চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় মুক্তা আক্তার (১৪) নামে এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত মুক্তা উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের ছতুরা শরীফ গ্রামের দিন মজুর মোঃ ফারুক মিয়ার মেয়ে আজ ৫ আগস্ট শনিবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠিয়েছে পুলিশ।
এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে ঘরের তীরের সাথে ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় ঝুলতে দেখে পুলিশকে খবর দেয় পরিবারের লোকজন।
আখাউড়া থানার ওসি মোঃ আসাদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে রাত ৯টার দিকে লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে। এ ব্যপারে একটি অপমৃত্যু মামলার প্রস্তুতি চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দরের অবকাঠামো ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিদর্শন করেছে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক বিষয়ক কমিশন দ্য ইকনোমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক (এসকেপ)।
আজ ২৫ জুলাই মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টায় ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশ প্রবেশ করেন।
প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন এসকেপের দক্ষিণ এশিয়া প্রধান মিকিকো তানাকা। আর বাংলাদেশের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (দক্ষিণ এশিয়া-১) আরিফুর রহমান এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিসের (বিআইআইএসএস) গবেষণা পরিচালক মাহফুজ কবির।
জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলটি স্থল শুল্ক স্টেশন ভবন, স্থলবন্দরের অবকাঠামো ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এরপর স্থলবন্দরের সম্মেলন কক্ষে বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ, আমদানি-রপ্তানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে বসে প্রতিনিধি দলটি। বৈঠকে বন্দরের অবকাঠামোগত দুর্বলতা ও বাণিজ্যের প্রতিবন্ধকতার কিছু বিষয় উঠে আসে।
বৈঠকের আলোচ্য বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে বিআইআইএসএসের গবেষণা পরিচালক মাহফুজ কবির বলেন, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটানের মধ্যে সড়ক ও অন্যান্য পথে যে যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে সেটি দেখার জন্যই প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশে এসেছে। এছাড়া এ বন্দর দিয়ে কীভাবে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য বাড়ানো যায় সেটিও বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা তাদের কিছু প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরেছেন আলোচনায়। তবে সামগ্রিকভাবে বৈঠকটি ফলপ্রসূ হয়েছে।
এসকেপের ট্রান্সপোর্ট বিভাগের প্রধান আজহার ডাক্রেস্ট সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ানোর ক্ষেত্রে কী কী প্রতিবন্ধকতা আছে সেগুলো আমরা বন্দর পরিদর্শনের মাধ্যমে চিহ্নিত করছি। কীভাবে এগুলো থেকে উত্তরণ সম্ভব সেটিও নির্ধারণ করা হবে। বিষয়টি নিয়ে আমরা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করব।
চলারপথে রিপোর্ট :
ভাগ্য বদলের আশায় ১৭ বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিলেন ফায়েজ মিয়া। সেখানে দাম্মাম শহরে তিনি একটি বড় কোম্পানিতে কাজ করতেন। এবার দেশে এসে কোরবানির ঈদ করার কথা ছিল। এরই মধ্যে গত ১৪ মে কর্মস্থল সৌদি আরবের দাম্মামে হঠাৎ স্ট্রোক করে তিনি মারা যান। বুক ভরা আশা নিয়ে বিদেশ পাড়ি দেওয়া ফায়েজ বাড়ি ফিরেছেন ঠিকই কিন্তু জীবিত নয় কফিনবন্দি হয়ে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২১ দিনের মাথায় আজ ৪ জুন মঙ্গলবার দুপুরে তার মরদেহ নিজ জন্মভূমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ার তারাগনে আসলে অশ্রুসিক্ত নয়নে শেষ বিদায় দেন আত্মীয়স্বজনসহ প্রতিবেশী।
বাদ আছর আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিনগর বাইতুল মামুর জামে মসজিদ মাঠে বাদ আসর জানাযা শেষে সাতপুকুরপাড়ে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়। এর আগে, ভোরে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে সেখান থেকে পরিবারের সদস্যরা তার মরদেহ গ্রহণ করেন। এরপর সড়ক পথে নিহতের মরদেহ লাশবাহী একটি অ্যাম্বুল্যান্স করে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। নিহতের মরদেহ দুপুরে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে শুরু হয় শোকের মাতম। পরিবার-পরিজন আর স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।
নিহতের মরদেহ এক নজর দেখেতে পাড়া প্রতিবেশী আত্মীয়স্বজনসহ এলাকার শত শত লোকজন তার বাড়িতে ভিড় করেন। ফায়েজ আখাউড়া পৌর শহরের তারাগন এলাকার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে। তার পরিবারে স্ত্রী, ৩ মেয়ে ১ ছেলে রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় ১৭ বছর আগে ফয়েজ মিয়া সৌদি আরব পাড়ি জমান। সেখানে দাম্মাম শহরে তিনি একটি বড় কোম্পানিতে কাজ করতেন। সর্বশেষ গত প্রায় ৫ বছর আগে দেশে আসেন। এবার কোরবানির ঈদের আগে দেশে আসার কথা ছিল। গত ১৪ মে স্ট্রোক করে মায়াভরা এ পৃথিবী থেকে না ফেরার দেশে চলে যান।
