অনলাইন ডেস্ক :
নতুন সরকার গঠনের পের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব এবং সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রথম সভা করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সভায় তিনি দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে আনাসহ একগুচ্ছ বার্তা দিয়েছেন।
আজ ৫ ফেব্রুয়ারি সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সকাল ১০টা থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টার বৈঠকে শেখ হাসিনা মানুষের জীবনমান স্বাচ্ছন্দ্য ও সুন্দর করতে দ্রব্যমূল্য কমানোর ওপর জোর দিয়েছেন। প্রথমে নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কথা স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।
বৈঠক শেষে বিকেলে সচিবালয়ে ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সচিবদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, দায়িত্ব পালনে আত্মপ্রত্যয়, আত্মবিশ্বাস ও আত্মসম্মান সমুন্নত রেখে যেন নিজ নিজ ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করি।
মাহবুব হোসেন আরও বলেন, আমরা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও আসন্ন রমজানের প্রস্তুতি নিয়ে অবহিত করেছি। খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতি, কৃষি উৎপাদন ও সার ব্যবস্থাপনা; কর্মমুখী শিক্ষা, নতুন পাঠ্যক্রম ও কর্মসংস্থান; বিদ্যুৎ সরবরাহ ও জ্বালানি নিরাপত্তা, আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ, উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা, সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও আর্থিক খাতের দক্ষতা বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বইমেলা জেলার বাইরে উপজেলা পর্যায়ে নিতে বলেছেন। পর্যটন শিল্পের জন্য যা যা করা প্রয়োজন সে নির্দেশনা দিয়েছেন।
সংসদ কার্যক্রমে সহযোগিতা
সংসদ কার্যক্রমে আমরা যেন সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করি। বিশেষ করে প্রশ্নেত্তর পর্বে। প্রশ্নেত্তর লেখা বা সম্পূরক প্রশ্নের উত্তর যেন যথাযথভাবে উপস্থাপন করি। যেদিন যে মন্ত্রণালয়ের প্রশ্নোত্তর থাকবে সেদিন যেন ওই মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি সংসদে উপস্থিত থাকেন। কর্মকর্তাদের সংসদ কার্যাবিধি সম্পর্কে অবহিত হতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
ইশতেহার বাস্তবায়নের নির্দেশনা
১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছিলেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এটার ধারাবাহিকতায় এবার ইশতেহার দিয়েছেন। ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ করতে যাচ্ছেন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশের পথে নিয়ে যাচ্ছেন আমাদের। তারই ধারাবাহিকতা রয়েছে। জনগণ রায় দিয়েছে, দল নির্বাচিত হয়েছে, সরকার গঠন করেছেন, তাই নির্বাচনী ইশতেহারটাই হবে ৫ বছরে সরকার পরিচালনার মূল নীতির দলিল। এই দলিল বাস্তবায়নের জন্য উনি আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন।
ইশতেহার বাস্তবায়ন সমন্বয়ের দায়িত্ব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ করবে। নির্বাচনী ইশতেহারে ১১টি অগ্রাধিকার কার্যক্রম আছে, ৩০০টির বেশি অঙ্গীকার আছে, সেগুলো ম্যাপিং করা হবে। এরপর কোন মন্ত্রণালয়ের কি কাজ সেটি চিহ্নিত করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সেই কাজগুলো করবে। কাজগুলো যাতে ঠিকমত মনিটর করা হয় সেজন্য বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি, সিটিজেন চার্টার, রাইট টু ইনফরমেশন এবং সুশাসনের যেসব টুলস আছে সেখানে নির্বাচনী ইশতেহারের অঙ্গীকারগুলো ইন্ডিগেট করতে বলা হয়েছে, যাতে করে বাৎসরিকভিত্তিতে মনিটরিং করতে সুবিধা হয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ‘শক্ত ব্যবস্থা’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে উনি (প্রধানমন্ত্রী) নজরদারি করতে বলেছেন। নজরদারির ক্ষেত্রে উনি একটা সুনির্দিষ্ট এরিয়ার কথা বলেছেন যে, অনেক সময় আমাদের দ্রব্যমূল্যের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্যায়ে চাঁদাবাজির প্রসঙ্গ আসে, নিউজ আসে। এটির ক্ষেত্রে উনি সংশ্লিষ্ট সকলেকে খুবই শক্তভাবে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন যেন এটি কোথাও না হয়।
আইনশৃঙ্খলার ক্ষেত্রে একটি বিষয়ের দিকে নজর দিতে বলেছেন। বিশেষ করে ছিনতাই, কিশোরগ্যাং বা এ রকম যে সব অপরাধ হচ্ছে সেক্ষেত্রে স্থানীয় পর্যায়ে কমিটি গঠন করে নজর দিতে বলেছেন।
প্রধানমন্ত্রী জিজ্ঞেস করবেন- প্রকল্পে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হচ্ছে কি না?
