চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ফল বিপর্যয়ের কারণ নির্ণয় এবং শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের আয়োজনে আজ ৩ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপজেলার ১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৭টি দাখিল মাদ্রাসা এবং ১টি টেক্সটাইল ভোকেশনাল স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, সদস্য, প্রধান শিক্ষক, বিষয় ভিত্তিক শিক্ষকসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন সফিক আলেয়া।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আবুল হোসেন। এসময় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকরা ফলাফল খারাপ হওয়ার জন্য দু:খ প্রকাশ করেন। ভবিষ্যতে ফলাফল ভালো করার প্রতিশ্রম্নতি ব্যক্ত করেন।
বক্তারা, ফলাফল খারাপ হওয়ার জন্য প্রথমত ম্যানেজিং কমিটির তদারকির অভাব এবং প্রধান শিক্ষকের লিডারশীপের ব্যর্থতাকে চিহ্নিত করেছেন। এছাড়া বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক সংকট, ছাত্র, শিক্ষক—অভিাবকের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব, শিক্ষার্থীদের অমনোযোগিতা এবং পাঠদানে শিক্ষকদের আন্তরিকতার অভাব বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
সভায় ফলাফল ভালো করার জন্য বেশ কিছু প্রস্তাবনা উত্থাপন করা হয়। এরমধ্যে, ম্যানেজিং কমিটির তদারকি বৃদ্ধি, প্রধান শিক্ষককে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করা, শিক্ষকদের পাঠদানে আন্তরিকতা, অভিভাবক সমাবেশ, বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের সর্বোচ্চ উপস্থিতি নিশ্চিত করা, এসএসসি টেস্ট পরীক্ষায় ফেল ছাত্রছাত্রীদের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের সুযোগ না দেওয়া ইত্যাদি।
জানা যায়, এবছর আখাউড়া উপজেলার ১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১ হাজার ৭১৭ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েছে ৯৬৭জন। শতকরা গড় পাসের হার ৫৬.৩২। জিপিএ—৫ পেয়েছে ৪০ জন। উপজেলার ৭টি আলিয়া মাদ্রাসা থেকে ২৫৮ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ১৮৮জন। শতকরা পাসের হার ৭২.৮৭। জিপিএ—৫ পেয়েছে ৩ জন।
কয়েকটি স্কুলের ফলাফল খুবই খারাপ হয়েছে। এরমধ্যে দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৩২ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ৭২ জন। গড় পাসের হার ৫৪.৫৫। জিপিএ—৫ পেয়েছে মাত্র ২ জন। শাহপীর কল্লা শহীদ উচ্চ বিদ্যালয়ের গড় পাসের হার ৪১.৯৪। মনিয়ন্দ উচ্চ বিদ্যালয় ২৭.২৭%, ছয়গড়িয়া শাহ আলম উচ্চ বিদ্যালয় ১৯.৫০%, নুরপুর রুটি উচ্চ বিদ্যালয় ৪০.০০% । ভাটামাথা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাসের হার ২৮%।
মোহাম্দ ইসলাম হোসাইন, আখাউড়া থেকে :
আখাউড়া পৌরসভায় নতুন করে হাটবাজার ইজারাসহ শহরের যানজট ও অপরিচ্ছন্নতা নিরসনে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। দুপুরে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় কালে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজালা পারভীন রুহি এসব তথ্য জানান।
৩ ফেব্রুয়ারি সোমবার দুপুর ১২টায় পৌর সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় পৌরসভার নতুন বাজারহাট ইজারা দেয়াসহ পৌর শহরের যানজট ও অপরিচ্ছন্নতা নিরসনে সাংবাদিকদের নিকট পরামর্শ চেয়েছেন পৌর প্রশাসক। সভায় যানজট নিরশনে ব্যাটারি ও সিএনজি চালিত অটোরিক্সার যত্রতত্র চলাচল নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা গ্রহনে কথা বলা হয়। রাস্তার উপর যেখানে সেখানে দোকান পাট, বাইক ও অটোরিক্সা পার্কিং নিয়ন্ত্রণে নির্ধারিত স্থান ব্যবহারের উপরও গুরুত্ব দেয়া হয়। শহরের বিভিন্ন এলাকা, পাড়া, মহল্লার রিকশা ভাড়া নির্ধারন করার বিষয়েও আলোচনা হয়।
