অনলাইন ডেস্ক :
চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়া নালায় পড়ে এক কলেজছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আজ ৭ আগস্ট সোমবার সকালে হাটহাজারী উপজেলার ইসলামিয়া হাট বাদামতল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ছাত্রীর নাম নিপা পালিত (২৪)। তিনি একই এলাকার উত্তম পালিতের মেয়ে। হাটহাজারী সরকারি কলেজের বিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। সোমবার তার দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষায় অংশ নিতে গ্রামের বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন তিনি।
নিপা পালিতের দুর্ঘটনাস্থল প্রশাসনিকভাবে হাটহাজারী উপজেলায় হলেও এটি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের অধীন। গত দুইবছরে খোলা খাল-নালায় পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীসহ মারা গেছেন পাঁচজন। গত সাত বছরে মারা গেছেন নয়জন। এরমধ্যে একজনের খোঁজ মেলেনি। আহত হয়েছেন অনেকে। তবুও খোলা নালা-নর্দমা সুরক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি সিটি করপোরেশন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, টানা বৃষ্টিতে হাটহাজারী উপজেলার বাদামতল এলাকাটি পানিবন্দি হয়ে পড়ে। আশপাশের এলাকাসহ সড়কও পানিতে তলিয়ে যায়। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে নিপা পরীক্ষায় অংশ নিতে নাজিরহাট কলেজের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হন। এ সময় পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে সড়কের পাশে নালায় তলিয়ে যান তিনি। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ প্রসঙ্গে হাটহাজারী সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক আবু তালেব জানান, নিপার দ্বিতীয় বর্ষের সমাপনী পরীক্ষা চলছিল নাজিরহাট কলেজ কেন্দ্রে। ব্যবস্থাপনা চতুর্থ পত্রের পরীক্ষায় অংশ নিতে ওই কেন্দ্রে যাচ্ছিলেন তিনি।
নিপা পালিতের দাদা বাদল পালিত জানান, প্রবল বৃষ্টির মধ্যে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ছাতা মাথায় দিয়ে বাসা থেকে বের হন নিপা। গাড়ি ধরতে মূল সড়কের একপাশ দিয়ে হাঁটছিলেন তিনি। হঠাৎ পানির তোড়ে নালায় পড়ে যান নিপা। সেখান থেকে আর উঠতে পারেননি। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
হাটহাজারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গোফরান উদ্দিন জানান, জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে পুলিশ হাসপাতাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। এরপর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
পরিবারের সদস্যদের উদ্ধৃতি দিয়ে এসআই জানান, নিপা মৃগী রোগী ছিলেন। তাদের বাড়ির আশপাশ ও সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি মাড়িয়ে হাঁটতে গিয়ে তিনি তলিয়ে যান। মৃগী রোগী হওয়ায় তিনি আর উঠতে পারেননি বলে পরিবার ও স্থানীয়দের ধারণা।
সিটি করপোরেশনের দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গাজী মো. শফিউল আজিম বলেন, ‘এটি গ্রামীণ এলাকা। এখানে নালা নেই। বাড়ি থেকে ৩০-৪০ গজের মধ্যে পাহাড়ি ঢলের তোড়ে ভেসে গেছে ওই ছাত্রী। মৃগী রোগী হওয়ায় পানি থেকে আর উঠতে পারেননি।’
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট নগরীর মুরাদপুরে জলাবদ্ধতায় সড়ক-খাল একাকার হয়ে গেলে তাতে পড়ে নিখোঁজ হন সবজি ব্যবসায়ী সালেহ আহমেদ। এ ঘটনার জন্য সিডিএকে দায়ী করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গঠিত তদন্ত কমিটি। নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারায় চসিককেও দায়ী করা হয়। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে লাল পতাকা ও ব্যানার টাঙানো এবং নিরাপত্তা বেষ্টনি তৈরিসহ দুর্ঘটনা রোধে ৯টি সুপারিশ করেছিল ফায়ার সার্ভিস। কোনো সুপারিশই পুরোপুরি বাস্তবায়ন করেনি সিডিএ। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেয়নি সরকার।
