চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুকুর থেকে আব্দুর রহমান (১০) নামের এক মাদ্রাসা ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করেছে দমকল বাহিনী।
আজ ৫ আগস্ট শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা শহরের পশ্চিম মেড্ডা নোয়া পাড়া এলাকার একটি পুকুর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আব্দুর রহমান ওই এলাকার ফারুক মিয়ার ছেলে ও নূরিয়া তাহফিযুল কোরআন মাদ্রাসার ছাত্র।
স্থানীয়রা জানান, সকালে আব্দুর রহমান মাদ্রাসার পাশের পুকুরে গোসল করতে যায়। এরপর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুকুরে তার দেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা। পরে দমকল বাহিনী তাকে উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে যায়। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. সোলায়মান মিয়া বলেন, শিশুটি অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরীক্ষা করে দেখা যায় হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্প-২- প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন ৫ম পর্যায়ে (২য় ধাপে) ঘর পাচ্ছে ৫০টি পরিবার।
আজ ৯ জুন রবিবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সেলিম শেখ এই তথ্য জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুজিব শতবর্ষে “ বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না” এই শ্লোগান নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার আশ্রয়ণ-২-প্রকল্পের আওতায় ‘ক’ শ্রেনীর ভূমিহীন (যাদের জমি নেই ঘরও নেই) তাদের পুর্নবাসনের জন্য ৫ম পর্যায়ে (২য় ধাপে) ৫০টি পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে এই ঘর গুলো নির্মাণ কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। ২শতাংশ খাস জমিতে দুই কক্ষ বিশিষ্ট প্রতিটি আধা পাকা ঘরের নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ৩ লাখ ৪ হাজার ৫ শত টাকা। সব গুলো ঘর একই নকশায় নির্মিত হচ্ছে। ৫ম পর্যায়ে (২য় ধাপে) সদর উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়নের আমিরপাড়া এলাকায় ৫০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে এসব ঘরের উপকারভোগীদের তালিকা নির্বাচন সম্পন্ন করেছেন সদর উপজেলা প্রশাসন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সেলিম শেখ জানান, ৫ম পর্যায়ে (২য় ধাপে) সদর উপজেলায় ৫০ টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ঘরের কাজ শত ভাগ শেষ হয়েছে। কোরবানির ঈদের আগেই ১১ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর ৫০টি পরিবারকে ঈদ উপহার হিসেবে ঘরের চাবি ও দলিল বুঝিয়ে দেয়া হবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান, সদর উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ ইসমাইল হোসেনসহ জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগন উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আবরনি আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, শিক্ষাবিদ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, প্রয়াত অধ্যাপক এ.কে.এম হারুনুর রশিদের ১৯ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আজ ৮ নভেম্বর শুক্রবার বেলা ১১ টায় স্থানীয় শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে সংগঠনের উপদেষ্টা সাংবাদিক আবদুন নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরন সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মনবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর অমৃত লাল সাহা।
বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল-আমীন শাহীন, সাবেক সহ-সভাপতি ইব্রাহিম খান সাদাত ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের সাবেক জেলা আঞ্চলিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ সানা উল্লাহ।
বক্তব্য রাখেন সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, কবি আবদুল মান্নান সরকার, জেলা নাগরিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা রতন কান্তি দত্ত, অনুশীলন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ মোঃ নাসির মিয়া, সাহিত্য একাডেমির সাধারণ সম্পাদক নূরুল আমীন আশরাফ।
সংগঠনের সদস্য ফাহিম মুনতাসিরের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের পরিচালক ও প্রশিক্ষক শারমিন সুলতানা।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সোনালী সকালের সাধারণ সম্পাদক সানিউর রহমান সানি।
আলোচনা সভা শেষে অধ্যাপক এ.কে.এম হারুনুর রশীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক সাংবাদিক হাবিবুর রহমান পারভেজ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমান তার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। আজ ৪ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি।
ফিরোজুর রহমানের পক্ষে অ্যাডভোকেট শাহ পরাণ ইশতেহার পাঠ করে শুনান। ফিরোজুর রহমান এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
ইশতেহার ঘোষণার সময় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদুল হক ভূঁইয়া, ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. উমর ফারুক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ইশতেহারের শ্লোগান হিসেবে শুরুতে উল্লেখ করা হয়, ‘গণ মানুষের ভালোবাসায়ই জয়ের মূল উৎস। স্যার নয় ভাই হতে চাই, কথায় নয় কাজে বিশ্বাসী। জনগণের ভালোবাসায় জীবনের শেষ নি:শ্বাস পর্যন্ত মানুষের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ রাখার অঙ্গীকার।