পৌরশহরের বর্জ ব্যবস্থাপনাকে আরো উন্নত করার কথা বলা হয়। প্রয়োজনে বাড়ি বাড়ি বর্জ সংগ্রহ কার্যক্রম করার প্রস্তাব দেয়া হয়। বর্জ ব্যবস্থাপনাকে সুশৃঙ্খল পর্যায়ে নিয়ে আসতে পারলে একটি স্বাস্থ্যকর, সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন শহর হিসাবে গড়ে তুলা সম্ভব বলে অনেকেই মত প্রকাশ করেন। জনগণের জন্য সহনশীল রেখে পৌর শহরের বাজারহাট ইজারা দেয়ার কথা বলা হয়। শহরের বড় বাজারে সরকারী বাজার থাকা সত্যেও সড়ক বাজার এলাকায় অবস্থিত রেলওয়ের ভুমিতে ভাড়া দিয়ে বাজার পরিচালনার বিষয়টিও সভায় উপস্থাপন করা হয়।
মতবিনিময় সভায় পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী তানভীর হোসেন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফয়সাল, আখাউড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নুরুন্নবী ভুইয়া, টেলিভিশন জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মো: সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র সাংবাদিক নাছির উদ্দিন, জুটন বনিক, আখাউড়া প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল হোসেন মামুন, মোহাম্দ ইসলাম হোসাইন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত আরো একজনের পরিচয় মিলেছে। নিহত ব্যক্তি হলেন নোয়াখালি জেলার দক্ষিণ হাতিয়ার পূর্ব সোনাদিয়া গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার ছেলে কামাল উদ্দিন হৃদয় (৪০)। তার ৩ বছর বয়সের ১টি ছেলে এবং ৬ বছরের ১টি মেয়ে সন্তান রয়েছে।
তিনি ফলের ব্যবসা করতেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি ভিডিও কল করে স্ত্রী সন্তানের সাথে কথা বলেছিলেন এবং মাজারের দৃশ্য দেখান। সন্ধ্যা এক মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান এই মাজার ভক্ত। নিহতের শশুর জাবের হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ নিয়ে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ৪ জনেরই পরিচয় পাওয়া গেলো। ১০ আগষ্ট বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আখাউড়া খড়মপুর কল্লা শহীদ (র.) মাজার শরীফের ওরসে মাজারের পশ্চিমে রেলপথে আন্ত:নগর পারাবাত এক্সপ্রেস ট্রেনের থাক্কায় নদীতে পড়ে ৪ জনের মৃত্যু হয়। ৪টি মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের কমীর্রা।
আখাউড়া থানার সাব ইন্সপেক্টর আবীর আহমেদ বলেন, নিহত ব্যক্তির মোবাইলের নম্বর থেকে কল দিয়ে নিহতের পরিবারের লোকজনকে ছবি পাঠালে তারা পরিচয় নিশ্চিত করে। পরে পিবিআই নিহতের ফ্রিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে এনআইডির তথ্য বের করে। তাদের দেওয়া তথ্যের সাথে এনআইডি কার্ডের নাম, বয়স ও বাবার নাম মিল আছে। তবে ঠিকানা কুমিল্লা লিখা। আমরা তাদেরকে লাশ নেওয়ার জন্য শুক্রবার রাতের ট্রেনে থানায় আসতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা না আসায় অজ্ঞাতানামা হিসেবে মরদেহটি আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামকে দেওয়ার জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নিহত কামাল উদ্দিন হৃদয়ের শশুর জাবের আহমেদ বলেন, আমার জামাতা চট্টগ্রামে ফলের ব্যবসা করতো। সে মাজারের ভক্ত ছিল। প্রতি বছরই ওরশের সময় মাজারে যেত। ওই দিন দুপুরে ভিডিও কল করে আমাদের সাথে বলে। মাজার এলাকার দৃশ্য দেখায়। মাগরিবের সময় ফোন করে বলেছিল ভিডিও কল করতে কিন্তু মোবাইলে চার্জ ছিল না। পরে ফোন চার্জ দিয়ে কল দিয়ে তার মোবাইলটি বন্ধ পাই। তারপর অনেকবার ফোন করেও ফোন সচল পাইনি। পরদিন শুক্রবার দুপুরে আখাউড়া থানা থেকে আমাদেরকে ফোন করে। পরে