চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জেলা যুবলীগ নেতা ও ওয়ার্ড মেম্বারের লোকজনদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ ১৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার গোপীনাথপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আহত হয় সাতজন।
গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগের কসবা উপজেলার আহ্বায়ক মান্নান জাহাঙ্গীর জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুবলীগের সদস্য তসলিমুর রেজা ও ওই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার মুক্তার হোসেনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এর সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার বিকালে গোপীনাথপুর বাজারে দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে উভয় পক্ষের সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে একটি মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত তসলিম রেজা ও মুক্তার হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অন্যরা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কসবা-আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী টানা দুই বারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। প্রতীক বরাদ্দের পর ১৯ ডিসেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪ দিন নিজ নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ করে প্রচারণা চালিয়েছেন। এসময় তিনি ওলী আউলিয়ার মাজার জিয়ারত করেছেন। বেশ কয়েকটি নির্বাচনী পথসভায় যোগদান করে নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন। প্রতিটি সভায় দলীয় নেতাকর্মীসহ বিপুল সংখ্যক মানুষের স্বতস্ফুর্ত উপস্থিতি ছিল।
গতকাল শুক্রবার বিকালে আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের কর্মমঠ খেলার মাঠে এক বিশাল নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতার এক পর্যায়ে আবেগ আপ্লুত কন্ঠে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন ‘আমার মুরব্বিয়ান, আমি সত্যিকারের এতিম’। আপনাদেরকে দেখে আমি আমার কষ্ট ভুলে যাই। আপনাদের পাশে থেকে আমি আমার কষ্ট ভুলে যাই। আজকে এইটুকু দাবি করে গেলাম আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে আমাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন। আমি আবার ফিরে আসবো। আমি আপনাদের থেকে দুরে থাকতে পারি না। আমি আবার ফিরে আসবো ইনশাল্লাহ। আপনাদের উন্নয়নের দায়িত্ব আমার। আমি আপনাদেরকে ভালোবাসি’। মন্ত্রীর এমন আবেগ তাড়িত বক্তৃতায় উপস্থিত লোকজনের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। মুহুর্তেই বিশাল মঞ্চে নিরবতা নেমে আসে।
তিনি আরও বলেন, সারা বিশ্বের মানুষের কাছে প্রমান করতে হবে জনগন নির্বাচন চায়। তাই সন্তান হিসেবে আপনাদের কাছে আমার দাবী ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নৌকা মার্কায় আমাকে ভোট দিবেন। আমি সারা বিশ্বে দেখাবো যে আমার মানুষ আমাকে কত ভালোবাসেন। এসময় উপস্থিত লোকজন দু’হাত উঁচু করে তাকে সমর্থন জানান।
জানা যায়, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর, সংবিধান প্রণেতা, বরেণ্য আইনজীবি, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এড. সিরাজুল হক ও জাহানারা হকের সুযোগ্য সন্তুান আনিসুল হক। তাঁর এক ভাই আরিফুল হক রণী ও এক বোন সায়মা ইসলাম। তাঁর সহধর্মীনি নূর আমাতুল্লাহ রিনা হক। আনিসুল হকের মা-বাবাসহ পরিবারের সবাই প্রয়াত হয়েছেন।
আনিসুল হকের ছোট ভাই আরিফুল হক ২০১৭ সালের ১০ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রে মারা যান। বড় বোন সায়মা ইসলাম মৃত্যু বরণ করেন ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই। বিয়ের কিছু দিন পর ১৯৯১ সালের ২ জানুয়ারি সড়ক দূর্ঘটনায় স্ত্রী নূর আমাতুল্লা রিনা হকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। তাঁর বাবা এড. সিরাজুল হক প্রয়াত হন ২০০২ সালের ২৮ অক্টোবর। ২০২০ সালের ১৮ এপ্রিল রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আনিসুল হকের মা জাহানারা হক ইন্তেকাল করেন।
মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ কামাল ভূইয়ার সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম চৌধুরী দীপক। বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাকজিল খলিফা কাজল প্রমুখ। উল্লেখ্য, কসবা-আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪) আসনে আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী সহ তিনজন প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। অপর দুজন হলেন এনপিপি ও তরিকাত ফেডারেশনের প্রার্থী।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাইরের কোনো দেশকে চাপ দিয়ে বাংলাদেশকে কোনো কিছুই করানো সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি সার্বভৌম দেশ। জননেত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। বাংলাদেশের এখন নিজের পায়ে দাঁড়ানোর মতো ক্ষমতা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে কসবা উপজেলার জয়নগর লিয়াকত আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আনিসুল হক আরো বলেন, মার্কিন প্রতিনিধি দল আমার সঙ্গে দেখা করেছে। তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায় এবং এখানে নির্বাচনে যাতে সহিংসতা না হয় সেটাই তাদের কাম্য। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ জনগণের কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ একটা অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করার।
