চলারপথে রিপোর্ট :
বাগেরহাটের ফকিরহাটে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি ও বিক্রির অপরাধে চাইনিজ রেস্তোরাঁসহ তিনটি খাবারের হোটেলকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ ২ আগস্ট বুধবার সকালে কাটাখালী বাসস্ট্যান্ডে রাজধানী খাবার হোটেল, লখপুরে চাইনিজ রেস্তোরাঁ ও এএসপি বাংলা নামে অপর একটি খাবারের হোটেলে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে খাবার তৈরি, বিক্রি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় ৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ফকিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক মারুফা বেগম নেলী জানান, উপজেলার কাটাখালী বাসস্ট্যান্ড ও লখপুরে খাবারের হোটেলে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি ও বিক্রি হয় এমন তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার সকালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।
তিনি আরো বলেন, এসময়ে কাটাখালী বাসস্ট্যান্ডে রাজধানী খাবার হোটেল, লখপুরে চাইনিজ রেস্তোরাঁ ও এএসপি বাংলা নামে অপর একটি খাবারের হোটেলে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশ খাবার তৈরি, বিক্রি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় ৩টি প্রতিষ্ঠানটিকে ৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এই সাথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাবার তৈরি, বিক্রিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হালনাগাদ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, চুকনগর বধ্যভূমি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
আজ ৬ জুলাই শনিবার দুপুরে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর বধ্যভূমি প্রাঙ্গণে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আমরা একাত্তর’ এর উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক বাঙালির ওপর নৃশংস হত্যাযজ্ঞের সঠিক তথ্য তুলে ধরতে হবে। তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করতে উৎসাহিত করতে হবে। পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক বাঙালির ওপর পরিচালিত হত্যাযজ্ঞ এদেশের একটি গোষ্ঠী স্বীকার করতে চায় না। তারা জাতীয় সংগীত গাইতে ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে অনীহা প্রকাশ করে। তারা স্বাধীনতা বিরোধী ও দেশবিরোধী নানা ধরনের চক্রান্তে লিপ্ত। তাদের সব চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, দেশের বর্তমান উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে আরও সমুন্নত করতে হবে, তার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
বধ্যভূমি সংরক্ষণে সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে চুকনগর ছিল ভারতে যাওয়ার অন্যতম প্রধান পথ। বিভিন্ন এলাকা থেকে ভারতে পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশে আগত ১০ থেকে ২০ হাজার মানুষকে ১৯৭১ সালের ২০ মে এখানে হত্যা করে তাদের লাশ স্থানীয় ভদ্রা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। ইতিহাসে এমন পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের নজির বিরল। শুধু চুকনগর নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি হানাদার গোষ্ঠী এমন হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে যার বেশিরভাগই এখনও পর্যন্ত অজানা। প্রয়োজনীয় গবেষণা ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে এসব তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে। তরুণ প্রজন্মের কাছে এসব ইতিহাস সঠিকভাবে তুলে ধরতে হবে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এসব বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও সংস্কারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। অনুষ্ঠানের শুরুতে মন্ত্রী বধ্যভূমির মূল বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিনের সভাপতিত্বে আয়োজিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডুমুরিয়া উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল ইসলাম মানিক, জেলা কমান্ডার মাহবুবুর রহমান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নবীরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রজন্ম ৭১ এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে মাহবুব জামান ও হেলাল ফয়েজী, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন প্রমুখ। সমাবেশে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মন্ত্রী ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ এর সব সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। দলীয় কার্যক্রম গতিশীল এবং সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে তারা দলের নেতা কর্মীদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন।