একই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর নগরীর আগ্রাবাদে খোলা নালায় পড়ে মৃত্যু হয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী শেহেরীন মাহমুদ সাদিয়ার। ৬ ডিসেম্বর নগরীর ষোলশহর এলাকায় চশমা খালে পড়ে নিখোঁজ হয় ১২ বছর বয়সী শিশু কামাল উদ্দিন। তিন দিন পর মির্জাখাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার হয়। এছাড়া ২০২১ সালের ৩০ জুন এই নগরীর নাসিরাবাদ এলাকায় চশমা খালে পড়ে যায় একটি সিএনজি অটোরিকশা। প্রচণ্ড স্রোতে ভেসে যান চালক সুলতান ও যাত্রী খাদিজা বেগম। পরে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
ঢাকার আফতাবনগরে অটোরিক্সার চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে আজ ৫ মে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহতের নাম সাদিয়া। তিনি কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার নিউটাউন গ্রামের মো. তকি তাহমিদের স্ত্রী। বাবার নাম আব্দুল কাইয়ুম। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সাদিয়া ছিলেন তৃতীয়। তিনি রাজধানীর সবুজবাগের বাসাবো এলাকায় পরিবারের সাথে থাকতেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, ভাই ও বোন অটোরিক্সায় করে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ ওড়না পেঁচিয়ে তিনি মারা যান। আমরা খবর পেয়েই একজন অফিসারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
দিনাজপুরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই ফার্মেসিকে জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। আজ ২৬ আগস্ট শনিবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে চিকিৎসকদের জন্য দেওয়া ট্রায়াল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখায় ১০ হাজার করে মোট ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযান চালিয়ে জরিমানা করেন দিনাজপুর জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলা সহকারী পরিচালক মমতাজ বেগম রুনী।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জেলা সহকারী পরিচালক মমতাজ রুনী বলেন, ভোক্তার অভিযোগ ও তদারকির অংশ হিসেবে নিয়মিত অভিযান চলছে। অনিয়ম পেলে তথ্য দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি।
অনলাইন ডেস্ক :
ভূমি নিয়ে বিরোধ মীমাংসায় ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনালের বিচারক হবেন জেলা জজরা। পাশাপাশি প্রয়োজন মনে করলে সিনিয়র সহকারী জজ বা সহকারী জজদেরও সরকার ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে নিস্পত্তির জন্য বিচারক হিসেবে নিয়োগ করতে পারবে। এমন বিধান যুক্ত করে ১৯৫০ সালের স্টেট অ্যাকুইজেশন অ্যান্ড ট্যানেন্সি অ্যাক্ট (রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ত্ব আইন) সংশোধনরে প্রস্তাব উঠেছে সংসদে। বুধবার সংসদের বৈঠকে এ সংক্রান্ত ‘স্টেট অ্যাকুইজেশন অ্যান্ড ট্যানেন্সি (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০২৩’ বিলটি উত্থাপন করেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। পরে বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
নতুন এই সংশোধনী পাস হলে ভূমি জরিপ সংক্রান্ত মামলা নিস্পত্তির দীর্ঘসূত্রিতা কাটবে বলে মন্ত্রী আশা প্রকাশ করছেন।
বিদ্যমান আইনে বলা আছে, ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনালের বিচারক হবেন যুগ্ম জেলা জজেরা। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে আলোচনা করে সরকার এই বিচারক নিয়োগ দেবে। এই বিধানের সঙ্গে নতুন ধারা যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, এভাবে বিচারক নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত সরকার যুগ্ম জেলা জজদের ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনালের বিচার কাজের ক্ষমতা দিতে পারবে। এছাড়া ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনাল থেকে স্থানান্তর করা মামলা নিস্পত্তির জন্য এক বা একাধিক সিনিয়র সহকারী জজ বা সহকারী জজকে ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে সরকার নিয়োগ দিতে পারবে।
