চলারপথে রিপোর্ট :
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে কুয়েতপ্রবাসীর বাসায় ঢুকে স্বর্ণালংকারসহ প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মালামাল লুটে নিয়ে গেছে একদল ‘ডাকাত’। এ সময় ফ্রিজে থাকা গরুর মাংসও নিয়ে গেছে তারা। আজ ৪ আগস্ট শুক্রবার বিকেলে ভুক্তভোগী কুয়েতপ্রবাসী ফারুক হোসেন ঘটনাটি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
এর আগে শুক্রবার ভোরে উপজেলার করপাড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আনন্দীপুর গ্রামে এ ডাকাতির ঘটনাটি ঘটে।
তবে এ ঘটনায় কোনো আহতের ঘটনা ঘটেনি।
ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমরা ৪ ভাই। আমিসহ ৩ জন কুয়েতপ্রবাসী। আমাদের ৪ ভাইয়ের পরিবারই ঢাকায় থাকে।
রামগঞ্জের বাড়িতে আমার বাবা আলী আহম্মদ ও মা হোসনেয়ারা বেগম থাকেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘ঘটনার সময় ডাকাতদল একতলা ভবনের ছাদে ওঠে। একপর্যায়ে সিঁড়ির রুমের টিনের চালা খুলে তাদের কেউ একজন ভেতরে প্রবেশ করে। পরে সিঁড়ির রুমের দরজা খুলে তারা বাসায় ঢুকে তার বাবা-মাকে চেতনানাশক স্প্রে ছিটিয়ে অচেতন করে রাখে।
পরে আলমারিতে থাকা এক লাখ ৪৪ হাজার টাকা ও আড়াই ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। এ সময় বাসায় থাকা কম্বলসহ বিভিন্ন মালামাল ও ফ্রিজে থাকা মাছ-মাংসও নিয়ে গেছে ডাকাতদল।’
করপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ মির্জা বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে কথা বলেছি। ঘটনাটি থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।’
রামগঞ্জ থানার ওসি এমদাদুল হক বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
এটি ডাকাতি নয়, চুরির ঘটনা। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীদের থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অনলাইন ডেস্ক :
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নিম্নচাপের পর গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এজন্য দেশের চারটি সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আজ ১৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-৪) এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এতে বলা হয়, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।
গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
‘গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।’
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চল ছাড়াও মধ্যাঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ব্রিকসকে বহুমুখী বিশ্বের বাতিঘর হিসেবে আবির্ভূত হতে হবে। আমাদের এই বহুমুখী বিশ্বে ব্রিকসকে একটি বাতিঘর হিসাবে প্রয়োজন। আমরা আশা করি আমাদের প্রতি প্রতিক্রিয়ার সময় এটি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আবির্ভূত হবে। আমাদের শিশু ও যুবকদের কাছে অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে আমাদের জাতিগুলো সংকটে পড়তে পারে, কিন্তু কখনই পরাজিত হবে না।
জোহানেসবার্গের স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টারে ৭০টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে ফ্রেন্ডস অব ব্রিকস লিডারস ডায়ালগ ‘নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অব ব্রিকস’-এর সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে ভাষণ প্রদানকালে তিনি একথা বলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসাও এ সংলাপে বক্তব্য রাখেন।
ব্রিকস প্লাস ডায়ালগের ফাঁকে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসি ও ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীর সাথে কুশল বিনিময় করেন। জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস, উগান্ডার ভাইস-প্রেসিডেন্ট, দক্ষিণ আফ্রিকার উপ-প্রধানমন্ত্রী, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুশল বিনিময় করেন।