প্রধানমন্ত্রী প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে খুবই সতর্কতা ও বাছাইয়ের কথা বলেছেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যে প্রকল্পগুলো জনগণের কল্যাণে ব্যবহৃত হবে, জনগণ উপকার পাবে সেদিকে উনি মনোযোগ দিতে বলেছেন। উনি বলেছেন যে উনার মূল লক্ষ্য হলো জনমানুষের অবস্থার উন্নতি। এরকম নয় যে মানুষকে দেখানো। জনমানুষের কল্যাণ হচ্ছে কি না, তাদের ভাগ্য পরিবর্তন হচ্ছে কি না- এটি উনি জিজ্ঞাসা করবেন প্রকল্প উপস্থাপনের সময়, জানতে চাইবেন যে কীভাবে এটি জনগণকে বেনিফিট দেবে। সেভাবে যেন প্রকল্পগুলো বাছাই করি। চলমান যে প্রকল্পগুলো আছে সেগুলো তিনি দ্রুত শেষ করার নির্দেশা দিয়েছেন।
মূদ্রাস্ফীতি নিয়ে নির্দেশনা
উনি মূদ্রাস্ফীতির কথা বলেছেন। মূদ্রাস্ফীতি আমাদের জিডিবি গ্রথের নিচে থাকতে হবে। সেটি করার জন্য উনি কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
আয়করের আওতা বাড়ানোর নির্দেশ
একটা বড় নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, উনি বলেছেন যে এখনও বিরাট সংখ্যক ব্যক্তি যাদের আয়কর দেওয়ার কথা তারা আয়করের আওতায় আসেনি। তাদের যেন আয়করের আওতায় আনা হয় সেজন্য জোরালো নির্দেশ দিয়েছেন।
বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হলে ‘ভালোভাবে নেবেন না’
বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য পদক্ষেপ নিতে বলেছেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অহেতুক যেন তারা হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে নজর রাখতে বলেছেন। বিনিয়োগ আসতে কোনো জটিলতা হলে তার নজরে যেন নেওয়া হয়। উনি ভালো চোখে দেখবেন না কোনো কারণে যদি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হয়, উনি ভালোভাবে নেবেন না।
পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি হলে শক্ত ব্যবস্থা
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে উনি (প্রধানমন্ত্রী) নজরদারি করতে বলেছেন। নজরদারির ক্ষেত্রে উনি একটা সুনির্দিষ্ট এরিয়ার কথা বলেছেন যে, অনেক সময় আমাদের দ্রব্যমূল্যের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্যায়ে চাঁদাবাজির প্রসঙ্গ আসে, নিউজ আসে। এটির ক্ষেত্রে উনি সংশ্লিষ্ট সকলেকে খুবই শক্তভাবে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন যে এটি যেন কোথাও না হয়।
সরকারি অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে মিতব্যয়ী হওয়ার নির্দেশ
সরকারি অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে মিতব্যয়ী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অহেতুক যেন আমরা ব্যয় না করি। প্রত্যেক অর্থের পিছনে যেন ভেলু পাই।
কৃষিজাত পণ্যের রপ্তানি সুবিধা
আমরা গার্মেন্টেসের ক্ষেত্রে যে সুযোগ-সুবিধা পাই কৃষিজাত পণ্য, চামড়া এবং পাটজাত পণ্যে একই রকম সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য নির্দেশনরা দিয়েছেন এবং কাজ করতে বলেছেন। গার্মেন্টেসের ক্ষেত্রে একটা বড় অংশ আমদানি করতে হয়। একটা বড় অংশ চলে যায় আমদানির ক্ষেত্রে। এই তিন পণ্যে আমাদের স্থানীয়ভাবে কাঁচামাল আছে। সুতরাং এখানে ভেলু অ্যাড অনেক বেশি হবে।
নতুন বাজার
রপ্তানি বাজারের ক্ষেত্রে নতুন বাজার খুঁজতে হবে। মধ্যপ্রাচ্য, পূর্ব ইউরোপ, পূর্ব এশিয়া এবং আফ্রিকায় যেন বাজার খুঁজি, বিশেষ করে ওষুধ, পোশাক, খাদ্য, কৃষিজাত পণ্য, পাটজাতপণ্যের। এক্ষেত্রে সহযোগিতার প্রয়োজন হলে যেন সহায়তা দেওয়া হয়। খাদ্য উৎপাদনে নজর দিতে বলেছেন।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ব্যবহারের সাশ্রয়ী হতে হবে
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য বলেছেন। বিশেষ করে সেচ মৌসুমে সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে বলেছেন। কোনোভাবে যেন সেচ মৌসুম বাধাগ্রস্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে বলেছেন। সেচের ক্ষেত্রে সোলার এনার্জি ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছেন। ব্লু-ইকোনমির জন্য সামুদ্রিক যে ব্লক আছে সেখানে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য বলেছেন।
কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্ব
কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়েছেন। এখন যে প্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি হয়েছে সেগুলোর যেন সর্বোচ্চ ব্যবহার হয়, কোয়ালিটি প্রশিক্ষণ হয়। সার্ভিস সেক্টরে প্রশিক্ষণের জন্য বিশেষ নজর দিতে বলেছেন। আমাদের যে পর্যটন আছে শুধু বাংলাদেশে না, সারা বিশ্বেই প্রশিক্ষিত জনবল দরকার। সেজন্য উনি বিশেষ উদ্যোগ নিতে বলেছেন।
উন্নয়নের যেন ধারাবাহিকতা থাকে
ইতোমধ্যে উনি যে উন্নয়ন করেছেন সেটির যেন ধারাবাহিকতা থাকে। সাসটেইন থাকে। এটির দিকে খেয়াল রেখে নতুন প্রকল্প বা কার্যক্রম নিতে বলেছেন। ইতোমধ্যে যেগুলো করেছেন সেগুলো যেন হারিয়ে না যায়।
শূন্য পদ পূরণ ও পদোন্নতি
শূন্য পদ পূরণের জন্য উদ্যোগ নিতে বলেছেন এবং সময়মতো পদোন্নতির জন্য বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। আশ্রয়ণ প্রকল্পে যারা আছেন প্রয়োজনে তাদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিশেষ উদ্যোগ নিতে বলেছেন।
তিন ফসলি জমি যেন নষ্ট না হয়
প্রধানমন্ত্রী খাদ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থা উন্নত রাখার জন্য বলেছেন। এখন যে ক্যাপাসিটি আছে তা বৃদ্ধির জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। খাদ্য সংরক্ষণ ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পের ক্ষেত্রেও সুবিধা দেওয়ার জন্য বলেছেন। তিন ফসলি জমি যেন কোনো অবস্থাতেই নষ্ট না হয়। সেখানে কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করা যাবে না।
জলাধার ভরাট নয়
জলাধার ভরাট করা যাবে না। জলাধার অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে। কোনো অস্থাতেই নদীর ধারাবাহিকতা বা প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। সেচের ক্ষেত্রে ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহারের জন্য বলা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন শুধু দুদকের দায়িত্ব নয়
দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। দুর্নীতির ব্যাপারে জিরো টলারেন্সের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। এও বলেছেন যে দুর্নীতি দমনের দায়িত্ব শুধু দুদকের নয়। প্রত্যেক মন্ত্রণালয় ও সচিবদেরও দায়িত্ব আছে দুর্নীতি নিরসন, লাঘব করার জন্য যে সার্ভিস পয়েন্ট আছে সেখানে নজরদারির জন্য। যে প্রক্রিয়া নেওয়া যায় সে প্রক্রিয়া নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
নতুন শিক্ষাক্রমে ভুলভ্রান্তি থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা
নতুন পাঠ্যক্রমের বিষয়ে কিছু বলা হয়েছে কি না- প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নতুন যে শিক্ষাক্রম নেওয়া হয়েছে তা প্রচলিত শিক্ষাক্রম নয়। তা থেকে ভিন্ন একটা। এই বাস্তবতা আমাদেরকে মানতে হবে। আমরা যারা বিশেষজ্ঞ তারা প্রচলিত পাঠ্যক্রমে শিক্ষা পেয়েছি। নতুন যে পাঠ্যক্রম রচনা করতে হবে সে ব্যাপারে প্রশিক্ষত লোক খুব বেশি আছে তা কিন্তু নয়। যারা আছেন, তাদের কাজ হচ্ছে- উনি বলেছেন, যদি কোনো ভুল ভ্রান্তি, যদি কোনো তথ্যগত বা কোনো একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় তাহলে দ্রুত যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়। উনি বলেছেন, কোনো বিলম্ব হবে না। কোনো গ্যাপ তৈরি হলে যেন যথাযথভাবে পর্যালোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে বলেছেন।
১৬টি আইন অগ্রাধিকার
উনি নির্দেশনা দিয়েছেন, গত সংসদে যে আইন পাস হয়নি সেগুলো দ্রুত মন্ত্রিসভায় এনে যেন সংসদে পাঠাই। সামরিক আমলে ১৬৬টি আইনের বিকল্প আইন করার জন্য উচ্চ আদালত থেকে বলা হয়েছিল, সেখানে ১৬টি আইন বাকি আছে। এ ব্যাপারে অগ্রাধিকার দিয়ে যেন কাজ করি সে নির্দেশনা দিয়েছেন।