বিদ্যমান আইনে বলা আছে, ভূমি জরিপ আপিল ট্রাইব্যুনালের বিচারক হবেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক অথবা সাবেক বিচারক। কিন্তু দীর্ঘদিনেও এই আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়নি।
আইনের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘২০০৪ সালে আইন সংশোধন করে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল ও ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠনের বিধান করা হয়। ওই বিধানে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শক্রমে জেলার যুগ্ম জেলা জজদের মধ্য থেকে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবং সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক অথবা সাবেক বিচারকদের মধ্য থেকে ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনালে বিচারক নিয়োগের বিধান করা হয়। পরবর্তীতে মামলার সংখ্যার তুলনায় ট্রাইব্যুনাল কম হওয়ায় মামলা নিস্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রিতা এবং হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক নিয়োগে সমস্যার কারণে ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠন না হওয়ায় জনগণের বিচার প্রাপ্তি বিঘ্নিত হয়। মামলা নিস্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রিতা দূরীকরণ এবং যথাসময়ে জনগণের বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতমাত নিয়ে আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
পারিবারিক আদালত বিল
পারিবারিক আদালত আইনের অধীনে বিচারিক আদালতে হওয়া মামলার রায়ের বিরুদ্ধে জেলা জজ মর্যাদার অন্যান্য আদালতেও আপিল করা যাবে। এছাড়া পারিবারিক আদালতের মামলার কোর্ট ফি ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০০ টাকার প্রস্তাব করে সংসদে একটি বিল উঠেছে। ‘পারিবারিক আদালত বিল, ২০২৩’ শিরোনামে বিলটি উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। পরে বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।
গত বছরের ৩ জুলাই বিলটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পায়। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল হওয়ায় ফ্যামিলি কোর্টস অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৫ বাতিল করে বাংলায় নতুন আইন করতে বিলটি আনা হয়েছে।
আগের আইনে বিচারিক আদালতে হওয়া এ সংক্রান্ত মামলার আপিল শুধু জেলা জজের আদালতে করার সুযোগ ছিল। এতে জেলা জজের ওপর মামলা শুনানির চাপ বাড়ছিল। মামলার চাপ কমাতেই আইনে এই সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, জেলা পর্যায়ে আরও জজ আছেন, নারী-শিশু বা শ্রম আদালত। সরকার গেজেট জারি করে কোনো জেলাতে আপিলের জন্য অতিরিক্ত মামলা আছে, সেক্ষেত্রে জেলা জজ পর্যায়ের অন্যান্য যে জজরা রয়েছেন, তাদেরও আপিল আদালত হিসেবে বিবেচনা করা যাবে।
উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছে, এই আদালতে মামলার কোর্ট ফি বর্তমানে ৫০ টাকা রয়েছে। সেটা বাড়িয়ে ২০০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে দাম্পত্য কলহ, তালাক, বিয়ে এবং শিশুদের ভরণপোষণের বিষয়গুলো রয়েছে।
এটুআই নামে নতুন সংস্থা করতে সংসদে বিল
পাবলিক সার্ভিসের ডিজিটাল রূপান্তর নিশ্চিত করা এবং নাগরিকের জীবনমানে সৃষ্ট সেবা অধিকতর কার্যকর ও টেকসই করার জন্য এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই) নামে একটি নতুন সংস্থা করা হচ্ছে। এজন্য এজেন্সি টু ইনোভেট বিল ২০২৩ জাতীয় সংসদে তোলা হয়েছে। মূলত বর্তমান ‘এসপায়ার টু ইনোভেট’এর প্রতিস্থাপক হিসেবে স্থায়ী কাঠামো হবে ‘এজেন্সি টু ইনোভেট’। বুধবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বিলটি সংসদে তোলেন।