চাচাতো ভাই আলাউদ্দিন বলেন, ফায়েজ একজন কর্মঠ লোক ছিল। দেশে থাকতে কাজ ছাড়া কিছুই বুঝতো না। পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটাতে অনেক কষ্ট করে বিদেশে যায়। এরপর এই পরিবারটা ভালই চলছিল। হঠাৎ করে এভাবে সে মারা যাবে তা কখনো ভাবতে পারছি না। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে দুপুরে নিহতের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে এসেছে। বাদ আসর জানাযা নামাজ শেষে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
মাওলানা হাফেজ নুরুল ইসলাম বাবুল বলেন, ফায়েজ খুব ভালো একজন মানুষ ছিল। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতো বড় হওয়ার। এভাবে চলে যাবে তা কখনো ভাবতে পারিনি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা আখাউড়া। এ উপজেলার বেশীভাগ লোকজন কৃষি কাজে উতপ্রোত ভাবে জড়িত। বর্তমানে চলছে ইরি-বোরো ধান আবাদের ভরা মৌসুম। স্থানীয় কৃষকরা কনকনে শীতকে অপেক্ষা করে চলতি মৌসুমের ইরি-বোরো ধান আবাদ শুরু করেছে। কৃষকরা জমিতে পানি সেচ, হালচাষ, সার প্রয়োগ, বীজ উঠানো, প্রস্তুতকৃত জমিতে চারা রোপনে এক প্রকার ব্যস্ত সময় পার করছে। ধান আবাদ নিয়ে এখন সর্বত্র চলছে এক প্রকার উৎসবের আমেজ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বোরো আবাদে তেমন সমস্যা হবে না বলে মনে করেন স্থানীয় কৃষকরা।
আখাউড়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৫ হাজার ৬শ ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। রোপনকৃত জমির মধ্যে উন্নতফলনশীল জাতের ব্রি-২৯, ২৮, ৫০, ৮৫, ৮৭, ৮৮-৯৩, ৯৪, ৯৫ বঙ্গবন্ধু ১০০সহ নানা প্রজাতির ধান রয়েছে। এ মৌসুমে বোরো ধান রোপণের জন্য উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে ৫হাজার দুইশত কৃষককে সরকারি প্রণোদনা দেওয়া হয়। এরমধ্যে ২৫০০ কৃষককে বীজ ধান, ১০ কেজি এমওপি এবং ১০ কেজি ডিওপি সার এবং ২৭০০ কৃষককে শুধুমাত্র বীজ দেওয়া হয়।
পৌর এলাকায় তারাগন, দেবগ্রাম, নারায়নপুর, উপজেলার নুরপুর, হীরাপুর, উমেদপুর, ধাতুর পহেলাসহ বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায় স্থানীয় কৃষকরা বোরো ধান আবাদে জমি প্রস্তুত, চারা উত্তোলন ও রোপনের কাজে তারা ব্যস্ত সময় পার করছেন। এরমধ্যে ফসলি জমিতে কেউ কেউ ট্রাক্টর দিয়ে হাল চাষ করছেন। কেউ কেউ শ্যালো মেশিন দিয়ে জমিতে পানি দিচ্ছেন, আবার কেউ বা ধানের চারা বীজতলা থেকে উঠাচ্ছেন। মাঠ জুড়ে বোরো আবাদের ধুম পড়ায় সূর্যের মুখ দেখা না গেলেও কোমর বেঁধে মাঠে নেমে কাজ করছেন কৃষকরা। কুয়াশায় ঢাকা শীতের সকালে বীজতলায় ধানের চারা পরিচর্যার পাশাপাশি জমি আবাদে কাজ চলছে যেন পুরোদমে। এদিকে তীব্র শীতে বীজতলা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় কৃষকরা রাতে বীজতলা ঢেকে রাখছেন। সব মিলিয়ে স্থানীয় কৃষকরা বোরো ধান আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কৃষক মোঃ খোরশেদ আলম বলেন, এ মৌসুমে বোরো ধান আবাদ করতে সহায়তা হিসাবে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বীজ ও সার পেয়েছেন। গত আমনে ধান ৭ বিঘা জমি আবাদ করে ফলন ও বিক্রিতে ভালো দাম পেয়ে লাভবান হয়েছি। তাই এবার ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হবে।
কৃষক মো: জামশেদ মিয়া বলেন, এক সময় বোরো ধান আবাদ করতে পানির খুবই সমস্যা হতো। অতিরিক্ত টাকায় সেচ দিতে হতো। গত কয়েক বছর ধরে সোলারের মাধ্যমে সেচ দিতে পারায় খরচ অনেক কমে এসেছে। তাছাড়া উচ্চ ফলনশীল ধান আবাদে ফলন ও বিক্রিতে দর ভালো পাওয়ায় ধান চাষে লাভবান হচ্ছি। এ মৌসুমে ৮ বিঘা জমির মধ্যে ৫ বিঘা জমিতে চারা লাগানো শেষ হয়েছে। আগামী সপ্তাহে বাকী জমিতে লাগানোর কাজ শেষ হবে।
আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া তাবাসসুম বলেন, উপজেলার সর্বত্র কৃষকরা জমি প্রস্তুত করে পুরাদমে বোরো ধান আবাদ শুরু করেছেন। মাঠজুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছেন। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে এবং সেচ ব্যবস্থা ঠিকমতো থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানায়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় ভেকু দিয়ে কৃষি জমি থেকে অবৈধ ভাবে মাটি কাটার দায়ে দুই ব্যক্তিকে এক লক্ষ জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজ ২৪ এপ্রিল বুধবার দুপুরে উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের বনগজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ জরিমানা করা হয়।
পুলিশের সহায়তায় আদালত পরিচালনা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম রাহাতুল ইসলাম। জরিমানা দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন বনগজ গ্রামের রৌশন আলী বেপারী ও ভাটামাথা গ্রামের মোঃ সালাহ উদ্দিন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্তরা বিক্রির উদ্দেশ্য ভেকু দিয়ে কৃষি জমি থেকে মাটি কাটছিল। খবর পেয়ে বেলা ২ টার দিকে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম রাহাতুল ইসলাম ঘটনাস্থল বনগজে গিয়ে মাটি কাটার সময় তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে মাটি কাটার সত্যতা পাওয়ায় প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম রাহাতুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।