চলারপথে রিপোর্ট :
পাবনার চাটমোহরে ১০ লাখ টাকার নিষিদ্ধ কারেন্ট ও চায়না দুয়ারি জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। দেশীয় প্রজাতির মাছের উৎপাদন বাড়ানো ও রক্ষার্থে আজ ২৪ আগস্ট বৃহস্পতিবার এ অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভ্রাম্যমাণ আদালতটি পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোছা: তানজিনা খাতুন।
চাটমোহর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তরার কার্যালয়ে সূত্রে জানা যায়, নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার বন্ধে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় এ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় উপজেলার বিলচলন খলিশাগারী, বোয়ালমারী ও ডাকাতের ভিটা এলাকার বিলে অভিযান চালিয়ে ২০০টি চায়না দুয়ারি জাল ও ১ লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। যার আনুমানিক বাজার মূল্য সব মিলিয়ে ১০ লাখ টাকা। পরে জব্দকৃত জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
এ ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার সময় সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল মতিন, উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার আব্দুল্লাহ আল নোমান ও চাটমোহর থানা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল মতিন জানান, উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের তিনটি বিলে অভিযান চালিয়ে ১০ লক্ষাধিক টাকা সমমূল্যের কারেন্ট ও চায়না দুয়ারি জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। এটি শুধুমাত্র চলনবিল অধ্যূষিত এলাকায় আমরা পরিচালনা করবো। কেননা ইতিমধ্যেই অসাধু মাছ শিকারীরা ছোট ছোট পোনা মাছ নিধন করছেন বলে আমার নিকট অভিযোগ এসেছে।
ডেস্ক রিপোর্ট :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রতীক পাওয়া মাত্রই প্রাথীরা তাদের প্রচারণা শুরু করেছেন। এক্ষেত্রে প্রার্থীদের মানতে হবে ইসির নির্দেশনা। সেখানে সেখানে পোস্টার, সভা-সমাবেশ করা, যখন-তখন মাইক ব্যবহারসহ নানা ধরনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নিয়ম মানতে হবে প্রার্থী ও ভোটারদের।
এসব নিয়ম মানাতে নির্বাচন কমিশন জারি করেছে বিধিনিষেধ।
প্রচার-প্রচারণার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা-২০০৮ ও এর সংশোধনী (২০১৩) মেনে চলার জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সারা দেশে পাঠানো ওই নির্দেশনা লঙ্ঘন শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি কোনো ট্রাক, বাস, মোটরসাইকেল, নৌযান, ট্রেন কিংবা অন্য কোনো যান্ত্রিক যানবাহন নিয়ে মিছিল করা যাবে না।
কিংবা কোনো শোডাউন করা যাবে না; মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়ও মিছিল কিংবা শোডাউন করা যাবে না। সিটি করপোরেশন ও পৌর এলাকায় অবস্থিত দালান, বিল্ডিং, গাছ, বেড়া, বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের খুঁটিতে বা যানবাহনে পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল লাগানো যাবে না; তবে দেশের যেকোনো স্থানে পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল রশিতে ঝুলিয়ে টাঙানো যাবে।
আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, মসজিদ, মন্দির, গির্জা বা অন্য কোনো ধর্মীয় উপাসনালয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করা যাবে না; মাইকে নির্বাচনী প্রচারণা দুপুর ২টা হতে রাত ৮টার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে; নির্বাচনী প্রচারণার জন্য প্রার্থীর ছবি বা প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণামূলক কোনো বক্তব্য বা কোনো শার্ট, জ্যাকেট, ফতুয়া ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না; নির্বাচনী ক্যাম্পে কোনো কোমল পানীয় বা খাদ্য পরিবেশন বা কোনো উপঢৌকন প্রদান করাও যাবে না।
বিধিমালায় আরো বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠানে চাঁদা বা অনুদান দেওয়া যাবে না; সরকারি ডাকবাংলো, রেস্টহাউস, সার্কিট হাউস বা কোনো সরকারি কার্যালয়কে কোনো দল বা প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে প্রচারের স্থান হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না; নির্বাচন-পূর্ব সময়ে কোনো সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে রাজস্ব বা উন্নয়ন তহবিলভুক্ত কোনো প্রকল্পের অনুমোদন, ঘোষণা বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কিংবা ফলক উন্মোচনও করা যাবে না।
নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো গেট বা তোরণ নির্মাণ করা যাবে না কিংবা চলাচলের পথে কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না; নির্বাচনী প্রচারণার জন্য ৪০০ বর্গফুটের বেশি স্থান নিয়ে কোনো প্যান্ডেল তৈরি করা যাবে না; নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে বিদ্যুতের সাহায্যে কোনো প্রকার আলোকসজ্জা করা যাবে না; কোনো সড়ক কিংবা জনগণের চলাচলের স্থানে নির্বাচনী ক্যাম্প করা যাবে না।
বিধিমালায় পোস্টার ঝুলিয়ে লাগানোর কথা বলা হলেও নির্বাচনের সময় দেয়াল লিখনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুধু দেয়াল নয়, কোনো দালান, থাম, বাড়ি বা ঘরের ছাদ, সেতু, সড়কদ্বীপ, রোড ডিভাইডার, যানবাহন বা অন্য কোনো স্থাপনায়ও প্রচারণামূলক কোনো লিখন বা অঙ্কন করা যাবে না।
বিধিমালায় বলা হয়েছে, কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহৃত পোস্টার ও ব্যানার সাদাকালো হতে হবে; পোস্টারের সাইজ অনধিক ৬০ বাই ৪৫ সেন্টিমিটার এবং ব্যানার অনধিক ৩ বাই ১ মিটার হতে হবে। পোস্টার বা ব্যানারে প্রার্থীর নিজের প্রতীক ও ছবি ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তির ছবি বা প্রতীক প্রকাশ করা যাবে না বলেও বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রার্থীকে আইনে নির্ধারিত ব্যয়সীমার মধ্যে থেকে প্রচারে নির্বাচনী ব্যয় করতে হবে। এবার ভোটারপ্রতি ব্যয় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে ১০ টাকা। তবে কোনো আসনে ভোটার সংখ্যা যাই- হোক না কেন সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবেন প্রার্থীরা। এই ব্যয় একটি নির্দিষ্ট ব্যাংক হিসাব থেকে বহন করতে হবে। সব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে প্রতিদিনের ব্যয় ভাউচারসহ সংরক্ষণ করে নির্বাচনের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে হবে।
প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে আচরণবিধি মেনে প্রার্থীদের প্রচারণা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম। তিনি বলেন, আমাদের বার্তা একটিই। প্রত্যেক প্রার্থী যেন নির্বাচনে আচরণবিধি মেনে প্রচার-প্রচারণা করেন। ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী সারা দেশে নির্বাচন মনিটারিংয়ে কাজ করছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। আচরণবিধি লঙ্ঘন হলে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে প্রার্থী ও তাঁদের অনুসারীদের।’ এ ক্ষেত্রে প্রার্থিতাও বাতিল হতে পারে বলে তিনি জানান।
অনলাইন ডেস্ক :
আজ জাতীয় চা দিবস। এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ‘স্মার্ট বাংলাদেশের সংকল্প, রপ্তানিমুখী চা শিল্প’। দিবসটি উদযাপনে বেশ কিছু কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। আলোচনা অনুষ্ঠান এবং মেলা আয়োজন করা হয়েছে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
চা দিবস উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে চা শিল্পের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত নানাবিধ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলে দেশের চা শিল্প এখন টেকসই ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে। গত দুই দশকে উত্তরাঞ্চলে সমতল ভূমিতে চা আবাদে বিপ্লব ঘটে গেছে।
চা দিবস উদযাপনের বিস্তারিত তুলে ধরতে ব্রিফিং করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আজ সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর আগমনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হবে। চায়ের ওপর তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে চা শিল্পে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৮টি ক্যাটেগরিতে বিভিন্ন চা কোম্পানি ও ব্যক্তির হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, দেশে বর্তমানে ১৬৮টি বৃহৎ চা বাগান এবং প্রায় ৮ হাজার ক্ষুদ্র চা বাগান রয়েছে। চা শিল্পের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর যুগান্তকারী সব উদ্যোগের ধারাবাহিকতা ও সরকারের নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে দেশের চা শিল্প টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
আরো উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব সেলিম উদ্দিন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান, বাংলাদেশ ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ প্রমুখ।