বিলে বলা হয়েছে, এই আইন কার্যকর হওয়ার পর সরকার গেজেট প্রজ্ঞাপন দিয়ে এটুআই নামে একটি এজেন্সি প্রতিষ্ঠা করবে। এজেন্সি হবে একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা। এই সংস্থার ১৫ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী/উপমন্ত্রী হবেন এর সভাপতি।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “ডিজিটাল প্রযুক্তিভিত্তিক সেবার উদ্ভাবন ও উন্নয়ন, উদ্ভাবনী সংস্কৃতির বিকাশ, পাবলিক সার্ভিসের ইনক্লুসিভ ডিজিটাইজেশন ত্বরান্বিতকরণ, জ্ঞানভিত্তিক সুখী ও সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠা, জনগণের দোরগোড়ায় বিভিন্ন ডিজিটাল পরিষেবা প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালযে়র অধীন ‘একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ প্রকল্প এবং বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন ‘এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই)’ প্রকল্প নামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও দপ্তর/সংস্থাকে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সেবা প্রদানসহ ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন, ই-নথি, ডি-নথি, শিক্ষক বাতায়ন ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, জাতীয় তথ্য বাতায়ন, জাতীয় কলসেন্টার- ৩৩৩ ইত্যাদির মাধ্যমে স্বল্প সমযে় ও স্বল্প ব্যযে় উন্নত সেবা প্রদানে ‘এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই)’ মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে। পাবলিক সার্ভিসের ডিজিটাল রূপান্তর নিশ্চিতকরণ এবং নাগরিকের জীবনমানে সৃষ্ট সেবা অধিকতর কার্যকর ও টেকসই করার জন্য ‘এসপায়ার টু ইনোভেট’র প্রতিস্থাপকরূপে স্থায়ী কাঠামো হিসেবে ‘এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই)’ নামে একটি এজেন্সি প্রতিষ্ঠা করা এই আইনের অন্যতম উদ্দেশ্য।”
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নকে প্রকারান্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লালিত স্বপ্ন ‘সোনার বাংলা’র পুনর্জাগরণ বলা যেতে পারে। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই) আইন-২০২৩ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”
চলারপথে রিপোর্ট :
টাঙ্গাইলের সখীপুরে একসঙ্গে চলতি এসএসসি পরীক্ষায় বসেছে তিন সহোদর বোন। একসঙ্গে তিন বোনের পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের বিষয়টি সবার নজর কেড়েছে। তারা হলো সখীপুর পৌর শহরের ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শফিকুল ইসলামের তিন কন্যা সুমাইয়া ইসলাম, সাদিয়া ইসলাম ও রাবিয়া ইসলাম।
আজ ৩০ এপ্রিল রবিবার থেকে শুরু হওয়া পরীক্ষায় তারা উপজেলার সখীপুর পিএম পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। তারা উপজেলার সখীপুর পিএম পাইলট মডেল সরকারি স্কুল এন্ড কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে।
সখীপুর পিএম পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাইয়ুম হোসাইন বলেন, ওই তিন বোন মেধাবী শিক্ষার্থী। এর আগে তারা প্রাথমিক সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছে। এবারের পরীক্ষায়ও তারা কৃতিত্বের ধারাবাহিকতার স্বাক্ষর রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
তিন বোনের বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, মেয়েদের সন্তোষজনক ফলাফল এবং একই সঙ্গে আমার তিন কন্যার পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত আনন্দের। মেয়েদের তিনি উচ্চ শিক্ষা লাভে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা শেষে সাদিয়া ইসলাম বলেন, তিন বোন একসঙ্গে পরীক্ষা দেওয়ার মজাই আলাদা। আমাদের তিনজনের পরীক্ষা ভালো হয়েছে। ভালো ফলাফলের জন্য সবার দোয়া চেয়েছেন সাদিয়া ইসলাম।