গ্লোবাল সাউথ-এ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া তথাকথিত পছন্দ ও বিভাজনকে ‘না’ বলা উচিত। সার্বজনীন নিয়ম ও মূল্যবোধকে অস্ত্রে পরিণত করার প্রচেষ্টাকে আমাদের অবশ্যই প্রত্যাখ্যান করতে হবে। আমাদের নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার চক্র বন্ধ করতে হবে। আমাদের সব ধরনের হুমকি, উসকানি ও যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, আমি বিপজ্জনক অস্ত্র প্রতিযোগিতা থেকে পিছিয়ে এসে বিশ্বব্যাপী জনগণের প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর প্রতি মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে শান্তি, ন্যায়বিচার ও স্থিতিশীলতার জন্য আমাদের দায়িত্ব নিতে হবে। সকলকে একসাথে অবশ্যই আন্তর্জাতিক অর্থায়ন ও প্রযুক্তির জন্য প্রত্যেকের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে এবং জলবায়ু, ন্যায়বিচার, অভিবাসীদের অধিকার, ডিজিটাল ইক্যুইটি এবং ঋণ স্থায়িত্বের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান ব্রিকস চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ২২ আগস্ট জোহানেসবার্গে পৌঁছেছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকা ব্রিকস দেশগুলোর ঐতিহাসিক ১৫তম শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করেছে।
এর সদস্য দেশগুলো হচ্ছে- ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সূত্র : বাসস
অনলাইন ডেস্ক :
আজ পহেলা বৈশাখ। পাহাড় থেকে সমতল। মেঠোপথ থেকে রাজপথ। নববর্ষের আনন্দে ভাসছে সারা দেশ। আজকের দিনটি শুধুই বাঙালির। এই দিনে সে তার অস্তিত্বের জানান দেয় প্রাণে প্রাণে, উৎসবে। বিশ্বকে বলে দেয়-আমি বাংলাদেশি, আমি বাঙালি; আমার আছে গর্বের ইতিহাস। সংকল্প জানায় এক নতুন আগামীর; অতীত বেদনাকে ভুলে প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাওয়ার। এ জাতির সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব পহেলা বৈশাখ। বিগত বছরের জরাকে দূরে ঠেলে আজ বাংলাভাষীদের স্বপ্ন দেখার দিন, নতুন আলোয় অবগাহনের দিন, আনন্দে মেতে উঠারও দিন। হাজার বছরের ঐতিহ্যের বহমানতায় বাংলাদেশের ঘরে ঘরে আজ উৎসবের আমেজ। এ দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদের জাঁতাকলে পিষ্ট হয়েছে প্রায় ১৬ বছর। এ সময়ে আনন্দ, উচ্ছ্বাস আর ভাবের প্রকাশ করতে হয়েছে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত এক পরিবেশে। ফ্যাসিবাদী সরকারের মর্জিমতো। বাঁধভাঙা উল্লাসে সবাই তখন ভাসতে পারেনি। সেই ফ্যাসিবাদের নাগপাশ কাটিয়ে এ বছর এক মুক্ত আবহে, মুক্ত বাতাসে বাঙালির জীবনে এসেছে পহেলা বৈশাখ।
আর তাই বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন করতে আজ লাখো মানুষ ঘরের বাইরে ছুটবে। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে মানুষ পহেলা বৈশাখ উদযাপন করবে। বঙ্গাব্দ ১৪৩১-এর আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্নার হিসাব চুকিয়ে নতুন পথচলা শুরু হবে। জাতিধর্ম নির্বিশেষে সর্বজনীন উৎসবে নববর্ষ উদযাপনে একসঙ্গে গাইবে ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো।’ বাংলার গ্রাম, শহর-বন্দর, পথঘাট সব জায়গায় দোলা দেবে পহেলা বৈশাখ।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
সম্প্রতি সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানিয়েছিলেন, এবার পহেলা বৈশাখের আয়োজন হবে সর্বজনীন। আর তাই এবার পহেলা বৈশাখের আয়োজনও দুই দিন, যার শুরুটা হয় গতকাল চৈত্রসংক্রান্তিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কনসার্টসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে। বারোটি জেলায় চৈত্রসংক্রান্তি ও বৈশাখী সাধুমেলার আয়োজন শুরু হয়েছে শনিবার থেকে।
এবারের পহেলা বৈশাখের অন্যতম আকর্ষণ ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। শোভাযাত্রাটির আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা। এবার শোভাযাত্রা হবে অনেক অন্তর্ভুক্তিমূলক। ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’য় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় প্রথমবারের মতো ২৮টি জাতিগোষ্ঠীর ৪৯৪ জন শিল্পী বর্ণিল সাজে সজ্জিত হয়ে অংশগ্রহণ করবেন। অংশগ্রহণকারী জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে-বাঙালি, চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, লুসাই, পাংখোয়া, বম, ম্রো, রাখাইন, খিয়াং, বানাই, সাঁওতাল, ওঁরাও, তুরী, মাহালি, মালপাহাড়িয়া, কোল, মাহাতো, মণিপুরী, খাসিয়া, চা-জনগোষ্ঠী, গারো, হাজং, কোচ ও মালো।
এছাড়াও শোভাযাত্রায় দুই শতাধিক ব্যান্ড শিল্পী অংশগ্রহণ করবেন এবং পৃথিবীর শান্তি কামনায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে সম্মিলিতভাবে গাইবেন গান ‘ফ্রম দ্য রিভার টু সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’ গানটি।
রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক ঐক্যের বার্তা দেওয়া হবে শোভাযাত্রা থেকে।
আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজনে থাকবে বড় মোটিফ, মাঝারি মোটিফ, ছোট মোটিফ। এর মধ্যে বড় মোটিফ থাকবে ৬টি। সবার সামনে থাকবে ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’। শোভাযাত্রায় বড় মোটিফের মধ্যে থাকবে কাঠের বাঘ, ইলিশ, ৩৬ জুলাই (টাইপোগ্রাফি), পালকি, জুলাই আন্দোলনে নিহত মুগ্ধের পানির বোতল।
এছাড়া অন্যান্য মোটিফের মধ্যে থাকবে ১০টি সুলতানি ও মোগল আমলের মুখোশ, ৮০টি ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি, ২০টি রঙিন চরকি, ২০০টি বাঘের মাথা, ৮টি তালপাতার সেপাই, পলো ১০টি, ৫টি তুহিন পাখি, ৬টি মাছের চাঁই, ৪টি পাখা, ২০টি মাথাল, ২০টি ঘোড়া, ৫টি লাঙল, ৫টি মাছের ডোলা এবং ১০০ ফুট লোকজ চিত্রাবলীর ক্যানভাস ১০০ ফুট থাকবে।
চারুকলা অনুষদ থেকে সকাল ৯টায় বের হবে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। এ সময় শাহবাগ এবং টিএসসির মেট্রোরেল স্টেশনে ট্রেন থামবে না, তবে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদ থেকে শাহবাগ হয়ে টিএসসি, শহিদ মিনার, দোয়েল চত্বর হয়ে চারুকলা অনুষদ পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করবে। এবারের শোভাযাত্রায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সামনে না থেকে দুই পাশে হাঁটবেন। নিরাপত্তা নিয়ে কোনো রকম শঙ্কাও নেই বলে জানানো হয়েছে ইতোমধ্যে। তবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিকাল ৫টার পর প্রবেশ করা যাবে না। নগরীর অন্যান্য স্থানে বর্ষবরণের আয়োজন সন্ধ্যার পরও থাকবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিকাল ৫টার মধ্যেই আয়োজন শেষ করা হবে।
বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে রাজধানীতে আয়োজন করা হয়েছে ব্যতিক্রমধর্মী ড্রোন শো ও কনসার্ট। সোমবার বিকাল ৫টায় ড্রোন শো দেখানো হবে। এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। শুক্রবার সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ড্রোন শো উপভোগের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ঢাকাবাসীকে। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে এই আমন্ত্রণ জানান তিনি। ফারুকী লিখেছেন, ড্রোন শোয়ের আগে দর্শকদের জন্য থাকছে মনোমুগ্ধকর এক কনসার্ট। রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ১৪ এপ্রিল, বাংলা নববর্ষের দিন বেলা ৩টায় পুরো আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হবে। সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা লিখেছেন, এ আয়োজনটি ঢাকায় অবস্থিত চীনা দূতাবাসের সহযোগিতায় বাস্তবায়ন হচ্ছে। এ সহযোগিতার জন্য চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
সবশেষে তিনি লিখেছেন, বন্ধু-পরিবারসহ সবাইকে আমন্ত্রণ, চলে আসুন, একসঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিই।
বরাবরের মতো বর্ষবরণ আয়োজন করবে ছায়ানট। এবারের আয়োজনটি ২ ঘণ্টার। এই ২ ঘণ্টায় মূলত মুক্তির গান গাইবে তারা। ভোরবেলা বৈরভীতে রাগালাপ দিয়ে হবে ছায়ানটের ১৪৩২ বঙ্গাব্দ বরণের সূচনা। এবারের অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে নতুন আলো, প্রকৃতি এবং মানুষকে ভালোবাসবার গান, দেশপ্রেম-মানবপ্রেম আর আত্মবোধন-জাগরণের সুরবাণী দিয়ে। ছায়ানট এবার ৫৮তমবার বর্ষবরণের এ আয়োজন করছে।
এবারও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চ্যানেল আই-সুরের ধারা হাজারও কণ্ঠে বর্ষবরণ। তবে বিগত বছরগুলোর মতো নয়, এবার একটু ভিন্ন আঙ্গিকে। বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-কে বরণ করে নিতে ১৪ এপ্রিল সকাল ৬টা থেকে ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে অনুষ্ঠিত হবে এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করবেন সুরের ধারার শিল্পীদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিল্পীরা। অনুষ্ঠানস্থলে থাকবে বিভিন্ন লোকজ মেলার স্টল। মেলায় বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজনসহ থাকবে দেশীয় নানা ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্পের দোকান।
পহেলা বৈশাখ সরকারি ছুটির দিন। বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। দেশের সব জেলা ও উপজেলায় বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলো বাংলা নববর্ষের ওপর বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। দেশের সব সরকারি-বেসরকারি টিভি, বাংলাদেশ বেতার, এফএম ও কমিউনিটি রেডিও বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।
অনলাইন ডেস্ক :
