চলারপথে রিপোর্ট :
বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দূর্গারামপুরে বসুন্ধরা গ্রুপের অর্থায়নে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ৬৭তম সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান স্বাভাবিক রাখতে এভাবে ঋণ বিতরণ করে যাচ্ছে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন।
আজ ৭ আগস্ট সোমবার বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ঋণ বিতরণের অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা ও ইষ্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের প্রকাশক ময়নাল হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক, ইষ্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের পরিচালক এবং দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন।
এ সময় সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ডিজিএম মাইমূন কবির, কালেরকণ্ঠ শুভ সংঘের পরিচালক মো. জাকারিয়া জামান, বাঞ্ছারামপুর সরকারি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো, চাঁন মিয়া সরকার, বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপক মো. মোশারফ হোসেন, বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সিনিয়র অফিসার মো. আমির হোসেন আনোয়ার, অফিসার মো. শাহজাহান, আলমগীর হোসেন, মুজিবুর রহমান, মো. অলি উল্লাহ, মো. কবির হোসেন ও মো. বাছির মিয়া।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ইমদাদুল হক মিলন বলেন, পৃথিবীর কোথাও সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ঋণ বিতরণ করা হয় বলে আমার জানা নেই। মানুষের কল্যাণের জন্য এভাবে সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ঋণ বিতরণ করছে বাংলাদেশের সুনামধন্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ। মানুষের কল্যাণ হউক এইটাই বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের চিন্তাধারা।
তিনি আরও বলেন, অর্থনৈতিকভাবে দুর্বলদের এই ঋণ দিয়ে সচ্ছল করে তোলাই একমাত্র লক্ষ ও উদ্দেশ্য। অর্থনীতির মূল ধারায় বরাবরই অবহেলিত ও পিছিয়ে থাকা, সেসব তৃণমূল মানুষকে সামনে এগিয়ে নিতে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এর মাধ্যমে পাল্টে যাচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতির চিত্র। বাংলাদেশে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ঋণ বিতরণ একটি মডেলের নাম। এভাবে ধনাঢ্য ব্যক্তিরা যদি বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের মতো গরিব লোকদের কাছে এগিয়ে আসতেন, তাহলে হয়ত হতদরিদ্র লোকগুলো অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে উঠতে পারতেন।
সভাপতি ময়নাল হোসেন চৌধুরী বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে। দেশের অসহায় ও হতদরিদ্রদের মাঝে বিভিন্ন ক্লান্তিকালে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় বসুন্ধরা গ্রুপ।
সেখানে উপস্থিত সব মা-বোনদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এই ঋণের টাকা দিয়ে যাতে অসামাজিক ও অবৈধ কোনো ব্যবসায় কাজে বিনিয়োগ না করা হয়। আজ পর্যন্ত প্রায় ২৫ হাজার ৩৪৪ জন হতদরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত লোক বসুন্ধরা গ্রুপের সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ঋণ পেয়ে ৩৩টি স্কিমের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। এর জন্য দোয়া চান যাতে করে বসুন্ধরা গ্রুপ সব অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত লোকদের সেবা করতে পারে।
তিনি আরও জানান, সোমবার ৪৩১জন উপকারভোগীর মাঝে ৬৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ১৮৭ জনের প্রত্যেককে ১৫ হাজার করে ২৮ লাখ ৫ হাজার, দ্বিতীয় ধাপে ২৪৪ জনকে ১৫ হাজার করে ৩৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এই ঋণ শুধু নারীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। এর মাধ্যমে তারা হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল এবং শাক-সবজি চাষসহ ৩২ ধরনের কাজে এই ঋণের অর্থ বিনিয়োগ করে উপকার পাচ্ছেন। ২০০৫ সাল থেকে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের সরাসরি তত্ত্বাবধানে নিয়মিত ঋণ দিয়ে যাচ্ছে। এই ঋণের পরিধি প্রথমদিকে শুধু বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে তা পার্শ্ববর্তী উপজেলা হোমনা ও নবীনগরে বিস্তার লাভ করেছে।
বাহেরচর গ্রামের নার্গিস আক্তার (৪০) বলেন, ৫ হাজার টাকার ঋণ পেয়ে দুইডা ছাগল কিন্না এহন বেশি হইতে হইতে প্রায় ২ লাখ টাকার ছাগল বেচ্চি। বসুন্ধরা আমারে ৩ বার টেহা দিছে। বসুন্ধরার হগল মালিকগনের লাইগা দোয়া করি আল্লায় যেন ভালো রাহে।