চলারপথে ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘করোনা অতিমারী ও ইউক্রেন যুদ্ধ- সবকিছু মিলিয়ে সারা বিশ্বের অর্থনীতি মন্দার কবলে, সেখানে আমাদের প্রচেষ্টা দেশের অর্থনীতি গতিশীল রাখা। সেজন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ করতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশ একদিন উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হবে।’
আজ ২৬ ফেব্রুয়ারি রবিবার সকাল ১০টায় প্রয়াত ডা. এস এ মালেকের স্মরণসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু পরিষদ এ সভার আয়োজন করে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. এস এ মালেক আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন। গত বছরের ৬ ডিসেম্বর তিনি মারা যান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্কুল জীবন থেকে রাজনীতি করি। কলেজে ছাত্রলীগ করতাম, কলেজে ভিপিও ছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্রলীগে সম্পৃক্ত ছিলাম। কখনও নেতৃত্ব নেওয়ার চিন্তা করিনি। দলের জন্য যখন প্রয়োজন হয়েছে, আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেটাই পালন করেছি। পঁচাত্তরের পরেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। তখনও আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নিতে হবে- সেটা ভাবিনি। বঙ্গবন্ধু পরিষদ গঠন হয়েছে শুনে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করেছি। ডা. মালেক আমাকে চাপ দিতেন, তোমাকে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নিতে হবে। সত্যি কথা বলতে, আমি দলের দায়িত্ব নেওয়ায় ডা. মালেকের অনেক অবদান রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ডা. মালেককে আমরা ছোটবেলা থেকে চিনি, তার সঙ্গে আমাদের পারিবারিকভাবে সম্পর্ক রয়েছে। তিনি সবসময় রাজনীতি সচেতন ছিলেন। দেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে তার ভূমিকা ছিল। মুক্তিযুদ্ধে নিজের হাতে অস্ত্র তুলে প্রতিরোধ করেন। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর মুশতাক সংসদ সদস্যদের বৈঠকে ডাকে। তবে ডা. মালেকসহ অনেক সংসদ সদস্য সে বৈঠকে যোগ দেননি। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। সেখানে টিকতে না পেরে তিনি ভারতে চলে যান।’
এস এ মালেকের স্মৃতিচারণ করে সরকারপ্রধান আরো বলেন, ‘১৯৯৬ সালে ডা. মালেক আমার রাজনৈতিক উপদেষ্টা থাকাকালে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন। তার মধ্যে কোনো অহমিকা ছিল না। তিনি হোমিওপ্যাথির প্র্যাকটিস করতেন, বিনামূল্যে ওষুধও দিতেন। তিনি অনেক বৈরী পরিবেশে জাতির পিতার আদর্শকে এগিয়ে নিয়েছেন এবং নেতাকর্মীদের মধ্যেও সেটি দক্ষভাবে ছড়িয়ে গিয়েছেন। লেখালেখিতেও তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রচার করেছেন।’
বঙ্গবন্ধু পরিষদ নিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ ও তার আদর্শ তুলে ধরতে ঢাবি উপাচার্য মতিন চৌধুরী বঙ্গবন্ধু পরিষদ গড়ে তোলেন। সেসময় বঙ্গবন্ধুর নাম নেওয়াও নিষিদ্ধ ছিল। সে সময় তারা একটি বইও প্রকাশ করেন। বিভিন্ন লেখনীতে বঙ্গবন্ধুর কর্ম জাতির সামনে তুলে ধরেন। তবে তাদেরকে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
সভায় আলোচনায় অংশ নেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আবদুল খালেক, বিএসএমএমইউর সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান, বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক মতিউর রহমান লাল্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক অর্থনীতিবিদ লিয়াকত আলী মোড়ল ও অ্যাডভোকেট আব্দুল সালাম।
বক্তারা বলেন, ডা. এস এ মালেক ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক ও বলিষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। মহান মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের সকল প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন তিনি। সারা জীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে তিনি নিজের জীবনকে পরিচালিত করেছেন। নতুন প্রজন্ম যদি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে তাদের জীবন পরিচালিত করতে পারে তাহলে প্রয়াত ডা. এস এ মালেকের আত্মার শান্তি পাবে। এ সময় বক্তারা তার নামে দেশের একটি সড়ক নামকরণের দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে এস এ মালেকের স্মরণে ‘তুমি রবে নীরবে’ গান পরিবেশিত হয়। ‘ডা. এস এ মালেক: বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আলোয় আঁকা একজন সাহসী মানুষের প্রতিকৃতি’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অজিত কুমার সরকার।
