদ্দেশ্যে জব্দকৃত গাড়িগুলো কবির সরকারের গ্যারেজে নিয়ে রাখেন।
এ বিষয়ে আশুগঞ্জ থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ নাহিদ আহাম্মেদ বলেন, থানার জায়গা স্বল্পতায় গাড়িগুলো অন্য গ্যারেজে রাখা হয়েছে। তবে যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশেষ প্রতিনিধি :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচন আগামী ১ ফেব্রুয়ারি । নির্বাচনে বিএনপির দলছুট নেতা উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াসহ চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের মধ্যে টাকা ও শিক্ষায় আবদুস সাত্তার এবং মামলার দিক থেকে এগিয়ে আছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু আসিফ আহমেদ। চার বছরে সাত্তারের নগদ টাকার পরিমাণ বেড়েছে তিন গুণের বেশি।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রার্থীদের মধ্যে আবদুস সাত্তার ছাড়া বাকি তিন প্রার্থী আগে কখনো সংসদীয় নির্বাচনে অংশ নেননি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য উপনির্বাচন উপলক্ষে জমা দেওয়া হলফনামা ঘেঁটে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
চার বছর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় জমা দেওয়া হলফনামায় সাত্তার জেলা শহরের একতলা পাকা ভবনের মূল্য ১০ লাখ টাকা উল্লেখ করেছিলেন। তবে এবারের হলফনামায় তিনি একই ভবনের মূল্য উল্লেখ করেছেন পাঁচ লাখ টাকা। এ ছাড়া সরাইলে তাঁর ২৭ কানি (৩০ শতকে এক কানি) জমির অর্জনকালীন দাম ২৭ হাজার ও বিয়েতে উপহার পাওয়া ৪০ ভরি সোনার দাম ৪০ হাজার টাকা উল্লেখ করেছেন তিনি।
হলফনামা অনুযায়ী, দু’জন প্রার্থী উচ্চশিক্ষিত। তাঁদের মধ্যে সাত্তার স্নাতকোত্তর ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. আবদুল হামিদ এলএলবি পাস। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ উচ্চমাধ্যমিক ও জাকের পার্টির প্রার্থী জহিরুল ইসলাম স্বশিক্ষিত।
প্রার্থীদের হলফনামায় দেখা গেছে, সাত্তারের পেশা আইনজীবী। তাঁর বিরুদ্ধে ২০০৯ ও ২০১০ সালে মামলা হলেও ২০২১ সালে তা নিষ্পত্তি হয়ে যায়। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে বর্তমানে তাঁর কাছে নগদ ১ কোটি ২ লাখ ৯৯ হাজার ৪৫২ টাকা আছে। কিন্তু একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় তাঁর কাছে নগদ ছিল ৩২ লাখ ৭৯ হাজার ৪৪ টাকা। অর্থাৎ চার বছরে তাঁর নগদ টাকা বেড়েছে ৭০ লাখ ২০ হাজার ৪০৮ টাকা।
গত নির্বাচনের সময় সাত্তারের দুটি ব্যাংকে জমা ছিল ৮ লাখ ৯২ হাজার ৪০৬ টাকা। বর্তমানে ব্যাংকে জমা আছে ১৮ হাজার ৯২২ টাকা। অর্থাৎ চার বছরে ব্যাংকে জমার পরিমাণ কমেছে। এবারের হলফনামায় গাড়ির জায়গায় তিনি ‘প্রযোজ্য নয়’ উল্লেখ করলেও গতবারের হলফনামায় তিনি প্রায় ১৪ লাখ টাকার একটি ১৫০০ সিসির গাড়ির কথা উল্লেখ করেছেন। হলফনামায় সংসদ সদস্য হিসেবে সাত্তার বাৎসরিক সম্মানী ভাতা ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা পেতেন। এবার ব্যবসা থেকে কোনো আয় না দেখালেও গত নির্বাচনের সময় ব্যবসা থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ছিল ৪ লাখ ৫২ হাজার ৮০৬ টাকা।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী হামিদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। পেশায় তিনি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। কৃষি খাত থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ২৫ হাজার ৫০০ টাকা। ব্যবসা থেকে তাঁর ওপর নির্ভরশীলদের আয় পৌনে চার লাখ টাকা। আইন পেশা থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ৫ লাখ ৭০ হাজার ৭০০ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাঁর জমা আছে ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা। নিজের নামে সোনা আছে ৪০ ভরি ও স্ত্রীর নামে আছে ৩৭ ভরি। নিজের নামে মূলধন আছে ২ লাখ ১২ হাজার ৩৮৯ টাকা এবং স্ত্রীর কাছে আছে ২২ লাখ ৯৬ হাজার ৯০০ টাকা। তাঁর ৯০ হাজার টাকা দামের একটি মোটরগাড়ি এবং সরাইলে ১০ বিঘা কৃষিজমি আছে।
আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু আসিফ আহমেদের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা চলমান। তাঁর পেশা ব্যবসায়। তাঁর বার্ষিক আয় বাড়ি-অ্যাপার্টমেন্ট-দোকান ও অন্যান্য ভাড়া থেকে ৮ লাখ ৪২ হাজার ২০০ এবং ব্যবসা থেকে ৩৫ লাখ ৭৮ হাজার ১২০ টাকা। তাঁর কাছে নগদ আছে ১০ লাখ ৫২ হাজার টাকা। তাঁর ১৬ লাখ টাকা মূল্যের একটি প্রাইভেট কার, নিজের নামে ১১ লাখ টাকার সোনা এবং স্ত্রীর নামে ৬০ হাজার টাকা ও ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকার আসবাব আছে। আশুগঞ্জে তার ৫ শতাংশ জমির ওপর একটি বাড়ি আছে। প্রিমিয়ার ব্যাংকে ৭৬ কোটি ৪৭ লাখ ৫৬ হাজার ৬৫১ টাকার তাঁর দায়দেনা আছে।
জাকের পার্টির প্রার্থী জহিরুলের নামে মামলা নেই। ব্যবসা থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা। তাঁর কাছে নগদ ২ লাখ ও ২ লাখ টাকার সোনা আছে। স্ত্রীর কাছে নগদ ২ লাখ ও ২ লাখ টাকার সোনার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর নামে পৈতৃক সম্পত্তি আছে ৩০ শতক। ব্যবসার পুঁজি হিসেবে প্রায় ১৮ লাখ টাকার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার বলেছেন, দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির উদ্দ্যেশে জাতীয় সংসদ থেকে বিএনপি দলীয় সদস্যদের পদত্যাগ এবং উপ-নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা বিএনপি রাজনীতির দেউলিয়াত্তের প্রমাণ বহন করে। কোন দেশপ্রেমিক নাগরিক বিএনপি’র এই অপরাজনীতিকে সমর্থন করতে পারেনা।
তিনি গতকাল তালশহর হাই স্কুল মাঠে স্বতন্ত্র প্রার্থী উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার কলার ছড়ি প্রতীকের সমর্থনে এক বিশাল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এই কথা বলেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সুলেমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা হাজী মোঃ ছফিউল্লাহ, আবু নাছের আহমেদ, মঈন উদ্দিন মঈন, অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, এড. কামরুজ্জামান আনসারী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করেন।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে পাগলা কুকুরের কামড়ে নারী-শিশু সহ ১০জন আহত হয়েছেন। আজ ৯ জুলাই রবিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত উপজেলার তারুয়া ইউনিয়নের তারুয়া, খারাসার ও নাওঘাট গ্রামে ১০জনকে কুকুরে কামড়ায়।
আহতদের মধ্যে ৭জনকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরা হলেন, হামিদা বেগম (২৪), লামিম (৬), মিহির (১২), ইয়ামিন (৫), লামিছা (৩), ফাহিম (১০) ও খাদিজা বেগম (১০)।
হাসপাতালে আহতদের স্বজনরা জানায়, উপজেলার রবিবার সকাল থেকেই উপজেলার খারাসার গ্রামে একটি পাগলা কুকুর এসে উৎপাত শুরু করে। পরে কুকুরটি খারাসার গ্রামে কয়েকজন পথচারীকে কামড়িয়ে তারুয়া ও নাওঘাট এলাকায় চলে আসে। পরে সেখানেও নারী-শিশুদের কামড়িয়ে আহত করে। ৪ শিশুকে কামড়িয়ে কোমড় ও পায়ের মাংস ক্ষতবিক্ষত করে। আহতদের মধ্যে ৭জনকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও বাকী ৩জন স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেন।