কমুলপুর গ্রামের প্রতিবন্ধী ফুল মালা (৪০) জানান, আমার জামাই মাছের ব্যবসা করেন। আমি বসুন্ধরার ঋণের টাকা আমার জামাইয়ের কাছে দিয়ে মাছের ব্যবসায়ে লাগিয়েছি। এখন আমরা লাভে আছি।
দূর্গারামপুর গ্রামের রুপা (৩২) বলেন, আমি এই টেহা নিয়া সেলাই মেশিন কিনছি। আমি এবং আমার মাদরাসা পড়ুয়া মেয়ে হেইডা চালাই। যা দিয়া আমার পরিবারের খাওনের চাহিদা মিডাইয়া মাইয়ার মাদরাসার পড়ালেহার খরচ জোগাই।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে মহিলাদের অবহিতকরণ ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে তাদের সম্পৃক্তকরণ আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি, সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা সম্পর্কে অবহিতকরণ, গুজব, অপপ্রচার ও ডেঙ্গু প্রতিরোধ, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে আজ ২০ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নারী উন্নয়ন কেন্দ্রে নারী সমাবেশ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর শোষণ ও বঞ্চনামুক্ত সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্ত উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে জেলা তথ্য অফিস জনসচেতনতামূলক কাজটি করে যাচ্ছে। জেলা তথ্য অফিসার মো: ফখরুল ইসললামের সভাপতিত্বে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপপরিচালক ভিকারুন নেছা। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাঞ্ছারামপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রাবেয়া সুলতানা ইভা।
স্টাফ রিপোর্টার:
দেশে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধী টিকার বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ৬ কোটি ৪২ লাখ ৬১ হাজার ৯১৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৬৫৮ জন। রোববার (১১ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন শাখার (এমআইএস) পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. শাহাদাত হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়। এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ১৫ হাজার ৮৪৮ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ২১ হাজার ৭৮১ জন। তাদেরকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোফার্ম, ফাইজার, মডার্না এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন ১৪ কোটি ৮৮ লাখ ৫৬ হাজার ৪৯২ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১২ কোটি ৬৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮৪৮ জন। এ সময়ে টিকার বুস্টার (তৃতীয়) ডোজ পেয়েছেন ছয় কোটি ৪২ লাখ ৬১ হাজার ৯১৪ জন।
২০২১ সালের ১ নভেম্বর ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। এখন পর্যন্ত এক কোটি ৭৩ লাখ ৯৭ হাজার ৫৩৯ শিক্ষার্থী টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছে ১ কোটি ৬১ লাখ ৯৮ হাজার ৩২৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ২৪২ শিক্ষার্থী। দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়েছেন ৬৮৯ শিক্ষার্থী। তবে এখন পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থীকে বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়নি।
এদিকে, এখন পর্যন্ত ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৭৫ লাখ ৩৫ হাজার ৮০০টি। এছাড়া দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ১০ লাখ ৩৩ হাজার ৪২১ শিশুকে। অন্যদিকে, এখন পর্যন্ত ভাসমান জনগোষ্ঠীর ৫ লাখ ৭৭ হাজার ১৮০ জনকে জনসন অ্যান্ড জনসনের সিঙ্গেল ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ১৪ হাজার ৭৭০ জন।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাঞ্ছারামপুরে প্রথম শ্রেনীর এক স্কুল ছাত্রী (৭) নিজ বিদ্যালয়ের ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ ১৩ নভেম্বর সোমবার সকালে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ স্কুলের দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরী মোঃ দিদার মিয়া (৩০) কে রেফতার করেছে।
রেফতারকৃত দিদার মিয়া নিজকান্দি গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার ফরদাবাদ ইউনিয়নের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সোমবার সকালে সোয়া ৯টার দিকে স্কুলে যায়। পরে বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী কাম দপ্তরি দিদার মিয়া তাকে চকলেট দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশের পুরাতন ওয়াশব্লকের বাথরুমে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি কাউকে না বলতে তাকে ভয় দেখায়। মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পরলে সে বাড়িতে চলে যায়। বাড়িতে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে তার মা বিষয়টি দেখতে পেয়ে তাকে জিজ্ঞাস করলে মাকে সে বিষয়টি বলে।