অনলাইন ডেস্ক :
এবারের ঈদে লম্বা ছুটি থাকায় অধিকসংখ্যক মানুষ বাড়ি যাচ্ছেন। অনেকে বাসের অপেক্ষায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকছেন। তবে ঘরমুখো মানুষেরা নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছানো পর্যন্ত পুলিশ সদস্যরা সড়কে থাকবেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিচালক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। আজ ১৪ জুন শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে মহাসড়ক পরিদর্শন শেষে বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ প্রধান বলেন, হাইওয়ে পুলিশ, নৌ-পুলিশ, রেল পুলিশ, জেলা পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনী একসঙ্গে সমন্বয় করে মাঠে কাজ করছে। কোথাও কোনো সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে আমাদের টিম পৌঁছে যাচ্ছে। যাত্রীদের নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাতে পুরো সড়ক জুড়ে পুলিশের সদস্যরা রয়েছেন। এছাড়া গরুর হাটের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ কাজ করছে। যদি কোথাও কোনো সমস্যা হয় আমাদের জানালে আমাদের টিম দ্রুত সময়ে পৌঁছে যাবে।
পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই সময়ে কাগজপত্র যাচাইয়ের নামে কোনো ট্রাককে মহাসড়কের ওপর দাঁড় করানো যাবে না। সুবিধাজনক স্থানে দাঁড় করিয়ে যাচাই করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এই সময়ে বড় ধরনের টাকা-পয়সা লেনদেনের সময় আমাদের জানালে আমরা সহযোগিতা করব। ঈদের ছুটিতে অনেক বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে যাবেন সেখানেও টুরিস্ট পুলিশ আছে। যেকোনো সমস্যার সমাধানের জন্য তারা প্রস্তুত আছে। কোনো ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে ৯৯৯ যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। আমাদের প্রতিটি পুলিশ সদস্য মানুষকে সেবা দিয়ে উৎসব পালন করেন। তাই আমাদের উৎসব হচ্ছে- দেশের মানুষকে নিরাপত্তা দিতে পারা।
তিনি ট্রাকে করে ঘরে ফেরা মানুষের বিষয়ে বলেন, অনেকেই বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে ট্রাকে করে ঘরে ফিরছেন। তাদের সতর্ক হয়ে নিরাপদে ঘরে ফেরার আহ্বান জানাই। অনেকেই অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়েই যাত্রা করছেন। তারা যেন সতর্ক থাকেন।
যেসব পুলিশ সদস্যরা ট্রাক থামিয়ে চাঁদা নিয়েছেন, তাদের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিচ্ছি। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধন পেয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। উচ্চ আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে জোনায়েদ সাকির নেতৃত্বাধীন এই দলটিকে আজ ১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার নিবন্ধন দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ইসি সচিবালয়।
গণসংহতি আন্দোলনের নিবন্ধন নম্বর ৫৩। দলীয় প্রতীক ‘মাথাল’। নির্বাচন কমিশনের সচিব শফিউল আজিম ১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার গণসংহতি আন্দোলনের একটি প্রতিনিধি দলের কাছে দলটির নিবন্ধন সনদ হস্তান্তর করেন।
শফিউল আজিম স্বাক্ষরিত নিবন্ধন-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রায় ও আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গণসংহতি আন্দোলনকে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন করেছে।
জানা গেছে, রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন চেয়ে ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করে গণসংহতি আন্দোলন। তবে তখন ইসি নিবন্ধন দেয়নি। এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করা হয়। গত ১০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে নির্বাচন কমিশনের করা আবেদন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। একই দিনে দলটির বিষয়ে কারও কোনো দাবি আপত্তি রয়েছে কি না, সে জন্য ৬ দিনের সময় দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব। আজ গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিল ইসি।