দুপুরে মন্ত্রী খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সাতক্ষীরা সড়ক ও সিটি বাইপাসকে সংযুক্ত করে সংযোগ সড়কসহ তিনটি লিংক রোড নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন।
খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য এস এম কামাল হোসেন, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রুনু রেজা, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নবীরুল ইসলাম, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম মিরাজুল ইসলাম, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হকসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, জিওবি এবং খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের যৌথ অর্থায়নে ৭১৭ কোটি ৮০ লাখ ২১ হাজার টাকা ব্যয়ে উল্লিখিত প্রকল্পের আওতায় তিনটি লিংক রোড নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় নিরালা আবাসিক এলাকা থেকে সিটি বাইপাস পর্যন্ত ২.৫ কিলোমিটার (প্রথম লিঙ্ক রোড), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রায় মহল পর্যন্ত সংযোগ সড়ক ৪.৯০ কিলোমিটার (দ্বিতীয় লিংক রোড) এবং বাস্তুহারা থেকে পুরাতন সাতক্ষীরা সড়ক সংযোগ সড়ক ২.৭০ কিলোমিটার (তৃতীয় লিংক রোড) মোট ১০.১০ কিলোমিটার দুই লাইন বিশিষ্ট সড়ক নির্মাণ করা হবে। ২০২৫ সালে ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ট্রাকের পেছনে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় ২ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ৩ জন। আজ ২৬ জুলাই বুধবার সকাল সাড়ে ৬টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের হাদি ফকিরহাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- কুমিল্লার বুড়িচং পূর্বমারা এলাকার মো. মনির (৪৫) ও প্রাইভেটকারচালক মো. মাহবুব (৪০)।
আহতরা হলেন- মৌসুমি (৩০), মাহাতাফ (৮) ও মেজবা (৫)। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকাগামী একটি প্রাইভেটকার মহাসড়কের পাশে দাঁড়ানো একটি ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে ২ জন নিহত হন। মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে। স্থানীয়রা আহতদের হাসপাতালে পাঠান।
কুমিরা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানান, ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্ঘটনার শিকার গাড়ি দুইটি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে নিহতদের মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
বাতাসে যেন মিষ্টি এক আনন্দের আমেজ। শীতের রুক্ষতাকে বিদায় জানিয়ে ফুলে ফুলে সেজে উঠতে প্রস্তুত প্রকৃতি। একই দিনে বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হচ্ছে ভালোবাসার দিন, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। ভালোবাসা দিবস আর বসন্তের রঙ যেন মিলেছে একই দিনে। সবার মুখে মুখে তাই আজ উচ্চারিত হচ্ছে, ‘বসন্তে রঙিন ভালোবাসার দিন। আজ বসন্ত, আজ ভালোবাসার দিন।’
প্রকৃতিতে ফাল্গুনের হাওয়া, বাতাসে বসন্তের উন্মাদনা। ঋতুরাজকে স্বাগত জানাতে প্রকৃতি সেজেছে বর্ণিল সাজে। গাছে গাছে পলাশ আর শিমুলের মেলা। প্রকৃতিও আগুনরঙা ভালোবাসার রঙে নিজেকে রাঙিয়ে নিয়েছে। সবমিলিয়ে প্রকৃতি জানান দিচ্ছে আজ পহেলা ফাল্গুন।
একই দিনে বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হচ্ছে ভালোবাসার দিন। ভালোবাসা দিবস আর বসন্তের রঙ যেন মিলেমিশে এক হচ্ছে আজ (১৪ ফেব্রুয়ারি)। ফাল্গুনের হাত ধরেই ঋতুরাজ বসন্তের আগমন। সেই সঙ্গে ঋতুরাজের হাত ধরে এবারও এলো ভালোবাসার বিশেষ দিনটি। একদিকে বাসন্তী রঙ, অন্যদিকে ভালোবাসার রঙের জোয়ারে প্রকৃতি একাকার আজ।