চলারপথে রিপোর্ট :
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ সিটি করপোরেশনের কাশিমপুর ও বাসন এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে ডাকাত ও মোটরসাইকেল চোর চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। এসময় তাদের হেফাজত থেকে চোরাই চারটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলো রুহুল আমিন (৩৮), শ্যাম খান ওরফে শরীফ ওরফে ফারুক (৩০), আবুল সাঈদ (৩৫), মাহমুদুল হাসান রুবেল (৩১), সোহেল মিয়া ওরফে নাক কাটা সোহেল (৪০) ও সজিব আহাম্মদ (২৬)।
আজ ৩ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ, উত্তর) আবু তোরাব মো. শামছুর রহমান।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ, উত্তর) আবু তোরাব মো. শামছুর রহমান বলেন, গত ৩১ সেপ্টেম্বর রাতে সিটি করপোরেশনের দক্ষিণ পানিশাইল এলাকার বাসিন্দা দুলাল উদ্দিন তার ম্যানেজার জাহাঙ্গীর হোসেন, আব্দুল বাছেদ এবং ভগ্নিপতি সোলায়মানকে নিয়ে সদর থানার আদাবৈ পেয়ারা বাগান এলাকায় গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির মালামাল কেনার জন্য যান। তাদের বহনকারী প্রাইভেটকার তিন রাস্তার মোড়ে পৌঁছালে ১৪/১৫ জন ডাকাত দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রাইভেটকারের গতিরোধ করে। এক পর্যায়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাদের বাউন্ডারি ঘেরা একটি বাগানের ভেতর নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাকাতরা তাদেরকে এলোপাথাড়িভাবে মারধোর করে নগদ ১৪ লাখ ২৬ হাজার ৫০০ টাকা, মোবাইল ফোন লুট করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় পরদিন দুলাল উদ্দিন সদর থানার মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরো বলেন, মামলার ১০ ঘণ্টা পর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ডাকাতির ঘটনায় জড়িত রুহুল আমিনকে কালিগঞ্জ থানার নরুন বাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যে শ্যামল খান, আবুল সাঈদ ও মাহমুদুল হাসান রুবেলকে ময়মনসিংহ ও গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। মালামাল উদ্ধারসহ অপর আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, চোরাই মোটর সাইকেল কেনাবেচা হচ্ছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিটি করপোরেশনের যোগীতলার সুইচ ফ্যাক্টরির মোড় থেকে সোহেল মিয়া ও সজিব আহম্মদকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের হেফাজত থেকে চোরাই ৪টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, বিভিন্ন জায়গা থেকে মোটরসাইকেল চুরি করে তারা নিজেদের হেফাজতে রেখে বিক্রি করত। জিএমপির বাসন থানার এস আই সুকান্ত পাল জানান, বিভিন্ন থানায় তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানান তিনি। মোটরসাইকেল চোর চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, চা শিল্পের সঙ্গে প্রায় দেড় লাখ শ্রমিক রয়েছে যার অর্ধেকের বেশি নারী শ্রমিক। নারী পুরুষ উভয় শ্রমিকদের কল্যাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, যে কোনো শিল্পের প্রাণ হচ্ছে শ্রমিক। আর তাদের সকল ধরণের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
‘চা দিবসের সংকল্প, শ্রমিকবান্ধব চা শিল্প’ এ প্রতিপাদ্য নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও বাংলাদেশ চা বোর্ডের বর্ণাঢ্য আয়োজনে ৩য় বারের মতো ‘জাতীয় চা দিবস’ উদযাপন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ৪ জুন রবিবার মৌলভীবাজারের চায়ের রাজধানী খ্যাত শ্রীমঙ্গলের বিটিআরআই উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ‘৩য় জাতীয় চা দিবস উদযাপন ও ১ম জাতীয় চা পুরস্কার’ প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের ৪জুন থেকে ১৯৫৮ সালের ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের চা বোর্ডের প্রথম বাঙালী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। চা শিল্পে বঙ্গবন্ধুর অসামান্য অবদান ও চা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁর যোগদানের তারিখকে স্মরণীয় করে রাখতে গত ২০২০ সালের ২০ জুলাইয়ে মন্ত্রী সভার বৈঠকে ৪ জুনকে “ জাতীয় চা দিবস” ঘোষণা করা হয়েছে। এ বছর ৩য় বারের মত যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে।
মস্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ নজরদারি এবং নানামুখী উদ্যোগের ফলে দেশের চা শিল্প আজ টেকসই ও মজবুত অবস্থানে এসেছে। গুণগতমান সম্পন্ন চা উৎপাদন বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
