চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় রেলওয়ে প্রকল্পের রেললাইনে গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন শাহানুর সরকার নামে এক ব্যক্তি। তার দাবি, আখাউড়া-আগরতলা নবনির্মিত রেললাইন তার মালিকানাধীন জায়গার ওপর দিয়ে নেওয়া হয়েছে। অথচ তাকে জমি অধিগ্রহণের টাকা দেওয়া হয়নি।
তার এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রেলওয়ে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন তদন্ত শুরু করে। ১৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রেলওয়ের প্রকল্পের জায়গা মাপজোখ করে সেখানে শাহানুরের কোনো জায়গা পায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৩ আগস্ট রবিবার আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের শিবনগর এলাকায় সীমান্তের শূন্য রেখার পাশে আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্পে গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন শাহানুর সরকার। তিনি ওই ইউনিয়নের খারকোট এলাকার মৃত খোরশেদ মিয়ার ছেলে।
সেসময় তিনি সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্পে তার ২৬ শতাংশ জায়গা পড়েছে। এর মধ্যে শিবনগর মৌজায় ১৬৮ দাগের সাড়ে ৮ শতক ও ১৬৫ দাগের সাড়ে ১৭ শতক জমি রয়েছে। এখন ওই জমির ওপরে রেললাইন তৈরির কাজ প্রায় শেষ হতে যাচ্ছে। কিন্তু তিনি সেই জমি অধিগ্রহণের কোনো টাকা পাননি।
শাহানুর সরকারের এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রেলওয়ে মন্ত্রণালয় ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিক অবস্থায় ১৪ আগস্ট আখাউড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রশান্ত চক্রবর্তী সেই জায়গা পরিদর্শন করেন। বৃহস্পতিবার সহকারী কমিশনার (ভূমি), জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসন ও রেলওয়ের সার্ভেয়ার রেললাইন প্রকল্প এলাকা মাপজোখ করেন। সারাদিন মাপজোখ করে অভিযোগকারী শাহানুর সরকারের কোনো জায়গা রেললাইনের ওপর পাওয়া যায়নি।
আখাউড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা ও সার্ভেয়ার এসেছেন। তারা ভূমি অধিগ্রহণ ও রেললাইনের অ্যালাইনমেন্ট রেফারেন্স ধরেছেন। রাস্তা থেকে তারা মেপে আসছেন। তাদের মাপে প্রতীয়মান হয়, অধিগ্রহণ করা জায়গাতেই রেললাইন হয়েছে। কারও ব্যক্তিগত জায়গায় রেললাইন হয়নি।
তিনি আরো বলেন, আমরা অভিযোগকারী ব্যক্তিকে বুঝিয়ে বলেছি তার জায়গায় রেললাইন হয়নি। তার যে একটি ভুল ধারণা ছিল, পুরো ম্যাপ দেখে তাকে আমরা বুঝিয়ে দিয়েছি। উনি বলেছেন বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। শাহানুর সরকার স্থানীয় এক আমিন দিয়ে জায়গাটি পরিমাপ করিয়েছিলেন। আমরা সেই আমিনকে আসতে বলেছিলাম। কিন্তু গত দুইদিন সময় নিয়েও তিনি আসেননি। শাহানুরকে আমিন কী বুঝিয়েছে, তা আমরা জানি না। তবে শাহানুর সাহেব জানিয়েছেন যে, আমিন তাকে বলেছেন রেললাইন যেখানে হওয়ার কথা ছিল তা সরে গেছে। অথচ মাপজোখ করার পর দেখা গেলো, ভূমি অধিগ্রহণ করা জায়গাতেই রেললাইন হয়েছে। আমিন তাকে যা বলেছিলেন, তা ঠিক না।
তবে অভিযোগকারী শাহানুর সরকার বলেন, উনারা আমাকে ম্যাপ অনুযায়ী আমার জায়গা দিচ্ছেন না। কিন্তু দলিল ও বিএস অনুযায়ী আমার জায়গা অধিগ্রহণে পড়েছে। উনারা এখানে-সেখানে আমার জায়গা দেখাচ্ছেন। আমার আমিন আসেননি। তার বাড়িতে গিয়েও অনেক অনুরোধ করেছিলাম আসতে, তবুও সে আসেননি। তাহলে আমার জায়গা কোথায়? আমি এই বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেব।
চলারপথে রিপোর্ট :
অপারেশন ডেভিল হান্টের আওতায় আখাউড়ায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা, মাদক কারবারি ও সাজাপ্রাপ্ত গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামিসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা একজন, মাদক কারবারি একজন ও সাজাপ্রাপ্ত গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত চারজন রয়েছে। এসময় এক মাদক কারবারির কাছ থেকে ১ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।
১৬ ফেব্রুয়ারি রবিবার দুপুরে তাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন-উপজেলা ধরখার ইউনিয়নের নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ঘোলখার গ্রামের মৃত খোরশেদ আলমের ছেলে রানা হাজারী, মোগড়া এলাকার মো. খুরশিদ মিয়া, উত্তর ইউনিয়নের চানপুর এলাকার হৃদয় চন্দ্র দাস, ভবানীপুর গ্রামের তাসলিমা আক্তার, পৌর শহরের তারাগন এলাকার মো. সজীব মিয়া ও হাসিমপুর গ্রামের সফিকুল ইসলাম।