ফাগুনের আগুনে মন রাঙিয়ে বাঙালি তার দীপ্ত চেতনায় উজ্জীবিত হবে আজ। বাসন্তী রঙের শাড়ি, কপালে টিপ, হাতে চুড়ি, পায়ে নূপুর, খোঁপায় ফুল অথবা রিং জড়িয়ে আজ বেরিয়ে পড়বেন তরুণীর দল। প্রকৃতির সঙ্গে নতুন সাজে সাজবেন তারাও। তাদের উচ্ছ্বাস মনে করিয়ে দেয় কবির কবিতার লাইন, ‘ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক, আজ বসন্ত’।
বেশ কয়েক বছর ধরে ঋতুরাজের হাত ধরে আসছে ভালোবাসার দিন। যদিও ভালোবাসা ক্ষণিকের নয়, চিরন্তন। ভালোবাসা শুধু প্রেমিক-প্রেমিকার নয়, শুধু স্বামী-স্ত্রীর নয়, এ ভালোবাসা বয়সের ফ্রেমে বাঁধা নয়, এটা প্রসারিত হয় বন্ধু-বান্ধব, পরিচিতজনসহ সবার মাঝে। ইংরেজি বর্ষপঞ্জির ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটি ভালোবাসা দিবস হিসেবে পরিচিত সারা বিশ্বে। বাংলাদেশেও দিবসটি ঘিরে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে।
আজ ঋতুরাজ বসন্ত বরণের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। পহেলা ফাল্গুন বসন্তবরণ উৎসব। ২২৫ নৃত্যশিল্পীর পরিবেশনার মধ্য দিয়ে বসন্তবরণের আয়োজন করেছে একাডেমি। রাজধানী রমনায় বিকাল সাড়ে ৩টায় শতায়ু অঙ্গনের পাশের মঞ্চে পরিবেশিত হবে শিশু-নৃত্যদল ও শিশু সঙ্গীত দলের বিশেষ পরিবেশনা।
অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে বিকাল সাড়ে ৪টায় বসন্তের রঙিন শোভাযাত্রা শুরু হবে। শোভাযাত্রাটি রমনা পার্ক থেকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সমবেত হবে। বিকাল সাড়ে ৫টায় একাডেমির উন্মুক্ত মঞ্চে আয়োজন করা হচ্ছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
আজকের বসন্তের এ উৎসবে চারুকলার বিনোদনপ্রেমী মানুষের স্রোত গিয়ে মিলবে বইমেলায়। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, টিএসসি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার পর্যন্ত থাকবে এ কোলাহল। বসন্ত মানেই যেন নতুন কলেবর, তাই তো সর্বত্র রঙিন হবে মানুষের ঢলে।
ঋতুরাজ বসন্ত বরণের উন্মুক্ত মঞ্চের আয়োজনে শুরুতে পরিবেশিত হবে দলীয় ‘ঢাক-নৃত্য’। পরিবেশন করবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নৃত্যদল। পরে তারা পরিবেশন করবে দলীয় নৃত্য ‘শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা’। এরপর দলীয় সংগীত ‘আনন্দ লোকে’ পরিবেশন করবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি শিশু সংগীত দল। দ্বৈত আবৃত্তি ‘রুমঝুম কে বাজায়’ পরিবেশন করবেন ডালিয়া আহমেদ ও জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়। একক সংগীত ‘যেথা রামধনু ওঠে হেসে’ পরিবেশন করবেন মেহরিন মাহমুদ।
এরপর দ্বৈত সংগীত পরিবেশন করবেন নওশিন তাবাসসুম স্মরণ ও মোমিন বিশ্বাস। ধারাবাহিক পরিবেশনায় দলীয় নৃত্য ‘সুন্দরের অতন্দ্র প্রহরী’ পরিবেশন করবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি শিশু নৃত্য দল। এরপর দ্বৈত নৃত্য ‘আজি দক্ষিণ পবনে’ পরিবেশন করবে আবু নাইম ও আনন্দিতা খান। দ্বৈতসংগীত পরিবেশন করবেন শারমিন সাথী ইসলাম ও বুলবুল ইসলাম। এরপর আবার দলীয় সংগীত ‘মন শুধু মন ছুঁয়েছে’ পরিবেশন করবে ঢাকা সাংস্কৃতিক দল। দ্বৈত আবৃত্তি করবেন তামান্না তিথি ও মাহিদূল ইসলাম।
দলীয় নৃত্য ‘বসন্ত মুখর আজি’/‘নীল দিগন্তে’ পরিবেশন করবে রেওয়াজ পারফর্মার্স স্কুল। নৃত্য পরিচালনা করবেন মুনমুন আহমেদ। দ্বৈত নৃত্য ‘বিশ্ববীণা রবে/আজ সখি’ পরিবেশন করবেন সামিনা হোসেন ও মাহতাব মেহেদী। একক সংগীত ‘চেনা চেনা লাগে’ পরিবেশন করবেন মো. ইউসুফ আহমেদ খান। দ্বৈত সংগীত পরিবেশন করবেন কিরণ চন্দ্র রায় ও চন্দনা মজুমদার। দ্বৈত নৃত্য ‘ফাগুন লেগেছে শাখে শাখে’ পরিবেশন করবেন জুয়েইরিয়াহ মৌলি ও মারিয়া ফারিহ উপমা। এরপর দলীয় ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী নৃত্য পরিবেশন করবে তপস্যা নৃত্যদল। পরিচালনা করবেন নৃত্যপরিচালক ফিফা চাকমা।
দ্বৈত আবৃত্তি করবেন শিমুল মোস্তফা ও রূপা চক্রবর্তী। দ্বৈত নৃত্য ‘একটুকু ছোঁয়া লাগে’ পরিবেশন করবেন অনিক বোস ও কস্তুরী মুখার্জী। এরপর দলীয় নৃত্য ‘অবাক চোখে’ পরিবেশন করবে কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়। এটি পরিচালনা করবেন নৃত্যপরিচালক সাজু আহমেদ। পরে পরিবেশিত হবে দ্বৈত নৃত্য ‘বাগিচায় বুলবুলি’, পরিবেশন করবেন আরোহী ইসলাম (আরিফুল ইসলাম অর্ণব) ও হেনা হোসেন। সবশেষ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নৃত্যদলের অংশগ্রহণে পরিবেশিত হবে ‘ফ্যাশন ডান্স প্যারেড’।