পরে তাকে প্রথমে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। অবস্থার অবনতি দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রেরণ করে।
ভিকটিমের মা সাংবাদিকদের জানান, আমি এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। আমার মেয়ের মতো যেনো অন্য কোন শিশু এই ধরনের ঘটনার শিকার না হয়।
এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নাজমুল হোসেন বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। আমি ন্যাক্কারজনক ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করি।
এ ব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মনিরা আঞ্জুম সাথী বলেন, এই ধরনের ঘটনায় গাইনি ডাক্তার দ্বারা পরীক্ষা করতে হয়। তাই আমরা তাকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠিয়েছি। ব্লিডিং হয়েছে বলে মনে হয়েছে। হাসপাতালে আনার আগে তাকে গোসল করানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম জানান, এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে দিদার নামে একজনকে গ্রেফতার করেছি। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীর মা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আমরা ওই শিক্ষার্থীর মেডিকেল পরীক্ষার জন্য তাকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠিয়েছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুরে ১২ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ফারুক মিয়া (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ৯ মার্চ শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কুমিল্লা জেলার হোমনা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার ফারুক মিয়া বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ছলিমাবাদ ইউনিয়নের ভুরভুরিয়া উত্তর হাটির মৃত শাহজাহান মেম্বারের ছেলে।
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন জানান, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ১২ বছরের ওই শিশু তার বান্ধবীর নানার বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। বাড়ি থেকে বের হয়ে সে পথ হারিয়ে ফেলে। এ অবস্থায় স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ফারুক মিয়া তাকে পথ দেখিয়ে দেবে বলে একটি ভুট্টাক্ষেতে নিয়ে যান। পরে সেখানে শিশুটিকে ধর্ষণ করেন।
শিশুটি বাড়িতে ফিরে তার পরিবারকে ঘটনাটি জানালে লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখতে চেয়েছিল। কয়েকদিন আগে ফেসবুকে কে বা কারা বিষয়টি ছড়িয়ে দেয় এবং পুলিশের নজরেও আসে। পরে শনিবার নিপীড়নের শিকার শিশুর মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। মামলায় অভিযুক্ত ফারুক মিয়াকে অভিযান চালিয়ে কুমিল্লার হোমনা থেকে রাতেই গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরো জানান, গ্রেফতার আসামি ফারুককে আদালতে পাঠানো হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে এর আগেও মাদক মামলা চলমান রয়েছে। শিশুটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্যে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাঞ্ছারামপুরের ছলিমাবাদ ইউনিয়নের পাইকারচর গ্রামে ইঞ্জিনিয়ার্স প্যালেসে বাঞ্ছরামপুর কল্যাণ সমিতির তত্ত্বাবধানে দিনব্যাপী বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও চক্ষু শিবির অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দিনব্যাপী বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও চক্ষু শিবির অনুষ্ঠিত হয়। পাইকারচর স্টুডেন্ট অ্যান্ড ইয়ুথ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির আয়োজনে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। চট্টগ্রাম লায়ন্স চক্ষু হাসপাতাল মাহবুবুর রহমান মেমোরিয়াল হাসপাতলের একাধিক মেডিক্যাল টিম, বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রায় দুই হাজার রোগীকে বিনামূল্যে চক্ষু ও বিভিন্ন রোগের সেবা প্রদান করে।