র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ওনারা বলেছেন, র্যাব অনেক ভালো কাজ করছে। তারা র্যাবের বিষয়ে বিবেচনা করবেন।
এর আগে মন্ত্রী উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
কসবা থেকে অপহৃত স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। অপহরণের ঘটনায় জড়িত স্কুল শিক্ষক ইকবাল হোসেনকে (৩২) গ্রেফতার করা হয়েছে।
৩ ডিসেম্বর রবিবার চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থানার কাঠগড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব জানায়, গ্রেফতারকৃত ইকবাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার নিবড়া এলাকার আরু মিয়ার ছেলে। তিনি ওই এলাকার একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক। তারই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন ইকবাল। তার উত্ত্যক্তের কারণে একপর্যায়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেন।
গত ২৮ নভেম্বর ভুক্তভোগী ছাত্রীকে বাড়ির পাশ থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যান ইকবাল। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে কসবা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করেন। এতে ইকবালকে একমাত্র আসামি করা হয়।
চট্টগ্রাম র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. নুরুল আবছার বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে রবিবার গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কসবা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরকারের নতুন মন্ত্রিসভায় আবারও আইন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (আখাউড়া-কসবা) আসনের সংসদ সদস্য আনিসুল হক।
আজ ১১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, আনিসুল হক বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা, জাতীয় চারনেতা হত্যা মামলার প্রধান কৌশলী। এ ছাড়া, বিডিআর হত্যা মামলা, দুদকের মামলাসহ রাষ্ট্রীয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলা পরিচালনা করেছেন। ক্লিন ইমেজের মানুষ হিসেবে পরিচিত আনিসুল হক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
আনিসুল হকের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার পানিয়ারুপ গ্রামে। তিনি সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী। আনিসুল হকের প্রয়াত পিতা সিরাজুল হক ওরফে বাচ্চু ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ঘনিষ্ঠজন। আনিসুল হকের বাবা-মা দু’জনই মুক্তিযোদ্ধা।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় দ্বীপা রানী কর (২২) নামে এক গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীসহ পরিবারের বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার রাতে উপজেলা কুটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দ্বীপা রানী করের স্বামী টুটন কুমার সাহা (৩৫) কে গ্রেফতার করেছে কসবা থানা পুলিশ। নিহত দীপা রানী কর কুমিল্লা জেলার বাঙরা থানার খোশঘর গ্রামের কালিপদ চন্দ্র করের মেয়ে।
সকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে কসবা থানায় তিন জনকে আসামী করে অভিযোগ দায়ের করেছেন। আগামী শুক্রবারে বাবার বাড়ী যাওয়ার কথা ছিলো দ্বীপার। তাদের একটি এক বছরের কন্যা সন্তান রয়েছে।
নিহত দ্বীপা রানী করের মা সুমা রানী কর জানান, তিন বছর আগে পারিবারিকভাবে কসবা উপজেলার কুটি গ্রামের বাসিন্দা সমীর সাহার ছেলে টুটন কুমার সাহার সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তার মেয়েকে মানসিক ও শারিরীক ভাবে নির্যাতন করতো। মেয়েকে নিতে আসলে বিভিন্ন বাহানা দেখিয়ে বাবার বাড়িতে যেতে দিতোনা শশুরবাড়ী লোকজন। তাদের নির্যাতন সইতে না পেরে এক বছর আগে পালিয়ে আমাদের বাড়িতে চলে যায়। এনিয়ে সালিশ বৈঠক করলে তাদের মেয়েকে নিয়ে সংসার করবেনা বলে হুমকি দেয় তারা। হিন্দু হওয়ায় মেয়েকে স্বামী সংসার করানোর চেষ্টায় তাদের হুমকির ভয়ে কোনো সালিশ ছাড়াই আবারো স্বামীর বাড়িতে পাঠানো হয়। এরপর আরও বেড়ে যায় অত্যাচারের মাত্রা। তাদের ভয়ে এক বছর ধরে মেয়েকে দেখতে আসিনা আমরা। এই সপ্তাহে দীপার বড় চাচা প্রবাস থেকে আসার কথা। মেয়ে বলেছিলো জেঠা আসলে আগামী শুক্রবার আমাদের বাড়িতে জেঠাকে দেখতে যাবে। তা আর হলোনা। পাষন্ড শ্বশুর বাড়ীর লোকজন মেয়েটাকে মেরে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছে বলে অঝোঁরে কাঁদতে থাকে মা সুমা রানী কর। অদুরে দাড়িয়ে নীরবে চোখ মুছছিলেন বাবা কালিপদ চন্দ্র কর। তাদের মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন তারা।
কসবা থানা ওসি (তদন্ত) রিপন দাস জানান, এ বিষয়ে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। নিহতের স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।