পুলিশ জানায়, পুলিশের অপারেশন ডেভিল হান্টের অংশ হিসেবে গত ২৪ ঘণ্টায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এসময় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা, মাদক কারবারি ও সাজাপ্রাপ্ত গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামিসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ছমিউদ্দিন বলেন, আজ দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় আরফিন ভূঁইয়া নামে এক স্কুল ছাত্রকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আরফিন ভূঁইয়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের হীরাপুর শহীদ নোয়াব মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র। সে ওই ইউনিয়নের বড় কুড়িপাইকা জমাদ্দার বাড়ির আল আমিন ভূঁইয়ার ছেলে।
আজ ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। আহত আরফিনকে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরফিনের দাদা ওহিদ ভূঁইয়া বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কিছু যুবক প্রায়ই স্কুলের সামনে ছাত্রীদেরকে উত্যক্ত করে। রবিবার সকালে ওই বিদ্যালয়ের এক ছাত্রসহ কয়েকজন যুবক ছাত্রীদেরকে উত্যক্ত করলে আরফিনসহ কয়েকজন ছাত্র প্রতিবাদ করে।
এতে ওই যুবকরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের সাথেও খারাপ আচরণ করে। সোমবার সকালে আরফিন ভূইয়া স্কুলের যাওয়ার পথে ৪/৫ জন যুবক তাকে বেদম মারধর করে। এক পর্যায়ে আশে পাশের লোকজন এগিয়ে এলে যুবকরা চলে যায়।
জানতে চাইলে অহিদ ভূঁইয়া বলেন, ছাত্রীদেরকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় বখাটেরা আমার নাতিকে মারধর করেছে। নাদিম, রোমান, হৃদয়, শাকিল ও অন্তরকে আমার নাতি চিনতে পেরেছে।
এ ব্যাপারে হীরাপুর শহীদ নোয়াব মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, মোঃ সাজ্জাত হোসেন বলেন আরফিন ভূঁইয়া আমার স্কুলের ছাত্র। অত্র বিদ্যালয়ের ১০ ম শ্রেণীর ছাত্র হৃদয়সহ বহিরাগতরা আরফিনকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় হৃদয়ের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসাদুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে আজ ২৬ মার্চ রবিবার সূর্যোদায়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও ৩১ বার তোপধ্বনি মাধ্যমে দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়।
পরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে স্মৃতি সৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, উপজেলা আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সংগঠন, আখাউড়া পৌরসভা, থানা পুলিশ, আখাউড়া প্রেসক্লাব, সাব রেজিস্ট্রি অফিস, সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, শহীদ স্মৃতি কলেজ, আখাউড়া নাছরীন নবী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রক্তদানের সংগঠন আত্মীয়সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠানে এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ মুরাদ হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগ্যজাই মারমা, আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও আখাউড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক তাকজিল খলিফা কাজল, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ জামসেদ শাহ্, বীর মুক্তিযোদ্ধা বাহার মালদার, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন সফিক আলেয়া, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ হিমেল খান, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আবু ইউসুফ নুরুল্লাহ, আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসাদুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান এম. এ. মতিন, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাড. আব্দুল্লাহ ভূঁইয়া বাদল, যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মোঃ নাজিম, আব্দুল মমিন বাবুল, ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন বেগম শাপলু, সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন নয়ন প্রমুখ।
পরে সকাল সকাল ৭টায় উপজেলার দরুইন গ্রামে বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোস্তাফা কামালের সমাধিতে পুষ্প স্তবক অর্পন এবং ফাতেহা পাঠ করা হয়। সকাল সাড়ে ৭টায় মোগড়া ইউনিয়নের গঙ্গাসাগর গণকবরে পুষ্প স্তবক অর্পন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে প্রশাসন।
সকাল সাড়ে ৮টায় উপজেলা পরিষদ মাঠে আনুষ্ঠানিক জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পুলিশ আনসার ও ফায়ার সার্ভিস কর্তৃক কুচকাওয়াজ এবং স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণে শরীর চর্চা পরিবেশিত হয়।
সকাল ১০টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা দেওয়া হয়।
মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, আখাউড়া থেকে :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় বিয়ের আটদিনের মাথায় স্বামীকে খুন করেছে স্ত্রী। গতকাল শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে পৌরসভার মসজিদ পাড়ায় এই হত্যাকান্ড ঘটে। পুলিশ অভিযুক্ত স্ত্রীকে আটক করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই নারী হত্যার কথা স্বীকার করে দু’টি কারণ বলেছেন।
নিহত ব্যক্তি হলো মো. হাসান মিয়া (২৮)। কুমিল্লার এই যুবক আখাউড়া পৌরসভার মসজিদ পাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। আটক নারী আখাউড়া পৌরসভার শান্তিনগর গ্রামের জান্নাত আক্তার (২৩)।
পুলিশ ভোরে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেনােরল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠিয়েছে। তবে শনিবার বেলা ১২টা নাগাদ থানায় কোনো মামলা হয়নি।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ছমিউদ্দিন আটক স্ত্রীর বরাত দিয়ে জানান, গত ৯ মে তাদের বিয়ে হয়। আরেকটি ছেলের সাথে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। বিয়ে পর স্বামী বেশি বেশি শাররিক সম্পর্ক করলে সেটি তিনি মেনে নিতে পারছিলেন না। শুক্রবার রাতে একাধিকবার শারিরিক সম্পর্কে আপত্তি জানান। স্বামী এতে রাজি না হলে কৌশলে ঘুমের ওষুধ খাওয়ান। পরে বালিশ চাপা দিয়ে স্বামীকে হত্যা করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র ঈদুল আযহা সামনে আখাউড়ায় পশু পালনে ব্যস্ত রয়েছেন কৃষক ও খামারিরা। ছোট বড় খামারি ও কৃষকরা গরু, ছাগল, মহিষ, পালন করছেন তারা। তবে এবছর চাহিদার চেয়ে অনেক কম পশু পালন হচ্ছে। গো-খাদ্যসহ অন্যান্য খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। মূল্য ভালো পেলে কোরবানির পশু বিক্রি করে লাভবান হবার আশা করছেন খামারিরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পৌর শহরসহ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ৪ হাজার ৭০৩টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এরমধ্যে গরু-মহিষ ৩ হাজার ৬৬০, ছাগল-ভেড়া ১ হাজার ৪৩টি।
আখাউড়া উপজেলায় নিয়মিত খামারী আছে ৭০৪ জন। এছাড়াও অনিয়মিত খামারী স্বল্প সময়ে বিক্রির জন্য পশু প্রস্তুত করছে বলে জানা যায়। পশু পালন লাভজনক হওয়ায় অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে গরু পালন করছেন। এবছর আখাউড়া উপজেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ১১ হাজারের বেশি। এরমধ্যে গরু-মহিষ ৮ হাজার ৯০০টি এবং ছাগল-ভেড়া ২ হাজার ৫০০টি । বাইরের জেলা-উপজেলা থেকে আনীত পশুর মাধ্যমে ঘাটতি পূরণ করা হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল থাকায় সদর উপজেলাসহ অন্যান্য স্থান থেকে পশু আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
সরেজমিনে কয়েকটি খামার ঘুরে খামারিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঈদকে উপলক্ষে গরু লালন পালন করছেন। ঘাস, খড়, খৈল ভুষিসহ পুষ্টিকর খাবারের মাধ্যমে দেশীয় জাতের গরুই বেশী লালন পালন করছেন বেশি। আশা করছেন লাভবান হবেন।উত্তর ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের প্রবাস ফেরত খামার মালিক রবিউল্লাহ বলেন, তার প্রবাসী বড় ভাই মো. হাবিব বিগত ৫ বছর আগে শখ করে কয়েকটি গরু দিয়ে খামার শুরু করেন। দেশে ফিরে রবিউল্লাহ এখন খামারটি পরিচালনা করছেন। বর্তমানে ২৫টি বড় গরু রয়েছে। দেড় বছর আগে পাবনা থেকে গরুগুলো কিনে এনেছিলেন। দেড় বছর লালন পালন করেছেন। গরু কেনা, শ্রমিকের বেতন, লালান পালন, খাবারসহ অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। আশা করছেন খরচ বাদ দিয়ে ৭/৮ লাখ টাকা লাভ হবে।
দক্ষিণ ইউনিয়নের বঙ্গের চর গ্রামের মো. ইছহাক মিয়া জানান, তিনি বিগত ৫ বছর ধরে গরু লালন পালন করেন। কোরবানিকে সামনে রেখে তার খামারে ২২টি ছোট বড় গরু রয়েছে। দেশী জাতের পাশাপাশি, শাহিওয়াল, ফ্রিজিয়াম জাতের। ঘাষ, খের, ভূষি ইত্যাদি খাবার খাওয়ান তিনি। ভালো দাম পেলে লাভবান হবার আশা করছেন তিনি।
আব্দুল্লাহপুর গ্রামের খামার মালিক সোহাগ ভূঁইয়া বলেন, প্রতিবছরই কোরবানীর ঈদকে কেন্দ্র করে গরু লালন পালন করি। তবে এবার ছোট বড় ১২টি গরু লালন পালন করছেন। আশা করছেন তিনি লাভবান হবেন।
আখাউড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জুয়েল মজুমদার বলেন, এপ্রিল/২৪ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে আখাউড়া উপজেলায় ৪ হাজার ৭০৩টি পশু লালন পালন হয়েছে। উপজেলায় গরু-মহিষের চাহিদা প্রায় সাড়ে ১১ হাজার। খামারিদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষার পাশাপাশি খামারিদের সচেতন ও তদারকি করছি। মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার না করে দেশীয় খাবার খাইয়ে পশু পালনের জন্য কৃষক ও খামারীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।