এদিকে, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) এ বছর বসন্তবরণ উৎসব ও ভালোবাসা দিবস উদযাপন উপলক্ষে ‘ভালোবাসার দিনে বসন্ত উৎসব’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। বেলা ১২টায় ডিআরইউ বাগানে বাউল গানের আসর বসবে। ফকির লালন সাঁই, বাউলসাধক শাহ আব্দুল করিমসহ বাংলার লোককবিদের বাউল গান শোনাবেন শিল্পকলা একাডেমির বাউল দল।
অনলাইন ডেস্ক :
রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনের বহির্গমন পথের ডিজিটাল স্ক্রিনে ‘আওয়ামী লীগ জিন্দাবাদ’ লেখা স্লোগান ভেসে ওঠার ঘটনায় ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মোবারক হোসেনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আরিফ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ ঘটনায় রেলওয়ে থানায় একটি মামলা করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
২৬ অক্টোবর শনিবার সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের বের হওয়ার পথে ডিজিটাল স্ক্রিনে ‘আওয়ামী লীগ জিন্দাবাদ’ লেখা স্লোগান প্রচারিত হয়। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। নেটিজেনদের একটি পক্ষ এই ঘটনায় জড়িতদের স্বৈরাচারের দোসর উল্লেখ করে তাদের গ্রেফতারের দাবি জানান। সূত্র : কালেরকণ্ঠ
চলারপথে রিপোর্ট :
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে একটি বেসরকারি অক্সিজেন প্লান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরো অন্তত ২০ জন।
নিহতদের মধ্যে চারজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন-সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট বাংলাবাজার এলাকার বাসিন্দা ফরিদ (৩৫), সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকার শামসুল আলম (৫০), নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার ছোট মনগড়া গ্রামের মিকি রেঙি লখরেটের ছেলে রতন লখরেট (৪৫) এবং নোয়াখালীর সুধারাম থানার অলিপুর গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে আবদুল কাদের (৫০)। বাকিদের পরিচয় শনাক্তে কাজ চলছে।
দুর্ঘটনার কারণও তাৎক্ষণিকভাবে সুনির্দিষ্টভাবে নিশ্চিত করা যায়নি। ৪ মার্চ শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার কদমরসুল ইউনিয়নের ছোট কুমিরা এলাকায় সীমা অক্সিজেন প্লান্টে ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা ঘটে। একটি সিলিন্ডারে প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণের পর আগুন লেগে যায়। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট রাত সাড়ে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতদের মধ্যে ৯ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। আহতরা হচ্ছেন-নূর হোসেন (৩০), মো. আরাফাত (২২), মোতালেব (৫২), ফেনসি (৩০), জসিম উদ্দিন (৪৫), নারায়ণ (৬০), ফোরকান (৩৫), শাহরিয়ার (২৬) এবং জাহিদ হাসান (২৬)। আহত ১৮ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের অনেকের হাত-পা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আহতদেরকে চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আহত এবং নিহতদের নিয়ে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স আসতে শুরু করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। খবর পেয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে উৎসুক মানুষের ভিড় যেমন বাড়তে থাকে, তেমনি উপস্থিত হয় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। এ সময় আহত এবং নিহত স্বজনদের আহাজারিতে আশপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। ক্ষত-বিক্ষত শরীরের লাশগুলো আনা হয় প্যাকেটে ভর্তি করে। এছাড়া গুরুতর আহতদের ট্রলিতে করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে। যাদের মধ্যে কারও চোখ, কারও মাথায়, কেউ আবার হাত-পায়ে গুরুতর আহত হয়।
এদিকে এই ঘটনায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করে পাঁচ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক এবিএম ফখরুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে এই কমিটি গঠন করে দেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকায় সীমা অক্সিজেন প্লান্টটি অবস্থিত। এই প্লান্টে সিলিন্ডারে গ্যাস ভরে তা বিক্রি করা হয়। সেখানে অর্ধশত শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করেন। শনিবার বিকাল সাড়ে চারটায় গ্যাস ভরার সময় এই প্লান্টে হঠাৎ বিকট শব্দে একটি সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে লেগে যায় আগুন। কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীরা বিস্ফোরণের সময় প্লান্টের ভেতরে ছিলেন। বিস্ফোরণে কারও কারও দেহের বিভিন্ন অংশ উড়ে যায়।