জায়েদুল কবির ভাঙ্গি, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর :
গাজীপুর সদরের চান্দনা মৌজায় শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার সাথে সম্পর্ক যুক্ত একটি ১০তলা আবাসিক ভবনের খোঁজ পাওয়া গেছে। নথিপত্রে শেখ রেহানার নাম নেই। ভবনটির মালিকানায় তাঁর স্বামী শফিক আহমেদ সিদ্দিক, দেবর তারিক আহমেদ সিদ্দিক ও সাবেক এমপি নাজমুল হাসান পাপনের নাম রয়েছে। এলাকাবাসীর কাছে উক্ত ভবনটি রেহানার ভবন হিসেবে পরিচিত। ৬৭ শতাংশ জমির ওপর বিশাল আকৃতির ভবনটির দাম দলিলে দেখানো হয়েছে ৩০ লাখ টাকা। গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আস্তে আস্তে ভাড়াটিয়ারা ভবন ছেড়ে চলে যান। ভবনটি এখন একেবারে ফাঁকা।
সম্প্রতি চান্দনা মৌজার ৪৪ নম্বর প্লটে গিয়ে দেখা যায়, ভবনটির কলাপসিবল গেটে এখন তালা ঝুলছে। পুরো ভবনের কোথাও আলো নেই। সামনে বসে আছেন নিরাপত্তাকর্মী। নিরাপত্তাকর্মী জানালেন, ভবনটিতে কাউকে ঢুকতে দিতে মানা আছে। অনুরোধের পরও তাই ভবনে প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে। দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ভবনটির পাশে এ এস টি নিটওয়্যার নামের একটি পোশাক কারখানা রয়েছে। ওই কারখানার মালিক ভবনটি কেনার জন্য বায়না দলিল করেছিলেন। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধানের খবর পেয়ে কেনার প্রক্রিয়া থেকে তিনি সরে আসেন। এ বিষয়ে জানার জন্য চেষ্টা করা হলেও কারখানার মালিকপক্ষের সাথে যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হয়নি।
গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে রাজবাড়ী যাওয়ার রাস্তা ধরে কিছুদূর এগোনোর পর দেখা মেলে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের। গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিপরীতে উত্তর পাশে ওই ১০তলা ভবনের অবস্থান। ওই এলাকার মানুষের সাথে কথা হলে তারা জানান, বাড়িটির মালিক শেখ রেহানা বলে জানেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, বাড়িটির প্রকৃত মালিক শেখ রেহানার স্বামী শফিক আহমেদ সিদ্দিক। তাঁর সাথে শেখ হাসিনার সাবেক সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের মালিকানাও আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শফিক আহমেদ সিদ্দিক গাজীপুরের সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের ২০০১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৮ শতাংশ জমির দলিল করেন, দলিল নম্বর ৩৫৫৯। একই তারিখে তিনি আরও ১৫.৫ শতাংশ জমির দলিল করেন, যার দলিল নম্বর ৩৫৬০। শফিক আহমেদ সিদ্দিকের ছোট ভাই তারিক আহমেদ সিদ্দিক একই চৌহদ্দিতে ২০০৪ সালের ২১ মার্চ ১৬.৫০ শতাংশ জমি কেনেন। গাজীপুরের সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল নম্বর ৫৭৮৪।
দুদক সূত্রের ভাষ্য, শফিক আহমেদ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে। এই অবস্থায় ১০তলা ভবনের ওই স্থাবর সম্পদটি অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন বলে গোপন সূত্রে জানতে পেরেছেন অনুসন্ধান কর্মকর্তারা। অনুসন্ধান নিষ্পত্তির আগে ওই সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে অনুসন্ধানে ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে। এ কারণে ওই সম্পদ জব্দের আদেশ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে দুদক ইতোমধ্যে ঢাকা মহানগর স্পেশাল জজের কাছে আবেদন করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সাত সদস্যের বিশেষ টিম ওই ১০তলা ভবনটির সব বিষয় অনুসন্ধান করছে। ভবনটির দলিলসহ অন্যান্য নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। জমি কেনা ও ভবনটি নির্মাণে অর্থের উৎস কী– সেটা জানার চেষ্টা চলছে।