অনলাইন ডেস্ক :
কুমিল্লায় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত এখন টিভির সাংবাদিক মাসুমা ইসলামের মৃত্যু হয়েছে। আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি রাজশাহী ব্যুরোতে রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
জানা যায়, মাসুমার গ্রামের বাড়ি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নারায়নপুরে। ১৪ ফেব্রুয়ারি স্বামীসহ কুমিল্লায় শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসেন। এ সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নূরজাহান হোটেলের উল্টোদিকে বাস থেকে নেমে সিএনজি অটো রিকশা ঠিক করার সময় একটি বাস তাদের ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে সিএনজি অটো রিকশা চালক, মাসুমা আক্তার ও তার স্বামী গুরুতর আহত হন। প্রথমে তাকে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিক্যালে প্রেরণ করা হয়। সেখান থেকে তাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার ভোরে তিনি মারা যান।
এখন টিভির রাজশাহী ব্যুরো প্রধান রাকিবুল হাসান রাজিব জানান, মাসুমার মরদেহ রাজধানীর বাবর রোডে মারকাজুল ইসলামে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে গোসল শেষে প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মরদেহ নাটোরের গুরুদাসপুরে নিয়ে যাওয়া হবে।
পরিবারের বরাত দিয়ে তিনি আরো জানান, সেখানে পারিবারিক গোরস্থানে তার দাফন হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
রিদপুরের আলফাডাঙ্গায় পাট কাটতে গিয়ে সাপের কামড়ে মো. ওয়াজ কুরুনী (২০) নামে এক কলেজছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
আজ ১৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার ভোররাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ওয়াজ কুরুনী উপজেলার বানা ইউনিয়নের রুদ্রবানা গ্রামের নেপুর মোল্যার ছেলে ও আলফাডাঙ্গা সরকারি ডিগ্রি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
এলাকা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বানা ইউনিয়নের রুদ্রবানা গ্রামের নেপুর মোল্যার ছেলে ওয়াজ কুরুনী ১৬ আগস্ট বুধবার দুপুরে বাড়ির পাশের বিলে পাট কাটছিলেন। এ সময় একটি বিষাক্ত সাপ তাকে কামড় দেয়। এতে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন তাকে আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে সেখান থেকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে মৃত ঘোষণা করেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করে সংশিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. বাবার আলী জানান, ওয়েজ কুরুনীকে সাপে কাটলে আলফাডাঙ্গা হাসপাতালে নিলে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীণ অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
অপরদিকে, ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের ভাবখন্ড গ্রামে সাপের কামড়ে বর্ষন মহন্ত (১১) নামের এক কিশোর মারা গেছে। ওই কিশোর ভাবখন্ড গ্রামের দেবাশীষ মহন্তের ছেলে। বৃহস্পতিবার তার লাশ দাহ করা হয়েছে।
এলাকাবাসি সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুরে ওই কিশোরের বসতঘরের ভিতর মাটির গর্তের ভিতরে পা গেলে বিষধর সাপে কামড় দেয়। পরে তাকে পাশের আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ কমপ্রেক্সে নিয়ে গেলে হাসপাতালে সাপের বিষের ওষুধ না থাকায় তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার বর্ষনের মরদেহ স্থানীয় শ্মশানে দাহ করা হয়েছে।