ছবি পাঠালে আমরা সনাক্ত করি। আমাদেরকে বলেছিল ৪/৫ ঘন্টার মধ্যে যাওয়ার জন্য। কিন্তু এত কম সময়ের মধ্যে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে এ ঘটনায় ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় মাধ্যমিক ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণে ‘বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আখাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের আয়োজনে ২৪ মার্চ রবিবার বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনসহ তিনটি কক্ষে ঘন্টাব্যাপী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ৭৮ ছাত্রছাত্রী ৩টি গ্রুপে ৫টি বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নেয়। বিষয়গুলো হলো ভাষা ও সাহিত্য দৈনন্দিন বিজ্ঞান, গণিত ও কম্পিউটার, বাংলাদেশ স্ট্যাডিজ ও মুক্তিযুদ্ধ। পরীক্ষার মোট নম্বর ছিল ৫০।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ পরীক্ষার সদস্য সচিব মোঃ আবুল হোসেন বলেন, উপজেলার ১৬টি স্কুল থেকে মেধাবী শিক্ষার্থীরা এ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।
১৫জন সেরা ছাত্রকে নগদ অর্থ উপহার ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে। পরবর্তীতে এসব শিক্ষার্থীরা জেলা পর্যায়ে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবে। মুলত সারা দেশ থেকে সেরা মেধাবী ছাত্রছাত্রী খুঁজে বের করতেই এ পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে।
মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, আখাউড়া থেকে :
লিচু গাছ থেকে পড়ে মো. জাকির হোসেন (৩২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। আজ ১৬ মে শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত জাকির হোসেন ওই গ্রামের মৃত হাজী শিরু মোল্লার ছেলে।
জানা গেছে, দুপুরে জাকির নিজের লিচু গাছে উঠে লিচু পারছিলেন। হঠাৎ গাছের ডাল ভেঙ্গে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. নুসরাত জাহান তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের বড় ভাই মনির মোল্লা বলেন, হঠাৎ কান্নাকাটির শব্দ শুনে ঘর থেকে বের হয়ে দেখি সে গাছের ডাল ভেঙে নিচে পড়ে গেছে।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ছমিউদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। প্রাথমিকভাবে এটি একটি দুর্ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে। তবে নিহতের পরিবারের কোনো অভিযোগ থাকলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া উপজেলাতে বন্যায় ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন ৩০ পরিবার পেয়েছেন আর্থিক সহায়তা।
আজ ২৭ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে আখাউড়া ফ্রেন্ডস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে ৩০টি পরিবারের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। এছাড়া বন্যায় মারা যাওয়া সুবর্ণ আক্তারের স্বামীকেও সম পরিমাণ টাকা দেওয়া হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজালা পারভীন রুহি।
এসময় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাপস কুমার চক্রবর্তী, কালের কণ্ঠের সাংবাদিক বিশ্বজিৎ পাল বাবু, আয়োজকদের পক্ষে সুজন চৌধুরী, মো. মাসুম, শিক্ষার্থী আসিফ খান, ফখরুল হাসান সরকার প্রমুখ।
আয়োজকরা জানান, বন্ধুদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে তারা এই টাকা বিতরণ করেছেন। বন্যার্তদের পাশে থাকতে পেরে তারা খুবই খুশি। সহায়তা পাওয়া বঙ্গেরচর গ্রামের আয়েশা আক্তার বলেন, বন্যায় আমার মাটির ঘরের ক্ষতি হয়। পানি কমলেও ভয়ে ঘরে উঠতে পারছি না। এই সহায়তার টাকা ঘর মেরামতের কাজে লাগাবো।