নবনির্বাচিত আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্যরা শপথ গ্রহণ করেছেন। জাতীয় সংসদ ভবনের শপথকক্ষে চলতি একাদশ সংসদের স্পিকার নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ পাঠ করান। এর আগে নিয়মানুযায়ী স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী নিজে নিজেই শপথ গ্রহণ করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, শপথগ্রহণ শেষে সংসদ সদস্যরা শপথ বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
এরপর সচিবের দপ্তরে অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন। তারা আজ দুপুর ১২টায় আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় অংশ নিবেন।
জানা গেছে, সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগ বসে তাদের নেতা নির্বাচিত করবে। এরপর রাষ্ট্রপতি সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতাকে সরকার গঠনের আহ্বান জানাবেন।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বসে তাদের নেতা নির্বাচিত করে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতার স্বীকৃতির জন্য স্পিকারের কাছে লিখিতভাবে অনুরোধ জানাবে।
নিয়মানুযায়ী, সংসদ নেতা নির্বাচন ও প্রধানমন্ত্রীর শপথের পর তাঁর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নতুন সংসদের প্রথম অধিবেশন আহ্বানের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব পাঠাবেন স্পিকার। এরপর রাষ্ট্রপতি সংসদ অধিবেশন আহ্বান করবেন। আগামী ২৮ বা ৩০ জানুয়ারি এই অধিবেশন আহ্বান করা হতে পারে।
অধিবেশনের শুরুতেই নতুন সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন হবে।
ভোটগ্রহণ শেষে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ২৯৮টির বেসরকারি ফলাফলে আওয়ামী লীগ ২২২টি, জাতীয় পার্টি ১১টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি একটি করে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে বিজয়ী হয়েছেন।
চলারপথে ডেস্ক :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে আইনমন্ত্রী অ্যাড: আনিসুল হক এম.পি বলেছেন, বিচারকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করলে আইনজীবী ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও তার মক্কেল ক্ষতিগ্রস্ত হন। কারণ বিচারকের হাতে কলম থাকে। এটা আইনজীবীদের মাথায় রাখতে হবে। এ কারণে বিচারকদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে।
বিচারকদের আশস্ত করে আইনমন্ত্রী আরো বলেন, ‘যারা অপরাধ করেছেন সেটা প্রমাণিত হলে তাদের বিচার হবে। যারা নির্দোষ তাদের ভয়ের কোনো কারণ নেই। আইনজীবী বা বিচারপ্রার্থীর দাবির মুখে কোনো বিচারককে বদলি করা হবে না। সরকার এমন কোনো পদক্ষেপ নেবে না যাতে বিচার বিভাগের ওপর খবরদারি হয় এবং ন্যায়বিচার ব্যাহত হয়।’
আজ ২১ জানুয়ারি শনিবার রাজধানীর বিচার প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং সমপর্যায়ের বিচারকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা উদ্ধোধন শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে কর্মশালায় আইন সচিব গোলাম সারওয়ার ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) শেখ আশফাকুর রহমান বক্তব্য রাখেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, আমি একজন আইনজীবী, এটা আমার বড় পরিচয়। একজন বিচারকের প্রতি সম্মানটা স্বাভাবিকভাবে আসা উচিত। বার ও বেঞ্চের মধ্যে সুসম্পর্ক ছাড়া বিচারপ্রার্থীরা ন্যায়বিচার পায় না। সম্প্রতি বার ও বেঞ্চের মধ্যে কিছুটা অসহিষ্ণুতা লক্ষ্য করছি। এটা কাম্য নয়।
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সমস্যা সমাধানে বিচারকদের বড় ভাইয়ের ভূমিকা পালন করতে হবে। তাহলে সমস্যা কমে আসবে। সমস্যা হলে তা ব্যক্তি পর্যায়ে সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করে আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমন একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও গতিশীল বিচার বিভাগের স্বপ্ন দেখেছিলেন, যেখানে শোষিত-বঞ্চিত-নির্যাতিত এবং অসহায় মানুষ স্বল্প খরচে দ্রুত ন্যায়বিচার পাবেন। বস্তুত ন্যায়বিচার খাদ্য ও বস্ত্রের মতোই জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য উপাদান। কেননা খাদ্য ছাড়া যেমন জীবন বেঁচে থাকতে পারে না, বস্ত্র ছাড়া যেমন মানুষ জনসমক্ষে বের হতে পারে না, তেমনি ন্যায়বিচার ছাড়া মানুষ সমাজে শান্তিতে বসবাস করতে পারে না। ন্যায়বিচারের অনুপস্থিতিতে সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।