শিবিরে বিশেষভাবে চোখের চিকিৎসার ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রোগীদের বিস্তারিত পরীক্ষা- নিরীক্ষা করে বিনামুল্যে তাদের ওষুধ ও চশমা প্রদান করা হয়। সেই সাথে চোখে ছানিপড়া রোগীদের চিহ্নিত করে তাদের কে লায়ন্স হাসপাতাল চট্টগ্রামে নিয়ে বিনামূল্যে অপারেশন করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে মেডিসিন, গাইনি, শিশু রোগ, চর্ম, হৃদরোগ বিভাগে আসা রোগীদের পরীক্ষা করে প্রেসক্রিপশন দেওয়া হয় ও বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধ বিতরণ করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকাস্থ বাঞ্ছারামপুর উপজেলা কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেজর (অব.) এসএম সাইদুল ইসলাম। প্রধান অতিথি সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও চক্ষু শিবির আয়োজন একটি মানবিক সময়োপযোগী উদ্যোগ। সমাজের দরিদ্র সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য এ আয়োজন নিঃসন্দেহে আশীর্বাদস্বরূপ। আমি আশা করি, এ ধরনের উদ্যোগ নিয়মিত হলে মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা আরও বৃদ্ধি পাবে।’
প্রধান প্রকৌশলী (অব.) বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও পাইকারচর স্টুডেন্ট অ্যান্ড ইয়ুথ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির প্রধান উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মো. মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে দিনব্যাপী এই চিকিৎসা শিবিরে অভিজ্ঞ চিকিৎসকগণ উপস্থিত থেকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ঔষুধ প্রদান, চক্ষু রোগের চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় অপারেশনের
ব্যবস্থা করেন।
মকবুল ইঞ্জিনিয়ার মো. হোসেন বলেন, ‘গ্রামীণ দোরগোড়ায় মানুষের স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে এ শিবির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিশেষ করে চোখের চিকিৎসা ও বিনামূল্যে ওষুধ প্রদানের মাধ্যমে অনেকেই উপকৃত হচ্ছেন। আমাদের লক্ষ্য হল্গেকেউ যেন অর্থাভাবে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না হয়। এ ধরনের মানবিক উদ্যোগ নিয়মিত হলে সমাজের অসহায় মানুষরা আরও বেশি উপকৃত হবে। মুখ্য আলোচক ছিলেন পিএমজেএফ জেলা গভর্নর লায়ন মোসলেহ উদ্দীন আহমেদ অপু।
বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকাস্থ বাঞ্ছারামপুর উপজেলা কল্যাণ সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শফিকুর রহমান, বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক ফারুক আলম, কনস্টেবল ইমন, জুয়েল প্রমুখ।
আয়োজকরা জানান, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে একত্রিত করে একটি মানবিক ও সচেতন সমাজ গঠনের লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ উপলক্ষে তারা এলাকার সকল শ্রেণিপেশার মানুষকে শিবিরে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জামাল আবু নাসের বলেন, গ্রামীণ মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে এ শিবির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে চক্ষু চিকিৎসা ও বিনামূল্যে ওষুধ প্রদানের মাধ্যমে অনেকেই সরাসরি উপকৃত হবেন। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এ ধরনের মানবিক উদ্যোগকে সবসময় সহযোগিতা পাশে থাকবে। পাইকারচর স্টুডেন্ট অ্যান্ড ইয়ুথ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির আহবায়ক অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন বলেন, সমাজের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর অংশগ্রহণে জনগণের কল্যাণে যে ধরনের ক্ষেত্রে আয়োজন হচ্ছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। উদ্যোগ সমাজের দরিদ্র মানুষদের চিকিৎসা প্রাপ্তির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমি আশা করি, এই উদ্যোগে এলাকার মানুষ ব্যাপকভাবে উপকৃত হবেন। পাইকারচর স্টুডেন্ট অ্যান্ড ইয়ুব ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সদস্য সচিব মো. মহসিন বলেন, আমাদের এ উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হলো গ্রামের সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানো। আমরা চাই, একটি বলেন, মানবিক সমাজ গড়ে উঠুক যেখানে অসহায় কেউ চিকিৎসার অভাবে কষ্ট পাবেন না। এই শিবিরে যারা আসবেন, তারা যেন সুস্থ হয়ে নতুনভাবে জীবনযাপন করতে পারেন সেটাই আমাদের প্রার্থনা। তিনি আরও পাইকারচর স্টুডেন্ট অ্যান্ড ইয়ুধ ওয়েলফেয়ার সোসাইটি শুধু চিকিৎসা সেবা নয়। সংগঠনটি নিয়মিতভাবে খেলাধুলা, বৃক্ষরোপণ, শিক্ষামূলক কার্যক্রম সামাজিক উন্নয়নমূলক বিভিন্ন আয়োজন করে থাকে। এ ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে তরুণ সমাজকে সম্পৃক্ত করা এবং একটি মানবিক, সচেতন ও সুস্থ সমাজ গড়ে তোলাই সংগঠনটির মূল লক্ষ্য।