এ ব্যাপারে তারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাদল সাদির জানান, পাগলা কুকুর কামড়ানোর বিষয়টি জানতে পেরেছি। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহমেদ বলেন, কুকুরে কামড়ানোর বিষয়টি আমি অবগত নই। খোঁজ নিয়ে বলা যাবে।
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে মাইশা আফরিন সুবর্ণা (১৪) নামের এক কিশোরী বিয়ের তিনমাসের মাথায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। রোববার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে কিশোরীর মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মাইশা আফরিন সুবর্ণা উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের বীরপাশা গ্রামের নাসির উদ্দিনের মেয়ে। নাসির উদ্দিন বলেন, তার কিশোরী মেয়ে সুবর্ণা অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। পার্শ্ববর্তী বিন্নিঘাট এলাকার ইদ্রিস মিয়ার ছেলে মনির হোসেন (২২) তার মেয়েকে পছন্দ করতেন। পরে পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের টাকার জন্য তার মেয়ে সুবর্ণাকে অত্যাচার করতো মনির। বিয়ের সময় মনিরকে ১ লাখ টাকা যৌতুক দেওয়ার পর সে আরও যৌতুককের টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে তার মেয়েকে তালাক দিবে একথা বলেন মনির। সে কথা শুনে সুবর্ণা শনিবার বিকেলে শোবার ঘরের বাশের তীরের সাথে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। তিনি আরও বলেন, মনিরের চাপের কারণে তার মেয়ে সুবর্ণাকে বিয়ে দিতে হয়। মনিরের কারনে তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
এ ব্যাপারে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এক কিশোরী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মরদেহ উদ্ধারের পর জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছি। থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
গ্রাম্য দাঙ্গা রোধে আশুগঞ্জ ও নাসিরনগর উপজেলার ২৫টি গ্রামে অভিযান চালিয়ে প্রায় তিন হাজার দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। ৫ মে শুক্রবার থেকে আজ ৭ মে রবিবার সকাল পর্যন্ত চলা অভিযানে এসব অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। তবে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।
এদিকে, এখন থেকে কেউ দেশীয় অস্ত্র বানাতে গেলে তার নাম-ঠিকানা রেখে থানায় পাঠানোর জন্য কামারদের নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ। শনিবার কামারদের নিয়ে সভা করে এ নির্দেশনা দেয় নাসিরনগর থানা পুলিশ।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত এক মাসে নাসিরনগরে বেশ কয়েকটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় কয়েক শ মানুষ আহত হন। এরমধ্যে একজন মারা গেছেন। গ্রাম্য এসব সংঘর্ষ এড়াতে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে নামে পুলিশ। উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে কাতরা, সড়কি, রামদা, বল্লম, টেঁটা ও ফলা রয়েছে।
নাসিরনগর থানা পুলিশেরর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল্লাহ সরকার জানান, অস্ত্র উদ্ধারের পর নতুন করে আর যেন কেউ অস্ত্র বানাতে না পারে সেজন্য কামারদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা করা হয়েছে। কেউ যদি অস্ত্র বানাতে দোকানে যায়, তাহলে তার নাম-ঠিকানা থানায় পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন জানান, সংঘর্ষ এড়াতে প্রতিটি উপজেলায় এ ধরনের অভিযান চালানো হবে। পাশাপাশি মাদক উদ্ধারেও জেলার সীমান্তবর্তী তিন উপজেলায় অভিযান চলছে।