এ সময় শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আগুন থেকে বাঁচতে তারা দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের আগ্রাবাদ, বায়েজিদ ও সীতাকুণ্ড থেকে ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণ ও উদ্ধার অভিযান শুরু করে। হাতহতদের উদ্ধার করে চমেক হাসপাতাল ও আশপাশের হাসপাতালে প্রেরণ করে উদ্ধারকর্মীরা।
চমেক হাসপাতালে স্বজনদের আহাজারিতে ভারী পরিবেশ: শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চমেক হাসপাতালে অবস্থান করে দেখা যায় নিহতদের বীভৎস চিত্র। আর আহতদের দুর্বিষহ অবস্থা। স্বজনদের কেউ কেউ পাগলের মতো ছুটে প্রবেশ করতে দেখা যায় জরুরি বিভাগে। আবার কেউ স্বজনের খোঁজ নিতে ছুটতে দেখা যায় এক ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে।
এরই মধ্যে সাইরেন বাজিয়ে আহতদের নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স এলে সবাইকে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। অনেকেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে না গিয়ে সরাসরি চলে আসেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দেখা যায়, একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে চল্লিশোর্ধ এক যুবককে হাসপাতালে আনা হয়। ওই যুবকের মাথার খুলির একাংশ বিচ্ছিন্ন। তার হাতের কব্জি ছিল না। পেট থেকে বেরিয়ে আসে নাড়ি-ভুঁড়ি। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন সংস্থার লোকজন পরিদর্শনে আসেন।
রাত ৯টায় চমেক হাসপাতালে দায়িত্বরত জেলা পুলিশের এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনায় ৬ জন নিহত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আহত ১৮ জনকে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে ক্যাজুয়ালটি ওয়ার্ডে ১০ জন, ইএনটি ওয়ার্ডে ২ জন, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ২ জন, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে ২ জন, অবজারবেশনে ১ জন চিকিৎসাধীন। আহতদের মধ্যে একজন নারী রয়েছেন।’
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে স্বজনের খোঁজ নিতে আসা মো. আরাফাত বলেন, ‘বিস্ফোরণের খবর পেয়ে আমার বাবার খোঁজে হাসপাতালে এসেছি। বিভিন্ন ওয়ার্ডে খোঁজাখুঁজি করেও পাইনি। তিনি ওই প্লান্টে কর্মরত ছিলেন।’
খবর পেয়ে চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান পরিদর্শনে এসে আহতদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। এ সময় তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জরুরি চিকিৎসা দেওয়ার জন্য আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। এছাড়া গুরুতর আহতদের জন্য আইসিইউ প্রস্তুত রয়েছে। প্রয়োজন হলে আমরা জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ কাজে লাগাব।’
জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি: সীমা অক্সিজেন প্লান্টে বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হোসেনকে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ঘটনাস্থলে গিয়ে শনিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ওই সময় তিনি ৫ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেন। ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটিকে পাঁচ দিনের মধ্যে ঘটনার কারণ উদঘাটন করে রিপোর্ট দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের দাফন-কাফনের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা প্রদানের ঘোষণা দেওয়া হয়। চমেক হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা সহায়তার জন্য একটি বুথ খোলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
২০২২ সালের ৪ জুন রাতে সীমা অক্সিজেন প্লান্ট থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ৫০ জন নিহত হন। আহত হন প্রায় ২০০ লোক। ওই ঘটনার পর একই এলাকায় সীমা অক্সিজেন প্লান্টের দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা এই শিল্প এলাকার মানুষকে আবারও ভাবিয়ে তুলেছে।