চায়ের বাজারে ঠিকে থাকতে হলে চা শিল্পের উন্নয়ন ও প্রসার ঘটিয়ে বিশ্ব বাজারে ব্রাডিং করতে চায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের এক হয়ে কাজ করতে হবে।
চা শ্রমিকদের বেতন নিয়ে চা শ্রমিক ও চা বাগান মালিকদের মধ্যে যে সমস্যা দেখা দিয়েছিল তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে চা শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি করে দিয়েছেন এবং চা শ্রমিকরা তা মেনে নিয়েছেন।
প্রতি বছর দেশে চায়ের চাহিদা ৫-৭ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু চা উৎপাদন সে হারে বৃদ্ধি পায় না। এ জন্য চা উৎপাদন বৃদ্ধি করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
চা শিল্পের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ চা বোর্ড এবং এর অংশীজন হিসেবে চা বাগান মালিক, চা উৎপাদনকারী এবং প্যাকেজিং বিপণন কোম্পানিসহ চা শিল্পে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান/সংগঠনকে প্রদেয় ‘জাতীয় চা পুরস্কার’ চা শিল্পের বিকাশ অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করতে অনুপ্রাণিত করবে। মন্ত্রী আরও বলেন, চায়ের বহুমুখী ব্যবহার বৃদ্ধি, বিপণন প্রক্রিয়ায় আধুনিকায়ন এবং সর্বোপরি অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশি চায়ের নতুন বাজার সৃষ্টির মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করার পথ তৈরি করতে হবে। সে জন্য নতুন নতুন ব্যান্ডিং এর খুবই প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি, সভাপতি অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত কমিটি ও সাবেক চিফ হুইপ বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ, মেজর জেনারেল মোঃ আশরাফুল ইসলাম, এনডিসি, পিএসসি চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ চা বোর্ড।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, মিছবাহুর রহমান, মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাধারন সম্পাদক জেলা আ’লীগ, কামরান টি রহমান সভাপতি বাংলাদেশীয় চা সংসদ, মো. জসিম উদ্দিন সভাপতি এফবিসিসিআই, শাহ মঈনুদ্দিন হাসান সভাপতি টি ট্রেডার্স এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ।
চা শিল্পে অবদানের জন্য জাতীয় চা দিবসে প্রথম বারের মতো ৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় চা পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে দেশের চা শিল্পে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৮টি ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন চা কোম্পানী/ব্যক্তিকে ‘জাতীয় চা পুরস্কার ২০২৩” প্রদান করা হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ চা বোর্ডের যৌথ উদ্যোগে এ বছর প্রথমবারের মত ‘জাতীয় চা পুরস্কার’ প্রদান করা হয়। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষ্যে দিনব্যাপী চা মেলার আয়োজন করা হয়। মেলাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চা প্রদর্শন করা হয়।
দর্শনার্থীদের জন্য দিনব্যাপী চা মেলা উন্মুক্ত ছিল। এ ছাড়াও বঙ্গবন্ধু প্যভেলিয়ন এবং শ্রীমঙ্গস্থ টি মিউজিয়ামে রক্ষিত চা শিল্পের দুর্লভ জিনিসপত্র প্রদর্শন করা হয়।
এ সময় অনুষ্ঠানে চা-শ্রমিক জনগোষ্ঠী, চা-বাগান মালিক ও ব্যবস্থাপকসহ চা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
‘জাতীয় চা পুরস্কার প্রাপ্ত ৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান হলো: (১) একর প্রতি সর্বোচ্চ উৎপাদনকারী চা বাগান- ভাড়াউড়া চা বাগান
(২) সর্বোচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন চা উৎপাদনকারী বাগান-মধুপুর চা বাগান
(৩) শ্রেষ্ঠ চা রপ্তানিকারক-আবুল খায়ের কনজ্যুমার প্রোডাক্টস লি. (৪) শ্রেষ্ঠ ক্ষুদ্রতায়ন চা উৎপাদনকারী-মো. আনোয়ার সাদাত সম্রাট (পঞ্চগড়)
(৫) শ্রমিক কল্যাণের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ চা বাগান- জেরিন চা বাগান
(৬) বৈচিত্র্যময় চা পণ্য বাজারজাতকরণের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান/কোম্পানি-কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেট লি:
(৭) দৃষ্টিনন্দন ও মানসম্পন্ন চা মোড়কের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ চা প্রতিষ্ঠান/কোম্পানি-গ্রিন ফিল্ড টি ইন্ডাস্ট্রিজ লি:
(৮) শ্রেষ্ঠ চা পাতা চয়নকারী (চা শ্রমিক)-উপলক্ষী ত্রিপুরা, নেপচুন চা বাগান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।