‘শেষের দিকেও তিনি লিখেন, ‘বড় নেতা বা শাসক, স্যার হতে নয়, মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসায় ভাই হয়ে মানুষের পাশে থাকার, সুখ দুখের সাথী হওয়ার দৃঢ় শপথে আমি প্রার্থী হয়েছি।’ এ সময় তিনি কাঁচি প্রতীকে ভোট প্রার্থণা করেন।
ইশতেহারে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজমুক্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া গড়তে নানা পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করা হয়। এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (সদর-বিজয়নগর) উপজেলাকে ঘিরে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করা হয়।
ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার কথাও বলা হয় ইশতেহারে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার মধ্যে দিয়ে আনন্দঘন পরিবেশে আজ ৮ ডিসেম্বর শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া হানাদার মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে র্যালি, আলোচনা সভা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়। সকালে জাতীয় পতাকা নিয়ে শহরে র্যালি করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস উদযাপন পরিষদের ব্যানারে মুক্তিযোদ্ধারা
সকাল ১০টায় শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে জাতীয় বীর আবদুল কুদ্দুস মাখন মুক্ত মঞ্চে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তক অর্পন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
পরে পর্যায়ক্রমে মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা সন্তানসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, বাঙ্গালী বীরের জাতি এর প্রমান করেছে মহান মুক্তিযুদ্ধে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছিলো একটি গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর। সীমান্তবর্তী অনেক জেলা মুক্ত হওয়ার আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া হানাদার মুক্ত হয়। ওইদিন শহরের পুরাতন কাচারী প্রাঙ্গনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের বিজয় পতাকা উত্তোলন করেন মুক্তিযুদ্ধের দক্ষিন পূর্বাঞ্চলীয় কাউন্সিলের চেয়ারম্যান জহুর আহমেদ চৌধুরী।
এসময় তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, দেশে এখন নির্বাচনী পরিবেশ বিরাজ করছে। মানুষ উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট কেন্দ্রে আসবে। তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে বিএনপি ধ্বংসাত্মক ও নাশকতা করছে। তাদের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপে সরকারের কিছুই হবেনা, বিএনপি নিজেই ধ্বংস হয়ে যাবে। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কমান্ডের আয়োজনে স্থানীয় সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। আলোচনা সভায় জেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে শত্রুমুক্ত করতে ৩০ নভেম্বর থেকে জেলার আখাউড়া সীমান্ত এলাকায় মিত্রবাহিনী পাকবাহিনীর ওপর বেপরোয়া আক্রমণ চালাতে থাকে। ১ ডিসেম্বর আখাউড়া সীমান্ত এলাকায় ২০ পাকিস্তানী সৈন্য নিহত হয়। ৩ ডিসেম্বর আখাউড়ার আজমপুরে প্রচন্ড যুদ্ধ হয়। সেখানে ১১ পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়। শহীদ হন ৩ মুক্তিযোদ্ধা।
এরই মধ্যে বিজয়নগর উপজেলার মেরাশানী, সিঙ্গারবিল, মুকুন্দপুর, হরষপুর, আখাউড়া উপজেলার আজমপুর, রাজাপুর এলাকা মুক্তিবাহিনীর দখলে চলে আসে।
৪ ডিসেম্বর পাক হানাদাররা পিছু হটতে থাকলে আখাউড়া অনেকটাই শত্রæমুক্ত হয়। এখানে রেলওয়ে স্টেশনের যুদ্ধে পাক বাহিনীর দু’শতাধিক সেনা হতাহত হয়। ৬ ডিসেম্বর আখাউড়া সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয়।
এরপর চলতে থাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত করার প্রস্তুতি। মুক্তিবাহিনীর একটি অংশ কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে এবং মিত্রবাহিনীর ৫৭তম মাউন্ট ডিভিশন রেজিমেন্টের সদস্যরা আখাউড়া-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেললাইন ও উজানিসার সড়ক দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। শহরের চারিদিকে মুক্তিবাহিনী অবস্থান নিতে থাকায় ৬ ডিসেম্বর পাক সেনারা পালিয়ে যাওয়ার সময় রাজাকারদের সহায়তায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজের অধ্যাপক কে.এম লুৎফুর রহমানসহ জেলা কারাগারে আটক অর্ধশত বুদ্ধিজীবী ও সাধারণ মানুষকে চোখ বেঁধে শহরের করুলিয়া খালের পাড়ে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে।
৭ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে পাকিস্তানীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ছেড়ে আশুগঞ্জের দিকে পালাতে থাকে। পরে ৮ ডিসেম্বর কোনও ধরনের প্রতিরোধ ছাড়াই ব্রাহ্মণবাড়িয়া শত্রুমুক্ত হয়।
৮ ডিসেম্বর সকাল ৯টার দিকে মুজিবনগর সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল যুদ্ধের পরিচালনাকারী জহুর আহমেদ চৌধুরী স্থানীয় পুরাতন কাচারী প্রাঙ্গনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। একই দিন সন্ধ্যায় জেলার সরাইল উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।